“বউ যখন কাজের মেয়ে” >পর্ব-৩২

0
2887

“বউ যখন কাজের মেয়ে”
>পর্ব-৩২
লিখা-মান্না ইসলাম মাহিম
.
মাহিম:-আমাদের বাসায় ঔভাবে থাকতে আপনার ভালো লাগবে?
মাহিমের কথা শুনে প্রিয়া মাহিম দিকে অন্যরকম একটা মায়ার দৃষ্টিতে তাকালো।মাহিম ও প্রিয়ার দিকে তাকাতেই প্রিয়া তার চোখ সরিয়ে বলল..
প্রিয়া:-আপনার কি মনে হয় আমার জীবনে ভালো মন্দ আর কিছু বাকি আছে?
মাহিম:-সেটা আপনার দোষে,আপনার নিজের দোষে(একটু বিরক্তিকর ভাবে)
মাহিমের কথা শুনে প্রিয়া মাহিমের দিকে তাকালো।তারপর রেগে মাহিমের দিকে তাকিয়েই বলল..
প্রিয়া:-হ্যা সব তো আমার-ই দোষ সবকিছু তো আমিই করি..
কাদো কাদো ভাবে রেগে বলেই প্রিয়া মুখটা অন্যদিকে ঘুরে নিল..!
মাহিম প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখলো মুখটা কালো করে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে।মাহিম কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর বলে উঠলো…
মাহিম:-আপনি চাইলে বাড়ির কাজের বদলে আমি আপনাকে একটা চাকরীর ম্যানেজ করে দিতে পারি…”
ড্রাইভিং ড্রাইভিং করতে বলল মাহিম।প্রিয়া মাহিমের কথা শুনে মাহিমের দিকে একবার তাকালো।তারপর স্বান্ত ভাবে বলে উঠলো..
প্রিয়া:-বাড়ির কাজের মেয়ে কে হঠাৎ চাকরী ম্যানেজ করে দিতে চাইছেন কেন?
প্রিয়ারর শুনে মাহিম প্রিয়ার দিকে একটু রাগি লুক দিয়ে তাকাতেই ….
প্রিয়া:-না অবস্স আপনার মতো নিশ্চই অনেক লোক-ই আছে যারা এখনো…..
মাহিম:-জাস্ট স্টাফ!একদম চুপ….
রাগি কন্ঠে ধমক দিয়ে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে।প্রিয়া একদম নিশ্চুপ!
মাহিম:-খুব কথা বেড় হচ্ছে না মুখ দিয়ে?এখন আবার আমায় টিজ ও করছেন?আপনার এত সাহস হলো কি করে?(রেগে)
প্রিয়া:-আপনিই বা বাড়ির কাজের মেয়ে কে চাকরীর কথা বলছেন কেন?
মাহিম:-আপনাকে কিচ্চু করতে হবে না।আপনি সারা জীবনই বাড়ির কাজের মেয়ে হয়েই থাকুন।
আমি আর কখনই আপনাকে ভালো কথা বলবো না ওকে!
রেগে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে বলেই মাহিম মুখটা ঘড়িয়ে নিল।প্রিয়াও আর কিছু বলর না।মাহিমের দিকে একবার তাকিয়ে মুখ অন্যদিকে করে চুপ করে রইলো!এরপর আর মাহিম কিছু বলছে না।প্রিয়াও চুপ করে বসে রইলো!কিছুদূর যেতেই মাহিম একটা রেস্টুরেন্ট এর সামনে গাড়িটা ব্রেক করলো।তারপর মাহিম গাড়ির ভিতর থেকে বেড় হয়ে আসলো।কিন্তু প্রিয়া এখনো গাড়ির ভিতরেই বসে রইলো।মাহিম প্রিয়াকে গাড়ির এখনো পর্যন্ত বসে থাকা দেখে রেগে বলতে লাগলো..
মাহিম:-কি হলো আপনি এখনো বেড় হচ্ছেন না কেন?(প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া:-আপনি খেয়ে আসুন আমি কিছু খাবো না!(একটু অভিমানী সুরে)
মাহিম:-এই দেখুন আপনি কিন্তু আমার wife না।আর আমিও কিন্তু আপনার Husband না।so আমার সামনে এত ন্যাকামি করবেন না।এইসব আমার একদম ভালো লাগেনা।(রাগি কন্ঠে বিরক্তিকর ভাবে)
প্রিয়া মাহিমের কথা শুনে মাহিমের দিকে তাকাতেই দেখলো মাহিম অনেকটাই রাগি দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে।এরপর প্রিয়া আর কিছু না বলে চুপচাপ বেড় হয়ে আসলো!
রাতের dnnr শেষ করে প্রিয়া আর মাহিম দু-জনি রেস্টুরেন্ট এর থেকে বেড় হয়ে আবার গাড়ি করে রওনা হলো।কিছুদূর যেতেই মাহিমকে তুন্নি ফোন ফোন করলো।মাহিম প্রায় ১০/১৫মিনিট কথা বলল।তারপর ফোনটা রেখে মাহিম প্রিয়ার দিকে তাকাতেই দেখলো প্রিয়া সিটে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে আছে।মাহিম কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর বলে উঠলো..
মাহিম:-তো আপনারা বিয়ে করছেন কবে?
মাহিমের কথা প্রিয়ার কানে পরতেই প্রিয়া চোখ।তারপর মাহিমের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো..
প্রিয়া:-মানে?
মাহিম:-এমন ভাব করছেন যেন কিছুই জানেন না?
বলছি আপনি আর আপনার শিহাব বিয়ে করছেন কবে?
মাহিমের কথা শুনে প্রিয়া রেগে বিরক্তিকর ভাবে মাহিমের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো..
