বেমানান,পর্ব – ২ “তোমায় দেখেছি মাধবী রাতে!”

0
1121

বেমানান,পর্ব – ২ “তোমায় দেখেছি মাধবী রাতে!”
মৌপর্ণা

…বছর দুয়েক আগে!

জনবহুল হাওড়া স্টেশন!

ফেব্রুয়ারির শুরুর দিক…সরস্বতী পুজো কাটিয়ে ঈশানি সেদিন ফিরছিলো মিদনাপুর……
মাস ছয়েক হয়েছিল ঈশানির ব্যাংক জয়েন করা তখন …

ছুটির মায়া কাটিয়ে কাছের মানুষ জন কে ছেড়ে কাজে ফিরে যাওয়া যে কি কষ্টের, সেটা গত ছয় মাসে ঈশানি ভালোই বুঝতে পেরেছিলো…..

দত্ত কর্তা, গিন্নি ও কৌশানি কে খানিক জোর করেই ঈশানি আসতে দেয়নি এবার স্টেশনে…..ইদানিং প্ল্যাটফর্ম থেকে বিদায় জানানো আরো ভীষণ কষ্টকর হয়ে উঠছিলো ঈশানির জন্যে……
সব চেয়ে বেশি কষ্টকর ছিল কৌশানি কে ছেড়ে থাকাটা……এদিকে নতুন জায়গা তে সেরকম বন্ধু বান্ধবও নেই ঈশানির…..
কিন্তু কষ্টের কথা ভেবে কষ্ট বাড়িয়ে কি লাভ? মনটা কে তাই বেশ শক্ত করে এবারে ঈশানি বাড়িতে বলেছিলো যে সে একাই চলে যাবে এবারে….

ইদানিং যেন ছোট খাটো কথাবার্তা তে খুব কষ্ট হয় ঈশানির…..
যেমন রোজরোজ আত্মীয় স্বজন, পাড়াপড়শির, যেচে পরে ঈশানির জন্যে কোনো সুপাত্রের খোঁজ এলো কিনা জানতে চাওয়া….
বা ঈশানি কে গোলাপি, সবুজ, নীল পোশাকে মানায়না, গাঢ় লিপস্টিকে মানায়না…এই ধরণের সব মন্তব্য গুলো আজকাল বড়োই কষ্ট দেয় ঈশানি কে, অথচ চেহারা বা গায়ের রং নিয়ে এই ধরণের মন্তব্য তো সে ছোটবেলা থেকে শুনতে অভ্যস্ত…..তাহলে আজকাল কেন হঠাৎ এই কথা গুলো তে এতো কষ্ট হয় কে জানে….

মিস্টার দত্ত একটা কথা বলতেন ঈশানি কে – “তোমার সৌন্দর্যতা নয় তোমার যোগ্যতা হোক তোমার পরিচয়…..দেখবে একদিন যখন তুমি অনেক বড় হবে, ভালো চাকরি করবে, কেউ সেদিন আর কিচ্ছু বলতে পারবে না তোমায়!”

আজ ঈশানি মিস্টার দত্তর বলা কথাটা কে একটু পাল্টে নিজের মনে মনে আওড়ে বললো – “যখন তুমি নিজের পায়ে দাঁড়াবে, ঠিকঠাক চাকরি করবে, ওরা তখনও তোমার দুর্বলতা নিয়েই কথা বলবে, তবে তাতে তোমার মনে আঘাত লাগলেও তোমার কিচ্ছু এসে যাবেনা! বা তাদের কথাগুলো সারাক্ষণ ভেবে সময় নষ্ট করার মতন সময় তোমার কাছে থাকবেনা!”

প্ল্যাটফর্ম নম্বর ঊনিশের সামনে দাঁড়িয়ে তখন ঈশানি………
কাঁধে ব্যাগ, হাতে একটা সাধারণ মধ্যবিত্ত লাগেজ, হাওড়া মিদনাপুর ফাস্ট লোকাল কোন প্ল্যাটফর্ম থেকে ছারবে তখনও সেটা ডিসপ্লে হয়নি এলইডি বোর্ডে….
ঈশানি দেখছিলো ব্যস্ত এই স্টেশনে মানুষের দৌড়াদৌড়ি, ঠেলা-ঠেলি, টিকেট কাউন্টারের উপচে পড়া ভিড়…..
সবাই ভীষণ ব্যস্ত ইঁদুর দৌড়ের এই শহরে! দুদণ্ড কারুর সময় নেই জনবহুল এই প্ল্যাটফর্মে…..

