বউ_যখন_কাজের_মেয়ে
পর্ব_১২
#Shopner_Nayak
লেখা-মান্না ইসলাম মাহিম
.
.
প্রিয়া:-একটা বিবাহিত মেয়ের সামনে দাড়িয়ে তাকে বিধবা বলতে নেই।তাতে স্বামী অমঙ্গল হয়।হোক না আমার মিথ্যে বিয়ে।আপনি আমাকে স্ত্রী হিসাবে মানুন আর না মানুন।কিন্তু আমার স্বামী তো।আপনি পরুষ মানুষ এটা আপনি বুঝবেন না।আপনার কাছে এটা মিথ্যে বিয়ে হলেও আমার কাছে এটাই অনেক কিছু(মাহিমের দিকে তাকিয়ে)
.
মাহিম:-এই আপনি নিজেকে আমার বউ ভাবেন নাকি?(রেগে)
.
প্রিয়া:-আমি ভাবলেও আপনার কিছু যায় আসে নাকি?
.
মাহিম:-না বাট যদি ভেবে থাকেন তো সেটা একদমি ভূল ভাবছেন।
.
প্রিয়া:-আমি বোকা হলেও ওতটা বোকা নই যে আপনাকে আমার স্বামী ভাববো।আপনাকে আমার স্বামী ভাবা তো দূরের কথা আমি কখনো কল্পনাও করিনা।
.
প্রিয়ার কথা শুনে মাহিম আরো প্রিয়া কাছে এগিয়ে এসে রেগে বললল
মাহিম:-এটা কি আপনার মনে কথা নাকি শুধু মুখের কথা।?(রেগে)
.
প্রিয়া:-শুধু মুখের কথা হতে যাবে কেন? যা বলছি মন থেকেই বলছি।
.
মাহিম:-“এতটাই অযোগ্য আমি এতটাই খারাপ আমি, এতটাই ঘৃণা করো আমাকে যে নিজের স্বামী ভাবা তো দূরের কথা কখনো কল্পনাও করো না।
অবস্স কেনই বা আমাকে তোমার স্বামী ভাববে।
আমাকে তো তুমি ভালোইবাসো না।আমি তো তোমার কাছে একটা খারাপ মানুষ।তুমি তো তোমার শিহাব ভাইকে ভালোবাসো আমাকে না।
এর মানে হচ্ছে যে তোমার শিহাব ভাই তোমার ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য আমি না।
তবে আমাকে তুমি এখন যেভাবে অপমানটা করলে,ঠিক সেভাবেই আমিও এর প্রতিশোধ নিব প্রিয়া।আরো কাঁদতে হবে তোমাকে অনেক।আর সেটা খুব তারাতারিই।(রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে)
.
প্রিয়া:-সরুন আমাকে বিছানা করতে দিন,আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।
.
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
.
প্রিয়া:-কি হলো কি দেখছেন এমন করে?
.
মাহিম:-দেখছি যে আপনার কপালে অনেক দুঃখ আছে।(প্রিয়ার কাছ থেকে সরে গিয়ে)
.
প্রিয়া:-এ আর নতুন কথা কি?আমার কপালে সুখটাই বা ছিল কখন।সেই ছোট্ট থেকেই তো সবার অবহেলা অপমান এইসব পেয়েই বড় হয়েছে।
.
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
.
প্রিয়া:-আমার কপালে না সুখ ছিল আর আশাও করিনা যে কোন দিন আসবে।
.
মাহিম:-হুমম সেটাই।
.
এরপর প্রিয়া মেঝেতে সুয়ে পরলো আর মাহিম খাঁটের উপরে।
.
.
.
“সকালে বেলা”
সকাল বেলা মাহিম ঘুম থেকে একটু ডেরিতে উঠে ফ্রেশ হয়ে খাঁটের উপর বসে অফিসের কিছু পেপার দেখছিল।
প্রিয়ার সবাকে ব্রেকফাস্ট করিয়ে মাহিমের ডাকতে আসলো রুমে।
.
