ব্লাক_স্টন,পর্ব_০৭

0
934

ব্লাক_স্টন,পর্ব_০৭
Writer_Shanta_islam

-অভি টুসি বেচে আছে,,,,
-তুমি কীভাবে বলছো টুসি বেচে আছে। তুমিই বললে ওখানে অক্সিজেন নেই। তাহলে টুসি বেচে থাকে কীভাবে?
-আমি সব কিছু জানি না কিন্তু এতোটুকু জানি অক্সিজেন ছাড়া কোনো প্রানীই বাচে না। লাস্ট যখন রবিনের সাথে কথা হয়েছিলো তখন ও বলেছিলো ওখানে অক্সিজেন লেভেল খুব কম। শুধু এতোটুকুই বলতে পারবো আশা রাখো,,,আমিও জানি না আমার ভাই বেচে আছে কি না কিন্তু আশা তো ছাড়িনি।
– তুমি রবিনের সাথে কথা বলেছিলে?
– অপটিক্যাল ফাইভার ব্যবহার করে ওর সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তিন দিন ধরে রবিনকে ট্রেক করতে পারছি না।
জেনির কথায় ভিতরে কিছুটা সাহস পাচ্ছি। তবুও ভয় করছে মা রিমাস টুসির কিছু না করলেও বাচ্চা রিমাস যদি টুসিকে,,,না আর এসব ভাবা যাবে না। যা হবে দেখা যাবে। আমি টুসিকে খুজে বের করবোই।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে এলো। জেনি দূর্বল হয়ে পরছে। তবুও মেয়েটা নিজের শেষটুকু দিয়ে চেস্টা করে যাচ্ছে। জেনি ব্যাগ থেকে দুটো কাচের বোতল বের করলো একটার মধ্যে কেমন বিছরি জেলি টাইপের কিছু,,,আরেকটার মধ্যে সাদা পানি মনে হচ্ছে। জেনি আমার হাতে সাদা পানির বোতলটা ধরিয়ে ওই বিছরি জেলিটা একটা দেয়ালের উপর ফেলতে লাগলো।
-কি করছো জেনি? এই বিছরি জিনিসটা দেয়ালে ফেলছো কেনো?
-এটা রিমাসের শরীরের আশ। ওরা দেয়াল ছেদ করে বের হয়। ওদের শরীর যখন দেয়ালের সাথে স্পর্শ করে তখনি ওরা এখান থেকে ওদের আস্তানায় যেতে পারে। তাই দেয়াল ছেদ করে ওদের আস্তানায় ডোকার জন্য ওদের শরীরের অংশ ব্যবহার করছি।
মেয়েটার বুদ্ধি দেখে অবাক না হয়ে পারছি না। মনস্টারের শরীরের অংশ ব্যবহার করে মনস্টারদের আস্তানায় ডুকবে। অবশ্য এখানে অবাক হওয়ার কিছু নেই। সাইনটেস্টরা বুদ্ধিমানি হয়।
-আর এই পানির বোতল কীসের জেনি?
জেনি আমার হাত থেকে ওই বোতলটা নিয়ে দেয়ালে ছুরে মেরে বললো,,,এটা কোনো সাধারণ পানি নয়। তুমি বুঝবে না। এবার দেখো কি হয়। কথাটা বলেই জেনি ব্লাক স্টনের অর্ধেক টুকরোটায় লাইটের আলো ফেলাতেই সেই আলো দেয়ালে রিফ্লেক্ট করে আর সাথে সাথেই কাগজ পোড়ার মতো দেয়ালটা ফাকা হয়ে যায়।
নিজের চোখে যা দেখছি বিশ্বাস হচ্ছে না। এটা কী সত্যিই আমার চোখের সামনে হলো। এটা কী ছিলো? এটা কি ম্যাজিক নাকি অন্য কিছু। এই প্রথম চোখের সামনে এমন ঘটনা দেখলাম অবাক হয়ে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে আছি। জেনি আমার হাতে ইয়ার ফোনের মতো কিছু একটা ধরিয়ে বললো,,
-তাকিয়ে থাকলে হবে না অভি। আমাদের ভিতরে ডুকতে হবে। সময় খুব কম যখন তখন এই ছিদ্র বন্ধ হয়ে যাবে। আমি ভিতরে দেয়ালের আশেপাশেই থাকবো। দেয়াল বন্ধ হওয়ার আগেই আমি তোমাকে বলে দিব। এই যন্ত্রের মাধ্যমে আমরা দুজন দুজনের সাথে কন্টাকে থাকতে পারবো। এটা কানে পরে নেও।
ভয় করছে ভীষণ ভয় টুসির জন্য। যদি ওর কিছু হয়ে যায় তাহলে আমি কখনো নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না। এখনো জানি না টুসি আদো এখানে আছে কি না কিন্তু দোয়া করছি ও যাতে এখানে না থাকে। দীর্ঘশ্বাস নিয়ে দেয়ালের ভিতর পা বাড়ালাম। ভিতরে ডুকতেই চোখ কপালে উঠলো। দেয়ালের মধ্যেও যে এতো বড় জায়গা লুকিয়ে থাকতে পারে এটা ভাবনার বাইরে। আরো দু কদম এগোতেই দেখলাম,,,বড় বড় ডিম।
