বউ_যখন_কাজের_মেয়ে পর্ব ১

0
5990

বউ_যখন_কাজের_মেয়ে পর্ব ১
.
গল্পটি সবাইকে পড়ার জন্য অনুরধ করলাম
আশা করি সবাই পড়বেন।
Witer:MD Mahim Ahmed
,
,
,
অবশেষে মাহিম আর প্রিয়ার বিয়েটা হয়েই গেল।
প্রিয়ার সবার কাজ থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে গিয়ে উঠলো।
,
,
বউ সেজে প্রিয়া বসে আছে,মাহিম এখন বাসর ঘরের সামনেই দাড়িয়ে আছে।
অনেক কিছু ভেবে মাহিম ঢুকে পড়লো ঘরে।
,
,
মাহিম ঘরে আসা শব্দ পেয়ে প্রিয়া মাহিমের কাছে আসলো,এসে সালাম করতে প্রিয়া মাহিমের পা ছুতে যাবে ঠিক তখনি মাহিম পা সরিয়ে নিয়ে তারপর তার কাদ ধরে তুলে
ঠাসস করে একটা চর বসিয়ে দিল প্রিয়ার গালে।
,
,
,
প্রশ্ন:কেন মাহিম প্রিয়াকে চর মারলো?
উত্রর:রাগ,অভিমান নাকি প্রতিশোধ?
যানতে হলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।
,
#শুরু
ভাঙা বেড়ার ফাঁক দিয়ে ভোরের প্রথম আলো ড়এসে প্রিয়ার মুখে পড়ল। প্রিয়া ওপাশে ফিরে শোয়ার সময় অনুভব করলো গায়ে প্রচন্ড ব্যথা। চোখ খোলার চেষ্টা করলো। মাথাও ব্যথা করছে। হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরলো।গায়ে জ্বর উঠেছে, আস্তে আস্তে উঠে বসলো। কিন্তু চোখ খুলতে ইচ্ছা করছে না। পায়ের কাছে রাখা ছেঁড়া কাঁথাটা গায়ে পেচিয়ে বসে রইলো। মানুষ যখন অসুস্থ থাকে, তখন নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়। তবে কাছে আপনজন থাকলে অসহায়বোধ কিছুটা কম লাগে।
প্রিয়ার বাবা মা মারা গেছে ওকে ছোট রেখে, সেই থেকে প্রিয়া মামার সংসারে বড় হয়েছে। প্রিয়ার বাবার সামান্য কিছু সম্পত্তি ছিল, তা দিয়ে মামা প্রিয়াকে মেট্রিক পাশ করিয়েছে। তার জন্য মামীর মুখে রাতদিন গালমন্দ শুনতে হয় মামাকে। মামা এই বাড়ির ঘর জামাই। মামা অবশ্য এই বাড়িতে থাকতে চায়নি, কিন্তু মামা সামান্য বেতনের চাকরি করে। সেই টাকা দিয়ে থাকা খাওয়া কষ্ট হয়ে যাবে, তাই এই বাড়িতে পড়ে আছে। মামার অসহায় মুখটা দেখলে প্রিয়ার খুব কষ্ট হয়। মামার ইচ্ছা করে প্রিয়াকে বাবা মায়ের আদর ভালোবাসা দিতে, কিন্তু তার স্ত্রীর জন্য পারে না। কারণ মামী চাই না প্রিয়াকে কেউ আদর করুক। প্রিয়াকে মামী কাজের মেয়ের মতো রাখে, তাতেই প্রিয়া খুশি। কারণ প্রিয়ার আর যাওয়ার কোনো জায়গা নেই।
প্রিয়া ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ালো, কাঁচা মাটিতে পাড়া দিতেই প্রিয়ার শরীর কেঁপে উঠলো। ইচ্ছে করছে শুয়ে পড়তে, কিন্তু ইচ্ছে করলেও প্রিয়া আর আরাম করতে পারবে না। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সংসারের সব কাজ প্রিয়াকেই করতে হয়। ঘর থেকে বেরিয়ে বাইরে এসে দাঁড়ালো। উঠানের মাটি যেনো আরো বেশি ঠান্ডা মনে হচ্ছে। প্রিয়া অনেক কষ্টে উঠান ঝাড়ু দিয়ে নাস্তা তৈরী করতে বসলো। গ্রামের বাড়ি, ছোট ছোট ছেলে -মেয়েরা ঘুম থেকে উঠেই দৌড়াতে লাগলো। মাটির চুলার ধোঁয়া এসে প্রিয়ার চুখে লাগলো চোখ লাল হয়ে গেল। প্রিয়া চোখ মুছে রুটি বানাতে লাগলো। মামী এসে প্রিয়ার সামনে দাঁড়ালো। মামীকে দেখলেই ভয়ে প্রিয়ার শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়
মামী রেগে বলতে লাগল:-এতো বেলা অইলো, এহনো নাস্তা তৈরি অয় নাই। আইজ কি না খাওয়াইয়া রাখবি?
