বোবা ছেলের নিয়তি,২য় পর্ব

0
1114

বোবা ছেলের নিয়তি,২য় পর্ব
লেখক:- Neel Fardin

রোজার জন্য মন খারাপ হয়,ভুলেও একটা খবর নেই নি আমি কেমন আছি,বোবা হওয়াটা কি আমার অপরাধ,আল্লাহ তুমি কেন এই পৃথিবীতে পাঠালা বলো?
কান্না করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি মনে নাই,
আজ অনেক দিন হলো ছোট একটা জব করি একটা রেস্টুডেন্টে,(তেমন প্রবলেম হতো না আমার কথা বলা লাগতো না রেস্টুরেন্ট এ) রোজা কে প্রায় মনে পড়তো তাই কাজ নিছি যাতে রোজাকে একটু ভুলতে পারি,
বিকালে কাজ থেকে আসার সময় আনমনে রোজার কথা ভাবতে ভাবতে রাস্তা পাশ দিয়ে আসছিলাম, হঠাত একটা গাড়ি আমাকে ধাক্কা দেই,তারপর আর কিছু মনে নাই
তারপর নিজেকে অবিষ্কার করলাম হসপিটালে,পাশে বয়স্ক কাকা আর একটা মেয়ে,
বয়স্ক কাকা:- কেমন আছও বাবা।
আমি:-(হাত দিয়ে ইশারা করলাম আমি এখানে কি করে,মাথাতে খুব বেথ্যা করছে)
বয়স্ক কাকা:- কি হয়েছে বাবা কথা বলো।
আমি:- (আমার ফোনে লিখে দিলাম)আমি এখানে কি করে,আর আমি কথা বলতে পারি না,আমি বোবা।
বয়স্ক কাকা-আমি আর আমার মেয়ে গাড়ী করে যাচ্ছিলাম হঠাত তুমি সামনে এসে পড়লে।
মেয়েটা:- সরি,আসলে আমি ড্রাইভ করছিলাম আপনাকে দেখতে পাইনি,
আমি:-(মাথায় খুব বথ্যা অনুভব আর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বথ্যা করছে)
মেয়েটা:- পাপ্পা তুমি বাসায় চলে যাও।আমি ওনার দেখাশুনা করছি!
বয়স্ক কাকা:- আচ্ছা আমার আবার কাজ আছে,কোনো প্রবলেম হলে ফোন দিস,
মেয়েটা:- ওকে পাপ্পা

আমার খুব খিদা লাগছে,
মেয়েটা আমার পাশেই,
আমি:- ইশারা দিলাম।
মেয়েটা:- কেমন আছেন এখন?
আমি :- খিদা লাগছে খুব (ইশারা করে)
মেয়েটা :- আপনার খিদা লাগছে??
আমি:-হুম
মেয়েটা আমার জন্য কিছু ফল নিয়ে এলো।
আমি ঠিক মতো হাতে নিতে পারলাম না বথ্যায়।
মেয়েটা:- আপনার হাতে নেয়া লাগবে না,আমি খাইয়ে দিচ্ছি,হা করুন
আমি:-(আমি খুব অবাক হয়ে গেলাম)
মেয়েটা:-হা করুন!
মেয়েটা আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে আর আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি,
(আমার চোখে পানি চলে আসছিলো)
মেয়েটা দেখতে এতো আহামরি কিছু না,কিন্তু মায়াবীনি,ঠোটে হালকা লিপস্টিক,চোখে কাজল আর উজ্জল শ্যমলা দেখতে,
আজ যদি রোজা আমার জীবনে থাকতো তাহলে এই কাজ গুলাই করতো,
খাওয়া শেষে পানি টুকু ও নিজ হাতে খাইয়ে দিলো,
আমি:- আপনাকে একটা কথা বলতাম(ইশারা করে)
মেয়েটা:- হুম বলেন?
আমি:- (আমি তো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি,আমার ইশারা তো কেউ বুজে না তাহলে এই মেয়েটি কিভাবে বুজলো)
মেয়েটা:- কি হলো বলেন?
আমি:- আমাকে এতো সেবা যত্ন করছেন কেন?(ইশারা করে)
মেয়েটা:- সরি এটা বুজতে পারি নি।
“আমি মোবাইল টা নিয়ে টাইপ করে দিলাম”
মেয়েটা:- একটা বিপদগস্থ মানুষকে ফেলে রেখে চলে গেলে আল্লাহ নারাজ হয়ে যাবে আর আমাকে আরও বড় অভিশাপ দিবে,আর আমি কিভাবে যায় বলুন?
আমি:-ধন্যবাদ (ইশারা করে)
রাত ১ টা মেয়েটার খুব ঘুম পাচ্ছে তাই আমার বেটের পাশে একটু জায়গা করে দিলাম মাথা রাখার জন্য,

পরদিন সকালে:- ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেলাম বাবা মাকে,মা খুব কান্না।
তাদের চলে যেতে বললাম,বাবার কাজ আছে আর মা রান্নাবান্না করে নিয়ে আসবে…..

