বউ_যখন_কাজের_মেয়ে . পর্ব-৯

0
2856

বউ_যখন_কাজের_মেয়ে
.
পর্ব-৯
Writer by:MD Mahim Ahmed
.
.
.
প্রিয়া:-মানে?
.
মাহিম:-না মানে হলো যে আমিই তো আপনাকে এই বাড়িতে এনেছি সো আপনার মালিক আমি।এখন বেশি কথা না বলে অনেক রাত হয়েছে চলুন ফ্রেশ হয়ে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন।(প্রিয়ার থেকে সরে গিয়ে)
.
প্রিয়া:-আমি রাতে খাবো না।আপনি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন।(অভিমানী সুরে চোখের জল মুছতে মুছতে)
.
মাহিম:-ওকে তাহলে আমিও না খেয়ে সুয়ে পরি।
.
প্রিয়া:-কেন?
.
মাহিম:-কেন আবার আপনার জন্য।
.
প্রিয়া:-আমার জন্য মানে?
.
মাহিম:-মানে আপনি খাবেন না বলে আমিও রাতে খাবো না।
.
প্রিয়া:-আমি তো আপনার কেউ না।আমি না খেলে আপনিও না খেয়ে থাকবেন কেন? আপনার সাথে আমার কিসের সম্পর্ক?(অভিমানী সুরে)
.
মাহিম:-(রেগে প্রিয়ার কাছে এসে)এই দেখুন আপনার সাথে আগেও আমার কোন সম্পর্ক ছিল না।না এখনো আছে।আর কোনদিনও থাকবেও না।(বিরক্তিকর ভাবে)
.
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
.
মাহিম:-এখন বেশি কথা না বলে খেতে বসুন।
.
এরপর প্রিয়া আর কথা না বারিয়ে মাহিম এর সাথে খেয়ে সুয়ে পরলো।
.
.
.
সকাল বেলা প্রিয়া মাহিম ঘুম থেকে উঠার আগেই প্রিয়া উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা তৈরি করতে গেল।
.
প্রিয়া ঘুম থেকে উঠার কিছুক্ষণ পর মাহিমের ঘুম ভাঙ্গলো।মাহিম ঘুম থেকে উঠে দেখলো প্রিয়া নেই তার আগেই উঠে গেছে।
.
মাহিম ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে ফ্রেশ হচ্ছিল এমন সময় প্রিয়া রুমে আসলো।
.
প্রিয়া:-নাস্তা রেডি চলুন নিছে চলুন আপনার তো আবার অফিসে যেতে লেট হবে।
.
মাহিম:-আজকে আর অফিসে যাব না।
.
প্রিয়া:-ওহ আচ্ছা আপনি আসুন আমি নিচে আছি।(এইবলে চলে যাচ্ছিল)
.
মাহিম:-আজকে বাহিরে খেতে যাবো।
.
প্রিয়া:-আচ্ছা ঠিক আছে।
.
মাহিম:-রেডি হয়ে নিন।
.
প্রিয়া:-আমি রেডি হবো মানে?আমি রেডি হয়ে কি করবো?
.
মাহিম:-কেন আমার সাথে যাবেন না বুঝি?
.
প্রিয়া:-আমি আপনার সাথে যাবো মানে?(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
.
মাহিম:-যাবেন মানে যাবেন।
.
প্রিয়া:-আমাকে নিয়ে আপনি বাহিরে খেতে যাবেন কেন? আমি আপনার কে যে আমাকে নিয়ে আপনি বাহিরে খেতে যাবেন?(অভিমানী সুরে)
.
মাহিম:-কেউ না বাট বাসাতে মাত্র দু-জন মানুষ,একজন বাহিরে খেতে যাবে আর অন্যজন বাসাতে খাবে।এটা কেমন দেখায় না।তাই বলছি,এখন বেশি কথা না বলে তারাতারি রেডি হয়ে নিন।(রেগে)
.
প্রিয়া:-আমি যাবো না।
.
মাহিম:-(প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে)আপনি যাবেন আপনান ঘাড় যাবে।কাল রাতে আমি আপনাকে বলেছি না যে আমি আপনার মালিক।সো আমি আপনাকে যাই বলবো আপনাকে সেটা বাধ্য হয়ে করতে হবে।আমি বাহিরে আপনার জন্য ওয়েট করছি,তারাতারি রেডি হয়ে আসুন।(রাগ দেখিয়ে বলেই রুম থেকে বের হয়ে গেল)
.
