প্রেম_নিবেদন Part- 8

0
2433

story- #প্রেম_নিবেদন Part- 8
Writer- #Nur_Nafisa

.
.
.
আরাফ- পরদিন আম্মুকে বাসায় নিয়ে আসলাম। আম্মু, এখন কেমন আছো?
আম্মু – ভালো। ☺️ আরাফ জানিস অই মেয়েটা না থাকলে হয়তো আজ এখানে থাকতাম নারে!
আরাফ- আম্মু এগুলো কি বলো!
আম্মু – হুম মেয়েটা অনেক ভালো। সবাই তাকিয়ে দেখছিলো, আর মেয়েটা সবাইকে বকে দিয়ে আমাকে হাসপাতালে নিলো। আবার রক্ত ও দিলো। আফসোস! তাকে দেখেছিলাম ঠিকই, কিন্তু তার সাথে কথা বলতে পারলাম না।
আরাফ- ভাগ্যে থাকলে আবার দেখা পাবে।
আব্বু – হুম সত্যিই মেয়েটি খুব ভালো। আমি কথা বলেছিলাম ওর সাথে। ও একটি নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। খুবই সহজ সরল, শান্ত মনের মেয়ে।
আরাফ- এখন তো আমার ও মেয়েটিকে দেখতে ও তার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে ?
আম্মু – মেয়েটির নাম জিজ্ঞেস করো নি!
আব্বু – হ্যাঁ করেছিলাম তো, কিন্তু মনে নেই! ?
আম্মু – তোমাকে দিয়ে কোনো কাজ হয় না ?
নিসা- হয়েছে এখন আর ঝগড়া করতে হবে না। আম্মু তুমি এখন রেস্ট নাও।
.
.
আরাফ- আম্মু অসুস্থ থাকায় ২দিন ভার্সিটিতে যাই নি। সামনের সপ্তাহে ফাইনাল এক্সাম। তাই আজ যেতে হচ্ছে। তাছাড়া আম্মু ও এখন অনেকটা সুস্থ। বাসায় নিসা আছে আম্মুর খেয়াল রাখার জন্য।
শিহাব – কিরে দোস্ত কেমন আছিস?
আরাফ- যেমন থাকার কথা!
শিহাব – আন্টির শরীর এখন কেমন?
আরাফ- আগের চেয়ে কিছুটা better.