প্রিয়া:-আপনার খাঁবার রুমে নিয়ে আসবো নাকি নিছে খাবেন?
.
মাহিম:-আমি এখন ব্রেকফাস্ট করবো না।
.
প্রিয়া:-কখন করবেন?
.
মাহিম:-এই আপনি আমাকে এই প্রশ্ন করার কে?(প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
.
প্রিয়া:-কেউ না বাট আপনার তো অফিসে যাওয়ার সময় হয়েছে।তাই বললাম আর কি কখন করবেন।
.
মাহিম:-আজকে অফিসে যাব না।আমার এক ফ্রেন্ড ৩দিন হলো বিদেশ থেকে এসেছে।তার সাথে দেখা করতে যাব।
.
প্রিয়া:-(ভয় ভয় করে)আপনার ফ্রেন্ড?
.
মাহিম:-হ্যাঁ..!আপনার যেমন সেই ছোট্ট বেলার শিহাব ভাই আছে, তেমন আমারও সেই ছোট্ট বেলার বেস্ট ফ্রেন্ড আছে।ওর নাম হচ্ছে তুন্নি।
আর আমার ফ্রেন্ড মানে? আমার কি ফ্রেন্ড থাকতে পারেনা নাকি?(রেগে)
.
প্রিয়া:-(কাপা কাপা কন্ঠে)না মানে আপনি যে মেজাজি তাই বললাম।
.
মাহিম:-এই আপনি আমার সাথে মজা করছেন নাকি?
.
প্রিয়া:-মজা করবো কেন?আপনার সাথে কি আমার সেই কোন সম্পর্ক আছে নাকি যে আপনার সাথে আমি মজা করবো।
.
মাহিম:-তাহলে এত কথা বলছেন কেন? যান গিয়ে কপি নিয়ে আসুন(রাগি কন্ঠে)
.
এরপর প্রিয়া আর কিছু না বলে কপি আনতে গেলো মাহিমের জন্য।
.
.
“কিছুক্ষণ পর”
প্রিয়া মাহিমের জন্য কপি এনে মাহিমের দিকে কপির কাপটা বারিয়ে দিয়ে বলল।
প্রিয়া:-এই নিন আপনার কপি
.
মাহিম কিছু না বলে পেপার গুলো রেখে কপির কাপটা হাতে নিল।
.
প্রিয়া:-বলছিলাম….(আর কিছু বলার আগেই)
মাহিম:-২দিন হলো আপনার শিহাব ভাইয়ের কাছ থেকে আশার।কই আপনার শিহাব তো আপনাকে ফোন করলো না।
.
প্রিয়া(নিশ্চুপপ)
.
মাহিম:-নাকি ফোন করেছিল আপনি আমায় বললেন নি।
.
প্রিয়া কিছু বলছে না চুপ করে আছে।
.
মাহিম:-কি হলো কিছু বলছেন না কেন?
.
প্রিয়া:-দেখুন কেউ আমাকে কোন ফোন করেনি।(রেগে)
.
মাহিম:-মিথ্যে কথা।
.
প্রিয়া:-আপনি যেটা মনে করবেন সেটা।আপনি এখন এইসব কথা নিয়ে আবার শুরু করবেন নাকি আমার কাজের কথাটা বলবো(রেগেই)
.
মাহিম:-কাজের কথা?(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
.
প্রিয়া:-হুমম কাজের কথা।
.
মাহিম:-আপনার সাথে তো আমার কোন কাজের কথা নেই।
.
প্রিয়া:-আমি বলিনি যে আপনার আমার সাথে কাজের কথা আছে।আপনার নেই আমি জানি।কিন্তু আমার আপনার কাজের কথা সাথে আছে।
.
মাহিম:-আমার যখন নেই তখন আপনারাও নেই।থাকতে পারেনা।(বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে)
.
