বেসামাল_প্রেম,১২,১৩

0
2078

#বেসামাল_প্রেম,১২,১৩
#লেখা_জান্নাতুল_নাঈমা
#পর্ব_১২
সন্ধ্যার পর বাসায় ফিরল মাহের। দরজা খুলে তার ক্লান্ত মুখের দিকে তাকিয়ে মৃদু স্বরে সূচনা বলল,
-” আজ এত দেরি যে? ফোনও ধরছিলেন না। ”

মাহের গম্ভীর হয়ে গেল। ধীরগতিতে পা বাড়িয়ে চলে গেল রুমে। সূচনা কপালে দু ভাঁজ ফেলে দরজা লাগিয়ে দিল। এরপর মাহেরের জন্য এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানি নিয়ে গেল রুমে। মাহের রুমে পায়চারি করছিল। তাকে ভীষণ বিধ্বস্ত দেখল সূচনা৷ মাথার চুলগুলো উষ্কখুষ্ক হয়ে কপাল জুড়ে ছড়িয়ে আছে। বুক-পিঠের কয়েকটা বোতাম খোলা। সূচনাকে দেখে তার হাঁটা থেমে নিঃশ্বাসে অস্থিরতা বেড়ে গেল৷ কিছু বলার জন্য উদ্যত হয়েও বলল না৷ দমে গেল। সূচনা পানির গ্লাস সামনে ধরে বলল,
-” এটা খেয়ে নিন ভালো লাগবে। যা গরম পড়েছে, আজকের গরমে সবার অবস্থাই কাহিল। আপনাকেও ভীষণ বিধ্বস্ত লাগছে। ”

মাহেরের গম্ভীরতা দৃঢ় হলো। স্বভাবসুলভ সেই হাসিটা আজ তার মুখে নেই৷ যে হাসিতে চোখ জুড়িয়ে যায় সূচনার। তাই মনে মনে কিছুটা বিচলিত হলো সে৷ জিজ্ঞেস করল,
-” আপনার কি মাথা ব্যথা করছে? ”

ছোট্ট করে উত্তর দিল মাহের,
-” হুম। ”

-” আদা চা করে দিব? আপনি পানিটা খেয়ে ফ্রেশ হন আমি চা করে আনছি।”

সূচনা দরজার বাইরে দু’কদম এগিয়েছে অমনি রুম থেকে বিকট এক শব্দ পেয়ে চমকে ওঠল সে। কিঞ্চিৎ ত্বরান্বিত হয়ে পুনরায় রুমে ঢুকতেই দেখল ঘনঘন শ্বাস নিচ্ছে মাহের৷ তার দৃষ্টি কয়েক হাত দূরের মেঝেতে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাওয়া গ্লাসের টুকরো গুলোতে স্থির! এ দৃশ্য দেখে বারকয়েক ঢোক গিলল সূচনা। শান্তশিষ্ট, মিষ্টভাষী মানুষটার এ কী রূপ! নিজেকে ধাতস্থ করতে এক মিনিট লেগে গেল তার।
কাঁপা স্বরে জিজ্ঞেস করল,
-” কী হয়েছে আপনার! ”

-” কিছু না। ”

ছোট্ট করে উত্তর দিয়ে শাওয়ারের উদ্দেশ্যে বাথরুমে ঢুকে পড়ল মাহের৷ সূচনা বড়ো বড়ো চোখ করে কাঁচের টুকরো গুলোর দিকে তাকিয়ে রইল৷ এরপর ধীরস্থির ভাবে সেগুলো ওঠিয়ে ফেলে দেয়ার জন্য বাইরে গেল।

রাতে খাবার সময়ও মাহের চুপচাপ গম্ভীর রইল। মনের ভিতর তীব্র অশান্তি চললেও মুখে কিছু বলল না সূচনা৷ হামিদা ছেলেকে দু’বার জিজ্ঞেস করল,
-” কী হয়েছে তোর? মুখ এমন লাগছে কেন? ”

