ব্লাক_স্টন,পর্ব_০৫
Writer_Shanta_islam
-মানে?
-মানে তোমার বোনকে বাচাতে হলে ব্লাক স্টনের আরো অর্ধেক অংশ খুজতে হবে।
-আবার সেই ব্লাক স্টন,,,ব্লাক স্টন,,,ব্লাক স্টন,,,,এই ব্লাক স্টন জিনিসটা কি?
– ব্লাক স্টন রিমাসদের শক্তির উৎস বলতে পারো। আবার তাদের ধ্বংস করার এক মাত্র উপায়ও ব্লাক স্টন।
-রিমাস? একটু আগে যেই ভয়ংকর জিনিসটার পা দেখলাম ওটাই কি,,,
-হ্যা ঠিক ধরেছো,,,ওটার নামি রিমাস।
– এক মিনিট আমি দেখলাম ওটা মানুষের পা থেকে ভয়ংকর কিছুতে রুপান্তর হলো এর মানে কি এরা রুপ পরিবর্তন করতে পারে?
– হ্যাঁ পারে,,,তোমার যতটুকু জানার দরকার তার থেকে বেশি জেনে ফেলেছো,,বুঝতে পারছি না ব্লাক স্টন তোমাকে এই কাজের জন্য বাছাই করলো কেনো? যাই হোক সময় খুব কম স্টনের অর্ধেক অংশ খুজতে হবে। আমার সাথে চলো,,,,
সব কিছু কেমন জেনো উলোটপালোট লাগছে। মেয়েটার উপর কেনো জানি বিশ্বাস করতে পারছি না। মেয়েটা কিছুটা সত্ত্য বললেও অধিকাংশ ঘোলাটে রেখেছে। কি করবো বুঝতে পারছি না। একটু আগে ক্যামেরায় যা দেখলাম তাও তো একে বারে মিথ্যে নয়। মেয়েটার সাথে কি আমার যাওয়া উচিৎ নাকি টুসিকে অন্য কোথাও খোজা উচিৎ। অভি কিছু একটা ভেবে বললো,
-না আমি যাবো না।
– কি? তুমি যাবে না? কিন্তু একটু আগে এই না বললে তুমি তোমার বোনকে বাচাতে চাও,,,
-হ্যা আমি আমার বোনকে বাচাতে চাই। কিন্তু এর জন্য আগে আমাকে সব সত্যি জানতে হবে। সব সত্যি মানে শুরু থেকে সব কিছু আমাকে বলতে হবে।
– দেখো তোমাকে যা বলার আমি বলে দিয়েছি এর বেশি কিছু বলতে আমি বাধ্য নই।
-তুমি বলতে বাধ্য,,,আমাকে সবটা খুলে বলো।
-কেনো আমি তোমাকে সব কিছু বলবো?
-কারন আমি এতোটুকু বুঝে গেছি যে ব্লাক স্টনের দ্বারা তোমারো সার্থ রয়েছে। নাহলে তুমি তোমার প্রানের ঝুকি নিয়ে এই স্টন খুজতে বের হতে না। আর তার থেকে বড় কথা তুমি বলেছো ব্লাক স্টন আমাকে বাছাই করেছে যার মানে এটার অর্ধেক অংশ আমি খুজতে পারবো। যদি আমি খুঁজে না দেই তাহলে তুমি এটা কখনো পাবে না। এর মানে আমি তোমার কাছে ট্রাম কার্ড,,,
মেয়েটা অনেকটা বিরক্তকর ভাব নিয়ে বললো,,,,কে বলেছে তোমাকে ছাড়া আমি ব্লাক স্টনের অর্ধেক অংশ খুজতে পারবো না। ভুলে যেয়ো না আমি তোমার কাছে সাহায্য চাই নি। তুমিই আমার কাছে সাহায্য চেয়েছো।
-ঠিকাচ্ছে চাই না তোমার সাহায্য। তোমার স্টন তোমার কাছেই রাখো আমি চললাম। কথাগুলো বলে আমি হাটা শুরু করলাম হঠাৎ মেয়েটা পিছন থেকে ডাক দিলো,,,দারাও,,,তুমি যা জানতে চাও আমি সব কিছু বলবো। কিন্তু স্টনের অর্ধেক অংশ আমার চাই।
আমি জানতাম মেয়েটা আমাকে পিছন থেকে ডাক দিবে৷ এবার হয়তো ওর কিছুটা রহস্য আমি বুঝতে পারছি।
-বলো,,,এই রিমাস কি জিনিস? এটা কী আদো কোনো আত্না নাকি অন্য কিছু? আর এরা পৃথিবীতে আছে কিন্তু এদের নাম আগে কখনো শুনিনি কেনো?
