বজ্জাত বউ,পর্ব:১৯
লেখিকা বিলকিস
এই রান নে রান নে। আমাদের জিততে হবে আর আমরাই জিতবো বলে হাসতে লাগলো। পাশ থেকে আবির বলে উঠলো
আবির : অথৈ আপি তুমি হাসছো। আমরা কি করে জিতবো। আর একবল আছে রান সাত দরকার। ( আবির অথৈ ছোটো ভাই ক্লাস ফ্রাইভয়ে পড়ে। আর অথৈ পুড়া নাম অবন্তি ইসলাম অথৈ। ইন্টার পরীক্ষা দিয়েছে। স্বভাব টা নয় পরে বলছি)
অথৈ: আরে আমার ভাই তোর এই অথৈ আপি যখন আছে তখন no চিন্তা। দেখ না কি করি।
আবির: কি করবে
অথৈ : চিটিং। এই তোরা বল কর বলতে অপর দলের একজন বল করলো তখনি পেছন থেকে অথৈর আম্মু ডাকতে লাগলো
অথৈর আম্মু: অথৈ এই অথৈ
অথৈ: এই রে আম্মু ডাকছে। তারমানে আম্মু সব জেনে ফেলেছে যে আমি দুধআলি পাশে বাড়ির জানালা ভেঙেছি।
আরিব: আপি আম্মু ডাকছে।
আম্মু: অথৈ আমি ডাকছি তোর কথা কানে যাচ্ছে না।
অথৈ: আবির বল্টুকে তুই নে ( বল্টু অথৈর কুকুর ছানা) আর আমি যা করছি তুই তা করবি।
আবির: ঠিক আছে আপি বলে বল্টুকে তুলে নিলো।
অথৈ: নিয়েছিস।
আবির: হ্যা।
অথৈ: আবির এবার ভাগ বলে অথৈ আর আবির দৌড় দিলো
আম্মু: এই বদমাইশ মেয়েটা আমাকে জালিয়ে মারলো। খুলনাতে ওর জ্বালায় থাকতে না পেরে ঢাকাতে আসলাম। এখানে এই কান্ড। সকাল থেকে শুধু ওর বিরুদ্ধ নালিশ শুনতে হয়। আসুক আজকে বাড়ি। ওর একদিন নাকি আমার একদিন। শয়তান মেয়ে কোথাকর।
পরশ: আজ এমন লাগছে কেনো এমন। মিষ্টি আমাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর এমন কখনো হয় নি তাহলে আজ কেনো হচ্ছে। এক অন্যরকম অনুভুতি কেনো মনে মনে ভাবছে পরশ আর গাড়ি চালাচ্ছে হঠ্যৎ গাড়ির সামনে একটা মেয়ে দৌড়ে আসতেই পরশ গাড়িটা ব্রেক করলো। তারপর গাড়ি জানালায় কাঁচ নামিয়ে বললো এই মেয়ে( রাগি গলায়)
অথৈ: কি আমাকে এই মেয়ে বলা না। দাড়া তবে বলে অথৈ গাড়ির সামনে এসে দাড়ালো।
পরশ: এই মেয়ে আর গাড়ি পেলে না আমার গাড়ির সামনে মরতে আসছিলে কেনো।
অথৈ: don’t call me এই মেয়ে। my name is অথৈ। আমাকে অথৈ বলুন। আর কি বললেন আমি আপনার গাড়ির সামনে মরতে এসেছি না। শুনুন আঙেল
পরশ: what? আমি আঙেল। এই আমাকে দেখলে আঙেক মনে হয় ( রাগী গলায়)
অথৈ: হা হা হা আপনাকে পুরা আঙেল আঙেল লাগে। তাছাড়া যাদের মুখে এ রকম দাড়ি থাকে তাদের কে তো আঙেল বলে। আর আপনার মুখে দাড়ির কমতি নেই।
পরশ: এই টাইপে মেয়ে যে কোথায় থেকে আসে।
অথৈ: কি বললেন আপনি কোথায় আসে। শুনুন আমি আমার আম্মু গর্ভের থেকে এসেছি।
পরশ: মেজাজ টা খারাপ করে দিলো। এই মেয়ে
অথৈ: আবার এই মেয়ে বলে আপনি কনে কম শুনেন। আমি আপনাকে বলছে আমার নাম অথৈ। আমাকে নাম ধরে ডাকুন।
পরশ: এই শুনে আমার গাড়ির সামনে থেকে সরো।
অথৈ: সাড়বো না কি করবেন আপনি।
