ভালোবাসার রাত Season_2,পর্ব (১)
রোকসানা রাহমান
“” রাত ভাইয়া,তুমি কখনো ঠোঁট কামড়ানো চুৃুমু খেয়েছো?””
জেএসি পাশ করে সবে নবম শ্রেণীতে পড়ছে সন্ধ্যা! এইটুকু মেয়ের মুখে এমন লজ্জামিশ্রিত প্রশ্ন শুনে রাত ভিষম খেলো। গরম কফি ঠোঁটে লেগে গিয়ে পুড়ে যাওয়া উপক্রম! কাঁশি নিয়ে ঠোঁটে হাত দিয়ে আছে। সন্ধ্যা নিজের চেয়ার ছেড়ে রাতের পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বললো,,
“” কি হলো? চুমু খাওয়ার সময় তোমারও বুঝি ঠোঁট কেটে গেছে?? কিন্তু তোমার ঠোঁট ফুললোনা কেন??””
রাত নিজের কাঁশি থামিয়ে সন্ধ্যাকে বললো,,
“” তোর না কাল পরীক্ষা? তোর পড়া কমপ্লিট হয়েছে? অংকটা শেষ হয়েছে? দেখি তো!””
রাত সন্ধ্যার প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে চাইলেও সন্ধ্যা এড়িয়ে যেতে দিলোনা। পাল্টা প্রশ্ন করে বসলো,,
“” ঠোঁট কামড়ানো চুমু খেলে কি ব্যথা লাগে?? অবশ্যই লাগে নাহলে অমন ছটফর করে কেন? কিন্তু রাত ভাইয়া কান্না করেনা কেন?? আর ব্যথা পেলেও ঠেলে সরিয়ে না দিয়ে ঝাপটে ধরে কেন??””
রাতের ইচ্ছে হলো সন্ধ্যাকে একটা কড়া ধমক দিতে। কিন্তু অবুঝমীর অবুঝ প্রশ্নের সাথে ওর মুখটা শুভ্রতায় ছেয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যা নামার আগে যেমন সুর্যের রশ্মি কমে গিয়ে নিজেকে কমলাবর্ণে রাঙিয়ে নেয় ঠিক তেমনি সন্ধ্যার মাঝেও নেমে এসেছে শুভ্রতার মধুরঙ। ভাসা ভাসা চোখদুটো আরেকটু ভেসে আছে। উত্তেজিত চাহনিতে রাতের কাছে উত্তরের অপেক্ষায় আছে। মাথার উপরে চলতি ফ্যানের বাতাসে সন্ধ্যার কাধ পর্যন্ত চুলগুলো উড়ছে। দু/একটা চুল কানের লতির বাধা অতিক্রমে গাল ছুয়ে নাকে এসে পড়ছে। তাতে যে বেশ বিরক্ত হচ্ছে সেটাও স্পষ্ট তবে সেটাকে পরোয়া না করে রাতের দিকেই চেয়ে আছে।
রাতকে এমন চুপ থাকতে দেখে সন্ধ্যা আরো উৎকন্ঠী হয়ে বললো,,
“” বলোনা। তুমি কাকে ঠোঁট কামড়ানো চুমু খেয়েছো?””
“” কাউকেনা।””
রাতের মুখে নাবোধক উত্তরে সন্ধ্যা হতাশ সাথে বিরক্ত তারও সাথে রাগ নিয়ে বললো,,
“” মিথ্যেকথা। সবাই খায়,তাহলে তুমি কেন খাওনি?? তাহলে ঠোঁট চেপে ধরেছিলে কেন?””
“” গরম লেগেছিলো তাই।””
“” মোটেও না। তুমি ইচ্ছে করেই মিথ্যে বলছো। আমি জানি এই চুমু খেলে কাউকে বলতে নেই। তুমি যেহেতু বলোনি,আমিও বলবোনা।””
“” কি বলবিনা?””
“” আমি কাকে ঠোঁট কামড়ানো চুমু খাবো!””
“” তুই চুমু খাবি?””
“” তোহ,খাবোনা? তুমি খেতে পারলে আমি খাবোনা?””
