প্রেম_নিবেদন পারত- 5

0
2391

story- #প্রেম_নিবেদন পারত- 5
Writer- #Nur_Nafisa

.
.
নাফিসা- আমি বাসায় এসে ভাবতে লাগলাম কিভাবে এখন ১২০০০টাকা যোগাড় করবো! আমার কাছে তো মাত্র ২০০০টাকা আছে। এখন কি করা যায়!

রাতে মায়ের কাছে গেলাম,
-মা, তোমার কাছে কিছু টাকা হবে?
মা- কেন? টাকা দিয়ে কি করবি?
নাফিসা- মা, তোমার মেয়ে অনেক বড় ঋণ করে ফেলেছে। ৩ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। ?
মা- কি বলিস! তুই ঋণ করেছিস! এটা বললি আর আমি বিশ্বাস করবো!
নাফিসা- হুম মা, আমি এখন ঋণী। ১২০০০ টাকা লাগবে।
মা- তা কি করেছিস টাকা নিয়ে?
হঠাৎ শান্তা এসে,
শান্তা- মা, আপু টাকা নেয় নি। ১টা দূর্ঘটনার জন্য জরিমানা হয়েছে।
মা- মানে?
তারপর শান্তা সব ঘটনা বললো।
নাফিসা- মা, বাবাকে কিছু বলো না। বাবাকে টেনশনে ফেলতে চাই না। তোমাকে ও বলতাম না, কিন্তু তোমার কাছে কোনো কথা গোপন রাখতে পারি না যে, এই বলে মাকে জড়িয়ে ধরলাম।
মা- পাগলী মেয়ে ১টা। আমার কাছে ৪/৫ হাজার হবে। নিয়ে যাস।
নাফিসা- মায়েরা এতো ভালো কেন হয়! মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলাম।
মা- চুপ, একদম চুপ। এখন বাকি টাকা কোথায় পাবি?
নাফিসা- ভাবতে হবে। আচ্ছা এখন ঘুমাতে যাই। আল্লাহ হাফেজ।
মা- সেকি! খাবি না?
নাফিসা- না মা, আমি আজ রাতে খাবো না। প্লিজ জোর করো না
মা- আচ্ছা যা।
.
আরাফ- গাড়ি মার্কেটে দিয়ে বাসায় এসে পরলাম। সোফায় বসে আছি, এমন সময়,
নিসা- ভাইয়া, তুমি না গাড়ি নিয়ে গেলা? রিক্সায় আসলে যে?
আরাফ- গাড়ির গ্লাস ফেটে গেছে, মার্কেটে ঠিক করতে দিয়ে আসছি।।
আম্মু- সেকি! কিভাবে?
আরাফ- জানি না। বাচ্চারা খেলতে খেলতে মনে হয় লাগিয়ে দিয়েছে।
আম্মু – গাড়ি রেখে কোথায় গিয়েছিস?
আরাফ- ওহ, আম্মু গাড়ি কি সব জায়গায় কেড়ি করে সাথে নেয়া যায়! আজব কথা বলো।
নিসা- আমি কাজ স্কুলে যাবো কি করে!
আরাফ- কেন, হেটে হেটে যাবি ?
নিসা- কিহহহ!
আরাফ- জ্বিইইহ!
আম্মু – আরে চুপ থাকতো, আরাফ বাইকে করে দিয়ে আসবে।
আরাফ- পারবো না আমি। হুহ! তারপর রুমে চলে আসলাম।
.
পরদিন সকালে, আমি আজ আর ভার্সিটি যাই নি। দিনাকে ফোন করে বলে দিছি, ও যাবে। পরে ওর কাছ থেকে নোট গুলো নিয়ে নিবো। যা ভাবার কাল রাতে ই ভেবে নিয়েছি।
সকালে নাস্তা করে আমার ছাত্র-ছাত্রীদের বাসায় গেলাম। এই মাস শেষ হওয়ার আর ৪দিন বাকি, এবার টাকাটা এডভান্স চেয়ে নিলাম। ওনারা দিতে ও রাজি হয়ে গেছে। কারণ সচরাচর আমি বেতন চেয়ে নেই না। ৩৬০০টাকা পেয়ে গেছি। এখন আরো টাকা দরকার, তারপর বাজারের সোহেল কাকার দোকানে গেলাম। তিনি আমাদের প্রতিবেশী। তার দর্জির দোকান আছে। আমি জামা-কাপড় বানাতে পাড়ি। বাসায় তো আর তেমন অর্ডার পাওয়া যায় না। তাই কাকার কাছে গেলাম।
