গল্পের নামঃ #বস আমার এক্স
লেখকঃ মোঃ শামীম মিয়া
পর্বঃ ০৬
সবাই যে যার মত পরিবারের লোকজন নিয়ে এসে হাজির অফিসের সামনে। কেউ বাবা মা কেউ বউ কেউ স্বামী কেউ ছোট ভাই বোন কেউ প্রেমিক কেউ প্রেমিকা নিয়ে হাজির কক্সবাজার বলে কথা। এখানে গেলে নাকি আইফোন পাওয়া যায়
সবাই এসেছে গাড়ি ছাড়ার সময়ও হয়েছে কিন্তু আমাদের নায়কের খবর নেই। তানহা বাধ্য হয়ে গাড়ি ছাড়ার কথা বলল। গাড়ি ছেড়ে দিছে, এর মাঝে মামুন এসে হাজির। গাড়ির পিছনে পিছনে মামুনও দৌড়ে গাড়িতে উঠলো। উঠেই দেখে গাড়ির সব সিট ব্লক খালি মিতুর পাশে একটা সিট আছে। মিতু হাত ধরে নেটে মামুন কে বসালো।
মিতুঃ এত দেরি হলো কেনো শুনি? নাকি বাসায় বউ আছে আসতে দিতে চায়নি?( মজা করে বলল)
মামুনঃ আর বলিয়েন না, আপনার দেওয়া শার্ট প্যান্ট পড়ে দেখলাম হলো না। তাই এই গুলো (তানহার দেওয়া পোশাক) পড়ে আসতে দেরি হলো।( হাফাতে হাফাতে বলল)
মিতুঃ বাহ এই পোশাকে তো তোমাকে সেই মানিয়েছে পছন্দ আছে তোমার।
মামুনঃ ধন্যবাদ ( বলেই মুচকি মুচকি হাসলো)
মিতুঃ ম্যাম তো সেই রেগে গিয়েছিল তোমার জন্য অপেক্ষা করে দেখলো যখন তুমি নেই তখন তো ম্যাম সে কি রাগ।
মামুনঃ আচ্ছা ম্যাম কোথায় কোন গাড়িতে উঠছে।
মিতুঃ আরে ম্যাম তো আমাদের পিছনের ওই দিকের সিটে বসেছেন। ভাগ্যিস তোমার জন্য এই সিট টা রেখেছিলাম না হলে পুরা পথ দাঁড়িয়ে যেতে হতো তোমাকে।
মামুনঃ আবারো আপনাকে ধন্যবাদ মিস মিতু।
মিতুঃ হয়েছে আর ধন্যবাদ দিতে হবে না তোমাকে, গানের তালে তালে হাত তালি দাও আর আনন্দ করো।
মামুনঃ আপনারা আনন্দ করুন আমি বরং একটু চোখ টা বন্ধ করে থাকি অনেক দৌড়ে এসেছি।
মিতু সহ গাড়িতে থাকা সবাই আনন্দ করতেছে। মাঝে মাঝে মিতু মামুনের গায়ে হেলে পড়তেছে। তানহা তার সিট থেকে উঠে এসব দেখে আরো জ্বলে যাচ্ছে। কিছুই বুঝতে পারতেছে না সে কি করবে এখন। মিতু তো মামুনের গায়ে বার বার উল্টে পড়তেছে তবুও মামুন তাকে সরিয়ে দিতেছে না। এবার মিতু রেগে তাদের সিটের সামনে এসে দাঁড়ালো। মামুন তো চোখ বন্ধ করেই আছে।
মিতুঃ আরে ম্যাম হঠাৎ সিট রেখে এখানে এসে দাঁড়ালেন যে কোন কি সমস্যা।
তানহাঃ আসলে আমার পাশে যে মেয়েটা বসেছে ওর একটু সমস্যা। আচ্ছা তার আগে বলেন আপনি কি গাড়িতে বমি করেন নাকি?