মাহের তেমন কোনো উত্তর দিতে পারল না। শুধু বলল,
-” চারঘন্টা ডিউটি করে কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি৷ ঠিক হয়ে যাবে, চিন্তা করো না। ”

রাতে ঘুমানোর সময় সূচনা যখন জিজ্ঞেস করল,
-” আপনার কী হয়েছে? ”

মাহের শান্ত কণ্ঠে বলল,
-” কী হবে? ”

-” তাহলে তখন… ”

বাকিটুকু বলার সুযোগ না দিয়ে মাহের দৃঢ় কণ্ঠে বলল,
-” যে প্রশ্নটি আপনার মনে ঘুরছে এর উত্তর আমার কাছে নেই। আপাতত আমি আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাইছি না। গুড নাইট সূচনা ঘুমিয়ে পড়ুন। ”

মাহেরের সঙ্গে সূচনার সম্পর্কটা বেশ জটিলতায় কাটল কিছুদিন। চেনা মাহের যেন হঠাৎ করেই ভীষণ অচেনা হয়ে ওঠল। সব সময় কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকে। কাজ না থাকলে ছুটির দিনগুলোতে বইয়ে মুখ গুঁজে বসে থাকে। প্রয়োজনে দু’একটা কথা বললেও ভীষণ গম্ভীর হয়ে বলে। বুকের ভিতরটায় বড্ড ফাঁকা ফাঁকা লাগে সূচনার। অদ্ভুত এক হাহাকারের পূর্ণ হৃদয়।

বরাবরের শান্তশিষ্ট, মিষ্টভাষী পুরুষ গুলোর ক্রোধ বড়ো ভয়ানক হয়। এরা কাউকে আঘাত করে না। কাউকে কটুকথা শোনায় না৷ এরপরও অদ্ভুত কৌশলে দোষী মানুষটিকে শাস্তি দিতে পারে৷ যেমন মাহের শাস্তি দিচ্ছে সূচনাকে। কিন্তু কীসের শাস্তি তার অপরাধ কী?

শুক্রবার ছুটির দিন। আজকের পরিকল্পনা হচ্ছে টিশার জন্য ভালোমন্দ রান্না করে সকলে মিলে তার বাসায় যাওয়া। মাহের যেতে নারাজ তার নাকি স্টুডেন্টসদের অনেকগুলো খাতা দেখা বাকি। তাই শাশুড়ি আর ননদের সঙ্গে সূচনা যাবে খালাতো ননদের বাসায়। গোসল করে রেডি হচ্ছিল সে৷ এমন সময় মাহেরের হোয়াটসঅ্যাপে কল এলো। মাহের তখন বাথরুমে শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে। ফোন একাধারে বাজতে থাকায় বাঁধ্য হয়ে সূচনা ফোন রিসিভ করল। ওপাশ থেকে মেয়েলি কণ্ঠস্বর ভেসে এলো,
-” স্যার আমি হিমি বলছি ঐ যে গতকাল আপনার নাম্বার নিলাম যে। পিক পাঠিয়েছি দেখুন ব্যতিক্রমে এতটুকুই উত্তর আপনি বিশ্বাস করলেন না। ভাবলেন আমি বাদ রেখে লিখেছি। আর হ্যাঁ স্যার পিকের সঙ্গে আমার একটা শাড়ি পরা পিকও চলে গেছে সরি স্যার। ”

-” এরপর থেকে খেয়াল রাখবে নিজের পিক যেন স্যারের হোয়াটসঅ্যাপে না আসে। ”

-” আপনি কে বলছেন? ”

-” স্যারের ওয়াইফ। ”

-” কিহ স্যার ম্যারেড! ”

