বউ_যখন_কাজের_মেয়ে
.
>৩৭/শেষ_পর্ব
লেখক:-মান্না ইসলাম মাহিম
.
.
.
কিছুক্ষণ পর ডাক্তার চলে আসলো।সবাই রুমে ডাক্তার প্রিয়াকে চেক করতে করতে প্রিয়ার হুশ ফিরলো।প্রিয়া চোখ খুলো সবাইকে দেখে উঠে বসার চেষ্টা করলো।বাট অর্পা উঠতে দিল না।এরপর
ডাক্তার:-ভয়ের কোন কারণ নেই…এনি “মা” হতে চলেছেন!
ডাক্তারের কথা শুনতেই মাহিম আর প্রিয়ার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পরলো!
অর্পা:-সত্যি?
ডাক্তারে:-জ্বী
প্রিয়া আর মাহিম দু-জনি-ই চুপ।মাহিম একটু রাগি ভাবে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে!ডাক্তারের কথা শুনে প্রিয়াকে জরিয়ে ধরে…
অর্পা:-congregation প্রিয়া…আমি এক্ষনি মামনি কে গিয়ে বলি।মামনি শুনলে অনেক খুশি হবে।
অর্পা প্রিয়াকে হাসি মুখে জরিয়ে ধরে বলেই রুম থেকে বেড় হয়েগেলো।
ডাক্তার:-আমি তাহলে আসছি..
ডাক্তার রুম থেকে বেড় হয়ে যাওয়ার পর।
মাহিমের মা:-ছিঃ ছিঃ আমাদের বাড়ির মানসম্মান সব শেষ।একটা কাজের……
আর কিছু বলার আগেই মাহিম বলে উঠলো..
মাহিম:-মা তোমরা এর মাঝে না ঢুকলে খুশি হবো।তোমাদের এর মাঝে কোন কথা বলার দরকার নেই।
মাহিমের বাবা:-কথা বলার দরকার নেই মানে?এই কথা যদি কোন ভাবে মিডিয়ার কাছে চলে যায় তো আমাদের বাড়ির মানসম্মান কোথায় গিয়ে দাড়াবে বলতে পারো??আমাদের….(আর কিছু বলার আগেই)
মাহিম:-বাবা বলছি না এর মাঝে তোমাদের কথা না বলতে।
মাহিমের মা:-মাহিম……
মাহিম:-মা প্লিজ তোমরা একটু বাহিরে যাবে প্লিজ(বিরক্তিকর ভাবে)
এরপর মাহিম মা-বাবা আর কিছু না বলে।রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে রুম থেকে বেড় হয়েগেলো।প্রিয়া কিছু বলছে না নিশ্চুপ হয়ে আছে।মাহিম ও কিছু বলছে না রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।প্রিয়া কিছুক্ষণ চুপ করে খাটের উপরে বসে থাকার পর খাট থেমে নেমে পরলো।
প্রিয়া খাট থেকে নামতেই মাহিম প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো.
মাহিম:-বাচ্চাটা কার?
প্রিয়া:-মানে??
মাহিম:-মানে বুঝতে পারছেন না?আপনার পেটের অবৈধ বাচ্চার….
মাহিম আর কিছু বলার আগেই প্রিয়া রেগে মাহিমের শার্ট এর কলার ধরে ভেজা চোখে রাগি ভাবে বলতে লাগলো…
প্রিয়া:-খবরদার মাহিম বাবু।আমার বাচ্চা কে নিয়ে যদি আপনি আর একটা বাজে কথা বলেন তো আমি কিন্তু আপনাকে খুন করে ফেলবো(রাগি চোখে মাহিমের চোখের দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়ার কথা শুনে মাহিম নিজের শার্ট এর কলার ছাড়িয়ে নিয়ে রাগি চোখে প্রিয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে…
মাহিম:-বাচ্চা তো আপনার সেটা জানি।কিন্তু এই বাচ্চার আসল বাবা কি একজন-ই নাকি….
মাহিম আর কিছু বলার আগেই প্রিয়া আবার রেগে মাহিমের শার্ট এর কলার টেনে ধরে রাগি কন্ঠে বলতে লাগলো..
