বোবা ছেলের নিয়তি,৪র্থ পার্ট
Writer:- Neel Fardin
আম্মা:- একদম কাদবি না বাবা!আমি তোকে একটা পরি এনে দিবো দেখিস,যে তোর বিপদ আপদে যে পাশে থাকবে,
আমি:-আমি একদিন খুব বড় হবো,বড় গাড়ি সব হবে আমার(মনে মনে বললাম)
[ট্রেন থেকে নেমে নতুন গন্তব্যে দিকে ছুটলাম]
ঢাকা কমলাপুররেল স্টিশন
পারিসা দেখেই আমাকে গলা জরিয়ে ধরলো,
আমার গালে কপালে চুমু দিতে লাগলো,(বড় মামার ছোট মেয়ে)খুব আদরের আমার
বড় মামার বাসায় উঠলাম,মামার ফেমেলীতে মামা,মামী,আর দুইটা মেয়ে,
লুবনা(বড়টা)ইন্টারে পরে
পারিসা(ছোট) ৫ম শ্রেনী পড়ে
পারিসা আমার খুব আদরের
আজ প্রায় ১ মাস হয়ে গেলো আমরা ঢাকাতে আছি,(আমার ফোন নাম্বার আর আইডি চেন্জ করে ফেলছিলাম,নতুন ঠিকানা টা কেউ জানতো না)
মাঝে মাঝে তারার কথা মনে পড়তো,
পরে আমরা মামাদের পাশের বাসায় উঠলাম বাবা মাকে নিয়ে,
ছোট একটা Job করতেছি পাশাপাশি পড়াশোনা ও চালিয়ে যাচ্ছি,
মামা আর আম্মু আমাকে ডাকতেছে!
আমি:- মামা কি খবর তোমার(ইশারা করে)
মামা:- ভালরে,শুন তোর আম্মু আর আমি সিন্ধাত্ব নিসি,লুবনা আর তোর বিয়েটা দেওয়া জন্য!
আমি:-(আকাশ থেকে পড়লাম)আম্মা মামা এটা কি বলতেছে?(ইশারা করে)
আম্মা:-বাবা লুবনা তো ভালই আর আমার খুব পছন্দ!আমার ঘরে এলে তোকে সুখে শান্তিতে রাখবে,
আমি:-তোমরা দুইজনে যদি রাজি থাকো তাহলে আমি আর কি বলবো?(ইশারাতে)
(সত্যি বলতে এতো ধকল গেছে,বিয়ে করার ইচ্ছুক না এখন কি করবো আম্মার কথা রাখতেই হবে,আর বয়স ও বেশি হয় নি ২২ হবে মাত্র)
পারিসা:- না না নিল আমার বর,ওকে আমি কাউকে দিবো না।(ওরের, পিচ্ছিটাও দেখি এখানেও চলে আসছে)
পারিসার কথা শুনে সবাই হাসতে লাগলো,
প্রায় অনেকদিন পর
হঠাত রাস্তা দিয়ে আসার পথে এক্সিডেন্ট করা একটা ঘাড়ি দেখতে পেলাম একটা লোকককে ঘাড়ির মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায়,আপনারা তো জানেন এইদেশে কেউ এক্সিডেন্ট হলে কেউ কাউকে ধরতে চাই না,সবাই শুধু ছবি তুলতে ব্যস্ত,
আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে ওনাকে হসপিটালে এডমিট করে দিলাম,
সারারাত বসে থাকলাম আল্লাহ কাছে প্রথনা করলাম আল্লাহ জেনো লোকটিকে ভাল করে দেই,
ইনশাল্লাহ লোকটি সুস্থ আছে,(ডাক্তার বলে গেছিলো)
ডাক্তার:- শুনেন আপনাকে ডাকতেছে ভদ্রলোকটি, আসুন!