মিতুঃ না ম্যাম করি না তো আমার তো জার্নি করতে খুব ভালো লাগে।
তানহাঃ আমি তো বমি করি আর ওই মেয়েটা এসব বমি করা দেখলে নাকি বমি করে। তাছাড়া জানালার পাশে সে বসেছে সরতেও চাইছে না। তাই বলছিলাম কি আপনি যদি ওই সিটে যেতেন তাহলে আমার জন্য ভালো হতো।
মিতুঃ ম্যাম বুঝেন তো আমি মামুন কে পছন্দ করি কেমন করে যাই বলেন( মুখে বললেও ইশারায় জানালো)
তানহাঃ আচ্ছা আপনি ওখানে যান আমি মামুন সাহেব কে বলে দিবো আপনার মনের কথা( রাগ করলেও নরমাল ভাবে বলল)
মিতঃ কিন্তু পরে আবারো এখানে এসে বসবো আমি ঠিক আছে।
তানহাঃ সিট আপনার যখন খুশি এসে বসিয়েন, আমার বমি করা হয়ে গেলে আর কোন সমস্যা নেই( মিথ্যা বলল)
মিতু সিট ছেড়ে দিয়ে তানহার সিটে গিয়ে বসলো। আর মনে মনে ভাবতেছে ইশ ম্যাম আমার মনের কথা মামুন কে বলে দিবে। নিশ্চয়ই ম্যামের কথায় না করতে পারবে না। এমনিতেও মামুন ম্যাম কে অনেক ভয় করে। তানহা সিটে বসেই সেই রাগ হয়ে গেলো। মামুন চোখ বন্ধ করার পর কখন যে ঘুমিয়ে গেছে মামুন বুঝতেই পারে নাই। হঠাৎ মামুনের শরীরে জোড়ে ধাক্কা দেওয়ার কারনে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। মামুন ধরপরিয়ে উঠলো
তানহাঃ তাহলে এতক্ষণে ঘুম ভাঙ্গলো আপনার তাই না( মুখে শয়তানি হাসি)
মামুনঃ আ আ আপনি কখন এখানে এলেন, এখানে তো মিস মিতু ছিলো( তানহা কে দেখে একটু অবাক হলো)
তানহাঃ মিস মিতুর প্রতি এত টান আপনার কৈ আমার প্রতি তো কোনদিন আপনার এরকম টান দেখি নাই।
মামুনঃ উল্টা বুঝেন কেনো আপনি। আমি বলতে চেয়েছি এই সিটে মিস তানহা ছিলো আপনি কখন এখানে এলেন সেটা বলেছি।
তানহাঃ আপনি যখন মিতু কে নিয়ে ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখতেছিলেন ঠিক তখনই এখানে এসেছি আমি।
মামুনঃ আবারো উল্টা কথা বলেন কেনো আপনি। আসলে কখনও সত্যি টা জানার ইচ্ছে আপনার ছিলো না।( একটু রেগে)
তানহাঃ বাপবা আপনার দেখি রাগও আছে, তা এরকম রাগ কি তখন করেন যখন আপনার প্রেমিকা পাশে থাকে না।
মামুনঃ আপনার সাথে কথা বলা মানে নিজের গালে নিজেই চড় মারার সমান।
তানহাঃ তা মারেন না চড় দেখি কেমন করে নিজের গালে চড় মারতে হয়।
মামুনঃ আপনি দয়া করে মিস মিতুর সাথে আমাকে জরিয়ে কিছু বলবেন না।
তানহাঃ মিস মিতু কে নিয়ে না বললে যে মিস মিতুর সাথে অন্যায় করা হয়ে যাবে আমার।
মামুনঃ মানে( অবাক হলো)
তানহাঃ মানে টা হলো মিস মিতু এই সিট টাতে আমাকে বসতে দিয়েছেন যাতে আপনাকে বলতে পারি মিস মিতু আপনাকে অনেক ভালোবাসে আপনাকে নিয়ে হাজারো স্বপ্ন দেখতেছে তিনি। আর এই ভালোবাসার কথাটা বলার জন্য আমাকে সিট ছেড়ে দিয়েছে।
মামুনঃ কি যা-তা কথা বলতেছেন আপনি আমাকে।
তানহাঃ আমি বললেই যা-তা হয়ে যায় নাকি। পরশু রাতে তো কত কথা শুনিয়ে ফোন কেটে রেখে দিলেন তাও বন্ধ করে। আর আজকে তো মিস মিতু নিজেই বলে গেলো আর বিশ্বাস না হলে ডাক দেই তাকে।
