ভালোবাসার রাত Season_2,পর্ব (১৯)
রোকসানা রাহমান
সন্ধ্যার কোনো কথার উত্তরই দিচ্ছেনা রাত। দেওয়ার কোনো অঙ্গভঙ্গিও নেই। সে আপনমনে হেঁটেই চলেছে। বরং পায়ের গতি বেড়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যা দৌড়ে এসে রাতের পথ আটকে দাড়িয়ে হাঁপাচ্ছে।
“” তুমি দেখতে পারছোনা,হাঁটতে পারছিনা? উফ! আবার মুখেও কুলু পেতেছো। সমস্যা কি?””
রাত সন্ধ্যাকে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলেই সন্ধ্যা একদমে বললো,,
“” আমি তোমাকে ভালোবাসি,তোমাকে বিয়ে করবো,কবুল কবুল কবুল!””
যে কথাটি শোনার জন্য অপেক্ষার প্রহন গুনে এসেছে রাত আজ তাই তার কানে বীণের সুরে বাজছে,তার স্বপ্নবধুটি তার চোখের সামনেই দাড়িয়ে আছে। মাথাটা নিচু করে,হা করে বাতাস খাচ্ছে,বুকে হাত দিয়ে চেপে ধরে এখনো হাপাচ্ছে,চোখদুটো কি বন্ধ করে আছে??
সন্ধ্যা মন ভরে নিশ্বাস খাচ্ছে,বুকটা হালকা লাগছে,মনে হচ্ছে কত বছর ধরে এক বিশাল আকারের পাথর চাপা রেখেছিলো। উফ! মনের কথা মনের মানুষটিকে জানাতে পারলে বুঝি এমনি লাগে?? এতো হালকা লাগছে মনে হচ্ছে হাতদুটো দুদিকে মেলে ধরলেই আকাশে উড়ে যাবে! সুখের পাখায় ভর করে অনুভূতির আকাশে মনের সুখে উড়ে উড়ে গান গায়বে। কিন্তু কোন গানটা গায়বে সে??
প্রাকৃতিক নিরবতার সাথে সন্ধ্যা রাত দুজনেই মিশে গিয়েছে। যেন দুজনেই আজ এই নিরবতাকে আপন করেই কাটিয়ে দিবে। রাস্তায় শো করে পলক ফেলার মতো দু একটা গাড়ী চলে যাওয়ার শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দ নেই,ওদের নিশ্বাসের শব্দটাও নেই। তাহলে কি দুজন নিশ্বাস বন্ধ করে আছে??
“” এমন থমকে গেলে যে? যা শুনতে চাইছিলে তাই তো বললাম। এখনো চুপ কেন? এবার তো মুখের তালা খুলো!””
রাত তখনো চুপচাপ। সত্যিই তো আমিতো এই কথাটা শোনার জন্য অধীর আগ্রহে ছিলাম তাহলে এখনও কেন আমি চুপ?
“” রাত ভাইয়া?””
সন্ধ্যার ডাকে রাত নিরবতা ভেঙেছে,তবে মুখে নয়,পায়ের শব্দে।
“” আরে এখন আবার কোথায় যাচ্ছো??””
সন্ধ্যার ডাকের কোনো পরোয়া করছেনা রাত। সে হেঁটেই চলেছে। চোখের দৃষ্টি সোজা গাড়ীর দিকে। সন্ধ্যা দু কদম এগিয়ে এলেও আর এগুলো না। ঠাঁই দাড়িয়ে থেকে চিৎকার করে বললো,,
“” আমাকে রেখেই চলে যাচ্ছো তো যাও। আমি কোথাও যাবোনা। এখানেই থাকবো,এই এখানটাই দাড়িয়ে দাড়িয়ে মশার কামড় গুনবো। ভালোবাসি বলতে না বলতেই অবহেলা শুরু হয়ে গিয়েছে। হুহ!””
