বৃষ্টি মাখা রোদ্দুর?,part:08

0
4591

বৃষ্টি মাখা রোদ্দুর?,part:08
Writer:TanjiL Mim?
.
.
?
“বিছানায় লেপ্টে শুয়ে আছে রিয়াদ’!!গভীর ঘুমে মগ্ন সে’!!এমন সময় ওয়াশরুম থেকে একটা সুন্দর লাল রঙের শাড়ি পড়ে বের হলো তানজু’!!অসম্ভব সুন্দর লাগছে তাকে’!!ভেজা চুলগুলো মুচছে তোয়ালে দিয়ে,,হাতে লাল কাঁচের চুরি শব্দে হালকা নড়ে চড়ে উঠল রিয়াদ’!!তানজু তার ভেজা চুলগুলো মুছতে মুছতে চলে গেল রিয়াদের সামনে’!!রিয়াদ এখনও ঘুমে মগ্ন’!!তানজু তার হাত থেকে তোয়ালেটা রাখলো সামনে থাকা টেবিলের উপর’!!হালকা জুকে পরলো তানজু রিয়াদের দিকে’!!আনমনেই মুচকি হাসলো সে’!!হাতে থাকা চুড়িগুলো রিয়াদের কানের কাছে এনে নাড়ালো’ তানজু’!!প্রথমবারে রিয়াদ হালকা নড়লো’!!কিন্তু উঠলো না’!!রিয়াদ না ওঠাতে তানজু তার ভেজা চুলগুলো রাখলো রিয়াদের মুখে’!!ভেজা চুলের গন্ধে আবারো নড়লো রিয়াদ’!!একরাশ বিরক্ত মাখা মুখ নিয়ে বলে উঠল সেঃ

————“বিরক্ত করছো কেন,,আমি ঘুমাবো…..

“বিনিময়ে তানজু কোনো উওর দিলো না’!!আবারো ভেজা চুলগুলো রিয়াদের সারা মুখে নাড়াতে লাগলো সে……

“হুট করেই রিয়াদ তার চোখ খুলে ফেললো’!!চেঁচিয়ে বলে উঠল সেঃ

————“সমস্যা কি???

“রিয়াদের কাজে তানজু হেঁসে বলে উঠলঃ

———–“আমাকে কেমন লাগছে “প্রিয়”

“চিরচেনা কন্ঠের আওয়াজ কানে বাজতেই নড়েচড়ে উঠলো রিয়াদ’!!চোখ খুলে সামনে তানজুকে দেখে অবাক হলো সে’!!প্রথমবার এমন লুকে দেখছে রিয়াদ তানজুকে’!!অসম্ভব সুন্দর লাগছে তাকে’!!এলোমেলো চুলে, লাল রঙের শাড়ি সাথে মুঠো ভর্তি কাঁচের চুরি, চোখে হালকা কাজল ব্যস এতটুকুতেই অসম্ভব সুন্দর লাগছে তানজুকে রিয়াদের কাছে’!!গভীরভাবে তাকিয়ে আছে রিয়াদ তানজুর দিকে’!!যেন তার পলকই পরছে না’!!

“রিয়াদের কান্ডে আনমনে হাসলো তানজু’!!তারপর মুচকি হেঁসে বলে উঠলো সেঃ

————-“কি হলো কথা কেন বলছো না ”প্রিয়”…

“আনমনেই রিয়াদ বলে উঠলঃ

———-“অপূর্ব!তোমায় শাড়িতে এতো সুন্দর লাগে জানতাম না তো “প্রিয়সী”!!

“হাসলো তানজু’!!তারপর বলে উঠলঃ

———–“বিশ্বাস হচ্ছে না এটা আমি!

“আনমনেই মাথা নাড়ালো রিয়াদ’!!আচমকা তানজু পাশে থাকা একগ্লাস পানি ঠেলে দিলো রিয়াদের মুখে………

||

“আচমকা ঘুমের ঘোরে মুখে পানি পরাতে লাফ মেরে উঠল রিয়াদ’!!ঘুমের রেস পুরোপুরি কাটে নি তার’!!মিটমিট চোখে তাকালো রিয়াদ সামনে…..

