#প্রেম_প্রেম_খেলা,০৭,০৮
মুমতাহিনা জান্নাত মৌ
০৭
আদ্রিয়ানের মুখ দিয়ে সহজে মিথ্যা কথা বের হয় না।সে আমতা আমতা করতে লাগলো।এদিকে সাংবাদিকরা একের পর এক প্রশ্ন ছুড়ে দিতে লাগলো।তাদের সবার একই প্রশ্ন যে আদ্রিয়ান অহনার বাসায় কি জন্য এসেছে?আর আজ কিসের পার্টি হচ্ছে?
আদ্রিয়ান অনেক ভেবেচিন্তে বললো আজ অহনার এক ফ্রেন্ডের বার্থডে। সেজন্য আমাকে ইনভাইট করেছিলো।এদিকে অহনা যে বলেছে অন্য কথা সেটা আর আদ্রিয়ান জানতো না।
আদ্রিয়ানের কথা শুনে সবাই সবার মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে লাগলো।তবে আদ্রিয়ান আর অহনা যে কিছু একটা লুকাচ্ছে সেটা মিডিয়ার লোকেরা ওদের মুখ দেখেই বুঝতে পারলো।
এদিকে এসব নিউজ শুনে আদ্রিয়ানের বন্ধুরা ছুটে এলো।তারা আদ্রিয়ান আর অহনাকে একসাথে দেখে অনেক বেশি শকড হলো।এটা কি করে সম্ভব?আদ্রিয়ান অহনার ফ্ল্যাটে কি করে?তাদের কে তো আদ্রিয়ান এ ব্যাপারে কিছু বলে নি।
তানহা আর চুপ করে থাকতে পারলো না।সে বললো, আদ্রিয়ান তুই এখানে কি করছিস?আরে এসব হচ্ছে টা কি?উত্তর দে আমায়।
উল্লাস আর সানিও অবাক।
কিন্তু আদ্রিয়ান চুপ হয়ে থাকলো।সে কারো প্রশ্নের কোনো উত্তর দিলো না।
এদিকে সাংবাদিকরা নিউজ করলো জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী আদ্রিয়ান কে নতুন মডেল মিস অহনার বাসায় দেখা গিয়েছে।তাদের সাজসজ্জা আর রুমের ডেকোরেশন দেখে মনে হয়েছে আজ কোনো পার্টি ছিলো।কিন্তু তারা কেউ সত্য টা স্বীকার করতে চাই নি।তবে গোপন সূত্রে জানা গেছে আদ্রিয়ান আজ অহনাকে প্রপোজ করেছে।তাদের যে অনেক আগে থেকেই রিলেশন ছিলো সেটা বোঝাই যাচ্ছে।তা না হলে অহনাকে হঠাৎ আদ্রিয়ান তার নতুন মিউজিক ভিডিও তে কেনো নিলো?
সামান্য এই ঘটনাকে ইস্যু করে পুরো দেশের লোক জেনে গেলো অহনা আর আদ্রিয়ানের প্রেমের কথা।
তবে আদ্রিয়ানের কেনো জানি মনে হচ্ছে সাংবাদিক দের খবর অহনা বা ওর বান্ধুবীরাই দিয়েছে।তা না হলে ওনারা জানলো কি করে?আদ্রিয়ান কে তো আসতে কেউই দেখে নি।
আদ্রিয়ান আর অহনার প্রেমের কথা শুনে তানহার মন টা ভীষণ খারাপ হলো।কারণ সে যে নিজেই আদ্রিয়ান কে ভীষণ পছন্দ করে।কিন্তু আদ্রিয়ান তার বেস্ট ফ্রেন্ড হওয়ার কারণে বলার সাহস হয় নি।তবে সে তার ভালোবাসার কথা অনেকভাবে বুঝিয়েছে আদ্রিয়ান কে।কিন্তু আদ্রিয়ান বুঝতে চেষ্টাই করে নি।
আদ্রিয়ান আর এক মুহুর্ত থাকলো না।রাগ করে অহনার ফ্ল্যাট থেকে চলে গেলো।
এদিকে তানহা অহনাকে এট্যাক করলো।আর বললো,বেশি উড়িও না অহনা।একদম ডানা কিন্তু কেটে দিবো তোমার।
অহনা তখন তার হাতের রিং টা বোলাতে বোলাতে বললো,অনেক দেরি হয়ে গেছে মিস তানহা।আর আমার ডানা কাটার সাহস কোনো বাপের মেয়ের নাই।চ্যালেঞ্জ রইলো কিন্তু।
তানহা হঠাৎ খেয়াল করলো রিং টা।সে তখন বললো এই রিং তো তোমার হাতে আগে দেখি নি?কিসের রিং এটা?