প্রিয়া:-দেখুন আমরা দুজন সম্পূর্ণ দুটো আলাদা মানুষ।আপনার আমার সাথে কাজের কথা না থাকলেও আমার আপনার সাথে কাজের ককথা আছে।
.
মাহিম:-এই আপনি আমার সাথে এভাবে কথা বলছেন আপনার লজ্জা করেনা।(কাছে এগিয়ে এসে)
.
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
.
মাহিম:-আপনার অতীত কিন্তু আমার জানা শেষ।
.
প্রিয়া:-এই মধ্যে আমার অতীতো জানা শেষ হয়েগেছে?
.
মাহিম:-হ্যাঁ হয়েগেছে।
.
প্রিয়া:-তো কি জানলেন?
.
মাহিম:-জানলাম আপনি কেমন মানুষ(প্রিয়া কাছ থেকে সরে গিয়ে)
.
প্রিয়া:-হুমম সেটাই তো জানতে চাইছি কি জানলে?
.
মাহিম:-জানলাম যে আপনি আসলে একটা চরিত্রহীন মানুষ।
.
প্রিয়া:-মাহিম বাবু এবার কিন্তু আপনি আপনার অধিকারের সিমাটা লঙ্ঘন করছেন।(রাগি কন্ঠে মাহিমের কাছে এগিয়ে এসে)
.
মাহিম:-(নিশ্চুপ)
.
প্রিয়া:-যাকে সম্মান করতে পারেন না তাকে অসম্মানও করবেন না।
.
মাহিম কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর..
মাহিম:-বাবা আপনার শিহাব ভাইয়ের নাম এ দেখছি অনেক কথা ফুটেছে মুখে
.
প্রিয়া:-শিহাব ভাইকে মিন করে কথা গুলো আপনিই বার বার বলছেন।আমি একবারও শিহাব ভাইয়ের কথা বলিনি।(বিরক্তিকর ভাবে)
.
মাহিম:-আপনার শিহাব ভাইকে মিন করে কথা বলছি তার কারণ আছে।
.
প্রিয়া:-কি কারণ শুনি?
.
মাহিম:-কালকে অফিস থেকে আশার সময় আপনার শিহাব ফোন করে আপনার কথা জিগ্যেস করছিল।
.
প্রিয়া:-কি??(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
.
মাহিম:-বাবা এতে অবাক হচ্ছেন কেন?মনে হচ্ছে যে আপনি কিছু জানেন না।
.
প্রিয়া:-আমি কিছু জানি মানে?
.
মাহিম:-এত ন্যাকামি করার কি আছে আমি ঠিক বুঝলাম না।আপনার মামার কাছে কথা বলে তো আপনার সাথে কথা বলার পারমিশন নিয়েই নিয়েছে।তাহলে আপনি এত ন্যাকামি করছেন কেন?(রাগি কন্ঠে)
.
প্রিয়া:-দেখুন এইসবের আমি কিছুই জানতাম না।
.
মাহিম:-এখন তো এই নাটকি করবেন।
.
প্রিয়া:-আমি আবার কি নাটক করছি?
.
মাহিম:-এই যে আপনি নাকি কিছু জানতেন না।
.
প্রিয়া:-দেখুন আমি সত্যিই বলছি আমি কিছুই জানতাম না।
.
মাহিম:-থাক আপনাকে আর মিথ্যে বলতে হবেনা।
.
প্রিয়া:-এই দেখুন আমার যা বলার আমি বলে দিয়েছি।এখন আপনার যেটা মনে হয় আপনি সেটাই ভাবতে পারেন।আর যদিও শিহাব ভাই আপনাকে ফোন করে আমার কথা জিগ্যেস করেও থাকে তাতে আপনিই বা কি?আমি তো আপনার কেউ না।(বিরক্তিকর ভাবে)
.