“” আমি কখন খেলাম?””
“” আমি কি করে বলবো? তুমি কি আমাকে বলেছো?””
“”না খেলে বলবো কিভাবে?””
“” না,তুমি খেয়েছো!””
সন্ধ্যার কথাতে তাল মিলিয়ে ব্যাপারটাকে এখানেই সমাপ্তি করতে রাত বললো,,
“” ওকে খেয়েছি। হ্যাপি?””
রাতের নাবোধক উত্তর হ্যাবোধক হওয়াতে সন্ধ্যা বেশ উৎসাহ পেলো। নিজের চেয়ারটা টেনে রাতের মুখোমুখি বসে পড়েছে। ওর মুখ টেনে বললো,,
“” কই দেখি দেখি তোমার কোথায় কেটেছে!””
সন্ধ্যা রাতের ঠোঁট নিজের হাত দিয়ে টেনে টেনে গভীর পর্যবেক্ষনে ব্যস্ত হওয়ার মাঝেই রাত বলে উঠলো,,
“” আরে কি করছিস? ছাড়!””
“” উফ! চুপ করে বসোতো। আমি আগে দেখবো তারপর ছাড়বো!””
সন্ধ্যা এদিক ওদিক-উপরে নিচে টেনেও যখন কোনো দাগ পেলোনা তখন হতাশ হয়ে বললো,,
“” দাগ কই গেলো?””
“” জানিনা।””
“” কেন জানবেনা?””
“” তুই কি অংকটা করবি?””
সন্ধ্যা হতাশমনে কলম নিয়ে খাতায় অংক কষতে গিয়েই হুট করে আবার বললো,,
“” আমিও খাবো।””
রাত ব্রু কুচকে বললো,,
“” কি খাবি,কফি?””
“” ধুর,কফি খেতে যাবো কেন? ঠোঁট কামড়াবো চুমু খাবো।””
“” কাকে?””
“” তোমাকে!””
রাত মেঝেতে পা ঠেকিয়ে নিজের চেয়ারটা কিছুটা দুরে ঠেলে বললো,,
“” না। আমাকে কোনো চুমু খাবিনা।””
“” কেন?””
সন্ধ্যার কেন এর উত্তরে রাত কি বলবে?? যা বলবে তা কি ও বুঝতে পারবে? ওর কি সেই বোধটা হয়েছে?? ওর বড় হওয়ার দিন গুনতে গুনতে আমি যে নিজেই একটা বিশাল বড় ঘড়ি হয়ে নিজেকে সময় আউড়িয়ে যাচ্ছি সেটা কি ও বুঝবে??
“” জানিনা। খাবিনা মানে খাবিনা। আর তোর কি চুমু খাওয়ার বয়স হয়েছে?””
“” চুমু খেতে বয়স লাগে?””
“” হুম।””
“” কেমন বয়স?””
“” অনেক।””
“” কেমন অনেক।””
“” এই ধর কুড়ির সান্নিধ্যে!””
সন্ধ্যা আফসোসের একটা বিশাল থলের মতো মুখ করে বললো,,
“” কিন্তু আমার তো সবে ১৩ বছর। তারমানে আরো ৭ বছর অপেক্ষা করতে হবে? এক চুমুর জন্য এতো বছর অপেক্ষা?”
রাত বিড়বিড় করে বললো,,এক চুমু কেন? আগেতো বড় হ,দেখবি চুমুর পাহাড় এনে দিবো। সুর ছেড়ে বললো,,
“” হুম!””
সন্ধ্যা খাতা কলম ফেলে উঠে দাড়িয়ে বললো,,
“” আমার ঘুম পাচ্ছে।””
“” ওকে ঘুমিয়ে পড়।””
সন্ধ্যা চলে গিয়েও আবার দৌড়ে এসে বললো,,
“” কিন্তু রাত ভাইয়া। আমার তো এখন চুমু খেতে ইচ্ছে করছে। একটা খাবো,ছোট্ট কামড় দিবো। প্লিজ! প্লিজ!!””