নাফিসা- আসসালামু আলাইকুম কাকা।
কাকা- ওয়ালাইকুম আসসালাম। নাফিসা যে। হঠাৎ কি মনে করে?
নাফিসা- কাকা, একটা সমস্যায় পড়ে গেছি । তাই আসলাম। আপনি যদি একটু সাহায্য করতেন, তাহলে আমার খুব উপকার হতো।
কাকা- আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করব । বল কি চাস?
নাফিসা- কাকা, আমার কিছু টাকার প্রয়োজন কলেজের জন্য । বাবার রোজগার ও এখন তেমন নেই। হঠাৎ করে ই টাকাটার খুব প্রয়োজন হয়ে গেলো। আমি আপনার দোকানে ২ দিন কাজ করতে চাই।
কাকা- কিন্তু এই বাজারে তুই মেয়ে হয়ে কাজ করবি কি করে। তোকে, তোর বাবাকে সবাই চিনে। আর এখানে তোর বাবার অনেক সম্মান আছে। তুই এখানে কাজ করলে লোকে কি ভাববে। তাছাড়া তোর বাবা জানতে পারলে তোর বাবা কি ভাববে! বুঝতে পারছিস কিছু!
নাফিসা- হুম, কাকা আমি বাসায় নিয়ে কাজ করবো। বাসায় আমার মেশিন আছে। বেশি না, ২দিনের জন্য কাজটা আমার প্রয়োজন কাকা।
কাকা- আচ্ছা, তুই কাপড় আর মাপগুলো নিয়ে যা। সমস্যা হলে বলিস আমাকে।
নাফিসা- অনেক ধন্যবাদ, কাকা। এখন আমাকে কয়েকটা দিন, আজ যতগুলো কমপ্লিট করতে পারবো, সন্ধ্যার সময় এসে দিয়ে যাবো।
কাকা – আচ্ছা, নিয়ে যা।
তারপর বাসায় এসে কাজে লেগে গেলাম।
.
আরাফ- সকালে নিসাকে স্কুলে নামিয়ে ভার্সিটিতে এসে ২টা ক্লাস করে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম।
নিলয়- কিরে, গাড়ির গ্লাস ঠিক করেছিস?
আরাফ- না কাল মার্কেটে দিয়ে আসছি, আজ নিয়ে আসবো।
শিহাব- ওহ, আচ্ছা। তা আজ কি নাফিসা আসে নি! দেখা যাচ্ছে না যে!
আরাফ- নাফিসা আবার কে?
শিহাব – হাহাহা, আরে অই চাশমিশ এর নাম নাফিসা ?
আরাফ- অহ আচ্ছা। ?
ফাহিম – মনে হয় বেচারি ভয় পাইছে। ?
আরাফ- হয়তো ?
.
সন্ধ্যার সময়,,,,,,
নাফিসা- সারাদিন সেলাই কাজ করে সময় কাটলো।
মা- কিরে কোথায় যাচ্ছিস?
নাফিসা- মা, এই জামা গুলো কমপ্লিট হয়ে গেছে। কাকার কাছে দিয়ে আসি। সাথে কালকের জন্য নতুন আরো কিছু নিয়ে আসবো।
মা- ওহ আচ্ছা, সাবধানে যাস।
নাফিসা- হুম, আল্লাহ হাফেজ ?

.
আরাফ- সন্ধ্যার সময় গাড়ি আনার জন্য মার্কেটে গেলাম। হটাৎ দেখলাম চাশমিশ ট্রেইলারের দোকানে ঢুকছে। হাতে ১টা ব্যাগ দেখা যাচ্ছে। হয়তো জামা বানাতে এসেছে। সেদিকে খেয়াল না দিয়ে মেকারের কাছে গেলাম। টাকা দিয়ে গাড়ি নিয়ে বাসায় ফিরছিলাম, তখন আবার দেখি চাশমিশ দোকান থেকে বের হচ্ছে। এবার ও তার হাতে ১টা ব্যাগ। সেকি! এই মাত্রই না মেয়েটি জামা বানাতে দোকানে গেল, আবার ব্যাগ নিয়েই বের হয়ে গেলো কেন!! হয়তো এই দোকানে দিবে না। সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে গাড়ি নিয়ে বাসায় চলে এলাম।
.
গল্প ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ 🙂

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here