মাহিম:-হুমম ঠিকি আমার কিছু না।বাট আমার পারমিশন ছাড়াই আপনার শিহাব ভাইকে আমার নাম্বারটা দেওয়া হয়েছে কেন?(রেগে)
.
প্রিয়া:-আচ্ছা ঠিক আছে আমি মামাকে বলে দিব আমার কাছ থেকে যেন ক্ষমা চেয়ে নেয়।(বিরক্তিকর ভাবেই)
.
এইবলে প্রিয়া মাহিমের দিকে তাকিয়ে রুম থেকে চলেগেল।
.
মাহিম:-“তুমিও চাও যে তোমার শিহাব ভাই তোমাকে ফোন করুক।ঠিক আছে এবার তুমি দেখ তাহলে আমিও কি কি করি।(একা একা মনে মনে)
.
.
.
প্রিয়া কাজ করছিল এমন সময় মাহিম প্রিয়া ডাকলো।প্রিয়া মাহিমের ডাক শুনে রুমে এলো।
.
প্রিয়া:-কিছু লাগবে?
.
মাহিম:-না কিছু লাগবে না। আমার কাপড় গুলি একটু বের করে দিন তো।অনেক দিনপর তুন্নির সাথে দেখা করতে যাচ্ছি তাই ভালো একটা ড্রেস পরে যেতে হবে।
.
প্রিয়া মাহিমের কথা শুনে সব কাপড় বের করে বিছানার উপর দিয়ে বলল
প্রিয়া:-এই নিন আপনার সব কাপড় বের করে দিয়েছি(রাগি কন্ঠে)
.
এইবলেই রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছিল।
.
মাহিম:-মনে হচ্ছে খুব বিজি?
.
প্রিয়া:-বাড়ির কাজের মানুষ সব সময় তো কাজি করতে হয়।আর কিছু বলবেন?(রেগে)
.
মাহিম:-বাবা এত মেজাজ দেখাচ্ছেন কেন ঠিক বুঝলাম না।
.
প্রিয়া:-আপনি যেটা করতে বলেছেন সেটা করেছি এখন কথা না বারিয়ে তারাতারি রেডি হয়ে যান নাহলে আপনার ঐ তুন্নির সাথে দেখা করতে ডেরি হয়ে যাবে(রেগেই)
.
মাহিম:-আমার ডেরি নিয়ে আপনাকে মাথা ঘামাতে হবে না ওটা আমিই বুঝে নিব।।
.
প্রিয়া:-মাথা ঘামাচ্ছিল কারণ আপনার জন্য আপনার তুন্নি অপেক্ষা করে থাকবে।আর অনেক দিন পর দেখা করবেন কোথাও ঘুরতে যাওয়ার প্লান-ট্লানও করবেন। তাই বলছি(রেগেই)
.
মাহিম কিছু বলছে না চুপ করে আছে।
.
প্রিয়া:-আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন?
.
মাহিম:-দেখছি।
.
প্রিয়া:-মানে?
.
মাহিম:-মানে আপনি মুখে যতই উদার উদার কথা বলুন না কেন,আসলে আপনি ততটা উদার নন।
.
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
.
মাহিম:-আচ্ছা বাদ-দিন বলুন তো কোন ড্রেসটা পোরে যাই।
.
প্রিয়া:-আপনার তুন্নি যেই ড্রেসটা পছন্দ করবে সেটাই পোরে যান।
.
রাগ দেখিয়ে বলেই প্রিয়া রুম থেকে বের হয়েগের।
.
মাহিম:-“বুঝলাম না প্রিয়া আমাকে রাগি দেখিয়ে কথা বলছে কেন?(একা একা মনে মনে)
.
.
.
