বিনি_সুতার_মালা?
পর্ব_০৫
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
পেছন থেকে অর্ন আমার চোখ দুটো বেঁধে দিল,
–আল্লাহ কি করছেন?
–চুপ করো সারপ্রাইজ আছে,
–কিন্তু,
–নো কিন্তু চুপ করে এসো,
উনি আমাকে ধরে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে বেশ ভালো বুঝতে পারছি আমি কিন্তু যাচ্ছে কই।
কিছু সময় পর আমারা দাঁড়ালাম।
–তৈরি ত সারপ্রাইজ এট জন্য
–খুলুন,
উনি চোখ খুলে দিল।
চোখ খুলে সামনে তাকাতে আমি সত্যি অবাকের চরম সীমায় পৌঁছে যায়,
–মা বাবা
ওদের দেখে দৌড়ে ওদের জড়িয়ে ধরি৷
–মা (কাঁদো শুরে)
–কেঁদো না মা কাঁদছো কেন আমরা ত তোমার সামনে,
–আমি তোমাদের অনেক মিস করছি।
–আমিও মা।
দুরে দাঁড়িয়ে এমন দৃশ্য অর্ন দেখছিল সবটা দেখার পর সে বুঝলো ভালোবাসা আর যাই হোক জোর করে পাওয়া সম্ভব না।
–আদ্রি আমি একটু কথা বলতে চাই। (অর্ন)
আমি মুখ তুলে তাকালাম,
–তুমি কি চলে যেতে চাও যদি চাও তবে চলে যেতে পারো আমি বাঁধা হবো না।
–তুমি চাইলেও না চাইলেও আজ আমি আমার মেয়েকে নিয়ে যেতাম (আদ্রির বাবা)
–আঙ্কেল এই ডিসিশন টা ওকে নিতে দিন আদ্রি বলো,
–আমি যেতে চাই থাকতে চাই না এখনে।
আদ্রির কথা শুনে অর্ন কিছু সময়ের জন্য থমকে গেল। তার পর নিজেকে সামলে বলল,
–হুম ঠিক আছে যাও সব গুছিয়ে দিবে সৈকত।
–না আমার মেয়ের কিছু প্রয়োজন নাই ওর সব আমি ওকে দিবো।
কথাটা বলেই বাবা আমাট হাত ধরে নিয়ে এলেন।
আসার সময় অর্নকে দেখলাম মাথাটা তার নিচু।
হয় ত চোখে পানি ছিল৷।
কিন্তু আমি ত চাইছিলাম এটা তবে কষ্ট কেন অনুভব হচ্ছে আমার এতো।
কিছুই বুঝতে পারছি না।
বাবা মায়ের সাথে বাসায় পৌঁছে গেলাম।
বাসায় এসে নিজের রুমে শুয়ে পরলাম।
খুব ক্লান্ত আমি।
কেন হটাৎ এতো ক্লান্তি গ্রাস করলো আমার উপর।
অর্নের কথা ভাবলে বুকের মধ্যে খালি অনুভব হচ্ছে
কেন এমন হচ্ছে ,
,
এদিকে,
অর্ন রুমে এসে আদ্রির আজ পরা শাড়িটি ধরে বসে আছে,
মনে করছে ৩ বছর আগের কথা,
দিনটা টা ছিল বসন্তের একটা দিন,
গাছে গাছপ নতুন পাতা আর পাখির গান,
একটা কৃষ্ণচূড়া গাছের তলায় একটা মেয়ে বসে তার বান্ধবীর সাথে ছবি তুলছে।
ঠিক সেই সময় একটা ছেলে কিছু গার্ড নিয়ে সেখান দিয়ে যাচ্ছিল,
–দেখ আদ্রি ছেলেটা কি কিউট না।
–ধুর কিউট কই ওই রকম সুট বুট পরলে রাস্তার সব ছেলেকেই কিউট লাগবে,
