ভালোবাসায়_বন্দিনী #পর্ব_১৬

0
2459

#ভালোবাসায়_বন্দিনী
#পর্ব_১৬
#জান্নাতুল_নাঈমা

বিছানায় বসিয়ে পিছন থেকে জরিয়ে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো রুদ্র,

— চুপ!একদম ছটফট করবেনা। যা করছি চুপচাপ শুধু অনুভব করবে। এভাবে মুখ না বাঁধলে চুপ করে থাকতে পারতে না তাই এই ব্যবস্থা। আমার কাজে বাঁধা আসুক তা আমি একদম পছন্দ করি না। বলেই ঘাড়ের ওপর থেকে সবগুলো চুল কাঁধে সাইট করলো।

কানে গরম শ্বাস পড়তেই অদ্ভুত এক শিহরণ খেলে গেলো হৈমীর পুরো শরীর জুরে। ঘাড়ে আলতো হাতের স্পর্শ পেয়ে এমনভাবে কেঁপে ওঠলো যেনো হুট করেই কারেন্টে শখড খেয়েছে। ঘনশ্বাসের বাড়িতে উম উমহ শব্দ টাও ঘন হয়ে এসেছে। রুদ্র হেমীর হাতের বাঁধন খুলে দিয়ে এক হাতে পেট জরিয়ে নিলো। হাত ছাড়া পেতেই হৈমী হাত দিয়ে সর্বশক্তি প্রয়োগ করলো রুদ্রর জরিয়ে রাখা এক হাত ছাড়াতে। কিন্তু ব্যার্থ হলো সে রুদ্র হৈমীর বাঁধা পেয়ে আলতো করে পেটে চাপ দিলো। হৈমীর দম যেনো বন্ধ হয়ে আসছে হাঁপিয়ে ওঠেছে সে শরীর ঘেমে অস্থির এক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রুদ্র শপিং ব্যাগ থেকে কানের দুল বের করে হৈমীর কানে পড়া দুলটা খুলতে লাগলো। বিছানায় হৈমীর দুল জোরা রেখে নিজের কেনা গোল্ডের ঝুমকো জোড়া পড়িয়ে দিতে লাগলো। এতোক্ষণ ছটফট করলেও যখন বুঝতে পারলো তাকে কিছু পড়ানো হচ্ছে তখন চুপ করলো। চোখ বন্ধ করে ক্রমাগত শ্বাস নিতে থাকলো সে। রুদ্র যতো স্পর্শ করছে ততোই কেঁপে ওঠছে সে।

“এ কেমন অনুভূতি এমন খসখসে হাতের আলতো স্পর্শে বুকের ভিতর এমন করে কেনো? শরীরে শিরশির করে কেনো? লোকটার শরীরে কারেন্ট লাগানো আছে নাকি ছুঁয়ে দিলেই শখড খাচ্ছি” ভাবলো হৈমী৷

কানের দুল পড়ানো শেষে দুহাতে চুড়ি পড়ালো, গলায় হাড় পড়াতে যেতেই রুদ্রর হাতটাও অস্বাভাবিক ভাবে কাঁপতে শুরু করলো। এই পিচ্চি শরীরের পিচ্চি মেয়েটা তাঁর বউ ভাবতেই বুকের ভিতর কেমন অজানা সুখ সুখ অনুভব হচ্ছে। নারীর শরীরের মিষ্টি সুগন্ধ বুঝি এমনই মাতাল করা হয়? চোখ বুঝে লম্বা এক শ্বাস নিলো রুদ্র। নারীর শরীরের এমন মাতাল করা ঘ্রান খুব কাছ থেকে পেলে যে কোন পুরুষের অনুভূতি সৃষ্টি হবে। এক ঢোক গিলে নিয়ে চোখ জোরা খুললো ব্যাগ থেকে নুপুর জোরা বের করে হৈমীর থেকে সরে পাশে বসলো।হৈমী একদম স্ট্যাচু হয়ে বসে আছে। রুদ্র আপনমনে তাঁর ডান পা টা আলতো করে ধরে নিজের কোলের ওপর বসালো হৈমী ছিটকে যেতে নিয়েও পারলো না। রুদ্র শক্ত করে চেপে ধরেছে তাঁর পা। কিছু সময় কিছু অনুভূতি সহ্য করার মতো হয় না। বুঝে ওঠা যায় না অনুভূতি টা ভালোলাগা না খারাপ লাগা বুকের ভিতর অস্বাভাবিক চাপ দেয় খুব করে যা সহ্য করা যায় না। হৈমীর অনুভূতিটাও ঠিক তেমন। পায়ে নুপুর পড়ানো শেষে রুদ্র তাকালো হৈমীর দিকে। হৈমীর দুচোখে বেয়ে পড়া দু ফোটা জল স্পষ্ট দেখতে পেলো সে। মৃদু আওয়াজে জিগ্যেস করলো,