মুচকি হেসে কল কেটে দিল সূচনা। নিশ্চয়ই মেয়েটা জানে না মাহের ম্যারেড। তাই ইমপ্রেস করার জন্য পিক পাঠিয়েছে। সূচনা পিকটা দেখে ডিলেট করে দিল। এরপর হোয়াটসঅ্যাপ থেকে বেরোনোর সময় হঠাৎ একটি নাম্বারে দৃষ্টি আঁটকে গেল। ভীষণ পরিচিত নাম্বার তার। কয়েক পল অতিবাহিত হতেই যখন পুরোপুরি নাম্বারটা চিনতে পারল সর্বাঙ্গ কেঁপে ওঠল৷ লিমনের নাম্বার! লিমনের সঙ্গে মাহেরের পরিচয় আছে? প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে ইনবক্সে ঢুকল সে৷ একের পর এক ম্যাসেজ, পিক দেখে মাথা খারাপ হয়ে যাওয়ার যোগার হলো। তার আর লিমনের বেশ কিছু ঘনিষ্ঠ ছবি দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে কয়েকটা ছবি সত্যি তার আর লিমনের। আর কয়েকটা ছবিতেও সে আর লিমন রয়েছে। যে ছবিগুলোতে অশ্লীলতার ছাপ স্পষ্ট। সূচনার মনে পড়ে না লিমনের সঙ্গে এতটা ঘনিষ্ঠ সে কখনো হয়েছে কিনা। তাহলে এগুলো কি এডিট করা! ছিঃ ছিঃ। লিমন লাস্ট যে ছবিটা দিয়েছে সে ছবিতে সূচনা শাড়ি পরা। কিন্তু বুকে আঁচল নেই। আঁচলটা লিমনের হাতে। লিমনের মুখ ডুবানো সূচনার বুকের বিভাজনে। সূচনা এক হাত তার পিঠ খামচে ধরা আরেক হাত চুল খামচে ধরা। মুখের এক্সপ্রেশন এমন যেন কিছু দেখে ভয় পেয়েছে। গা ঘিনঘিন করে ওঠল সূচনা। গতবছর তার জন্মদিন বন্ধুরা মিলে তাকে সারপ্রাইজ দিয়েছিল। পুরো রুম অন্ধকার করে হঠাৎ আলো জ্বালিয়ে একসঙ্গে সবাই রুমে ঢুকেছিল ভয় পেয়ে চোখ খিঁচে পরিহিত জামার ওড়না খামচে ধরেছিল সে। ছবিটা এখনো তার কাছে আছে৷ তিরতির করে ঘামতে শুরু করল সূচনা। লিমনের করা ম্যাসেজগুলো পড়তে লাগল একের পর এক,
-” এবার বিশ্বাস হলো তো? তখন আমার কাছে প্রুফ ছিল না। মুখের কথা বিশ্বাস করলেন না। এবার নিশ্চয়ই বিশ্বাস হচ্ছে। কেমন বা’রো* বউ পেয়েছেন আপনি? ”

মাহেরের কোনো রিপলাই নেই৷ লিমন পর পর ম্যাসেজ দিয়েই গেছে,
-” যে মেয়ে বিয়ের আগেই বয়ফ্রেন্ডকে শরীর বিলিয়ে দিয়ে সতীত্ব হারায় ঐ মেয়ে আপনাকে ঠকিয়েছে এটা বিশ্বাস হচ্ছে না। সূচনা যদি চরিত্রহীন না হতো আমি কি ওকে বিয়ে করতাম না নাকি?

হাত থেকে ফোনটা বিছানায় পড়ে গেল সূচনার। হামিদা, হৈমী এলো তাকে ডাকতে। সূচনা নিজের ভিতর বয়ে চলা ঝড়গুলো গোপন করে বলল তার শরীর খারাপ লাগছে। শরীর খারাপের মাত্রা এমনভাবে উপস্থাপন করল যে বাধ্য হয়ে মা মেয়ে তাকে রেখেই চলে গেল। মাহের শাওয়ার নিয়ে এসে সূচনাকে দেখে বলল,
-” কী ব্যাপার আপনি যাননি। ”

