বেস্টফ্রেন্ড থেকে স্বামী স্ত্রী
পর্বঃ১ম
লেখকঃMd_Sumon_kodir
মেয়েঃ এই ছেলে শুনো।
ছেলেঃ জ্বী বলুন।কি বলবেন।
মেয়েঃ তুমি কি এই স্কুলে পড়?
ছেলেঃ জ্বী আমি এখানে পড়ি। ৮ম শ্রেনীতে।
মেয়েঃ তাহলে খুব ভালো হয়েছে।আমি এখানে নতুন।আমাকে একটু ক্লাসে নিয়ে চলো।
ছেলেঃ চোখ কি কানা দেখতে পারেন না।
মেয়েঃ কানা হতে যাবো কেন।কোনটা ৮ম শ্রেনী তাতো আমি জানি না। তাই বলছি আমাকে একটু দেখিয়ে দাও। কোন রুম।
ছেলেঃ আসেন আমার সাথে।
বলে ছেলেটি মেয়েকে ৮ম শ্রেণির রুমে নিয়ে গেলো।
মেয়েঃ ধন্যবাদ তোমাকে।
ছেলেঃ ঠিক আছে।
ছেলেটা একদম ফাস্ট বেঞ্চে বসলো।মেয়েটা লাস্ট বেঞ্চে বসলো।ক্লাসে স্যার এসে মেয়েটাকে সামনে নিয়ে গিয়ে সবার সাথে পরিচিয় করিয়ে দিলেন।
স্যারঃ এই হলো তোমাদের নতুন বন্ধু। আজ ভর্তি হয়েছে।নাম আফিয়া জান্নাত ইরীনা।।
একটা ছেলেঃ স্যার একটা কথা বলতাম।
স্যারঃ হ্যা বলো।
ছেলেটিঃ এতো বড় নাম কে মনে রাখবে। ছোট নাম কি।
স্যারঃ ইরিনা বলে ডাকবে।আচ্ছা ইরিনা তোমার সাথে সবাকে পরিচয় করিয়ে দেয়।
ইরিনাঃ জ্বি স্যার।
স্যারঃ এই হলো সুমন কবির।First boy of the class..
এই হলো মিরাজ।
এই ভাবে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন স্যার। ক্লাস শেষে ইরিনা বাইরে দাড়িয়ে আছে।সবাই বেরিয়ে গেছে কিন্তু সুমন বাহির হচ্ছে না। ইরিনা ভিতরে উকি দিয়ে দেখে। সুমন কি যেন লিখছে। ইরিনা কাছে গিয়ে দেখে সুমিন গনিত নিয়ে ব্যাস্ত। তখন ইরিনা বলে,,,,,
ইরিনাঃ এই যে
সুমনঃ বলেন কি সমস্যা।
ইরিনাঃ বাড়িতে যাবেন না।।।
সুমনঃ আমি বাড়ি দেরিতে যায়।
ইরিনাঃ ওকে।
#পরের-দিন
ইরিনাঃ আসসালামু আলাইকুম।
সুমনঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম।
ইরিনাঃ কেমন আছো।
সুমনঃ আলহামদুলিল্লাহ।কিছু বলবেন?
ইরিনাঃ না তেমন কিছু না। এখানে আপনি ছাড়া পরিচিত কেউ নেই তো তাই আসলাম একটু গল্প করতে।আপনি যদি একটু সময় দেন।
সুমনঃ আমার কাছে খুব বেশি সময় নেই।তার পরও আপনি যখন বলেছেন আমি একটু সময় দেবো।
ইরিনাঃ Thanks my dear gulu gulu…. (সুমনের দুচোয়াল টেনে ধরে)
সুমনঃ এসবের মানে কি।
ইরিনাঃ কিসের মানে?