“রাত ১০টা”
মাহিম এখনো বাসায় ফেরেনি।প্রিয়া সমস্ত কাজ শেষ করে রুমে চলে আসলো।আজকে একটু বেশিই প্রিয়ার মনটা খারাপ।রুমে এসে তার মা-বাবার সেই ছবিটা বেড় করে তাকিয়ে ভাবছে যে সে যাকে বেশিই ভালোবাসে সেই তাকে ছেড়ে চলে যায়।মা-বাবাকে ভালোবাসতো তারা ছোট্ট বেলায় ছেড়ে চলেগেল।মামাকে ভালোবাসতো তাকে ছেড়ে আসতে হলো।মাহিমকে ভালোবাসে ঠিকি বাট তাকে পাওয়া হলো না।
.
.
“রাত ১১টা”
মাহিম রুমে ঢুকে দেখলো প্রিয়া সুয়ে আছে।প্রিয়া মাহিমকে দেখে বিছানা থেকে উঠে দাড়ালো।
.
মাহিম:-কি ব্যাপার আপনি এখনো জেগে আছেন যে?(ভিতর আসতে আসতে)
.
প্রিয়া:-না মানে ঘুম আসছিল না তাই।
.
.
.
এরপর মাহিম ওয়াশরুমে গেল।কিছুক্ষণ পর মাহিম ওয়াশরুম থেকে বেড় হওয়ার পর প্রিয়া বলে উঠলো..
প্রিয়া:-আপনার খাবার…..ওহ্ আপনি তো মনে হয় আপনার তুন্নির সাথে খেয়ে আসছেন তাই না।(একটু রেগে)
.
মাহিম:-হুমম ও কি আর না খেয়ে আসতে দেয়।রেস্টুরেন্ট ও আমাকে নিজ হাতে খাইয়ে তারপর আসতে দিল।(মিথ্যে কথা)
.
মাহিম:-ওহ্
.
মাহিম:-অনেক দিনপর ওর সাথে দেখা।আজকে সারাটা দিন ঘুরলাম।তুন্নি আমাকে আসতে দিচ্ছিল না।বলল যে আজকের রাত ওর বাসায় থেকে যেতে।
.
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
.
মাহিম:-আর ও বলল যে যতদিন এই দেশে থাকবে ততদিন নাকি আমাদের বাসায় থাকবে।
.
প্রিয়া:-কেন?
.
মাহিম:-কেন মানে?
.
প্রিয়া:-মানে আপনার ফ্রেন্ড এই বাসায় থাকবে কেন?(রেগে)
.
মাহিম:-বারে আমার ফ্রেন্ড আমার বাসার আসতে পারে না বুঝি?
.
প্রিয়া:-পারে কিন্তু এই বাসায় থাকবে কেন?
.
প্রিয়া:-আমি ঠিক বুঝলাম না।তুন্নি এই বাসায় থাকলে আপনার সমস্যা কি?
.
প্রিয়া:-না আমার আবার কি সমস্যা।আমার কোন সমস্যা নেই।(মাহিমের কাছ থেকে সরে গিয়ে)
.
মাহিম:-তাহলে কথা না বানিয়ে খাবার দিন আমাকে।
.
প্রিয়া:-আপনি না খেয়ে আসছেন?(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
.
মাহিম:-তো কি হয়েছে?বাহিরে খেয়ে আসছি বলে কি বাসায় খাওয়া যাবে না নাকি?
.
প্রিয়া:-আমি সেটা বলছি না।
.
মাহিম:-তাহলে কথা না বারিয়ে খাবারটা বেরে দিন।
.
প্রিয়া:-আমি পাব না টেবিলে রাখা আছে আপনি নিজে বেরে খেয়ে নিন।(রাগ দেখিয়ে)
.
এইবলে প্রিয়া মেঝেতে বিছানা করতে লাগলো।
.
মাহিম:-এই আপনি পাবেন না মানে কি?(প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে)
.
প্রিয়া:-পাব না মানে পাব না।আমার খুব ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাবো।সরুন তো সরুন(রাগ দেখিয়ে)
.
মাহিম:-এই আপনি আজ সকাল থেকেই আমাকে রাগ দেখাচ্ছেন কেন ঠিক বুঝলাম না।
.
