বউ_যখন_কাজের_মেয়ে
.
পর্ব-১০
Writer by MD Mahim Ahmed
.
প্রিয়া:-যা শুনেছেন তাই বলেছি আমি,ছাড়ুন আমার লাগছে(ছারানোর চেষ্টা করে)
.
মাহিম আরো শক্ত করে টেনে ধরে।
মাহিম:-এই আপনার সাহস তো কম না আপনি…(রেগে)
.
প্রিয়া:-মাহিম বাবু প্লিজ ছাড়ুন আমার লাগছে(ছারানোর চেষ্টা করে কাদো কাদো ভাবে)
.
মাহিম:-আপনি আমার সামনে দাড়িয়ে…..
.
মাহিম আর কিছু বলার আগেই প্রিয়া মাহিমের হাতটা ঝটকা দিয়ে সরিয়ে দিতেই প্রিয়া হাতের চুরি ভেঙ্গে মাহিমের হাতটা কেটে গেল।
মাহিম একটু চিতকার দিয়ে হাতটা চেপে ধরে প্রিয়ার কাছ থেকে সরে গেল।প্রিয়া হতাস হয়ে মাহিমের কাছে গিয়ে..
প্রিয়া:-দেখি কি হয়েছে,..একি হাত দিয়ে তো রক্ত বের হচ্ছে।
.
এইবলে প্রিয়া মাহিমের হাতটা ধরতে যাচ্ছিল,মাহিম হাতটা সরিয়ে নিয়ে।
মাহিম:-কিছু হয়নি থাক(প্রিয়ার কাছ থেকে সরে গিয়ে)
.
প্রিয়া:-আমি তো শুধু হাতটা সরিয়ে দিচ্ছিলাম,বুঝতে পারিনি এমনটা হবে।দেখি(মাহিমের হাতটা ধরানো চেষ্টা করে)
.
মাহিম:-বলছি তো কিছু হয়নি।
.
প্রিয়া:-হাত কেটে তো রক্ত বের হচ্ছে এক্ষনি ঔষধ লাগিয়ে দিতে হবে।
.
এইবলে প্রিয়া তারাতারি ঔষধ নিয়ে এসে
.
প্রিয়া:-দেখি হাতটা দিন।
.
মাহিম:-বললাম না আমার কিছু হয়নি।(রেগে)
.
প্রিয়া:-হাত দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে আর আপনি কিছু হয়নি।দিন তারাতারি ঔষধটা লাগিয়ে দেই।
.
মাহিম:-আমি তো আপনার কেউ না।আমার হাত কেটে রক্ত বের হলে তাতে আপনার কি?(অভিমান করে)
.
এইবলে মাহিম রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছিল এমন সময় প্রিয়া দরজার সামনে গিয়ে দারিয়ে বলতে লাগলো।
প্রিয়া:-আচ্ছা ঠিক আছে এতক্ষন আমি যা বলেছি সব ভূল বলেছি।আর কোদিনও এইসব কথা বলবো না।আপনি প্লিজ ঔষধটা লাগিয়ে নিন(কাঁদার মতো করে হাত জোর করে)
.
মাহিম:-এই কে আপনি আমার যে আমি আপনার কথা শুনবো।আপনি তো এই বাড়ির কাজের মেয়ে আমার বউ না।আপনি বাড়ির কাজের,কাজের মেয়ে হয়েই থাকবেন।কখনো আমার স্ত্রী হওয়া চেষ্টা করবেন না।(রাগ দেখিয়ে)
.
এইবলে মাহিম রুম থেকে বের হয়েগেল।আর প্রিয়া চোখে জল নিয়ে দাড়িয়ে রইলো।
.
.
.
“রাত ১২:৩০”
মাহিম ঘুমিয়ে আছে প্রিয়া মেঝে থেকে উঠে গিয়ে মাহিমের পাশে গিয়ে বসলো।বসে মাহিমের হাতের দিকে তাকালো দেখলো কেটে যাওয়া জায়গাটায় রক্ত জমে আছে।প্রিয়া তার শাড়ীর আচল দিয়ে সেটা অস্তে অস্তে মুছিয়ে দিতে লাগলো।যাতে মাহিমের ঘুম ভেঙ্গে না যায়।তারপর মাহিমের হাতে ঔষধটা লাগিয়ে দিল।তারপর চোখের জল মুছতে মুছতে মেঝেতে গিয়ে সুয়ে পরলো।
.
.
.
“সকাল বেলা”
সকাল বেলা মাহিম ব্রেকফাস্ট না করেই অফিসে গেল।মাহিমের মা অনেক বার বলল খেয়ে যেতে মাহিম শুধু বললো বাহিরে খেয়ে নিবে।
.
.