প্রিয়া:-এই বাচ্চার বাবা একজন-ই আর……সেটা হলো আপনি..(মাহিমের চোখের দিকে তাকিয়ে)
মাহিম আবার শার্ট কলার ছাড়িয়ে নিয়ে বলর..
মাহিম:-এই খবরদার একদম আমাকে এর মাঝে জাড়াবেন না।
প্রিয়া কিছু বলল না চোখে জল নিয়ে মাহিমের দিকে তাকিয়ে রইলো।
মাহিম:-আপনার কি মনে হয় আপনি বাহিরে নষ্টামি করবেন,আর সেই নষ্টামির সমস্ত দোষ ভার আপনি আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিবেন।আর আমি আপনাকে আমার স্ত্রী হিসাবে মেনে নিব?(রাগি কন্ঠে প্রিয়ার দিকে তাকিয়েই)
প্রিয়া মাহিমের কথা শুনে কিছুক্ষণ চুপ করে চোখের জল ফেলার পর।চোখে জল নিয়ে ভেজা চোখে মাহিমের দিকে তাকিয়ে…
প্রিয়া:-আপনি এইসব কি বলছেন??(চোখে জল নিয়ে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
মাহিম:-(প্রিয়ার কাছে এগিয়ে এসে রেগে)একদম ঠিক বলছি আমি!আপনি মাঝে মাঝে কোথায় জানি যেতেন না।এটাই হচ্ছে আপনার পাপের ফল..(রাগি ভাবে প্রিয়া চোখে চোখ রেখে)
প্রিয়া কিছু বলছে না।চোখে জল নিয়ে মাহিমের চোখেন দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে চোখের জল ফেলছে।এরপর মাহিম আবার বলতে লাগলো..
মাহিম:-তবে খুব ভালো প্লান করছিলেন বাট আপসোস যে আপনার প্লানটা success হতে দিলাম না আমি।(প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া কিছু বলছে না।শুধু দাড়িয়ে চোখের জল ফেলছে।
মাহিম:-মা ঠিকি বলতো যে আপনাদের মেয়েরা actually কেমন হয়।আপনি যে শুধু একটা চরিত্রহীন নষ্ট মেয়ে তা নয়।আপনি যে একটা লোভি মেয়ে সেটা আজ আমি খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারছি।
প্রিয়া এখনো নিশ্চুপ শুধু চোখের জল ফেলছে মাহিমের দিকে তাকিয়ে।এরপর মাহিম আবার বলতে লাগলো..
মাহিম:-এতদিন মা-বাবা যে করতে চাইতো আমি সেটা হতে দেইনি।বাট আজকে আমি সেটাই করবো!
রাগি চোখে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে বলেই মাহিম প্রিয়া ব্যাগপত্র হাতে নিয়ে রুম থেকে বেড় হয়ে সবকিছু নিয়ে ছুড়ে মারলো।প্রিয়া ব্যাগপত্র নিচে পরতেই সবাই নিচে আসলো।এরপর মাহিম রুমে গিয়ে প্রিয়ার হাত ধরে টেনে নিয়ে আসলো।অর্পা সেটা দেখে বলে উঠলো.
অর্পা:-মাহিম কি করছিস কি তুই?
মাহিম অর্পার কথায় কোনো কান দিয়ে প্রিয়ার হাত ধরে ঝটকা দিতেই প্রিয়া মেঝেতে তার ব্যাগের কাছে গিয়ে পরলো।এরপর মাহিম বলতে লাগলো…
মাহিম:-এই মুহূর্তে এক্ষনি এই বাসা থেকে বেড় যান বলছি..
অর্পা:-মাহিম এইসব করছিস?(রেগে)
মাহিম:-আপু প্লিজ তুমি এর একদম কোন কথা বলতে আসবে না।
অর্পা:-মানে কি প্রিয়ার পেটে তোর সন্তান আর তুই প্রিয়াকে বাসা থেকে বেড় করে দিচ্ছিস?