মামুনঃ ম্যাম আপনি যা ভাবছেন তার কিছুই নেই আমাদের মাঝে।( মন মরা হয়ে)
তানহাঃ তা কিছুই যদি না থাকবে অফিসের এত এত মেয়ে থাকতে এত এত ছেলে থাকতে আপনারা দুজন সব সময় সুপার গ্লুর মত জোড়া লেগে থাকেন যে? মানুষ বলে না যতটা রটে কিছুটা বটে।
মামুনঃ আপনাকে বোঝাতে পারবো না আমি। কিন্তু সত্যি এটাই যে তার সাথে সহকর্মী ছাড়া আমার কোন সম্পর্ক নেই। এখন যদি মিস মিতু আমাকে ভালোবাসে বা ভালোবাসার চোখে দেখে সেটা তার সমস্যা আমার নয়।
তানহাঃ খুব তো ফোনে বড় বড় কথা বলছিলেন এখন কেনো এমন করতেছেন শুনি?
মামুনঃ আপনি যেরকম করেন সেখানে আমাকে চুপ থাকতেই হয়। এর কারনে সেদিন ফোন কেটে দিয়ে বন্ধ করে রেখেছি। ম্যাম বিশ্বাস করেন মিস মিতুর সাথে আমার কোনদিন কোন ক্ষণে একজন ভালো সহকর্মী ছাড়া কোন অন্য কোন সম্পর্ক নেই।
তানহাঃ আচ্ছা বিশ্বাস হচ্ছে না তবুও যখন বলছেন বিশ্বাস করে নিলাম। তো এবার বলুন আসতে এত দেরি হচ্ছিল কেনো?
মামুনঃ সত্যি কথাটা বললে বিশ্বাস করবেন না আপনি?
তানহাঃ হায় রে আমার সত্যবান ব্যক্তি রে? তা শুনি কি এমন সত্যি ঘটনার জন্য আসতে দেরি হলো?
মামুনঃ আপনার ভয়ে আসতে দেরি হয়েছে। কারন সেদিন রাতে তো রাগে চড় মেরে মুখের উপর শপিং ব্যাগ গুলো দিয়ে আসলেন। এখন এগুলো যদি পরে না আসতাম তাহলে আল্লাহই ভালো জানে সবার সামনে কি করতেন। ভুলে অন্য পোশাক পরেছিলাম, পরে মনে পড়লো আপনার দেওয়া শার্ট প্যান্ট ঘরি সানগ্লাসের কথা এবার বুঝেন( মিতু কে মিথ্যা বলেছিলো)
তানহাঃ তা কবে থেকে ভয় পান আমাকে শুনি( ভালো করে দেখলো সত্যি তো)
মামুনঃ দয়া করে চুপ থাকুন আর পারলে আনন্দ করুন আমি একটু চোখ বন্ধ করে ঘুমাতে চাই।
তানহাঃ কেনো রাতে কি কারো সাথে প্রেম করেছেন নাকি যে বাসে উঠে ঘুমাতে হবে।
মামুনঃ আপনার সাথে কথা বলাই আমার দোষ হয়েছে।
মামুন পকেট থেকে এয়ারফোন বের করে কানে দিয়ে গান শুনতে লাগলো আর চোখ বন্ধ করলো। তানহা তা দেখে মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো। কতদিন পর এভাবে মামুনের কাছে বসে এভাবে কথা বলল তানহা। মামুন ঘুমিয়ে গেছে দেখে তানহা মামুন কে জরিয়ে ধরে কাঁধে মাথা রেখে সেও ঘুমিয়ে গেলো। গাড়ি চিটাগং ছেড়ে চকরিয়া পার হয়ে হাইওয়ের পাশে একটা হোটেলে থামলো। দুপুর গরিয়ে বিকাল হয়ে গেছে। মামুন জেগে দেখে তানহা তাকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে। মামুন আর তানহা কে না ডেকে মাথাটা সিটের উপরে রেখে নিচে নেমে আসলো, এসেই মিতুর সাথে দেখা। মামুন দেখে লজ্জা লজ্জা ভাব করে মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো।
মামুনঃ কি হলো এভাবে আমাকে দেখে হাসতেছেন কেনো? আমি কি হাসার মত কোন কাজ করেছি নাকি?
