#বৈধ_ধর্ষণ,পর্ব- ১৪ [অন্তিমপর্ব]
#মিমি_সুলতানা
_______
“ছেলেরা কখনো কাঁদে না, যদি কখনো তাঁদের চোখ থেকে একফোঁটা পানি বের হয় বুঝে নিতে হয় তার মাঝে পাহাড়সম যন্ত্রণার ঠাঁই ”
আমি ওর কষ্ট টা বুঝতে পারছি। নিজের বাবার এমন নিচু কাজ কোনো সন্তানই মেনে নিতে পারে না যেমন আমিও আমার মা’য়ের কাজকে মানতে পারছি না।
-নিজেকে হানিফ চৌধুরীর সন্তান বলে পরিচয় দিতে আজ ঘৃণা হচ্ছে। আচ্ছা আমার মা’য়ের মৃত্যুটা স্বাভাবিক তো!
ফাহাদের এমন প্রশ্নে আমি নির্বাক হয়ে গেলাম।
-কিন্তু তোমার মা তো স্ট্রোক করে মারা গিয়েছিলেন। আর সেটা আমার মা’য়ের সাথে সম্পর্কে জড়ানোর আগে।
-হ্যা তাও ঠিক। আসলে কিছুদিন ধরে এমন অস্বাভাবিক সবকিছু দেখে চিন্তাভাবনা গুলো আর স্বাভাবিক হচ্ছে না।
আমরা যথেষ্ট প্রমাণ পেয়ে গিয়েছি।
রোজা আত্মহত্যা করেনি আর না তো তাঁর কোনো অবৈধ সম্পর্ক ছিলো।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে শুভর আচমকাই গায়েব হওয়া নিয়ে। শুভর আচমকাই গায়েব হওয়ার পেছনে তোমার বাবার হাত আছে বলে আমার মনে হয় না। যেখানে হত্যার কথা যদি তিনি নির্দ্বিধায় স্বীকার করেছেন সেখানে একটা কিডন্যাপ এর কথা গোপন করার প্রশ্নই আসে না।
কিন্তু হঠাৎ করে শুভর লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার বিষয়টাও অদ্ভুত।
সব প্রমাণ আমাদের হাতে থাকলেও শুভকে না পেলে একজন অপরাধী আড়ালেই থেকে যাবে।
সব কিছুর সমাধান করতে হলে আমাদের শুভর গায়েব হওয়ার বিষয়টা পরিষ্কার করতে হবে।
দুশ্চিন্তায় বিভোর হয়ে দু’জনেই বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম।
.
.
.
.
নিচে নামতেই দেখলাম ফাহাদের বাসার দারোয়ান সিদ্দিক লুকিয়ে গেট থেকে প্রবেশ করছে।
পুরোটা শরীর ঘামে ভেজা। দেখেই বোঝা যাচ্ছে কিছু একটা ঘটিয়ে এসেছে সে।
ফাহাদ এগিয়ে সিদ্দিকের কান ধরে বলল,
-কি করেছিস বল।
-কিছু না বস আমি কাউকে কিডন্যাপ করিনি
-আমি কখন তোকে জিজ্ঞেস করেছি যে তুই কাউকে কিডন্যাপ করেছিস কিনা? সত্যি বলতো তুই আমার থেকে কি লুকাচ্ছিস!
তুই যদি না বলিস আর আমি যদি কোনোভাবে আসল ঘটনা টা জানতে পারি তখন তোর অবস্থা কি হতে পারে সেটা তুই ভালো করেই জানিস।
ফাহাদের কথা শুনে সিদ্দিক কিছুটা ঘাবড়ে গেলো।
তোতলাতে তোতলাতে বলল,
-ইয়ে মানে বস, আসলে বস শুভ কোথায় আমি জানি।
-তুই জানিস মানে! কি হয়েছে সবটা খুলে বল।
-শুভকে সেদিন মারার পরে আমি খুব শান্তি পেয়েছিলাম বস। উঠতে বসতে পশুটাকে আমার উদুম কেলাতে মন চাইতো। তারপর আমি সুযোগ বুঝে ওকে কিডন্যাপ করে এনে আপনাদের পুরোনো ফ্ল্যাটের স্টোর রুমে বেঁধে রাখি।
আপনি যখন আমাকে মারতেন আমিও তখন সেই মারের ঝাল গিয়ে জানোয়ারটার উপর ইচ্ছেমতো ঝাড়তাম।
তবে বস আপনি বললে আমি ওকে ছেড়ে দেবো যদিও আমার খুব কষ্ট হবে।কারণ ওকে মেরে আমি যে শান্তি পেতাম তা আর পাব না।
সিদ্দিকের কথা শুনে আমরা দু’জনেই অবাক হয়ে গেলাম। তবে শুভ কোথায় সেটা জানতে পেরে আমরা বেশ খুশি হলাম।
আমরা সুযোগ বুঝে শুভকে তার বাসার সামনে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে প্রমাণ গুলো নিয়ে থানার দিকে রওনা হলাম।
.
