বউ_যখন_কাজের_মেয়ে
>পর্ব-৩৬
লেখক:-মান্না ইসলাম মাহিম
.
.
প্রিয়া:-কি জানেন আপনি?(রেগে মাহিম এর কাছে এগিয়ে আসতে)
প্রিয়াকে তার কাছে এগিয়ে আসতেই মাহিম রেগে বসা থেকে উঠে বলতে লাগলো..
মাহিম:-এই আমি আপনার সাথে ভালো ভাবে কথা বলছি বলে এটা ভাববেন যে আমি আপনার এইসব কিছু সহ্য আমি করবো।(রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া নিশ্চুপ কিছু বলল না।শুধু মাহিমের চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো।মাহিম ও কিছুক্ষণ রাগি ভাবে প্রিয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকার পর রুম থেকে বেড় হয়েগেলো।মাহিম রুম থেকে বেড় হয়ে যাওয়ার পর প্রিয়া কিছুক্ষণ নিশ্চুপ হয়ে দাড়িয়ে রইলো।তারপর প্রিয়াও রুম থেকে বেড় হয়েগেলো!
রাতের বেলা প্রিয়া খাবার নিয়ে রুমে এসে বলল”আপনার খাবার?মাহিম প্রিয়ার কথায় কোন সারা দিল না।শুধু রাগি ভাবে প্রিয়ার দিকে একবার তাকালো কিছু বলল না।এরপর প্রিয়া আর কিছু না বলে খাবার গুলো টেবিলের উপরে রেখে দিল!
কিছুদিন পর সকাল বেলা মাহিম অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিল এমন সময় প্রিয়া মাহিমের সকালের ব্রেকফাস্ট নিয়ে রুমে এসে বলল..
প্রিয়া:-আপনার নাস্তা..
মাহিম শুধু খাবো না বলে রুম থেকে বেড় হয়েগেলো।প্রিয়া খেয়াল করলো সেদিনের পর থেকে মাহিম তার আগের মত ভালো কোন কথা বলে না।কিছু বললে শুধু রাগি ভাবে হ্যা না তে উত্রর করে।আর কিছু না!প্রিয়া কিছুক্ষণ খাবার নিয়ে মন খারাপ করে দাড়িয়ে থাকার পর খাবার নিয়েই রুম থেকে বেড় হয়েগেলো!রাতের বেলা প্রায় ১১টার দিকে বাসাতে ফিরলো।মাহিম বাসাতে ফিরে দেখলো পুরো বাসা কেমন জানি ফাকা ফাকা লাগছে।মনে হচ্ছে কেউই জেগে নেই সবাই ঘুমিয়ে পরেছে।মাহিম রুমে এসে দেখলো প্রিয়া রুমে নেই।মাহিমকে টায়ার্ড লাগছিল মাহিম অফিস থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়ে খাটের উপরে বসে ফোনে কি জানি করছিল এমন সময়..
তুন্নি:-কিরে করছিস?(ভিরত আস্তে আস্তে)
মাহিম তুন্নির কন্ঠে শুনে তুন্নির দিকে তাকালো আর হাসি মুখে বলতে লাগলো..
মাহিম:-আরে তুই?কখন এলি?
তুন্নি:-এই দুপুরের এইদিকে(মাহিমের কাছে এসে বসলো)
মাহিম:-তো কই একটি বারো তো আমাকে ফোন করে বলিস নি?
তুন্নি:-সারপ্রাইজ দিব বলে।
মাহিম:-এটা তোর সারপ্রাইজ??
তুন্নি:-তোর জন্যে আরো একটা সারপ্রাইজ আছে
মাহিম:-কি সেটা?
অর্পা:-এখানে না আমার সাথে একটু ছাদে চল
মাহিম তুন্নির কথা শুনে কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো।তারপর বলে উঠলো…
মাহিম:-ওকে চল!
এরপর মাহিম আর তুন্নি বাসার ছাদে চলে আসলো।মাহিম ছাদে এসে দেখলো ছাদে কেন জানি লাইট গুলো উফ করা।হালকা আলো কিছুই ভালো ভাবে দেখা যাচ্ছে না।এরপর মাহিম বলে উঠলো..
মাহিম:-কিরে এই অন্ধকারে তো কিছুই দেখা যাচ্ছে না।এটা তোর সারপ্রা….
মাহিম আর কিছু বলার আগেই হঠাৎ জ্বলে উঠতেই সবাই চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো’Happy birthday too you'”সবাই মাহিমকে wish করতে লাগলো।মাহিম দেখলো তার মা-বাবা অর্পা তুন্নি আর ওর দু-টা ফ্রেন্ড।মাহিমের birthday আর মাহিম-ই মনে নেই।
মাহিম:-আমার birthday আর তোমরা আমাকে কিচ্চু বলনি?