প্রিয়া রুম পরিষ্কার করছিল এমন সময় মাহিমের বাবা চিৎকার দিয়ে প্রিয়াকে ডাকছিল।
মাহিমের বাবার চিৎকার শুনে সবাই রুম চলে আসলো।
অর্পা:-কি হয়েছে বাবা এভাবে চিৎকার করছো কেন?
.
মাহিমের বাবা:-এই প্যান্টা ধুয়েছে কে?(রেগে)
.
অর্পা:-কি জানি প্রিয়া হয়তো ধুয়েছে।
.
কিছুক্ষণ পর প্রিয়া রুমে এলো
.
প্রিয়া:-বাবা আমাকে ডাকছেন?
.
মাহিমের বাবা:-(প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে)এই প্যান্টা তুমি তুমি ধুয়ে আইরন করে রেখেছো?(রাগি কন্ঠে)
.
প্রিয়া হ্যাঁ বলতেই মাহিমের বাবা খুব জোরে ঠাসসস করে একটা চর বসিয়ে দিল প্রিয়ার গালে।প্রিয়া কিছু বুঝতে পরলো না,হতাশ হয়ে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো মাহিমের বাবা দিকে।
.
মাহিমের বাবা:-আমাকে জিগ্যেস না করে আমার পোশাক ধুরি আইরন করতে তোমাকে কে বলেছে(রাগি কন্ঠ)
.
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
.
মাহিমের বাবা:-আর ধুরি দেওয়ার সময় কি তোমার এই পেপার গুলি চোখে পরেনি?(পকেট থেকে পেপার গুলি বের করে)
.
প্রিয়া কিছু বলছেনা।
.
মাহিমের বাবা:-তুমি জান এই পেপার গুলি আমার কত important ছিল….just not only important,it was very important..!
.
অর্পা:-বাবা তুমি কাকে কি বলছে,ওর মতো একটা অশিক্ষিত গাইয়্যা মেয়ে এসবের কি বুঝবে।আর ও তো ফাকি বাজ কাজে ফাকি দেয়।
.
এখনো চুপ করে আছে।
.
অর্পা:-কি মনে করেছিলি যে তুই বাবাকে না বলে বাবার পোশাক ধুয়ে দিবি আর বাবা খুশি হয়ে তোকে এই বাড়ির বউ বলে মেনে নিবে তাই না।(রেগে)
.
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
.
অর্পা:-খুব সখ না বড়লোক বাড়ির বউ হওয়ার।একটা কথা ভালো করে শুন,তুই এই বাড়ির কাজের মেয়ে আর কাজের মেয়ে হয়েই থাকবি।কখনো এই বাড়ির বউ হওয়া দূর-সাহস করবি না।তোর মতো একটা গাইয়্যা অশিক্ষিত মেয়ের আমাদের বাড়ির বউ হওয়ার কোন যোগ্যতাই নেই।(রাগি কন্ঠ)
.
প্রিয়া কিছু বলছেনা শুধু দাড়িয়ে চোখে জল ফেলছে।
.
অর্পা:-এই একদম নাটক করবি সা বলছি,তোর এই নাটক দেখতে আমার একদম ভালো লাগেনা।যা গিয়ে কাজ কর গিয়া যা বলছি(রাগি কন্ঠে ধমক দিয়ে)
.
এইপর প্রিয়া চোখের জল মুছতে মুছতে কাজ করতে লাগলো।
.
.
.
রাতে সবাই খাওয়া-দাওয়া করলো কিন্তু মাহিম করলো না।প্রিয়া সবার খাওয়া-দাওয়ার পর সব কাজ শেষ করে মাহিমরে জন্য খাবার নিয়ে এলো রুমে।প্রিয়া খাবার নিয়ে রুমে এসে দেখলো মাহিম খাটের উপর বসে আছে।প্রিয়া খাবার নিয়ে মাহিমের কাছে এগিয়ে এসে..
প্রিয়া:-আপনি তো সারাদিন কিছু খান-নি।
.
কিছু বলল না শুধু প্রিয়া দিকে একবার ঘুরে তাকালো।
.
প্রিয়া:-নিছেও গেলন না খেতে,তাই আমি নিয়ে আসলো।আপনি কি এখনি খাবেন নাকি রেখে দিব।
.
মাহিম:-খাবো না আমি রেখে দিন।(রেগে)
.
প্রিয়া:-(ভয় ভয় করে)কেন?
.
মাহিম:-সকালে যখন না খেয়ে অফিসে গিয়ে ছিলাম তখন যখন জিগ্যেস করেন-নি কেন খেলাম না তাহলে এখন কেন জিগ্যেস করছেন?(রাগি কন্ঠে)
.