.
.
.
মাহিম গাড়ি বের করে গাড়ির পাশে দাড়িয়ে প্রিয়ার জন্য ওয়েট করছিল।
.
.
কিছুক্ষণ পর প্রিয়া রেডি হয়ে বের হয়ে আসলো।
মাহিম প্রিয়াকে দেখে গাড়িতে গিয়ে বসলো।প্রিয়া গাড়ির কাছে এসে পিছনে গিয়ে বসলো।
.
মাহিম:-“”এত অনিচ্ছুে তোমার আমার পাশে বসতে,আমি কি এতটাই খারাপ যে আমার পাশেও বসতে চাওনা তুমি(মনে মনে)
.
“কিছুক্ষণ পর”
মাহিম:-এতবড় হয়েছেন তবুও কাটিসিবড নেই কোন।
.
প্রিয়া:-(ভয় ভয় করে)কি মানে আমি আবার কি করলাম?
.
মাহিম:-না দেখছি ঠিকি আপনি কিছুই শিখেন নি।(রেগে)
.
প্রিয়া:-আমি কি করলাম সেটাই তো বুঝতে পারছি না।
.
মাহিম:-আমি তো আর ভাড়া করা ড্রাইভার না আপনার?দেখলেন তো আমি সামনে বসে আছি আপনিও কোথায় আমার পাশে এসে বসবেন তানা আপনি গিয়ে পিছনে বসে পরলেন।
.
প্রিয়া:-“”তোমার পাশে বসার কোন অধিকারী-ই তো আমার নেই।তুমি তো আমাকে বাড়ির কাজের মেয়ে হিসাবে এই বাড়িতে এনেছো, নিজের স্ত্রী হিসাবে না।তোমার পাশে বসার কোন যোগ্যতা আমার নেই।(মনে মনে মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
.
মাহিম:-লোকে কি ভাব্বে যে আমি আপনার ড্রাইভার(রাগি কন্ঠে)
.
প্রিয়া কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর।
.
প্রিয়া:-যাকে পছন্দ করেন না সে যে শুধু এই কাচ্ছি(গ্রাম্য ভাষা)রক্ষা করার জন্য আপনার পাশে গিয়ে বসতে পারে,তাকেও তো সেটা জানতে হবে।(অভিমানী সুরে)
.
মাহিম:-বাবা আপনার তো দেখি ভালোই মুখে কথা ফুটেছে।(প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
.
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
.
মাহিম:-শুনুন আমার কাছে সৌজন্য রক্ষাটাই সবচেয়ে ইমপর্টেন্ড।বাহিরের লোকে আমাকে আপনার ড্রাইভার ভাব্বে সেটা তো আমার ভালো লাগবেনা।
.
প্রিয়া এখনো চুপ করে আছে।
.
মাহিম:-এই আপনি তো দেখি আচ্ছা ঠেটা,এখনো বসে আছেন?(বিরক্তিকর ভাবে)
.
প্রিয়া:-তো কি করবো আপনার পাশে গিয়ে বসবো নাকি?(ভয় ভয় করে)
.
মাহিম:-না তাহলে কি আমি এমনি এমনি গাড়িটা দাড় করে রেখেছি।
.
এরপর প্রিয়া গাড়ি থেকে মেনে মাহিমের পাশে গিয়ে বসলো।
.
.
.
“কিছু দূরে যাওয়া পর”
প্রিয়া:-আর কত দূর?
.
মাহিম:-কেন কোন তারা আছে নাকি?
.
প্রিয়া:-আপনাকে তো দেখছি কোন প্রশ্নই করা যায় না শুধু দোষ খুজেন।
.
মাহিম:-তাহলে প্রশ্ন করছেন কেন? চুপ করে থাকুন।
.
প্রিয়ার মাথাটা কেমন জানি ব্যাথা করছে কথা বলতে ভালো লাগছেনা,তাই সে আর কথা না বলে চুপ করে বসে রইলো।
.
.
.
.