রাত নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়লো। গম্ভীরভাব ছেড়ে বললো,,
“” অসম্ভব! ভুলেওনা। ছোট কেন,চিমটিখানিও না। তোর আমার কাছে আসাও বারন। দেখি দুরে যা।””
“” তাহলে আমি কাকে চুমু খাবো?””
“” কাউকে না।””
“” আম্মুকে খাবো! মামি কে খাবো নাকি নানুকে??””
রাত সন্ধ্যার থেকে দুরে দাড়িয়ে থাকলেও এবার দ্রুতগামীতে ওর কাছে এসে আতংকিত কন্ঠে বললো,,
“” এই না। না।””
“” কেন?””
রাত আবার সন্ধ্যার দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে যাচ্ছে,,এখন আমি তোকে কিভাবে বুঝাবো এই চুমু শুধু পরিত-বিপরিতের জন্যে!
“” বলছিতো খাবিনা মানে খাবিনা।””
“” কিন্তু কেন?””
“” আমি মানা করেছি তাই।””
“” তুমি বললেই শুনতে হবে?””
“” হুম।””
সন্ধ্যা জেদ চেপে বললো,,
“” না শুনবোনা। আমি খাবো-খাবো-খাবোই।””
রাত এতক্ষন ধরে নিজেকে সামলে রাখলেও এবার আর পারছেনা। কঠিন ধমকটা কি এবার দেওয়া উচিত নয়?? যদি সত্যি সত্যি ফুপিকে চুমু খেয়ে বসে??
রাত ভেতরটা কঠিন করে নিলেও গলার স্বর যথেষ্ট নরম করেই বললো,,
“” তুই এসব কোথা থেকে শিখলি?””
“” টিভি দেখে!””
তোর টিভি দেখা আমি বের করছি। টিভি কেন,আজ থেকে এ বাসায় সব ইলেক্ট্রিক ডিভাইস অচল থাকবে।
রাত সন্ধ্যাকে নিজের রুমে রেখে চলে যেতে নিলে ও প্রশ্ন করে উঠলো,
“” কোথায় যাচ্ছো?””
“” তুই এখানে বস। আমি এখনি আসছি।””
সন্ধ্যাকে কিছু বলতে না দিয়েই ড্রয়িংরুমে দিকে অগ্রসর হচ্ছে রাত। রাতের আম্মু তিল আর ফুপি রিমা সবে রান্না শেষ করে সোফাতে বসেছে। টিভিটা অন করে চ্যানেল পাল্টাচ্ছিলো। এর মধ্যেই রাত এসে দুহাতে টিভি উচিয়ে ধরে আছাড় মেরে বসলো। ওর এমন কান্ডে তিল আর রিমা দুজনেই অবাক। কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই ও রাগ দেখিয়ে বললো,,
“” আম্মু,এ বাসায় যেন আর কোনো টিভি না আসে।””
“” কেন?””
“” তোমাদের আদরের সন্ধ্যা মনি বখে যাচ্ছে তাই।””
“” বখে যাচ্ছে মানে?””