— সীমিত বিয়ের সীমিত গিফ্ট খুশি? ওয়েট বলেই পিছন গিয়ে ওড়নার বাঁধন টা খুলে দিলো।

বাঁধন খুলতেই হৈমী জোরে জোরে কয়েকদফা শ্বাস ছাড়লো আর নিলো। রুদ্র হৈমীর অবস্থা দেখে বিছানা ছেড়ে ওঠে দাঁড়ালো। কাবলীর হাতা কনুই অবদি ওঠাতে ওঠাতে বললো,

— কিছু জিগ্যেস করেছি?

হৈমীর যেনো ঘোর ছাড়ছেই না তবুও নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে বললো,
— না খুশি না। গিফ্ট কিভাবে দিতে হয় তা শিখে এসে গিফ্ট দেবেন এমন ভিলেন মার্কা বিহেভিয়ারে আমি খুশি হতে পারবো না। গিফ্ট দিলেন নাকি কিডন্যাপ করে গয়না পড়ালেন কিচ্ছু বুঝলাম না। হিরো হিরো হয়ে গিফ্ট দিতে হয় তা কি জানেন না।
— ভিলেন না হিরো তা বোঝার জন্য মাথা লাগে যা তোমার নেই। যার মাথাই নেই সে বুঝবে কি করে তাই বুঝতে হবে না থাকো আমি যাচ্ছি। এখানে থাকলে তোমার বকবকানিতে আর যাই হোক ঘুম হবে না। কাল রেডি হয়ে থেকো তোমার বিয়ের ট্রিট পেয়ে যাবে। বলেই বের হতে নিবে এমন সময় হৈমী বললো,
— দাঁড়ান আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
— হুম বলো?
— সূচনা আপুর কি হবে? আপনার পরিবার এই সম্পর্ক টা কে কিভাবে দেখবে? ইতস্ততভাবেই বললো হৈমী।
— সেসব নিয়ে তোমার মাথা না ঘামালেও চলবে। আর সূচনা আমার বোন, মা খালা একি জিনিস তাই খালাতো বোনকে আর যাই হোক বউ বানানোর মতো কুরুচি আমার নেই।
— কিন্তু,,,
— শসস একদম চুপ!এসব বিষয়ে মাথা মন কোনটাই খাটাতে হবে না। এটা তোমার কাজ নয়। আর কথা না বাড়িয়ে সিটকেরী খুলে বেরিয়ে গেলো রুদ্র।

হৈমী হঠাৎই বেশ নিশ্চুপ হয়ে গেলো। নিজের গলায়, কানে হাত দিতে লাগলো। সুখ না দুঃখ কোনটা হচ্ছে তাঁর? কেনো বুঝতে পারছে না তাঁর অনুভূতি গুলো?

