ব্যস্ত_শহর_আজ_নিরবতায়,শেষাংশ

0
865

#ব্যস্ত_শহর_আজ_নিরবতায়,শেষাংশ
#মাইশাতুল_মিহির

রুমের বাহিরে বিশালাকৃতি ডাইনিং রুম। সকল আসবাবপত্রের মাঝে রয়েছে অভিজাত্যের ছোঁয়া। বিলাসিতার জন্য কিছুর কমতি নেই। তবে প্রত্যেকটা জিনিসের সাথে রয়েছে তিক্ততা। সব কিছুই বিষাদে মিশে আছে। সোফায় বসে আছে তুরান। উষ্কখুষ্ক তার মলিন চেহারা। ব্লেজার টা সোফার এক পাশে পরে আছে। এক হাতে টেনে টাই ঢিলে করে রেখেছে। কিছুতেই মনকে শান্ত রাখতে পারছে না। ডিভোর্স পেপারটা নিঝুমের হাতে দেওয়ার পর থেকে অস্থির হয়ে আছে তার মন। তবে কি সে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে? নিঝুম নামের এই মেয়েটিকে সে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে। সন্তান জন্ম দিতে না পারার শত্বেও অবহেলা করেনি তুরান। কিন্তু সম্পর্কের সময়ের সাথে সাথে আন্ডারস্ট্যান্ডিং কমে এসেছে। প্রতিটা ব্যাপারে নিঝুমের অতিরিক্ত প্রশ্ন আর সন্দেহ তাকে বিষিয়ে তুলেছে। নিঝুমের মাঝে এমন এক নিকৃষ্ট ধারনা ঢুকেছে যার বলার বাহিরে। তার মতে, বেবি না হওয়ার কারণে তুরান পরনারীতে আসক্ত হয়ে যাবে কিংবা গেছে। এই ব্যাপারে তুরান অসন্তুষ্ট। একবার নয়, বারবার বুঝিয়েছে নিঝুমকে সে এমন কিছুই করবে না। এইসব তার ভুল ধারণা। তাও নিঝুম তাকে সন্দেহের তালিকা থেকে দূর করলো না। তুরানের একটাই কথা, ভালোবাসলে তো বিশ্বাস করতেই পারতো? বেবি হবে না শুনার পর থেকে এক প্রকার মানসিক রুগীর মতো আচরন শুরু হয়েছে নিঝুমের। কোনো ব্যাপার স্বাভাবিক ভাবে নেয় না। অতিরিক্ত শব্দ টা যোগ হয়েছে তার ডিকশনারিতে। অতিরিক্ত শব্দটার কারণেই তুরান রাগের বশে ডিভোর্স পেপার দিয়েছে নিঝুমের হাতে। কিন্তু মনটা এখন বড্ড আনচান করছে। চোখ তুলে রুমের দরজার দিকে তাকালো। মেয়েটা এতো সময় ধরে রুমে কি করছে? কান্না করছে নিশ্চয়? কান্না করলে তো নিঝুমের মাইগ্রেনের ব্যাথ্যা উঠে। বিরক্ত হলো কিছুটা। মেয়েটা নিজের ব্যাপারে বড্ড উদাসীন। অসল শরির টেনে উঠে দাঁড়ালো তুরান। রুমের সামনে এসে দরজায় ধাক্কা দিয়ে ডাকলো, ‘নিঝুম? দরজা খুলো। কান্নাকাটি বন্ধ করো প্লিজ। মাইগ্রেনের ব্যাথা উঠবে। নিঝুম? অনেকক্ষণ হয়েছে রুমে একা আছো। নিঝুম?’

