বজ্জাত বউ,পর্ব ০৭ ,০৮
লেখিকা বিলকিস
পর্ব ০৭
আহাদ: মিষ্টি তোর ব্রেন ক্যান্সার হয়েছে। ক্যান্সারে ফলে তোর তোর ব্রনে ৭০% ডেমেজ হয়ে গিয়েছে।
মিষ্টি : হা হা হা। তুই মজা করিস না। বল না ভাইয়া তুই আমার সাথে মজা করিস।
আহাদ: আমি কোনো মজা করিছি না বোন বলে আহাদ কাঁদতে লাগলো।
মিষ্টি: শোন না ভাইয়া আমার মনে হয় কি আমার রিপোট বদল হয়েছে। তুই অন্য জন্যের রিপোট এনেছিস না তুই ভালো করে দেখ।
আহাদ: না রে বোন আমি ভালো করে দেখে বলছি। আমি প্রথমে সেটা মনে করে ছিলাম। তারপর নিজের ল্যাবে গিয়ে পরীক্ষা করেছি। কোনো ভুল হয়নি। তবে তুই চিন্তা করিস না আমি বিদেশে ডাক্তার দের সাথে কথা বলে তোর চিকিৎসা করবো। তুই ভালো হয়ে যাবি ( মিষ্টিকে জরিয়ে বললো)
মিষ্টি: না ( আহাদকে ধাক্কা দিয়ে) কোনো চিকিৎসা হবে না।
আহাদ: মিষ্টি আমি বলছি তোকে সুস্থ করে তুলবো বলে আহাদ অঝোরে কাঁদতে লাগলো।
মিষ্টি: ভাইয়া তোর বোন আর ছোটো নেই রে যে চকলেট দিয়ে মন ভুলাবি। আর ভাইয়া তুই কাঁদছিস কেনো। ( আহাদে চোখের পানি মুচে দিয়ে) ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে দেখ আমি একটু কাঁদছি না। আমি হাসছি হা হা হা বলেতে আহাদ মিষ্টিকে আবার জরিয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো। মিষ্টিও আহাদ জরিয়ে ধরে রাখলো।
মিষ্টি: এই ভাইয়া বল তো আমার সাথে এমন কেনো হলো।
আহাদ: তোর কিছু হতে দেবো আমি।
মিষ্টি: এই ভাইয়া আর কাঁদবি কিন্তু। ভাইয়া আমাকে একটা প্রমিজ করবি।
আহাদ: কি প্রমিজ।
মিষ্টি: তুই আমার ক্যান্সরে কথা আম্মু, বাবা, বড় বাবা, বড় মা কাউকে বলবি না প্রমিজ কর ( আহাদের দিকে এক হাত বারিয়ে দিয়ে বললো)
আহাদ: না মিষ্টি আমি পারবো না।
মিষ্টি: দেখ ভাইয়া আমি তো অল্প কিছু দিন বাঁচবো তারপার মরে যাবো না। এর আগে আমার জন্য বাবা, আম্মু, বড় মা, অনেক কষ্ট পেয়েছে। আসলে আমি দুষ্ট মি বসে অনেক লোকের ক্ষতি করেছি তার জন্য সবাই কে কথা শুনতে হয়েছে। কথার শুনার পর অনেক কষ্ট পেয়েছি। আমি আর ওদের কোনো কষ্ট দিতে চাই না। আর বাবা যদি আমার অসুখে কথা শুনে তাহলে বাবা সহ্য করতে পারবে না। তাই তুই আমাকে প্রমিস কর তুই আমার অসুখে কথা বাড়ির কাউকে বলবি না।
আহাদ: না মিষ্ট এ রকম প্রমিজ আমি করতে পারবো।
মিষ্টি: আমার মাথায় হাত রেখো বল তুই কাউকে বলবি না( আহাদে হাতটা মিষ্টির মাথায় উপর ধরে)
আহাদ: মিষ্টি তুই জেদ করছিস।