মিতুঃ আমি তোমাকে দেখে হাসতেছি নাকি? আমি একটু হাসতেও পারবো না নাকি!
মামুনঃ হুমম আপনি হাসুন আমি ভিতরে যেয়ে একটু হালকা হয়ে তারপর কিছু খাবো।
মিতুঃ আরে আমাকে একা রেখে কৈ যাও দাঁড়াও আমিও যাবো।
মামুনঃ হ্যা হ্যা আসেন আমার সাথে আমি যে বাথরুম ব্যবহার করবো আপনিও সাথে থাকেন।
মিতুঃ ছি কি যে বলো না তুমি, আমিও যাবো মানে লেডিস বাথরুম ব্যবহার করবো আমি।
মামুনঃ তো সোজা করে কথা বলতে পারেন না আপনি?
মিতুঃ আচ্ছা হইছে চলেন এবার খালি ঝগড়া করে আমার সাথে।
মামুন আর কোন না বলে দ্রুত বাথরুমে গেলো খুব জোড়ে এক নাম্বার চাপ পেয়েছে তার। বাথরুম থেকে বের হয়ে হাত মুখ ভালো করে ধুয়ে নিলো। হোটেলের ভিতরে প্রবেশ করে দেখে তানহা আগে থেকেই বসে আছে। হঠাৎ মিতু মামুন কে তার সাথে বসতে বললে তানহার ফিরতি ডাকে মামুন বাধ্য হয়ে তার কাছে গিয়ে বসলো। তানহা খাবার এগিয়ে দিলো মামুন আর না করতে পারলো না। দুজনে খাবার খাচ্ছে
তানহাঃ আচ্ছা আপনি কেনো আমাকে সিটে ওভাবে রেখে চলে আসলেন।
মামুনঃ আসলে আমার খুব জোড়ে বাথরুম পেয়েছিলো তাই আপনাকে আর ডাকি নাই।
তানহাঃ এত মিথ্যা বলা কবে থেকে শিখলেন? আমি তো উঠে দেখি আপনি মিতুর সাথে হেসে হেসে কথা বলছেন?
মামুনঃ আরে ম্যাম আমি তো কথা বলতে চাইনি ওনি নিজেই এসে কথা বলল।
তানহাঃ বাথরুম খুদা বুঝি আপনার পায় আমার বুঝি পায় না! আগে তো এরকম ছিলেন না আপনি এখন কেনো এরকম হয়েছেন?