.
.
কিছুক্ষণ পরে আমি বাসায় আসলাম।
দরজায় নক করতেই আরোহী দৌড়ে এসে দরজা খুলে দিলো। আমি কিছু না বলেই বাসার ভিতরে ঢুকে গেলাম। আমার পিছু পিছু কয়েকজন মহিলা পুলিশ ও ভিতরে প্রবেশ করলো। পুলিশ দেখে আরোহী বেশ ঘাবড়ে গিয়েছে।
বাসায় পুলিশ কেন? আবার কোনো ঝামেলা হয়েছে না-কি?
ফাহাদ ঠিক আছে তো? এমন হাজারটা প্রশ্ন আরোহী আমাকে করতে লাগল।
তার কোনো প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই।
আমি সোজা মায়ের রুমে চলে গেলাম।
আজ তাঁকে মা বলে ডাক দিতেও বিবেকে বাঁধছে।
এই মায়ের কথায় আমি নিজের ভালোবাসা হারালাম,নিজের ক্যারিয়ার ছাড়লাম,নিজেকে ধ্বংসের হাতে তুলে দিলাম কিন্তু পরিশেষে পাওয়ার তালিকা টা শুন্যই রয়ে গেলো।
না না শুন্য নয়, সেখানে যোগ হয়েছে অসম্মান, অত্যাচার,ইচ্ছার বিরুদ্ধে যন্ত্রণাদায়ক বৈধ ধর্ষণ।
বলি দিতে হয়েছে ছোট্ট বোনটার সম্মান।
কতোগুলো নির্দোষ মানুষের দিতে হয়েছে প্রাণ।
জীবনের সবচেয়ে বড় ঢাল আমার বাবা!
তাঁকে হতে হয়েছে নির্মম বিশ্বাসঘাতকতার স্বীকার। যার কারণে দিতে হয়েছে তার প্রাণ।
এতোদিনের শারীরিক কষ্টের থেকে আজ মানসিক কষ্ট টা দিগুণ হয়ে ধরা দিচ্ছে আমার কাছে।
“কেন করলেন এমনটা?”
প্রশ্ন টা করতেই মা বেশখানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে গেলো। চুপ করেই থাকলো।
তার হয়ত আজ বলার মতো কিছুই নেই।
নিজের মা’কে এভাবে শাস্তিস্বরূপ আইনের হাতে তুলে দেওয়াটা হয়ত কোনো সন্তানের পক্ষে ততটা সহজ নয়। তবুও মাঝে মাঝে নিজেকে কঠিনরুপে প্রস্তুত করতে হয়। সমাজের ঘুমন্ত বিবেক জাগ্রত করতে মাঝে মাঝে এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
লোভ লালসায় পরে আর কোনো নিরপরাধ মানুষের জীবন যেন না দিতে হয় তার জন্য হলেও নিজেকে শক্ত করতে হয়।
পাশ থেকে আরোহীর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করার শব্দ শুনতে পাচ্ছি। মা এখনো নিশ্চুপ।
একজন পুলিশ এসে তাঁর হাতে হাতকড়া পরিয়ে দিলো।
মায়ের দু’চোখে অনুতাপের ছাপ। হয়ত তিনি আরেকটা সুযোগ চাচ্ছেন। তবে সব অপরাধের কি আর সুযোগ হয়!
একটা কথাও বললেন না মা।
আরোহী মা’কে জড়িয়ে কান্না করছে খুব।
আমি আরোহীকে টেনে মায়ের থেকে ছাড়িয়ে জড়িয়ে ধরলাম। অজান্তেই চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো।
.
.
.