মিষ্টি: আমি কেনো জেদ করছি না তুই কাউকে বলবি না। একটা মুত্য পথো যাএী কথা তোকে রাখতে হবে।
আহাদ: না বোন এ কথা বলিস না। তোর ভাই তোকে বাঁচাবে দেখিস।
মিষ্টি: ভাইয়া আমাকে মিথ্যা সান্তনা দিস না। আমি জানি আমি আর বাঁচবো না। আর তুই মাথায় হাত রেখে কথা দে ভাইয়া কথা দে বলবি না।
আহাদ: মিষ্টি ঠিক আছে আমি কাউকে বলবো বলে আহাদ মিষ্টি ধরে কাঁদতে লাগলো মিষ্টি ও আহাদকে জরিয়ে কাঁদতে লাগলো। হঠৎ করে আহাদ দরজায় দিকে চোখ যেতে আহাদ বললো
আহাদ: দিশা
মিষ্টি: দিশা মানে বলে আহাদকে ছেড়ে দরজায় দিকে তাকলো। তাকিয়ে দেখে দিশা দুচোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে।
দিশা: স্যার আমি যা শুনলাম তা কি সত্যি স্যার ( আহাদে সামনে এসে বললো)
মিষ্টি: আরে দিশা তুমি ভুল শুনেছো ( চোখ মুছে বললো)
দিশা: স্যার আপনি বলুন আমার ভাবির কি হয়েছি। ঠিক আছে বলবেন নাতো আমি রিপোট দেখি নিচ্ছি বলে টেবিল উপর থেকে রিপোট টা হাতে নিয়ে দেখতে লাগলো।
মিষ্টি: আরে দিশা রিপোট টা দাও।
দিশা: না ভাবি আমি আমার ভাবিকে ছেড়ে থাকতে পারবো বলে মিষ্টিকে জরিয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।
মিষ্টি: আরে পাগলি মেয়ে মানুষকি আজীবন বেচে থাকে। থাকে না তো তাহলে আমি ও থাকবো না।
দিশা: না ভাবি আমি তোমাকে কোথায় যেতে দিবো না। আমি বরং ভাইয়া কে ফোন করে বলে তোমার বিদেশ নিয়ে চিকিৎসা করাবো।
মিষ্টি: না দিশা তুমি তোমার ভাইয়া ফোন করবে না।
দিশা: না ভাবি আমি স্যার নয় য়ে তোমার কথা মানবো বলে ফোনটা নিয়ে পরশ কল করতে যাবে তখনি মিষ্টি দিশা কাছ থেকে ফোনটা কেড়ে নিয়ে বললো
মিষ্টি: তোমার ভাইয়া দিব্যি তুমি কাউকে কিছু বলবে না।
দিশা: না ভাবি বলে অঝোরে কাঁদতে লাগলো।
মিষ্টি: তুমি যদি তোমার ভাইয়া কে ভালোবাসো তাহলে বলবে না বলে মিষ্টি রিপোট টা হাতে নিয়ে দৌড়ে আহাদের আফিস রুমে থেকে বের হয়ে রাস্তা এসে দাড়ালো। আকাশে দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো আর বলতে লাগলো কেনো করলে এটা তুমি বলো। কি ক্ষতি করেছি আমি তোমার। তুমি উওর দিচ্ছো না কেনো খোদা উওর দিচ্ছো না কেনো। বলে রাস্তার উপর বসে কাঁদতে লাগলো।
এদিকে আহাদ দিশা কে বললো
আহাদ: দিশা তুমি মিষ্টিকে দেখো ও কোথায় গেলো।আর আমি স্যারে সাথে কথা বলে চিকিৎসা ব্যস্থায় করি।
দিশা : হ্যা আমি যাচ্ছি ( চোখ মুছে বললো) তারপর রুম থেকে বের হয়ে মিষ্টিকে খুজতে লাগলো। হঠ্যাৎ করে আকাশ থেকে বৃষ্টির পড়তে লাগলো। আর বৃষ্টিতে মিষ্টি ভিজে গেলো।