হঠাৎ ঈশানির চোখদুটো গিয়ে আটকে যায় দশ হাত দূরে দাঁড়িয়ে থাকা তরুনের দিকে, ঈশানির চোখ দুটো কেমন যেন স্থির হয়ে যায়…
একটা চেহারা তে নির্মম ছেলেমানুষির হাঁসি, নিষ্পাপ দুটো চোখ, তরুণ তখন ব্যস্ত ফোনে!
পরণে সাদা শার্ট, ডেনিম জিন্স, কানে ইয়ারফোন, হাতে বড় কালো ডায়ালের ঘড়ি, ট্রিম্মেদ দাড়ি……একটা অদ্ভুত ধীরতা, সরলতা…….যেন এক দেখাতেই তাকে বিশ্বাস করা যায় অনায়েসে!

“দিদি! হাওড়া – মিদনাপুর ফাস্ট লোকাল এই প্ল্যাটফর্মেই আসবে তো?”

ঈশানির মগ্নতা কাটলো এক ভদ্রলোকের ডাকে!

হ্যাঁ? একটু অপ্রস্তুত বোধ করলো ঈশানি, তারপর বললো – এখনো তো ডিসপ্লে দেয়নি দাদা! তবে খুব সম্ভবত ১৮,১৯, বা ২০ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকেই ছাড়বে….

জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে ভদ্রলোকটি ঈশানি কে ধন্যবাদ জানিয়ে পাখার নীচে গিয়ে দাঁড়ালো…

ঈশানি একবার আড়চোখে দেখলো সেই দশ হাতের দূরত্বে দাঁড়িয়ে থাকা তরুণ কে! “না না! ওভাবে আর দেখাটা ঠিক হবেনা!” মনে মনেই বললো ঈশানি….

ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই ঠেলা – ঠেলি করে ভিড় এগিয়ে চললো নিকটতম ট্রেনের দরজার দিকে…..

ঈশানি এখনও বোঝেনা এতো ধাক্কা – ধাক্কি, শোরগোল, হুল্লোড় করে কি পায় এরা?
তাই গেট এর সামনেই দাঁড়িয়ে রইলো সে, একটু ভিড় কমলে শান্তিতে উঠবে ট্রেনে…..

ট্রেনের দরজা তে ভিড়টা একটু হালকা হতেই, যেমনি পা বাড়িয়েছে ঈশানি, সেমনি একটা হালকা ধাক্কা পাশের মানুষটির সাথে!

“সরি!”

“নো ম্যাডাম! মাই ফল্ট! প্লিজ!”

ঘাড় ঘোরাতেই ঈশানি দেখলো সেই তরুণ কে! কিছু বলার আগেই তরুনের অভিব্যক্তি দেখে ঈশানি বুঝতে পারলো তরুণ ডান হাত মেলে জায়গা ছেড়ে দিয়েছে ঈশানি কে আগে ট্রেনের ওঠার জন্যে!

একটা ছোট Thanks বলে ঈশানি উঠে পড়লো ট্রেনের কামরায়…আর ফিরে তাকালোনা পেছন ঘুরে, লাগেজ নিয়ে সোজা হেঁটে গিয়ে বসলো নিকটতম ফাঁকা জানালার সিটের দিকে! “না না একদম আর ঘুরে তাকাবোনা একবারও” মনে মনেই বললো ঈশানি!