অহনা চুপ করে রইলো।
তখন টুশু বললো,আদ্রিয়ান অহনাকে ভালোবাসে
আর আজ এই রিং টা দিয়ে প্রপোজ করেছে অহনাকে।
অহনা এটাই চাচ্ছিলো যে তার বন্ধুরা নিজেরাই প্রকাশ করুক এটা।কারণ সে নিজের মুখে বললে দোষ হয়ে যেতো।
অহনা এবার অভিনয় করতে লাগলো।সে টুশুকে বললো, কি করলি এটা টুশু?আদ্রিয়ান তো এই ব্যাপার টা গোপন রাখতে বলেছে।কেনো বললি তানহাকে।এটা আমার আর আদ্রিয়ানের পার্সোনাল ম্যাটার।
টুশু তখন বললো কি বলছিস কি?আমি তো জানি না সেটা।আগে বললেই তো হতো।তাহলেই তো বলতাম না।
তানহা অহনা আর তার বান্ধুবীদের কথা শুনে কাঁদতে কাঁদতে বের হয়ে গেলো ফ্ল্যাট থেকে।তার বিশ্বাসই হচ্ছে না আদ্রিয়ান এইভাবে তাকে না জানিয়ে অহনার সাথে নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে।
কিন্তু অহনার আজ অনেক বেশি আনন্দ হচ্ছে।সে ভাবতেই পারছে না আদ্রিয়ান আর তার প্রেমের কথা এভাবে পুরো দেশের লোক জেনে যাবে।যাক অবশেষে সবাই জেনে গেলো আদ্রিয়ানও মিঙ্গেল।
▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️
এদিকে আদ্রিয়ান টেনশনে একের পর এক সিগারেট ধরাচ্ছে।সে বুঝতেই পারছে না এটা কি হয়ে গেলো তার সাথে?এইভাবে ধরা খেয়ে গেলো সে।এখন কি করে সবার মুখ বন্ধ করবে আদ্রিয়ান?
হঠাৎ তানহা দৌঁড়ে এসে আদ্রিয়ান এর সামনে কাঁদতে কাঁদতে বললো,তুই এটা কি করে করতে পারলি আদ্রিয়ান? তুই অহনাকে সত্যি সত্যি ভালোবেসে ফেলছিস?
আদ্রিয়ান তানহার কথা শুনে বললো তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড হয়েও এই কথা টা বিশ্বাস করলি?আমি যদি ওকে ভালোবাসতাম তাহলে তোরা সেটা জানতি না?তোদের কে না জানিয়ে আমি কিছু করেছি?
তানহা তখন বললো কিন্তু অহনার বান্ধুবীরা যে বললো,
তুই নাকি অহনাকে ভালোবাসিস।
তুই নিজে আজ অহনাকে রিং পড়িয়ে দিয়েছিস?
আদ্রিয়ান তখন বললো হ্যাঁ দিয়েছি।কারণ অহনাকে আমার এখন ভীষণ প্রয়োজন।ও আমাকে ভালোবাসে এটা তো আর মিথ্যা নয়।ওর এই ভালোবাসা টাকে আমরা কাজে লাগিয়ে অনেক কিছু করতে পারবো। বুঝেছিস।আমরা একের পর এক মিউজিক ভিডিও বানাবো। যেগুলো সব হিট হবে।
তানহা তখন বললো তাই মানে তুই ওর সাথে ভালোবাসার মিথ্যে অভিনয় করছিস?
–হ্যাঁ করছি।তাছাড়া ওকে বশে আনা যাবে না।কারণ ও বাহিরে থেকে সহজ সরল মেয়ে হলেও ভিতরে ভিতরে ওর অনেক বুদ্ধি।
তানহা তখন বললো,কিন্তু এখন সবাই যে বলছে তোর আর অহনার মধ্যে রিলেশন চলছে।তোরা নাকি প্রেম করছিস। সবার মুখ বন্ধ করবি কি করে?
আদ্রিয়ান তখন বললো পিছু লোকে কিছু বলুক।আই ডোন্ট কেয়ার।আর আমি তো চাচ্ছি লোকে আমার বেশি বেশি করে সমালোচনা করুক।
এই বলে আদ্রিয়ান জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো। আর আবার একটা সিগারেট ধরালো।
তানহা নিজেও এগিয়ে গেলো আদ্রিয়ানের কাছে।আর বললো দেখিস আবার এই প্রেম প্রেম খেলা খেলতে খেলতে আবার সত্যি সত্যি ওর প্রেমে যেনো না পড়িস।
আদ্রিয়ান তখন বললো এটা কখনোই সম্ভব না।কারণ আদ্রিয়ান কোনো মেয়েকে ভালোবাসতেই পারে না।
তানহা এবার আদ্রিয়ানের কাঁধে হাত দিয়ে বললো, আদ্রিয়ান!কোনো মানুষই একা বাঁচতে পারে না কিন্তু।সবার একজন মনের মতো জীবনসঙ্গিনীর প্রয়োজন আছে।আর দুনিয়ার সব মেয়ে কিন্তু এক নয়।প্লিজ আদ্রিয়ান একটু পজেটিভ হয়ে যা।
আদ্রিয়ান তখন তানহার হাত সরিয়ে দিয়ে বললো এটা আর সম্ভব নয় তানহা।তুই তো সবকিছু জানিস তারপরেও কি করে এটা বলতে পারলি?আর আমি দুনিয়ার কোনো মেয়েকেই বিশ্বাস করি না।
তানহা তখন বললো কিন্তু কেউ একজন যে তোকে পাগলের মতো ভালোবাসে তার কি হবে?
