বউ_যখন_কাজের_মেয়ে . পর্ব-১৬

0
2391

বউ_যখন_কাজের_মেয়ে
.
পর্ব-১৬
লেখা:-মান্না ইসলাম মাহিম
.
.
.
প্রিয়া কিছুক্ষণ চুপ করে মাহিমের দিকে থাকার পর।
প্রিয়া:-ভূল হয়েছে আমার,ক্ষমা করে দিবেন আমকে।আর কখনো আপসাকে জোরাজোরি করবো না।(কাঁদার মতো করে)
.
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
.
প্রিয়া:-আর ধন্যবাদ আপনাকে ভূল গুলো ধরিয়ে দেওয়ার জন্য।(কাঁদার মতো করেই)
.
মাহিম:-হুম আপনি বাড়ির কাজের মেয়ে কাজের মেয়ে হয়েই থাকবেন।কখনো আমার বউ হওয়ার দুঃসাহস করবেন না।(রাগ দেখিয়ে)
.
এইবলেই মাহিম রুম থেকে বেড় হয়েগেল।
.
মাহিম চলে যাওয়ার পর প্রিয়ার চোখ দিয়ে পানি বেড় হতে লাগলো।প্রিয়া কিছুক্ষণ দাড়িয়ে চোখের জল ফেলার পর,চোখের জল মুছতে মুছতে কাজ করতে গেলো।
.
.
সারাদিন কাজ করার পর,রাতের বেলা প্রিয়ার মাথা ব্যাথা করতে লাগলো কিছু ভালো লাগছিল না।
কাজ শেষ করে গিয়ে বিছানায় মাথা চেপে ধরে সুয়ে পরলো।
.
কিছুক্ষণ পর মাহিম রুমে এলো এসে দেখলো প্রিয়া মাথা চেপে ধরে বিছানায় সুয়ে আছে।
মাহিম যে রুমে এসেছে প্রিয়া বুঝতে পারেনি।
মাহিম তার হাতের ফোনটা টেবিলের উপর রাখাতে শব্দ পেয়ে প্রিয়া চোখ খুলে দেখলো মাহিম।
প্রিয়া মাহিমকে দেখে নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে উঠে দাড়ালো।
.
প্রিয়া:-আপনার খাবার কি রুমে নিয়ে আসবো?
.
মাহিম দেখতে পারছে প্রিয়া ঠিক মতো দাড়াতে পারছে না।চোখ গুলো কেমন লাল হয়েগেছে।
মুখ দিয়ে কোন কথাই বেড় হচ্ছে না।
.
মাহিম:-না আমি বাহিরে খেয়ে আসছি।
.
প্রিয়া:-ওহ আচ্ছা।
.
এইবলে প্রিয়া মেঝেতে বিছানা করে সুয়ে পরলো।
মাহিম দেখতে পেলো প্রিয়াকে আজকে একটু অন্যরকম লাগছে।খুব ক্লান্ত ক্লান্ত লাগছে।
সে আর কিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে সুয়ে পরলো।
.
.
“রাত ১টা”
প্রিয়ার মাথায় অনেক যন্ত্রনা করছে প্রিয়া কিছুতেই ঘুমাতে পারছে না।সুয়ে থাকতেও পারছে না অনেক কষ্ট হচ্ছে প্রিয়ার।প্রিয়া উঠে মাথা চেপে ধরে বসে পরলো।কি করবে বুঝতে পারছেনা। ইদারিং যতদিন যাচ্ছে প্রিয়ার ততই প্রবলেম শুধু বেড়েই যাচ্ছে।
মাথা চেপে ধরে বোসেও থাকতে পারছে না।প্রিয়া আবার মাথা চেপে ধরেই সুয়ে পরলো।
.
.
.
“সকাল বেলা”
প্রিয়া মাথায় অনেক যন্ত্রণা করার কারণে ব্রেকফাস্ট করতে লেট হওয়ার কারণে অনেক বকবক শুনতে হলো তার।
সবাই ব্রেকফাস্ট করার পর।
মাহিম অফিসে না গিয়ে তুন্নির সাথে দেখা করতে।
.
.
আজকে প্রিয়া কিছুতেই বাড়ির কাজ করতে পারছে না।মাথায় অনেক যন্ত্রণা করছে বাট কিছু করার নেই যতই কষ্ট হোক না কেন তার কাজ করতেই হবে।
.
.
সকাল বেলা কিছু খেতেও পারলো না।সকালে নাস্তা করতে গিয়ে যা ছিল পেটে সব বোমি করে বেড় করে দিল।
.
.
কাল রাত থেকেই কিছুতেই মাথায় যন্ত্রণা থামছে না।শুধু ব্যাথা করেই যাচ্ছে, মাথা ঘুরাচ্ছে বোমি লাগছে।
কিছুই ভালো লাগছে না প্রিয়ার।
.
.
