ব্রেকআপ & ব্রেকআপ,Part : 11

0
1350

ব্রেকআপ & ব্রেকআপ,Part : 11
Write : Sabbir Ahmed

-প্রত্যকটা গল্পে আমি তোমাকে প্রোপজ করি। তুমি কি করো? তুমি চুপ থাকো তোমার জন্য ওয়েট করতে হয় আমার। এই গল্পেও তুমি অনেকটা লেট করেছো৷ আমার কি অপেক্ষা করে থাকতে কষ্ট হয় না?? তুমি আমার জন্য কিছুই করো না আর করতেও হবে না। শুধু ভালবাসলেই চলবে। আর হ্যাঁ রাগ দেখাও কেনো আমাকে? রাগ শুধু তোমারই আছে আমার নেই? আর কখনো যদি তোমার কথায় রাগের সুর পাই তে তখনই ব্রেকআপ……(ইরা)
,,
উনি যা বললেন ততে মুখের কথা কেড়ে নেওয়ার মতো।
-আচ্ছা আমি বাবাকে তোর কথা এবার সিরিয়াসলি বলব(ইরা)
-না (আমি)
-কেনো?
-উনি যদি মানা করে। আর আপনাকে যদি সড়িয়ে বা আমাকেই যদি
-বন্ধুত্বের উপর বিশ্বাস রাখ
,,
ইরা আমাকে ছেড়ে দিলো। সে ও বেশ চিন্তিত সাথে আমিও। আমি ঐ পরিস্থিতির সময় শুধু তার কথাই ভাবছিলাম অন্য কোনো কিছু মাথায় আসছিলো না।
,,
দুপুরে ইরাকে দেখতে আসলো, দেখে চলে গেলো। হয়তো তারা পছন্দ করেছে। পছন্দ না করে উপায় নেই।
রুমে বসে হতাশ হওয়া ছাড়া আমার কোনো উপায় ছিলো না। ইরা সেই যে বেড়িয়ে গেছে আর রুমে আসার নাম নেই। আমিও বাইরে যাওয়ার সাহস পাচ্ছি না।
,,
দুপুরে শুধু বাড়ির কাজের মেয়েটা খাবার দিয়ে চলে যায়। আমার এমন অবস্থা মনে হচ্ছে কোনো কারাগারে আছি। বাইরে বেড়োনোর কোনো পথ নেই।
,,
সন্ধ্যায় ইরা রুমে আসলো। উনি আসতে না আসতেই আমিও তার রুমে গেলাম। আর গিয়ে যা শুনলাম সেটা আমি কখনোই ভাবিনি৷ উনি বলতে শুরু করলেন…
-বাবার ছোট বেলার বন্ধুর সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেছেন। উনারা আমাকে দেখে পছন্দ করেছে। আজ উনাদের যে হাসিমুখ দেখলাম সেটা আমি ভাঙতে পারবো না (ইরা)
,,
কথাটা শুনে বুকের ভেতরটা কেমন যেন আটকে গেলো মনে হলো বুকে পাথর এর ভর করেছে। শুনেছি বুক ভার হলে চোখে পানি চলে আসে। আমি কোনো রকম চোখের পানি সামলিয়ে বললাম..
-সমস্যা নেই, আপনি যেটা বলেন (আমি)
-তুমি আমার উপর রাগ করবে তাই না?(ইরা)
-আর না, আপনার সিদ্ধান্তে আমি খুব খুশি। পরিবারের কথা চিন্তা করেই সব করতে হয়
-তোমার কথায় কান্নার আওয়াজ পাচ্ছি
-আরে নাহহ কি যে বলেন কান্না করবো কেন??