রাত চুমুর কথা বলতে গিয়েও থমকে গিয়ে রিমাফুপির পাশেই পড়ে থাকা স্মার্টফোনটা তুলে নিয়ে বললো,,
“”কালকে সবার জন্য আমি বাটনসেট কিনে নিয়ে আসবো। এখন থেকে সবাই বাটন সেট ইউস করবে।””
রিমা কিছু বলতে যাবে তার আগেই ওর হাতটা চেপে ধরলো তিল। চোখের ইশারায় চুপ করে থাকতে বলছে। রিমার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরেই নিজের ছেলের দিকে চেয়ে আছে গভীর নয়নে। রাগটা একদম হুবহু রিদের মতো হয়েছে। শুধু রাগ নয় সাথে জিদটাও বয়সের ভারে দিনকেদিন বেড়ে যাচ্ছে। তার এই জিদের জন্যই তো আজ রিমা,তার হাসবেন্ড সিকান্দার সাহেব ও একমাত্র মেয়ে সন্ধ্যাকে নিয়ে এ বাসায় থাকছে। একটা ছয় বছরের বাচ্চার জিদের কাছে হারতে হয়েছিলো তিলকে। সন্ধ্যা যেদিন পৃথিবীতে এলো সেদিন সর্বপ্রথম রাতের কাছ থেকেই সুখবর পেয়েছিলো। কেউ পৃথিবীতে আসার আগেই যে তাকে বউ বানানোর স্বপ্ন দেখে যাচ্ছে তার এই সম্বল ছেলেটি তাও তো সে সেদিনই জেনেছিলো। সন্ধ্যার মুখদর্শনে আর রাতের জবরদস্তিতে রিমার বাড়িতে গিয়ে উঠেছিলো তিল। কিন্তু গিয়ে আরেক বিপত্তি। রাত সন্ধ্যাকে ছেড়ে আসবেনা। পুরো নাছোড়বান্দা! দরকার হলে ও এখন থেকে ওখানেই থাকবে,সে ইচ্ছেও পোষন করা শেষ। ও চলে আসলেই নাকি সন্ধ্যা ওর সাথে রাগ করে অন্য কাউকে বিয়ে করে নিবে। তিল সেদিন শুধু ফ্যালফ্যাল নয়নে সদ্য জন্ম নেওয়া নিষ্পাপ শিশু সন্ধ্যাকে দেখছিলো আর তার ছয়বছরের বাচ্চাকে দেখছিলো। সন্ধ্যা নামটাও রাতেরই দেওয়া। স্বপ্নের মধ্যে বউয়ের সাথে নামটাও ফ্রি পেয়েছে।
রিদকে ছাড়া সময় পার করার ঘড়ির কাটা হিসেবে মুখ্য ভুমিকা ছিলো রাত। চোখের নয় বুকের মনি। যাকে কিছু সময়ের জন্য দুরে রাখলেও বুকটা খালি হয়ে সবকিছু অন্ধকার হয়ে আসে তিলের। সেই বুকের মনিকে এভাবে রেখে যাওয়া তারজন্য মৃত্যুসমিত। তাই অনেক কষ্টে,অনেক বাহানায়,অনেক অনুরোধে আজ প্রিয় বান্ধুবী,রিদের ছোটবোন,রাতের ফুপি তাদের সাথে জয়েন ফ্যামিলির মতো আছে। রিদ ভাইয়াও তো আমায় আমার অবুঝকাল থেকেই ভালোবাসতো। কিন্তু আপনার সেই ভালোবাসা আমি দেখতে পাইনি তাতে কি আমি আপনার ছেলেকে দিয়ে দেখছি। সে তো আপনার থেকে একশ ধাপ এগিয়ে। আপনার কাছে আমি তো শুধু একটা ছোট্ট রিদকে চেয়েছিলাম কিন্তু আপনি তার মধ্যে আপনার সবটা ঢেলে দিয়েছেন। এই যে এখন রাগ ভর্তি চোখগুলো দেখে মনে হচ্ছে আপনি আমার সামনে দাড়িয়ে আছেন। আমি আপনাকে একটু ও মিস করিনা রিদ ভাইয়া। একটু ও না!
তিল নিজের ভিজে উঠা চক্ষুদ্বয় নিয়েই রাতের কাছে এগিয়ে এসে বললো,,
“” যার জন্যে এতো রাগ,করে নে তার সাথে ভাগ!””
মায়ের এক কথাতেই রাতের সব রাগ পানি। শান্তস্বরে বললো,,
“” ভয় লাগে,আম্মু। আমি তো নিজেই নিজের রাগের উপর ভয়ে স্লিপ কেটে আছি। তাহলে সন্ধ্যা কিভাবে সহ্য করবে??””
~~
রাতের আসতে দেরি হওয়াতে আর অপেক্ষা করতে পারছেনা সন্ধ্যা। তার এই ছোট্টজীবনে সবথেকে বেশি ইগনোর করে অপেক্ষানামক প্রহরকে। তার মনে এক কথা সবসময় বাজে,যা ইচ্ছে হবে,যখন হবে তখনি তা করবে-করবে-অবশ্যই করবে!