অর্পা:-কি করবো বল।আমাদের কারোই মনে ছিল না।তুন্নি দুপুর বেলা এসে সবাইকে মনে করিয়ে দিল।
হঠাৎ কি করবো বুঝতে পারিনি তাই শর্ট করে এই প্লান করেছি।
তুন্নি:-১২:০৩ বেজে গেছে আয় আয় তারাতারি কেক কেটে ফেল।
এইবলে তুন্নি মাহিমের হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো।মাহিম কেক কাটতে যাবে এমন সময় অর্পা মাহিমকে থামিয়ে দিল।সবাই কিছুই বুঝতে পারলো না।
অর্পা:-এই প্রিয়া ঐখানে দাড়িয়ে আছিস কেন? এইদিকে আয়..
এমন সময় মাহিম দেখলো প্রিয়া সবার থেকে কিছু দূরে মন খারাপ দাড়িয়ে আছে।
প্রিয়া:-না আপু ঠিক আছে।
অর্পা:-বললাম না এইদিকে আসতে।
প্রিয়া:-না না ঠিক আছে আপনারা কেক কাটুন!
এরপর অর্পা আর কিছু না বলে প্রিয়ার কাছে গিয়ে প্রিয়ার হাত ধরে টানছিল বাট প্রিয়া আসছে না।এমনিতেই মাহিম সেদিন থেকেই রেগে আছে ভালো ভাবে কথা বলে না।এরজন্য প্রিয়া যাইতে চাইছে না।
মাহিম এটা দেখে রাগি কন্ঠে বলে উঠলো..
মাহিম:-আপু তুমি ও কে জোর করছো কেন সেটা বুঝতে পারছি না।
মাহিমের কথা শুনে অর্পা আর প্রিয়া দু-জনি চুপ হয়েগেলো।এরপর মাহিম আবার বলতে লাগলো..
মাহিম:-দেখছিস তো ও আসতে চাইছে না।আমার জন্মদিন ও Wish করতে চাইছে না।তার পরেও তুই কেন ও কে জোর করছিস?(রাগি কন্ঠে)
সবাই চুপ কেউই কিছুই বলছে না।মাহিম অর্পাকে চুপ করে থাকা বিরক্তিকর ভাবে বলল..
মাহিম:-আপু তুমি কি আসবে নাকি আমি কেক না কেটেই চলে যাব?(রেগে বিরক্তিকর ভাবে)
এরপর অর্পা আর প্রিয়াকে জোর না করে প্রিয়ার দিকে একবার তাকিয়ে তারপর চলে আসলো।
এরপর মাহিম কেক কাটলো।মাহিম সবাই কে কেক খাইয়ে দিল এরপর তুন্নিকে খাইয়ে দিল তুন্নিও কেও মাহিম কেক খাইয়ে দিল। সবাই অনেক হাসাহাসি করছে মুখে কেক মাখামাখি করছে।মাহিম তুন্নির গালে কেক মাখিয়ে দিচ্ছিল।এইসব দেখে প্রিয়ার অজান্তেই তার চোখ ঝাপসা হয়ে আসলো।প্রিয়া আর দাড়িয়ে থাকলো না ছাদে।সোজা রুমে এসে তার মা-বাবা ছবিটা বেড় করে ছাবিটার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর ছবিটা বুকে জরিয়ে ধরে চোখের জল ফেলতে লাগলো!
৯টা বেজে গেছে বাট এখনো কেউই ঘুম থেকে উঠেনি।কাল রাতে সবাই অনেক রাত করে ঘুমিয়ে।এর জন্য এখনো পর্যন্ত কেউই ঘুম থেকে উঠেনি অর্পা ছাড়া।প্রিয়া সবার আগে উঠে বাড়ির কাজ গোছাগোছি করছে।আজকে প্রিয়ার কেমন জানি বমিবমি লাগছে।কিছুই ভালো লাগছে না।কোন কাজেই করতে মন চাইছে না।বাট কোন উপায় নেই সবকিছু এলোমেলো করা।প্রিয়া কাজ করছিল এমন সময় প্রিয়ার মাথা চক্কর দিয়ে উঠতেই প্রিয়া মেঝতে পড়ে গেলো।প্রিয়া মেঝেতে পরতেই অর্পা চক্কর দিয়ে উঠে প্রিয়ার কাছে ছুটে আসলো।অর্পার চিৎকার শুনে সবাই উঠে বেড় হয়ে আসলো।মাহিম ও বেড় হয়ে আসতেই দেখলো প্রিয়া বেহুশ হয়ে মেঝেতে পড়ে আছে।এরপর মাহিম প্রিয়াকে কোলে উঠিয়ে রুমের ভিতরে নিয়ে গেলো।আর অর্পা তাদের ফ্যামিলি ডাক্তার কে ফোন করে দ্রুত আসতে বলল।
কিছুক্ষণ পর ডাক্তার চলে আসলো।সবাই রুমে ডাক্তার প্রিয়াকে চেক করতে করতে প্রিয়ার হুশ ফিরলো।প্রিয়া চোখ খুলো সবাইকে দেখে উঠে বসার চেষ্টা করলো।বাট অর্পা উঠতে দিল না।এরপর
ডাক্তার:-ভয়ের কোন কারণ নেই…এনি “মা” হতে চলেছেন!
ডাক্তারের কথা শুনতেই মাহিম আর প্রিয়ার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পরলো!
“আগামী পর্বে শেষ”