ফোনের আওয়াজে ভ্রু কুঁচকে বিছানায় তাকালো হৈমী। এটা তো তাঁর ফোন না তাহলে কি ওনার?
হাত বাড়িয়ে ফোন হাতে নিয়ে বিছানায় বসলো স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখলো আবির নাম লেখা। রিসিভ করবে কি করবে না ভাবতে ভাবতে রিসিভ করেই ফেললো।

— কি ব্রো,,,তোমার বাচ্চা বিড়াল মারবে নাকি বড় হওয়ার সময় দিবে। যতো যাই বলো ১৬, ১৭ তে বিড়াল মারাই যায়। বললো আবির হেসে ওঠলো কয়েকজন।

হৈমী ভ্রু কুঁচকে ভাবতে লাগলো রুদ্রর সেই কথাটা তুমি যদি বিড়াল হও আমি বাঘ। “তার মানে আমাকে মারার প্ল্যান করেছিলো এতো বড় সাহস ” ভেবেই রেগেমেগে বললো,

— এই যে আবির ভাইয়া কি ভেবেছেন কি হ্যাঁ? আমি বাচ্চা? মোটেই বাচ্চা না। আর বিড়াল মারবে মানে আসুক বিড়াল মারতে আমিও বাঘ মারবো। কি ভেবেছেন কি আমি দূর্বল প্রানী মোটেই না আসুক আপনার ফ্রেন্ড অনেক ভদ্রতা হয়েছে এবার একটা শিক্ষা দিয়েই ছাড়বো।

সাদমান,আবির, নিরব আরো দুজন বন্ধুর চোখ কপালে ওঠে গেলো যেনো। সকলেই এক ঢোক গিললো। হাসবে না কাঁদবে কিছুই বুঝতে পারছে না তাঁরা। এদিকে হৈমী সমানে থ্রেট দিয়ে যাচ্ছে। যেনো ফোনের ভিতের ঢুকেই আবিরের কানের বারোটা বাজিয়ে দিবে৷ সাদমান আবিরকে ইশারা করলো,

— ভাইয়ে ফোন টা কাট রুদ্র জানলে পিষে মারবে আমাদের। আবির তাঁরাতারি কাঁপা হাতে ফোন কেটে দিলো।
— কি ব্যাপার ভয় পেয়েছেন ফোন কেটে দিলেন কেনো? কার দলে থাকবেন না বলেই ফোন কাটলেন বলেই আবিরের নাম্বারে ডায়াল করলো।

ফোন বাজতেই আবির কেঁপে ওঠলো কারন তাঁদের কাছে রুদ্র সবেই এসেছে৷ আবির বললো,
— রুদ্র তুই ফোন দেস কেনো?
রুদ্র ভ্রু কুঁচকে বললো,
— ফালতু বকিস কেনো বেশী খেয়ে ফেলেছিস নাকি আজ?
আবির ফোন এগিয়ে দিতেই রুদ্র দেখলো তাঁর নাম্বার খেয়াল হলো ফোন হয়তো হৈমীর রুমেই রেখে এসেছে। কিন্তু হৈমী এ নাম্বারে ফোন দিচ্ছে কেনো?ভেবেই রিসিভ করলো।

— কি ভাইয়া ফোন কাটলেন কেনো? আপনার বন্ধু আমাকে মারার প্ল্যান করেছিলো আর আমাকে আপনারা কেউ বলেননি। শুনুন আমি ছোট হতে পারি আমাকে দেখে বিড়াল মনে হতেই পারে তাই বলে আমি দূর্বল না। তাই আপানর বন্ধু আমাকে বিড়াল ভেবে মারতে আসবে আর আমি হাত পা গুটিয়ে বসে থাকবো তা ভাববেন না। এই ছোট বিড়ালের কাছেও আপনার বাঘ বন্ধু হার মানবে দেখে নিবেন৷ বিড়াল না বাঘ মারা পড়বে হুমহ।

একদমে হৈমীর অদ্ভুত সব কথাবার্তা শুনে মাথা টা ঘুরে গেলো রুদ্রর। এমন বাজে বকছে কেনো? এগুলো কি কথাবার্তা ভেবেই আবিরকে খুঁজতে লাগলো কিন্তু আবির নেই। সাদমানের দিকে তাকালো সাদমান চোখ ঘুরিয়ে নিলো বাকিরা যে যার মতো ড্রিংক করছে। এদিকে হৈমী কিসব আবোল তাবোল বকে যাচ্ছে। দাঁত চিবিয়ে বললো,