প্রিয়া:-মামী গায়ে অনেক জ্বর ছিলো,তাই উঠতে একটু দেরি হয়ে গেছে। আপনি ঘরে গিয়ে বসুন। আমি নাস্তা নিয়ে আসছি।
মামী:-খবরদার আমার সামনে কহনো তোর অসুখের কথা কবি না। এই বাড়িতে থাকতে অইলে কাম কইরা ভাত খাওন লাগবো, শরীর সুস্থ না অসুস্থ তা আমি দেখুম না। আমি চাই কাম। চিৎকার শুনে মামা আর শীলা দৌড়ে এলো।
মামা:-কি হয়েছে রাহেলা?
মামী:-এতো বেলা অইছে এহনো নবাবজাদীর নাস্তা তৈরি অয় নাই,কয় কাইল রাইতে বলে জ্বর অইছে, তাই উঠতে আইজ দেরি অইছে, ওরে তুমি সাবধান কইরা দেও, কহনো যাতে ওর অসুখের কতা আমার সামনে না কয়।
মামা:-রাহেলা তুমিও তো একটি মেয়ের মা,নিজের মেয়েকে এতো আদর করো,এতো ভালোবাসো, আর এই অসহায় মেয়েটার সাথে একটু ভালোভাবে কথাও বলতে পার না তাই বলে।
মামী:-ভাগ্নির লাইগা যদি এতোই দরদ লাগে, তাইলে আলাদা বাড়ি ভাড়া কইরা রাখলেই পারো। মামা:-যদি আমার সেই সামর্থ থাকতো তাহলে দূরে কোথাও পাঠিয়ে দিতাম, তবুও তো এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতো।
,
প্রিয়া এসে মামার সামনে দাঁড়ালো।
প্রিয়া:-মামা আমার এখানে কোন কষ্ট হচ্ছে না, আর সংসারের কাজ তো সবাইকে করতে হয়। আমিও করি। আপনি এসব নিয়ে চিন্তা করবেন না।
,
মামী রেগে চলে গেল। প্রিয়া দাঁড়িয়ে রইলো। শীলা এসে প্রিয়ার কপালে হাত রেখে বলল,
শীলা:-আপু তোমার তো অনেক জ্বর, তুমি গিয়ে শুয়ে থাক, আজ সব কাজ আমি করবো।
,
প্রিয়া শীলার দিকে তাকিয়ে একটু হাসলো,তারপর একটা দীর্ঘ নিঃস্বাস ফেলে বললো
প্রিয়া:-শীলা তুই পড়তে বস, আমি নাস্তা নিয়ে আসছি।
শীলা:-না তুমি যাও আমি সব করছি
প্রিয়া:-বললাম না যা গিয়ে পড়তে বস
,
শীলা মাথা নিচু করে চলে গেলো।এই শীলাই প্রিয়ার একমাত্র সঙী, বয়স তেরো চৌদ্দ হবে, বয়স কম হলেও প্রিয়ার সুখ-দুঃখ সবই বুঝে। শীলা আর মামা আছে বলেই প্রিয়া সব দুঃখ ভুলে থাকতে পারে। প্রিয়া তাড়াতাড়ি নাস্তা তৈরি করতে লাগলো।
,
,
,
এভাবে আরো ২টা বছর কেটে যায়।
এই ২টা বছরে একএক করে প্রিয়ার তিনটি বিয়ে ভেঙে যায়,তিনটি বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর প্রিয়ার মামা প্রিয়ার জন্য আরো ছেলে দেখতে চেয়েছিল কিন্তু প্রিয়া না করে দেয় যে সে আর কোন দিনিই বিয়ে করবে না,তার কপালে বিয়ে নেই বারবার বিয়ে ভেঙে যায় লোকদের নানান ধরনের কথা শুনতে তার ভালো লাগেনা।
সে যেমনি আছে এমনি থাকতে চায়।
,
,
,
“আজকে শীলাকে ছেলে পক্ষ দেখতে আসছে,
শীলা মন খারাপ করে বসে আছে।
প্রিয়া:-কিরে তুই এখনো বসে,ঐদিকে তো সবাই তোর জন্য বসে আছে চল তারাতারি রেডি হয়েনে।
শীলা:-থাকুক বসে,আমি কিছুতেই তাদের সামসে যাব না।
প্রিয়া:-কেন?