পরশ: ঠাস করে একটা থাপ্পর মারবো।
অথৈ: কি আপনি আমাকে থাপ্পার মারবেন। আপনার সাহস তো কম নয় অথৈকে থাপ্পার মারবে।
পরশ: অসভ্য একটা।
অথৈ: একথা সবাই বলে। টাকা বের করুন।
পরশ: টাকা বের করবো মানে।
অথৈ: টাকা বের করবেন মানে আপনার গাড়ির ধাক্কা লেগে বল্টুর ব্যাথা পেয়েছে ওকে ডাক্তারে কাছে নিতে হবে।
পরশ: বল্টু মানে এই ছেলেটা তো কিছু হয়নি।
অথৈ: বল্টু ও নয় এ বলতে পরশের সামনে কুকুর ছানাকে টাকে ধরলো।
পরশ: হ্যাচি। কুকুর ছানা হ্যাচি এটাকে সাড়াও আমার কুকুরে এলাজি হয়।
অথৈ: ও ঠিক আছে। এবার টাকা বের করুন।
পরশ: কতো হ্যাচি
অথৈ: ১০০০ টাকা
পরশ : এই নেও বলে মনি ব্যাগ থেকে হাজার টাকার নোট বের করে দিলো। আর গাড়িতে ওঠে বসলো।
অথৈ: টাকাটা আসল তো
পরশ: মানে
অথৈ: না আজ কাল মানুষ জাল টাকা দেই তো।
পরশ: আমাকে দেখে মনে হয় আমি জাল টাকার ব্যবসা করি
অথৈ: আমার তো তাই মনে হচ্ছে।
পরশ: এটা জাল টাকা না( দাঁতে দাঁত চেপে) আর তোমার মতো মেয়ে সাথে যেনো ২য় বার দেখা না হয়। বলে গাড়ির কাঁচ তুলতে লগলো
অথৈ: আমার মতো মেয়ে সাথে দেখা না হয় না এই শুনুন আমি আপনাকে অভিশাপ দিচ্ছি একসময় আমার মুখে দেখে আপনার সকাল হবে হুহ আর আমার অভিশাপ লেগে যাই।
পরশ: অসভ্য বলে পরশ গাড়িতে চালাতে শুরু করলো
অথৈ: আরে যা
আবির: আপি তুই ওই ভাইয়াটাকে কেনো এই অভিশাপ দিলি যে তোর মুখ দেখে সকাল হবে
অথৈ: আরে বাদ দে তো আমি এমনি বলেছি আর অভিশাপ কাজে লাগে না। ওই আঙেলটার মুখ আমিও আর দেখতে চাই না। চল এখন কিছু খাওয়া যাক।কিন্তু ওই আঙেলটা কে দেখে আমার এমন লাগলো কেনো। আগে তো লাগে নি। কেনো এমন হলো আঙেলটাকে তো আজ প্রথম দেখলাম। তাহলে
আবির: আপি তুই ওনার কাছ থেকে মিথ্যা বলে টাকা নিলি কেনো বল্টুতো কিছু হয়নি।
অথৈ : আরে আমি সত্যি কথা বলি কখন। চলতো বলে অথৈ আবিরকে নিয়ে একটা ফলের দোকানে গেলো।
অথৈ: মামা আপেল দেন তো এক কেজি
দোকানদার: আচ্ছা আফা আপনি একটু দাড়ান আমি আগে ওনাদের দিয়ে নেই।
অথৈ: না আমাকে আগে দেবেন।
দোকানদার: না ওনাকে আগে দেই।
অথৈ: আমাকে আগে দেবেন কি না
দোকানদার: দেখন আফা
অথৈ: ও দেবেন না তো বলে এই ভাই মামা, খালা, চাচী আপনার শুনুন ওনার দোকানের ফল ভালো না। খেলে পেট খাবাপ হবে আমার ভাইটা কি পেট খারাপ হয়েছিলো যানেন না
আবরি: আপি আমি তো ফল খাই নি তাহলে পেট খারাপ হলে কখন
অথৈ: তুই চুপ কর।
দোকানদার। আফা আপনে মিছা কথা করছেন কেনো
অথৈ: আমি মিথ্য বলছি মোটেই না আপনারা বলুন আমাকে দেখে কি মিথ্যবাদি মনে হয়।
আচেনা: না মা তোমার দেখে মিথ্যবাদি মনে হয় না। মিথ্যবাদিতো এই দোকানদার। এই আপনার চলুন এ খান কিছু কেনা যাবে না।
দোকানদার: এই মাইয়াটা আমার সর্বনাশ করে দিলো বলে মাথায় হাত দিলো।