মাহিম:-আপু তুমি সবকিছু জানোনা তাই এইসব বলছো
অর্পা:-মাহিম তোর কোথায় ভুল হচ্ছে তুই ভুল করছিস
প্রিয়া মেঝেতে পরে চুপ করে চোখের জল ফেলছে কিছু বলছে না।
মাহিম:-ভুল তো তুমি ও করে ছিলে,নীলকে বিশ্বাস করে।
মাহিমের কথা শুনে অর্পা একদম থমকে গেলো।
এরপর মাহিম আবার বলতে লাগলো।
মাহিম:-সেদিন মা-বাবা তোমাকে ঠিক একি কথাই বলেছিল যে তুমি ভুল করছো।বাট তোমার কাছে সেটা ঠিক বলে মনে হয়েছিল।
অর্পা আর কিছু বলছে না।চুপ করে আছে।
মাহিম:-আমি তোমার মত ঠিক মনে করে ভুল করতে চাই না!
সবাই চুপ কেউ ই কিছু বলছে না।এরপর মাহিম আবার লাগলো..
মাহিম:-কি হলো আমি কি বলছি বুঝতে পারেননি?(রাগি কন্ঠে প্রিয়ার দিকে লক্ষ করে)
প্রিয়া নিশ্চুপ শুধু চোখের জল ফেলছে।
মাহিম:-আপনি কি বেড় হয়ে যাবেন নাকি গলা ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিতে হবে?(রাগি কন্ঠে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া কিছুক্ষণ চুপ করে চোখের জল ফেলার পর বলতে লাগলো..
প্রিয়া:-আমাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিতে হবে না।আমি নিজেই বেড় হয়ে যাচ্ছি!
এরপর প্রিয়া চোখের মুছে নিজের ব্যাগপত্র নিয়ে উঠে দাড়ালো।তারপর মাহিমেরর দিকে তাকাতেই মাহিম অন্যদিকে তাকালো।এরপর প্রিয়া অর্পার দিকে তাকিয়ে..
প্রিয়া:-ভালো থাকবেন আপু।আর মামনি ফিরলে উনার খেয়াল রাখবেন!
এইবলেই প্রিয়া চোখের জল মুছতে মুছতে রুম থেকে বেড় হয়েগেলো।প্রিয়া বাসা থেকে বেড় হয়ে যাওয়ার পর মাহিম উপরে চলে আসলো!
রাতের বেলা অর্পা মাহিম খেতে বলল মাহিম শুধু খাবেনা বলেই রুমে এসে দরজা লক করে দিল।
তারপর চেয়ার টেনে জানালার কাছে বসে পরলো।
কিছুই ভালো লাগছে না মাহিমের সব সময় কেন জানি প্রিয়ার কথা খুব মনে পরছে।প্রিয়া স্মৃতি গুলো চোখের সামনে ভেসে উঠছে।সব কিছুই থেকেও কেন জানি মাহিমের খুব-ই একা একা লাগছে।প্রিয়া মাঝে মাঝে কোথায় যেত?কার কাছে যেত?কেন যেত?।একবার ভাবছে প্রিয়ার সন্তানের বাবা ও আর একবার ভাবছে এটা প্রিয়ার পাপের ফল।
মাহিম নিজেও ভাবতে পারছে না যে কোনটা সত্যি?কোনটা মেনে নিবে?প্রিয়াকে বাসা থেকে বেড় সে ভুল করেছে নাকি ঠিক করেছে।এইসব ভাবতে মাহিমের মাথা ধরে যাচ্ছে মাহিম বসে থাকতে পারলো না সুয়ে পরলো।মাহিম সুয়ে চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করছে বাট পারছে না।যখনই চোখ বন্ধ করছে তখনই প্রিয়ার সাথে কাটানো মুহূর্ত গুলি চোখের সামনে ভেসে উঠছে।কেমন অস্থিরতা অস্থিরতা লাগছে মাহিমের।কেন এমন লাগছে মাহিম নিজেও বুঝতে পারছে না!