— এসব কি বলছো মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোমার? ননসেন্স, ইডিয়ট একদম চুপ ফোন রাখো।
— কিহ!আমাকে বলছেন আর আপনি যে আপনার বন্ধু দের বলেছেন আর আপনার বন্ধু যে ফোন করে আমাকে মারার কথা বললো।
— হোয়াট!
— হ্যাঁ হ্যাঁ আবির ভাইয়াই তো জিগ্যেস করলো ফোন দিয়ে বাচ্চা বিড়াল মারবেন নাকি বড় হওয়ার সময় দিবেন। ভাগ্যিস ফোন রেখে গেছিলেন নয় তো আপনার আসল রূপ ধরতেই পারতাম না ছিঃ। আমাকে বিড়াল বানিয়ে আবার মারার প্ল্যান ঘুচাচ্ছি আপনার প্ল্যান।

হকচকিয়ে গেলো রুদ্র চোখ কটমট করে বন্ধু দের দিকে তাকালো। লাগাম ছাড়া কথাবার্তা বলতে নিষেধ করেছে আর এরা কিনা হৈমীকে ফোন করে এসব বলেছে। এমনিতেই মাথা খারাপ মেয়ে আরো চারগুন খারাপ করার জন্য এই অসভ্যের দলেরাই যথেষ্ট ভেবেই ফোন কেটে দিয়ে বন্ধ করে দিলো।

এদিকে হৈমী আবার ডায়াল করে ফোন বন্ধ পেয়ে ইচ্ছে রকম বকাবকি শুরু করলো ফোন টাও রাগে বিছানার একপাশে ছুঁড়ে দিলো।
.
আজানের সময় বাসায় ফিরলো মাহের। ঢুলু ঢুলু চোখ, মুখ,শরীরে নিজের রুমে প্রবেশ করলো সে।
দরজা লাগিয়ে মেঝেতেই বসে পড়লো শার্টের বোতাম উপরের দিকে কয়েকটা খোলা। বুকের লোমগুলো ওকি দিচ্ছে শার্ট ভেদ করে। চুলগুলো উষ্কখুষ্ক হয়ে আছে জীবনে এ প্রথম নেশাদ্রব্য পান করলো সে। সুখনীড়ে গিয়ে যখন দাদুর মুখে শুনলো এ বিয়েতে তাঁর সম্মতি ছিলো,হৈমীরও আহামরি কোন সমস্যা হয়নি নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলো না মাহের।নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি সে মনের সব কথা বলে দিয়েছে দাদুকে। দাদুর দু পা আঁকড়ে ধরে আকুতি মিনতি করেছে হৈমীকে পাওয়ার জন্য। বিয়েটাকে অস্বীকার করার জন্য অনুরোধ করেছে। হৈমীকে নিজের জীবন দিয়ে হলেও সুখে রাখবে সেই প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। কিন্তু দাদু তাঁর সিদ্ধান্তে অটুট। সব থেকে বড় আঘাত দাদুই দিলো তাঁকে সব থেকে বড় ষড়যন্ত্র দাদুই করলো তাঁর সাথে। দাদু বললো,

— দাদু ভাই এটাই নিয়তি। তোমার নিয়তি তে হৈমী ছিলো না তাই এভাবে অন্য কেউ হুট করে এসে হৈমীকে নিজের বন্দীনি করে নিলো। ভালোবাসলে যে সব সময় তাঁকে নিজের করে পেতে হবে এমন তো কথা নেই দাদু ভাই। ভালোবাসার মানুষের সুখের জন্য কখনো কখনো তাঁর জীবন থেকে সড়ে যাওয়াই ভালো। তুমি হৈমীকে মন,প্রান দিয়ে ভালোবাসলেও উপরওয়ালা তোমার ভাগ্যে হৈমীকে আর হৈমীর ভাগ্যে তোমাকে রাখেনি।

— তাহলে কেনো আমি ওকে এতোটা ভালোবাসলাম দাদু ভাই। কি করে সহ্য করবো এসব আমি।যদি নাই পাবো ওর জন্য মনের ভিতর কেনো এতো ভালোবাসা তৈরি হলো?কেনো এতো মায়ার সৃষ্টি হলো? আমার প্রতিরাতের স্বপ্নে কেনো আসে সে? পারছিনা আমি আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে সব শেষ হয়ে যাচ্ছে আমার। পাগল পাগল লাগছে হৈমীর তো আমার হওয়ার কথা ছিলো দাদু ভাই কেনো সে অন্যের হয়ে যাবে। বললো মাহের।