অথৈ: চল আবির
আবির: কোথায় বাড়ি
অথৈ: বাড়ি ওরে বাপরে না না আগে আব্বু বাড়ির ফিরুক তারপর যাবো। চল এদিকে হাটি বরং বলে হাটতে লাগলো।
আবির: আপি তুই এতো মিথ্য কথা বলিস কি ভাবে।
অথৈ: শুন ভাই প্রত্যেক মানুষের একটা প্রতিভা থাকে। কেউ ছবি আকে কেউ গান গায় এদের প্রত্যকে একটা প্রতিভা। তেমনি আমার প্রতিভা হলো মিথ্য কথা বলা বুঝেছিস। এই দেখ ওই মহিলার ব্যাগ থেকে কি যেনো পড়ে গেলো। এই যে শুনুন আন্টি বলে ডাকতে লাগলো।
দিশা: কেউ ডাকছে আমাদের বলে পেছন ফিরে তাকালো
অথৈ: হ্ আমি আপনাদের অনেক ক্ষন ধরে ডাকছি।
পরশের আম্মু: কেনো মা
অথৈ: আপনার ব্যাগের থেকে এই জিনিসটা প্যাকেট টা পড়ে গিয়েছিলো।
পরশের আম্মু: তোমার নাম কি মা বলে প্যাকেট টা হাতে নিলো।
অথৈ: অথৈ।
পরশের আম্মু: বাহ্ কি সুন্দর নাম তোমার। তোমার বাড়ির কোথায়।
অথৈ: সামনে গলিতে
পরশের আম্মু: তুমি খুব লক্ষি মেয়ে। যেমন লক্ষী তেমন সুন্দরী।
অথৈ: হা হা হা
পরশের আম্মু : হাসছো কেনো মা
অথৈ: আসলে আন্টি আমাকে কেউ লক্ষী মেয়ে বলে না তো তাই। সবাই আমাকে অলক্ষী বলে আর আমি সেটার যোগ্য। আপনি আমার সাথে কিছুদিন থাকলে বুঝতেন অথৈ কি। আসি আন্টি বলে অথৈ চলে গেলো।
পরশের আম্মু: দিশা মেয়েটা অনেক সুন্দর না ঠিক মিষ্টির মতো। চোখ দুটো মিষ্টির মতো বড় বড় আর মায়া জারানো।
দিশা: হ্যা আম্মু
পরশের আম্মু: এই মেয়েটাকে যদি আমার পরশের বউ বানাতে পারতেম।
দিশা: আম্মু চলো
এদিকে
পরশ: আজ মেজাজ টা ঐ মেয়েটার জন্য খারাপ হলো। অসভ্য একটা মেয়ে।ভেবেছিলাম আজ মন মেজাজ ভালো করে আফিসে যাবো। কিন্তু এই মেয়ে টা বলতে পরশ আফিসে সামনে এসে গাড়ি থামালো। তারপর গাড়ির থেকে নেমে আফিসের মধ্য ঢুকতে আফিসের সবাই পরশেকে দেখে দাড়িয়ে গেলো।
পরশ: কি ব্যাপার সবাই আমাকে এভাবে দেখছে কেনো( মনে মনে) বলতে সামনে থেকে আসলাম সাহেব এসে পরশকে জরিয়ে ধরলো
আসলাম সাহেব: স্যার আপনি এসেছেন স্যার। আপনাকে ছাড়া আফিস টা রং হারিয়ে ফেলেছে।
পরশ: কেমন আছেন আসলাম সাহেব
আসলাম সাহেব: আমি ভালো আছি আপনি আসেন আপনার চেয়ার আপনার জন্য দু বছর অপেক্ষা করছে বলে আসলাম সাহেব পরশকে নিয়ে পরশের আফিস রুমে নিয়ে গিয়ে চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে বললো
আসলাম সাহেব: স্যার আপনার জন্য আমি প্রতিদিন এই রুম পরিষ্কার করি আমার মনে হতো আপনি কখন এসে বলবেন আসলাম সাহেব আমার রুমটা এতো ময়লা জমেছে কেনো।
অথৈ: আবির তুই দেখ তো আম্মু কি করছে
আবির: আম্মু কে তো দেখা যাচ্ছে না।
অথৈ: আমাদের পা টিপে টিপে হাটতে হবে বলতে বাড়ির দরজায় সামনে যেতে কেউ একজন অথৈর এর কাধের উপর হাত রাখতে অথৈ ভয় পেয়ে পেছন দিকে তাকায়ে দেখতে……
( চলবে)