প্রিয়া:-আমি আবার আপনাকে রাগ দেখাতে যাব কেন?(অভিমানী সুরে)
.
মাহিম:-না আপনি যখন থেকে তুন্নির কথা শুনেছে তখন থেকেই দেখছি আপনি আমাকে রাগ দেখিয়ে কথা বলছেন।
.
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
.
মাহিম:-এই আপনার কি হিংসে হচ্ছে নাকি?
.
প্রিয়া:-মানে
.
মাহিম:-মানে হলো প্রতিদিনি আমি বলার আগেই আমাকে খাবার বেরে দিতেন,কিন্তু আজকে দিচ্ছেন না।আমাকে বেরে খেতে বলছেন।
.
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
.
মাহিম:-তখন তুন্নি এই বাড়ি থাকার কথা শুনে বলছেন যে সে কেন এই বাড়িতে থাকবে।এই আপনি কি নিজেকে আমার বউ মনে করেন নাকি?(শান্ত ভাবে)
.
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
.
মাহিম:-কি হলো উতর দিচ্ছেন কেন?বলুন আপনি নিজেকে আমার বউ ভাবেন নাকি নাকি?
.
প্রিয়া:-(রাগি কন্ঠে)না ভাবি না ভাবি না।কোনদিন ভাবিনি।আর কোনদিন যেন ভাবতেও না হয় এইরকম একটা ভয়ানক ভাবনা। (কাঁদো কাঁদো ভাবে বলেই অন্যদিকে ঘুরে দাড়ালো প্রিয়া)
.
প্রিয়ার কথা শুনে মাহিম ফোনটা বিছানায় রেখে প্রিয়ার পিছনে দাড়িয়ে প্রিয়ার দু’কাধে দু’হাত রাগলো।তারপর প্রিয়ার কানের কাছে মুখ এগিয়ে এনে অস্তে অস্তে বলতে লাগলো
.
মাহিম:-কোনটা ভয়ানক ভাবনা শুনি?(শান্ত ভাবে)
.
প্রিয়া একদম নিশ্চুপ কিছু বলছে না।
.
মাহিম:-কি হলো বলুন কোনটা ভয়ানক ভাবনা বলুন।(শান্ত ভাবেই)
.
প্রিয়া:-(কাঁপা কাঁপা কন্ঠে)আপনার বউ হওয়াটা(বাচ্চাদের মতো করে)
.
মাহিম:-কোন দিক দিয়ে ভয়ানক শুনি?
.
প্রিয়া:-আপনার মতো একটা লোক আমার স্বামী এটা আমি ভাবতেও পারিনা।(কাঁদো কাঁদো ভাবেই)
.
মাহিম:-তো আপনার স্বামী হতে গেলে কি কি থাকতে হবে তার মাঝে?
.
প্রিয়া:-আর যাই থাকুক না কেন তার মাঝে।আমার যে স্বামী হবে,সে শুধুই আমাকে ভালোসবে।আর কাউকে না।আর কিছু না থাকলেও অন্তত তার চরিত্রটা ঠিক থাকতে হবে।(কেঁদে কেঁদে)
.
প্রিয়ার কথা শুনে মাহিম চমকে উঠে প্রিয়াকে ছেড়ে দিয়ে বলর
.
মাহিম:-সেটা নিশ্চই আপনার শিহাব ভাই(রাগি কন্ঠে)
.
প্রিয়া:-সেটা নিয়ে আপনার মাথা ব্যাথা কেন?শিহাব ভাই হোক আর হোক আর যাই হো আপনার কি তাতে?(কাঁদো কাঁদো ভাবেই)
.
মাহিম:-আপনি একজন অকৃতগ্য বেইমান।শুযুগশন নেন।(রেগে)
.
প্রিয়া:-(নিশ্চুপ)
.