———–“ওই শালা আর কতক্ষণ ঘুমাবি!!কখন থেকে ডাকছি তোকে কানে কি কথা যাচ্ছে না…..

“পুরুষ কন্ঠে কারো কথা শুনে হকচকিয়ে তাকালো রিয়াদ’!!সামনে দিহানকে দেখে অবাক সে….!!আনমনেই বলে উঠল সেঃ

———–“তাহলে কি এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলাম আমি!

“রিয়াদের বিরবির করা দেখে দিহান আবারো বলে উঠলঃ

————“বিরবির করছিস কি বলতো!স্বপ্ন দেখছিলি নাকি এতক্ষণ…….

————“স্বপ্ন যে এত সুন্দর হতে পারে জানতাম না তো প্রিয়সী”!!(আনমনেই বলে উঠল রিয়াদ)

“রিয়াদের বিরবির করা কথা বুঝতে না পেরে দিহান বলে উঠলঃ

————“কি??

“দিহানের মুখে “কি” প্রতিধ্বনি শুনে নিজের কল্পনার জগৎ মাখা ঘুমন্ত স্বপ্ন দেখে বেরিয়ে আসলো রিয়াদ’!!হকচকিয়ে বলে উঠল সেঃ

———-“না না কিছু না!!

———-“কিছু যে একটা হয়েছে তা আমি ভালোই বুঝতেই পারছি….

“রিয়াদ টপিক চেঞ্জ করার জন্য বলে উঠলঃ

———-“ওই শালা তুই ঘুমের মধ্যে পানি দিলি কেন???

———-“আজ Friday…… ভুলে গেলি নাকি……

———-“তো…..

———–“তো মানে আজকে যে তানজুর……

“দিহানের কথায় চোখ বড় বড় করে তাকালো রিয়াদ’!!এতক্ষণ পর তার মনে পরলো’!!চটজলদি বিছানা থেকে উঠে বসলো রিয়াদ’!!তারপর বলে উঠল সেঃ

————“ওহ শিট আমি তো ভুলেই গেছিলাম!ওয়েট!আমি এখনি ফ্রেশ হয়ে আসছি….

“বলেই তাড়াতাড়ি উঠে যায় রিয়াদ!!আর দিহান মুচকি হেঁসে বসে রইলো রিয়াদের বিছানায়…….

____________________

“সূর্যের প্রবলতাপে ঘুম ভাঙল আমার’!!মিটমিট চোখে বিছানা থেকে উঠে বসলাম আমি’!!ঘড়ির কাঁটায় ১০টা বেজে কুঁড়ি মিনিট!!অবাক হলাম আমি,,

———”এতবেলা হলো অথচ কেউ আমায় ডাকলো না’!!

“আনমনেই নিজেকে নিজে প্রশ্ন করে বিছানা ছেড়ে উঠে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলাম’!!কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে নিচে নামলাম’!!অবাক কান্ড আজকে তো শুক্রবার অথচ কাউকে দেখছি না কেন??হাঁটতে হাঁটতে চলে গেলাম রান্নাঘরে’!!আম্মু রান্না ঘরে কাজ করছে’!!পিছন থেকে আম্মুকে জড়িয়ে ধরে বললামঃ

———-“গুডমর্নিং মা……

“বিনিময়ে আম্মু কিছু বললো না’!!চুপচাপ তার কাজ করতে লাগলো'”!!! অবাক হলাম আমি….

————-“কি হলো মা কথা বলছো না কেন??

————-“তোর খাবার ওই টেবিলে রাখা আছে খেয়ে নে,,প্রচুর কাজ আছে আমার আজ, বেশি জ্বালাস না…..

———-“আশ্চর্য জ্বালালাম কখন?

“তারপর আমিও আর বেশি কিছু না বলে আম্মুকে ছাড়িয়ে চলে আসলাম টেবিলের সামনে….

“চুপচাপ খেয়ে আবার চলে গেলাম রুমে…..