মা’কে নিয়ে গিয়েছে অনেকটা সময় পেরিয়ে গিয়েছে। এতক্ষণ যাবত আরোহী আমাকে জড়িয়েই আছে।
আরোহীর কষ্টটা আমি অনুভব করতে পারছি।
কিন্তু ওকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো কোনো ভাষা আমার জানা নেই।
আমি জানি কান্না থামলেই শুরু হয়ে যাবে মা’কে নিয়ে আরোহীর হাজারটা প্রশ্ন। যেই প্রশ্নগুলোর যথাযথ উত্তর দেওয়ার সাহস আমার নেই।
গলা খাঁকারি দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো ফাহাদ।
ছেলেটাও হয়ত স্বার্থপরতার এই খেলায় ক্লান্ত।
ফাহাদকে দেখে আরোহী দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো। ওদেরকে একা ছেড়ে দিয়ে আমি বারান্দার দিকে চলে গেলাম।
.
.
.
কতক্ষণ এভাবে দাঁড়িয়ে আছি জানি না।
আজ অনেক হালকা লাগছে নিজেকে।আমার জীবনের বৈধভাবে ধর্ষণের অধ্যায়টা হয়ত আজ শেষ হলো। সবকিছুর যেন অবসান ঘটলো। তবুও সংকোচ নতুন কোনো সমস্যার আবির্ভাব যেন না ঘটে।
দরজার শব্দ শুনে পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখলাম আরোহী আর ফাহাদ দাঁড়িয়ে আছে।
“আরোহীকে আমি সবটা খুলে বলেছি। ও আপনার সিদ্ধান্তকে পুর্ণভাবে সাপোর্ট করে।শুভকে ওই অবস্থায় সময়মতো তাঁর বাসার সামনে পৌঁছে দিয়েছিলো সিদ্দিক। পুলিশ যাওয়ার আগে তাঁর পরিবারের লোক তাঁকে দেখে ভিতরে নিয়ে যায়। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ গিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করে। কে বা কারা তাঁকে কিডন্যাপ করেছে সেই সম্পর্কে কোনো ইনফরমেশন ই সে দিতে পারেনি।
ধর্ষণ,নারী নির্যাতন, খুন তিনটা কেস ফাইল করা হয়েছে। আশা করা যায় সঠিক শাস্তি সে পাবে। আপনিও মুক্তি পাবেন শুভ নামক এক পশুর হাত থেকে।
হানিফ চৌধুরীর এবং আপনার মায়ের উপর কঠোর কেস জারি করা হয়েছে খুব শীঘ্রই তারাও তাদের অপরাধের যোগ্য শাস্তি পাবে।”
এক নাগাড়ে নিচু স্বরে কথাগুলো বলে ফেললো ফাহাদ। আমার হয়ত এগুলো শুনে খুশি হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু আমি পারছি না।
অপরাধীরা তাঁদের কর্মফল তো পাবেই কিন্তু তাঁদের এমন নিচু কাজের জন্য কতো মানুষের হারাতে হয়েছে কতো কিছু। হারাতে হয়েছে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আদর্শ আমার বাবাকে।
আমি কোনো উত্তর না দিয়ে সোজা বাবার রুমে চলে আসলাম।
আজ আমার খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে। চিৎকার করে বাস্তবতার কাছে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করছে
“আমাকে নিঃস্ব বানিয়ে এবার তুমি খুশিতো!”
বাস্তবতার ভাঁজে ভাঁজে না জানি লুকিয়ে যায় এমন কতশত নিষ্ঠুরতার গল্প।
.
.
.
হাঁটতে হাঁটতে সেই কৃষ্ণচূড়া গাছটির নিচে আসলাম। গাছটিতে কৃষ্ণচূড়া ফুলগুলো এখন নেই। তবে তাঁকে সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে হাজারো রঙিন স্মৃতি। গাছটার সাথে এক অদ্ভুত ধরণের মায়া জড়িয়ে আছে। আমার ভালো দিনের সঙ্গী সে। অভি আর আমি এই গাছটাকেই নিজেদের বসতবাড়ি করে নিয়েছিলাম। দিয়েছিলাম আমাদের ভালোবাসার ঠিকানা উপাধি।
কলেজ শেষে গাছটির নিচে না বসলে দিনটা আমাদের অসম্পুর্ণ থেকে যেত।
তবে দিনশেষে সে ও নিঃস্ব ঠিক আমার মতো।
আরেকটু এগিয়ে কলেজের মধ্যে প্রবেশ করলাম।
ভিতরে ঢুকতেই চারপাশ থেকে নানারকম স্মৃতি আঘাত করতে লাগলো।
খুব ইচ্ছে করছে সেই পুরানো দিনটাতে ফিরে যেতে।
সেই হাসিখুশি আরশীকে আবার খুঁজে নিতে।
অভির হাত থেকে প্রতিদিন তাজা বকুল ফুলের মালা নেওয়া, সারাক্ষণ ঝগড়া খুনসুটিতে মত্ত থাকা, বন্ধু বান্ধবদের সাথে আড্ডায় মেতে ওঠা সবটাই যেন আজ স্বপ্নের মতো।
আমি চাইলেও আর সেই স্বপ্নের জগতে ফিরতে পারব না। সময়ের সাথে সাথে অভিও হয়ত নিজেকে পরিবর্তন করে ফেলেছে। অবশ্য আমিতো এটাই চাচ্ছিলাম।
বাস্তবতার ফাঁদে পড়ে হয়ত এমনই অসম্পূর্ণ থেকে যায় শতশত ভালোবাসার অধ্যায়।
আবার এমনও অনেক মানুষ আছে যারা এই ব্যস্ত নগরীতে ভালোবাসার খোঁজে ভালোবাসাতেই পিষে যায়।
বুকের ভেতর পুষে রাখা নিরব যন্ত্রণাটা খুব করে নড়াচড়া দিয়ে উঠছে। আমি আর দেরি না করে দ্রুত কলেজ থেকে বের হয়ে গেলাম।
.
