প্রেম_নিবেদন Part- 11

0
2118

story- #প্রেম_নিবেদন Part- 11
Writer- #Nur_Nafisa

.
.
পরদিন..
নাফিসা- সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজ ও কুরআন পড়লাম। তারপর রান্নাঘরে গিয়ে দেখি মা রান্নার ব্যবস্থা করছে।
– মা আজ আমি রান্না করবো ?
.
মা- তাই নাকি! হঠাৎ এমন শখ জাগলো যে!?
.
নাফিসা- হুহ! এমন ভাব করছো যেন আমি কখনো রান্না করি নি। ?
.
মা- আমি সুস্থ অবস্থায় তো না ই।
.
নাফিসা- বেশি কথা বল না তো! আজ আমি রান্না করবো, ব্যাস।
.
মা- আচ্ছা কর।
.
নাফিসা- তারপর রান্না করতে শুরু করলাম। মা ও আমাকে সাহায্য করছে। এমন সময় মায়ের ফোন বেজে ওঠে।
.
মা- নাফিসা, দিনা ফোন করেছে। কথা বল।
.
নাফিসা- আসসালামু আলাইকুম।
.
দিনা- ওয়ালাইকুম আসসালাম। কি করছিলি?
.
নাফিসা- রান্না করছিলাম।
.
দিনা- সত্যি!
.
নাফিসা- মিথ্যা না।
.
দিনা- হাহাহা, খেতে পারলাম না। আচ্ছা আজ ভার্সিটি যাবি?
.
নাফিসা- না, কোনো প্রোগ্রামে যেতে ভালো লাগে না।
.
দিনা- চল না আজ যাই। প্লিজ না করিস না। কখনোই তো তেমন যাওয়া হয় না।
.
নাফিসা- ভালো লাগে না তো।
.
দিনা- প্লিজ চল যাই। আমার ১টা কথা রাখবি না!
.
নাফিসা- আচ্ছা দেখি।
.
দিনা- কিছু দেখতে হবে না। আসবিই, আর ১টা কালো শাড়ি পড়বি। আমিও কালো শাড়ি পড়বো। ?
.
নাফিসা- কিইই!
.
দিনা- জ্বিইই। না পড়লে তোর সাথে কথা নেই। আল্লাহ হাফেজ।
.
নাফিসা- এই মেয়ে পাগল নাকি! দূর, পাগল হবে কেন! পাগলী।
.
মা- কি হয়েছে?
.
নাফিসা- দিনা বলছে ভার্সিটি যেতে তাও আবার কালো শাড়ি পড়ে।
.
মা- তো কি হয়েছে! আমার জর্জেট কালো শাড়ি আছে, সেটা পড়ে যা।
.
নাফিসা- আচ্ছা।
.
.
আরাফ- সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে আবার ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। 9টায় ঘুম ভেঙে গেলো। ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে ঝটপট রেডি হয়ে গেলাম ভার্সিটি যাওয়ার জন্য। সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট, হাতে কালো ঘড়ি আর ১টা কালো সানগ্লাস।
-আম্মু আমি আসছি।
.
আম্মু- আচ্ছা সাবধানে যা।
.
নিসা- ভাইয়া এতো সেজেগুজে কোথায় যাচ্ছো? ভাবিকে নিয়ে ডেটে? ?
.
আরাফ- সকাল সকাল মেজাজ খারাপ করিস না তো।
.
নিসা- হিহিহি…
.
আরাফ- আজ হেটে যেতে ইচ্ছে করছে না। বাইক তো লক করে রেখেছি! তাছাড়া আজ তো চাশমিশ যাচ্ছে না। আজ রিকশায় যাই। রিকশা নিয়ে চলে এলাম ভার্সিটি।
.
.
নাফিসা- ১০ টায় বাসা থেকে বের হলাম। আজ হেটে যেতে পারবো না। কারণ শাড়ি পড়ে হাটা অসম্ভব! তাই রিকশা ডেকে নিলাম।
.
.
আরাফ- রিকশা থেকে নেমে গেইটের ভিতরে ঢুকে একটু সামনে দেখলাম ফাহিম নিলয় শিহাব দাঁড়িয়ে আছে। তাদের কাছে গেলাম।
.
শিহাব- আরাফফ! তোকে তো পুরাই হিরো লাগছে। ?
.
আরাফ- তুই কি হিরোইন নাকি! ?
.
ফাহিম- তুই এমনিতেই ফর্সা, তার উপর এই ড্রেস আপ। awesome লাগছে।
.
নিলয়- কত মেয়ে এমনি তোর উপর ক্রাশ খেয়ে আছে, আজ তো ফিট হয়ে যাবে ?
.
আরাফ- যার ক্রাশ খাওয়ার কথা সে তো খাচ্ছে না! ?
.
শিহাব- এবার মনে হয় সেও ক্রাশ খেয়ে যাবে। ?