মিষ্টি: আমি কাঁদছি কেনো। না না আমি কাঁদবো। একটু কাঁদবো না আমার তো এখন অনেক কাজ করতে হবে। আমি কাঁদলে হবে না। বলে মিষ্টি রাস্তায় পাশ হাটতে লাগলো। দিশা মিষ্টিকে খুজতে খুজতে রাস্তায় এসে দাড়ালো।
দিশা: কোথায় গেলো ভাবি। সামনে দিকে একটু যেয়ে দেখি। বলে হাটতে লাগলো।
রাস্তায় কিছু বাচ্চারা বৃষ্টিতে ভিজছিলো আর ফুটবল খেলছিলো হঠ্যৎ করে বলটা মিষ্টির পায়ে কাছে এসে থামলো। বাচ্চা গুলো মিষ্টির কাছে এসে বললো
বাচ্চা গুলো: আপু আপু তুমি আমাদের বলটা দাও না।
মিষ্টি ওদের দিকে না তাকিয়ে সামনে দিকে চলে গেলো।
বাচ্চা গুলো: যা বাবা বল চাইলাম বলতো দিলো না কথা বললো না। এই চল আমরা খেলা শুরু করি।
এদিকে দিশা রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতে বাচ্চা গুলো কাছে এসে বললো
দিশা: এই যে শোনো এই দিকে একটা গোলাপি রঙের শাড়ি পড়ে একটা মেয়েকে যেতে দেখেছো।
বাচ্চা গুলো: হ্যা দেখেছি এই দিকে গেছে।( হাত দিয়ে সামনে দিকে দেখিয়ে বললো)
দিশা: সামনের দিকে
বাচ্চা গুলো : হ্যা
দিশা: ধন্যবাদ তোমাদের বলে দিশা সামনের দিকে হাটতে লাগলো। ও তো ভাবি। ভাবি ভাবি বলে ডাকতে ডাকতে মিষ্টির পেছন থেকে হাতটা ধরে বললো
দিশা: ভাবি আমি তোমাকে কখন থেকে ডাকছি। তুমি শুনছো না। তুমি বাড়ি চলো।
মিষ্টি: দিশা আমাকে একটু একা থাকতে দাও
দিশা: না আমি তোমাকে একা ছাড়বো না।
মিষ্টি: দিশা আমার কথা শোনো।তুমি বাড়ি ফিরে যাও আমি পড়ে যাবো।
দিশা: ঠিক আছে তুমি যেখানে যাবে আমিও সেখানে যাবো
মিষ্টি: দিশা।
দিশা: কেনো কথা নয় চলো বলে দুজনে রাস্তায় দিয়ে হাটতে লাগলো।
অপর দিকে
পরশ আফিসে নিজের রুমে জানালা পাশে দাড়িয়ে বৃষ্টি দিকে তাকিয়ে বৃষ্টি দেখিছিলো আর ভাবছিলো
পরশ: মিষ্টি কি ভাবে এই নকশা গুলো আকলো। আমি যতোদূর যাদি তাতে ওর বেশি পড়াশুনা করে নি। ইন্টার পরীক্ষায় ইংরেজীতে তিন বার ফেল করেছে। সেই মেয়ে পক্ষে এই নকশা কি করে সম্ভব। না আমি ওকে চিনতে ভুল করছি। না না আমাকে ওর সম্পকে আরে জানতে হবে। কিন্তু কার কাছ থেকে জানবো। আহাদ yes আহাদ। একমাএ আহাদ পারবে ওর সম্পর্কে আমাকে জানাতে। একবার আহাদ কে ফোন করি। বলে ফোনটা হাতে নিয়ে পরশ আহাদের কাছে ফোন দিলো।
আহাদ : হ্যালো ( ফোন রিসিভ করে)
পরশ: আমি পরশ বলছি।
আহাদ: হ্যা পরশ বলো কেমন আছো।
পরশ: ভালো। আহাদ ভাইয়া আমি আপনার সাথে মিট করতে চায়। আপনি কি আমাকে একটু সময় দিবেন please .