পরের দিন’আজকে মাহিম অফিসে যায় নি।গতরাতে ঘুমাতে পারেনি মাহিম।সারাটা রাত প্রিয়ার কথা মনে করে ছটপট করে অস্থিরতার মাঝে কাটিয়েছে।ভোর বেলা একটু চোখ বন্ধ করেছিল।চোখ খুলে দেখলো ১১টা বেজেগেছে।মাহিম ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে মন মরা করে বসে জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছে।আর ভাবছে”প্রিয়াকে তো নিজেই বাসা থেকে বেড় করে দিয়েছি।তাহলে ওর কথা বারবার কেন আমার এত মনে পরছে?কেন বারবার শুধু ওর কথাই আমায় ভাবাচ্ছে?।হ্যা আমি ও কে ভালোবাসি ঠিক বাট ও তো আমায় ভালোবাসে না।আমি ও ভালোবাসি ও একটি বারের জন্য এটা বুঝতে পারেনি?নাকি বুঝেও আমায় ঠকিয়েছে?আমি ও যতই ভুলে যেতে চাই ততই শুধু ওর কথাই আমার মনে পরছে।তাহলে কি আমি যা করছি ভুল করেছি?
এইসব কথা ভাবতে ভাবতে হঠাৎ দরজা খুলার শব্দ পেয়ে মাহিম চমকে উঠে দরজার দিকে তাকিয়ে দেখলো তুন্নি।এরপর তুন্নি মাহিমের পাশে.
তুন্নি:-যাকে থাকতে পারবি না তাকে ছেড়ে দিলি কেন?
মাহিম:-মানে?(অবাক দৃষ্টিতে তুন্নির দিকে তাকিয়ে)
তুন্নি:-মানে প্রিয়াকে ছাড়া থাকতে পারছিস না,তাহলে প্রিয়াকে বাসা বেড় করে দিয়েছিস কেন?
মাহিম নিশ্চুপ কিছু বলল না।তুন্নি মাহিম কে চুপ করে থাকা দেখে আবার বলতে লাগলো..
তুন্নি:-প্রিয়ার জন্য এতকিছু করলি অথচ প্রিয়াকে কোনদিন বলতে পারলি না যে তুই ভালোবাসিস..
মাহিম কিছু না বলে তুন্নির দিকে তাকাতেই তুন্নি বলে উঠলো..
তুন্নি:-হ্যা আমি মানছি যে তুই একবার তোর ভালোবাসা প্রকাশ করেছিস।প্রিয়াকে বলেছিলি যে তুই ও কে ভালোবাসিস প্রিয়া বিয়ে করতে চেয়েছিলি, কিন্তু প্রিয়া তখন তোর ভালোবাসাকে ignore করেছে।বাট তুই তো এখনো প্রিয়াকে লাভ করিস তাই না?
মাহিম:-তাই বলে অন্যের সন্তান কে আমার নিজের সন্তান বলে মেনে নিব?(রাগি কন্ঠে তুন্নির দিকে তাকিয়ে)
তুন্নি:-দেখ প্রিয়া অমন মেয়ে না।আমি কিছুদিন-ই বুঝতে পারছি।তোর কোথায় ভুল হচ্ছে তুই যা গিয়ে প্রিয়াকে ফিরিয়ে নিয়ে আয়!
মাহিম:-তুই যতই বলিস না কেন আমি কিছুতেই একটা অবৈধ সন্তান কে আমার সন্তান বলে মেনে নিতে পারবো না।এটা আমি ভাবতেও পারিনা।প্লিজ তুই এখন চলে যা(বসা থেকে উঠে)
মাহিমের কথা শুনে তুন্নি কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো।তারপর বসা থেকে উঠে।
তুন্নি:-ওকে তোর লাইফ তোর ইচ্ছে।আমার যা বলার সেটা বললাম।
এইবলে তুন্নি রুম থেকে বেড় হয়েগেল।তুন্নি রুম থেকে বেড় হয়ে যাওয়ার পর মাহিম আবার চেয়ারে বসে পরলো!বিয়ের কয়েক মাস পর মাহিম ঠিক করে যে প্রিয়া ও কে লাভ করে নাকি ও কে এখনো একটা খারাপ চরিত্রহীন মানুষ ভাবে।এটা পরিক্ষা করার জন্য মাহিম ওর ফ্রেন্ড তুন্নি কে সবকিছু বলে আর তুন্নি সহ প্রেম প্রেম একটা নাটক করে!তুন্নি মাহিমের বাসায় এসে অভিনয় করার পর মাহিম বুঝতে পারে যে প্রিয়া মাহিমকে ভালোবাসে।এরপর মাহিম ঠিক করে তুন্নির সাথে একটা বিয়ের নাটক করবে।সবকিছুই ঠিকঠাক থাকবে বাট বিয়ের দিনে শুধু বউটা চেন্স হবে।বিয়ের দিন সবার সামনে মাহিম প্রিয়া কে তার স্ত্রীর পরিচয় করিয়ে দিবে।এটা প্রিয়া সারপ্রাইজ দিবে মাহিম ঠিক করে।বাট তার আগেই প্রিয়া বাসা থেকে চলে যায়!