প্রিয়া:-মা-মনি চলে যাওয়ার সময় বলে গেছে,আপনার খেয়াল রাগতে,আপনার যত্ন করতে।তাই খাবারটা নিয়ে আসলাম।তাছারা আমার কোন দরকার নেই।
.
এইবলে খাবারটা রেখে দিল।
.
মাহিম:-সেটা তো আমি জানি,তা নাহলে তো আপনি খাবারটা নিয়ে আসতেন না।(বিরক্তিকর ভাবে)
.
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
.
মাহিম:-আপনার তো কিছু যায় আসেনা,আমি কি খেলাম কি পরলাম সেদিকে তো আপনার কোন খেয়াল নেই।এটা আমার থেকে ভালো আর কে যানে।(রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
.
প্রিয়া:-আপনি আশা করেন নাকি আমি আপনার খেয়াল রাখি।যদি আশা করেন তাহলে এটা তো ভূল হবে।কারণ আমি তো এই বাড়ির কাজের মেয়ে আপনার বউ না।
.
মাহিম:-(বসে থেকে প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে)ই আমি যদি আপনাকে এই বাড়িতে নিয়ে না আসতাম।তাহলে কিন্তু আপনাকে রাস্তায় থাকতে হতো(রাগ দেখিয়ে)
.
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
.
মাহিম:-কি পেলাম আমি আপনাকে বাঁচিয়ে রাস্তা থেকে এই বাড়িতে এনে।নিজের ইচ্ছে মতো আপনি চলবেন আর রাত হলে আপনার সাথে আমায় রুম শেয়ার করে থাকতে হবে।আর তার বিনিময় আমি কিছুই পাবো না।
.
প্রিয়া:-কি কি পেতে চান বলুন?
.
প্রিয়ার কথা শুনে মাহিম প্রিয়ার দিকে তাকালো।
.
প্রিয়া:-না মানে কি পেলে আপনার রিন শোত হবে।
.
মাহিম:-“আমি কি চাই সেটা তো তুমি কখনই বোঝোনা।আমি বার বার তোমাকে আপন করে নিতে চাই,সারা জীবনের জন্য তোমাকে নিজের করে পেতে চাই।আর তুমি প্রতিটা মুহূর্তেই আমাকে দূরে সরিয়ে দাও,আমাকে আঘাত করো।(মনে মনে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
.
প্রিয়া:-কি হলো বলুন?
.
মাহিম:-(চমকে উঠে)এই আপনি এখান থেকে যান তো যান।আপনার কথা বলতে এখন আমার একদম ভালো লাগছে না(বিরক্তিকর ভাবে প্রিয়া কাছ থেকে সরে গিয়ে)
.
প্রিয়া:-আমার সাথে কথা বলতে আপনার কবেই বা ভালো লাগে।আর বেশি দিন আপনাকে একটা কাজের মেয়ের সাথে রুম শেয়ার করে থাকতে হবেনা।চলে যাবো আমি যেখানে আর কারো সাথে রুম শেয়ার করে থাকতে হবে না।(কাঁদো কাদো ভাবে)
.
মাহিম:-এই এতবড় কথা বলছেন আপনি কোথায় বা যাবেন আপনার ঐ মামীর বাসা ছাড়া।আর তো কোন যাওয়ার মতো রাজ মহল নেই আপনার।যেখানে একাই থাকবেন।(বিরক্তিকর ভাবে)
.
প্রিয়া:-আছে মাহিম বাবু।
.
মাহিম:-আছে মানে? ওহ বুঝতে পেরেছি আপনার ঐ শিহাব ভাইয়ের বাসা যাওয়ার কথা বলছেন কি তাই তো?
.
প্রিয়া:-আমি জানি আপনি এটাই বলবেন।সেখানেও যাব না…।
.
মাহিম:-তাহলে কোথায় যাবেন আপনি?
.
প্রিয়া:-সেটা সময় হলেই বুঝতে পারবেন।আর আপনার জন্য খাবারটা এনে ছিলাম,এটা যদি দোষের হয়ে থাকে তাহলে দোষ হয়েছে।আপনি বললে খাবারটা আমি এক্ষনি নিয়ে যাচ্ছি(কাঁদো কাঁদো ভাবে)
.
মাহিম প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখলো প্রিয়ার মুখটা কেমন সুখিয়ে গেছে।দেখে মনে হচ্ছে সারাদিন কিছু খায়নি মেয়েটা।চোখ-মুখ কেমন লাল হয়ে আছে।
কথা বলতে বলতে চোখের কোনায় পানি চলে এসেছে মনে হয় আর অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রিয়ার চোখ দিয়ে পানি বেরিয়ে আসবে।
:::::::::Next Part::::::
যদি ভালো লাগে তো জানাবেন কেমন লাগলো।
(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)