প্রেম_নিবেদন Part- 20

0
1870

story- #প্রেম_নিবেদন Part- 20
Writer- #Nur_Nafisa

.
.
নাফিসা- বিকেলে কিছু মেহমান আসলো নতুন বউকে দেখার জন্য। তাই আর ছাদে যাওয়া হলো না।
.
রাতে খাওয়ার পর নিসা তার রুম দেখানোর জন্য নিয়ে গেলো। নিসার রুমটা ও সুন্দরভাবে গুছানো। কিন্তু ২ভাই-বোনের কারো রুমে পড়ার টেবিল দেখিনি।
.
নিসা- sorry ভাবি।
.
নাফিসা- sorry কেন?
.
নিসা- বলেছিলাম বিকেলে ছাদে নিয়ে যাবো, কিন্তু তা আর হলো না।
.
নাফিসা- ? এতে তোমার দোষ কোথায়! sorry বলার কি আছে! সুযোগ হয়নি তাই যেতে পারিনি। তোমার রুমে পড়ার টেবিল নেই?
.
নিসা- না, পড়ার জন্য আলাদা রুম আছে। চলো দেখাই।
.
নাফিসা- না, থাক পড়ে দেখবো।
.
নিসা- আচ্ছা, এখন গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো। কাল আবার সকাল সকাল উঠতে হবে।
.
নাফিসা- আচ্ছা। good night.?
.
নিসা- good night ?
.
নাফিসা- তারপর রুমে চলে এলাম। দেখলাম আরাফ সোফায় বসে মোবাইল দেখছে। আমি চুপচাপ গিয়ে শুয়ে পড়লাম।
.
পরদিন,
বৌভাত অনুষ্ঠান। সকালে ঘুম থেকে উঠে নিসার সাথে পার্লার যেতে হয়েছে। সেজেগুজে আসতে প্রায় বিকেল হয়ে এলো।
আজকের শাড়িটা আরো বেশি সুন্দর। Blue & Golden colour mixed. বাসায় ফিরে দেখি আরাফ ও Blue & Golden colour mixed শেরওয়ানি পড়েছে। ক্যামেরা ম্যানদের দেখানো স্টাইলে অনেক কাপল ছবিও তোলা হয়েছে। তারপর স্টেজে নিসার সাথে বসে আছি।
.
নিসা- ভাবি, পার্লারে এতো জোড়াজুড়ির পরও তুমি ব্রু প্লাগ করোনি কেন?
.
নাফিসা- আমার ব্রু তো প্লাগ করাই।
.
নিসা- ?কোথায়! দেখেতো মনে হচ্ছে না। লাস্ট কবে করেছো?
.
নাফিসা- আমার জন্মের আগে ?
.
নিসা- মানে!?
.
নাফিসা- মানে হচ্ছে আমার জন্মের আগে আল্লাহ আমার ব্রু প্লাগ করে দিয়েছে। ? নিসা, ব্রু প্লাগ করা হারাম। আল্লাহ আমাদের যেমনভাবে বানিয়েছেন আমরা তেমনভাবেই প্রকৃত সুন্দরী ?. শুধু শুধু কেন নিজেদের সৌন্দর্যকে নষ্ট করবো!
.
নিসা- wow ভাবি!? আমিও কখনো ব্রু প্লাগ করবো না।
.
নাফিসা- thank you?
.
নিসা- most welcome?
.
নাফিসা- কিছুক্ষণ পর আমাদের বাসা থেকে সবাই আসলো। শান্তা, সাঈদ, রিয়াদ এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
.
শান্তা- আপু, জানো এই ২দিন তোমাকে কতো মিস করেছি!
.
নাফিসা- আমিও খুব মিস করেছি?
.
শান্তা- কই একবারও তো ফোন করলে না!
.
নাফিসা- আমিতো ফোন ইউজ করি না। বাবা-মা কোথায়?
.
শান্তা- আরাফ ভাইয়ার সাথে কথা বলছে।
.
নাফিসা- আমাকে ভুলেই গেছে!
.
হাসতে হাসতে বাবা-মা আর আরাফ আসলো আমার কাছে।
মা- একদম ভুলিনি ?
.
তারপর বাবা-মা কে সালাম দিলাম। আসসালামু আলাইকুম।
.
বাবা- ওয়ালাইকুম আসসালাম। কেমন আছিস মা?
.
নাফিসা- আলহামদুলিল্লাহ। ভালো থাকার জন্যই তো পাঠিয়েছো। ভালোই আছি।
.
আরাফ- ?
.
বাবা- রেগে আছিস বাবার উপর??
.
নাফিসা- না?
.
বাবা-মা – ?
.
