#ভালোবাসায়_বন্দিনী
#পর্ব_২০
#জান্নাতুল_নাঈমা
রুদ্রর মৃদু ধমক শুনে সূচনা ইতস্তত করে মাথা নিচু করেই বলে,
— আমি যাই।
রুদ্র তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে বিরবির করে বলে,
— আজব দুনিয়ার আজব মানুষ।
শহড় ছেড়ে কয়েকটা দিন দূরে ছিলো রুদ্র। কিন্তু মনটা শহড়েই তাঁর স্বপ্নের সুখনীড়ে পড়েছিলো। ভালো লাগছেনা কিছু আজকের দিন রেষ্ট নিয়ে কাল তাঁর তোতাপাখি কে দেখতে যাবে। অনেকটা সময় কাটাবে দুজন একাকী। ভেবেই মৃদু হেসে পকেট থেকে ফোন বের করে হৈমীর নাম্বারে ডায়াল করে কিন্তু বন্ধ পায়৷ বিরক্ত হয়ে ফোনটা ট্রি টেবিলে ছুঁড়ে ফেলে উপরে চলে যায়। লম্বা একটা শাওয়ার নিয়ে আবারো নিচে আসে ফোনটা হাতে নিয়ে সাদমানের নাম্বার ডায়াল করে সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে যায়।
.
অনেকদিন পর সাদমান,আবির,নিরবের সাথে বেশ আড্ডা দিলো রুদ্র। সাইকেল পেয়ে হৈমী ভিষণ খুশি হয়েছে জানালো সাদমান৷ হৈমীর খুশি হওয়ার কথা শুনে বাঁকা হাসলো রুদ্র। কক্সবাজার থেকেই সাদমানকে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছিলো হৈমীর সাইকেলটা দিয়ে দিতে সাইকেল পেয়ে অবশ্যই মেয়েটা খুব খুশি হবে। কারন হৈমীর খুশি হতে বেশী কিছু লাগেনা অল্পতেই সে ভিষণ খুশি থাকে।
বন্ধু দের সাথে ড্রিংক করে বাড়ি ফিরলো রুদ্র। ড্রয়িং রুমে সূচনা বসে ছিলো। রুদ্র চোখ টেনে চেয়ে সূচনাকে জিগ্যেস করলো,
— কি রে এখনো ঘুমাসনি?
সূচনা চট করে ওঠে মাথা নিচু করে আমাত আমতা করে বললো,
— আসলে আমার পরীক্ষা চলছে তাই আর কি পড়ছিলাম৷ তততুমি পানি খাবে? আনবো?
রুদ্র চোখ টেনে টেনে সোফায় গিয়ে বসে বললো,
— দিবি যখন দে তারপর গিয়ে ঘুমিয়ে পড়। রাত জেগে পড়তে হয় না ভোরে ওঠে পড়বি দেখবি ফ্রেশ মাইন্ডে যা পড়বি সব মাথায় গেঁথে থাকবে।
সূচনা মুচকি হাসলো এই রুদ্র কেই তো সে চায়। অনেকদিন পর রুদ্র আবার আগের মতো তাঁর সাথে কথা বলছে খুব ভালো লাগছে তাঁর দ্রুত এক গ্লাসে পানি ভরলো।দাদির কথাটা মাথায় বাজছে বার বার৷ কিন্তু তাঁর বুকটা ভিষন কাঁপছে ভয় প্লাস লজ্জায় মিইয়ে যাচ্ছে সে৷ রুদ্র নেশা করলেও তাঁর বেশ হুঁশ থাকে তাই দাদি তাঁকে একটা বুদ্ধি দিয়েছে। সেই বুদ্ধিই কাজে লাগালো সে। একটু বুদ্ধি খাটিয়ে যদি ভালোবাসার মানুষ টিকে সারাজীবনের জন্য আপন করে পাওয়া যায় তাহলে ক্ষতি কি? সব কিছুতে ছাড় দিলেও ভালোবাসার মানুষ কে নিয়ে কখনো কাউকে ছাড় দিতে নেই। ভেবেই লম্বা এক শ্বাস টেনে গ্লাসটা দুহাতে চেপে ধরে ধীর পায়ে এগিয়ে গেলো ড্রয়িং রুমে।
পানি সামনে ধরতেই রুদ্র চোখ টেনে চেয়ে গ্লাসটা হাতে নিলো। কিছুক্ষণ ঝিম মেরে বসে থেকে পানিটা ঢকঢক করে খেয়ে নিলো। যার ফলে বিশ্বজয়ী হাসি দিলো সূচনা।
.