আদ্রিয়ান তখন হাসতে হাসতে বললো,শুধু একজন!আমি তো চাই দেশের সকল মেয়ে আমার প্রেমে দিবানা হয়ে থাক।আর আমি তাদের সবাইকে ইগনোর করে চলি।এতেই আমি তৃপ্তি পাবো।
তানহা তখন বললো আগে শুনবি তো সেই একজন মেয়ে কে?
আদ্রিয়ান তখন বললো সে যেই হোক আমার তার প্রতি বিন্দুমাত্র ইন্টারেস্ট নাই।এই বলে আদ্রিয়ান চলে গেলো।
এদিকে তানহা মনে মনে ভাবতে লাগলো হায় রে আদ্রিয়ান! আমি তোর এতো কাছে থেকেও আমাকে চিনতে পারছিস না?এখন কি করে তোকে আমি আমার মনের কথা বলি?
▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️
আদ্রিয়ান বাসায় প্রবেশ করতেই মিঃ আতিক হাসান বললো,বাবা এসব কি শুনছি?অহনার সাথে নাকি তুমি রিলেশনে গেছো।
আদ্রিয়ান তার বাবার প্রশ্নের কোনো উত্তর দিলো না।
কিন্তু আদ্রিয়ানের আম্মু মিসেস তমালিকা খন্দকার বললো,তোমার যদি অহনাকে ভালো লাগে তাহলে আমরা ওদের পরিবারের সাথে কথা বলে দেখতে পারি।
আদ্রিয়ান সেই কথা শুনে বললো, মাম্মি তুমি এটা ভাবলে কি করে ওই রকম একটা থার্ড ক্লাস মেয়ের সাথে আমি রিলেশন করবো?এটা জাস্ট একটা গুজব।এই বলে আদ্রিয়ান তার রুমে চলে গেলো।আর রুমে গিয়েই সে ধপাস করে বিছানায় শুয়ে পড়লো।তার কেনো জানি আজ ভীষণ অস্থির অস্থির লাগছে।কিছুই ভালো লাগছে না তার।সেজন্য আদ্রিয়ান নিজের গাওয়া গান নিজেই শুনতে লাগলো।
???
অশান্ত মন, বোঝাই কাকে?
হারিয়ে চাইছি তোমাকে
হাতছানি দিয়ে যে ডাকে
স্মৃতির পাতা
নদীর শেষে, আকাশ নীলে
স্বপ্নগুলো মেলে দিলে
তারা বলে সবাই মিলে
দীপান্বিতা
ঠিক সেই সময় অহনা কল দিলো আদ্রিয়ান কে।কিন্তু আদ্রিয়ান রিসিভ করলো না কল।অহনা সেজন্য বার বার কল দিতেই আছে।আদ্রিয়ানের এবার ভীষণ রাগ উঠলো।সে ফোন রিসিভ করেই বললো,
এই মেয়ে তোমার সমস্যা টা কি?এভাবে বার বার কল দিচ্ছো কেনো?
অহনা আদ্রিয়ানের এমন মেজাজ দেখে বললো, কি হয়েছে আপনার?এভাবে কথা বলছেন কেনো?
আদ্রিয়ান অহনার কথা শুনে শান্ত হলো।সে তখন বললো,আমি এখন ব্যস্ত আছি।পরে কথা বলছি।
অহনা তখন বললো আমি জানি আপনি এখন কোনো ব্যস্ত নাই।আমাদের রিলেশনের কথা সবাই জেনে গেছে বিধায় আপনার এমন রাগ হচ্ছে আমার উপর।কিন্তু এতে আমার কি দোষ?
আদ্রিয়ান তখন বললো তুমি কি এসব কথা বলার জন্য কল দিয়েছো?
;না।
–তাহলে কাজের কথা বলো।
অহনা তখন বললো, আচ্ছা আদ্রিয়ান! আপনি কি আমাকে সত্যি সত্যি ভালোবাসেন?আমার কেনো জানি ডাউট হচ্ছে।
আদ্রিয়ান সেই কথা শুনে কল কেটে দিলো।আর আবার গান শুনতে লাগলো।কারণ তার এখন কারো কথা শুনতে ইচ্ছে করছে না।
???