কোনো প্রকার সাড়াশব্দ আসলো না রুম থেকে। তুরান আরো কয়েকবার ডাকলো। প্রথমের ন্যায় নিস্থব্ধ হয়েছে আছে রুমের ভিতর। বুক কাঁপতে লাগলো তুরানের। অস্থির হয়ে জোড়ে জোড়ে দরজা ধাক্কাতে লাগলো এবার। কিন্তু সাড়া পেলো না। ভয় এসে হানা দিলো তার মনে। পাগলপ্রায় হয়ে এলো। মেয়েটা ভিতরে কি করছে? ঠিক আছে তো? কি থেকে কি করবে বুঝে আসছে না তুরানের। আশেপাশে তাকিয়ে একটা কাঠের চেয়ার এনে দরজায় আঘাত করতে লাগলো। একা শরিরে পেরে উঠলো না। দৌড়ে তার এপার্টমেন্টের বাহিরে আসলে তারই বয়সী পরিচিত একজন প্রতিবেশীকে দেখতে পেলো। কোনো রকমে ঘটনা খুলে বললো ‘ দরজা ভাঙ্গতে হবে এজ আর্লি এজ পসিবল’। ছেলেটি তুরানের সাথে দ্রুত বাসায় ঢুকে দরজা ভাঙ্গার প্রয়াস করতে লাগলো। বেশকিছু সময় পর সফল হলো দুজন। কিন্তু ভিতরে ঢুকে স্বব্ধ হয়ে গেলো তারা। দুজনের স্থির দৃষ্টি সিলিংয়ের ঝুলন্ত লাশের দিকে। পাশের ছেলেটির চোখ বড়বড় করে তাকালো। তাড়াতাড়ি এপার্টমেন্ট থেকে বেড়িয়ে এসে সবাইকে ডাকলো। সাথে পুলিশকেও ইনফোর্ম করে দিলো।

তুরান বাকরুদ্ধ। প্রতিক্রিয়াহীন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চোখ থেকে তার আপনাআপনি পানি গড়িয়ে পরলো। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন লোক সেখানে উপস্থিত। দুজন ব্যক্তি সবাইকে দূরে থাকার নির্দেশ দিচ্ছে। পুলিশ আসার আগপর্যন্ত যেন কেউ লাশের দিকে এগিয়ে না যায়। তুরান এখনো আগের ন্যায় স্বব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মস্তিষ্কের নিয়রণ কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে তার। সিলিংয়ের থেকে চোখ সরালে টেবিলের উপর সাদা কাগজের চিরকুট টা দেখতে পেলো। ধীর পায়ে এগিয়ে এসে কাঁপাকাঁপা হাতে চিরকুট টা হাতে নিলো। চিরকুট টা পড়ে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে এলো তার।

‘আমার মৃ’ত্যুর পর আমাকে ছুঁবেনা। সেই অধিকার তুমি রাখোনি।’

চিরকুট টা পড়েই চেঁচিয়ে উঠলো তুরান। নিজেকে সামলে রাখতে পারলো না। ‘ নিঝুম ‘ বলে বলে উচ্চ আওয়াজে চেঁচাতে লাগলো। লাশের দিকে এগিয়ে আসতে চাইলে দুজন লোক বাধা দিলো তাকে। তুরান শব্দ করে বাচ্চাদের মতো হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো। নিজেকে ছাড়িয়ে নিঝুমের ঝুলন্ত লাশের দিকে এগিয়ে আসতে চাইলো। কিন্তু পারলো না। পাগলের মতো কাঁদতে লাগলো। এক পর্যায়ে নিজের হাত দিয়ে গায়ে আঘাত করতে লাগলো। তাকে থামানোর চেষ্টা করছে আশেপাশে মানুষ। কিন্তু এলোপাথাড়ি ভাবে হাত-পা ছোড়াছুড়ির কারণে কেউ সামলাতে পারছে না। আশেপাশে টেবিলে থাকা বিভিন্ন শো-পিস হাতে নিয়ে নিজের শরিরে আঘাত করতে লাগলো তুরান। চুল গুলো খাঁমচে ধরে টানতে লাগলো। পাগলের মতো এই আচরন। হয়তো প্রিয় মানুষের লাশ চোখের সামনে ঝুলতে দেখে নিজেকে ঠিক রাখার মতো শক্তি পেলো না। পুলিশ এসে সিলিং থেকে নিঝুমের নিথর দেহে নামালো। প্যাকেট করে গাড়িতে উঠালো পোস্টমর্টেমের জন্য। তুরান বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। একটিবার! শুধু মাত্র একটিবারের জন্য নিঝুমের কাছে আসতে চাইছে। নরম তুলতুলে গালে চুমু খেতে চাইছে। কিন্তু আশেপাশের নির্দয় মানুষদের জন্য পারছে না। তাদের বুঝাতে অক্ষম সে। পাগলের ন্যায় অস্বাভাবিক হলো তার আচরন। নিজের গায়ে এতো বাজে ভাবেই আঘাত করেছে যে কিছু কিছু অংশ কেটে রক্ত ঝড়ছে। তুরানের ভ্রুক্ষেপ নেই সেই দিকে। সে নিজেকে ছাড়িয়ে ছুটে যেতে চাইছে তার নিঝুমের কাছে। শেষবারের মতো হাত ধরতে চাইছে। তারপর নাহয় নিজের মৃত্যুর অপেক্ষা করবে।