সন্ধ্যা নিজের জায়গায় দাড়িয়ে একমনে বিড়বিড় করে যাচ্ছে। প্রত্যেকটা বাক্যেই সে রাতকে বকে যাচ্ছে,কিছুটা বকা নিজেকেও দিলো। বকাবকির পর্ব শেষ হওয়ার আগেই ইঞ্চিনের শব্দ। সন্ধ্যা সামনে তাকাতেই বিস্ময়ের চরম পর্যায়ে গিয়ে বাড়ি খেলো। মুখটা হা’হওয়ার সাথে সাথে চোখদুটোও বড় হয়ে গিয়েছে। যে মানুষটা তার অতি ছোটছোট কথাগুলোও মাটিতে ফেলতে পারতোনা,সেই মানুষটা তাকে এই জঙ্গলে রেখে চলে যাচ্ছে! সত্যিই কি এটা তার রাত ভাইয়া?? স্বপ্ন দেখছেনা তো??
সন্ধ্যা নিজের বিস্ময় চাপিয়ে চারপাশটা আরেকবার দ্রুত চোখ বুলিয়ে নিলো। অন্ধকারটা কি হঠাৎ করেই কুটকুটে কালো হয়ে গেলো? চোখ বন্ধ করে দুহাতে শাড়ী গুটিয়ে আরেকদফা দৌড় লাগায় রাতের দিকে।
সামনের সিটের দরজায় হাত লাগাতেই রাত ওর দিকে শক্ত চাহনি দেয়,যার মানে হলো পেছনে গিয়ে বোস!সন্ধ্যা মুখ বাকিয়ে পেছনে গিয়ে বসে পড়লো।
এই নিশীরাতটা কেন অভিমানি রাতে ছেয়ে আছে? কেন হলোনা তোর আর আমার ভালোবাসায়মাখা ভালোবাসার রাত?? কেন একটি মধুরস্মৃতিতে মধুরতায় ভাসলোনা?? তুই কি খুব দেরি করে ফেলেছিস? কিন্তু দেরি কেন হবে? আমারতো কোনো তাড়া ছিলোনা! তাহলে?? তবুও কেন আমি তোকে আমার মাঝে জড়িয়ে নিতে পারলাম না? কেন প্রাপ্তির হাসিতে মন ছুয়াতে পারলামনা?? তবে কি আজ ভালোবাসির থেকে অভিমানটা বেশি হয়ে গিয়েছে?? অভিমানের মোটা পর্দায় আমার সুপ্ত ভালোবাসাটা চাপা পড়ে গিয়েছে?? কিন্তু আমার মনটা যে খুব করে চাচ্ছে তোকে ভালোবাসার চাদরে মুড়ে নিতে! কিন্তু অভিমানের মোটা পর্দাটা ছিড়তে পারছিনা কেন??
রাত প্রশ্ন আর না পাওয়া উত্তরের মাঝে ডুবে থেকেই ড্রাইভ করে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে আড়চোখে সন্ধ্যাকে দেখছে। রাগে মুখ ফিরিয়ে আছে,কপালের টিকলি একপাশে পড়ে,কাজল ল্যাপ্টে বধুসাজ ঘেটে আছে।
সন্ধ্যা রাগে ফুসতে ফুসতে ঘুমিয়ে পড়েছিলো। হঠাৎ কানের কাছে নানান কথা বাজতে ঘুম ভেঙে গেলো।
“” এখানে সই করুন!””
চোখের সামনে টুপিপড়া এক মাঝবয়সী লোকের এমন কথাতে সন্ধ্যা হতভম্ভ। বলা নেই কওয়া নেই সই চাচ্ছে? আমার বাবার সব সম্পত্তি আত্মসাৎ করার মতলব নাকি?? সন্ধ্যা সরু নয়নে লোকটির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনোযোগ ক্ষুন্ন হলো দীর্ঘ হামিতে। হামির সাথে দুহাত উপরে তুলে একটু মোচড় দিতে আরো চারজোড়া পুরুষ চোখ দেখতে পেলো। যাদের মুখে স্পষ্ট বিরক্ত! সন্ধ্যা ছাড়া ছাড়া হামিটা শেষ করে চারপাশটা চোখ বুলাচ্ছে,সবকিছু কেমন সন্দেহজনক,কিডন্যাপ হয়ে গেলাম নাকি??