আহাদ: হ্যা।
পরশ: thank you ভাইয়া। আমি ১ ঘন্টায় মধ্যে আপনার ওখানে আসছি। বলে ফোন কেটে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।
১ ঘন্টা পর
পরশ: আসবো
আহাদ: পরশ এসে ভেতরে এসো।
পরশ: thanks ভাইয়া আমাকে সময় দেওয়া জন্য
আহাদ : আগে বসো আর বলো কি খাবে চা না কপি।
পরশ: কিছু না। আসলে আমি মিষ্টির সম্পর্কে জানতে চাই।
আহাদ: মিষ্টি সম্পর্কে কি জানতে চাই তাহলে পরশ কি মিষ্টির অসুখ সম্পর্কে জানতে চাইবে। কিন্তু পরশ অসুখটা শুনলো কার কাছ থেকে ( মনে মনে) কি জানতে চাই মিষ্টির সম্পপর্কে
পরশ: ভাইয়া আমি যতোদুর জানি ও বেশিদুর পড়াশুনা করেনি। কিন্তু ভাইয়া এই ফাইলে নকশা গুলো ও কি করে আঁকলো। ( ফাইলটা দেখিয়ে বললো)
আহাদ: এই ব্যাপার। পরশ আমার বোনটা একটা অনেক বড় প্রতিভা আছে।
পরশ: কিসের প্রতিভা।
আহাদ: আসলে পরশ। আমার বোনটা পড়াশুনা করেনি ঠিক কিন্তু ও ভালো আর্ট করতে পারতো। ছোটোবেলায় থেকে ও আর্ট করতে পছন্দ করতো। সারাদিন শুধু আঁকতো। একদিন বাবা আফিসের জন্য কিছু নকশা আকতে হবে। বাবা কিছুতে নকশাগুলো সম্পন কমপ্লেট করতে পারছিলো না তখন মিষ্টি এসে বাবাকে বললো বড় বাবা আমি তোমাকে help করবো। বাবা বললো তুই পারবিনা এটা আফিসিয়াল আর্ট। মিষ্টি বললো দেখো না আমি পারবো বলে নকশা আঁকতে লাগলো। যানো পরশ ওর আঁকা নকশাগুলো বাবার কোম্পনী তে অনেক বড় লাভ হয়। আর তখন থেকে বাবা কেনো আফিসিয়াল নকশা হলে মিষ্টিকে সঙ্গে করে নিয়ে আঁকতো। এভাবে ও আফিসিয়াল নকশা আঁকতে শেখে।
পরশ: আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা ও মধ্যে এমন প্রতিভা আছে।
আহাদ: আসলো সবাই আমার বোনটা বাহির দেখি বিচার করে। কিন্তু ওর ভেতটা একদম অন্য রকম। সেখানে শুরু ভালোবাসা ভরে রেখছে।
নার্স: স্যার আপনার ওতির সময় হয়ে গেছে।
আহাদ: তুমি যাও আমি আসছি।
পরশ: আচ্ছি ভাইয়া আমি এখন আসি। বলে পরশ চেয়ার থেকে উঠে দরজায় দিকে যেতে আহাদ বললো
আহাদ: পরশ
পরশ: কিছু বলবেন।
আহাদ: আমার বোনটা তোমাকে খুব ভালোবাসে। তুমি ওকে একটু ভালোবেসো এখন না ভালো না বাসলে আর ভালোবাসার সময় পাবে না। আর ওর একটু খেয়াল রেখেবলে আহাদের চোখের কোনার। পানি চলে আসলো।
পরশ: আসি ভাইয়া বলে পরশ রুম থেকে বের হয়ে গাড়ির কাছে আসলো। এদিকে পরশ রুম থেকে বের হওয়া পর আহাদে চোখের কোনার পানি চোখ বেয়ে পড়তে লাগলো।
পরশ গাড়ি নিয়ে রাস্তায় আসতে আর একটা গাড়ি এসে পরশের গাড়ির সামনে দাড়ালো……..
(চলবে)
বজ্জাত বউ
লেখিকা বিলকিস
পর্ব ০৮
পরশের গাড়ির সামনে এসে আর একটা গাড়ির দাড়ালো। পরশ গাড়ির কাচ নামিয়ে বললো
পরশ: দেখে শুনে গাড়ি চালাতে পারেন না। আজব লোক সব বলতে সামনে গাড়ির থেকে একটা মেয়ে নামলো। মেয়েটা কে দেখে পরশ আবাক। মেয়ে টা পরশের গাড়ির কাছে এসে দাড়াতেই পরশ বললো