সুমনঃ ok bey… আপনি থাকেন।আমি ক্লাসে গেলাম।
বলে সুমন চলে আসলো। ইরিনা মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে রইলো।
এভাবে টুকটাক কথা বলতে বলতে সুমন আর ইরিনার মাঝে ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেছে।হটাৎ একদিন সুমন ক্লাসে আসলো না। ইরিনা মন খারাপ করে বসে আছে।কারো সাথে কোনো কথা বলছেনা।
ক্লাসে স্যার আসলেন।ক্লাস শুরু করলেন।সবাই হাসি খুশি একজন ছাড়া।স্যার ইরিনার কাছে জিজ্ঞাসা করলেন,,,,,,,,,,
স্যারঃ ইরিনা! মন খারাপ কেনো? কি হয়েছে?
ইরিনাঃ স্যার তেমন কিছু না।
স্যারঃ তেমন কিছু না। তাহলে মনটা এতো খারাপ কেনো।
ইরিনাঃ স্যার সুমন আজ স্কুলে আসেনি তো তাই। ওকে ছাড়া আজ প্রথম ক্লাস করতে খুব কষ্ট হচ্ছে।
স্যারঃ ও এই কথা!
ইরিনাঃ জ্বি স্যার।স্যার সুমন কি আসবে না।ও আজ কেন আসলো না স্যার।
স্যারঃ ওর নাকি প্রচন্ড জ্বর।ওর আম্মু ফোন দিয়ে ছিল।
কথাটা শোনা মাত্রই ইরিনা আর এক মুহুর্ত দেরি করলো না।সোজা সুমনদের বাড়িতে চলে গেলো।সুমনের প্রচুর জ্বর। ওর মা ওর মাথায় পানি ঢেলে দিচ্ছে। ইরিনা সুমনের কাছে গিয়ে সুমনের পাশে বসে পড়ে।
ইরিনার কাজ দেখে সুমনের মা বলেন,
সুমনের মাঃ এই মেয়ে কে তুমি আর এখানে কি।
ইরিনাঃ আন্টি আমি সুমনের,,,,,,, তারপর আর কিছু বলতে পারলো না।খুব কান্না করছে ইরিনা।কান্না থামিয়ে বলে,,,,,, আমি ইরিনা।সুমন আমার একমাত্র বন্ধু।সুমনের জ্বর কখন থেকে।
সুমনের মাঃ কাল সন্ধা থেকে।কিন্তু তুমি কিভাবে আসলে।
ইরিনাঃ কিভাবে এসেছি জানি না।সুধু জানি পাগলটার টানে এসেছি। সুমন কথা বলছে না কেন আন্টি।
সুমনের মাঃ সুমন এখন ঘুমাচ্ছে।তুমি বসো আমি আসছি।
সুমনের মা চলে গেলো।প্রায় আধা ঘন্টা পরে আসলেন। তিনি এসে দেখেন সুমন দেওয়ালে পিঠ লাগিয়ে বসে আছে। আর ইরিনা সুমনকে খাবার খাইয়ে দিচ্ছে।সুমনের মা অনেক টা অবাক হয়ে যায় ওদের কাজ দেখছেন।
সুমনের মাঃ বাহ দারুন মায়া আছে দেখছি বন্ধুর উপর।
সুমনঃ মা আপনি এভাবে বলছেন কেন।
সুমনের মাঃ কি ভাবে বললাম।আমি তো ইরিনার প্রশংসা করছি।আমার তো ইচ্ছা হচ্ছে ইরিনাকেই আমার ছেলের বউ বানাতে।
সুমনঃ মা তা কোনো দিন সম্ভব না।কারন ইরিনা আমার বেস্টফ্রেন্ড।
সুমনের মাঃ তা আমি জানি।তাই তো ইচ্ছা হলেও পুরন হবে না।
সুমনঃ my sweet ammu.এই জন্যই তো আমি ধন্য।তোমার মতো মা পেয়েছি।দেখো ইরিনা আমার মা কত সুইট।
ইরিনাঃ হ্যা আমার মাও অনেক ভালো।তুমি গেলে দেখতে পারবে।
সুমনঃ হ্যা যাবোই তো।
সুমনের মাঃ আচ্ছা আগে সুস্থ হও। তারপর যেও।আচ্চা তোমরা গল্প করো আমি রান্না করে আসি।