সূচনা টলমল চোখে তাকিয়ে রইল মাহেরের পানে। সহসা সূচনার চোখে চোখ পড়তেই চমকাল মাহের। কিছু প্রশ্ন করতে গিয়েও থেমে গেল। বাইরে বেরোবে বলেই বেরিয়ে গেল৷ ফিরল রাত প্রায় দশটা ছুঁই ছুঁই করে। রাতের খাবার খাওয়ার সময় মাহের জিজ্ঞেস করল,
-” আপনার খাবার বাড়ছেন না কেন? ”

শ্বাসরোধ করে সূচনা উত্তর দিল,
-” আমি খেয়েছি। ”

মাহের অবাক হলো। কারণ সূচনা রাতের খাবার সব সময় তার সঙ্গেই খায়। খাওয়া শেষ করে রুমে কিছুক্ষণ হাঁটাহাটি করে রুমে যেতেই দেখল সূচনা বিছানা গুছিয়ে বসে আছে নিশ্চুপ। তাকে দেখে কিছুটা নড়ে ওঠল। সে ঈষৎ হেসে মোবাইল চার্জ দিয়ে শুয়ে পড়ল। সূচনা ঠাঁই বসে। মাহের বলল,
-” শুবেন না? ”

দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল সূচনা। বিছানা ছেড়ে কাভার্ড খুলে ঢিলেঢালা একটি নাইটড্রেস বের করল। বিয়ের পূর্বে রাতে এসব পরে ঘুমানো হলেও বিয়ের পর লজ্জায় এসব আর পরা হয়নি৷ কিন্তু আজ আর লজ্জা পেলে চলবে না। তাকে পরীক্ষা দিতে হবে আজ কঠিন পরীক্ষা। সতীত্বের পরীক্ষা।

চলবে…

#বেসামাল_প্রেম
#লেখা_জান্নাতুল_নাঈমা
#পর্ব_১৩
আজ পৃথিবীর সবচেয়ে অসহায় মেয়েটি যেন সূচনা৷ যাকে কিনা নিজের স্বামীর নিকট সতীত্বের পরীক্ষা দিতে হবে। সিদ্ধান্তটি তার নিজেরই। তার স্বামী তাকে এরূপ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেনি৷ তবুও তার আড়ালে যে ঘটনাগুলো ঘটছে সেগুলো টের পেয়ে নিজ থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আদেও কি এমন কোনো পরীক্ষা আছে? যা প্রমাণ করবে সে সতী নারী? সূচনা এসবে অবগত নয়৷ তবে একদিন অতি প্রিয় এক বান্ধবীর কাছে শুনেছিল, একজন পুরুষ যখন একজন নারীকে গভীরভাবে স্পর্শ করে, ঠিক তখনি বুঝতে সক্ষম হয় তার করা স্পর্শ গুলো নারীটির জীবনে পাওয়া প্রথম স্পর্শ কিনা! নিজেকে নিয়ে সম্পূর্ণ কনফিডেন্ট সূচনা। ইতিপূর্বে কোন পুরুষের সঙ্গেই সে ঘনিষ্ঠভাবে মিশেনি। লিমনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেছে সব সময়। তাই নিজের প্রতি প্রবল বিশ্বাস রেখেই বারকয়েক ঢোক গিলল সে। নির্লিপ্ত কণ্ঠে ডাকল,
-” মাহের? ”

মৃদু নড়ে পাশ ফিরে তাকাতেই চমকে ওঠল মাহের। দৃষ্টি অসংলগ্ন করে বলল,
-” বলুন। ”

-” উই শুড বি ইন্টিমেট! ”

আকস্মাৎ ওঠে বসল মাহের। বিস্মিত দৃষ্টিতে কয়েক পল সূচনার পানে তাকিয়ে রইল। সূচনা মাথা নিচু করে টলমল দৃষ্টিজোড়া নিক্ষেপ করল বিছানার চাদের। মাহের থতমত খেয়ে বলল,
-” এই আবেদনটি তো ভালোবাসার নয় সূচনা, বন্ধুত্বেরও নয়। ”