পরশ: আরাধ্য তুই
আরাধ্য: হুম আমি। চিনতে পেরেছিস তাহলে। আমি মনে করেছিলাম তুই বউকে পেয়ে আমাকে ভুলে গেছিস।
পরশ: আগে বল দেশের ফিরলি কবে।
আরাধ্য: আজকে। আর দেশে ফিরে আপনার অনেক বার ফোন করেছি কিন্তু আপনি ধরেন নাই। যখন ফোন ধরলি না তখন ভাবলাম তোর আফিসে যেয়ে দেখা করি। কিন্তু গাড়ির আফিসের পাথে যেতে দেখি তোর গাড়ি। তাই গাড়ির নিয়ে সামনে দাড়িয়ে পরলাম। এখন বল ফোন কেনো ধরলি না।
পরশ: আসলে একটা কাজ ব্যস্তো ছিলাম তাই ফোনটা ধরা হয়নি আর দেখা হয়নি। এখানে দাড়িয়ে কথা বলবি চল ওই কফি শপে যাই।
আরাধ্য: চল। তারপর দুজনে সামনে কপি শপে গিয়ে বসলো।
পরশ: ওয়েটার দুটা কপি।
ওয়েটার: ঠিক আছে স্যার।
পরশ: তোর কাজ কেমন হলো।
আরাধ্য: রাখ তোর কাজ। তোর ফোন টা দে তো।
পরশ: ফোন নিয়ে কি করবি।
আরাধ্য: দে তো তুই।
পরশ: এই নে।
আরাধ্য পরশের ফোন নিয়ে ছবি দেখতে লাগলো।
আরাধ্য: কিরে তোর বউয়ে পিক নেই।
পরশ: আর বউ। ও বউ না বজ্জাত বউ। বিয়ের দিন থেকে একটা না একটা কন্ড করে চলেছে। তবে মেয়ে মধ্যে একটা প্রতিভা আছে ।
আরাধ্য: কিসের প্রতিভা।
পরশ: ও না ভালো আফিসিয়াল নকশা আঁকতে পারে। ইন ফ্যান্ট আজকে আমার আফিসে নকশা ওই একেছে।
আরাধ্য : তাই তাহলে তো ওকে দেখতে হয় বলতে বলতে ফোনে একটা পিক দেখতে আরাধ্য বললো
আরাধ্য: মিষ্টি। পরশ তোর ফোনে মিষ্টির পিক।
পরশ: তুই মিষ্টিকে চিনিস।
আরাধ্য: চিনবো না কেনো। আরে পরশ মিষ্টিতো সেই মেয়ে যাকে আমরা বৃষ্টিতে ভিজতে দেখেছিলাম। কেনো তুই তো ওকে দেখেছিলি।
পরশ: তুই সত্যি বলছিস। মিষ্টির সেই মেয়ে যাকে আমি এতোদিন মনে মনে ভালো বেসে এসেছি।
আরাধ্য: তোর কেনো কথা বুঝতে পারছিনা। তুই সেদিন মিষ্টিকে দেখে বলায় আগে পরশ বললো
পরশ: আমি যদি সেদিন ওর মুখটা দেখতাম তাহলে তো আমাকে এতো কষ্ট পেতে হতো না।
আরাধ্য: কষ্ট পেতে মানে। আর মিষ্টির পিক তোর ফোনে
ওয়েটার: আপনাদের কপি
আরাধ্য: এখানে রাখুন।
পরশ: আমি আসি রে তোর সাথে পরে কথা হবে। আর হ্যা তোকে ১০০ না ১০০০ টা thank you বলে পরশ চেয়ার থেকে ওঠে দাড়ালো।
আরাধ্য: কোথায় যাচ্ছিস কফি টা শেষ করে যা।
পরশ: কফি টা আজকে তুই একাই খা। আসে রে বলে পরশ কফি শপ থেকে বের হয়ে গাড়ি নিয়ে বাড়ির দিকে যেতে লাগলো। আর মনে মনে বলতে লাগলো আমি আসছি মিষ্টি তোমার কাছে। কিছুক্ষন পর পরশের বাড়ির কলিং বেল বাজতেই নিলুফা দরজায় খুলে দিলো।
পরশ: নিলুফা তোর ভাবি কোথায়।
নিলুফা: ভাইজান ভাবি তো এখনো বাড়ি ফেরে নাই।
পরশ: what? এখনো ফিরে নাই মানে। দ্বারা আমি ফোন করে দেখি বলে ফোনটা বের করে মিষ্টিকে ফোন দিলো।
নিলুফা: কি ভাইজান ভাবি ফোন ধরছে।
পরশ: ওর ফোনতো বন্ধ বলছে। আম্মু আম্মু
আম্মু: কি হয়েছে ডাকছিস কেনো।