সন্ধ্যা ড্রয়িংরুমে এসেই এক চিৎকারে কেঁদেই ফেললো,,
“” আমার টিভি! আমার মুভি! আমার চুমু!””
সন্ধ্যার চোখের পানি দেখার আগেই সেখান থেকে প্রস্থান করেছে রাত। সন্ধ্যা কান্নাজরিত কন্ঠে রিমার কাছে এগিয়ে এসে বললো,,
“” টিভি কে ভাঙলো,আম্মু?””
রিমা আর তিল দুজনে দুজনের দিকে চাওয়াচাওয়ি করে রিমা বললো,,
“” উপর থেকে পড়ে ভেঙে গেলো। খাবি চল,অনেক রাত হয়েছে। তোর আব্বুকে ডেকে নিয়ে আয় তো।””
“” পারবোনা!””
মেয়ের না উত্তরে রিমা একটুও রাগ করলোনা। রান্নাঘরের দিকে এগুলো। তিলও পিছু নিয়েছে। সন্ধ্যার কান্না দেখার কেউ নাই। কেউ যখন দেখছেইনা তাহলে কেঁদে কি লাভ? সন্ধ্যা কান্না থামিয়ে টিভিটার দিয়ে অসহায়ভাবে তাকিয়ে রইলো। এমন ঘটনা তারজন্য নতুননা। তার অনুপস্থিতে এমন ভয়ংকর ঘটনা সে ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছে। তবে কেন ঘটে,কারজন্যে ঘটে,কার দ্বারা ঘটে এটা তার অজানা থাকে সবসময়। কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করলেই মুখে কুলু পেতে থাকে৷ এমন একটা ভাব যেন কথা বললেই তার ফাঁসি নিশ্চিত!
সন্ধ্যা মনভারাক্রান্ত দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,ইশ! এখনি রাগিনী এমএমএস ২ টা শুরু হতো!!
~~
মাঝরাত। গভীর অন্ধকার। নিশব্দতা। ফ্যানের স্পিডের শব্দ আর রুমের নীলআলোর গভীর অন্ধকারে সন্ধ্যার কিছুতেই ঘুম আসছেনা। একে তো তার ঠোঁট কামড়ানো চুমু খাওয়া হলোনা। তার উপর মুভিটাও দেখা হলোনা। এড দেওয়ার সময় সে দেখেছিলো ঐ মুভিটাতেও ঠোঁট কামড়ানোর চুমুটা আছে। তার চুমুটাও দেখা হলোনা। সন্ধ্যা একরাশ মন খারাপ নিয়ে উঠে বসলো। মনের ভাবনাগুলোকে একপাশে রেখে সোজা হাঁটা ধরলো রাতের রুমের দিকে। দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে গেলো। রাত গভীরঘুমে আচ্ছন্ন! তাতে সন্ধ্যাকেও রাগে আচ্ছন্ন করে নিচ্ছে। আমার ঘুমের বারোটা বাজিয়ে নিজে ঘুমানো হচ্ছে?? আমাকে চুমু খেতে মানা করলে তো? শুনবোনা আমি তোমার কথা। শুনবোনা-শুনবেনা-কিছুতেই শুনবোনা!
সন্ধ্যা রাতের গায়ে জড়ানো পাতলা কাথাটার উপরেই বসলো। পেটের উপর বেশ আরাম করে বসে নিয়ে চোখটা বন্ধ করে নিয়েছে। তার এ পর্যন্ত দেখা শতশত ঠোঁট কামড়ানো সবগুলো চুমুকে স্মৃতিচারন করে, বিশ্বজয় হাসি নিয়ে রাতের ঘুমন্ত চেহারার পানে চেয়ে রইলো।
~~
পেটের উপর ভারকিছুর উপস্থিতি সাথে কারো গরম নিশ্বাসে আবদ্ধ ভেজা ঠোঁটের স্পর্শে রাতের ঘুম ভেঙে গিয়েছে। রাত চোখ মেলে তাকিয়ে কি হচ্ছে বুঝার আগেই সন্ধ্যা নিজের দুপাটি দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরলো রাতের নিচের ঠোঁটটি!
চলবে