বিনি_সুতার_মালা?পর্ব_০৭(শেষ)
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
ক্লাস শেষ করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিবো ঠিক এমন সময় হটাৎ আমাকে ঘিরে ধরল কিছু মুখোস পরা লোক।
হটাৎ এমন হওয়াতে আমি বর্ষা দু’জনে বেশ ভয় পেয়ে যায়।
আমি সাহস নিয়ে বললাম,
–কে আপনারা?
লোক গুলো কোন উত্তর না দিয়ে আমার মুখের সামনে স্প্রে দিলো।
তার পর কিছুই মনে নাই,
চোখ মেলে তাকায় যখন তখন নিজেকে অর্নের সামনে আবিষ্কার করি,
এই শুরু হলো আমার জীবনে অর্ন নামের কালো আমাবস্যা।
সে দিন থেকে এই পর্যন্ত ওর অত্যাচারে দিন কাটাতে কাটাতে আমি ক্লান্ত।
কিন্তু আজ ত আমি রেহায় পেলাম।
তবে কেন কষ্ট হচ্ছে ওর কথা ভাবলে।
কিছুই বুঝতে পারছি না আমি।
,
,
,
অর্নের বাসায়,
–স্যার ম্যামকে একটা ছেলের সাথে দেখেছি নাইট ক্লাবে ঢুকতে।
–কিহ!
–জি স্যার।
–ওকে ছেড়ে দিছি বলে ও এসব করবে।
ওর পাখা আমি কাটছি
অর্ন বেরিয়ে পরে,
ক্লাবে এসে সত্যি ও আদ্রি কে দেখে অর্ন আবাক হয়ে যায়।
সম্পূর্ণ আদ্রি এক শুধু আদ্রি এট চুল গুলো কেমন
,
অর্ন গিয়ে আদ্রির হাত ধরে টান দেয়। মেয়েটা পেছনে ফিরে অর্নকে দেখে কেমন অবাক হয়ে যায়।
–তুমি এখানে,
–তুমি আমায় তুমি বলছো? (অবাক হয়ে)
–ত কি বলব। আমি তোমায় ছেড়ে চলে এসেছিলাম তুমি কেন আমার পিছু আছো এখনো।
–মানে?
–মানে তোমায় আমি ৩ বছর আগে ত্যাগ করেছি অর্ন তুমি কেন আমার পেছন পেছন এখনো পড়ে আছো।
অর্ন চুপচাপ মেয়েটাকে কিছু না বলে সোজা আদ্রির বর্তমান বাসার দিকে রওনা দেয়।
–বস কই যাচ্ছি।
–চুপ থাকো।
অর্ন আদ্রির বাসায় এসে আদ্রিকে ঘুম দেখতে পায়।
–বস হচ্ছে কি এগুলা ভাবি এখনে ঘুমিয়ে থাকলে ওটা কে
।
–এর উত্তর তোমার ভাবির আম্মুই দিতে পারবে,
অর্ন আদ্রির মায়ের কাছে আসে,
–আন্টি আদ্রি কে আপনার আপন মেয়ে?
–এটা কেমন কথা?
–আন্টি দেখুন কোন দিধা বাদ দিশে কথা বলেন প্লিজ খুব প্রয়োজন এটা জানা আমার জন্য।
–আদ্রি কে এডপ্ট করেছিলাম আমরা একটা অনাথ আশ্রম থেকে
–অনাথ আশ্রম থেকে!
–হ্যাঁ।
,
অর্ন কথাটা শুনেই বাসায় চলে আসে,
অর্নের কাছে পুরোটা ক্লিয়ার হয়।
–সৈকত,
–জি স্যার।
–ওই মেয়েটাকে নিয়ে আসবি কাল।
–বারের মেয়েটা?
–হুম।
,
পরের দিন,
সকালে,
অর্ন আদ্রির বাসার দিকে রওনা হয়।
খুব সকালে ঘুমটা ভেঙে যায়।
কফি হাতে ছাদে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
হটাৎ মনে হলো পেছন থেকে কেউ আমাকে তুলে নিছে।
–আপনি! এখনে কি করে?