আর কিছু দূরে যাওয়ার পর মাহিম ভালো একটা রেস্টুরেন্ট এর সামনে গাড়িটা ব্রেক করলো।
তারপর দু-জনি গাড়ি থেকে নেমে রেস্টুরেন্ট এর ভিতরে গেল।
.
.
.
.
দু-জনি খাওয়া-দাওয়া শেষ করার পর বের হয়ে আসলো।মাহিম গাড়ির দরজাটা খুলে দিয়ে বলল
মাহিম:-নিন বসুন।
.
এইবলে মাহিম ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসলো।
বিয়ে পর সব মেয়েরাই চায় তার husband এর সাথে ঘুরতে যেতে।মাহিম আর প্রিয়ার বিয়ে হওয়া প্ররায় ২/৩ মাসের মতো হলো।কিন্তু এ ২/৩মাসে প্রিয়া কষ্ট ছাড়া আর কিছুই পায়নি।
আর কোখাও ঘুরতে যাওয়াও হয়নি।
তাই মাহিম ঠিক করেছে যে সে প্রিয়া নিয়ে আজ সারাদিনটা ঘুরবে + প্রিয়া সাথে আর খারাপ ব্যবহার করবে না।
.
মাহিম:-কি হলো বসুন?
.
প্রিয়া মাহিমের কথা না শুনে গাড়ির পিছন দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো।
.
মাহিম:-আরে কই যাচ্ছেন?(গাড়ির ভিতর থেকে)
.
প্রিয়ার কোন উত্রর নেই।
.
মাহিম:-আরে কি হলো কথা বলছেন না কেন?
.
No Answer..!
.
এরপর মাহিম গাড়ি থেকে নেমে দেখলো একটা ছেলে কিছুটা দূরে দাড়িয়ে ফোনে কথা বলছে।
আর প্রিয়া সেই ছেলেটার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।
.
মাহিম:-কোথায় যাচ্ছেন?(প্রিয়ার পিছন থেকে)
.
প্রিয়ার মাহিমের কথার কোন উত্রর না দিয়ে ছেলেটার কাছে গেল।প্রিয়া ছেলেটার কাছে যেতেই ছেলেটা প্রিয়াকে দেখে খুশি হয়ে ফোন রেখে হাসি মুখে কথা বলতে লাগলো।
.
.
.
.
১০ মিনিট ধরে মাহিম প্রিয়ার জন্য গাড়ির পাশে দাড়িয়ে আছে,কিন্তু প্রিয়া এখনো আসছে না।
১০মিনিট ধরেই প্রিয়া সেই ছেলেটা কথা বলে যাচ্ছে।
.
মাহিম প্রিয়াকে সেই ছেলেটার সাথে কথা বলা দেখে আর দাড়িয়ে না থেকে প্রিয়ার উপর পছন্ড রেগে গাড়ি করে একা বাসা ফিরে আসলো।
.
.
.
.
.
প্রিয়া বাড়িতে ফিরে দেখলো মাহিমের বাবা-মা,অর্পা,নীল আর সাথে করে একটা মেয়ে সহ তারা বাড়িতে ফিরেছে।প্রিয়া রান্না না করায় তাকে অর্পা আর মাহিমের মা অনেক বকা-চকা কথা শুনালো।
.
.
সারাদিন সবার জন্য রান্না আর বাড়িতে বিদেশ থেকে আসা মাহিমের মা আর তার সাথে আসা মেহমান আসার কারণে।আজকে একটু বেশিই রান্না-বান্না আর বাড়ির কাজ করতে হয়েছে।
.
রাতে সবাই খাওয়া-দাওয়া শেষ করার পর প্রিয়া সবকিছু ঠিক করে রাখলো।
.
আজকে একটু প্রিয়াকে খুব বেশিই ক্লান্ত ক্লান্ত লাগছে।মাথাটা কেমন জানি আবার ব্যাথা করছে,আর ঘুম ঘুম পাচ্ছে।
.
প্রিয়া রেডরুমে ঢুকে মেঝেতে বিছানা করতে লাগলো।এমন সময় মাহিম বলে উঠলো
.
মাহিম:-ছেলেটা কে ছিল?
.
প্রিয়া:-কি কোন ছেলে?
.
মাহিম:-যার সাথে সকালে ওমন ন্যাকামি করে কথা বলছিলেন সেই ছেলেটা কে ছিল?(প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে)
.