শীলা:-আপু আমি এইবিয়ে কিছুইতেই করবো না
প্রিয়া:-আরে ছবির থেকেও ছেলেটা দেখতে অনেক সুন্দর একদম রাজপুত্র।আর ছেলেটা নাকি এখন তার বাবা কম্পানিতেই চাকরী করে।
শীলা:-তবুও আমি এইবিয়ে করবো না।
প্রিয়া:-সবকিছুই তো ভালোই আছে,তাহলে তোর বিয়েটা করতে সমস্যাটা কি?তুই কি কাউকে পছন্দ করিস নাকি?করলে বল আমি গিয়ে না করে দিচ্ছি।
শীলা:-না সেটা না।
প্রিয়া:-তাহলে?
প্রিয়া হচ্ছে শীলার বড় আর বড়বনের বিয়ে নাহতেই ছোট্টবনের বিয়ে এতে লোকে নানানধনের বাজে কথা বলবে, প্রিয়াকে নিয়ে গ্রামের লোকজন অনেক হাসা-হাসি করবে।
সে জন্য শীলা এখনি বিয়ে করতে চাইছে না।
শীলা:-আগে তোমার বিয়ে হবে,তুমি শ্বশুড় বাড়ি যাবে তারপর আমি বিয়ে করবো।
প্রিয়া:-ওহ্,এবার বুঝতে পারছি তোর সমস্যাটা কি?দেখ এইসব নিয়ে এখন আমি আর ভাবিনা,আমার জন্য তো মামা অনেক চেষ্টা করলো কিন্তু কোনো না কোনো কারণে সেটা ভেঙে যায়।তোর এখনো পুরো জীবনটা আছে তুই শুধু শুধু আমার জন্য তোর জীনবটা নষ্ট করিস না।
শীলা:-আচ্ছা আপু তোমার কি ছেলেটা কে পছন্দ হয়েছে?
প্রিয়া:-হ্যাঁ কেন?(অবাক হয়ে)
শীলা:-না কিছু না,চলো আমাকে রেডি করে দাও
এইবলে শীলা আয়নার সামনে বসে পড়লো।
প্রিয়া ঠিক বুঝলো না।একটু আগে সে বলল বিয়ে করবে না আর তার মুখে পছন্দের কথা শুনে এখন নিজেই রেডি হতে বসলো কেন?।
,
,
,
সবাই বসে আছে মেয়ে দেখবে বলে।একটু পর প্রিয়া শীলাকে নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে আসলো।
এসে শীলাকে বসিয়ে দিল,শীলা মাথা নিচু করে বসে আছে।
মাহিমের মা/ছেলের মা:-বাহ্ মেয়ে তো দেখতে খুবি মিষ্টি,আমার তো পছন্দ হয়েছে তুমি কি বলো মাহিমের বাবা?
মাহিমের বাবা/রায়হান সাহেব:-আমারও তো মেয়ে পছন্দ হয়েছে,এখন তাহলে কথা-বাত্রারা বলে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করে ফেলি
মাহিমের বোন/অর্পা:-বাবা শুধু আমাদের পছন্দ হলে তো হবেনা, যে বিয়ে করবে তারও তো একটা পছন্দ-অছন্দের ব্যাপার আছে তাই না?