শান্তা আর নিসা কথার আসর জমিয়েছে। আমি মায়ের সাথে কথা বলছি। বাবা আরাফের বাবা-মার সাথে কথা বলছেন। আরাফের বন্ধুরা আরাফের সাথে দুষ্টুমি করছে। কিছুক্ষণ আমার সাথেও কথা বলে গেছে। আবার ক্ষমাও চেয়ে গেছে আমার কাছে। বৌভাত অনুষ্ঠান শেষে বাবা-মার সাথে আমাদের বাসায় আসলাম। আমি, আরাফ সাথে নিসাকেও নিয়ে এসেছি।
এখানে আমি মায়ের সাথে আর চাচীদের সাথেই বেশি সময় কাটিয়েছি। আর আরাফ বাচ্চাদের সাথে ঘুরাঘুরি, দুষ্টুমি করে। প্রথমে বাচ্চারা আরাফকে কিছুটা ভয় পেলেও এখন অনেক ফ্রি হয়ে গেছে। এভাবেই ২দিন কাটালাম। আজ আবার আরাফের বাসায় ফিরে যাবো। আবারও খুব কষ্ট হচ্ছে। মন খারাপ করে আলমারি থেকে জামা কাপড় নামাচ্ছি লাগেজে ভরার জন্য। আরাফ আমার রুমেই বসে আছে।
.
আরাফ- মন খারাপ?
.
নাফিসা- ?
.
আরাফ- তোমার ইচ্ছে হলে আরো কিছুদিন থাকতে পারো।
.
নাফিসা- না।?
.
আরাফ- কাপড়ের সাথে দেখলাম ১টা প্যাকেট ও নামিয়ে রাখলো বিছানায়। প্যাকেট টা আমি হাতে নিলাম। এটাতো সেই প্যাকেট!?
– নাফিসা, প্যাকেটটা খুলেও দেখোনি মোবাইলটা কেমন!
.
নাফিসা- ?মনে ছিলো না।
.
আরাফ- আমি প্রতিদিন তোমায় কল করেছি এটাতে।
.
নাফিসা- ?শুনতে পাইনি।
.
আরাফ- শুনবে কিভাবে! কাপড়ের ভাজে রাখছো! (আমি ফোন টা বের করে নাফিসার সামনে রাখলাম) দেখো, ১১৯টা মিস কল।
.
নাফিসা- আর ১বার দিয়ে ১২০টা করে দিন।?
.
আরাফ- ?, এটাও লাগেজে নাও। আর সবসময় সাথে রাখবে।
.
নাফিসা- ফোন সাথে রাখতে বিরক্ত লাগে।
.
আরাফ- তোমার মতো এমন মানুষ আজকাল নেই বললেই চলে। পারলে মানুষ ৪/৫টা ফোন সাথে রাখে, আর তুমি বলো বিরক্ত লাগে!?
.
নাফিসা- সবাই তো আর আমি না!? আমার সব গুছানো হয়ে গেছে। চলুন এবার।
.
আরাফ- ?এখন তো দেখছি যাওয়ার জন্য অনেক তাড়া!
.
নাফিসা- তাহলে আপনি থাকুন।
.
আরাফ- হাহাহা… তুমি থাকলে আমিও থাকবো?
.
নাফিসা- ?তারপর বাবা-মার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে এলাম।
.
নাফিসা- সন্ধ্যার সময় বাসায় এসেছি। রাতে আমি না খেয়েই ঘুমিয়েছি।
.
সকালে মোবাইলে এলার্ম শুনে ঘুম ভেঙে গেলো। আমি আর আরাফ ২জনেই উঠে নামাজ পড়েছি। আজও কুরআন পড়া হলো না। আমি আবার ঘুমিয়ে পড়লাম।
.
আরাফ- আমি মসজিদ থেকে ফিরে দেখি নাফিসা ঘুমিয়ে আছে। আমিও গিয়ে শুয়ে পড়লাম। একটু পর আমি উঠে অফিসের জন্য রেডি হয়ে গেলাম। এখন প্রতিদিন অফিসে যেতে হবে। সামনের সপ্তাহে আব্বু USA যাবে। সব কিছু আমাকে বুঝে নিতে হবে।
নিসা- ভাইয়া, ভাবিকে নিয়ে নাস্তা করতে আসো।
.
আরাফ- আসছি..
.
নাফিসা, নাফিসা, উঠো… ৯টা বেজে গেছে।
.
নাফিসা- আরাফের ডাকে ঘুম ভাঙলো, ৯টা বেজে গেছে! ? উফ! সকালের ঘুমটা খারাপ অভ্যাসে পরিণত হচ্ছে।?
.
আরাফ- কি হয়েছে তাতে!☹️
.
নাফিসা- আপনার জন্যই তো এমন হচ্ছে!?
.
আরাফ- তোমার ভালোর জন্যইতো বলেছিলাম।
.
নাফিসা- দরকার নেই আমার ভালোর ?
.
আরাফ- আচ্ছা এখন নাস্তা করতে চলো।
.
সবাই একসাথে নাস্তা করলাম। না করা সত্যেও নাস্তা শেষে আম্মুকে সব গোছাতে সাহায্য করলাম। তারপর রুমে এসে দেখি আরাফ ল্যাপটপ নিয়ে বেরিয়ে যাবে,
.
.
চলবে..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here