শোনো না, রূপসী, তুমি যে শ্রেয়সী
কি ভীষণ উদাসী, প্রেয়সী
না, না, না, না, না, না
জীবনের গলিতে, এ গানের কলিতে
চাইছি বলিতে, “ভালোবাসি”
গান শুনতে শুনতে আদ্রিয়ান ওখানেই ঘুমিয়ে পড়লো।
কিছুক্ষন পর হঠাৎ কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে আদ্রিয়ান চমকে উঠলো।আদ্রিয়ান তাকাতেই দেখে অহনা।
–তুমি এখানে?আমার বাসায় আসার সাহস হলো কি করে তোমার?
অহনা তখন বললো, ভালোবাসার মানুষের বাসায় আসতে আবার সাহস লাগে নাকি?
আদ্রিয়ান অহনাকে তার বাসায় দেখে এতো বেশি রেগে গেলো যে রাগ করে বললো,
অহনা আমার তো এখন পুরো সন্দেহ হচ্ছে যে তুমি নিজে মিডিয়ার লোকদের খবর দিয়েছো।
তুমি ইচ্ছা করেই করেছো এটা।যাতে আমার ইমেজ নষ্ট হয়ে যায়।কারণ তুমি ভীষণ খুশি হয়েছো আমাদের রিলেশনের কথা প্রকাশ হয়ে।
অহনা তখন বললো, ছিঃ ছি। কি বলছেন এসব?আমি কেনো আপনার মানসম্মান নষ্ট করতে চাইবো?শুধু কি আপনার মানসম্মান নষ্ট হয়েছে?আমারও তো মানসম্মান চলে গেছে।
আদ্রিয়ান হঠাৎ সেই কথা শুনে অহনার গলা ধরে বললো, তোমার আবার মানসম্মান আছে?এর আগে তো ভাইরাল হওয়ার জন্য কত কি করেছো?সেগুলো ভুলে গেলে?
অহনা তখন চিৎকার করে বললো, আদ্রিয়ান লাগছে আমার।ছাড়ুন।
আদ্রিয়ান তখন বললো লাগার জন্যই তো ধরেছি।আমার কেনো জানি তোমাকে আজ খুন করতে ইচ্ছে করছে।
অহনা তখন হাসতে হাসতে বললো তাহলে তাই করুন।ভালোবাসার মানুষের হাতে খুন হওয়া টাও ভাগ্যের ব্যাপার।
আদ্রিয়ান সেই কথা শুনে অহনাকে ছেড়ে দিলো।
অহনা তখন বললো আচ্ছা আপনি আবার আমার সাথে কোনো গেম খেলছেন না তো?
আদ্রিয়ান চুপ হয়ে রইলো।
অহনা তখন বললো আমার বিশ্বাস আপনি আমাকে ভালোবাসেন না।কারণ কেউ ভালোবাসার মানুষের সাথে এমন খারাপ ব্যবহার করতেই পারে না।
আদ্রিয়ান কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনি মিঃ আতিক হাসান আর মিসেস তমালিকা খন্দকার রুমে প্রবেশ করলেন।
কারণ অহনা তাদের বাসায় আসায় মিঃ আতিক হাসান আর তমালিকা খন্দকার ভীষণ খুশি হয়েছেন।তারা অহনার সাথে একদম ছেলের বউ এর মতো আচরন করতে লাগলো।তারা ভাবতেই পারছে না শেষ মেষ তাদের ছেলে কাউকে পছন্দ করেছে।আদ্রিয়ানের বাবা মা তো এটাই চাই যে তাদের ছেলেও কাউকে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসুক আর তার ভয়ংকর অতীত টা ভুলে যাক।
আদ্রিয়ানের বাবা মা মনে করছে একমাত্র অহনাই পারবে আদ্রিয়ান কে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আনতে।ভালোবাসার প্রতি যে তার অবিশ্বাস আর ঘৃনার জন্ম নিয়েছে তা একমাত্র অহনাই দূর করতে পারবে।
এদিকে অহনাও ভাবতেই পারছে না আদ্রিয়ানের বাবা মা এতো ভালো মানুষ। তারা কি সহজে মেনে নিচ্ছে অহনাকে।
কিন্তু আদ্রিয়ানের ব্যাপার টা অহনা এখনো বুঝতে পারলো না।কারণ আদ্রিয়ান নিজে তাকে ভালোবাসার কথা বললো।তাকে রিং ও পড়িয়ে দিলো।কিন্তু তার সাথে এখন এমন ব্যবহার করছে যে তাকে সে ভালোই বাসে না।
আদ্রিয়ান কি আদৌ অহনাকে ভালোবাসে তা নিয়ে অহনার মনে সন্দেহের জন্ম নিলো।
এদিকে মিঃ আতিক হাসান আর তমালিকা খন্দকার অহনার বাবা মার ঠিকানা জানতে চাইলো।কারণ তারা আর কিছুতেই দেরি করতে চাইছে না।যে করেই হোক আদ্রিয়ানের সাথে অহনার বিয়ে তারা পাকাপোক্ত করবে।
চলবে,
#প্রেম_প্রেম_খেলা(০৮)
মুমতাহিনা জান্নাত মৌ
আদ্রিয়ান তার নেক্সট মিউজিক ভিডিওর জন্য শুটিং করা শুরু করে দিলো।যেখানে এবারও মেল ক্যারেক্টারে থাকবে আদ্রিয়ান আর ফিমেল ক্যারেক্টারে থাকবে অহনা।
আদ্রিয়ান আছে বিধায় অহনা রাজি হয়েছে।তা না হলে সে জীবনেও রাজি হতো না।
শুটিং শুরু হয়ে গেছে।অহনা আর আদ্রিয়ান বেশ মনোযোগ দিয়েই কাজ টা করছে।
ঠিক সেই মুহুর্তে আদ্রিয়ানের ফোনে কল আসলো।সেজন্য আদ্রিয়ান শুটিং অফ করে একটু দূরে সরে গেলো।
যখন কথা বলা শেষ হলো তখন আদ্রিয়ান শুটিং স্পটে আসলো।কিন্তু তার মুখ খানা বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছিলো। অহনা তখন এগিয়ে এসে বললো,কি হয়েছে আদ্রিয়ান? কোনো সমস্যা?