মাহিমের দুলাভাই/হুমম সেটাও ঠিক,আচ্ছা দুজন একটু আলাদা রুমে পাঠিয়ে দিন দুজনে একটু আলাদে ভাবে কথা বলুক
প্রিয়ার মামী:-হুমম,এই প্রিয়া যা শীলাকে আর জামাই বাবা অন্যরুমে নিয়া যা।
,
,
এরপর প্রিয়া শীলাকে আর মাহিমকে অন্যরুমে নিয়ে গেল।আর প্রিয়া রুম থেকে বেড়িয়ে গেল।
,
একটু পর প্রিয়া সেই রুমে আবার ঢুকতেই মাহিমের সাথে ধাক্কা লেগে প্রিয়া পরে যাচ্ছিল ঠিক তখন মাহিম প্রিয়ার কমড়ে একহাত ধরে কাছে টেনে নেয়।
দুজনি একদম চুপ কেউ কোন কথা বলছে না,শুধু দুজন-দুজনার চোঁখের দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রিয়ার কিছু চুল তার কপালে এসে পরেছে মাহিম হাত দিয়ে সড়িয়ে দিতে যাচ্ছিল ঠিক তখনি প্রিয়া চমকে উঠে নিজেকে ছাড়িয়ে নিল। বলল:
প্রিয়া:-দুঃখিত আমি আসলে দেখতে পারিনি।(লজ্জিত ভাবে)বলেই দৌড়ে রুম থেকে বেড়ি গেল।আর মাহিম শুধু চুপ করে দাড়িয়ে প্রিয়ার চলে যাওয়াটা দেখছিল।
,
,
এরপর বিয়ে দিন-তারিখ ঠিক করলো ৭দিন পর তাদের বিয়ে।
,
,
রাতের বেলা প্রিয়া রান্না-বান্না শেষ করে হাত-মুখ ধুয়ে রুমে এসে একটু ফ্রেশ হচ্ছি,এমস সময় শীলার ফোনটা বেজে উঠলো।
প্রিয়া ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো রং নাম্বার(কোন নাম দিয়েই শেভ করা নেই)
প্রিয়া ফোনটা হাতে নিয়ে শীলাকে ডাখছিল।
একবার কেটে গেল আবার ফোন আসলো শীলা না আসাতেই প্রিয়া ফোনটা রিসিভ করলো।
প্রিয়া:-হ্যালো আসসালামু-আলাইকুম।
ফোনের ঐদিক থেকে:-ওআলাইকুম-সালাম।
প্রিয়া:-কে?
:-আপনি কে?
প্রিয়া:-আমি শীলার বোন “প্রিয়া
:-ওহ্,আমি মাহিম
প্রিয়া মাহিমের নামটা শুনা মাত্রই চমকে উঠলো আর তার পরে যাওয়াটা তার চোঁখের সামনে ভেসে উঠলো।
মাহিম:-হ্যাঁলো
,
প্রিয়া কিছু বলছেনা চুপ করে আছে
,
মাহিম:-এই যে কথা বলছেন না কেন?
,
প্রিয়া শুধু মাহিম তাকে ধরেছিল সেটাই ভাবছে।
মাহিম:-এই যে হাড়িয়ে গেলেন নাকি?
শীলা:-কে ফোন করেছে আপু(রুমে ঢুকতে ঢুকতে)
প্রিয়া চমকে উঠে ফোনটা নামিয়ে নিল।
শীলা:-কার ফোন?
প্রিয়া কিছু না বলে ফোনটা শীলার হাতে ধরিয়ে রুম থেকে দৌড়ে গেল।
এরপর শীলা কথা বলতে লাগলো মাহিমের সাথে।
,
,
,
এভাবে আরও ৩দিন যাওয়া পর।
,
রাতের বেলা খাওয়া-দাওয়া শেষ করে প্রিয়া আর শীলা ঘুমিয়ে ছিল রাত ১২টা ফোনের শব্দে প্রিয়ার ঘুম ভেঙে গেল।প্রিযা ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখলো মাহিম।
প্রিয়া উঠে বসে পরলো কি করবে বুঝতে পারছেনা।ফোনটা রিসিভ না করায় কেটে গেল।
আবার ফোন আসলো প্রিয়া শীলার দিকে তাকিয়ে দেখলো শীলা ঘুমিয়ে আছে।এতরাতে তাকে ডাকাটা ঠিক হবেনা।প্রিয়া ফোনটা রিসিভ না করে রেখে দিয়ে সুয়ে পড়লো
বারবার ফোন আসছিল কিন্তু প্রিয়া ফোনটা রিসিভ করছেনা।আবার ফোন আসলো এবার কেন জানি প্রিয়া ফোনটা রিসিভ না করে থাকতে পারছিল না,তাই ফোনটা রিসিভ করলো।
মাহিম:-কি ব্যাপার ফোনটা রিসিভ করছিলেন না কেন?