প্রিয়া:-দেখুন আপনার এইসব আজে-বাজে কথা শুনতে আমার একদম ভালো লাগছে!প্লিজ আপনি একটু চুপ থাকবেন!
রাগি বিরক্তিকর ভাবে বলেই প্রিয়া অন্যদিকে মুখ করে চুপ করে রইলো।মাহিম প্রিয়ার কথা শনে প্রিয়ার দিকে তাকালো দেখলো রাগি ভাবে চুপ করে আছে।মাহিম কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর আবার ও বলে উঠলো.
মাহিম:-বিয়ের আগে নাকি আপনার শিহাব প্রায় আসা যাওয়া করতো!আপনিও কি তাদের বাসা যেতেন নাকি….?
মাহিমের কথা কানে পরতেই প্রিয়া প্রছন্ড রাগ নিয়ে মাহিমের দিকে তাকিয়ে বিরক্তিকর ভাবে..
প্রিয়া:-হুমম যেতাম তো কি হয়েছে?তাতে আপনার কি?
প্রিয়ার কথা বলা শেষ হতেই মাহিম গাড়িটা ব্রেক করলো।তারপর প্রিয়ার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে বলতে লাগলো..
মাহিম:-আপনি যে একটা খারাপ নষ্টা চরিত্রহীন মেয়ে।এই কথাগুলোই হচ্ছে তার প্রমাণ।(রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া কিছু বলছে না হতাশ দৃষ্টিতে মাহিমের দিকে তাকিয়ে রইলো!এরপর মাহিম আবার বলতে শুরু করলো…
মাহিম:-এখন আমার কি ইচ্ছে করছে জানেন?ইচ্ছে করছে আপনাকে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি থেকে বেড় করে এই মাঝ রাস্তায় আপনাকে রেখে যেতে(রাগি কন্ঠে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া কিছুক্ষণ চুপ করে শান্ত ভাবে মাহিমের দিকে তাকিয়ে থাকার পর বলতে লাগলো..
প্রিয়া:-হ্যা দিন না এটাই তো আমার জায়গা।এইসব-ই তো আমি যোগ্য।
চোখের কোনায় জল নিয়ে কাদার মতো করে বলেই মাহিমের দিক থেকে মুখটা ঘুড়িয়ে নিল!
মাহিম কিছুক্ষণ প্রিয়ার দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে থাকার পর আবার গাড়ি স্টার্ট করলো!এরপর আর কেউ কোন কথা বলল না।দু-জনই চুপ করে রইলো!বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত ১১টা বেজে গেলো।মাহিম প্রিয়াকে নিয়ে বাসায় ঢুকতেই অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হলো মাহিমকে!প্রিয়াকেও অনেক কথা শুনতে হলো বাট প্রিয়া শুধু মাথা নিচু করে সবার সব কথা শুনলো।কোন উত্রর করলো না।সবাই চলে যাওয়ার পর প্রিয়া চোখের জল মুছে উপরে চলেগেলো!
ক্লান্ত লাগছিল মাহিম রুমে এসে সুয়ে পরলো!
ভোরের এইদিকে মাহিমের ঘুম ভাঙ্গলো।কেমন জানি শিত শিত অনুভাব করছে।মাহিম চোখ খুলতেই দেখলো বাহিরে পছন্ড বৃষ্টি হচ্ছে!হালকা বাতাশও উঠেছে।জানালাটা বন্ধ না করায় অনেকটা বেশিই শিত করছে।মাহিম উঠে জানালাটা বন্ধ করে আবার সুতে যাবে তখনি চোখে পরলো প্রিয়া রুমে কোথাও নেই!
কাল রাতে বাসায় ফেরার পর তো মেয়েটার আর কোন খোজই নেওয়া হয়নি!এই ভোর বেলা আবার কোথায় গেলো।তারপর যখন রুমের বাহিরে আসতে যাবে ঠিক তখনি দেখলো প্রিয়া সেই প্রথম রাতের মতো করেই তার রুমের দরজার সামনে।বাহিরে বৃষ্টি ঠান্ডায় ছোট্ট বাচ্চাদের মতো গুটিসুটি হয়ে শুয়ে আছে।মেয়েটার মায়া ভরা মুখটির দিকে একবার নজর পরলে ইচ্ছে করে সরিয়ে নিতে।মাহিম কিছুক্ষণ প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকার পর।প্রিয়াকে কয়েকবার ডাকলো কিন্তু কোন সারা পেলো না।তারপর একহাটু ফেলে বসে প্রিয়াকে ডাকতে প্রিয়ার গা এ হাত দিতেই দেখলো সারা রাত ঠান্ডা লাগাতে প্রিয়ার শরিল কেমন জানি পাথের মতো ঠান্ডা হয়েগেছে।এরপর আর ডাকাডাকি না করে মাহিম প্রিয়াকে কোলো উঠিয়ে রুমে ভিতরে আসলো।মাহিম প্রিয়াকে কোলে করে খাটের এইদিকে আসছিল অমনি আকাশে বিদ্যুৎ চমকাতেই প্রিয়া ঘুমের মধ্যেই ভয়ে মাহিমের বুকে মুখটা লুকিয়ে মাহিমের শার্ট এর কলার চেপে ধরলো!মাহিম খেয়াল করলো প্রিয়া তাকে এমন ভাবে জরিয়ে ধরেছে যেন মনে হচ্ছে প্রিয়া তার পৃথিবীর থেকে আপন মানুষটা কে কাছে পেয়েছে।ছাড়তেই চাইছে না!
…waiting for next part…
পর্বটি ছোট্ট করার জন্য দুঃখিত।
আগামী পর্ব বড় আর তারাতারি দেওয়ার চেষ্টা করবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here