প্রিয়া:-ওহ ওর নাম “শিহাব” আমাদের গ্রাম এই বাড়ি।ছোট্ট বেলা একসাথে লেখাপড়া করতাম।৫বছর পর তার সাথে দেখা হলো।এই ৫বছর বিদেশে ছিল,এখন এই শহরের থাকে।
.
মাহিম:-তার সাথে কি সম্পর্কে আপনার?
.
প্রিয়া:-কোন সম্পর্ক নেই একি গ্রামে থাকি আমি শিহাব ভাই বলে ডাকি।
.
মাহিম:-শুধু ভাই বলে ডাকেন নাকি অনি আপনার অন্যকিছুই হয়।
.
প্রিয়া:-অন্যকিছু হবে মানে?(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
.
মাহিম:-মানেটা খুব ভালো করেই বুঝতে পারছেনন আমি কি বলতে চাইছি।
.
প্রিয়া:-এই দেখুন আমার এখন কিছু ভালো লাগছেনা মাথা ব্যাথা করছে আমি ঘুমাবো সরুন।(বিরক্তিকর ভাবে)
.
মাহিম:-“ওহ আমার সাথে কথা বলতে তোমার ভালো লাগেনা আর অন্য ছেলের সাথে রাস্তায় দাড়িয়ে কথা বলতে তোমার ভালো লাগে।(মনে মনে)
.
প্রিয়া:-কি হলো সরুন।
.
মাহিম শুধু রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আর কিছু না বলে গিয়ে বিছানায় সুয়ে পরলো।আর প্রিয়াও মেঝেতে সুয়ে পরলো।
.
.
.
সকাল বেলা প্রিয়া নাস্তা রেডি করছিল এমন সময় মাথাটা কেমন করে উঠলো।প্রিয়া সাথে সাথে মাথাটা চেপে ধরে বসে পরলো।এমন সময় অর্পা কিচেনে আসলো এসে দেখলো প্রিয়া ব্রেকফাস্ট রেডি না করে চোখ বন্ধ করে মাথা চেপে ধরে বসে আছে
.
অর্পা:-বাহ্ তুই কাজ না করে এভাবে চুপ করে বসে আছিস?
.
প্রিয়া অর্পার কন্ঠ শুনে চমকে উঠে বসা থেকে উঠে দাড়ালো।
.
অর্পা:-খুব তো কাজে ফাকি দিচ্ছিস।কয়টা বাজে এদিকে কি খেয়াল আছে কা?(রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে?
.
প্রিয়া:-না মানে হঠাৎ করে কেন জানি মাথাটা ব্যাথা করে উঠলো তাই বসে পরে ছিলাম।(ভয় ভয় করে)
.
অর্পা:-আমার রুমে এখনো চাঁ যায়নি কেন?(রেগে)
.
প্রিয়া:-আপনি উপরে যান আমি এক্ষনি চা নিয়ে যাচ্ছি
.
.
.
“দুপুর বেলা”
অর্পা:-এই প্রিয়া তোকে যে বাবার জন্য খাবার রেডি করতে বলেছিলাম করেছিস?
.
প্রিয়া বাড়ির ভিতরটা মুছা-মুছি করছিল এমন সময় অর্পা বললো।
.
প্রিয়া:-জ্বী করেছি।
.
অর্পা:-আচ্ছা খাবারটা বাবা কে দিয়ে একটু আমার রুমে আয় তো কিছু কাজে।
.
প্রিয়া:-জ্বী আমি এক্ষনি যাচ্ছি।
.
.
.
“রাতের বেলা”
প্রিয়ার মাথা ব্যাথা করছিল তাই তারাতারি সব কাজ শেষ করে সুয়ে পরলো।
মাহিম রাত করে বাড়িতে ফিরলো।মাহিম রুমে ঢুকতেই দেখলো প্রিয়া তার খাবার রেডি করে দিয়ে ঘুমিয়ে পরেছে।সারাদিন অনেক কাজ করে একটু ঘুয়িছে ডাকা ঠিক হবে না।এটা ভেবে মাহিম প্রিয়াকে না ডেকে খাবার খেয়ে সুয়ে পরলো।
.
.
.