৩দিন পর মাহিম অফিসে চলেগেল।বাট কিছুতেই কাজে মন বসাতে পারছে না।কিছুই ভালো লাগছে না।শুধু কেন জানি প্রিয়ার কথাই মনে পরছে!আকাশ খুবই খারাপ।অল্পকিছুক্ষনের মধ্যই বৃষ্টি নামতে পারে।মাহিমের কিছুই ভালো লাগছে তারাতারি অফিস থেকে বাসাতে ফিরলো মাহিম।রুম ঢুকতেই রুমটা কেন জানি ফাকা ফাকা লাগছে।প্রিয়া চলে যাওয়ার পর থেকেই যেখানেই যাচ্ছে শুধু কেন প্রিয়ার কথাই মনে পরছে।আর প্রিয়ার কথা মনে পরতেই মাহিমের ভিতরে কেনম জানি কিছু একটা হাড়ানোর অস্থিরতা অস্থিরতা অনুভাব কাজ করতে থাকে।তখন আর কিছুই ভালো লাগেনা মাহিমের।বাহিরে প্রছন্ড বৃষ্টি হচ্ছে মাহিম ফ্রেশ হয়ে জানালার খুলে বসে বাহিরে দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে।এমন সময় সেদিনের দু-জনে বৃষ্টিতে ভেজার সেই মুহূর্ত গুলো চোখের সামনে ভেসে উঠলো লাগলো।কিছুক্ষণ পর আকাশে বিদ্যুৎ চমকাতেই মাহিমের ঘোর কাটলো।মাহিম চমকে উঠে দেখলো যে অতিতে চলে গিয়েছিল।প্রিয়ার সাথে কাটানো মুহূর্তের কথা গুলো মনে পরতেই মাহিম প্রিয়ার প্রতি আরো দুর্বল হয়ে পরলো।মাহিম বসা থেকে উঠতে যাবে ঠিক তখনি দেখলো তার পায়ের কাছে একটা কাগজ পরে আছে।(প্রিয়ার সেই প্রেসক্রিপশন)
মাহিম সেটা হাতে নিয়ে দেখতেই মাহিমের চোখ বড় বড় হয়েগেলো।মাহিম আর বসে না থেকে দ্রুত রুম থেকে বেড় হয়ে বৃষ্টির মাঝেই গাড়ি নিয়ে প্রেসক্রিপশনের address এ সেই Hostile এ সেই ডাক্তারের চেম্বার এ চলে আসলো।তারপর ডাক্তারের হাতে সেই প্রেসক্রিপশনটা দিল।ডাক্তার ভালো করে প্রেসক্রিপশনটা দেখে সবকিছুই খুলে বলল মাহিমকে।ডাক্তারের সমস্ত কথা শুনে মাহিমের চোখের কোনায় পানি চলে আসলো।মাহিমের সবকিছুই একদম পরিষ্কার হয়েগেলো।প্রিয়া মাঝে মাঝে কোথায় আসতো?প্রিয়া কেন বারবার বলতো যে বাসা থেকে চলে যাবে।প্রিয়া কেন সেদিন মাহিমকে ওর রিপোর্ট দেখায়নি।এইসব কিছুই মাহিমের কাছে পরিষ্কার হলো।সাথে এটাও বুঝতে পারলো যে প্রিয়ার সন্তানের বাবা কে?।মাহিম আর ডাক্তারের সামনে বসে থাকতে পারলো না।চোখের মুছতে মুছতে ডাক্তারের চেম্বার থেকে বেড় হয়ে গাড়িতে বসে পরলো।মাহিম গাড়ি চালাচ্ছিল আর প্রিয়াকে আজে-বাজে কথা বলা,কারণে অকারণে কষ্ট দেওয়া।গায়ে হাত তোলা।বাসা থেকে বেড় করে দেওয়া।এইসব সমস্ত কিছু মাহিমের চোখে সামনে ভেসে উঠতেই মাহিমের চোখ ঝাপসা হয়ে আসলো।চোখ দিয়ে পানি বেড় হতে লাগলো।এভাবে কিছুদূরে যাওয়া পর একটা বড় গাড়ির সাথে ধাক্কা লাগতেই মাহিম অজ্ঞান হারিয়ে ফেললো!