ধীরতারণায় চোখ বুলিয়ে তার পেছনের দরজায় চোখ পড়লো,রাত দাড়িয়ে আছে,কানে ফোন,ঠোঁট অনরবর নড়ছে। সন্ধ্যার সন্দেহমনে বেজে উঠলো,হচ্ছেটা কি?
“” ম্যাম,আপনি কি সইটা করবেন? বাড়িতে আমার বউ খাবার নিয়ে অপেক্ষা করছে,এভাবে আর কতক্ষণ অভুক্ত থাকবো?””
“” আমার সইয়ের এতো জোর? আপনাকে অভুক্ত রাখতে পারে? বাহ! বেশ ইন্টারেস্টিং তো! আমি তো জানতাম যে কিডন্যাপ হয় তাকে অভুক্ত রাখে এখানে তো উল্টো!””
সন্ধ্যার কথায় লোকটি চমকালো সাথে আহতও হয়েছে।
“”তোমাকে কেউ কিডন্যাপ করেনি,সন্ধ্যা। তোমার বিয়ে হচ্ছে। উনি তোমাকে রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করতে বলছেন।””
সন্ধ্যা চট করে চেয়ার ছেড়ে দাড়িয়ে পড়লো। পেছনে সায়ন দাড়িয়ে। সায়নকে ছেড়ে রাতের দিকে কাঠিন্যচেহারায় নিয়ে তেড়ে এসে বললো,,
“” কবুল বললাম তোমাকে,আর রেজিস্ট্রি করবো অন্য কাউকে? তুমি কি আমাকে ছ্যাকা দিতে চাচ্ছো রাত ভাইয়া??””
রাত কান থেকে ফোনটা সরালো। সন্ধ্যাকে টেনে আগের জায়গায় বসিয়ে দিয়ে কাজী সাহেবের উদ্দেশ্যে বললো,,
“” আমি কোথায় সাইন করবো?””
কাজীসাহেব হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো বিশাল হাঁসি নিয়ে রাতকে সই করার জায়গাটা দেখিয়ে দিলো। সন্ধ্যা রাতের দিকে অসহায়গলায় বললো,,
“” আমি তোমাকে উকিলবাপ বলতে পারবোনা!””
সাথে সাথে চারপাশ থেকে কৌতুক শোনার মতো হাঁসি। বিরক্ত চোখগুলো হাঁসিতে চোখ চিকচিক করছে। পেছন থেকে সায়ন বললো,,
“” রাত নয়,তুমি আমাকে উকিলবাপ ডাকবে!””
“” তাহলে আমি বিয়ে করছি কাকে?””
“” তুমি যাকে কবুল বলেছো তাকে!””
রাতের সাইনের পাশে সন্ধ্যা সাইন করবে। কলম হাতে নিয়ে চিৎকার করে উঠলো,,,
“” আমি প্রেম করলাম না তবুও পালিয়ে কেন বিয়ে করবো? আমার আম্মু,আব্বু কষ্ট পাবে। উনাদের ডাকা হোক!””
রাত সন্ধ্যার দিকে তাকালো এমনভাব যে,না করলে নাই,আমি তাহলে যাই!
রাত দরজার দিকে পা বাড়াতেই সন্ধ্যা দ্বিতীয় দফায় চিৎকার করে বললো,,
“” সই করা শেষ!””
বিয়ের পার্ট চুকে গেলোও কাজী সাহেবের সমস্যা সমাধান হয়নি। সে অভুক্ত পেট হাতরিয়ে বললো,,
“” আম্মাজান,আপনার স্বামী গাড়ী নিয়ে অপেক্ষা করছেন,আপনি এই অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে গাড়ীতে গিয়ে বসুন! আমি অফিস বন্ধ করে বউয়ের কাছে যাবো।””
সন্ধ্যা কাঠের চেয়ারটায় শক্ত আসনে বসে সহজগলায় বললো,,
“” এই যে আপনি বউয়ের কাছে যাওয়ার জন্য এতোটা কাতর আমার স্বামী কেন নয়? এমন কাতরহীন স্বামীর অপেক্ষা আমি ভাঙবনা। আজ থেকে এটাই আমার বাড়ি,আমার নাওয়া,খাওয়া,শোয়া সব এখানেই হবে। আপনার মোবাইলটা দিন তো একটা জরুরী কল করবো।””
কাজী সাহেব হতাশমনে ফোনটা সন্ধ্যার দিকে ধরলো। সন্ধ্যা ফোনের মধ্যে একটা করে ডিজিট উঠাচ্ছে আর ভাবনায় ডুব দিচ্ছে। যেন সে পরীক্ষার হলে চুড়ান্ত পর্যায়ের প্রশ্নের উত্তর ভুলে গিয়েছে!