-আমি রাজি হওয়াতে আমার বাবা যে কতো খুশি হয়েছে সেটা আমি তার চোখ মুখ দেখেই বুঝেছি
-হুমমম, আচ্ছা আপনি ই করেন আপনি রেস্ট নেন আমি আমার রুমে যাই
-…(ইরা কিছু বলল না চুপ করে বসে থাকলো। হয়তো আমার কথাও সে ভাবছে)
,,
আমি রুমে এসে আর কি করবো, ছেলেদের তো আওয়াজ করে কান্না করতে নেই লোকে খারাপ বলবে। রুমের মধ্যে কিছুক্ষণ থাকলাম ভালো লাগলো না। বাসার ছাদের দিকে রওনা দিলাম। আমি কখনো যাই এ বাসার ছাদে এই প্রথম যাচ্ছি।
,,
ছাদে পৌঁছে এক কোণে চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছি। ভাবছি ম্যাম এর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যাবো। কারণ এ কষ্ট সহ্য করার মতো না। আমি সহ্য করতে পারছি না। হঠাৎ ছাদে কারও উপস্থিতি টের পেলাম। একটা লোক আমার দিকে এগিয়ে আসছে। কাছে আসতেই তার ফেস দেখে বুঝলাম এটা ইরার কাকা।
-এই শীতে এত রাতে ছাদে কি করিস??
-নাহহ মানে এমনি বাতাস খেতে আসছিলাম একটু
-কিহহ! এই শীতে বাতাস??
-রুমে বসে ভালো লাগছিলো না তাই আর কি…
-বেশ চালাক তুই
-…(ভাবছি কি চালাকি করলাম)
-আমার কথার সোজা উত্তর দিবি
-জ্বি স্যার
-ইরাকে ভালবাসিস??
,,
কি বলব বা কি বলা উচিত, সত্যিটাকি বলব?আবার আমার কোনো বিপদ আসবে না তো? সত্যিটাই বলব যা হবার হবে।
-হুমমম ভালবাসি(আমি)
-এই জন্যই তোকে চালাক বলেছি (কাকা)
-…(আমি চুপ)
-তো কতদিন হলো তোদের রিলেশন এর
-কয়েক ঘন্টা
-মানে??
-আজ সকালে উনাকে ভালবাসার কথা বলেছি।
-তো সে কি বলেছে
-প্রথমে হ্যা বলেছিলো
-তারপর?
-ছেলে পক্ষ দেখে যাওয়ার পর আমাকে মানা করে দেয়
-কেনো??
-উনি এই বিয়েতে রাজি হওয়ায় আপনারা বাসার সবাই খুশি হয়েছেন অনেক। আপনাদের হাসি মুখ দেখে এসে উনি আমাকে মানা করে
-বাহহ তুই তো বেশ সাহস নিয়ে আমার সাথে কথা বলছিস ভয় করছে না তোর?
-আপনি তো সত্যিটা বলতে বললেন
-হুমমম তো তুই এখন কি করবি??
-চলে যেতে হবে এখান থেকে
-রাতেই?
-না সকালে উনার দেখা করে চলে যাবো
-বাহহ তো দেবদাস হয়ে কোথায় ঘুরে বেড়াবি?
-…(আমি চুপ হয়ে গেলাম। উনি মজা নিচ্ছেন বোঝাই যাচ্ছিলো)
-চুপ হয়ে গেলি কেনো বল
-জ্বি স্যার আর কিছু না। আমি আসলে ভুল করেছি। মাফ করে দিন আমি কাল সকালেই চলে যাবো
-হুমমম যা রুমে যা,
-জ্বি
-এই শোন
-বলেন
-স্মোক করিস?
-জ্বি না
-হুমমম বাসা কোথায় তোর?
-রাজশাহী
-হুমমম সমস্যা
-জ্বি স্যার বুঝলাম না
-কিছু না সকাল সকাল চলে যাস, নেক্সট টাইম আমার সামনে পড়লে সমস্যা হবে তোর, আমার সামনে যেন না দেখি
-জ্বি স্যার আর দেখবেন না আমাকে
,,
রুমে আসলাম, তার সাথে কথা বলতে ভয় তো করছিলোই না, মনে হচ্ছিলো আরও কিছুসময় কথা বলি। তারপর ভাবলাম আমার সাথে তার যে কথাটা হয়েছে এটা ম্যাম কে জানানো দরকার। চলে গেলাম তার কাছে। যেসব কথা হয়েছে সব বলে আবার নিজের রুমে আসলাম। কিছুসময় পর মনে হলো আসল কথাটা মানে আমি যে কাল চলে যাবো এটা বলাই হয়নি।
,,
আবার ঢুকলাম তার রুমে, আর ঢুকতেই চোখ কোনো কিছুতে আটকে গেলো। উনি ড্রেস চেঞ্জ করছিলেন। যা দেখার আমার চোখ দেখে ফেলেছে আমার কোনো দোষ নেই। আমি নিজেই অন্যদিকে ঘুরে রুমে চলে আসবো তখনই উনি বললেন..