“এভাবে কিছুদিন যাওয়া পর”
প্রিয়া রান্না করছিল এমন সময় আবার তার মাথাটা কেমন জানি ব্যাথা করে উঠলো আর প্রিয়া মাথাটা চেপে ধরে বসে পরলো।ইদানিং প্ররায় প্রিয়া মাথাটা কেমন জানি ব্যাথা করে উঠে কিছু ভালো লাগেনা কিছু খেতে ইচ্ছে করেনা,মাথাটা কেমন ঘুরতো।
এই সমস্যা গুলোর কারণে মাঝে-মাঝে প্রিয়া কাজ বাদ-দিয়ে সুয়ে পরতো আর অর্পা আর তার মা এর চোখে পরলেই বকা-চকা খেতে হতে।এরকম ভাবে কাজ করতে একদম ইচ্ছে করেনা প্রিয়ার,কিন্তু উপায় নেই।কারণ সে এই বাড়ির কাজের মেয়ে বউ না।
তাই এই মাথা ব্যাথা নিয়ে কাজ করতে প্রিয়ার কষ্ট হলেও বাধ্য হয়ে কাজ করেই খেতে হয়।
.
.
.
ঠিক মতো ঘুম না হওয়ার কারণে হয়তো এই সমস্যা এটা ভেবে কেয়ার না করে কাজ করতো।
.
.
.
এভাবে আরও কিছুদিন চলেগেল কিন্তু কিছু হলো না।শেষ পর্যন্ত আর কোন উপায় না পেয়ে তার মামা দেওয়া জোমে রাখা কিছু টাকা ছিল প্রিয়ার কাছে,সেটা নিয়ে ডাক্তার দেখাতে চলেগেল।
.
.
ডাক্তারের কাছে গিয়ে সবকিছু খুঁলে বলল প্রিয়া।
ডাক্তার প্রিয়ার প্রবলেম এর কথা শুনে ভালো চ্যাগ করে কিছু টেস্ট করলো আর বলল যে রিপোর্ট দিতে ২দিন সময় লাগবে,আর যদি আজকেই রিপোর্ট নেয় তো রাত হবে।
.
.
”২দিন পর”
২দিন পর প্রিয়া একা রিপোর্ট আনতে গেলে।
ডাক্তার সাহেব একটু বিজি থাকার কারণে প্রিয়া দেখতে প্ররায় রাত হয়ে গেল।
প্রিয়া রিপোর্ট নিতে ডাক্তারের চেম্বারে বসে আছে।
ডাক্তার রিপোর্ট দেখছে।কিছুক্ষণ ডাক্তার সাহেব ভালো করে প্রিয়ার রিপোর্ট দেখার পর

ডাক্তার:-আপনার সাথে কেউ আসেনি?।
.
প্রিয়া:-রিপোর্টে কি আসছে?
.
ডাক্তার:-তেমন কিছু না,আপনার সাথে কেউ এসেনি?
.
প্রিয়া:-না এসেনি।কোন সমস্যা নেই আপনি আমাকেই বলতে পারেন।
.
ডাক্তার:-না মানে আপনাকে বলাটা….
.
প্রিয়া:-বললাম তো কোন সমস্যা নেই আপনি আমাকেই বলুন।
.
ডাক্তার সাহেব চুপ করে আছে কিছু বলছেনা।
.
প্রিয়া:-বললাম তো কোন সমস্যা নেই আপনি বলুন কি হয়েছে?
.
ডাক্তার:-আসলে আপনার ব্রেনে ছোট্ট একটা টিউমার হয়েছে,আর এর কারনেই আপনার এই প্রবলেম গুলো হচ্ছে।
.
ডাক্তার সাহেবের কথা শুনে প্রিয়ার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পরলো,আর কাছে পুরো পৃথিবীটা ঘুরতে লাগলো,আর নিজের অজান্তেই প্রিয়া চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসলো।
.
ডাক্তার:-একি আপনি কাঁদছেন কেন?এটা তেমন কিছু না,এখনো তত বড় হয় নি টিউমারটা।একটা ছোট্ট অপারেশন করালে আপনি সম্পূর্ন সুস্থ হয়ে যাবেন।
.
প্রিয়া:-অপারেশন না করালে আর কতদিন বাচবো আমি?(চোখে জল নিয়ে)
.