প্রিয়া:-(কাপা কাপা কন্ঠে) শীলা ঘুমিয়ে পরেছে আমি প্রিয়া।
মাহিম:-হুম,আমি জানি তাই তো বারবার ফোন দিচ্ছিলাম
,
প্রিয়া কি বলবে বুঝতে পারছেনা চুপ করে আছে।
মাহিম:-হ্যাঁলো কথা বলছেন কেন?
প্রিয়া:-(কাপা কাপা কন্ঠেই)শীলাকে ডেকে দিব?
মাহিম:-ও ঘুমচ্ছে ঘুমোক,আমরা একটু কথা বলি
প্রিয়া:-আমার ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাবো
এইবলেই প্রিয়া ফোনটা কেটে দিল।
,
,
,
এভাবেই প্ররায় প্রতিদিনি প্রিয়া আর মাহিমের ১/২মিনিট করে কথা হতো।
আস্তে আস্তে প্রিয়া আর মাহিম অনেকটাই কাছের কেউ মনে করে কথা বলতে থাকে।
,
,
বিয়ের আগের দিন মাহিম শীলাকে তার সাথে দেখা করতে বলে একটা রেস্টুরেন্টে,সাথে প্রিয়াকে আসতে বলে।
,
,
“বিয়ের আগের দিন”
রেস্টুরেন্টে প্রিয়া,শীলা আর মাহিম একি টেবিলে বসে কফি খাচ্ছিল।প্রিয়া একটা নীল শাড়ি পড়েছে হাতে নীল চুড়ি বিবাহিত মহিলাদের মতো সাধারন ভাবে সেজেছে সুন্দর বউ বউ লাগছিল প্রিয়াকে।
প্রিয়া লজ্জিত ভাবে মাথা নিচু করে কফি খাচ্ছিল আর তার কিছু চুল কপালে এসে পড়ছে আর প্রিয়া সেটা বিরক্ত হয়ে বারবার সড়িয়ে দিচ্ছিল আর মাহিম সেটা অন্যরকম একটা দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে দেখছিল।
,
,
একটু পর শীলার ফোন বেজে উঠাতেই
শীলা:-আচ্ছা তোমরা একটু কথা বল আমি আসছি
এইবলে শীলা উঠে চলে গেল।একদিকে প্রিয়া আর একদিকে মাহিম বসে আছে।
মাহিম:-একটা কথা বলার ছিল?
প্রিয়া:-শীলা আসুক(ভয় ভয় করে)
মাহিম:-কথাটা আমি আগে আপনাকে বলতে চাই,তারপর আপনি সবাইকে সেটা বলবেন।
প্রিয়া:-হুম,বলুন(মাথা নিচু করে নাগা দিয়ে)
মাহিম:-দেখুন আমি আপনার বোনকে বিয়ে করতে পারবো না।
কথা শুনে প্রিয়া চমকে উঠলো।
প্রিয়া:-কেন শীলাকে আপনার পছন্দ হয়নি?
মাহিম:-হুম হয়েছে,বাট তেমন ভাবেনা যেমন ভাবে আপনাকে আমার পছন্দ হয়েছে।
প্রিয়া:-মানে?(অবক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
মাহিম:-মানেটা হলো যে আমি শীলাকে বিয়ে করতে চাইনা,আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই।
যেদিন আমি তোমাকে প্রথম সুয়ে ছিলাম তোমার ঐ মায়া ভড়া চোঁখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম সেদিন থেকেই আমি তোমার ভালোবাসার মায়ার জালে পড়েগেছি।
কথা গুলো শুনে প্রিয়ার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো।
প্রিয়া:-(কাপা কাপা কন্ঠে)কিক কি সব আজে-বাজে কথা বলছেন?
