প্রেম_নিবেদন Part- 15

0
1940

story- #প্রেম_নিবেদন Part- 15
Writer- #Nur_Nafisa

.
.
নাফিসা- ২দিন পর আবার ভার্সিটি যাচ্ছি, আরাফ আজও এসেছে ওফফ! তবে রাস্তায় আমার পেছনে আসতে দেখিনি। ভার্সিটিতে এসে দেখলাম। ওর তো ক্লাস নেই! ও জানে কিভাবে আমি আজ আসবো! ও কি প্রতিদিনই আসে নাকি!
.
আরাফ- হ্যালো চাশমিশ, কেমন আছো? ?
.
নাফিসা- এতোক্ষণ ভালোই ছিলাম, এখন ভালো নেই।
.
আরাফ- ওপ্স! আমার সাথে বিয়েতে রাজি হয়ে যাও, সবসময় ভালো থাকবে ?
.
নাফিসা- ? কখনো না।
.
আরাফ- প্লিজ নাফিসা, ভুল তো মানুষ ই করে তাই বলে কি ক্ষমা করা যায় না!
.
নাফিসা- ক্ষমা তো কবেই করে দিয়েছি।
.
আরাফ- তাহলে রাজি হচ্ছো না কেন?
.
নাফিসা- কারণ আপনাকে আমার পছন্দ না।
.
আরাফ- তুমি যেভাবে বলবে, আমি সেভাবে চলবো, যা বলবে তাই করবো! তাও রাজি হয়ে যাও।
.
নাফিসা- যা বলবো তাই করবেন?
.
আরাফ- হুম
.
নাফিসা- আপনি আপনার বাবা-মাকে ছেড়ে চলে আসুন। তাহলে আমি বিয়েতে রাজি।
.
আরাফ- ?? (মনে মনে, এ কি বললো নাফিসা! এটা কিভাবে সম্ভব! আমিতো স্তব্ধ হয়ে গেছি ওর কথা শুনে। আমি আর কোনো কথা বলছি না)
.
নাফিসা- ? পারবেন না তো! আর কখনো আমার সামনেও আসবেন না। তারপর আমি ক্লাসে চলে আসলাম।
.
আরাফ- আমার কিছু বলার শক্তি নেই। এই মেয়ের জন্য আমি আমার পিতা-মাতাকে ছেড়ে আসবো! যারা সন্তানের জন্য নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে দেয়! আমি বাসায় চলে আসলাম। আম্মু দরজা খুলে দিলো।
.
আম্মু- কিরে, কি হয়েছে তোর? মন খারাপ কেন?
.
আরাফ- আমি কিছু না বলে, সোজা রুমে গিয়ে খাটে বসে রইলাম। আম্মু এসে আমার পাশে বসলো।
আম্মু- আরাফ, কি হয়েছে বলবি তো!
.
আরাফ- আমি আম্মুকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিলাম। ?
আম্মু আমি নাফিসাকে চিনতে ভুল করেছি। ও একদম ভালো না। ও অনেক খারাপ।?
.
আম্মু- আরে কান্না করছিস কেন? কি হয়েছে বলবি তো!
.
আরাফ- আম্মু নাফিসা আজ আমাকে বলেছে যদি আমি আমার বাবা-মাকে ছেড়ে তার কাছে চলে যাই, তাহলে ও আমাকে বিয়ে করবে।
.
আম্মু – কি বলছিস তুই! নাফিসা এমন মেয়েই না।
.
আরাফ- না আম্মু ও এমনই। আমি সত্যি বলছি, ও আজ আমাকে এটাই বলেছে।
.
আম্মু- আচ্ছা যদি বলে থাকে তাহলে তুই রাজি হয়ে যা।
.
আরাফ- আম্মু তুমি কি বলছো এসব!? আমি কোনো কিছুর বিনিময়ে তোমাদের ছাড়তে পারবো না। কখনো না!
.
আম্মু- আরে তুই ভয় পাচ্ছিস কেন! আমার বিশ্বাস, নাফিসা তোর পরীক্ষা নেয়ার জন্য এই কথা বলেছে। যে মেয়ে কারো জীবন রক্ষা করতে পারে, নিজের কথা চিন্তা না করে তার পরিবারকে এতোটা ভালোবাসতে পারে, সে কখনো চাইবে না কেউ তার পিতামাতাকে ত্যাগ করুক।
.
আরাফ- আম্মু পরে যদি উল্টাপাল্টা কিছু হয়ে যায়!
.
আম্মু- আমি আছি তো, ভয় কিসের!
.
আরাফ- আচ্ছা।
.
.