-এই দাঁড়া (ইরা)
-ম্যাম আমি কিছু দেখিনি (আমি)
-কিছু দেখা না দেখার কথা আমি বলিনি, কি বলতে আসছিলি সেটা বল
-আমি কাল সকালে চলে যাচ্ছি
-আরে অন্যদিকে ঘুরে আছিস কেনো?? আমার শরীরে পোশাক আছে এখন এইদিকে তাকা
,,
ঘুরে তার দিকে তাকালাম এখন সব ঠিকঠাক আছে।
-কি যেন বলতেছিলি?? (ইরা)
-এত জায়গা থাকতে রুমে ড্রেস চেঞ্জ করতে হবে কেনো?? (আমি)
-এইটা বলতে আসছিলি??
-না
-তুই বলবি নাকি মাইর শুরু করবো?
-বলছি বলছি আমি কাল সকালে চলে যাচ্ছি
-কোথায়?
-আমার গ্রামের বাড়ি
-কেনো?
-আমি এখানে থাকতে পারছি না দম বন্ধ হয়ে আসছে
-এতদিন তো দম বন্ধ হয়নি আজ হচ্ছে কেনো?
-দেখেন ভালবাসার মানুষটি চোখের সামনে থেকে এভাবে হাড়িয়ে যাবে আমি এটা দেখতে পারবো না
-তুই যদি যাস ব্রেকআপ করে তারপর চলে যাবি
-ঠিক আছে ব্রেকআপ
,,
যা বলার বলে এসে কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লাম।
উনার কথা ভাবতে ভাবতে চোখের পাতাটা বন্ধ হয়ে গেলো।
রাত তখন কতো হয়েছে আমি জানি না আমার কম্বল এর নিচে কাউকে অনুভব করলাম। কেউ একজন এখানে এসে শুয়ে আছে। নিজের ঘুম ভাঙাতে চোখ খুললাম। কম্বল টা মাথার উপর থেকে সড়িয়ে দেখি ইরা আমার পাশে শুয়ে আছে। আমি উঠে বসাতে ফ্যাল ফ্যাল করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। উনাকে দেখে অবাক হয়ে যাই আমি। কয়েকদিন পরে যার বিয়ে সে আমার রুমে আমার সাথে একই বিছানায় এসে শুয়ে আছে! এর মতলব টা কি?
-যেমন ছিলি তেমন করে শুয়ে থাক (ইরা)
-আপনি এখানে কি করেন? (আমি)
-দেখছিস না শুয়ে আছে
-আপনার রুমে যান এখানে কি?
-এটাও আমার রুম
-এভাবে এত কাছে আসা ঠিক না
-কোনটা ঠিক তোকে বলতে বলছি আমি। যেমনটা ঘুমিয়েছিলি তেমনটাই ঘুমাতে থাক
-শোনেন আপনি…
,,
আমাকে কিছু বলতে দিলো না। উনি উঠে আমার মুখ চেপে ধরলো। তারপর শুইয়ে দিয়ে উনি আমার পেটের উপর বসে কম্বল টা আমার মাথার পেছনে গুঁজে দিলো। তারপর তার ফোন এর লাইট অন করে সাইডে রাখলো। ম্যাম তার পা দুটো ভাঁজ করে ভালভাবে আমার পেটের উপর বসলো তারপর তার হাতদুটো গালে রাখলো।
,,
বাইরে থেকে এই অবস্থা দেখে মনে হবে একটা ত্রিভুজ এর মতো। ভেতরে আলো থাকায় ছোট্ট একটা তিনকোণা ঘরের মতোই লাগছিলো। তারপর..
-তোর সাহস কি করে হয় আমার সাথে ব্রেকআপ করার?? (ইরা)
-….(আমি চুপ)
-শুভ উত্তর দে নাহলে তোর খবর আছে
-আপনার যাতে ভালো হয় সেই জন্য করেছি
-তুই ব্রেকআপ করার কে? করলে আমি করবো
-আমি করতে পারি না?
-তুই কেনো করবি? ভালো তো আমি বাসি, ব্রেকআপ আমি করবো?
-আর আমি কি ভালবাসি না?
-আমার থেকে কম। সো তোর ব্রেকআপের কোনো দাম নেই…

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here