বিরহে_মরণ (শেষ পর্ব)

0
977

#বিরহে_মরণ (শেষ পর্ব)

২০.

ফোনটা অনেক্ষন থেকে বাজছে। অপরিচিত নাম্বার। তার ফোন নাম্বার তো বাড়ির লোক আর ডাক্তার ছাড়া কেউ জানার কথা না। সে কাউকেই দেয়নি। অনেকবার ফোন আসল পরপর। নাম্বারটা কার? কেমন যেন পরিচিত মনে হচ্ছে। বেশ কয়েকবার আওড়াতেই মনে পড়ল। এটা তো শান্তর নাম্বার। কিন্তু তার নাম্বার কোথায় পেল? দেশে ফিরে এল কবে? সে ফোনটা বন্ধ করে দিল। কেন ফোন করছে তাকে বারবার? কি চায় তার কাছে?

অনেকবার ফোনে ট্রাই করবার পরও রেসপন্স নেই । ফোনে না পেয়ে মেসেজ করল। তারও কোনো উত্তর নেই। কাল সকালেই ওদের বাসায় যাবে সে । কিন্তু না জানিয়ে হঠাৎ করে যাওয়া কি ঠিক হবে? নিশিতার বাবা যদি কিছু মনে করেন। নাফীসের ফেলে ফোন করল। যদি কোনভাবে কথা বলিয়ে দিতে পারে।

নিশিতার ঘরের দরজা খোলাই থাকে। এক্সিডেন্টের পর থেকে দরজা লাগাতে প্রচন্ড ভয় পায় । আজও দরজা খোলাই আছে। নাফীস এসে নক করল। নিশিতা শুয়ে ছিল।
-আপু।
-ভেতরে আয়।
-তোমার ফোন।
-কে ফোন করেছে?
-কথা বলেই দেখ।
শোয়া থেকে উঠে বসে নিশিতা ফোনটা হাতে নেয়।

-তুমি কথা বল। আমি পরে এসে ফোন নিয়ে যাব।

-হ্যালো।
-ফোন বন্ধ করে রেখেছিস কেন?
-আপনি।
-হ্যা আমি।
-কেন ফোন করেছেন?
-কেন কথা বললে কি তোর গায়ে ফোস্কা পড়বে? তোর ফোন অন কর।
-কি বলবেন বলে ফেলেন।
-আমি যদি বলি সারা রাত তোর সাথে কথা বলব। তাহলেও কি তুই তোর ভাইয়ের ফোন নিয়ে বসে থাকবি।
-আমার সাথে এত কি কথা থাকতে পারে আপনার?
-ফোন অন করবি কিনা বল? তা না হলে আমি তোদের বাসায় চলে আসব।

ফোনটা কেটে দিয়ে নিশিতা উঠলো। এখন সে কোন কিছুর সাহায্য ছাড়াই হাটতে পারে। তবে একটু খুঁড়িয়ে হাটতে হয়ে। এটাও ঠিক হয়ে যাবে হয়তো। সময় দিতে হবে। নাফীসের ঘরে গিয়ে ফোনটা সে দিয়ে আসল।
-আপু একটা কথা বলি?
-বল।
-শান্ত ভাইয়া কিন্তু তোকে সত্যি ভালবাসে। শুধু শুধু তাকে কষ্ট দিস না।
-কি করতে বলিস আমাকে?
-ভাইয়া যা চায় তাতেই রাজি হয়ে যা।
-ইকবালও তো আমাকে ভালবাসতো। কি হলো ওর দেখলি তো। আবার আরেকজনকে এই জীবনের সাথে জড়িয়ে তো তার ক্ষতি করতে পারি না। দেখিস না সবাই অপয়া বলে। আর আমি তো তাই। আমার সাথে কেউ ভাল থাকতে পারে না।
-এসব কোনো কথা আপু। একসিডেন্টের উপরে কি কারো হাত থাকে।
-মনেহয় থাকে। আগের দিনের মানুষরা কত কিছু মানত জানিস না?
-অশিক্ষিতের মত কথা বল না তো। নিজেও জানো সেগুলো কুসংস্কার।