.
.
.
.
গেট এর দিকে তাকাতেই মনটা খুশি হয়ে গেলো।
দু-চোখ ভরে পানি চলে এসেছে।
আমি দৌড়ে গেটের কাছে চলে আসলাম।
আরোহীর কোল থেকে বাচ্চাটা নিয়ে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলাম।
আমার পিচ্চি বোনটা মা ও হয়ে গিয়েছে।
পাশেই গাড়ি পার্ক করে ফাহাদ ও চলে এলো।
দেখেই বোঝা যাচ্ছে ওরা খুব ভালো আছে এটাই আমার কাম্য ছিল।
“আপু এখন তো সব ঝামেলা শেষ হয়ে গিয়েছে। অপরাধীরাও তাঁদের শাস্তি পেয়েছে এবার না হয় বাসায় ফিরে চলো,তোমাকে ছাড়া আমার কিছু ভালো লাগে না আপু। আমার বাচ্চাটার ও তোমার আদর পাওয়ার অধিকার আছে ওর জন্য হলেও ফিরে চলো দেখবে এখন আর খারাপ কিছু হবে না” কথাগুলো বলে কান্না করতে লাগলো আরোহী। ফাহাদ ও আমাকে অনেকভাবে অনুরোধ করতে লাগল। আমি ওদের মনের কষ্টটা বুঝতে পারছি। কিন্তু আমি বরাবরের মতোই নিজের সিদ্ধান্তে অনড়। ওদের প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে আমি বাচ্চাটাকে নিয়ে ভেতরে চলে আসলাম।
তাঁদের দিন কেমন যাচ্ছে কিভাবে সবকিছু সামলায় এমন হাজারটা কথা একা একা বলতেই আছি। সবসময়ের মতো এবারও আরোহী চুপ করে অশ্রুসিক্ত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
এই সময়টাতে আরোহীর চোখের দিকে আমি একদমই তাকাই না। আমি পরিস্থিতি পাল্টাতে বলে উঠলাম বাচ্চা টা কিন্তু পুরো ফাহাদের মতো হয়েছে। আরোহীর দিকে তাকিয়ে দেখি বাঁকা চোখে ফাহাদের দিকে তাকালো আর ফাহাদের মুখে দুষ্টুমির হাসি।
অনেকটা সময় আমরা একসাথে কাটাই।
দেখতে দেখতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। আমি আরোহীদের গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমার ঠিকানা এই “অনাথ আশ্রমের” দিকে এগিয়ে যাই।
আজ হয়তো আমার অনেককিছুই নেই আবার সবকিছু হারিয়েও অনেক কিছু পেয়েছি।
এই “অনাথ আশ্রম” ই এখন আমার পৃথিবী।
এখানের এই অনাথ বাচ্চাগুলোই আমার আপনজন। ওদের নিয়েই কেটে যায় আমার সারাবেলা। বিগত কয়েকবছর আমি ওদের নিয়েই বেঁচে আছি। আর এভাবেই কাটিয়ে দিতে চাই জীবনের বাকিদিনগুলো।
আমি আজ সত্যিই ভালো আছি, ওদের নিয়ে আমি খুব ভালো আছি।
এতো গুলো বাচ্চার নিঃস্বার্থ ভালোবাসা আমাকে খারাপ থাকতে দেয় না।
.
.
সমাপ্ত।
লেখিকাঃমিমি সুলতানা