*************************************************

খানিকক্ষণ হলো ট্রেন হাওড়া আউটার ছেড়ে রওনা হয়েছে গন্তব্যের দিকে, পশ্চিম আকাশে তখনও সূর্যের হালকা আভা দেখা যাচ্ছে, অন্ধকার একটু একটু করে মুড়িয়ে নিচ্ছে পৃথিবীর মাটিটা কে…..
ঈশানি এক ভাবে তাকিয়ে রয়েছে ট্রেনের জানালার বাইরে, কানে ইয়ারফোন ..
এই গানটাই তো কৌশানির পর ঈশানির একমাত্র সঙ্গী!…
সন্ধ্যে নামতেই এক ফালি চাঁদ দেখতে পেলো সে গাছের ফাঁক দিয়ে…ট্রেন দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে সারিসারি গাছ পালা, দীর্ঘ সর্ষে খেত, নদী, দীঘি কে পেছনে ফেলে….

এদিকে একটু – আধটু খিদে ও পেয়েছে, সেই কখন লাঞ্চ করে বেরিয়েছে বাড়ি থেকে ঈশানি ……
কিছু খাবার কেনার উদ্দেশেই কান থেকে হেডফোন টা খুলে, ডান দিক ঘুরতেই ঈশানি দেখলো আবারোও সেই তরুণ কে, সেই অনাবিল দুটো চোখ! “কি অদ্ভুত রে বাবা! মানুষটা বারবার ভিড়ে মিশে গিয়েও মিশছে না! ইন ফ্যাক্ট সেই মানুষটা জাস্ট একটা সিটের দূরত্বেই বসে! ” মনে মনেই বললো ঈশানি……

“স্টোন, পেপার, সিসার……”

এতক্ষণে ঈশানি লক্ষ্য করলো একটা ছোট্ট বাচ্চা দাঁড়িয়ে ওই তরুনের সিটের সামনে! ওই তরুণ আর ওই বাচ্চাটা তখন স্টোন, পেপার, সিসার খেলায় ব্যস্ত (এটি এমন একটি খেলা যেটা হাতের আঙুলের মাধ্যমে খেলা হয়,……..
স্টোন, পেপার, সিসার বলার শেষেই এখানে আপনাকে হাতের সাহায্যে বোঝাতে হবে আপনি তিনটে মুখে বলা শব্দের মধ্যে কোনটি কে বাছাই করেছেন…….
এরপর আপনি এবং আপনার সহ-খেলোয়াড়ের ওপর নির্ভর করে আপনার জেতা হারাটা নির্ধারিত হয় এই খেলায়)
ঈশানি বেশ মন দিয়ে দেখে চলছে ওদের দুজনের খেলা, এক দু রাউন্ড শেষ হতে না হতেই ঈশানি বুঝলো তরুণ বারবার হেরে যাচ্ছে সে খেলায় এবং এই হেরে যাওয়াটা ইচ্ছাকৃত! অথচ হেরে যাওয়ার শেষে একটা ছেলেমানুষি মুখভঙ্গি!

এদিকে বছর আটের বাচ্চা টা ভীষণ খুশি বারবার সেই তরুণ কে হারিয়ে! আঙ্কেল বারবার হেরে যাচ্ছে যে!

ঈশানির মুখে আলতো হাসির রেখা ফুটে উঠলো, ওদের ছেলেমানুষি দেখে….

“আন্টি তুমি খেলবে?”

“হ্যাঁ! হমম? না না বাবু তুমি খেলো, আমি এই খেলাটা জানিনা তো!”

“খেলনা আন্টি….আঙ্কেল তোমাকে রুলস বলে দেবে ওকে? আমাকে তো এখুনি আঙ্কেলই খেলাটা শেখালো…..ও আন্টি খেলনা!”

এ তো আচ্ছা মুশকিলে পড়া গেলো! এদিকে বাচ্চাটার মা ফোনে ব্যস্ত! কিচ্ছুটি বোলছেও না!

অগত্যা আর কি? শুরু হলো খেলা….
এখন তিনজন খেলছিল খেলাটা – ওই তরুণ, ঈশানি ও ওই বাচ্চাটা!

মিনিট দশেক পর ওই বাচ্চাটি নেমে গেলো তার গন্তব্যের স্টেশনে, শুধু মিলিয়ে দিয়ে গেলো অচেনা দুটো মানুষকে!