নাফিসা- পরেরদিন ভার্সিটিতে আরাফকে দেখিনি। ওফফ! এবার মনে হয় পিছু ছাড়াতে পেরেছি।?
.
দিনা- কিরে আরাফ ভাইয়া আসেনি যে!
.
নাফিসা- অবশেষে পেরেছি তার কাছ থেকে নিজেকে বাচাতে। ?
.
দিনা- কিভাবে! ?
.
নাফিসা- দিনাকে সব বললাম।
.
দিনা- কাজটা মোটেও ঠিক হয়নি। ও তোকে অনেক ভালোবাসে, আর কেউ তার পিতামাতাকে ছাড়তে পারে! তাছাড়া তুই কিভাবে বললি এই কথা।
.
নাফিসা- ওফফ! আমি জানি আরাফ কখনো তার পিতামাতাকে ছাড়তে পারবে না। আমাকে যাতে বিয়ে না করে তাই এই কথা বলেছি। এছাড়া আমার পিছু ছাড়ানোর কোনো রাস্তা আমি পাই নি!
.
দিনা- তুই যে কি করিস না। ২ সপ্তাহ পর তো ইনকোর্স পরীক্ষা। এখন প্রতিদিন ই ভার্সিটি আসবো আমি।
.
নাফিসা- তা হলেতো ভালোই হয়। তুই না আসলে ক্লাস করতে বোরিং লাগে।
.
দিনা- আচ্ছা আজ আসি, ইনশাআল্লাহ কাল দেখা হবে।
.
নাফিসা- আল্লাহ হাফেজ।
.
দিনা- আল্লাহ হাফেজ।
.
.
রাতে,
নাফিসা- আমরা সবাই একসাথে খেতে বসেছি। বাবাকে আজ অন্যরকম লাগছে। কোনো কথা বলছে না। আমি মাকে ইশারায় জিজ্ঞেস করলাম,
– কি হয়েছে?
.
মা ও ইশারায় জবাব দিলো,
– জানি না।
.
তারপর খাওয়া শেষ করে ঘুমিয়ে পড়লাম।
.
.
পরেরদিন (বৃহস্পতিবার)
নাফিসা- ভার্সিটিতে, ছুটির পর আমি আর দিনা গেইটের দিকে আসছিলাম। হঠাৎ আরাফ এসে সামনে দাড়ালো।
.
আরাফ- নাফিসা, আমি তোমার শর্তে রাজি। তৈরি হয়ে যাও, কালই আমরা বিয়ে করবো। ?
.
নাফিসা- আমি আর দিনা উভয়ই অবাক হয়ে আছি।?
.
আরাফ- কি হলো, এভাবে আছো কেন! তুমি ই তো বলেছিলে বাবা-মাকে ছাড়তে পারলে আমাকে বিয়ে করবে।
.
নাফিসা- আপনি ভাবলেন কি করে, আপনি বাবা-মাকে ছেড়ে আসলে আমি আপনাকে বিয়ে করবো! বিয়ের পর কেউ আমাকে ছেড়ে দিতে বললে, তখন তো আমাকেও ছেড়ে চলে যাবেন।
.
আরাফ- আরে চাশমিশ, তোমাকে ছাড়বো কেন! তোমার জন্যই তো এসব করছি।
.
নাফিসা- আমি আপনার মতো ছেলেকে কখনোই বিয়ে করবো না।
.
তারপর আমি রিকশা নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। এই ছেলে পাগল হয়ে গেছে। বলাতো যায় না, আবার রাস্তায় যদি কিছু করে বসে।
.
.
আরাফ- আমার খুশি দেখে কে!? আমি এই চাশমিশকেই বিয়ে করবো। আমি দ্রুত বাসায় চলে আসলাম। দৌড়ে আম্মুর রুমে গেলাম৷
.
আম্মু- আরে আস্তে দৌড়াচ্ছিস কেন?
.
আরাফ- আম্মুউউউ.. তুমি যা বলেছো সব মিলে গেছে। ?
কিন্তু ও যে বিয়েতে রাজি হলো না।
.
আম্মু- আমার বিশ্বাস ছিলো নাফিসার উপর। আমি তাকে প্রথমদিন দেখেই বুঝেছি ও কেমন মেয়ে ? কাল আমরা ওর বাসায় যাবো। ওর আব্বু আম্মু রাজি, আর নাফিসা ওর আব্বু আম্মুর কথা কখনো অমান্য করে না।
.
আরাফ- সত্যি!!
.
আম্মু- হুম?
.
আরাফ- তোমরা বাবা মায়েরা এতো ভালো কেন! ?
.
আম্মু- তোদের মতো সন্তানের জন্য ?
.
.
চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here