বউ_হবে_আমার??,পর্ব_০৩
writter_সোহানুর_রহমান_সোহান
—ভাইয়া দেখুন ওইখানে কি করছে?
—কি করছে শুনি?
—কতোগুলো ছেলে মিলে একটা মেয়েকে ঘিরে মেয়েটাকে উত্তক্ত করছে আর মেয়েটার ওড়নাটা কেড়ে নিয়েছে।
সোহান চারুর কথা শুনে পাশে তাকাতেই দেখে মেয়েটার অবস্থা বেহাল।দেখেই বোঝা যাচ্ছে মেয়েটা গরীব ঘরের।এখন সে চারুর সামনে কিছু করতেও পারবে না কারন চারুর কাছে সে একটা খারাপ ছেলে হিসেবে পরিচিত।কিছু করলে তার উপর চারু সন্দেহ করবে।
—এই মেয়েটা ঠিক তোমার মতোই নতুন তাই সহজে মানিয়ে নিতে পারছে না।
—তাহলে রুমে নিয়ে যাক।রাস্তাই এভাবে কষ্ট দেওয়াটা ঠিক না।
—টাকার কাছে সবাই হার মেনে নেই।এই মেয়েটাই দেখবা দু দিন পর ছেলেদের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।
চারু সোহানের কথাগুলো সহজেই বিষ্শাষ করে নিলো।ওদিকে সোহান ইশারাই ছেলেগুলোকে হাত নাড়াতেই সবাই ভয়ে পালিয়ে গেলো।কিন্তু যে যত ভালো হোক না কেন?তার ভিতরেও একটা নেশা কাজ করে।সোহানের ফিলিংসটা চারুর প্রতি ধীরে ধীরে বাড়তে রইলো।আশেপাশের সবকিছু ঘুড়িয়ে এনে চারুকে তার বাসাই নিয়ে আনলো।সে তার নিজের বাসাতে থাকে না।তাই ভাড়া নেওয়া তার রুমে চলে এলো।চারু খেয়াল করলো তার ফ্লাটে অনেক মেয়েরা দাড়িৎএ আছে।চার বলতে লাগলো,
—আপনার ফ্লাটে এতো মেয়ে কেন?
—সবাই তোমার মতোই ট্রেনিং নিচ্ছে।
—ও এদেরকে দেখে আমার সেটা মনে হয় না।এরা বেশ ভদ্র ঘরের মেয়ে মনে হচ্ছে।
—হ্যা তুমি ঠিক বলেছো চারু।এরা উচু বংশের মেয়ে।এখানে এসে ওরা আমাকে টাকা দিয়ে ওদের জন্য একটা করে বেছে নিয়ে ফুর্তি করে।
চারু শুধু অবাক হয়ে সবাইকে দেখছিলো।সে খেয়াল করলো সেখানে অনেক বিবাহিতাও রয়েছে।তবে তার কাছে ফ্লাট দেখে বিষ্শাষ হচ্ছে না,,
এমন একটা বিল্ডিং এ আদান প্রদানের কাজ করে?
সোহান সোজা চারুকে নিয়ে একটু ভিতর গিয়ে বেশ সুন্দর একটা রুমে চলে গেলো।রুমটা অনেক সুন্দর জিনিসে সাজানো যেটা চারু জীবনে কখনো দেখেনি।চারুর চারদিকে এমন অবাকের মতো তাকিয়ে থাকতে দেখতে সোহানের কেমন যেন লাগছিলো।এতো মেয়েকে ভালো করেছে কিন্তু কখনো কোনো মেয়েকে খারাপ উদ্দেশ্য স্পর্শ করেনি।
.
চুপিচুপি চারুর পিছনে গিয়ে দাড়িয়ে পড়লো।পিছন থেকে চারুর কোমরটা আলতো করে দু হাত দিয়ে টেনে নিয়ে তার বুকে টেনে নিলো।হটাৎ সোহানের এমন আচরন দেখে চারু বেশ ভিত হয়ে গেলো।রুমে আনতে না আনতেই শুরু করে দিয়েছে।ইচ্ছে থাকা সত্তেও ইচ্ছার বিরুদ্ধে সে নিজেকে মানিয়ে রাখলো।তাকে ভীত হলে চলবে না।তাকে খারাপ মেয়ে হতেই হবে।
কিন্তু সোহানের স্পর্শটা তাকে কেমন যেন শিহরিত করছিলো।হাতটা যখনি নাভির কাছে নিয়ে চারুর কোমরটা পুরোপুরি চেপে ধরে মুখটা গলার কাছে নিলো।চারু আর তাকে নিয়ন্তন করতে পারছিলো না।তার ভিতরে একটা জোড়ালো নিষ্ষাশ বইতে শুরু করলো।চোখটা নিমিশেই বন্ধ করে সোহানের পরম ছোয়াগুলো অনুভব করতে থাকলো।
সোহান নিজেকে একদম দমিয়ে রাখতে পারছিলো।ছেড়ে দিতে চাইছে কিন্তু তার হাত পা গুলো চারুকে ছাড়তেই চাইছে না।
চারুকে এক টানে সে ঘুরিয়ে তার বুকে টেনে নিলো।চুলগুলো দ্রুত ঘুরতেই সোহানের চোখমুখ ঢেকে দিলো।চারুর চোখের দিকে তাকিয়ে সে আর থাকতেই পারছিলো।এতো সুন্দর একটা চেহারা কিভাবে তৈরি হয়েছে?চারুর মুখে টোল পড়েছে।মুখটা চারুর ঠিক ঠোটের ১ ইন্চি দুরে রেখে চারুর নাকের নিচের তিলটা দেখছিলো।হাতটা মুখে লাগাতে না চাইতেও হটাৎ মুখটা শক্ত করে চেপে ধরে আলতো করে চারুর ঠোটটা চেপে ধরলো।
হটাৎ কিছু একটার টানে এক ঝটকাই সে চারুকে ধাক্কা দিয়ে সড়িয়ে দিলো।সোহান স্পস্ট টের পেয়েছে।কিস করাতে চারু ভয়ে কাপছিলো।যে মেয়ে তাকে এতোটা বিষ্ষাষ করেছে আর এখন তাকেই ব্যবহার করা হচ্ছে?নিজের মাথাই হাত দিয়ে চিন্তার ভিতর পঢ়ে গেলো।কিন্তু চারু কি ভাবলো?এভাবে ধাক্কা দেওয়াতে সে কি বুঝলো?