পরশ: মিষ্টি এখনো বাড়ি ফিরেনি মানে।
আম্মু: চিন্তা করিস না। একটু আগে দিশা ফোন করেছিলো। মিষ্টির দিশার সাথে আছে।
পরশ: ও। আম্মু আমি উপরে যাচ্ছি বলে পরশ উপরে নিজের ঘরে চলে গেলো। পরশ ঘরে যেতেই বাড়ির কলিংবেল টা বাজতেই নিলুফা দরজা খুলতে যাবে তখন পেছন থেকে পরশের আম্মু বললো
আম্মু: নিলুফা তুই রান্না ঘরে যা দরজা আমি খুলে দিচ্ছি বলে দরজায় কাছে দরজায় খুলে দেখে মিষ্টি আর দিশা ভেজা কাপুরে দাড়িয়ে কাঁপছে।
আম্মু: তোরা এতোক্ষন কোথায় ছিলি। আর ভেজা কাপুড়। চোখ গুলো কেমন যেনো ফুলা ফুলা লাগছে।
দিশা: আম্মু ভাবির বলতে মিষ্টি দিশার হাত টা চেপে ধরলো।
আম্মু: কি ভাবির
মিষ্টি: মামনি আমি বলছি আসলে অনেক দিন পর বৃষ্টি হলো তো তাই দুজনে বৃষ্টিতে ভেজছিলাম।
মামনি: তা নয় বুঝলাম। কিন্তু ফোনটা বন্ধ কেনো।
মিষ্টি: মামনি তুমি এখন প্রশ্ন করবে না আমাদের ভেতরে যেতে দেবো। দেখছো তো আমারা দুজনে কাঁপছি।
আম্মু: হয়েছে আগে দুজনে গিয়ে পোকাশ চেন্জ করে নাও। আমি খাবার রেডি করছি।
মিষ্টি: love you মামনি। বলে একবার দিশা দিকে তাকালো তারপর। সিড়ি দিয়ে উপরে নিজের ঘরে গেলো। ঘরে গিয়ে আলমারি থেকে একটা শাড়ি বের ওয়াশ রুমে চলে গেলো ওশাসরুম থেকে বের হয়ে ডেডিং টেবিলে সামনে দাড়িয়ে আয়নার দিকে তাকাতে মিষ্টির দুচোখে পানি ভেসে পড়লো। হঠ্যৎ করে পেছেন কাউ একজন ওকে জরিয়ে ধরতে ও কেঁপে ওঠলো। আর আয়নার কাচ দিয়ে পেছন জন দেখতে বললো
মিষ্টি : আপনি?
পরশ: কোথায় ছিলে এতোক্ষন। আর ফোন বন্ধ রেখেছিলে কেনো।
মিষ্টি: আমার ইচ্চা তাই ফোন বন্ধ রেখেছি। আর আমি তো কখনো আপনার থেকে জানতে চেয়েছি আপনি কোথায় ছিলেন।
পরশ: মনে হচ্ছে আমার পর রাগ হয়েছে। তবে আজ থেকে রাগ করার কেনো সুযোগ দেবো না।
মিষ্টি: কি করছেন এটা ছারুন আমাকে।
পরশ: এখনো কিছু করিনি তবে করবো। আগে তুমি বলো কেনো এটা করলে।
মিষ্টি: পরশকি সবটা জেনে ফেললো ( মনে মনে) কো কো কোনটা কি করেছি।
পরশ: আমাকে এতোদিন কষ্ট দিলে কেনো।
মিষ্টি: কষ্ট মানে
পরশ: হ্যা কষ্ট। একমিনিট বলে পরশ আলমারি থেকে ওড়নাটা বের করে মিষ্টি সামনে এনে ধরলো।
মিষ্টি: এটা ওরনা।
পরশ: হ্যা ওরনা। তবে ওরনা টা আর কারো না আমার সামনে দাড়িয়ে আছে তার।
মিষ্টি: আপনি ভুল করছেন ওড়না টা আমার হবে কেনো বলে মিষ্টি পেছন দিকে ঘুরে চোখোর পানি মুচলো।
পরশ: আমার দিকে তাকাও। বলে মিষ্টিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো।
মিষ্টি: আ। আমি
পরশ: চুপ একটা কথা বলবে না। আজ কেনো কথা না। অনেক হয়েছে আজ থেকে শুধু ভালো বাসা হবে বলে চোখের পানি মুছে দিয়ে মিষ্টিকে দুহাত দিয়ে টেনে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো। মিষ্টিকে জরিয়ে ধরতে মিষ্টি যেনো চোখের পানি অঝোরে পরতে লাগলো।