আদ্রিয়ান তখন বললো অহনা আমাকে আজকেই ঢাকা ছাড়তে হবে।খুব এমারজেন্সি একটা শো তে ডাক পড়েছে আমার।
অহনা সেই কথা শুনে বললো এটা তো অনেক ভালো নিউজ।আপনি চলে যান।
আদ্রিয়ান তখন বললো কিন্তু এই শুটিং এর কি হবে?
অহনা তখন বললো, আপাতত শুটিং বন্ধ থাকবে।আপনি আসার পর বাকি কাজ শুরু করা হবে।
আদ্রিয়ান তখন বললো,
পাগল হইছো তুমি?এতোদিন শুটিং অফ থাকলে আমাদের কত ক্ষতি হবে সে সম্পর্কে তোমার কোনো ধারণাই নাই।তার চেয়ে বরং শো টাই ক্যান্সেল করে দেই।এই বলে আদ্রিয়ান তার ফোন টা নিয়ে কাকে যেনো কল করতে ধরলো।
অহনা তখন বললো কি করছেন এসব?এতো বড় একটা শো এ চান্স পাইছেন সেটা মোটেও হাতছাড়া করা যাবে না।আপনি চলে যান।আমি দেখছি কি করা যায়?
আদ্রিয়ান তখন বললো তুমি আবার কি করবে?
এদিকে তানহা এগিয়ে এসে বললো,দোস্ত কি হইছে?
আদ্রিয়ান তখন তানহাকেও বললো ব্যাপার টা।
তানহা তখন বললো, তোর এখন বাহিরের শোতেই যাওয়া উচিত আদ্রিয়ান। উল্লাস আর সানি তো আছেই।ওদের মধ্যে কাউকে দিয়ে কাজ চালিয়ে নেবো আমরা।
আদ্রিয়ান তখন বললো কিন্তু অহনা যে আমাকে ছাড়া আর কারো সাথে শুটিং করবে না।
তানহা তখন বললো, না করলে আর কি করার আছে?আমি আর সানি করবো তাহলে।
আদ্রিয়ান সেই কথা শুনে হাসতে হাসতে বললো তুই সানির সাথে করবি মডেলিং?যাতে মিউজিক ভিডিও টা ফ্লপ হয় সেই ধান্দায় আছিস তাই না?
তানহা তখন তাহলে কি আর করার আছে?কাউকে না কাউকে তো করতেই হবে।এখন অহনা যদি না কাজ করে তাহলে কি ওর পায়ে পড়ে কাজ করাতে হবে আমাদের?
অহনা সেই কথা শুনে বললো কারো পায়েতেই পড়তে হবে না।আমি করবো কাজ টা।এই বলে অহনা চলে গেলো শুটিং স্পটে।
আদ্রিয়ান তখন অহনার হাত ধরে বললো, তুমি মন থেকে বলছো অহনা?তোমার কোনো প্রবলেম হবে না তো?