*************************************************

খড়্গপুর জংশনে ট্রেন ঢুকতে না ঢুকতেই গাড়ি প্রায় ফাঁকা হয়ে গেল, পাশের সিট্ ফাঁকা হয়ে যাবার কারণে ওই তরুণ এখন ঈশানির পাশেই বসে! এর আগে চোখ চোখ পড়লেই ঈশানি দেখেছে একটা হালকার হাসির রেখা তরুনের ঠোঁটের কোণায়, তবে কথোপকথন তখনও শুরু হয়নি তাদের……

ঈশানির ফোনটা বেজে চলেছে ব্যাগের ভেতর থেকে, ঈশানি এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে ট্রেনের জানালা দিয়ে বাইরের প্ল্যাটফর্ম টার দিকে……
প্ল্যাটফর্মে তখন অন্য কোনো ট্রেনের এনাউন্সমেন্ট চলছিল – গাড়ি সংখ্যাঃ তিন, এক, এক, শুন্য ………

“ম্যাডাম! আপনার কি ফোনটা ভাইব্রেট করছে!”

ঈশানি তরুনের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে ঝটপট ফোনটা বেড় করে নেয় ব্যাগ থেকে –

“হ্যালো মা! এই তো খড়্গপুর! হ্যাঁ এই তো আর আধ ঘন্টা মা, হমমম মা খেয়েছি……….ঝালমুড়ি……এই তো পৌঁছেই ডিনার করে নেবো…..না না কোনো সমস্যা হয়নি ট্রেনে….কৌশানি ফিরলো? …………………….
………………………………………………………..
………………………………………………………..
হ্যাঁ ঠিক আছে পৌঁছে ফোন করছি হ্যাঁ! হমম চলো টাটা!”

ঈশানি ফোনটা ছেড়েই তরুনের দিকে তাকিয়ে একটা ছোট Thanks জানিয়ে বললো –
“আসলে, বাইরের Announcement এর আওয়াজের কারণে শুনতে পাইনি…”

তরুণ এই সম্পর্কে কোনও জবাব না দিয়েই জিজ্ঞেস করলো ঈশানি কে –
“আপনি মিদনাপুরে নামবেন?”

“হ্যাঁ…….”

“মিদনাপুরের বাসিন্দা তো নয় মনে হয়..তবে কি চাকরি সূত্রে না ….”

“হ্যাঁ একদমই তাই……আপনি কি ভাবে বুঝলেন?

“সরি, আপনার মায়ের সাথে কনভার্সেশন টা ওভারহিয়ার করেছি! তো ভাবলাম আপনার বাবা মা সব কোলকাতা তে, তাহলে নিশ্চয় চাকরি সূত্রেই আপনি হয়তো মিদনাপুরে ….”

“হমম…চাকরি সূত্রেই এখানে!”

“আপনি আনন্দপুর জায়গাটা চেনেন? গুগল অনুযায়ী তো ….

“আনন্দপুর? আমি তো আনন্দপুরেই থাকি….মানে ওখানে এনবিই ব্যাংকে আমি ক্লার্ক….”

“হোয়াট? সিরিয়াসলি! আমার তো কাল ওই ব্যাংকেই জয়েনিং…….” তরুনের ঠোঁটের কোণায় আবার হাঁসি রেখা ফুটে উঠলো!

ঈশানি অবাক হয়ে আটকে আটকে জিজ্ঞেস করলো – “স্নিগ্ধজিৎ ব্যানার্জী? পিও?”

“রাইট!”

“ওঃ! সরি স্যার, একচুয়ালী আমি একদম…”

“সরি কেন? সরি বলার মতন আপনি কিন্তু কিচ্ছুটি করেননি!”

“স্যার, প্লিজ আপনি আমাকে আপনি বলবেননা! আমি জাস্ট মাস পাঁচেক আগে ব্যাংক জয়েন করেছি….”

“প্রথম পোস্টিং এখানেই?”

“হমম..আমি লাস্ট বাট টু ইয়ার মানে ২০১৫ পাসআউট ”

“মাস্টার্স?”

“না স্যার! গ্রাজুয়েশন…ফিজিক্স অনার্স….”