নিজের ঘরে ফিরে এসে ফোন অন করলো সে। একটার পর একটা মেসেজ আসতেই থাকলো। কি যে আজব একটা লোক। ফোনটাও এল সাথে সাথে।

-এতক্ষন লাগে ফোন অন করতে। আমি তো আবার নাফীসকে ফোন করতে যাচ্ছিলাম।
-কি লাভ এসব করে?
-তোকে নিজের করে পাবো এটাই লাভ। এবার আমি আর কোন রকম ভাবে তোকে আমার থেকে আলাদা হতে দিব না।
-পাগলামি করার বয়স আগেও ছিল না। এখনও নেই।
-তোকে ছাড়া আমি সত্যি বাঁচবো না। এমন করিস না আমার সাথে।
-ইকবালকে ছাড়া কিন্তু আমারও বাঁচাবার কথা ছিলনা। দেখেন ঠিক বেঁচে আছি।
-তুই মাথাটা ঠান্ডা করে একবার ভেবে দেখ। আমি এখন বেশি বিরক্ত করবো না। শুধু দয়া করে ফোনটা অফ করিস না।

নিশিতা ফোন রেখে দিল। ম্যাসেজগুলি পড়ল। সত্যি কি এভাবে কাউকে ভালবাসা যায়। শুয়ে শুয়ে পুরোনো দিনের কথা ভাবতে লাগল। সুন্দর সময়গুলো আর ফিরে আসবে না। সব কিছু আচমকা ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে।

নিশিতার সাথে কথা বলার পর থেকে আর আরও অস্থির লাগছে। একবার ছাদে গেল আবার ফিরে এল। বারান্দায় বসে থাকল কিছুক্ষন। তারপর ঘরে এসে ল্যাপটপ নিয়ে বসল। কদিন ধরে মেইল চেক করা হয়নি। মেইলের রিপ্লাই দিয়ে নিজের কাজ নিয়ে বসল। নাহ কিছুতেই মন বসতে না। একবার ফোন করবে নাকি? যেই ভাবা সেই কাজ। ঘুমিয়ে পড়েছিল নিশিতা। ফোনটা ভাইব্রেট করছে। ফোনটা ধরল সে।
-ঘুমিয়ে পড়েছিস?
-আপনি কি পাগল? এত রাতে কেউ ফোন করে?
-আচ্ছা ঘুমা তাহলে কালকে ফোন দিব।
বুকসেল্ফের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো। কতদিন বই পড়া হয় না। মা সব কত যত্ন করে রেখে দিয়েছেন। একটুও ধুলা নেই। মহাদেব সাহার একটা বই টেনে নিল সে। টেবিলল্যাম্প জ্বালিয়ে দিয়ে শুয়ে পড়ল। কি করে কবি যেন তার মনের কথাগুলোই লিখে ফেলেছেন।

“ভালোবাসা আমি তোমাকে নিয়েই
সবচেয়ে বেশি বিব্রত আজ
তোমাকে নিয়েই এমন আহত
এতো অপরাধী, এতো অসহায়!
তোমাকে নিয়েই পালিয়ে বেড়াই
তোমাকে নিয়েই ব্যাকুল ফেরারী।”

২১,

কাল রাতে যদিও ভাল ঘুম হয়নি তবুও খুব ভোরে ঘুম ভেঙ্গে গেল নিশিতার। সে বিছানা থেকে উঠে বারান্দায় চলে এল। এখনও রাস্তায় তেমন মানুষ নেই। অন্ধকার কাটতে শুরু করেছে। সকাল হওয়া দেখতে সব সময় ভাল লাগে। রেলিং ধরে সে বাইরে তাকালো। বাসার সামনের রাস্তায় কেউ বাইকে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে। এত সকালে কে? সে ঘরে চলে এল। ফোনটা হাতে নিতেই দেখলো শান্ত ম্যাসেজ।