মাহিম প্রিয়ার হাতটা ধরে বলে লাগলো।
মাহিম:-বিশ্বাস করো প্রিয়া তোমার ঐ মায়া ভড়া চোঁখে যেদিন আমি আমার পৃথিবীটা দেখেছিলাম সেদিন থেকেই আমি একটা রাত ঠিক মতো ঘুমতে পারিনি শুধ বারবার তোমার ঐ মুখটা আমার সামনে ভেসে উঠতো,মন চাইতো বারবার তোমার কাছে যাই, তোমার সাথে থাকি কথা বলি তোমাকে ভালোবাসি।প্রিয়া তোমাকে ছাড়া আমি আর কিছুই ভাবতে পরছিনা “আই লাভ ইউ প্রিয়া”I Really Love you
প্রিয়া:-(হাতটা ছানোর চেষ্টা করে)হাতটা ছাড়ুন মাহিম বাবু।
মাহিম:-প্রিয়া তুমি জাস্ট হ্যাঁ বলো আমি এইবিয়ে কিছুতেই হতে দিব না।তুমি শুধু বলো যে তুমি আমাকে বিয়ে করবে(দুহাত দিয়ে শক্ত করে ধরেই)
প্রিয়া:-(হাতটা ছাড়ানোর চেষ্টা করেই(হাতটা ছাড়ুন বলছি মাহিম বাবু(রাগি কন্ঠে)
মাহিম:-তুমি আগে হ্যাঁ বল
প্রিয়া:-হাতটা ছাড়ুন(এইবলে হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে ঠাসসস করে একটা চড় বসিয়ে দিল মাহিমের গালে)
রেস্টুরেন্টের সবাই তাদের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।মাহিম উঠে দাড়িয়ে মাথাটা নিচু করলো কারণ মাহিমের হলেন একজন নামি-দামি মানুষ অনাকে অনেকেই অনেক ভালো ভাবেই চিনে আর মাহিম অনার একমাত্র ছেলে।
প্রিয়া:-আপনাকে আমি একটা খুব ভালো ভদ্র ফ্যামিলির ছেলে মনে করতাম,কালকে আমার ছোট্টবনের সাথে আপনার বিয়ে আর আজকে আপনি আমাকে এইসব বাজে কথা বলছেন,আপনার একটুও লজ্জা করলো না আমাকে এইকথা গুলো বলতে?
মাহিম:-প্রিয়া আমি তোমাকে ভালোবাসি….
প্রিয়া:-খবরদার আর একটাও বাজে কথা বলবেন না,আপনাকে আমি একদমী পছন্দ করিনা,আপনার এই আসল রুপটা আমি আগে যানতে পারলে আমি কখনই আপনার মতো একটা অসভ্য লোকের সাথে শীলার বিয়েটা হতে দিতাম না।
,
এইরকম আরো অনেক কিছু বলে সবার সামনে মাহিমকে অপমান করে প্রিয়া রেস্টুরেন্ট থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছিল।এমন সময় শীলা ভিতর আসছিল।
শীলা:-আপু কই যাও? কি হয়েছে?
প্রিয়া:-কিছু না চল তারাতারি বাড়িতে যাব
,
এইবলে শীলাকে নিয়ে প্রিয়া বাড়িতে ফিরলো।
,
,
,
প্রিয়া বাড়িতে এসে রাতের বেলা মন খারাপ করে সুয়ে আছে,আর ভাবছে এই প্রথম কোন ছেলে তাকে ভালোবাসার কথা বলল, বিয়ে করতে চাইলো।এর কোন ছেলে তাকে বিয়ের কথা বলেনি ভালোবাসার কথা বলেনি,সবাই শুধু বলতো ১ ঘন্টায় কত? একরাতে কত? এইসব বাজে কথা বলতো প্রিয়াকে।প্রিয়া সুয়ে সুয়ে কাঁদছে যে সে মাহিমকে সবার সামসে এভাবে থাপ্পড় দেওয়া অপমান করাটা ঠিক হয়নি।আসলে এখানে প্রিয়ারী বা দোষ কি? যেখানে রাত পোহালে ছোট্টবোনের সাথে যার বিয়ে তার মুখে এইসব কথা এটা যে কেউই এমনটাই করতো।
,
,
,
“বিয়ের দিন”
,
বিয়ের দিন সবাই কানা-কানি করছে শীলা ছোট্ট একটা চিঠি লিখে পালিয়েছে,আর তার বদলে প্রিয়া বউ।এটা শুনে বর পক্ষ কেউই না মেনে চলে যাচ্ছিল প্রিয়াকে বউয়ের সাজে রেখে
প্রিয়া মামা:-রায়হান সাহেব প্লিজ এমনটা করবেন না,এর আগে এই মেয়েটার আরও ৩টি বিয়ে ভেঙেগেছে এবারও এমনটা হলে আমার মা-বাবা মরা মেয়েটার গলায় দরি দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।(সবার সামনে হাত জোর করে)