তার এমন উদ্ভট আচরনের কারণে প্রতিবেশী তাকে পাগল বলে আখ্যাত করছে। কেউ বলছে ‘ বউ মরায় পাগল হয়ে গেছে বেচারা’। সামাল দিতে পারছে না কেউ। তাই বাধ্য হয়ে ম্যান্টাল হাসপাতালে যোগাযোগ করলো তারা। কয়েকজন নার্স এসে ইনজেকশন পুশ করলো তার গায়ে। ধীরে ধীরে পাগলামি কমলো তুরানের। নিস্তেজ হতে লাগলো দেহ। ভর ছেড়ে পরে গেলো তুরান। ঠোঁট আওড়ে ডাকতে লাগলো নিঝুমকে।
.
কামরায় থাকা বাতির আলো নিভু নিভু। মাঝে একটা সিঙ্গেল বেড সাদা চাদড় দিয়ে মোড়ানো। বন্ধ ঘর। নিস্থব্ধ পরিবেশ। মাঝারী আকাড়ের জানালা দিয়ে বাহিরের দৃশ্য স্পষ্ট ভাস্যমান। তবে লোহার জাল দিয়ে বন্ধ এই জানালা। তবুও ব্যস্ত নগরীর চলন্ত সকল যানবাহনের চলাচল দেখা যায়। হাতে ইটের টুকরো দিয়ে রুমের দেয়াল ঝুড়ে শুধু ‘ নিঝুম ‘ নামটা লিখে চলছে তুরান। পরনে তার ম্যান্টাল হস্পিটালের পোশাক। চুল গুলো সম্পূর্ণ রূপে এলোমেলো। চোখের নিচে কালো দাগ পরে আছে। বলিষ্ঠ দেহের মাঝে এখন রোগা রোগা ভাব এসে পরেছে। নিঝুম বিহীন সে অসম্পূর্ণ। তাই এতো অযত্ন তার। আজ কতোদিন এখানে বন্ধি সে জানে না। এই বন্ধিখানায় আছে কেন সেটাও তার অজানা। শুধু একটাই কথা জানে। সেটা হচ্ছে ‘মানুষ গুলো তাকে তার নিঝুমের কাছে যেতে দেয় না।’ তারা অনেক খারাপ। তুরান নিঝুমের কাছে যেতে চাইলে তাকে বেধে রাখে। কখনো ইলেক্ট্রিক শক দেয়। কখনো ইনজেকশন পুশ করে। এইসবে তুরানের অনেক কষ্ট হয়। চিৎকার করে কাঁদে। নিঝুমকে ডাকে। পালাতে চায় এখান থেকে। কিন্তু কেউ তাকে সাহায্য করে না। উলটো আঘাত করে তার রোগা দেহে। তুরান তো বেশি কিছু চাইছে না। শুধু নিঝুমের সাথে একবার দেখা করতে চাইছে। একবার নিঝুমকে ছুঁতে চাইছে। নির্দয় মানুষ গুলো তাকে দিচ্ছে না। পাষাণ তারা। বড্ড পাষাণ।