পরের দিন মাহিমের জ্ঞান ফিরে চোখ খুলতেই দেখলো মাহিম Hostile এ বেড এ সুয়ে।কপালে ব্যান্ডেস করা,মাথায় ব্যাথা অভাব করছে কপাল এ হাত দিতে যাবে দেখলো হাতে স্লাইন লাগানো।এমন সময় মাহিমের প্রিয়ার কথা মনে পরলো কালকে রাতের কথা মনে পরতেই মাহিম উঠে হাতের সমস্ত কিছুই খুলে ছুড়ে ফেলে দিয়ে পাগলের মত ছুটতে লাগলো।তারপর Hospital এ ম্যানেজার এর কাছ থেকে গাড়ির কিস্ নিয়ে প্রিয়ার মামার বাড়ির গ্রামের উদ্দিশ্যে রওনা হলো!গ্রামে এসে প্রিয়ার মামার বাড়ির সামনে গাড়িটা ব্রেক করলো।এরপর গাড়ি থেকে বেড় হলো।তারপর চোখের জল মুছে বাড়ির ভিতরে ঢুকলো।
মাহিম বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই দেখলো কোন সারা শব্দ নেই।মনে হচ্ছে বাড়িতে কেউ নেই।একটু পর মাহিমের চোখে পরলো শীলা।শীলা মাহিমকে দেখে মাহিমের কাছে এসে রাগি ভাবে বলতে লাগলো..
শীলা:-আপনি এখানে?
শীলার তাকে এইরকস প্রশ্ন করবে মাহিম এটা আসা করেনি।কিছুক্ষন অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার পর..
মাহিম:-প্রিয়া কোথায়?
শীলা:-প্রিয়া নাম এ এখানে কেউ থাকেনা।আপনি আসতে পারেন!
মাহিম খেয়াল করলো শীলা তার এমন ভাবে কথা বলছে যে শীলা তাকে চিনেইনা।এরপর মাহিম আবার বলে উঠলো..
মাহিম:-প্লিজ শীলা প্রিয়াকে একটু ডেকে দাও ওর সাথে কিছু important কথা বলার আছে..
শীলা:-বললাম তো প্রিয়া নাম এ এখানে কেউ থাকেনা।(রাগি কন্ঠে)
কথা বলতে বলতে প্রিয়া মামা রুম থেকে বেড় হয়ে আসলো।মাহিম প্রিয়ার মামাকে দেখে প্রিয়া মামা কাছে ছুটে গেলো।এরপর অসহায় হয়ে বলতে লাগলো..
মাহিম:-প্লিজ একটু প্রিয়াকে ডেকে দিন না।
মাহিম কথা বলার সাথে সাথেই প্রিয়া মামা গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে ঠাসস করে একটা বসিয়ে দিল মাহিমের গালে।শীলা কিছু বলল নি।মাহিম কিছুই বুঝতে পারলো না।এরপর প্রিয়ার মামা কেদে কেদে বলতে লাগলো..