বাড়ির সমস্ত কাজ শেষ করে বিকাল ৪টার ঐদিকে প্রিয়া ডাক্তারের কাছে গেলো।
প্রিয়ারর কাছ থেকে ডাক্তার সবকিছু শুনার পর বলল
ডাক্তার:-দেখুন আমি আপনাকে আগেই বলেছি যে যতদিন যাবে ততই আপনার মাথার ছোট্ট টিউমরটা বড় হবে আর আপনার গুলো বারতে থাকবে।তাই যত তারাতারি সম্ভব এই ২/১মাসের মধ্যেই আপনাকে অপারেশন করাতে হবে।নাহলে পরে প্রবলেম হবে।
.
প্রিয়া:-আর কোন অপশন নেই ডাক্তার বাবু
.
ডাক্তার:-আর কোন অপশন নেই মানে?
.
প্রিয়া:-মানে যতদিন পর্যন্ত অপারেশন করার সময় থাকবে।ঠিক পর্যস্ত যেন আমার এই প্রবলেম গুলো না হয় তার কোন অপশন নেই।
.
ডাক্তার:-হুমম আছে বাট আমি একটা জিনিস বুঝতে পারছি না।আপনি এতবড় একটা কথা লুকাচ্ছেন কেন?
.
প্রিয়া:-শুনার মতো কেউই নেই আর লুকাবো কার কাছ থেকে বলুন?
.
ডাক্তার:-মানে?
.
প্রিয়া:-না কিছু না।আপনি কি যেন অপশনের কথা বল ছিলেন?
.
ডাক্তার:-হুম আমি কিছু ঔষধ লিখে দিচ্ছি সেটা খেলে যতদিন অপারেশন করার সময় থাকবে ঠিক ততদিন পর্যন্ত আপনার প্রবলেম গুলো আর হবে না।
.
প্রিয়া:-ধন্যবাদ ডাক্তার বাবু।
.
.
.
ডাক্তারের কাছ থেকে বাসায় ফিরতে ফিরতে প্রিয়ার রাত হয়েগেল।প্রিয়া রাত করে বাসায় ফেরাতে আজকেও তাকে অনেক বকা-চকা শুনতে হলো।
সব কাজ শেষ করে প্রিয়া রুমে ঢুকতেই
.
মাহিম:-কোথায় গিয়ে ছিলেন?
.
প্রিয়া কিছু না বলে মাহিমের জন্য আনা খাবার গুলো টেবিলে রেখে দিল।
.
মাহিম:-কি হলো বলুন কোথায় গিয়ে ছিলেন?
.
প্রিয়া কিছু না বলে মেঝেতে বিছানা করতে এমন সময় মাহিম প্রিয়ার একহাত ধরে ঝটকা দিয়ে নিজের কাছে টেনে নিয়ে
.
মাহিম:-এই আপনাকে একটা প্রশ্ন করছি শুনতে পারছেন না।(রাগি কন্ঠে)
.
প্রিয়া:-শুনতে পাচ্ছি কিন্তু উত্রর দেওয়ার প্রোয়জন মনে করছি না।(এইবলে হাতটা ছাড়িয়ে নিল)
.
মাহিম:-কেন প্রোয়জন মনে করছেন না?
.
প্রিয়া:-কারণ প্রশ্নটা অবান্ধব তাই।
.
মাহিম:-কোন প্রশ্নটা অবান্ধব?(রেগে)
.
প্রিয়া:-দেখুন আমার এখন কথা বলতে ভালো লাগছে না।আপনার খাবার টেবিলের উপর রাখা আছে খেতে হলে খেয়ে নিন আর না হলে সুয়ে পরুন।(রেগে)
.
মাহিম:-ওহ বুঝেছি আজকেও বুঝি আপনার শিহাব ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে ছিলেন তাই তো?
.
প্রিয়া:-আপনার যা ইচ্ছে আপনি ভাবতে পারেন।এবার সরুন আমাকে বিছানা করতে দিন(বিরক্তিকর ভাবে)
.
এইবলে প্রিয়া এবার বিছানা করতে যাবে ঠিক তখনি মাহিম আবার আগের মতো করে প্রিয়ার হাত ধরে ঝটকা দিয়ে কাছে টেনে নিয়ে
.
মাহিম:-খুব তেজ না আপনার?
.
প্রিয়া:-কেন ওটা কি আপনার একচেটিয়া সম্পত্তি নাকি?(মাহিমের মুখের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম:-আমি যেটা বললাম সেটার আগে উত্রর দিন(রাগি কন্ঠে)
.
প্রিয়া:-(প্রিয়া আবার নিজের হাতটা ছারিয়ে নিয়ে)কেন আমি কোথাও গেলে আপনাকে তার কৈফত দিতে হবে নাকি?
.
মাহিম:-হুমম হবে।(রেগে)
.