–না। হবে না।আপনি আপনার শো টা মনোযোগ দিয়ে করিয়েন।এই বলে অহনা আবার শুটিং স্পটে চলে গেলো।
আদ্রিয়ান সবাইকে সবকিছু বুঝিয়ে দিয়ে আর এক মুহুর্ত দেরী করলো না।তাড়াতাড়ি করে বাসায় চলে গেলো।কারন তাকে যে ব্যাগ প্যাক করতে হবে।
এদিকে অহনা সানির সাথে শুটিং শুরু করে দিলো।কিন্তু অহনার মন কিছুতেই সায় দিচ্ছিলো না।কারণ সানি ইচ্ছাকৃতভাবেই তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় টাচ করছিলো।
সেজন্য অহনা বার বার বলতে লাগলো স্টপ।স্টপ দিছ ভিডিও।
এইভাবে ভিডিওর মাঝখানে বার বার থেমে দেওয়ায় সবাই ভীষণ বিরক্ত হতে লাগলো।কিন্তু অহনা আদ্রিয়ানের কথা ভেবে আবার তার কাজে মন দিলো।কারণ ভিডিও টা সুন্দর না হলে আদ্রিয়ানের যে অনেক বড় লস হয়ে যাবে।
কিছুক্ষণ পর অহনার মনে হলো, না এভাবে সানির সাথে সে কিছুতেই কাজ করতে পারবে না।আদ্রিয়ান ছাড়া অন্য কোনো ছেলে টাচ করবে?ইম্পসিবল। সেজন্য অহনা কাউকে কিছু না বলে শুটিং স্পট ছেড়ে চলে গেলো।অহনাকে হঠাৎ এভাবে চলে যাওয়া দেখে সবাই চিল্লাতে লাগলো।কেউ কিছুই বুঝতে পারছিলো না।
▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️
অনু আদ্রিয়ানের কাপড় গুছিয়ে গুছিয়ে ব্যাগে রাখছে।আর মিসেস তমালিকা খন্দকার আদ্রিয়ান কে খাইয়ে দিচ্ছে।আদ্রিয়ান এতো বড় হইছে তবুও এখনো তাকে খাইয়ে দিতে হয়।তার আম্মু না খাওয়াই দিলে সে কিছুতেই খেতে চায় না।শুধুমাত্র বাহিরে গেলে আদ্রিয়ান নিজের হাতে খাবার খায়।তার আচার আচরণ এখনো শিশুদের মতো।
তমালিকা খন্দকার খাইয়ে দিচ্ছে আর বলছে,বাবা!আমরা কবে বউমাকে দেখতে পারবো এই বাড়িতে?আর কবে তার হাতের মজার মজার রান্না খাবো?
আদ্রিয়ান সেই কথা শুনে বললো, সেটা জীবনেও সম্ভব না আম্মু।আমি বিয়ে করবো না কখনো।আর কতবার বলবো তোমাদের।অনুর হাতের এতো টেস্টি টেস্টি খাবার খেয়েও মন ভরছে না তোমার?
–না ভরছে না।
আদ্রিয়ান তখন বললো,তোমার যখন আরো মজার মজার রান্নার খাওয়ার এতই শখ তাহলে ভালো ভালো কিছু সেফ নিয়োগ দেবো।ওকে।
তমালিকা খন্দকার সেই কথা শুনে হাসতে হাসতে বললো,বউমার হাতের রান্না আর সেফের হাতের রান্না কি এক হবে কখনো?আমার সেফ চাই না,বউমাকেই চাই আমার।
হঠাৎ পিছন দিক থেকে অহনা বললো, এই তো আমি এসেছি।
তমালিকা খন্দকার অহনাকে দেখে বেশ হয়ে বললো, অহনা!তোমার কথাই হচ্ছিলো।
অহনা সেই কথা শুনে বললো, আমার কথা হচ্ছিলো? সত্যি বলছেন?
–হ্যাঁ সত্যি বলছি।এই বলে অহনা আদ্রিয়ানের আম্মুকে জড়িয়ে ধরলো।
এদিকে আদ্রিয়ান অহনাকে দেখে ভীষণ রেগে গেলো। আর বললো, তুমি এখানে?তোমার না শুটিং হচ্ছে।
–হ্যাঁ হচ্ছে।
আদ্রিয়ান তখন ধমক দিয়ে বললো তাহলে শুটিং বাদ দিয়ে এ বাসায় কি করো?
অহনা কিছু বলার আগেই তমালিকা বললো,এটা কি ধরনের ব্যবহার আদ্রিয়ান? তুমি সবসময় অহনার সাথে এমন বাজে ব্যবহার করো কেনো?
অহনা তখন বললো,আম্মু!আমি কিন্তু আর কখনোই আপনাদের বাসায় আসবো না।আপনার ছেলেকে বলে দিন হয় সে ঠিক করে কথা বলবে তা না হলে আমাকে হারাবে।
আদ্রিয়ান অহনার কথা শুনে একদম আকাশ থেকে মাটিতে পড়ে গেলো।অহনা তার আম্মুকে নিজেও আম্মু বলে ডাকছে।এতো দূর চলে গিয়েছে সে?আদ্রিয়ান এবার আর তার রাগ কে কন্ট্রোল করতে পারলো না।সে অহনার কাছে গিয়ে বললো, এই তুমি আমার আম্মুকে কি বলে ডাকলে?আমার আম্মু তোমার কোন জন্মের আম্মু ছিলো?