———-“আশ্চর্য তো!আজকে আম্মু কোনো কাজের কথা বলছে না কেনো……

“খুব একটা না ভেবে চলে আসলাম রুমে’!!ফোনটা হাতে নিবো এমন সময় দিহান ভাইয়া’ এসে ফোনটা নিয়ে গেল’!!আমি দিহান ভাইয়ার কাজে অবাক হয়ে বলে উঠলামঃ

———–“কি হলো ভাইয়া ফোনটা নিয়ে নিলে কেন??একটু ফেসবুকিং করতাম…..

“দিহান ভাইয়া’ সোজা কথা….

———–“আজকে কোনো ফেসবুকিং করা যাবে না!চুপচাপ রুমে বসে থাক!বলেই ফোনটা হাতে নিয়ে হন হন করে চলে গেল ভাইয়া….

“আমি শুধু হাবলার মতো দাঁড়িয়ে রইলাম!আশ্চর্য তো সবাই এমন বিহেব করছে কেন??

||

“একরাশ রাগ নিয়ে হন হন করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলাম আমি’!!উদ্দেশ্য খালামনিদের বাসায় যাবো’!!এ বাড়ির কেউ আমায় ভালোবাসে না’!!সবাই যে যার মতো বিহেব করছে আমায় পাওা দিচ্ছে না’!!আমি করছি কি??এসব ভাবতে ভাবতে হেঁটে রাগে গজগজ করতে করতে চলে গেলাম রিয়াদ ভাইয়াদের বাসার সামনে…….

“এমন সময় গাড়ি করে খালামনিদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল খালামনি আর খালু’!!আশ্চর্য এরা যাচ্ছে কোথায়??কয়েকবার ডাকতেও কোনো সাড়াশব্দ করলো না খালামনি আর খালু,, আমার কথা কি তাহলে তারা শুনতে পায় নি নাকি??

———“ধুর!ভালো লাগে না…….

“আবার মন খারাপ নিয়ে চলে গেলাম বাড়িতে……

||

“দিহান,আব্বু আর আম্মু তিনজন কিছু একটা করছিল,আমায় দেখে থেমে গেল!আশ্চর্য আমি দেখলে কি হবে….!বিরক্ত মাখা মুখ নিয়ে চেঁচিয়ে বলে উঠলামঃ

———–“তোমরা এমন করছো কেন আমি কি করছি……

“আমার কথা শুনে দিহান ভাইয়া’ বলে উঠলঃ

————–“কি করবি তুই কিছু করোস নি তো….

————–“তাহলে তোমরা এমন করছো কেন,,আমার কাজ থেকে লুকাচ্ছো কিছু…..

————-“ধুর পাগলী কি লুকাবো…..

————-“সত্যি কিছু লুকাচ্ছো না……

————-“আরে না,তুই তোর রুমে যা…..

————“সারাদিন শুধু রুমে বসে থাকবো ফোনটাও নিয়ে গেলে তুমি…..

————“আচ্ছা শোন আমার ল্যাপটপ টা নিতে পারিস তুই তবে একটা শর্ত আছে…..

———–“কি শর্ত……

———–“ফেসবুকিং করা যাবে না…….

————-“কিন্তু কেন ফেসবুকে কি আছে……

“এমন সময় কোথা থেকে রিয়াদ ভাইয়া এসে বললোঃ

————“অনেক কিছু আছে,,আর তুই এখানে কি করছিস পড়াশুনা নেই নাকি…….

————“এখন পড়াশুনা……

———–“হুম রুমে যা আমি আসছি এক্ষুনি আজকে তোর পড়া ধরবো…..

———-“এই রে খাইছে এখন পড়াশুনা?(মনে মনে)

————“কি হলো কথা কি কানে যাচ্ছে না……

“ধুর ছাই এর চেয়ে তো ভাইয়ার ল্যাপটপটা পেলেই ভালো হতো!

———–“বলছিলাম কি ভাইয়া পড়াশুনা পড়ে করি,,তার চেয়ে ভাইয়ার ল্যাপটপটা নিয়ে সুন্দর একটা মুভি দেখা যাক!আমি কথা দিচ্ছি ফেসবুকে ঢুকবো না……

“কিন্তু কে শুনে কার কথা, রিয়াদ স্টেট জবাব…

———–“না!কোনো মুভি হবে না পড়াশুনা হবে এখন…….