সহসা মাথা তুলে ফ্যালফ্যালে চাহনি ছুঁড়ে দিয়ে সূচনা বলল,
-” এই আবেদনটি আমার চরিত্রের পরীক্ষার। পরীক্ষা করে দেখুন এরপর আপনার সিদ্ধান্ত জেনে হয় আমরা সম্পর্ক আগাবো নয়তো কাল থেকে এ সম্পর্কের ইতি টানবো! ”

ক্রোধ সংবরণে প্রথমবার বৃথা হয়ে হাত উঁচিয়েও থেমে গেল মাহের৷ বড়ো বড়ো নিঃশ্বাস ছেড়ে ত্যাগ করল বিছানা। দু-হাত কোমরে রেখে বুক টান টান করে মেঝেতে ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইল কতক্ষণ। সূচনার চোখ বেয়ে নোনা পানির স্রোত নামতে শুরু করল। দীর্ঘক্ষণ চলল পিনপতন নীরবতা। এরপর ব্যর্থ কণ্ঠে মাহেরই প্রথম বলল,
-” বিয়ের পূর্বে আপনার রুচিবোধ নিম্ন ছিল বলে বিয়ের পরও তাই থাকবে এটা আমি মানতে পারব না…”

বাকিটুকু বলতে পারলো না মাহের। তার পূর্বেই সূচনা হুহু করে কেঁদে ওঠল। অথচ একটু সময় দিলেই মাহেরের পূর্ণ কথাগুলো শুনতে পেতো,
-” আপনি আমার স্ত্রী। কোনো প্রয়োজন নেই আপনার সতীত্বের পরীক্ষা নেয়ার। আমার এই দু’টো চোখ কখনো ভুলটা বেছে নিতে পারে না। নিজের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে। আপনি পবিত্র ঠিক ফুলের মতোনই পবিত্র সূচনা৷ বিয়ের পূর্বে আপনার রুচিবোধ ভুল ছিল বলেই লিমনের মতো জঘন্য ছেলেটাকে ভালোবেসেছিলেন৷ যে কিনা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আপনাকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে। রাগটা আমার এখানেই। কেন আপনি ওর মতো ছেলের সংস্পর্শে গিয়েছিলেন? যে কিনা বিন্দুমাত্র সম্মান দিতে পারেনি আপনাকে। কেন সূচনা কেন? এই ভুলের শাস্তি আমি আপনাকে কীভাবে দেব বলতে পারেন? ”

মাহের বলতে পারলো না। সূচনার কান্নার শব্দে তার সবটা এলোমেলো হয়ে গেল। সহ্য করতে না পেরে রুম ছেড়ে বেরিয়ে গেল সে। শাস্তি সূচনাকে দেয়ার পূর্বে লিমনকে দিতে হবে৷ এরপর না হয় সূচনা কঠিন এক শাস্তি দেবে। যে শাস্তি সারাজীবন বাধ্য করবে সূচনাকে তার বুকের অতি গোপন কুটিরে বন্দিনী হয়ে থাকতে!

লম্বা সময় পেরিয়ে গেল৷ নিজেকে শান্ত করে রুমে ফিরল মাহের। দেখল, কাঁদতে কাঁদতে বিছানার এক কোণে গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে সূচনা। তার একেকটা ভারী নিঃশ্বাসের শব্দ কর্ণপাত হতেই দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল সে। ধীরপায়ে এগিয়ে এসে দু-হাতে সন্তর্পণে সূচনাকে কোলে তুলে নিল। কয়েক পল নির্নিমেষ চোখে তাকিয়ে রইল নাক, চোখ ফুলে লালিমা হয়ে ওঠা মুখশ্রীতে। নিজের পুরুষোচিত চিকন, পাতলা ওষ্ঠাধর এগিয়ে সূচনার ললাটপটে গাঢ় একটি চুমু খেল৷ বিরবির করে বলল,
-” আপনি ভীষণ বোকা, ভীষণ অভিমানী। ”

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here