হঠাৎ-ই বদ্ধ কামড়ায় ক্যাচ শব্দ তুলে দরজা খুললো নার্স ছেলেটি। হাতে তার খাবারের প্লেট। ছেলেটিকে দেখে-ই ভয়ে তুরান গুটিয়ে গেলো। একদম দেয়াল ঘেঁষে কাচুমুচু হয়ে বসে রইলো। ভয়ার্ত তার দৃষ্টি। নার্স ছেলেটি বিরক্তির সাথে এগিয়ে এসে তুরানের সামনে প্লেট ঠেলে দিয়ে বললো, ‘চুপচাপ খেয়ে নে।’

আরো গুটিয়ে গেলো তুরান। দু হাঁটু জড়িয়ে ঘার নিচু করে রাখলো। মাথা এ-পাশ থেকে ও-পাশ করলো কেবল। অর্থাৎ সে খাবে না। নার্স ছেলেটি মহা বিরক্ত হলো বেশ। ধমকে উঠলো সে। মৃদু কেঁপে উঠলো তুরান। তখুনি সেখানে হাসপাতালের একজন ডক্টর উপস্থিত হলেন। নার্স ছেলেটিকে ধমকাতে দেখে শাসালো তাকে। চাকরি থেকে রিজাইন দিয়ে দেবার ভয় দেখালো। নার্স ছেলেটি ‘ স্যরি ‘ বলে বেরিয়ে গেলো কক্ষ থেকে। অর্ধবয়স্ক ডক্টর তুরানের সামনে হাঁটু ভেঙ্গে বসে খাওয়ার জন্য অনুরোধ করলো। তুরান প্রতিবারের মতো এবারো বললো ‘আমি নিঝুমের কাছে যাবো। আমি নিঝুমের কাছে যাবো।’

বিড়বিড় করে এই একই কথা বারংবার বলতে লাগলো। ডক্টর তুরানকে আশ্বাস দিয়ে জানাল, ‘অবশ্যই যাবে তুমি। তোমাকে আমরা নিঝুমের কাছে দিয়ে আসবো। কিন্তু তার আগে তোমাকে খেতে হবে। না খেলে নিঝুম রাগ করবে তো। তুমি কি চাও নিঝুম রাগ করুক? বলো?’

‘ নিঝুম রাগ করবে ‘ শুনে তুরান রাজি হলো খেতে। প্লেটে থাকা ভুনা খিচুড়ি গাপুসগুপুস করে চটজলদি খেয়ে নিলো। খাওয়া শেষে তুরানের হাত মুখ মুছে ডক্টর চলে যাবার জন্য উঠে দাঁড়াল। তখুনি তুরান আগ্রহভরে জিজ্ঞেস করল, ‘আমাকে নিঝুমের কাছে নিয়ে যাবেন না?’

হতাশ হলেন ডক্টর। অসহায় চোখে তাকালেন তুরানের দিকে। নিঝুম নামের মেয়েটা বড্ড ভাগ্যবতী ছিলো বলতে হবে। এতো ভালোবাসার পরেও কেন সুই’সাইড করলো মেয়েটি? সে কি জানে তার বিরহবেদনায় কেউ একজন পাগলাগারদে ভর্তি আছে? প্রতিনিয়ত তার নাম ধরেই কাঁদে ছেলেটি? হয়তো এমন কিছু আন্তাজ করতে পারেনি নিঝুম। নাহলে অকালে সুই’সাইড নামক জঘন্য সিদ্ধান্ত নিতো না। দীর্ঘশ্বাস ফেললেন নিরবে। তুরানকে বুঝানোর জন্য বললেন, ‘নিঝুম তো ঘুমাচ্ছে। এখন অনেক রাত। কাল সকালে তোমাকে নিয়ে যাবো।’

ক্ষিপ্ত হলো তুরান। হুংকার করে উঠলো তাৎক্ষনাৎ। রাগান্বিত হয়ে উঠে ডক্টরের গ:লা চে:পে ধরলো। রাগে চোখমুখ শক্ত হয়ে এলো তুরানের। কপালের রগ ফুলে নীল বর্ণ ধারণ করলো। দাঁতে দাঁত মিশিয়ে চেঁচিয়ে উঠলো, ‘তোরা সবাই নিষ্ঠুর। মিথ্যাবাদী। আমাকে আমার নিঝুমের কাছে যেতে দিস না। আজকে তোদের আমি মে’রে’ই ফেললো। বাঁচিয়ে রাখবো না কাউকে। আমি নিঝুমের কাছে যাবো।’

ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠলেন ডক্টর। নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো। কিন্তু রাগান্বিত তুরানের সাথে পেরে উঠছেন না। কক্ষে চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে কয়েকজন নার্স দৌড়ে আসলো। তুরানকে থামানোর চেষ্টা করল। তুরান ছাড়ার বদলে উলটো আরো শক্ত করে ধরছে ডক্টরের গ’লা। লোকটির চোখ কোটর থেকে বেড়িয়ে আসার উপক্রম। আরেকটু হলে বোধহয় প্রাণহীন হয়ে পরবে। প্রথমে আসা নার্স ছেলেটি তুরানের উপর ক্ষিপ্ত হলো। পাগল ছেলের জন্য স্যারের কাছে বকা শুনতে হয়েছে তার। পূর্বের ক্ষোভ এখন প্রকাশ করলো। এগিয়ে এসে তুরানের মুখ বরাবর ঘু:ষি মা:র:লো একটা। দূরে ছিটকে পরলো তুরান। নাক দিয়ে গরগর করে তরতাজা র:ক্ত বের হতে লাগলো। তবুও ক্ষান্ত হলো না তুরান। প্রথমের থেকে দ্বিগুণ গর্জে উঠলো সে। দুইজন তার দুই হাতের বাহু ও আরেকজন পিছন থেকে তার বক্ষস্থল আঁকড়ে ধরে রেখেছে। হাত-পা ছুটাছুটি করছে তুরান। নিজেকে ছাড়িয়ে নার্স ছেলেটি ও ডক্টরকে মা:রার জন্য প্রয়াস করছে। নার্স ছেলেটি আবারো এসে এলোপাথাড়ি ভাবে একনাগাড়ে কয়েকটা ঘু:ষি দিলো। দুর্বল হয়ে পরলো তুরান। দেহ মেঝেতে লুটিয়ে পরলো তার। ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠলো। চোখ দিয়ে অঝড়ে নোনাজল বেড়িয়ে আসতে লাগলো। চিৎকার করে বলতে লাগল, ‘আমি নিঝুমের কাছে যাবো। আমি নিঝুমের কাছে যাবো।’

তার কথার পরোয়া করলো না কেউ। কড়া ডোজের ঘুমের মেডিসিন ইনজেকশনের মাধ্যমে দেহে পুশ করলো। আস্তে আস্তে নিস্তেজ হতে লাগলো তুরানের মস্তিষ্ক। দেহ মেঝেতে লুটিয়ে পরলো একদম। বেরিয়ে গেলো সবাই। দরজা বন্ধ করে দিলো তারা। একা হয়ে পরলো তুরান। দুই হাত দুই দিকে মেলে শুয়ে রইলো। ঘুমন্তনগরীতে পারি জমাতে লাগলো চোখ দুটো। ঝাপসা চোখে নিঝুমের মায়াবী হাস্যউজ্জ্বল মুখ ভেসে উঠলো। ঠোঁটে স্মিতি হাসি ফুটে উঠলো তার। চোখের কোন থেকে কয়েক ফোটা জল কানের পাশ দিয়ে গরিয়ে ধুলোমাখা মেঝেতে আঁচড়ে পরলো। স্বপ্নে দেখল সে। নিঝুম এসেছে। পাশে বসে আদুরে দুই হাতে আগলে বুকে জড়িয়ে ধরেছে। অন্ধকার হয়ে গেলো চারপাশ। বাহিরের ঘোলাটে শহরে ব্যস্ত মানবজাতি। জ্যোৎস্নার আলো নিভে পরিবেশ অন্ধকারাচ্ছন্ন হলো। কোলাহলমুক্ত হয়ে গেলো নগরী। প্রেমিক ভোগ করতে লাগলো ভালোবাসার শূন্যতা। নগরী আজ নির্জনতায়। ব্যস্ত শহর আজ নিরবতায়।

সমাপ্ত -,-

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here