“ঘুম ভেঙ্গেছে? আমি তোর বাসার নীচে দাড়িয়ে আছি।”
এই লোকের মাথা সত্যি খারাপ। সে হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে গায়ে বড় ওড়নাটা জড়ালো। যদিও ক্রাচ লাগে না তবুও সেটা নিল। বাসার সবাই ঘুমে। দরজা খুলে নীচে নেমে এল।
শান্তর সামনে সে যখন এসে দাঁড়ালো শান্ত ভূত দেখার মত চমকে উঠলো। সে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছে না।
-তুই? কষ্ট করে নামলি কেন। বারান্দায এসে ফোন করলেই পারতি।
-আপনাকে কিছু বলার আছে।
-বল। তোর কথা শুনবো বলেই তো এসেছি। তুই চাইলে অবশ্য সারা জীবন শুনতে পারি।
-আপনি দয়া করে আর আসবেন না আর যোগাযোগও করবেন না।
-কেন এমন করছিস। দেখিস আমরা খুব ভাল থাকবো। আমি আজকেই মা কে তোদের বাসায় পাঠাবো। আমার হাতে সময় নেই। আমাকে তো আবার ফিরতে হবে।

স্তম্ভিত হয়ে দাড়িয়ে থাকে নিশিতা। ঠিক যেন ইকবালের বলা কথাগুলো শুনতে পাচ্ছে। আবার কি একই ঘটনা ঘটতে চলেছে। না সে আর কিছু শুনবে না।
-আপনি চলে যান।

বাসায় ফিরে শান্ত নাফিসকে ফোন করে।
-কি ভাইয়া এখনও ম্যানেজ করতে পারেন নাই।
-তোর বোনের সমস্যা কি?
-সমস্যা হচ্ছে উনি নিজেকে অপয়া মনে করেন। উনি ভাবেন ওনার সাথে কেউ থাকলেই তার জীবনহানী হবে।
-পাগল হয়ে গেছে। কাউন্সেলিংএ যায়না নাকি?
-যায় তো। তবে সময় লাগবে। কত বড় ফাঁড়া গেছে বলেন তো।
-তাও ঠিক। তুই এক কাজ কর আন্টির সাথে কথা বল। কথা বলে আমাকে জানা আম্মাকে নিয়ে কবে যাব।
-আমি আম্মুর সাথে কথা বলতেই পারি। কিন্তু আপু রাজি না হলে কিন্তু কিছু হবে না। বাবা বলে দিয়েছে আপু যা করতে চায় তাই হবে। একবার উনি জোর করেছেন সেই ভুল তিনি আর করবেন না।
-তাহলে?
-তাহলে কি আপনি মিয়া আর সে বিবি.. বিবি রাজি না হলে কিছু করার নেই। বিবিকে রাজি করান।
-তোর বোন বড় কঠিন চিজ।

বলেই শান্ত হাসতে থাকে। নাফীসও হেসে ফেলে। নাস্তার টেবিলে নিশিতা আর নাফীস বসে। নিজাম সাহেব বাজারে গেছেন। নাসিমা পরোটা ভেজে নিয়ে এসে বসলেন।

-মা তোমার সাথে কথা আছে।
-কি কথা বাবা?
-শান্ত ভাইয়া তার মাকে নিয়ে আসতে চায়। বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে। উনি ছুটিতে এসেছেন দেশে। ছুটিও শেষের দিকে।
নিশিতা নাফীসের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। এই লোক তার ভাইকেও হাত করে ফেলেছে। কত অবলিলায় কথাগুলো বলছে।
-ও তা সে তো খুব ভাল কথা। শান্ত তো খুব ভাল ছেলে। নিশিতা তুই কি বলিস?
-কতবার করে বলতে হবে মা যে আমি আর এসবের মধ্যে নেই?
-সারাজীবন এভাবে থাকবি?
-হ্যা থাকবো।
-বেশি বাড়াবাড় করছিস না? তোর ভাগ্য ভাল যে এত কিছুর পরেও তোর পছন্দের মানুষ তোর সাথে থাকতে চাইছে। আর দুনিয়াটা যে সহজ না সেটা নিশ্চই আমার চেয়ে তুই ভাল জানিস। আজ শান্তকে ফিরিয়ে দিতে চাইছিস। কিন্তু ভবিষ্যতে যদি সত্যিই আবার তোকে বিয়ে করতে হয় তখন তো সে শান্তর মত নাও হতে পারে। নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজে নেবে ঠিক আছে। কিন্তু বাস্তবতা আর তোমার ভবিষ্যত তোমাকেই ভাবতে হবে। তোমাকে আগলে রাখার জন্য তো আমি সারাজীবন বেঁচে থাকবো না।
নিশিতা নিজের খাবার প্লেট রান্নাঘরে রেখে নিজের ঘরে চলে গেল।
-মা তুমি তো ফাটিয়ে দিয়েছ। আপু তো পুরাই বোল্ড আউট হয়ে গেছে।
-কি যে বলিস আবোল তাবোল। তাড়াতাড়ি খেয়ে নে। আমার অনেক কাজ বাকি। আরেকজন না খেয়েই চলে গেছে। ঔষধ খেতে হবে না।

