ব্রেকআপ & ব্রেকআপ,Part : 12

0
1606

ব্রেকআপ & ব্রেকআপ,Part : 12
Write : Sabbir Ahmed

-তুই কেনো করবি?? ভালো তো আমি বাসি, ব্রেকআপ আমি করবো (ইরা)
-আর আমি কি ভালবাসি না? (আমি)
-আমার থেকে কম, সো তোর ব্রেকআপের কোনো দাম নেই
-আচ্ছা আপনি পেটের উপর থেকে নামেন ব্যাথা করতেছে
-করলে করুক আমি কি করবো??
-আপনি যা করছেন সেটা ঠিক না,
-কি করতেছি আমি??
-এই যে এভাবে বসে আছেন আবার…
-তোকে জ্ঞান দিতে বলেছি আমি?
-জ্বি না
,,
এরপর ইরা তার হাত দিয়ে আমার ঠোঁট স্পর্শ করা শুরু করলো। নাকে চোখে হাত বুলিয়ে দিলো।
-আমি যে বসে আছি তাতে কি তোর বেশি কষ্ট হচ্ছে?? (ইরা)
-না। কিন্তু এই রকম ভাবে হাত দিচ্ছেন এটা ভালো লাগছে না
-আই লাভ ইউ
-নতুন বরকে বইলেন
,,
কথাটা বলার সাথে সাথে গালে চর বসিয়ে দিলো।
-আই লাভ ইউ টু বল নয়তো আরও মারবো (ইরা)
-টু টু টু
-কিসের টু টু পুরোটা বল
-ভালবাসি আমিও
-ওয়াও খুব বলেছেন চলো এখন রোমান্স করি
-ম্যাম ওয়েট। কিসের রোমান্স? আমি তো আপনার বর না এগুলো ঠিক হবে না আপনি আপনার রুমে যান
-আহারে আমি তো রোমান্স করবোই সে বিয়ে হোক আর না হোক
-ম্যাম
-কি??
-ছেড়ে দেন না
-ওলে খুব ভয় লাগছে তোমাল?
,,ইরা বসা থেকে এবার আমার পুরো শরীরের উপর শুয়ে পড়লো। ভয়ে বুকের মধ্যে দুড়ুম দাড়ুম শব্দ হচ্ছে। ইরা এবার আমার বুকের উপর হাত রেখে তাতে তার থুঁতনি রাখলো। আর বোকা বোকা গলায় বলল….
-ভয় নেই এই যে তোমার কাঁধ থেকে মাথা পর্যন্ত আজ আমার এটুকুতে আমি যা ইচ্ছা করবো
,,
উনাকে আর থামাতে পারলাম না। ভেতরে ফোনের লাইট নিভিয়ে দিয়ে আমার ঘাড়ে আর গলায় তার ঠোঁটের স্পর্শ দেওয়া শুরু করলো। তার সন গুলো চুল আমার দিকে হেলে ছিলো। আর উনি তো তার কাজ করেই যাচ্ছেন। কিছুসময় পর…
-আমি তোমার বুকে এখন ঘুমাবো সকালে আমাকে ডেকে দিয়ো (ইরা)
-আমি কিছু করতে পারি না? (আমি
-তুমি আবার করবা??
-তুমি মানে সরি আপনি যেগুলো করলেন
-ঐ না তুমি কেনো করবা? তুমি কিচ্ছু করতে পারবে না
-হুমমম
-রাগ?
-আরে না কি বলেন রাগ করবো কেনো সরি
,,
ইরা ফোন এর লাইট আবার অন করলো।
উনি উনার গলা থেকে ওড়না টা সড়িয়ে দিতে নিচ্ছিলো আমি থামিয়ে দিলাম।
-কি করছেন??(আমি)
-তুমি না বললা কি যেন করবা
-আপনার ঐ গলা টুকুই লাগবে
-হাহ এই আমাকে কিছু করতে দিলো না আর এখন উনি বায়না ধরে বসে আছেন।
-লোভ তো আপনি ধরিয়েছেন
-এই আমার দোষ দিবা না একদম। লোভ সামলাতে পারো না তুমি??
-হুমমমম
-এই যে গলা টুকুই শুধু এর নিচে আসলে মাইর ওকে?
-আচ্ছা
-কি মানুষ রে বাবা না ও করে না
,,
আমি উঠে বসে উনার গলায় আমার ঠোঁটের স্পর্শ দিতে লাগলাম। ইরার মতো আমি বেশি সময় নিলাম না। একটু পরেই বললাম..
-রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো (আমি)
-উহুমমম এটাই আমার রুম (ইরা)
-এখানেই থাকবে?
-হ্যা
,,
দুজন এক ওপরের দিকে তাকিয়ে আছি৷ তাকিয়ে থাকতে থাকতে দুজনই কান্না করে দেই। ইরা আমাকে বলল..
-এই তুমি কান্না করতেছো কেনো?? (ইরা)
-এভাবে কখনো তো পাবো না (আমি)
-ধুররর পাগল কে বলে পাবে না?
-তুমি তো চলেই যাবে
-আমি থাকার চেষ্টা করবো।
-আর তুমি কান্না করতেছো কেনো??
-বলা যাবে না
-বলো না
-পাগলটাকে অনেক বেশি ভালবেসে ফেলেছি
,,
ইরার আমার কপাল এর সাথে তার কপাল ঠেকালো। ওর চোখর পানি আমার মুখের উপর পড়ছে।
-অনেক কান্না হইছে থামো (আমি)
-উমমম। এখানে থাকবো না করো না প্লিজ (ইরা)
-আচ্ছা থাকো
-তোমার বুকের উপর ঘুমাবো
-হুমমম
-রাগ করবে না তো
-উহুমমমম
,,
ইরা আমার গালের সাথে গাল লাগিয়ে শুয়ে পড়লো।
-দুজন ভরে উঠবো। উঠে হাঁটতে বের হবো হ্যাঁ (ইরা)
-তোমার কাকা আমাকে চলে যেতে বলেছে সকালে(আমি)
-উনার সাথেই বের হবো
-কিহহহ!!!
-তোমাকে কিছু ভাবতে হবে না
-উনি আমাকে দেখলে গুলি করবে
-আমি যদি বলি জামাই বলে ডাকবে
-মানে?
-তুমি যে বললা উনার সাথে কথা বলছো
-হুমমম
-উনি আবার আমাকে কল করেছিলো। আমি সব সত্যি বলেছি। তারপর উনি কি বলল জানো??
-কি বলল??
-আমাদের বিয়ের দায়িত্ব উনি নিয়েছেন সব উনি সামলাবেন৷ উনি তোমাকে অনেক পছন্দ করেছেন
-কি জন্য??
-সেটা আমি কিভাবে বলব? সত্যি কথা বলেছো তাই মনে হয় ভালো লেগেছে তার
-ওহহহ
-আর কোনো কথা না এবার শুধু ঘুম হবে ঘুম। চোখ বন্ধ করো পাগল
,,
দুজনই ঘুমিয়ে গেলাম। পরদিন ভোরে ইরা আমাকে ডেকে তুললো। তারপর হাঁটতে বের হলাম। পথে সত্যি সত্যি ইরার কাকার সাথে দেখা হলো। উনি আমাদের দেখে মুচকি হাসলেন কিন্তু কিছু বললেন না।
-এই চলো জগিং করি। ভুড়ি হতে দেওয়া যাবে না। ভুড়িওয়ালা বর আমার পছন্দ না হি হি হি
,,
উনার কথা শুনে মুচকি হাসা ছাড়া উপায় নেই। সকালে সব কাজ শেষে অফিসে আসলাম দুজন। অফিসের কেউ এ ব্যাপারে কিছু জানে না৷ তাই কোনো সমালোচনাও হয়নি। এসব বিষয়ে জানলে কেউ না কেউ আমাকে জিজ্ঞাস করতোই।
,,
দুপুরের পর এক শার্ট প্যান্ট কোট পড়া ভদ্রলোক ইরার রুমে ঢুকলো। লোকটিকে দেখে কেমন যেন সন্দেহ হচ্ছিলো আমার। কিছুসময় পর ইরা আমাকে ডাকলো। যাক সন্দেহ এবার দূর হবে।
,,
রুমে ঢুকে দেখি ম্যাম বেশ রাগান্বিত।
-জ্বি ম্যাম বলেন (আমি)
-এই যে এটাই আমার পাগল দেখে নিন (ইরা লোকটিকে বলল)
,,
আমি মনে মনে ভাবছি, হেহ ম্যাম এর লাজ লজ্জা কিচ্ছু নেই। এইভাবে কেউ পরিচয় করিয়ে দেয়?