“একরাশ বিরক্ত মাখা মুখ নিয়ে চলে গেলাম আমি’!!ধুর ছাই ভালো লাগছে না…….

||

“এদিকে তানজু উপরে যেতেই সবাই হাফ ছেড়ে বাচলো’!!আর একটু হলেই ধরা পড়ে যেত সবাই…..!!তারপর তাঁরা আবারো তাদের কাজে ব্যস্ত হয়ে পরলো…….

_________________________________________

____________________

“সন্ধ্যা_৭ঃ০০টা…….

“রুমের মধ্যে বসে আছি আমি’!!আর আমার সামনে চেয়ারে বসে আছে রিয়াদ ভাইয়া’!!তার কথা হলো যতক্ষণ পর্যন্ত পড়া শেষ না হবে ততক্ষণ এই রুম থেকে বের হওয়া যাবে না….দুবার পানি খাওয়ার কথা বলেও বাহিরে যেতে পারি নি আমি…..

“ধুর ছাই…..

“মুখে কলম নিয়ে কামড়াচ্ছি আমি’!!এমন সময় রিয়াদ ভাইয়া দমক দিয়ে বলে উঠলঃ

————“এটা কি হচ্ছে…….

“আচমকা এমন হওয়াতে হালকা কেঁপে উঠলাম’!!তারপর আমতাআমতা করে বলে উঠলামঃ

————–“ইয়ে না মানে কিছু না…..

————–“তাহলে কলম কামড়াচ্ছিস কেন??

————–“একটা কথা বলবো ভাইয়া…..

————“রুম থেকে বের কেন হতে দিচ্ছি না এটা ছাড়া অন্য কিছু বলার থাকলে বল…..

————-“ভাবছিলাম তো এটাই বলবো!ধুর…..

“আমার ভাবনার মাঝেই রিয়াদ ভাইয়া বলে উঠলঃ

————-“কি হলো বল…..

————“না কিছু না…..

“বলে আবারো বইয়ের পাতায় মুখ গুজালাম!

_____________________

“আচমকা কারেন্ট চলে গেল’!!হুট করে এমন হওয়াতে আমি বলে উঠলামঃ

————“যা কারেন্ট চলে গেলো তো ভাইয়া…..
ধুর মোবাইলটাও তো নেই যে লাইট জ্বালাবো!

“এমন সময় হাতে একটা মোমবাতি নিয়ে সামনে আসলো রিয়াদ ভাইয়া’!!তারপর আমার হাতে একটা ব্যাগ দিয়ে বললোঃ

————-“এটা তোর জন্য,এখন দেখার দরকার নেই পরে দেখিস আগে চল…..

“আমি গিফটের প্যাকেটটা হাতে নিয়ে অবাক হয়ে বললামঃ

————–“এটা আমার জন্য কিন্তু কেন দিচ্ছো…..

“বিনিময়ে রিয়াদ ভাইয়া কিছু বললো না আমার হাত ধরে নিয়ে গেল নিচে’!!পুরো রুম অন্ধকার হয়ে আছে’!!সব অন্ধকার দেখে আমি বলে উঠলামঃ

————আম্মু,আব্বু, ভাইয়া তোমরা কোথায়,আর পুরো রুম এইভাবে অন্ধকার করে রাখছো কেন?……

“কিন্তু ওপাশ থেকে কোনো সাড়াশব্দ আসলো না’!

“এমন সময় ভাইয়া মোমবাতিও ফু দিয়ে নিভিয়ে দিলো’!!আমি অবাক হয়ে বললামঃ

————-“এটা কি করলে ভাইয়া…..

“বিনিময়ে ভাইয়া শুধু তার মুখ থেকে একটা আওয়াজ বের করলো….

————-“হুসসস…..

“হর্ঠাৎই ভাইয়া তার হাতে করো তালি দিয়ে দিল’!!সাথে সাথে পুরো রুম আলোকিত হয়ে গেল’!!তারপর যা দেখলাম তার জন্য মটেও প্রস্তুত ছিলাম না আমি………

চলবে…………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here