ভাবনা থেকে পাওয়া নাম্বারটাই ডায়াল করে হ্যালো বলতেই ফোন হাওয়া! হুট করে নিরুদ্দেশ হওয়া ফোনের খোজ করার আগেই সন্ধ্যাও হওয়াতে ভাসছে। সন্ধ্যা কিছু বুঝার আগেই ওকে মাটিতে দাড় করিয়ে দিলো রাত। পেছনের দরজাটা খুলে অনেকটা ধাক্কা দিয়ে ওকে বসিয়ে দিলো।
সন্ধ্যা চুপচাপ বসে নিভু গলায় বললো,,
“” বাহ! বিয়ে হওয়ার সাথে সাথে অবজ্ঞাও শুরু!””
~~
শোশো হাওয়ার তালের সাথে গাড়ী চলছে নিজ গতিতে। দুপুর গড়িয়ে বিকেলের রোদের তীর্যক রশ্মি এসে পড়ছে সন্ধ্যার মুখে। কেমন এক গরমে ভাপসা অনুভূতি,বাইরের বাতাসটাও এখন আর গায়ে লাগছেনা। শাড়ী আর গয়নাতে এবার বিরক্ত চলে এসেছে,কেমন চুলকোনি উঠছে। কিন্তু খুলতেও পারছেনা,যার বউ হলাম সে কি আমার বউ সাজটা দেখেছে?? কি যে হয়েছে আল্লাহ জানে,মুখের সাথেতো চোখেও তালা লাগিয়েছে,তাকাচ্ছেনা পর্যন্ত। সমস্যা কি?? আমি যা চাইলাম তা না পেয়েও তোমারটা দিলাম তাও মন ভরছেনা??? এবার কি বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে না?? তোমার আর কি চাই?
“” তোমার গাড়ীর কি তেল ফুরায়না?””
রাতের দিক থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে সন্ধ্যা নিজ থেকেই আবার বললো,,,
“” আমরা যাচ্ছি কোথায়?””
“”…..””
“” উফ! কিছু বলছোনা কেন? তোমার আর কি চায়?””
সন্ধ্যা একা একা প্রশ্ন করতে করতে হাপিয়ে উঠলো। এভাবে একা একা কত বকবক করা যায়?? সন্ধ্যা বিরক্ত মুখ করে জানালার কাঁচের সাথে কপাল ঠেকিয়ে বাইরে তাকিয়ে রইলো।
~~
ধরাম করে দরজা লাগানোর শব্দে সন্ধ্যা ধরফরিয়ে উঠলো। সে কি আবার ঘুমিয়ে পড়েছিলো?? সন্ধ্যা চোখ ঢলে নিয়ে ভালো করে তাকাতেই বুঝতে পারলো নিজের বাসায় চলে এসেছে। রাত তখনো নিজের সিটেই বসে আছে তাহলে শব্দটা কোথা থেকে আসলো?? সন্ধ্যা রাতের দিকে একপলক তাকিয়ে নিয়ে গাড়ী থেকে নামতে গিয়েও নামলোনা। আবার আগের জায়গায় বসে থেকে ভাবছে,তুমি যেহেতু মুখ ফুটে নামতে বলছোইনা তাহলে আমিও নামবোনা,হুহ!