-তো কিছু বলবেন আর?? (ইরা লোকটিকে)
-এইরকম একটা ছেলেকে আপনার পছন্দ ! ওর কিছু আছে? দেখতে তো কেমন যানি লাগে (লোকটি)
-ঐ আমার পাগলের মধ্যে কি আছে না আছে আমি জানি। আপনাকে বুঝতে হবে না আপনি আসতে পারেন
-ভেবে দেখেন এর সাথে থাকলে আপনার জীবন নষ্ট হতে পারে
-এই শালা ভাষা খারাপ করাবি না। জীবন নষ্ট হবে মানে?
,,
ম্যাম তো তাকে মারার জন্য উঠেছে। এতক্ষণে বুঝলাম এই লোকটাই ম্যামকে দেখতে আসছিলো। ম্যাম যেভাবে মারার জন্য দাঁড়িয়েছে লোকটি ভয়ে চেয়ার উল্টে পড়ে যায়৷ ম্যাম কে থামিয়ে আমি উনাকে টেনে তুললাম।
,,
-দেখছিস আমার পাগলের মধ্যে কি আছে? (লোকটিকে)
সে চলে গেলো।
-ম্যাম এইভাবে কেউ ভয় দেখায়? (আমি)
-আরে ভাই বলিস না মাথাটাই খারাপ করে দিছে। আমি কতো বুঝালাম বুঝলোই না (ইরা)
-হুমমম
,,
আমি বাইরে চলে আসছি। ম্যাম তখন পেছন থেকে ডাকলো।
-ঐ আমার পাগল (ইরা)
-জ্বি ম্যাম বলেন (আমি)
উনি মুচকি হেসে বললেন…
-কিছু ফাইল কপি করতে হবে। একটু সাহায্য করবেন?
-আমি করে দিচ্ছি
-আরে আমার রুমের মেশিনে কালি নেই। তুমি ম্যানেজারের রুম থেকে করে নিয়ে আসো
-আচ্ছা
,,
ইরা ফাইল গুলো আমার হাতে দিলো। উনিও ফাইলটা ধরে আছেন আমিও একপাশে ধরে আছি। উনি ছাড়ছেন না।
-রাগ করলে নাকি আবার (ইরা)
-ছি না ম্যাম রাগ করবো কেনো?(আমি)
-এই যে কাজ করাচ্ছি
-এটা তো আমারই কাজ।
-তোমাকে দিয়ে কাজ করাতে ইচ্ছে করে না গো
-আমার কাজ করতে ইচ্ছে করে
-হুমমম স্যার যান এখন এগুলো কপি করে নিয়ে আসেন। আর হ্যা আজ বাসায় ফিরতে রাত হবে। সন্ধ্যায় বাইরে গিয়ে খেয়ে এসে আবার কাজ শুরু করবো ঠিক আছে?
-আচ্ছা ঠিক আছে
,,
,,
সন্ধ্যায় দুজন বাইরে গিয়ে খেয়ে আসি। তারপর আবার কাজ শুরু। বিকেল থেকেই আমি ম্যাম এর রুমে বসে। উনার কাজ দেখছি মনোযোগ দিয়ে। মাঝে মাঝে কথাও হচ্ছে। কাজ শেষের দিকে ম্যাম তখন বলল…
-আজ কি করবো জানো? (ইরা)
-কি করবেন?(আমি)
-এই তুমি করে বলো
-কি করবা?
-এক জগ চা বানিয়ে দুজন রাত দশটার পর ছাদে যাবো।
-কেনো??
-গল্প করবো
-এই ঠান্ডায় ছাদে! রুমেই তো ভালো
-আরে না ছাদে আগুনের ব্যবস্থা করবো। তুমি আমি পাশাপাশি বসে চা পান করবো আর গল্প করবো
-আর স্যার মানে আপনার বাবা যদি দেখে!
-হাহ পাগল রে পাগল কাকা তো বাবাকে সব বলে দিয়েছে। বাবা আবার তার বন্ধুকে মানা করে দিয়েছে। আর সেই জন্যই ছেলেটি আমার কাছে আসছে রিকুয়েস্ট করার জন্য যাতে আমি মানা না করি। তারপর তোমার কথা বললাম তোমাকে দেখালাম।
-ওহহ এই ব্যাপার
-জ্বি, এখন বাসায় সব চলবে
-সব চলবে মানে??
-বাসায় চলো, বাসায় গিয়েই বুঝাবোনি? ঠিক আছে পাগল??

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here