প্রিয়ার মামা:-আমারা মা-বাবা মরা অসহায় মেয়েটা কে তোমার হাতে তুলে দেওয়ার পর ভেবেছিলাম তুমি প্রিয়াকে সুখে শান্তিতে রাখবে।স্ত্রী হিসাবে মেনে না নেও মেয়েটার সাথে একটু ভালো ব্যবহার তো করতে পারতে?
কি দরকার ছিল আমাদের সামনে ভালো মানুষ সেজে অভিনয় করার?(কেদে কেদে)
মাহিম নিশ্চুপ দোষীদের মতো মাথা নিচু করে প্রিয়ার মামার কথা গুলো শুনার পর।চোখের কোনায় চল নিয়ে অসহায় হায় দৃষ্টিতে নিয়ে বলতে লাগলো..
মাহিম:-প্লিজ প্রিয়াকে শুধু একবার ডেকে দিন আমি ওর সাথে একটু কথা বলতে চাই।আর ও কে কোনদিন কাজে করে খেতে হবে না। প্লিজ একটু ডেকে দিন না প্লিজ(চোখের কোনায় জল নিয়ে)
প্রিয়ার মামা:-ও আর তোমাদের বাসায় কাজের মেয়ে হয়ে থাকবে না।তোমার সাথে যাবে না।তুমি চলে যাও এখান থেকে প্লিজ চলে যাও!
এইবলে প্রিয়ার মামা চোখের মুছতে মুছতে চলে যাচ্ছিল এমন সময় প্রিয়ার মামার সামনে গিয়ে দাড়ালো।তারপর হাটু ফেলে বসে দু-হাত বারিয়ে দিল।প্রিয়ার মামা কিছুই বুঝতে পারলো না।এরপর মাহিম বলতে লাগলো..
মাহিম:-আমি জীবনে কখন কারো কাছে কিছুই চায়নি।কখন চেয়ে নিতে হয়নি।আজ আপনার কাছে হাত পেতে ভিক্ষা চাইছি।এই শেষ বারের মতো প্রিয়াকে আমার হাতে তুলে দিন।বিশ্বাস করুন আর কোনদিন ওর গায়ে একটু আচর লাগতে দিব না।আর কোনদিন ওর চোখ দিয়ে পানি বেড় হতে দিব না।সারা জীবনের জন্যে রাখলে রাখবো বুকে(চোখে জল নিয়ে প্রিয়ার মামার দিকে হাত বারিয়ে দিয়ে)
এভাবে মাহিমকে দেখে শীলার চোখের পানি চলে আসলো।শীলা দাড়িয়ে থাকতে পারলো না।মাহিমের হাত ধরে টেনে বাড়ি থেকে অল্পকিছুদুর একটা কবরস্থান ২টা কবরের পাশে নিয়ে গেলো।মাহিম দেখতে পেলো ২টা কবরের পাশে একটা নতুন কবর।শীলা কেদে সেটা দেখিয়ে বলল..
শীলা:-এই দু-টা প্রিয়ার মা-বাবার কবর।আর এই যে উনার পাশেই আপনার প্রিয়া সুয়ে আছে..(কেদে কেদে)
শীলার কথা শুনে মাহিমের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরলো।তার পুরো পৃথিবীটা যেন এলেমেলো হয়েগেলো।মাহিম একদম থমকে গেলো।
মুখ দিয়ে কোন কথাই বেড় হচ্ছে না।হাটু ফেলে প্রিয়ার কবরের পাশে বসে চোখের জল ফেলতে লাগলো!
মাহিম:-আপনি কি বেড় হয়ে যাবেন নাকি গলা ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিতে হবে?(রাগি কন্ঠে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে)
প্রিয়া কিছুক্ষণ চুপ করে চোখের জল ফেলার পর বলতে লাগলো..
প্রিয়া:-আমাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিতে হবে না।আমি নিজেই বেড় হয়ে যাচ্ছি!
এরপর প্রিয়া চোখের মুছে নিজের ব্যাগপত্র নিয়ে উঠে দাড়ালো।তারপর মাহিমেরর দিকে তাকাতেই মাহিম অন্যদিকে তাকালো।এরপর প্রিয়া অর্পার দিকে তাকিয়ে..