নিজের ভাবনায় নেওয়া সিদ্ধান্তের সাথে সন্ধ্যা হাটু উচু করে বসে রইলো। দুহাতে হাটু জড়িয়ে রাতের মুখের বুলির জন্য অপেক্ষা করছে। সময় গড়াচ্ছে,দুজনেই চুপ! সন্ধ্যার নিরব আলোতে দুজন আবার মিশে যাচ্ছে। পুরোপুরি মিশে যাওয়াটা হলোনা তার আগেই রাত এসে সন্ধ্যাকে টেনে নামিয়ে দিলো।
“” বউ শ্বশুড়বাড়ি এলেতো বর কোলে করে ভেতরে ঢুকায় আর তুমি আমাকে আসামীর মতো টেনে ছিচড়ে জেলে ঢুকাচ্ছো? তোমার কি মায়া দয়া নেই?? মানছি এটা আমার বাপের বাড়ি আবার শ্বশুড়বাড়িও,তাই বলে কি আমি বউআদর পাবোনা? আমি কি পোড়াকপালি?””
সন্ধ্যার আফসোসের সুর রাত গায়ে মাখেনি,পুনরায় ইঞ্চিন সচল করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
~~
সন্ধ্যার খাওয়ার দিকে তাকিয়ে তিয়ামতী বললো,,
“” আরে আসতে খা,গলায় আটকাবে তো। নাকের নোলকটা তো খুলে নে!””
“” উফ! খাওয়ার সময় ডিস্টার্ব করো নাতো। তোমার ছেলে আমাকে তিনদিন না খায়িয়ে রেখেছে।””
“” তিনদিন না খেয়ে রেখেছে মানে? আমি তো কাল কে বরপক্ষ আসার আগেই তোকে ঠান্ডা সরবত খাওয়ালাম!””
সন্ধ্যা খাবার খাওয়া বন্ধ করে বললো,,
“” তাহলে আমি একদিনে দুরাত কিভাবে ঘুমালাম,মামি?””
তিয়ামতী সন্ধ্যার মাথায় হালকা বারি দিয়ে বললো,,
“” গাধী একটা!””
“” তুমি আমার ঘোমটা নষ্ট করছো কেন? আমার তো এখনো বাসর বাকি।””
“”শ্বাশুড়ির সামনে এসব কি কথা লজ্জা কি সব খেয়ে ফেলেছিস?””
“” আমি খাইনি,তোমার ছেলে খেয়ে ফেলেছে!””
“” পাজি হয়েছিস অনেক। খাওয়া শেষ কর আমি তোকে আবার সাজিয়ে দিবো। এখন তোকে ভূতের মতো লাগছে!””
“” তুমি সাজিয়ে দিবে?””
“” কেন? আমি দিলে সমস্যা?””
“” আমার লজ্জা লাগবে।””
তিয়ামতী চোখ সরু করে বললো,,
“” লজ্জা লাগবে কেন?””
সন্ধ্যা দুহাতে মুখ ঢেকে বললো,,,
“” সাজতে লজ্জা লাগবেনা তো,শ্বাশুড়ির সাজে ছেলে ছুবে তাই লজ্জা লাগবে।””
সন্ধ্যার উত্তরে তিয়ামতী বিব্রতবোধ করছে। ডাইনিং ছেড়ে যেতে যেতে বিড়বিড় করছে,কি সুক্ষ চিন্তা-ভাবনা!
~~
রাতের ড্রেসিংটেবিলটার সামনে দাড়িয়ে আছে সন্ধ্যা। আগের বউ সাজ গোসলের সাথে ধুয়ে ফেলেছে। নতুন করে সেজেছে,তিয়ামতীর হাতেই। শ্বাশুড়ি ছেলের বউকে সাজিয়ে দিবে এমন সুযোগ সে কেন মিস করবে?? সন্ধ্যা আয়নার সামনে নিজেকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে। আগেরবারের মতো ভারী মেকাপ নেই,কিন্তু এই সাজটাতেই বেশি স্নিগ্ধ লাগছে। পুরো সাজ ঠিকঠাক মতো দেখে নিয়ে হাতে চুড়ি পড়ে নিলো। ঠোঁটের লিপস্টিকটা আরেকটু গাঢ় করতে যাবে তখনি রাতের কন্ঠ। বাবার সাথে কথা বলছে মনে হয়। সন্ধ্যা চটপটে লিপস্টিকটা ঠোঁটে লেপে নিয়ে বিছানায় উঠে বসলো। মাঝ বরাবর বসে মাথার ঘোমটাটা টেনে দিলো!
চলবে