অহনা আদ্রিয়ানের রাগ দেখে একদম ভয় পেয়ে গেলো।সে একদম কেঁদেই ফেললো।
তমালিকা খন্দকার তখন আদ্রিয়ান কে উলটো ধমক দিয়ে বললো, আমি বলেছি আম্মু ডাকতে।আর অহনা শুধু আজ না,এখন থেকে সবসময় আম্মু আম্মু বলেই ডাকবে।
আদ্রিয়ান বুঝতে পারছে না তার মা অহনার এতো ভক্ত হলো কেমনে?তাছাড়া অহনা কেনো শুটিং ছেড়ে এসেছে সেটাও জানা হলো না তার।তার আম্মু থাকতে কিছুই বলা যাবে না।সেজন্য আদ্রিয়ান বললো,
আম্মু তুমি একটু বাহিরে যাবা এখন?আর অনু তুইও চলে যা।আমার অহনার সাথে একটু আলাদা ভাবে কথা আছে।
তমালিকা তখন হাসতে হাসতে বললো ওকে বাবা।যাচ্ছি।এখনকার ছেলেমেয়েদের মতিগতি বোঝা বড় দায়।আর তার নিজের ছেলের মতিগতি তো বোঝায় যায় না।এই বলে তমালিকা বের হয়ে গেলো রুম থেকে।
আদ্রিয়ান যখন অহনাকে প্রপোজ করেছিলো তখন অহনার বান্ধুবীরা কিছু ছবি উঠায়ছিলো।।সবগুলো ছবি অহনা নিজের কাছে অনেক যত্ন করে রেখেছে।আর এই ছবিগুলোই আদ্রিয়ানের মা বাবা দুইজনই দেখেছে।কারণ সবাই যখন বলাবলি করছিলো আদ্রিয়ান অহনাকে ভালোবাসে, সবাই বিশ্বাস করলেও আদ্রিয়ানের বাবা মা বিশ্বাস করে নি।কারণ আদ্রিয়ান কারো সাথে প্রেম করবে বা ভালোবাসবে এটা ইম্পসিবল ব্যাপার ছিলো।আদ্রিয়ানের বাবা মা কনফার্ম হওয়ার জন্য অহনার কাছে গিয়েছিলো।অহনা তখন ছবিগুলো দেখিয়েছে।তবে দিয়ে তারা বিশ্বাস করেছে।এজন্য তমালিকা খন্দকার এতো বেশি ভালোবাসছেন অহনাকে।কারণ তমালিকা চাইছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তার এই বদমেজাজি ছেলেকে বিয়া করাবেন তিনি।যেহেতু আদ্রিয়ান ও অহনাকে ভালোবাসে তাহলে কিসের আর দেরি?
কিন্তু তিনি তো আর জানেন না আদ্রিয়ান ভালোবাসার নাটক করছে?
▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️
তমালিকা খন্দকার চলে যাওয়ার সাথে সাথে আদ্রিয়ান বললো,তুমি শুটিং করা বাদ দিয়ে কি জন্য এ বাসায় এসেছো?
অহনা তখন বললো আমি সানির সাথে শুটিং করতে পারবো না।
–কেনো পারবে না?
অহনা তখন বললো, আপনি কি রকম ভালোবাসার মানুষ হে?
যে তার প্রেমিকাকে অন্য আরেকজন ছেলের হাতে দিয়ে আসেন?
আদ্রিয়ান তখন বললো আমি কি সানির সাথে তোমাকে প্রেম করতে বলেছি?
অহনা তখন বললো সানি আমার শরীরে টাচ করতেছিলো যা আমার অসহ্য লেগেছে।সেজন্য আমি চলে এসেছি।আমি পারবো এই কাজ করতে। সরি আদ্রিয়ান।
অহনার কথা শুনে আদ্রিয়ানের মাথা এতো গরম হলো যে সে রাগ করে বললো অহনা বের হয়ে যাও আমাদের বাসা থেকে।আর কখনোই আসবে না এখানে।
কিন্তু অহনা আদ্রিয়ানের রাগ যেনো বুঝতেই পারলো না।সে তখন বললো,
কেনো আসবো না?একশো বার আসবো।এই বলে সে আদ্রিয়ানের বিছানায় ধপাস করে শুয়ে পড়লো। আর বললো,ইশঃ কবে আসবে সেই দিন।যেদিন আমরা দুইজন একসাথে ঘুমাবো এই বিছানায়।এই বলে সে আদ্রিয়ানের হাত ধরেও দিলো এক টান।আর সেজন্য আদ্রিয়ান ও বিছানায় এসে পড়লো।
আদ্রিয়ান অহনার এমন কান্ড দেখে কি বলবে সত্যি তার মাথাতেই আসছিলো না।সে তখন বললো অহনা!তুমি কি মানুষ নও?
–এ কথা বলছেন কেনো?
আদ্রিয়ান তখন বললো, না মানে তুমি এতো লজ্জাহীন কেনো?এইভাবে যে আমাদের বাসায় আসছো,তারপর আমাকে যে বিছানায় শোয়ালে এটা কোনো ভদ্র মেয়ের কাজ?
অহনা তখন বললো আমি কবে বললাম যে আমি ভদ্র?
আদ্রিয়ান অহনার এমন উত্তর শুনে সত্যি টাস্কি খেয়ে গেলো।সে তখন বললো অহনা তুমি কিন্তু এবার তোমার সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছো?