–আমার গরুর গাড়িতে নিয়ে যেতে এসেছি।
–মানে।
–শ্বশুর বাড়ি।
–কি বলছেন এগুলা।
–চলো ত আগে,
অর্ন আমাকে বাবা মায়ের সামনে দিয়ে নিয়ে এলো।
আল্লাহ কি লজ্জা।
–আরে কি হইছে টাকি?
–চলো ত আগে
–কি আজব মানুষ.
অর্নের বাসায়,
অর্ন আমাকে তার রুমে নিয়ে এলো,
এই রুমে এসে আমি অবাকের চরম শিমায় পৌঁছালাম।
–এই মেয়েটা কে? আমার মত দেখকে কেন?
–তোমার বোন।
–কিহ আমার কোন বোন নাই।
–অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে এ তোমার বোন আর এই মেয়েটা সে যার জন্য তোমায় এতো কষ্ট দিছি।
আমি অর্নের কথায় শুধু স্টাচু হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।
–মানে?
–মানে,
আমি যাকে ভালোবাসতাম সেই মেয়েটা এই মেয়েটা আর তুমি ওর বোন তোমাদের চেহারা এক তোমাকে ও ভেবে আমি আটকে রাখার চেষ্টা করতাম।
কিন্তু আজ তোমায় কিছু বলতে চাই।
সত্যি ভালোবাসি তোমায় আমি মানছি আমি ভুল করেছি মাফ করা যায় না?
অর্ন হাটু গেড়ে কথাটা বলল আমাকে,
আমি পাশ ফিরে মেয়েটার দিকে তাকালাম।
–ছেড়ে কেন গেছিলেন আপু?
–ভালোবাসতাম অন্য কাউকে তাই।
–আমার কি করা উচিৎ অর্ন।
–সব ভুলে মেনে নেওয়া উচিৎ।
হটাৎ মায়ের কন্ঠ পেয়ে পেছনে তাকালাম।
–হ্যাঁ মা আমি বলছি অর্ন তার ভুল শিকার করেছে।
–হ্যাঁ আদ্রি তুমি অর্নের সাথে ভালো থাকবে। আমি ত ওর সাথে যা করেছি তা ঠিক নয় কিন্তু আমাকে ক্ষমা করে দিও অর্ন।
ভালো থাকো।
মেয়েটা চলে গেল।
আমিও হাটু ভাজ করে বসে অর্নকে জড়িয়ে ধরলাম।
এই প্রথম তাকে নিজ থেকে কাছে টানলাম।
,
৩ দিন পর,
খুব ধুমধামে বিয়েটা হয় আদ্রি আর অর্নের।
বাসর ঘরে সেই প্রথম দিন সে শাড়ি আর গয়না পড়ে পালিয়েছিলাম সেই গুলা পরে ঠিক সে ভাবেই সেজেছি আজ।
সত্যি ভালোবাসার অনুভুতি গুলো এমন হয় কখনো ভাবি নি৷
যদি জানতাম তবে খুব আগে ভালোবাসতাম।
আমার বিনি সুতার মালাটা তবে জীবনের জন্য টিকে গেল।
–বৌ।
–হুম।
–তুই যে শুধুই আমার রে।
–উফ কি মিষ্টি তোমার কন্ঠ।
–ওরে আল্লাহ এ কে?
–কেন তোমার বৌ।
–আদ্রি তুমি আমাকে তুমি বলছো।
–তো কি তুই বলব?
–না না তুমি ত দেখি বেশ রোমান্টিক।
–হ্যাঁ তা ত আছি কিন্তু কাউকে দেখায় নি।
–আদ্রি।
–বলো।
–একটা বাবু লাগবে।
–সত্যি।
,
–হ্যাঁ।
?
সমাপ্ত।
(শেষ গল্প আজকে একটু গঠন মুলক মন্তব্য কইরেন)