– জে,,জে,,,জেনি,,এগুলো কি?
– হ্যাঁ তুমি যা ভাবছো আমিও তাই ভাবছি। এগুলো রিমাসদের ডিম।
ডিমগুলোর সাইজ প্রায় আমার থেকে দ্বিগুন বড়। এই রহস্যের মধ্যে যতই ডুকছি ততোই রহস্যের ধাধায় পেচিয়ে যাচ্ছি।
-অভি দাঁড়িয়ে থেকো না জলদি করো। সময় খুব কম,,যা করতে হবে তারাতাড়ি করতে হবে।
জেনির কথায় আমার হুস ফিরলো। একটা লাইট হাতে নিয়ে এগোতে লাগলাম। পিছন থেকে জেনি বলে দিলো,,অভি আওয়াজ কম করার চেস্টা করো। এটা ওদের জায়গা এখানে ওরা শক্তিশালী। জেনির কথায় মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলাম। হৃদপিন্ড ক্রমশ সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। ধুক ধুক ধুক ধুক,,,ভয়ে নাকি অন্য কারনে বলতে পারছি না। আমি ওই ডিমগুলোর মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। হঠাৎ আমার কি যে হলো আমি একটা ডিমের মধ্যে হাত রেখে দিলাম। সাথে সাথে হাতটা সরিয়ে নিলাম। এতো গরম ক্ষনিকের জন্য মনে হলো হাতটা আগুনের মধ্যে ডুকিয়ে দিয়েছি। হঠাৎ একটা জিনিস দেখে চোখ আটকে গেলো।
আমার জীবনে এই প্রথম এমন ভয়ংকর জিনিস দেখলাম। এটাই তাহলে রিমাস। রিমাসটা মনে হচ্ছে ঘুমিয়ে আছে। দেখতে খুবি কুচ্ছিত। লেজটা টিকটিকির মতো আর শরীর ডাইনাসরের মতো মোটা হলেও আশগুলো সাপের মতো বললে মন্দ হবে না। রিমাসটার পাশে একটা আলোর রশ্নী দেখতে পেলাম। এই অন্ধকার জায়গায় আলো কীভাবে আসলো। ব্যাপারটা আমার কাছে কেমন জেনো ঠেকছে। ওখানে না যাওয়াটা ভালো। তাই ওখানে না যেয়ে বিপরীত দিকে পা বাড়ালাম। নিশ্বাস কেমন যেনো ঘন হয়ে আসছে। শ্বাস নিতে কস্ট হচ্ছে। কেনো জেনো মনে হচ্ছে আমাকে এখানে না ওখানে যাওয়া উচিৎ। কিন্তু ওখানে যাওয়াটা ডেঞ্জারাস। ওখানে যাওয়া আর মৃত্যুকে দাওয়াত দেওয়া একই কথা। নাহ যাই হোক ওখানে যাবো না। মস্তিককে মানিয়ে নিলেও মনকে মানাতে পারলাম না। পা দুটো সেই রশ্নীর দিকেই ছুটে চললো। আস্তে আস্তে ধীর পায়ে রিমাসটার পাশ কাটিয়ে যাচ্ছি আলোর দিকে। আর একটু এগোতেই দেখলাম ব্লাক স্টনের অর্ধেক অংশ হাওয়ায় ভাসছে। এটা দেখে নিজ থেকে মুখ ফসকে বের হয়ে গেলো “চমৎকার”। কিঞ্চিৎ শব্দে রিমাস একটু নড়ে বসলো। মনে হলো প্রানটা বের হয়ে গিয়েছিলো। আলো থেকে যেই ব্লাক স্টনটা নিতে যাবো হঠাৎ জেনির আওয়াজ পেলাম,,ইয়ারফোনে জেনি বলছে,,অভি আমি রবিনকে খুজে পেয়েছি। দেয়াল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জলদি ফিরে এসো। দেরি না করে অভি যেই ব্লাক স্টনটা হাতে নিবে এমন সময় অভির চোখ গেলো রিমাসের অপজিট সাইডে জুলন্ত শিকরের উপর। শিকরগুলোতে কতোগুলো মানুষ জুলে আছে। দেখে মনে হচ্ছে মরা লাশ সাজিয়ে রাখা হয়েছে। লাশগুলোর মধ্যে একটা জায়গায় অভির চোখ আটকে গেলো। অভির পুরো শরীর অবস হয়ে আসছে।
-টু,,,টু,,,টুসি

চলবে,,,,

পর্ব আর একটা বা দুটো হতে পারে। #ব্লাক_স্টন শেষ হয়ে যাচ্ছে তবে পাঠকদের কিছু কথা আগে থেকেই জানিয়ে রাখি #ব্লাক_স্টন আর #দ্যা_লিফট দুটোই একটার সাথে আরেকটা রিলেটেড। তাই #ব্লাক_স্টনের পুরো ইতিহাস #দ্যা_লিফট এ পেতে পারেন। আগে থেকেই বলে দিলাম পরে কেও বলতে পারবেন না আপু রহস্য থেকেই গেলো। আগে বলেন নাই কেনো #দ্যা_লিফট এর মধ্যে #ব্লাক_স্টনের কাহিনিও লুকানো। সবাই যাতে জানতে পারে তাই আগে থেকেই বলে দিলাম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here