মামুনঃ সরি ম্যাম আমি মনে করেছি আপনি ঘুমিয়ে আছেন আপনাকে ডাক দিলে হয়তো বা রাগ করবেন তাই ডাকি নাই।
তানহাঃ হয়েছে হয়েছে খাওয়া শেষ করেন সবাই বাসে উঠে পরেছে। বাথরুমে সময় শেষ করেছেন খেতেও পারতেছে না এখন।
মামুনঃ হুমম ম্যাম ঠিক আছে।
খাওয়া শেষ করে যে যার সিটে গিয়ে বসে পড়লো। কিন্তু আপত্তি বাধলো তখন যখন দেখলো মিতু আবারো আগের সিটে বসেছে। গাড়ি দুটো সিট খালি একটা মামুনের আর একটা যেখানে প্রথমে তানহা বসেছিলো। তানহা মিতু কে আবারো ইশারায় বুঝালো সে এখনও মামুন কে বলতে পারে নাই তার ভালোবাসার কথা। মিতু আবারো হালকা হেসে সিট উঠে গিয়ে তানহার সিটে বসলো। তানহা সিটে বসতে বসতে মামুন বলল
মামুনঃ আচ্ছা ম্যাম মিস মিতু কে ইশারায় কি এমন বললেন যে ওনি সিট ছেড়ে দিয়ে আপনার সিটে বসলো।
তানহাঃ আসলে মিস মিতু আপনাকে পছন্দ করে ভালোবাসে নিজের মুখে বলতে পারতেছে না তাই আমাকে বলতে বলেছে। এই কারনে সিট ছেড়ে দিয়ে আমার সিটে বসেছে।
মামুনঃ ম্যাম আমাকে আর হাসাবেন না( হেসে)বাপের জন্মেও শুনি নাই অফিসের বস কে দিয়ে কর্মচারী প্রেম প্রস্তাব দেয়( জোড়ে হাসলো)
তানহাঃ তারমানে আপনিও মিস মিতু কে পছন্দ করেন ভালোবাসেন তাই তো( মন খারাপ করে)
মামুনঃ ম্যাম আর হাসাবেন না প্লিজ উফ পেঠে ব্যথা হয়ে গেলো( হেসে)
তানহাঃ আমি মজা করতেছি না যেটা সত্যি সেটাই বললাম। মিস মিতু নাকি আপনাকে ভালোবাসে।
মামুনঃ উফ ম্যাম আপনিও না, দেখেন আমি তাকে আমার ভালো কলিগ ছাড়া অন্য কিছু ভাবি না।
তানহাঃ তাহলে মিতু কেনো আমাকে একদিন অফিসে আজকে বাসেও বলল আপনাকে ভালোবাসে?
মামুনঃ ম্যাম ওটা তার ভুল ধারনা আর আপনি যে বলতেছেন এটাও আপনার ভুল। আর আপনিও ভালো করে জানেন আমি কাকে ভালো……….?( আর বলল না)
তানহাঃ কি হলো থামলেন যে বলেন কাকে ভালোবাসেন?
মামুনঃ ওসব কিছু না। কিন্তু মিস মিতু কে আমি ভালোবাসি না আর কোনোদিন তাকে ভালোবাসা সম্ভবও না। আমি আগেও বলেছি এখনও বলতেছি মিস মিতু কে ভালো কলিগ মনে করে এর চেয়ে অতিরিক্ত কিছুই না।
তানহাঃ পরে যদি জিজ্ঞেস করে কেনো তাকে ভালোবাসেন না তখন কি উত্তর দিবো আমি?