প্রিয়া:-ভালো থাকবেন আপু।আর মামনি ফিরলে উনার খেয়াল রাখবেন!
এইবলেই প্রিয়া চোখের জল মুছতে মুছতে রুম থেকে বেড় হয়েগেলো!প্রিয়া রাস্তার একটা সাইট দাড়িয়ে চোখে জল ফেলছে আর ভাবছে”মা-বাবা ছেড়ে যাওয়ার পর।আর তখন কারো কাছে একটু ভালোবাসা আদর যত্ন পাইনি।দু-বেলা দু-মুঠু খাওয়ার জন্য মামীর হাজারো অত্যচার সহ্য করতে হয়েছে।অনেক লোকজনের হাজারো নোংরা নোংরা আজে বাজে শুনেছি সহ্য।বিয়ের পর নিজের শ্বাশুড় বাড়িতে কাজের মেয়ে থাকতে হয়েছে।নিজের স্বামীর কাছে নিলজ্জর মতো একটা রাত চেয়ে থাকতে হয়েছে।নিজের স্বামী চরিত্রহীন নষ্টা পতিতা মেয়ে বানিয়েছে।এখন একটা অবৈধ সন্তানের মা।যেখানে সন্তানের বাবা অশিকার করছে।সেখানে এই সন্তান নিয়ে যেখানেই যাই না কেন।একটা জিন্দা লাশ হয়ে বাচতে হবে।আর তার থেকে বড় কথা হলো আমি নিজেই বাচবো আর কতদিন সেটা জানিনা।শুধু শুধু তোকে পৃথিবীর আলো দেখার আসা দিতে পারিনা।আমি পারবো না তোকে মিথ্যে আসা দিতে।আমি পারলাম না তোকে পৃথিবীর আলো দেখাতে।আমাকে ক্ষমা করে দিস।চোখে জল নিয়ে নিজের পেটে দিকে লক্ষ করে বলেই চোখের জল মুছে একটা বড় গাড়ি আসার সাথে সাথেই প্রিয়া গাড়ির নিচে ঝাপিয়ে পরলো।আর গাড়ি চাকা প্রিয়ার পেটের উপর দিয়ে যেতেই প্রিয়ার পেটের ভিতরে ছোট্ট সোনা মনিটা পৃথিবীর আলো দেখার আগেই,চিরদিনের মতো ঘুমিয়ে পরলো।তারপর প্রিয়া কিছুক্ষণ রক্তাক্ত শরিল নিয়ে রাস্তার মাঝে পরে থাকার পর। প্রিয়াও সমস্ত দুঃখ কষ্ট ও পৃথিবী ত্যাগ করে চিরদিনের মতো ঘুমিয়ে পরলো!
…….#সমাপ্ত……
.
-শিক্ষা মূল্য এটা কোন গল্প নয়!
-গল্পটা ঝগড়া,রাখ,অভিমান
,ইগো,ভালোবাসা এইসব কিছু ঘিড়েই!
আমার তেমন কিছু বলার নেই।
আমি তেমন কিছু বলতেও পারিনা।
শুধু এতটুকু বলল যে”প্রিয় মানুষদের মুখের সব সময় সব কথাই সত্যি মনে করে নিবেন না!মনের কথা ও চোখের ভাষা বোঝার চেষ্টা করুণ।
জানি গল্পের শেষটা ভালো করে গুছিয়ে লিখতে পারিনি।
বাট যদি ভালো লাগেতো জানাবেন।নতুন কোন গল্প নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে!
.
মোবাইল দিয়ে গল্প লিখি।লিখতে অনেক প্রবলেম হয়।
কখন কি Type করতে কি Type হয় বুঝতে পারিনা!
সবকিছু সঠিক ও ঠিকঠাক করে লিখতে গেলে মোবাইল দিয়ে অনেক সময় লাগে।
মোবাইল দিয়ে তারাহুরো করে লিখি।আমি লেখক না।ভালো লাগে তাই লিখি বোঝা গেলেই চলবে।
(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)