(এই ছেলেটি আপনাকে ঠিক সময় না নিয়ে আসলে আপনার বাচা কঠিন হতো-ডাক্তার বললো)
আমি:-কেমন আছেন এখন?(হাত দিয়ে ইশারা করে)
ভদ্রলোক:- তুমি কথা বলতে পারও না বাবা,
আমি:-( না সুচক ঘাড় নাড়ালাম)
ভদ্রলোক:-তোমাকে কি বলে ধন্যবাদ দিবো আমার জানা নাই,
ওনার ফেমেলীর সবাই আমাকে ধন্যবাদ জানালো
ভদ্রলোক:- তুমি কাল পরশু আমার অফিসে আসিও!(ভিজিটিং কার্ড দিলো)
আমি:- ওকে আন্কেল,
বাসায় গেলাম
আম্মা:- নিল লুবনা এসেছে,লুবনা তোর সাথে কথা বলতে চাই,
(সত্যি বলতে আমি লুবনার সাথে কখনও মিশি নাই,দেখি কি বলে)
দুইজনেই ছাদে আসলাম
আমি:-(ফোনে নোট পেডে লিখতেছি)লুবনা কেমন আছও?
লুবনা:- ভাল ছিলাম কিন্তু তুমি এসে সব গন্ঠগল লাগিয়ে দিলে,তুমি কিভাবে ভাবলে তোমার মতো বোবা কালা কে বিয়ে করবো আমার ভবিষ্যত বলতে কিছু নাই নাকি,তার উপর কেনো ভাল job ও নাই,তোমার সামনে আসতে আমার ইচ্ছে হয়না আর তোমাকে বিয়ে কি করে করবো?
(চুপ করার জন্য অনুরোধ করলাম ইশারা করে)
আমি:- ওকে আমি সব হেন্ডেল করছি তোমার কোনো চিন্তা করার দরকার নাই(নোট প্যাডে)
(ছাদে দাড়িয়ে আছি আর চোখ দিয়ে বৃষ্টি পড়ছে,দৃষ্টি যত দুর যায় তার থেকে কষ্ট সহ্য করতে করতে নিরব পাথড় হওয়ার বাকি,আসলে সত্যি তো বোবা কালা কে কেবা জীবন সঙ্গী হিসাবে চায়,লুবনার এখানে কোনো দোষ নাই,সব আমার নিয়তি,এই বোবা ছেলোটার নিয়তি)
তারা কথা ভাবতে ভাবতে কেমন বটগাছ মতো এক দৃষ্টে কোথায় যেনো তাকিয়ে আছি আর হাসছি ওর আর আমার কাটানো সব মুহুর্ত গুলো,ও কি ভুলেও বোজার চেষ্টা করে নাই আমার মতো একটা সহজ সরল ছেলে ওইসব করতে পারে,চোখে কেমন ধোয়া,জীবন টা বুজি শেষ,,,,
[পিছন থেকে কে জেনো জরিয়ে ধরলো]
পিছনে তাকিয়ে দেখি একি পারিসা,
পারিসা:- এই নিল তুমি কাদসো কেন?কে তোমাকে বকেছে?
আমি:-না কেউ বকে নি(ইশারা দিয়ে)
[হঠাত পারিসা ও কেদে দিলো জরিয়ে ধরে,
আমি ছাড়ানোর চেষ্টা করছি,কেমন মেয়ে দেখুন আমার কান্না দেখেই নিজেই কেদে দিসে,কি করি একে নিয়ে,ছাড় পারিসা]
পারিসা:-বলো কে তোমাকে কষ্ট দিয়েছে,আমি তাকে আচ্ছা করে বকা দিবো এখনই বলো বলো!
রাতে,
আম্মাকে লুবনার ঘটনা বলার পর আম্মা মামাকে মানা করে দিলো,
কয়েকদিন পর
[বড় একটা অফিসের নিচে দাড়িয়ে,আমাকে যে ভদ্রলোকটি আসতে বলছিলো,তার কাছে একটা চাকরি চাই,এই বলতে পারেন উপকারের প্রতিদান নিতে আর কি,ঢাকা শহরের চাকরি পাওয়া তো আর মুখের কথা নাহ]
[একটা কেবিনে ডুকলাম)
ভদ্রলোক:- কি খবর নিল তোমার?