মেয়েটা ওর ব্যাগ থেকে একটা নকশার মতো কাগজ বের করতে করতে বললো,,
– রিমাস এক ধরনের মনস্টার,,,এদের যেমন শক্তি আছে তেমন স্বল্প বুদ্ধি। ওরা মানুষের রক্ত ছাড়া বেশিদিন বাচতে পারে না আর এরা আমাদের মধ্যেই রুপ বদলে থাকে।
-কি? ওরা আমাদের মধ্যেই রুপ বদলে থাকে এটা কীভাবে সম্ভব? ওরা মানুষের মধ্যে থাকলে মানুষজাতি টের পেলোনা কীভাবে?
মেয়েটা একটা কাগজ মাটিতে বিছিয়ে বললো,,
পৃথিবীর অনেক কিছুই আমাদের কাছে অজানা। অজানা বললে ভুল হবে অনেক কিছুই আমাদের অগোচরে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। মিশরীয় সভ্যতা থেকে রিমাসদের পৃথিবীতে দেখা গেছে। কখনো বেলজিয়াম,,কখনো আইল্যান্ড,,,কখনো ইন্দোনেশিয়া,,কিন্তু সর্ব প্রথম পিরামিডের কাছে এদের দেখা গিয়েছিলো। এরা কখন কীভাবে পৃথিবীতে এসেছে এটা এখনো বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করতে পারেনি।
– ওয়াট বিজ্ঞানী? এদের সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা জেনে থাকলে এতোদিন অবদি এদের ব্যাপারে কোনো নিউজ হলো না কেনো?
-তুমি কি বলতে পারবে কোভিড-১৯ ভাইরাসটি কবে কীভাবে এসেছে? আর এই ভাইরাসটার জন্য কোন দেশ সব থেকে বেশি লাভবান হয়েছে?
– দেশ লাভবান হয়েছে মানে? তুমি কি বুঝাতে চাইছো?
-এই ভাইরাসটা অনেক আগেই তৈরি করা হয়েছিলো। শুধু সুযোগ বুঝে ছাড়া হয়েছে। একটা কথা চিন্তা করো তুমি একটা হাতিয়ার তৈরি করলে যেটার মাধ্যমে পুরো পৃথিবীকে ঘায়েল করতে পারবে পরবর্তীতে তুমিই সেই আঘাতের মলম লাগিয়ে প্রোফিট করতে পারবে। ব্যাপটা হলো তুমিই ছুরি মেরে তুমিই চিকিৎসা করলে আর চিকিৎসা বাবদ ফি নিবে না সেটা কি হয়। চীনদের কাছে এই ভাইরাসটা ছিলো হাতিয়ার সরূপ। যেটা কয়েক মাসের মধ্যেই পুরো পৃথিবীতে তোলপার সৃষ্টি করেছে। কিন্তু বছর গুরতে না গুরতেই ওদের আক্রান্তের সংখ্যা কমতে থাকে এবং অন্যান্য দেশে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াতে থাকে। যখন পুরো পৃথিবীতে এই ভাইরাস ছড়ালো তখন অন্যান্য দেশ চীনের দিকে তাকিয়ে ছিলো কখন তারা আন্টি ভাইরাস বানাবে। অনেক দেশের মধ্যে প্রতিযোগিতা লেগে গিয়েছিলো কে আগে চীনের সাথে চুক্তি করতে পারে যাতে ভ্যাক্সিন আসার আগেই তাদের দেশে ভ্যাক্সিন দেওয়া হয়।
– তার মানে তুমি বলতে চাইছো কোভিড-১৯ এর মতো রিমাসদেরও হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
– তোমাকে আমি প্রথমেই বলেছিলাম রিমাসরা যেমন শক্তিশালী তেমন স্বল্প বুদ্ধি। একটু ভাবো এই স্বল্প বুদ্ধির মনস্টার একটা ছেলের সাথে অনলাইনে প্রেম করে তাদের শিকারকে নিজের আস্তানায় কীভাবে নিয়ে আসে?