“হোয়াট?” বলেই স্নিগ্ধজিৎ হাঁসতে শুরু করলো….

ঈশানি একটু থেমে থেমে জিজ্ঞেস করলো – “কি হলো স্যার?”

“আমিও ফিজিক্স অনার্স -যদিও আমি মাস্টার্স করেছি…আমি চোদ্দোতে মাস্টার্স পাসআউট …
এবার বলিসনা যাদবপুর ইউনিভার্সিটি…” বেশ এক্সসাইটেড গলায় বললো স্নিগ্ধজিৎ…..

“না স্যার! আমার বেথুন ……”

“ওকে…তাও ভালো….আমি ভাবলাম বুঝি তুই এক্ষুণি বলবি যাদবপুর পাসআউট!”
একটু থেমে এবারে স্নিগ্ধ বললো – “সরি! আমি তোকে তুই করে…..আসলে এসব স্যার শুনলে মনে হয় স্টুডেন্ট …..তারপর বাই ডিফল্ট মুখ থেকে…..রিয়েলি ভেরি সরি!”

“ইটস ওকে স্যার…নো প্রব্লেম! এমনিও তুই টাতেই বেশি কমফোর্টেবলে আমি!”

“Sure?”

“Absolutely!” হাঁসি-হাঁসি মুখে উত্তর দিলো ঈশানি…..

“বাই – দি – ওয়ে – তোর নামটা কিন্তু বলিসনি এখনো?”

“ওহঃ….ঈশানি দত্ত স্যার!”

“নাইস নেম!”

*************************************************

ঈশানি রাতের রুটি তরকারি নিয়ে নিয়ে যখন কোয়াটারে ঢুকলো তখন প্রায় রাত দশটা….

রাতে ঘরে ঢুকে খাওয়া দাওয়া করে, বাড়ির সবার সাথে কথা শেষ করে, বিছানা গুছিয়ে, বিছানার পাশের জানালা টা ঠেলে খুলতেই, এক রাশ চাঁদের আলো এসে পড়লো বিছানায়…..

“কি অদ্ভুত না মানুষটা! নিজের ভাড়া বাড়ি পেরিয়ে এসে আমাকে ছেড়ে দিয়ে আবার উল্টো রাস্তায় পারি দিলো! এরকম মানুষ ও হয়? আমি তো কতবার বললাম যে একা চলে যাবো, তবুও জোর করেই সবটা বুঝেও উল্টো পথে ঘুরলো……আবার জোর করে রুটি তরকারির পুরো টাকাটাও দিলো স্টেশনে ….কিছুতেই নিলোনা…..সেই এক কথা পরের দিন তুই দিস……! পরের দিন কি আদেও আসবে ফিরে? কি হাঁসিখুশি মানুষটা! এইটুকু সময়ে কত কথাই না বললো যেন কতদিন চেনে ঈশানিকে! এরম নিঃস্বার্থ ভাবে শেষ কবে যে কেউ আড্ডা দিয়েছিলো ঈশানির সাথে, ঈশানির মনেও পড়েনা এখন আর!”
কথাগুলো মনে মনে ভাবতে ভাবতেই আলোটা নিভিয়ে ঈশানি শুয়ে পড়লো বিছানায়…..

বিছানা থেকে এক ফালি চাঁদটা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল……..
আজ আকাশ টা ভীষণ পরিষ্কার…..চাঁদের আলোয় ঝলমল করেছিল রাতের তারাগুলো….!
চোখ দুটো বুজতেই এক রাশ ঠান্ডা হাওয়া ছুঁয়ে গেলো ঈশানিকে…….
বন্ধ চোখের সামনে ঈশানি দেখলো….ওই বাচ্চাটার সাথে খেলতে খেলতে স্নিগ্ধর ইচ্ছে করে হেরে যাওয়ার পর সেই নাটুকে মুখটা! সরল হাঁসিটা……!!
ঘুম জড়িয়ে এলো দুচোখ জুড়ে…আজ আর ঘুম পড়ানোর রেকর্ডেড গান প্রয়োজন হলোনা ঈশানির!

(চলবে…………)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here