২২.

আর দুদিন বাদেই শান্তর ফ্লাইট। ফিরে যেতে মন চাইছে না কিছুতেই। তবুও যেতে হবে। পিএইচডি শেষ করেই ফিরে আসবে সে। তার জন্যে বিদেশ নয়। মারও শরীরটা ভাল নেই বেশী। বাবার বিজনেসটারও একটা ব্যবস্হা করতে হবে।

নিশিতার সাথে সেদিনের পর দেখা হয়নি আর কথাও হয়নি। সে শুধু কিছুটা সময় দিতে চেয়েছে। যদি তার মত পরিবর্তন হয়। তবে নাফীসের সাথে কথা হয়।

নিশিতা আজকাল মায়ের বলা কথাগুলোই সারাক্ষন ভাবে। শান্তকে ফিরিয়ে দিলে আসলেই কি সে ভুল করবে? এটা সত্যি যে শান্ত তাকে প্রায় পাগলের মত ভালবাসে। এই ভালবাসা উপেক্ষা করাও তার জন্য কষ্টকর। দিনের পর দিন শান্তকে কষ্ট দিতে তো তারও ভাল লাগে না। কিন্তু তার জন্য যদি শান্তর কোনো ক্ষতি হয়? তাহলে তখন সে কি করবে? শান্তর ম্যাসেজটা তখনি এল।

“যাবার আগে একবার দেখা করতে চাই। দেখা করবি?”

নিশিতা মেসেজটা দেখে। নাফীস বলছিল অবশ্য শান্তর চলে যাবার কথা। চলেই যাবে আবার ঢং করতে এসেছে।

“কি হবে দেখা করে”

“কিছু হবে না। যদি মরে টরে যাই বলা তো যায়না”

“এইসব উল্টা পাল্টা বললে তো জীবনেও দেখা করবো না”

“তারমানে তুই দেখা করতে চাস?”

“না তো। তেমন কিছু কি বলেছি বলে মনে হচ্ছে না।”

“আচ্ছা দেখা করতে হবে না। ভাল থাকিস।”

“রবীন্দ্র সরোবর, বিকেল পাঁচটা।”

শান্ত নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। সে ভুল দেখছে না তো?

“আমি আসবো নিতে?”

“না।”

“শাড়ী পরে আসতে পারবি?”

কোন উত্তর নেই।

“আচ্ছা থাক দরকার নেই। তোর কষ্ট হবে।”

শান্ত বিকেল চারটায় এসে হাজির। বাসায় কিছুতেই থাকতে পারছিল না। বেশ গরম পড়েছে। মনে হচ্ছে সব পুড়ে যাচ্ছে। ঢাকা শহরের সব জায়গাতেই এখন এত লোকজন। সব সময় সব জায়গায় মানুষের ভীড়। এক প্যাকেট বাদাম নিয়ে মুক্ত মঞ্চের পেছনের দিকে বসল সে। এখানে একটু ছায়া আছে। গাধা মেয়েটা একা আসতে পারবে কিনা কে জানে? সব কিছুতেই বেশি বোঝে। বেশি বোঝা পাবলিকের নিয়ে আরো বেশি সমস্যা। ফোনটা এল সাড়ে চারটায়।

-আপনি এসেছেন?
-জ্বি এসেছি। তুই কই?
-আমি তো মুক্ত মঞ্চের কাছে দাঁড়িয়ে।
-আমি আসছি।