– তার মানে এই মনস্টারদের সাথে হিউম্যানও জড়িত আছে?
– হ্যাঁ ঠিক ধরেছো ওরা রিমাসদের ব্যবহার করছে। রিমাসদের উপর ন্যানোটেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে। যেটার মাধ্যমে রিমাসরা নরমাল মানুষদের রুপ ধারন করলে তাদের মতো কথাবার্তা চালচলন কপি করতে পারে। এখন একজন নরমাল মানুষ আর রিমাসের মধ্যে পার্থক্য করা কঠিন।
-তাহলে এই রিমাসকে আমরা আটকাবো কীভাবে?
-ব্লাক স্টনের মধ্যেমে। শুধু ব্লাক স্টনি পারে ওটাকে থামাতে।
-কিন্তু তুমি বলেছিলে এই স্টন ওদের শক্তির উৎস।
– হ্যাঁ এটা ওদের শক্তির উৎস। কিন্তু সব কিছুর নেগেটিভ পজিটিভ দুটো দিকই থাকে। যেমন বেলুনকে অতিরিক্ত ফুলালে সেটা ব্লাস্ট হয়ে যায়। ব্লাক স্টনের পাওয়ারও তেমন।
-তুমি বলতে চাইছো অতিরিক্ত শক্তিই ওদের মৃত্যুর কারন? এর মানে ব্লাক স্টনের বাকী অর্ধেক অংশ কালেক্ট করে স্টনকে আরো পাওয়ারফুল করতে হবে।
মেয়েটা অর্ধেক স্টন ম্যাপের মধ্যে রেখে ফোনের টর্চ লাইট অন করে বললো- হ্যাঁ,,,এই দেখো এই ম্যাপের দিকে তাকালেই বুঝবে অর্ধেক স্টনের আলো যেখানে যেয়ে পরছে ওটাই হলো ওদের আস্তানায় প্রবেশ করার দোয়ার। আমাদের সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সন্ধ্যার পরি ওরা বের হবে। তখন তোমাকে ওদের আস্তানায় প্রবেশ করতে হবে বাকী স্টন খুজতে হবে।
-বাকী স্টন ওদের কাছে আছে?
– ওরা অর্ধেক স্টনের পাওয়ার ব্যবহার করেই এই পৃথিবীতে বেচে আছে। আমাদের বেচে থাকার জন্য যেমন অক্সিজেন চাই ওদেরও বেচে থাকার জন্য স্টনের পাওয়ার চাই। তোমার কি আরো প্রশ্ন বাকী আছে? আমাদের যা করতে হবে তারাতাড়ি করতে হবে। ওটার সাথে লড়াই করার জন্য আমাদের আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।
– ওদের আস্তানার দোয়ার এই বিল্ডিংয়েই খুলবে কেনো? আর এর আগে যেই ছেলেটার লাশ উদ্ধার করা হয়েছিলো সেই ছেলেটার শরীর থেকে শুধু রক্ত শুশে নেওয়া হয়েছিলো তাকে রিমাস খায়নি কেনো?
আমার শেষ প্রশ্নটা শুনে মেয়েটা একটু ঘাবড়ে উঠে,,,ওহ সিট এটা আমার মাথা থেকে বের হয়ে গেলো কীভাবে!! এর মানে ওরা বাচ্চা রিমাস ফুটাতে শুরু করেছে।
-মানে?
-বাচ্চা রিমাস মানুষ খেতে পারে না। পর্যাপ্ত বয়স হওয়া পর্যন্ত এরা রক্ত খেয়েই বেচে থাকে। আজ রাতের মধ্যেই ওদের থামাতে হবে নাহলে অনর্থ হয়ে যাবে। না
সন্ধ্যার জন্য অপেক্ষা করা যাবে না এখনি দরজা খুলতে হবে,,,
চলবে