মামুনঃ বলবেন আমি একজনকেই ভালোবেসেছি আর তাকেই আমি চাই কিন্তু সে মিতু নয়।
তানহাঃ কাকে চান কে সে সেটা যদি জানতে চায়।
মামুনঃ ম্যাম প্লিজ আর না এবার তো
তানহাঃ আচ্ছা ঠিক আছে আমি বুঝেছি সবটা আর বলতে হবে না।
মামুনঃ ধন্যবাদ ম্যাম এবার একটু জিরিয়ে নেই আমি।( আগের মত কানে এয়ারফোন লাগিয়ে চোখ বন্ধ করলো)
তানহাঃ আমি জানি মামুন তুমি আমাকে এখনও ভালোবাসো। আমাকে এভাবে সেসময় ঠকাতে নাও পারতে তুমি। আমি যে এখনও সেই আশা নিয়ে পরে আছি আবারো শুনবো ভালোবাসি কথাটা তোমার মুখে। এতদিন দুর্ব্যবহার করার জন্য আমি সরি মামুন। তোমার কাছ থেকে অবহেলা পেয়ে এগুলো করেছি আমি। কক্সবাজার যেয়ে নেই তোমাকে বলতে হবে না সবার সামনে আমি তোমাকে আবারো ভালোবাসি বলবো। আমি যে এখনও তোমাকে আগের মতই ভালোবাসি আমি।( মনে মনে বলল)
কিছুক্ষণ বাহিরের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে তানহার চোখেও ঘুম চলে আসলো। আবারো সে মামুন কে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে গেলো। বাস যখন কক্সবাজারে হোটেলের সামনে এসে দাঁড়ালো তখন প্রায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত হয়েছে। তানহা চোখ মেলে দেখে সে মামুন কে জরিয়ে ধরে আছে তা দেখে কিছুটা লজ্জা পেলো। তানহার ডাকে মামুনের ঘুম ভাঙ্গে। বাস গুলো থেকে সবাই নেমে হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে রইলো। তানহা আগে থেকেই হোটেল রুম গুলো বুক করে রেখেছিলো।
তানহাঃ সবাই আজকে যে যার রুমের চাবি নিয়ে চলে যান। অনেক পথ জার্নি করা হয়ে গেছে। আর হ্যাঁ এখানে আমরা মোটে তিনদিন থাকবো, এই তিনদিন তিন বেলা খাবার থাকা কোম্পানি বহন করবে? এর বাহিরে আপনারা অন্য কোথাও ঘুরতে যাওয়া খাওয়া সেসব আপনাদের সবার নিজেদের ব্যয় করতে হবে।
ম্যানেজারঃ ম্যাডাম তাই বলে এত গুলো মানুষের সব কিছু কোম্পানি ব্যয় করবে এই তিনদিনে তো কয়েক লক্ষ্য টাকা ব্যয় হবে।
তানহাঃ এনারা সবাই আমার কোম্পানির কর্মকর্তা এনারা আছে বলেই কোম্পানি টিকে আছে। আর বছরে একবার মাত্র পিকনিকের আয়োজন করা হয় এতে কত লক্ষ্য টাকা ব্যয় হলো সেটা ভেবে লাভ আছে। তাছাড়া এনারা সত ভাবে কাজ না করলে কোম্পানি কোটি কোটি লাভ করতো না। এটা এনাদের এবং এনাদের পরিবারের প্রাপ্ত। হোটেলে সব বলা আছে আপনাদের যা লাগে নিতে পারেন খেতে পারেন। এবার সবাই এক এক করে যে যার রুমের চাবি নিয়ে যেতে পারেন।
সবাই এক এক করে তাদের ব্যাগ লাগেজ নিয়ে হোটেল ম্যানেজারের কাছে গিয়ে চাবি নিয়ে রুমে চলে গেলো। সবাই অনেক পথ জার্নি করেছে, সবাই আগে রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিয়ে হোটেলে যেখানে সবার একসাথে খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে সবাই খেয়ে আবারো যার যার রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। যারা পরিবার সহ এসেছে তাদের জন্য বড় রুম মানে ডাবল রুম দুটি খাট যারা সিঙ্গেল এসেছে তাদের জন্য সিঙ্গেল রুম সিঙ্গেল খাট।
চলবে কি?
সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করি এবং খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকি। আপনার সন্তান কে কোরআন এবং দ্বীনের শিক্ষা দিন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। দয়া করে কেউ গল্প কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দিবেন না?