মিষ্টি: কি হচ্ছে আজ আমার সাথে। কেনো এমন হচ্ছে। আজ আমি জানলাম আমাকে অচিরে এই পৃথিবীটাকে চলে যেতে হবে আর আজকে আবার আমি আমার ভালোবাসার মানুষটা আমাকে আপন করে পেতে চাইছে কেনো হচ্ছে এসব কেনো বলে অঝোরে কাঁদতে লাগলো মিষ্টি। মিষ্টির চোখের পানিতে পরশের পিঠে শার্টটা ভিজিয়ে দিচ্ছে।
পরশ: এই মিষ্টি তুমি কাঁদছো কেনো মিষ্টিকে দু হাত ধরে সামনে দিকে এনে। এই পাগলী মেয়ে কাঁদছো কেনো বলে মিষ্টির চোখের পানি মুছে দিলো।
মিষ্টি: এমনি।
পরশ: আর কখনো কাঁদবে না।বলতে দরজায় কেযেনো নক করলো। পরশ দরজা খুলে দেখে নিলুফা।
নিলুফা: ভাইজান আপনাদের দুজনে খাবার।
পরশ: রেখে যা।
নিলুফা খাবারগুলো টেবিলের উপর রেখে চলে গেলো।
পরশ: মিষ্টি আমাদের খাবার এসেছে।আর আজ আমি নিজে হাতে তোমাকে খাইয়ে দেবো বলে একটা প্লেটে খাবার নিয়ে মিষ্টি কাছে গিয়ে মিষ্টিকে বিছানাতে বসিয়ে দিয়ে বললো
পরশ: হা করো।
মিষ্টি: আমি হা করে খাবার মুখে নিতে আমার চোখ ভেঙে পানি পরতে লাগলো।
পরশ: এমন ভাবে কাঁদছো কেনো হুহ্। বললাম তো আর কাঁদবে না।
মিষ্টি: আমি ওয়াশ রুম থেকে আসছি বলে দৌড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে ওয়াশরুমে দরজা লক করে দিলো।
পরশ: মিষ্টি এইমাএ তো ওয়াশরুম থেকে আসলো। আবার কেনো গেলো কে যানে। পরশ তুই বসে ওয়েট কর।
মিষ্টি: কেনো করলে আমার সাথে এসব কেনো। বলে না খোদা কেনো দিলে এতো বড় অসুখ। তুমি তো দেখছো আমার বর আমাকে ভালোবেসেছে তুমি বলো আমি এই ভালোবাসা ছেড়ে কিরে যাবো। আচ্ছা তুমি তো আমাকে নিয়ে যাবে তাতে আমার একটু কষ্ট হয়নি। কষ্ট তো আমার এখন হচ্ছে । আমি কি ছু তেকরে এই ভালোবাসা ছেড়ে যাবো না। তুমি শুনতে পাচ্ছো আমি কিছুতে তোমার কাছে যাবো না। আমি মরতে চাইনা আমি বাঁচতে চাই আমি বাঁচতে চাই বলে অঝোড়ে কাঁদতে লাগলো মিষ্টি।
পরশ: মিষ্টি এতো ওয়াশরুমে কি করছো ( দরজা নক করে বলতে লাগলো)
মিষ্টি: আমি ওনার গলা পেয়ে তারাতারি চোখের পানি মুছে মুখে পানি দিলাম যাতে ওনি বুঝতে না পারে আমি কেদেছি। মুখটা মুছে আমি ওয়াশরুম থেকে বের হতেই ওনি বললো
পরশ: এতো সময় ওয়াশরুমে কি করছিলে।
মিষ্টি: এমন ভাবে বলছেন যেনো আমি ওয়াশ রুমে ঘন্টা কাটিয়েছি।
পরশ: ঘন্টা নয় ঘন্টার কাছাকাছি পুরা ৪৫ মিনিট।বাদ দাও আগে চোখ বন্ধ করো
মিষ্টি: চোখ বন্ধ করবো কেনো।।
পরশ: করতে বলছি করো না।
মিষ্টি: ঠিক আছে বন্ধ করলাম।
পরশ: খুলবে না কিন্তু
মিষ্টি:আমি চোখ বন্ধ থাকা অবস্থা মনে ওনি আমার গলায়কিছু একটা পরিয়ে দিলেন আর আলতো করে আমার ঘাড়ে একটা চুমো খেলন। আমি চোখ খুলে দেখি ওনি আমার গলায় একটা ডায়মন্ডে নকেট ওলা মালা পরিয়ে দিয়েছেন। আর নকেটের মধ্যে p+m লেখা।আমি ওনার দিকে ফিরে ওনাকে জরিয়ে ধরতে হঠ্যৎ…..
(চলবে)