সুমনঃআচ্ছা যান।
সুমনের মা চলে গেল।সুমন আর ইরিনা গল্প করছে।
সুমনঃ আচ্চা ইরিনা তুমি তো ধ্বনির মেয়ে।আমাদের বাড়িতে এসেছো তোমার আব্বা জানতে পারলে কিছু বলবে না তো।
ইরিনাঃ আরে হাধারাম আমাকে আব্বুই দিয়ে গেছে।
সুমনঃ ও আচ্ছা আমরা গরিব এটা তো আজ জেনে গেছো।পরে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে না তো।
ইরিনাঃ কি বললে আবার বলো। আমি ছেড়ে যাবো না।তুমি ছেড়ে যাবে না তার গ্যারান্টি আছে কি।
সুমনঃ আমি তো ছেড়ে যাবো না। যদি মনের কোনে একটু জায়গা দাও।
ইরিনাঃ আমার মনের সবটুকু জায়গা তো সুধু তোমার জন্য।
সুমনঃ সে তো জানি। এখন আমার দখলে আছে।পরে কি তা থাকবে।
ইরিনা আর কোনো কথা বলছে না।
সুমনঃ কি হলো কিছু বলো।
ইরিনাঃ সারা জীবন আমার সবটা জুড়ে শুধু তুমিই থাকবে।তুমিতো আমার জীবনের প্রথম পথ প্রদর্শক।তোমাকে চাইলেই কি ভুলতে পারবো।
সুমনের মাঃ আর মনে রাখতে হবে না। এখন আসো খেতে হবে।
সুমনঃ জ্বী মা আমরা আসছি।
সুমনের মাঃ তোমার আসতে হবে না। তুমি শুয়ে থাকো আমি তোমার খাবার এখানে আনছি। ইরিনা তুমি আসো।
সুমনঃ মা আমি এখন অনেক সুস্থ। আমি যেতে পারবো।
বলেই সুমন খাট থেকে নেমে আসলো।সুমন, সুমনের মা আর ইরিনা এক সাথে খেতে বসলো।
সুমনের মাঃ মা ইরিনা কিছু মনে করো না।আমরা গরিব ভালো কিছুর ব্যবস্থা করতে পারিনি।
ইরিনাঃ আপনি আমাকে সুধু সুধু লজ্জা দিবেন না।আপনারা যেমন মানুষ আমিও তেমন মানুষ। আপনি যা পেরেছেন তাতেই আমি খুশি।আর আপনার কাছে পেয়েছি আমার মূল্যবান সম্পদ।সুমন আমার বন্ধু। আপনি তাকে সৎ ও সাহসী বানিয়েছেন।এটাই আমার জন্য অনেক পাওয়া ।আচ্ছা আন্টি আঙ্কেল কোথায়।
সুমনঃ ইরিনা আমার আব্বু নেয়।
ইরিনাঃ sorry আন্টি।আমি জানতাম না।
সুমনের মাঃ আচ্ছা ঠিক আছে।আগে খেয়ে নাও। তারপরে গল্প করো।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে ইরিনা বাসায় চলে আসলো।
এদিকে ইরিনাদের বাড়িতে হৈচৈ পড়ে গেছে।সন্ধা হয়ে গেছে।কিন্তু ইরিনা এখনো বাড়িতে ফেরেনি। ইরিনার মা চারিদিকে খোজ নিচ্ছে ইরিনা কোথায় আছে।রাত প্রায় ৮ টার দিকে ইরিনা বাড়ি ফেরে। ইরিনাকে দেখে ইরিনার মা ইরিনাকে অনেক প্রশ্ন করলো।
ইরিনার মাঃ কোথাই গেছিলে।
ইরিনাঃ এক বন্ধুর বাড়ি।
ইরিনার মাঃতাই বলে এতো রাত পর্যন্ত থাকতে হবে।
ইরিনাঃ মা আমার বন্ধু খুব অসুস্থ। তার বাবা নেই। তার মা আছে কিন্তু অন্যের বাড়িতে কাজ করে। ছেলেটার সেবা করে নিজেকে অনেক লাকি মনে হচ্ছে।
চলবে,,,,,,,,,,,,