ডাক্তার:-তা তো সিওর বলতে পারছি না।যত দিন যাবে টিউমারটা তত বড় হবে।লাইফ রিস্ক বেড়ে যাবে।বড় জোর ২/৩ মাস সময় আছে আপনার হাতে,এর মধ্যেই অপারেশন করতে হবে আপনাকে।
.
.
ডাক্তারের কথা শুনে প্রিয়া ডাক্তারের চেম্বার থেকে চোখে জল নিয়ে বের হয়ে আসলো।পিছন থেকে ডাক্তার সাহেব অনেক ডাকা-ডাকি করলো কিন্তু প্রিয়া কোন কথা না শুনে চলে আসলো।
.
.
.
“রাত ৯টা”
রাস্তার একসাইট দিয়ে প্রিয়া হাঁটছে আর চোখে দিয়ে পানি পরছে।
ছোট্ট বেলায় মা-বাবা একা করে চলেগেলো।তারপর দু-বেলা দু-মুঠো ভাতের জন্য মামীর হাজারাও অত্যাচার মারা-মারি করার পরেও থেকে গেলাম।ভাবতাম বড় হলে হয়তো মামী আর এমন করবে না।সেই ছোট্ট থেকে কষ্ট পেতে পেতে বড় হয়েও মামীর অত্যাচার গেল না।তারপর স্বপ্ন দেখতাম বিয়ের পর হয়তো আর কোন কষ্ট থাকবে না।শুখে-শান্তিতে স্বামীর ঘর সংসার করবো।৩টি বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার পর বিয়েটা হলো ঠিকি,কিন্তু ঘর সংসার আর হলো না।
নিজের স্বামীর বাড়িতে কাজের মেয়ে হয়ে থাকতে হলো।সেই ছোট্ট বেলা থেকেই সবার কাছ থেকে অপমান অবহেলা কষ্ট ছাড়া আর কিছু পায়নি।
স্বামীর প্রেম আদর সোহাগ কি সেটা বিয়ের পরেও কিছু পেলাম না কষ্ট ছাড়া।যেই স্বামীকে নিয়ে সুখে থাকার স্বপ্ন দেখে হাজারাও কষ্টের পরেও বেচে ছিলাম, সেই স্বামীই আমাকে স্ত্রী হিসাবে মেনে নিল না।আর মেনে নিবেও না।তাহলে আমার এই জীবন বাঁচিয়ে রেখে কি লাভ কি পাবো জীবনে কষ্ট ছাড়া।দু-বেলা দু-মুঠো ভাত আর একটু থাকার জায়গার জন্য প্রতিদিন এত অবহেলা অপমান সহ্য করার চেয়ে চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে যাওয়া অনেক ভালো)'”””এইসব কথা প্রিয়া ভাবছে আর চোখের জল মুছছে।
.
.
.
রাত ১০টার দিকে প্রিয়া বাড়িতে ফিরলো।প্রিয়া বাড়িতে ফিরে দেখলো রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার আনানো হয়েছে।প্রিয়া বাড়িতে ঢুকতেই মাহিমের মা অনেক গুলো কথা শুনালো প্রিয়াকে।
প্রিয়া শুধু মাথা নিচু করে চুপ করে সব শুনলো কিছুই বললো না।
.
সবাই খাওয়া পর সবকিছু পরিষ্কার করে কিছু না খেয়ে রুমের ভিতরে গেল।
.
.
প্রিয়া রুমে ঢুকতেই মাহিম বলে উঠলো
.
মাহিম:-কোথায় যাওয়া হয়ে ছিল?
.
প্রিয়া কিছু না বলে রুমের ভিতরে আসলো।
.
মাহিম:-কি হলো বলুন কোথায় গিয়ে ছিলেন?(একটু রেগে)
.
প্রিয়া:-বাজারে।
.
মাহিম:-কেন বাজার করার জন্য তো বাসায় অন্য লোক রয়েছে।আপনি গিয়ে ছিলেন কেন?(রেগে)
.
প্রিয়া:-আমার প্রোয়জন ছিল তাই গিয়ে ছিলাম।
.
মাহিম:-কিসের প্রোয়জন?
.
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
.