.
নাফিসা- ২ দিন পরে আজ ভার্সিটি এসেছি। যদিও এখনও সম্পূর্ণ সুস্থ নই। বাসায় থাকতে আর ভালো লাগছে না।
দিনা- কিরে তুই ভার্সিটিতে এলি যে!! এখন কেমন আছিস?
নাফিসা- আলহামদুলিল্লাহ অনেকটা ভালো। বাসায় বসে বসে বোরিং লাগছিলো, তাই আসলাম।
দিনা- ভালোই হয়েছে। তোকে ১টা কথা বলার ছিলো, আর ১টা জিনিস দেখানোর ছিলো। চল পুকুর পাড়ে গিয়ে বসি, সেখানে কেউ নেই।?
নাফিসা- ওকে চল। ?ব্যাগ সাইডে রেখে পাজামা কিছুটা উপরে তুলে পানিতে পা রেখে সিড়িতে বসে আছি আমরা।
দিনা- এই দেখ, ভার্সিটিতে আসার সময় এই উড়নাটা কিনেছি। কেমন হয়েছে? ?
নাফিসা- ওয়াও, কাতানের ওড়না! অনেক সুন্দর ?
দিনা- হুম☺️ গিয়েছিলাম অন্য ১টা কাজে হঠাৎ এটাতে চোখ আটকে গেল।
নাফিসা- আর কি যেন বলবি বলেছিলি?
দিনা- হুম আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে।
নাফিসা- তাই নাকি!! ??কবে! কখন!
দিনা- আরে কাল দেখতে এসে আংটি পড়ায়ে গেছে। তারিখ ও দিয়ে দিছে। ২ সপ্তাহ পর।
নাফিসা- এতো তারাতাড়ি সব কাজ হয়ে গেল!!
দিনা- হুম বাবা-মা আগে থেকেই চিনতো। তাই সব কিছু তারাতাড়ি হয়ে গেল। ?
নাফিসা- ওকে জানু, তা মন খারাপ করার কি আছে!
দিনা- বাবা-মা যাবে তোদের বাসায় দাওয়াত নিয়ে। তুই কিন্তু ৪/৫ দিন আগেই আসবি।
নাফিসা- ?? তোর বাসা আর আমার বাসা তো কাছাকাছি ই। তো এতো আগে যাওয়ার কি আছে!
দিনা- তাও ১ম বার তো। কেমন জানি uneasy fill হয়। তুই এলে আমার সময় ভালো কাটবে।
নাফিসা- আবার ২য় বার বিয়ে করার ইচ্ছা আছে নাকি!! ???
দিনা- আরে দুরররর……!?
.
আরাফ- পুকুরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ দেখলাম চাশমিশ বসে আছে পুকুর পাড়ে। এটাই সুযোগ! ?
আমি আমার ফোন আর ঘড়ি শিহাবের কাছে দিয়ে দিলাম।
শিহাব- কিরে এগুলো দিয়ে কোথায় যাস?
আরাফ- আরে ধর তুই আমি একটু আসছি।
শিহাব, নিলয়, ফাহিম – ??
.
নাফিসা- আমি আর দিনা বসে কথা বলছিলাম, হঠাৎ মনে হলো কেউ দৌড়ে এসে পাশে বসলো।
তাকিয়ে দেখি আরাফ!!!!??
একি!! আপনি এখানে কেন আসছেন? ?
আরাফ- পুকুরে মানুষ কেন আসে! গোসল করতে এসেছি ?
নাফিসা- তাহলে গিয়ে গোসল করুন, এখানে বসে আছেন কেন!!!
আরাফ- আমার ইচ্ছা। ☺️
নাফিসা- দিনা উঠ, আমারাই চলে যাই
দিনা- হুম চল।
নাফিসা- যেই উঠে দাড়ালাম,…..
আরাফ- তোমাকে ও যে আমার সাথে গোসল করতে হবে, বলেই ওর হাত ধরে হেচকা টান দিয়ে দুজনেই পানিতে পড়লাম। তবুও ওর হাত ছাড়ি নি। টেনে ওকে পুকুরের মাঝখানে এনে ছেড়ে দিলাম। এবার প্রাণ ভরে হাসতে লাগলাম । ওইদিন তো আমায় ফেলেছিলে, এবার বুঝ মজা। ???? তারপর আমি আমার ইচ্চে মতো সাতার কাটছি।
দিনা- ???
নাফিসা- এভাবে পানিতে ফেলায় আমার নাকে মুখে পানি গেছে। আমার দম বন্ধ হয়ে যাবার পালা হয়েছে! সাতার ও কাটতে পারছি না শরীর টা দুর্বল থাকায়। অবস হয়ে আসছে পুরো শরীর, একসময় হাল ছেড়েই দিলাম।
দিনা- দেখলাম নাফিসা প্রায় ডুবে যাচ্ছে ?, নাফিসায়ায়ায়ায়ায়া……..
আরাফ- দিনার চিতকার শুনে পিছনে তাকিয়ে দেখি নাফিসা ডুবে যাচ্ছে। এই মেয়ে সাতার জানে না নাকি!! দ্রুত ডুব দিয়ে নাফিসাকে ধরে ফেললাম। চোখ বন্ধ করে ফেলেছে। আমি ওকে একটু সাইডে নিয়ে আসলাম এখন ও গলা পানিতে দাড়িয়ে আছি। নাফিসা দুহাতে আমার গলা ধরে আছে। আমি ১ হাতে ওকে জড়িয়ে ধরে, অন্য হাত ওর গালে রেখে ঝাকিয়ে,
নাফিসা, চোখ খুলো। নাফিসা…..
নাফিসা- আমি আলতো করে চোখ খুলে আরাফের দিকে তাকালাম।
আরাফ- ও একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, আমিও তার দিকে তাকিয়ে আছি। কেন জানি খুব ভালো লাগছে তাকে দেখতে। অনেক মায়া ওর চোখে। অসম্ভব সুন্দর লাগছে। হঠাৎ ও আমার গলা থেকে হাত সরিয়ে নিলে ঘোর কাটলো। তারপর ওকে উপরে নিয়ে গেলাম।
দিনা- নাফিসা তুই ঠিক আছিস?
নাফিসা- আমি আরাফের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকালাম ?
এখন আমি বাসায় যাব কি করে!!!!
দিনা ওর কাতানের ওড়নাটা আমার গায়ে জড়িয়ে দিলো।
দিনা- গেইটের সামনে চল, রিকশা নিয়ে বাসায় যাবি।
দিনা রিকশা ডাকার জন্য আগে চলে গেলো, আমি আস্তে আস্তে হেটে গেইটের সামনে গেলাম। অনেকে তাকিয়ে আছে। মনে তো চাচ্ছে অই ছেলেকে গলা টিপে মেরে ফেলি ?? এমন সময় বাইক এসে সামনে ব্রেক করলো!
আরাফ- চলো, বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসি।
নাফিসা- কোনো প্রয়োজন নেই।?
আরাফ- ভেজা শরীরে যাবা কিভাবে! বাইকে বেশি সময় লাগবে না, চলো।
নাফিসা- পানিতে ফেলার আগে মনে ছিল না!?
এতোক্ষণে দিনা রিকশা নিয়ে চলে এসেছে। আমি রিকশায় উঠে বাসায় চলে আসলাম।
.
নাফিসা চলে গেলো, শিহাবেরাও আসলো
নিলয়- কিরে দোস্ত, ভালোই তো ডোজ দিলি ??
শিহাব- হেব্বি রোমান্টিক ছিলো বিষয়টা ???
আরাফ- ?দুরররর……! আমার ঘড়ি আর ফোন দে। তারপর আমিও বাসায় ফিরে আসলাম।
.
.
গল্প ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ 🙂

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here