অহনা সেই কথা শুনে বললো কই ছাড়িয়েছি সীমা?এখনো ছাড়ি নি।আমরা দুইজন দুইজনকে ভালোবাসছি,লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করছি বাট এখনো আমি বা আপনি একটা কিস পর্যন্ত করতে পারলাম না।এটা কি মানা যায় কখনো?এই বলে অহনা তার চোখে হাত দিয়ে বললো,ধ্যাত কি বলছি এসব?এসব তো আপনি বলবেন।
আদ্রিয়ান তখন বললো,তুমি এতো দূর পর্যন্ত চলে গিয়েছো অহনা?ছিঃ। আমি সত্যি ভাবতে পারছি না আর। এ আল্লাহ! এই মেয়ের হাত থেকে আমাকে বাঁচাও।
অহনা তখন উঠে এসে আদ্রিয়ানের বুকের উপর ঝুঁকে তার মুখ স্পর্শ করে বললো, এটা আর সম্ভব না আদ্রিয়ান। কেউ আর আপনাকে আমার থেকে আলাদা করতে পারবে না।আপনি যখন আমাকে ভালোবাসার কথা বলেছেনই তখন এই আমি আপনাকে বিয়েও করবো,তারপর বাসরও হবে আমাদের।আর কিছুদিনের মধ্যে ঘরভর্তি পোলাপান ও হবে।সব হবে।শুধু সময়ের অপেক্ষায় আছি।
আদ্রিয়ান তখন অহনাকে সরিয়ে দিয়ে বললো, তোমার মাথায় মনে হয়ে প্রবলেম আছে অহনা।তা না হলে একজন মেয়ে মানুষ এতো বেহায়া কেমন করে হয়?
অহনা তখন হাসতে হাসতে বললো, আমার বান্ধুবীরাও সেম কথা বলে। আর আজ আপনিও বলবেন।তাহলে আরেকটু পাগলামি করি?এই বলে অহনা আদ্রিয়ানের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসতে লাগলো।
আদ্রিয়ান তখন বললো, এভাবে আমার দিকে আসছো কেনো অহনা?
আদ্রিয়ান অহনার এমন আচরণ দেখে মনে মনে ভাবলো এই মেয়ে আবার জোর করে কিছু করবে নাকি?জীবনে তো অনেক মেয়েকেই দেখেছি।কিন্তু এরকম লজ্জাহীন মেয়ে তো দেখি নি।অহনা যে একজন মেয়ে মানুষ সত্যি আমার সন্দেহ হচ্ছে এখন।
হঠাৎ আদ্রিয়ানের বাসায় তানহাও আসলো।সে এসেই সোজা আদ্রিয়ানের রুমে প্রবেশ করলো।আর দুইজনকে এভাবে বিছানায় শোয়া দেখে চিৎকার করে বললো,আদি!এসব হচ্ছে টা কি?
আদ্রিয়ান একদম চমকে উঠে বিছানায় বসলো।আর অহনা তো ছিটকে পড়ে গেলো।
তানহা তখন হাতের তালি দিয়ে বললো, বাহঃ খুব ভালো লাগলো দৃশ্য টা।তা তোদের সম্পর্ক যখন বিছানা পর্যন্তই গড়িয়েছে তাহলে বিয়ে কেনো করছিস না তুই?
এতো সাধু সাজার কি আছে আদি?
আদ্রিয়ান তখন বললো তানহা আগে শুনবি তো পুরো কথা টা?
কিন্তু তানহা কিছু না বলেই চলে গেলো।
আদ্রিয়ান তখন রাগ করে অহনার দুই গালে দুই টা চড় মেরে বললো, এরকম বেহায়া আর নির্লজ্জ মেয়ের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নাই।আর শুনে রাখো আমি তোমাকে কোনোদিন ভালোবাসিও নি।আর বাসবো ও না।বের হয়ে যাও আমাদের বাসা থেকে।
অহনা আদ্রিয়ানের চড় খেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললো আমাকে মারলেন আপনি?আর কখনোই যাবো না আপনার বাসা থেকে।এই যে বসলাম হাঁটু গেড়ে।আজ থেকে আমি এই বাসাতেই থাকবো।দেখি কি করে আমাকে তাড়ান আপনি?
আদ্রিয়ান কি করবে সত্যি বুঝতে পারছিলো না।অহনাকে সে অনেক সহজ সরল মেয়ে ভেবেছিলো। কিন্তু এই মেয়ে তো দেখি তাকে নাকে দরি দিয়ে ঘোরাচ্ছে।তার উদ্দেশ্য তো সফল হলোই না,বরং উলটো ঘাড়ের উপর চড়ে বসেছে অহনা।
কিন্তু অহনা এরকম কেনো করছে?
আদ্রিয়ান রাগ করে সেজন্য নিজেই বাসা থেকে বের হয়ে গেলো।
চলবে,