মাহিম:-এত যে চরিত্র নিয়ে বড় বড় কথা বলছেন আপনার নিজের চরিত্রটা কি?(রেগে প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে)
.
প্রিয়া কিছু বলছেনা।
.
মাহিম:-সবাই তো জানে যে বোন বিয়ের পিরিতে বসার আগে পালিয়ে গেলো আর অনি অমনি শাড়ী গহনা পোরে বিয়ের পিরিতে বসে পরলো।(রেগেই)
.
প্রিয়া কিছুই বলছেনা শুধু দাড়িয়ে চোখের চল ফেলছে।
.
মাহিম:-আপনার শিহাব ভাই যদি এতই ভালো ওর প্রতি যদি আপনার ওতই প্রেম-পিরিত তাহলে অপেক্ষা করলেন না কেন তার জন্য।
.
প্রিয়া:-(……)
.
মাহিম:-আপনি তখন জানতে যে আমার জীবনেও তুন্নি আছে।
.
প্রিয়া:-(…..)
.
মাহিম:-আচ্ছা মানলাম আমি না হয় চরিত্রহীন,আপনি কি চরিত্রবতী?যে মেয়ে টাকার জন্য দেহ্ বিলিন দেয় তাকে মানুষ পতিতা বলে।আর যে মেয়ে বিয়ের পরেও অন্য একটা ছেলের সাথে সময় কাঠায় তাকে…..
.
মাহিম আর কিছু বলার আগেই প্রিয়া মাহিমের শার্ট এর কলার চেপে ধরে বলতে লাগলো.
প্রিয়া:-আর একটা কথা বললে আমি কিন্তু আপনাকে একদম খুন করে ফেলবো(কেঁদে কেঁদে)
.
মাহিম:-গায়ের জোরে আপনি কিন্তু আমার সাথে পারবেন না।ছাড়ুন আমাকে।(রাগি কন্ঠে)
.
এইবলে মাহিম ঝটকা দিয়ে প্রিয়ার হাত দুটো ছারিয়ে নিয়ে প্রিয়াকে সরিয়ে দিতেই প্রিয়া খাঁটের সাথে ধাক্কা লেগে মেঝেতে পোরে গেলো।
.
মাহিম:-(রাগি কন্ঠে)তুন্নি এই বাড়িতেই আসবে আর আপনিই তুন্নির সমস্ত কাজ করে দিবেন।
.
শব্দহীন প্রিয়া।
.
মাহিম:-আপনার ওত যোগ্যতাই নেই ভালো ব্যবহারের।আপনার যোগ্যতার থেকেও ভালো ব্যবহার করা হয়েছে আপনার সাথে।
.
রাগ দেখিয়ে বলে অন্যদিকে ঘুরে দাড়ালো মাহিম।
.
প্রিয়া কিছু না বলে মেঝে থেকে উঠে দাড়ালো।
.
প্রিয়া:-হ্যাঁ তাই তো,,আমি তো কাজ করার জন্যই এই বাড়িতে এসেছি।আমি জানি আমাকে কাজ করেই খেতে হবে।আর আমার কাজ করতে কোন কষ্টও হয় না।এখন সবার কাজ করছি এরপর তুন্নি এলে তুন্নিও কাজ করে দিব।(কেঁদে কেঁদে)
.
মাহিম প্রিয়ার কথা শুনে প্রিয়ার দিকে ঘুরে তাকাতেই দেখলো খাঁটের সাথে ধাক্কা লেগে প্রিয়ার কপাল কেটে রক্ত বের হচ্ছে।
.
প্রিয়া:-আর আপনি যদি বলেন তুন্নি এলে আমাকে চলে যেতে হবে,তাহলে আমিও চলেও যাব আপনার বাড়ি ছেড়ে(কেঁদে কেঁদেই)
:::::::::Next Part::::::::
যদি ভালো লাগে তো জানাবেন কেমন লাগলো।
মোবাইল দিয়ে লেখা ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।