আরাফ- মানে!!
.
শিহাব- পিছনে তাকিয়ে দেখ!
.
আরাফ- আমি পিছনে তাকিয়ে তো থ.. হয়ে আছি! এ আমি কাকে দেখছি! নাফিসা গেইটের সামনে রিকশা থেকে নামছে। কালো শাড়ি পড়েছে। শাড়ির স্টোনগুলো রোদের আলোতে ঝিকিমিকি করছে। চুল গুলো ছাড়া। চোখে চিকন ফ্রেমের চশমা পরেছে আজ। ওর গায়ের রঙ ফর্সা না হলেও উজ্জ্বল শ্যামলা। অসম্ভব সুন্দর লাগছে।
.
নিলয়- আরে ভাই, হা করে থাকিস না। মাছি ঢুকবে তো?
.
আরাফ- ওফফ! দোস্ত এই মেয়েতো আমাকে পুরো পাগল করে ছাড়বে। ?
.
সবাই – হাহাহা ??
.
.
নাফিসা- রিকশা থেকে নেমে দেখি দিনা তার হাসব্যান্ড এর সাথে দাড়িয়ে আছে। সাথে ১টা ছেলেও আছে। আমি তাদের কাছে গেলাম।
.
নাফিসা- আসসালামু আলাইকুম।
.
হিমেল- ওয়ালাইকুম আসসালাম।
.
দিনা- ওয়াও? নাফিসা, তোকে অনেক কিউট লাগছে।
.
নাফিসা- ধন্যবাদ ? তোকেও অনেক সুন্দরী লাগছে ?।
.
হিমেল- আর আমাদের?
.
নাফিসা- ? আপনাদের ও। কেমন আছেন ভাইয়া?
.
হিমেল- আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তুমি?
.
নাফিসা- আলহামদুলিল্লাহ ভালো ?।
.
দিনা- নাফিসা, ও রোহান। তোর ভাইয়ার বন্ধু।
.
রোহান- হ্যালো ?
.
নাফিসা- আসসালামু আলাইকুম।
.
রোহান- ওয়ালাইকুম আসসালাম। ?
.
নাফিসা- চল স্টেজে যাই।
.
দিনা- হুম চল।
.
.
শিহাব- কিরে, তোর দিকে তো তাকালোও না!
.
আরাফ- ?
.
নিলয়- চল স্টেজেরদিকে যাই।
.
আরাফ- স্টেজে গেলাম। সারাক্ষণ নাফিসার দিকেই খেয়াল রাখছি। দিনার সাথে হাসিঠাট্টা করছে। খুব সুন্দর ওর হাসি। আমি লুকিয়ে লুকিয়ে অনেকগুলো ছবিও তুলেছি। যদিও তা ঠিক না। কিন্তু সমস্যা কি! ও তো আমারই হবে ইনশাআল্লাহ ?। কিন্তু ১বিষয় লক্ষ্য করছি, দিনাদের সাথের ছেলেটা বার বার ই নাফিসার দিকে তাকায় ?।
.
শিহাব- তুই কি শুধু লুকিয়ে লুকিয়েই ছবি তুলবি! যা ভাবির সাথে সেল্ফি তুলে আয়।
.
আরাফ- পিষিয়ে ফেলবে আমায়। ? তুই এক কাজ কর, আমি তার কাছে যাবো, তুই দূর থেকে আমাদের ছবি তুলবি।
.
শিহাব- ?হাহাহা.. আচ্ছা যা।
.
.
নাফিসা- বাতাসে চুলগুলো কেমনজানি এলোমেলো লাগছে। দিনা,আমি একটু আসছি।
.
দিনা- কোথায় যাচ্ছিস? আমি আসবো সাথে?
.
নাফিসা- না থাক, আমি একাই যাচ্ছি।
.
দিনা- আচ্ছা যা।
.
নাফিসা- ওয়াশরুমে গিয়ে চুল গুলো ঠিক করে নিলাম। তারপর বের হয়ে বারান্দা দিয়ে যাওয়ার সময় কেউ হাত ধরে হেচকা টান দিয়ে রুমের ভিতর নিয়ে গেলো। দেয়ালে আমার দুপাশে হাত রেখে আটকে ধরলো। আয়ায়া..!
.
আরাফ- হুসস!?
.
নাফিসা- আপনি!! ?
.
আরাফ- হুম আমি ?
.
নাফিসা- এখানে এনেছেন কেন! আর এভাবে হাত রেখেছেন কেন? সরুন।
.
আরাফ- তোমাকে দেখার জন্য।
.
নাফিসা- একনজরে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
– কি ব্যাপার! সরে দাড়ান।
.
আরাফ- উহু, ভালোবাসি তোমায়।❤️
.
নাফিসা- এবার আমি সজোরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম।
-ভালোবাসেন আমায়!! ? কি বলেছিলেন সেদিন মনে নেই! আমার মতো 3rd class মেয়ের সাথে আপনি প্রেম করবেন! আপনার পিছনে তো কতো সুন্দরী মেয়ে পড়ে আছে। এখন শুনুন, আমার মতো 3rd class মেয়েও কখনো আপনার প্রেমে পড়বে না। অযথা চেষ্টা করে লাভ নেই।
.
আরাফ- sorry Nafisa. Plz forgive me.
.
নাফিসা- ক্ষমা মহৎ গুন। আমিও ক্ষমা করে দিলাম। কিন্তু কখনো আপনাকে ভালোবাসতে পারবো না। সুতরাং, অযথা চেষ্টা করবেন না। আর আমাকে বিরক্ত করবেন না।
তারপর আমি চলে আসলাম।
.
আরাফ- তোমাকে তো আমার করেই ছাড়বো, জানপাখি ?
.
.
চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here