নিশিতাকে দেখে শান্ত অবাক হয়ে গেল। কালো চিকন পাড়ের অফহোয়াইট তাঁতের শাড়ি পরণে। ফুলস্লিভ কালো ব্লাউজ। চুল খোঁপা করে একটা রুপার কাটা দিয়ে আটকানো। কানে ছোট কালো পাথরের রুপার দুল। হাতে রুপার একটা বালা।
-চল ওদিকে গিয়ে বসি। আমি ওখানেই বসে ছিলাম। নাকি কোনো রেস্টুরেন্টে বসবি?
-রেস্টুরেন্টে বসলে তো সেখানকার নাম বলতাম।
-আচ্ছা আয়।
শান্ত হাত বাড়িয়ে দিল। নিশিতা দেখেও না দেখার ভান করে এগিয়ে গেল। দুজনে পাশাপাশি বসল।
-এমন পেত্নীর মত সেজেছিস কেন?
-কই সেজেছি?
-সেই জন্যই তো বলছি। কে বলেছে সাদা শাড়ী পরতে?
-আমি যে বিধবা সেটা ভুলে গেলেন নাকি?
-এমন চটকানা খাবি সারাজীবন মনে থাকবে।
-অত সহজ নাকি চটকানা দেয়া।
-দিলেই বুঝবি।
-কি জন্য ডেকেছেন?
-তোকে দেখতে ইচ্ছা করছিল খুব।
-দেখা তো হয়ে গেল। এখন যাই তাহলে।
-একদম নড়বি না। আমি যা বলবো তাই শুনবি।
শান্ত নিশিতার হাতটা টেনে নেয়। নিজের গালে হাতটা লাগিয়ে বসে থাকে চুপ করে। নিশিতা মুখ ঘুরিয়ে ফেলে। চোখ বেয়ে পানি পড়তে থাকে তার। সে কিছুতেই চায়না শান্ত সেটা দেখুক।
-কাঁদছিস কেন?
-কই নাতো।
-না বললেই হবে? তাকা আমার দিকে। পাগলী একটা। কেন কষ্ট দিলি এমন করে? ঢাকায় এসে থেকে তোকে পাগলের মত খুঁজে যাচ্ছি।
-আমি আপনাকে কিছুতেই হারিয়ে ফেলতে চাইনা।
-আপনি বলা বন্ধ করতো। মনে হয় আমি বুড়া মানুষ।
-তা তো বটেই।
-কি? আমি বুড়া। এখনও রাস্তায় দাঁড়ালে মেয়েরা ঘুরে তাকায় জানিস?
-স্বপ্নে মনে হয়।
-এমন পাজী কি আগে থেকেই ছিলি?
নিশিতা হাসতে শুরু করে। শান্ত চুপ করে তাকিয়ে থাকে। শান্তকে চুপ থাকতে দেখে সে থেমে যায়।
-নিশিতা
-কি?
-আমার জন্য কয়েকটা মাস অপেক্ষা করতে পারবি না?
-পারবো না কেন? খুব পারবো।
-তুই তো পাষানী একটা। কিন্তু তোকে ছেড়ে যে আমার একটুও ভাল লাগবে না।
-আমারও ভাল লাগবে না।
-সত্যি বলছিস।
-মিথ্যা বলবো কেন।
-তাহলে তো তোর বিরহে আমি মরে যেতেও রাজি।
নিশিতা শান্তর মুখে তার হাত রাখে।
-মরার কথা কখনও বলবেন না।
-আচ্ছা বলব না যা। এবার খুশি। চল উঠি, মশা অলরেডী আমার অর্ধেক রক্ত খেয়ে ফেলেছে।
শান্ত উঠে হাতটা বাড়িয়ে দিল। হাতটা ধরে উঠলো নিশিতা।
-অন্য কোথাও বসবি?
-নাহ, সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে।
-এখনও তুই আগের মতই আছিস।
-বদলে গেলে কি ভাল হত?
-নাতো। তোকে তো আমি এমনই ভালবেসেছি। এদিক দিয়ে আয়। গাড়ী একটু সামনে পার্ক করেছি। এখন আর আমার সাথে যেতে আপত্তি নেই তো?
-না।
-তাহলে হাতটা ছেড়ে দিয়েছিস কেন?

নিশিতা শান্তর হাত ধরল।

সমাপ্ত…

এমি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here