–নারে দেখ অসাধারণ।
ছেলেটা আদ্রি দের ক্রস করার সময় তার ফোনটা পকেট থেকে পড়ে যায়,
–এই ছেলেটা ত চলে যাচ্ছে ওনার ফোনটা পরে গেছে, (আদ্রি)
–তুই দিয়ে আয় (সোমা)
–হ্যাঁ তাও ঠিক,
আদ্রি উঠে ফোনটা ছেলেটাকে দেবার জন্য তাক দিলো,
–এই যে মিস্টার.সুট
ছেলেটা এমন অদ্ভুত নাম শুনে ফিরে তাকালো,
–হ্যাঁ আপনাকে বলছি,
আপনার ফোনটা পরে গেছে এই নিন।
আদ্রি ফোনটা ছেলেটাকে দিয়ে চলে এল,
ছেলেটা ফেনটা নিয়ে তার অফিসে চলে গেল,
–দেখছিস কি মুডি একটা ধন্যবাদ ও দিল না সালা,
–হ্যাঁ কিন্তু দেখতে সেই রে।
–সোমা তুমি মার খাবে সোনা।
–না না সোনা বাড়ি চল।
–হ্যাঁ চল,
আদ্রি আর সোমা বাসায় চলে যায়,
এদিকে,
একটা ইম্পর্ট্যান্ট মিটিং শেষ করে অর্ন বের হলো।
নিজের কেবিনে এসে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে গ্লাস ফেটে গেছে।
তখনি মনে পরে যায় সেই কৃষ্ণ কালো মেয়েটার কথা।
আদ্রি বেশি ফর্সা নয় কিন্তু তার চোখ দুটো ভিশন মায়াবি৷
সে মায়ায় যে কেউ অনায়াসে পরে যাবে।
মেয়েটার কথা ভাবতে অর্নের ঠোঁটে হাসি ফুটে ওঠে,
–সৈকত,
–হ্যাঁ বস,
–আজ একটা মেয়ে আমাকে ফোন ধরে দিয়েছিল মনে আছে,
–হ্যাঁ স্যার।
–ঔি মেয়েটার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করো।
–ওকে বস,
অর্ন বাসায় চলে আসে,
তার পর ৫ দিন কেটে যায় আদ্রির কোন খোঁজ কেউ অর্ন কে দিতে পারে না।
অর্ন নিরাস হয়ে যায়,
৫ দিন পর একটা ক্যাফেতে,
কফিতে চুমুক দিয়ে অর্ন পেপারে মুখ গুঁজে,
তখনি একটা মেয়ে এসে বলে উঠল,
–একটু বসা যাবে ভাই এখানে,
অর্ন পেপার মুখে রাখা অবস্থায় উত্তর দিল,
–হুম।
মেয়েটা বসে পরলো,
মেয়েটা একটা কফি অর্ডার করল কিছু সময় পর অর্ন পেপার নামিয়প সামনে থাকা মেয়েটাকে দেখে অবাক,
এটা ত আদ্রি,
–এক্সকিউজ মি,
–আমাকে বলছেন(আদ্রি)
–হ্যাঁ,
–জি,
–আমাকে আছে আপনার সে দিন ফোন তুলে দিয়েছিলেন
–হ্যাঁ ফোন একটা মানুষ কে তুলে দিয়েছিলাম কিন্তু তার চেহারা ভালো মনে নেই,
–ওহ আমি সেই আমি আপনাকে খুজতে ছিলাম,
–কেন?
–কেন তা ত জানি না।
–আজব কি বলছেন এগুলা?
–কিছু না আপনার নাম,
–আদ্রিজা শেখ,
–ওহ অর্ন খান।
–দেখা হয়ে ভালে লাগল,
–আমারো।
অনেকটা সময় দু জন গল্প করেছিল সে দিন,
প্রথম অর্ন কোন মেয়ের সাথে এতোটা সময় কথা বলেছিল সে দিন।
সত্যি আদ্রির মধ্যে মায়া বিরাজমান,
চলবে,