ভাবাটা শেষ না হতেই তার মনে হলো কেউ একজন আবারো তার ঠোটটা চেপে ধরেছে।চোখটা খুলতেই পারছিলো না।তবুও চোখটা খুলে চারুর চোখের দিকে তাকালো।এমন একটা পরিস্থিতিতে সোহান নিজেই ভয় পেয়ে গেলো।সে চারুর চোখে স্পষ্ট জল দেখতে পেয়েছে।হটাৎ করে চারুর কি হয়ে গেলো?নাকি চারু তাকে সত্যিই তার দেহটা ব্যবহার করতে দিবে?
চারুর থেকে নিজেকে ছারিয়ে নিলো।চারুর চোখের জলটা তার চোখটাই জল এনে দিলো।সে রুমে আর থাকতে পারলো না।নিজেকে খুব নিচু মনে হতে লাগলো চারুর কাছে।রুম থেকে বের হওয়ার সময় না তাকিয়ে বললো,,
—তোমার ভিতর প্রচুর উত্রেজনা আছে।তবে এভাবে এতো মায়াবী ভাবে তাকানো যাবে না।আর চোখে জল আনলে কিন্তু তোমাকে ট্রেনিং এ রাখা যাবেনা।
সোহান কথাটা বলে উত্তরের আশাই দাড়িয়ে রইলো।কিন্তু কোনো উত্তর না পেয়ে চলে যেতেই,,
—ভাইয়া একটু দাড়ান?(গলার ভারি করে)
কথাটা শোনামাত্র সোহান দাড়িয়ে গেলো।সে জানতো না এমন কি রয়েছে চারুর ভিতর।তবে চারুর কোন কথাই তার কাছে পৌছাতে সময় লাগেনা।
সে দাড়িয়ে থাকতেই চারু মুখটা নিচু করে পকেট থেকে খুচরা ৬০০ টাকা তার হাতে রেখে দিলো।টাকাটা হাতে পেয়ে সে চারুর চোখের দিকে তাকালো।চারুর চোখ থেকে ফোটা ফোটা জল বেরোচ্ছে।হটাৎ করে চারুর এমন আচরনে সে
বেশ অবাক হয়ে পড়লো।
—চারু আমাকে টাকা দিচ্ছো কেন?
— ………??
—কি ব্যাপার কথা বলছো না যে?
চারুর কোনো জবাব না পেয়ে সে বুঝতে পারলো না চারু তাকে কি বোঝাতে চাইছে।টাকাগুলো সে একটু ভালো করে চেয়ে দেখলো।টাকাটা একটু ভিজে গিয়েছে যেটা দেখে তার বুঝতে বাকি রইলো না যে, চারু এই টাকাটা অনেক আগেই হাতে রেখেছিলো।কিন্তু টাকাগুলো কেন তাকে দেওয়া হলো??
চারুর কাধে হাত রেখে জানার চেষ্টা করলেও চারু বলছিলো না।রেগে গিয়ে সে চারুকে ধমক দিয়ে কয়েকটা ঝাকুনি দিতেই কান্নাভেজা কন্ঠে তার গলা থেকে বেরিয়ে এলো,,
— ভাইয়া আমি আজ দু দিন কিছুই খাইনি।ম্যথা ব্যথাটাও শুরু করেছে।আমার কাছে আপনাকে দেবার মতো কিছুই নেই।এই টাকাগুলো সেদিন দু জনের থেকে টিউশনি করে পেয়েছি।এর চেয়ে আর ১ টাকাও বেশি দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।আপনি যদি চান তাহলে আপনাকে আমি সব দিবো শুধু আপনি আমাকে এখানে থাকতে দিন।(ফুফিয়ে ফুফিয়ে)
.
.
এখন আর সোহান রুমে নেই।সে রাস্তাই চলে এসেছে।এই শীতেও তার গা গরমে ভিজে যাচ্ছে।তার হাত পা গুলো এখনো কাপছে।একটা মেয়ে কিভাবে এতোটা কষ্ট ভোগ করতে পারে?
সে ভাবতেও পারেনি ৬০০ টাকা দিয়ে মেয়েটি কি করতো?চোখ থেকে জলটা মুছে নিলো।তার সেই দৃশ্যটা একদম ভাবতে ইচ্ছে করছিলো না।যখন চারু টাকাগুলো দিয়ে তার পা ঝাপটে ধরে কাদতে কাদতে কথা গুলো বললো।তাহলে কি এরা,,
.
চলবে,,