রায়হান সাহেব:-দেখুন আপনার যে মেয়ের সাথে আমার ছেলের বিয়ে ঠিক হয়েছিল তাকে ছাড়া আমি আমার ছেলের বিয়ে এইরকম একটা অশিক্ষিত গাইয়া মেয়ের সাথে কখনই হতে দিব না।
প্রিয়ার মামা:-রায়হান সাহেব প্রিয়া অনেক ভালো মেয়ে আপনারা ও কে যা বলবেন ও তাই করবে,দরকার হলে আপনারা ও কে আপনাদের #কাজের_মেয়ে করে রাগবেন,শুধু দুবেলা-দুমুঠো ভাত দিলেই হবে,তবুও আমার এই মেয়েটা বাচান প্লিজ।আপনারা আজকে এভাবে চলেগেল এই গ্রামের মানুষ প্রিয়াকে বাঁচতে দিবেনা।(কেঁদে কেঁদে হাত জোর করে)
,
মাহিম কিছু বলছে না কারণ সেদিন প্রিয়া তাকে যে ভাবে সবার সামনে অপমান করেছে আর মূল কথা হলো যে প্রিয়াই তো মাহিম কে পছন্দ করেনা তার চোঁখে তো মাহিম একজন খারাপ অসভ্য মানুষ।
তাই মাহিম কিছু বলছেনা চুপ করে আছে।
,
রায়হান সাহেব:-দেখুন এটা কোন ভাবেই সম্ভবনা
,
এইবলে সবাই চলে যাচ্ছিল এমন সময়
মাহিমের মা:-দাড়াও মাহিম এই বিয়ে হবে
অর্পা:-বিয়ে হবে মানে কার সাথে মা?
মা:-প্রিয়া সাথেই মাহিমের বিয়ে হবে।কাজী সাহেব বিয়ের কাজ শুরু করুন
মাহিম:-মা আমি প্রিয়ার সাথে আলাদা ভাবে কিছু কথা বলতে চাই
,
,
মাহিমের কথা শুনে সবাই একটু দূরে সড়েগেল।
মাহিম প্রিয়ার কাছে যেতেই প্রিয়া চোঁখে জল নিয়ে কেঁদে কেঁদে হাত জোর করে বলতে লাগলো।
প্রিয়া:-প্লিজ শুধু আজকের জন্য আমাকে বিয়েটা করুন,কালকে সকাল হতেই আমি আপনাদের বাড়ি ছেড়ে চলে যাব।নয়তো এই গ্রামের লোকজন আমাকে আর মামাকে কিছুই বাঁচতে দিবেনা প্লিজ আমার জন্য না আমার মামার জন্য আমাকে বিয়েটা করুন এই পৃথিবীতে মামা ছাড়া আমার কেউ নেই প্লিজ(কেঁদে কেঁদে হাত জোর করে)
,
মাহিম প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখলো দেখলো আজকে ও যদি এইবিয়েটা না করে তাহলে সত্যিই মেয়েটা মনে হয় গলায় দরি দিবে।প্রিয়ার কাঁন্না মায়া ভড়া মুখ দেখে মাহিম বিয়ে করতে রাজি হল।
,
অবশেষে মাহিম আর প্রিয়ার বিয়েটা হয়েই গেল।
প্রিয়ার সবার কাজ থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে গিয়ে উঠলো।
,
,
বউ সেজে প্রিয়া বসে আছে,মাহিম এখন বাসর ঘরের সামনেই দাড়িয়ে আছে।
অনেক কিছু ভেবে মাহিম ঢুকে পড়লো ঘরে।
,
,
মাহিম ঘরে আসা শব্দ পেয়ে প্রিয়া মাহিমের কাছে আসলো,এসে সালাম করতে প্রিয়া মাহিমের পা ছুতে যাবে ঠিক তখনি মাহিম পা সরিয়ে নিয়ে তারপর তার কাদ ধরে তুলে
ঠাসস করে একটা চর বসিয়ে দিল প্রিয়ার গালে।
————–চলবে—————
প্রিয় পাঠক আপনাদের উদ্দ্যেশ্যে আজ থেকে আমার এই নতুন গল্প শুরু হল আশা করি সবাইকে ভাল লাগবে। “বউ যখন কাজের মেয়ে” গল্পটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে যাবেন। অনেকের প্রথম কয়েক পর্ব ভালো না ও লাগতে পারে পরের পর্ব গুলো অবশ্যই ভাল লাগবে)
কেমন লাগলো যানাবেন ২য় পর্ব দিব।
,
( ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন )
#ধন্যবাদ_সবাইকে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here