মাহিম:-(প্রিয়ার কাছে এগি এসে)কি হলো কিছু বলছেন না কেন?(রেগেই)
.
প্রিয়া:-বললাম তো আমার প্রোয়জন ছিল তাই গিয়ে ছিলাম।
.
মাহিম:-হ্যাঁ প্রোয়জনটা কি সেটাই তো যানতে চাইছি আপনার কাছ থেকে(বিরক্তির ভাবে)
.
প্রিয়া কিছু বলছেনা চুপ করে আছে।
.
মাহিম:-ওহ্ বুঝতে পেরেছি আপনি নিশ্চই আপনার ঐ শিহাব ভাইয়ের বাসায় গিয়ে ছিলেন।কি তাই তো?
.
প্রিয়া:-দেখুন মাহিম বাবু আমার এখন আপনার সাথে ঝগড়া করতে একদম ইচ্ছে করছে না।
.
মাহিম:-আমি আপনার সাথে একদম ঝগড়া করতে চাইছি না।আমি যেটা যানতে চাইছি আপনি সেটা বলছেন না কেন?
.
প্রিয়া:-আপনাকে বলার প্রোয়জন মনে করছি না তাই আপনাকে বলছি না।(বিরক্তিকর ভাবে)
.
মাহিম:-এত পেচিয়ে কথা বলার চেয়ে Directly বললেই হয় যে আপনার শিহাব ভাইয়ের সাথে সময় কাঠাতে গিয়ে ছিলেন।
.
প্রিয়া:-ভদ্র ভাবে কথা বলুন মাহিম বাবু(রেগে মাহিমের দিকে ঘুরে)
.
মাহিম:-যে মেয়ে সারাটা দিন অন্য একটা ছেলের সাথে কাটিয়ে রাত করে বাসায় ফিরে।তার সাথে এর চেয়ে ভদ্র ভাষায় কথা বলাটা আমার যানা নেই।
.
প্রিয়া:-(রেগে)একদম উল্টা-পাল্টা কথা বলবেন না মাহিম বাবু(মাহিমের শার্ট কলার ধরে)
.
মাহিম:-তাহলে বলছেন না কেন আপনার প্রোয়জনটা কি?(শার্ট এর কলারটা ছারিয়ে নিয়ে)
.
প্রিয়া:-কেন আপনাকে বলতে যাব কি হন আপনি আমার,কোন অধিকারে বলতে যাব আমি।(রাগি কন্ঠে)
.
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
.
প্রিয়া:-আমি তো আপনাদের বাসার কাজের মেয়ে আপনার বউ না যে আমি কোথায় গিয়ে ছিলাম আপনাকে সেটা বলতে হবে।(একটু চিতকারে মতো করে)
.
মাহিম কিছু বলছে না।
.
প্রিয়া:-আপনি আমাকে স্ত্রী হিসাবে মানেন না আমিও আপনাকে স্বামী হিসাবে মানিনা।
.
মাহিম কিছু বলছে না শুধু রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
.
প্রিয়া:-সো আমি কার বাসায় গেলাম না গেলাম, কার সাথে দেখা করি না করি তাতে আপনার কি?
.
মাহিম এখনো চুপ করে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
.
প্রিয়া:-আমি তো আপনার কেউ না তাই আমি কার সাথে সময় কাঠাই নাকাঠাই এই বিষয় নিয়ে আপনি একটা কথাও বলতে আসবেন না।
.
মাহিম রেগে প্রিয়া কাছে এগিয়ে এসে প্রিয়ার চুলের মুঠি ধরে টেনে নিজের কাছে এগিয়ে এনে।
মাহিম:-কি বললেন আপনি?
.
প্রিয়া:-যা শুনেছেন তাই বলেছি আমি,ছাড়ুন আমার লাগছে(ছারানোর চেষ্টা করে)
.
মাহিম আরো শক্ত করে টেনে ধরে।
মাহিম:-এই আপনার সাহস তো কম না আপনি…(রেগে)
.
প্রিয়া:-মাহিম বাবু প্লিজ ছাড়ুন আমার লাগছে(ছারানোর চেষ্টা করে কাদো কাদো ভাবে)
.
::::::::::Next Part:::::::::::
যদি ভালো লাগে তো জানাবেন কেমন লাগলো।
(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here