আমি:-ভাল,আপনি(হাত দিয়ে ইশারা করে)
ভদ্রলোক:-তোমার কথা আমার পরিচিত একটা ডাক্তার কে বলেছি?
আমি:- মানে?
ভদ্রলোক:-চলো আমার সাথে!
প্রায় ২ মাস পর
আজ আমার অপারেশন শেষ
ডাক্তার:-আমি যা বলবো তা বলার চেষ্টা করবেন কেমন।
আমি:- ঘাড় নাড়লাম
ডাক্তার:- আমার নাম নিল!
(ভয় হচ্ছে খুব অল্প অল্প গলার আওয়াজ বের হচ্ছে)আ মা র না ম নি ল ল,
ডাক্তার:-জোরে বলুন!
আমি:- আমার নাম নিল!
আমি:- এমা এটা কেরে জরিয়ে ধরছে হঠাত,আবার কাদতেছে,পারিসা তুইইই (অবাক হয়ে)যা সর তো সর,আম্মা আম্মা আমি কথা বলতে পারছি,মামা আমি কথা বলতে পারতেছি,
[আম্মার আর বাবার পা দরে সালাম করতেছি]
আমি:- আল্লাহর অশেষ সুকরিয়া,
৫ মিনিট পর……..
আমি- কি বেপার পারিসা কই
রুম থেকে বের হয়ে দেখলাম বসার জায়গায় বসে বসে কাদতেছে মেয়েটা,ইশরে কি করলাম ওর সামনে গিয়ে বসে ওকে বললাম)
আমি:- পারিসা ও পারিসা (চোখ মুখ হাত দিয়ে ধরে আছে)সরি পারিসা দেখো আমি কথা বলতে পারছি এখন থেকে তোমার সাথে সারাক্ষণ কথা বলবো প্রমিস।
(এরে ভিশন রাগ করছে রে ওই সময় ধাক্কা দিয়ে সরাই দিলাম তাই)
(হঠাত জরিয়ে ধরলো পারিসা)
পারিসা:-তুমি কখনও আমাকে ছেড়ে যাবে না বলো,
আমি:- প্রমিস যাবো না!
পারিসা এখন ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ে,
আমাকে সব সময় কড়া শাসনে রাখছে জানেন,
আমার ভালই লাগে পারিসা কে কিন্তু ওতো এখনও খুব ছোট,তাই বোনের চোখে দেখি
ভদ্রলোকটির কোম্পানিতে আমি ভাল পোস্টে চাকরি পেয়ে গেলাম,খুব পরিশ্রম করতে লাগলাম
একদিন….
আজিম আন্কেল:-জানো তুমি কেন চাকরি টা পেয়েছো?(ভদ্রলোকের নাম আজিম)
আমি:- না তো আন্কেল,আমার ও প্রশ্ন ছিলো কিন্তু বলি নি কখন?
আজিম আন্কেল:- তুমি সেই দিন শুধু আমাকে বাচাও নি তুমি হাজার হাজার পরিবারকে বাচিয়েছো,তারা ধংস হয়ে যেতো যদি আমার কিছু হয়ে যেতো ধন্যবাদ বাবা
আমি:- আরে এটা আমার দ্বায়িত্ব,
(তখন থেকে আর পড়ালেখা করা বাদ দিয়ে আজিম আঙ্কেল এর বিশাল কোম্পানি টা সামলাচ্ছি এক হাতেই)
দেখতে দেখতে ৬ বছর হয়ে গেলো নিজের এলাকা ছেড়ে,,,,,,,,
৫ বছর পর (নিজের এলাকা ছেড়ে ঢাকাতে এসেছি ৬ বছর হলে গেলো)কেমন আছে তারা হয়তো তারারর বিয়ে হয়ে গেছে,রোজা ও তাদের বাবা কেমন আছে জানতে খুব ইচ্ছে হচ্ছে
চলবে……