— ভাগ্যের লিখন খন্ডানো যায় না। এটাই ভাগ্যের লিখন। আমি বলবো যা তুমি এতোদিন প্রকাশ করোনি তা আর কখনোই প্রকাশ করো না। এতে তো লাভ হবেই না বরং হৈমীর মধ্যে একটা অপরাধ বোধ,লজ্জা বোধ তৈরী হবে। ও এখন যেমন স্বাভাবিকভাবে তোমার সাথে মিশে সব সত্যিটা জানার পর হয়তো আর কখনো স্বাভাবিক ভাবে মিশতেই পারবে না। তোমাদের মধ্যে যে ভালো একটা বন্ধন রয়েছে সেটাও নষ্ট হবে বলেই মাহেরের মাথায় স্নেহের হাত রেখে বললো,ভোগে নয় ত্যাগেই সুখ। জানি কষ্ট হবে কিন্তু ভালোবাসার মানুষ কে সুখে দেখার চেয়ে বড় কোন সুখ কি আছে? হৈমীকে পাওনি বলে তাঁর সুখ কামনা করবে না? তাঁর খুশি কামনা করবে না?

স্তব্ধ হয়ে গেলো মাহের। এতো কঠিন প্রশ্ন দাদু কেনো ছুড়ে দিলো তাকে৷ মন প্রান দিয়ে যাকে চারটে বছর ধরে ভালোবেসে এসেছে তাঁর সুখ সে কেনো চাইবে না। তাই বলে তাঁর পাশে অন্য কাউকে কি করে মেনে নেবে? যার মাথা তাঁর বুকে থাকার কথা, যার পাশে তাঁর থাকার কথা, যার হাতে তাঁর হাত রাখার কথা সেসবে অন্য কেউ কে কি করে মেনে নেবে।

দাদু মাহেরের নিরবতা দেখে বললো,

— আমি জানি তুমি পারবে নিজেকে সামলাতে। আমি জানি তুমি সবার থেকে আলাদা তুমি যথেষ্ট ধৈর্যশীল একটা ছেলে। খাঁটি সোনা তুমি দাদু ভাই তুমি পারবে।

মাহের আর কোন কথা না বলে অবশ শরীরে সেখান থেকে চলে এলো। তাঁর এতো দিনের গড়ে তুলা স্বপ্ন হুট করে এমনভাবে ভেঙে গুড়িয়ে যাবে কল্পনাও করতে পারেনি। তাঁর ভালোবাসার গভীরতা প্রকাশিত হওয়ার আগেই এভাবে ভালোবাসার মানুষ টি অন্যকারো হয়ে গেলো ভাবতেই বুকটা হুহু করে ওঠছে। কি ভাবে সামলাবে সে নিজেকে?কিভাবে চোখের সামনে ভালোবাসার মানুষ টিকে অন্যকারো হতে দেখবে। রাতের পর রাত যাকে ঘিরে স্বপ্ন বুনেছে বুকের ভিতর ভালোবাসার ছোট্ট এক ঘর সাজিয়েছে সেই স্বপ্নরানীকে ঘরে তোলা যে কোন দিন হবে না। বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো চোখ দিয়ে বেরিয়ে এলো অজস্র নোনাপানি। পুরুষ মানুষ সহজে কাঁদে না। মাহের প্রচন্ড সহনশীল এবং শান্তশিষ্ট প্রকৃতির একটি ছেলে। যেকোন কঠিন পরিস্থিতি তে সে যথেষ্ট মাথা ঠান্ডা রাখে নিজেকে স্ট্রং রাখতে পারে অথচ আজ?তাঁর মতো ধৈর্যশীল ছেলের চোখ দিয়েও জল বেরিয়েছে? সত্যিকারের ভালোবাসা হারানোর যন্ত্রণা বোধ হয় একেই বলে।
.

চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here