প্রিয়া:-কেন আমি তো এই বাড়ির কাজের মেয়ে আপনার বউ না যে আমি কোথাও গেলে আপনাকে তার কৈফত দিতে হবে।
.
মাহিম:-হুম রাইট আপনি এই বাড়ির কাজের মেয়ে আমার বউ না।আর আমার বউ হওয়ার কোন প্রশ্নই উঠেনা।কারণ আমার বউ হওয়ার কোন যোগ্যতাই আপনার নেই।(প্রিয়া কাছে এসে)
.
প্রিয়া:-তাহলে আমি কোথায় কার সাথে দেখা করতে গিয়ে ছিলাম সেটা জানতে চাইছেন কেন?(মাহিমের মুখের দিকে তাকিয়ে)
.
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
.
প্রিয়া:-এটা জানতে চাওয়ার তো কোন অধিকারী আপনার নেই।
.
মাহিম:-এতকথা পেটাচ্ছন কেন? সোজা ভাবে বললেই তো হয় যে আপনি আজও আপনার শিহাব ভাইয়ার সাথে সময় কাঠাতে গিয়ে ছিলেন।(রাগ দেখিয়ে)
.
প্রিয়া:-একদম বাজে কথা বলবেন না বলে দিচ্ছি(রাগি কন্ঠে)
.
মাহিম:-আমি একদম বাজে কথা বলছি না।আপনি যদি আপনার ঐ শিহাব ভাইয়ের সাথে সময় কাঠাতে যান্নি তাহলে বলছেন না কেন যে আপনি আজকেও কোথায় গিয়ে ছিলেন?
.
প্রিয়া:-বলছি না কারণ আমি আমার কথা আমার কোন অযোগ্য মানুষকে বলতে চাই না।
.
মাহিম:-(প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে)এই একদম করুন বড় বড় কথা বলবেন না বলে দিচ্ছি(রাগ দেখিয়ে)
.
প্রিয়া:-(বিরক্তিকর ভাবে)আমি তো কোন কথা বলতে চাইনি আপনি তো বাধ্য করলেন আমাকে কথা বলাতে।(রাগি কন্ঠে)
.
মাহিম:-যার চরিত্রর ঠিক নেই তার মুখে আবার বড় বড় কথা।(প্রিয়ার কাছ থেকে সরে গিয়ে)
.
প্রিয়া:-হুম তাও আপনার থেকেও ভালো।
.
প্রিয়ার কথাটা শুনে মাহিম একদম থমকে গেলো।সে প্রিয়া কাছে গিয়ে
.
মাহিম:-এই এ কথাটার মানে কি?
.
প্রিয়া:-আপনি যা বুঝেন তাই।
.
মাহিম:-আমি কি বুঝি সেটা প্রশ্ন নয়,আপনি কি বোঝাতে চাইছেন সেটা বলুন।(রেগে)
.
প্রিয়া:-আপনাকে আমি কিচ্ছু বোঝাতে চাই না।(বিরক্তিকর ভাবে)
.
মাহিম:-যে মেয়ে নিজের জ্বালা মিটানোর জন্য অন্য একটা ছেলের সাথে সময় কাঁঠায়।তার কাছ থেকে আমি আর কিছুই বুঝতেও চাই না।(প্রিয়ার মুখে দিকে তাকিয়ে)
.
প্রিয়া মাহিমের কথাটা শুনে কিছুক্ষণ মাহিমের দিকে তাকিয়ে থাকার পর
প্রিয়া:-আপনার মতো নোংরা মানুষ এইসব নোংরামি ছাড়া আর কি বা ভাবতে পারে।(মাহিমের মুখের দিকে তাকিয়ে)
.
মাহিম:-(রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)এবার আপনি কিন্তু আপনার limit cross করছেন।এরপর কিন্তু আমি…(কিছু একটা বলতে গিয়ে বলল না)
.
প্রিয়া:-কি করবেন মারবেন।
.
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
.
প্রিয়া:-মারুন আমাকে সেটা আর বাকি রাখছেন কেন আমার যা পাওনা তা আমাকে দি……!.অবস্স আপনি আমার পাওনা দেননি তা তো নয়।(মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
.
মাহিম:-(….)
.
প্রিয়া:-আমার সোয়েও গেছে।আর আমি জানি যে যতদিন আমি আপনাদের বাসায় থাকবো,ততদিন আপনার বাড়ির লোকজন এবং আপনার লাঠি-জাটা খেয়েই আমাকে বাচঁতে হবে।
.
মাহিম কিছু বলছে না শুধু দাড়িয়ে প্রিয়া দিকে তাকিয়ে আছে।
.
প্রিয়া:-(শান্ত ভাবে)তবে আর বেশি দিন আমাদের লাঠি-জাটা খেতে হবে না।আর আপনারও বোজা হয়ে থাকবো না।মুক্তি করে দিব আপনাকে(মাহিমের মুখে দিকে তাকিয়েই)
…..Next Part….
ভালো লাগলে জানাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here