এভাবে ৪ দিন মেয়েটা আমার পাশে থাকলো,আমি কি বলে যে ধন্যবাদ দিবো সেটাই ভাবছি,
আমি আর মেয়েটা ভাল বন্ধু হয়ে গেলাম এই কয়দিনে,মেয়েটার নাম তারা,
ওর ফেসবুক আইডি নিয়ে নিলাম,
ভালই চলছিলো ওর সাথে।
একটু একটু করে ভুলেই গেলাম রোজা কে।
তারা আমাকে খুব সার্পোট দিতে লাগলো,
মাঝে মাঝে আমরা দেখা করি,সব চেয়ে অবাকের বিষয় হলো ও আমার ইশারায় আমার কথা বুজে,.

তারা:- নিল,তুমি আজকে আসার সময় আমার দেওয়া নিল পান্জাবী টা পড়ে আসিও,(চেট মেসেজে)
আমি:- ওকে টুনটুনি (আমি তারা কে আদর করে টুনটুনি ডাকি)(msg)
তারপর তারা আমি মিলে অনেক জায়গায় গুরলাম,
৫ মাস পর
একদিন হঠাত আমার ফোনে একটা মেসেজ আসলো,
আমি তারাতারি হসপিটালে গেলাম,
তারার বাবাকে দেখে ইশারা করলাম
আমি:- কাকা তারার কি হয়েছে?(ইশারাতে)

কাকা :-চুপ করে আছে আর কেদে যেতে থাকলো?বাবা আমার মেয়েটা বাচবে না আর কয়েকদিন মাত্র ওর জীবন।
আমার চোখ মুখ অন্ধকার হয়ে আমি ফ্রোরে পরে গেলাম সেন্সলেন্স হয়ে গেলাম,
পরে জানতে পারলাম তারার দুইটো কিডনি ই ডেমেজ হয়ে গেছে,
আমি তারার কেবিনে দৌড়ে যাচ্ছিলাম
হঠাত রোজার মতো দেখলাম নাহ হাসপাতালে,আরে রোজাই তো
আমি আর সে মুখোমুখি ধাক্কা,

রোজা:- নিল তুমি?কেমন আছ?সরি নিল আমি,,,,,,,
কি জেনো বলতে চাইছিলো রোজা,আমি দৌড়ে তারার বেডে গিয়ে দেখলাম
,আমার টুনটুনি এ কি অবস্থা হয়ে আছে,
আমি গিয়ে জরিয়ে ধরলাম,
তারা:- নিল আরও শক্ত করে ধরো আমাকে যেতে দিও না প্লীজ।আমি চলে গেলে তোমাকে কে দেখবে,আমার খুব ভয় হয় তোমাকে নিয়ে নিল,
আমি জরিয়ে দরে আছি তারা কে,তারার জন্য কিছু করতে পারলাম না,
আমি:-টুনটুনি আমি আছি না এই নিল যতখন থাকবে তোমাকে তো যেতে দিবো না।(ইশারা করে)

রোজা দরজায় দারিয়ে আছে,
আমি:- টুনটুনি তোমার কিচ্ছু হবে না আমি আছি না,আমি একটু আসছি(ইশারা করে)
তারা:- নিল একটু তারাতারি আসবে কেমন আর তো এভাবে পাবো না তোমায়।
আমি:- জরিয়ে দরে ওকে একটা চুমু দিলাম,
“রুম থেকে বের হবার সময় রোজা আমার হাত দরে বলে”
(হঠাত)
রোজা:- তারা আমার আপন ছোট বোন!তোমার সাথে কিসের সম্পর্ক
আমি খুব অবাক হলাম,নিয়তি খেলা দেখুন,যে মেয়েটা আমি বোবা বলে আমাকে ফেলে রেখে চলে গেছিলো,সে রোজার আপন ছোট বোন টায় আমার দুঃখের সময় আমার পাশে ছিলো আমি বোবা দেখেও আমাকে কখনও কষ্ট দেই নাই,আমাকে ভালবাসলো

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here