রুমে এসে রুদ্র চোখ, মুখ ধুয়ে একটা ঘুমের টেবলেট খেয়ে নিলো৷ এতদিন কাজের চাপে আর হৈমীর জন্য ঘুমটা ঠিকভাবে হয়নি। আজো হবেনা মনটা উশখুশ করবে হৈমীর কাছে যাওয়ার জন্য৷ তাঁর মেজাজ এমনিতেই খিটখিটে তারওপর ঘুম না হওয়ায় অল্পতেই রেগে যাচ্ছে। হৈমী এতদিন তাঁকে প্রচন্ড ইগনোর করেছে ফোন ধরেনি দাদু বলাতেও সে কথা শুনেনি। যার ফলে এমনিতেই ক্ষেপে আছে সামনে গেলে ত্যাড়ামি করলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবেনা তাই আজ সারারাত ঘুমিয়ে নিজেকে এবং নিজের মাথাটাকে ঠান্ডা করে নেওয়া প্রয়োজন। শরীরের কাপড় খুলে একটা শর্ট প্যান্ট পড়ে নিয়ে শুয়ে পড়লো রুদ্র।
কিছুক্ষণ শুয়ে থাকার পরই ঘুমিয়ে পড়লো। গভীর ঘুম না হওয়াতে বুঝলো তাঁর শরীর গরম হয়ে আসছে। চোখ খুলতে পারছেনা তবুও জোর করে খুললো শরীর ঘামছে তাঁর অথচ এসি চলছে। এমন ফিলিং এর কোন মানে খুঁজে পেলো না। এসির পাওয়ার আরো বাড়িয়ে দিয়ে আবারও চোখ বুজলো। ঘুম অবস্থায়ও টের পেলো তাঁর শরীরে কেমন উত্তেজনা তৈরী হচ্ছে তবুও নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে জোর করে ঘুমানোর চেষ্টা করলো। মনের উপরে কোন কিছুরই জোর চলে না। মানুষের শারীরিক চাহিদা থাকে কিন্তু মনের চাহিদাই সবচেয়ে বড় চাহিদা।
আধাঘন্টা পর রুমে আসে সূচনা। ড্রিংক করার সাথে আবার ঘুমের টেবলেট খাওয়াতে ঘুমটা বেশীই গভীর হয়ে গেছে। মাথার মধ্যে সর্বক্ষন হৈমী চলাতে ঘুমানোর পরপরই স্বপ্নদেশে চলে গেছে হৈমীকে নিয়ে।আর এই সুযোগ টাই নিলো সূচনা।
.
দুটো ক্লাস করেই কলেজ থেকে বের হলো হৈমী। নয়নকে নিয়ে গেলো ফুসকার মামার দোকানে। দুজন দুপ্লেট ফুসকা খেয়ে টাকা মিটিয়ে বাস স্ট্যান্ডের দিকে হাঁটা ধরলো। পরিচিত রিকশা দেখেই নয়ন লাফিয়ে ওঠলো।
— রতন ভাই রতন ভাই আমাকে বাসায় রেখে আসো তুমিও কি বাসায় যাচ্ছো দুপুরের খাবার খেতে?
নয়নের কথা শুনে রিকশা থামালো রতন কাঁধের গামছা দিয়ে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে বললো,
— হ রে যাইতাছি ওঠে বয় তাইলে।
হৈমী নাক, মুখ ফুলিয়ে বললো,
— পরীর স্কুলে যেতে হবে আর তুই যাবিনা।
— সরি দোস্ত নয়না আপু আসছে কতো দিন পর আমার ক্লাসেই মন বসছিলো না। এখন তো এক সেকেন্ড ও দেরী করতে মন চাচ্ছে না তুই একাই যা। পরীকে নিয়ে বাড়ি পৌঁছে মেসেজ দিয়ে দিস একটা।
— ওকে শাঁকচুন্নি যা তো যা ভালোবাসা দেখাতে হবে না। মেসেজ তো দূর তোর নাম্বারই ভুলে যাবো আমি হুমহ। অভিমানী স্বরে কথাটা বলে ওলটো পথে হাঁটা ধরলো হৈমী।
.
বেশকিছু পথ হেঁটে আসতেই মেইন রাস্তায় কালো গাড়ি থামানো দেখতেই বুকটা ধক করে ওঠলো হৈমীর।গাড়িটা তো পরিচিত ভ্রু কুঁচকে আরেক পা আগাতে নিবে তখনি গাড়ি থেকে রুদ্র কে নামতে দেখলো। কালো কাবলী পড়া চুল গুলো সেই প্রথম দিনের ন্যায় বড় বড়, গাল ভর্তি দাঁড়ি এক ঢোক গিলে হৈমী গাড়ির পিছনে চলে গিয়ে নিচু হয়ে রইলো।ভয়ে হাত পা তাঁর কাঁপছে একবার যদি রুদ্র তাঁকে দেখে নেয় তাহলে আজ রক্ষা নেই। ভেবেই কয়েক ঢোক গিলে প্রস্তুতি নিলো এক দৌড়ে পালাবে দুচোখ যেদিকে দেখবে দুপা যেদিকে যাবে সেদিকেই ছুটবে। তবুও এই খাটাশটার নজরে পড়তে চায় না খাটাশটার কাছে নিজেকে ধরা দিতে চায় না। প্রায় দশ বারোদিন হলো সে রুদ্রর ফোন ধরছে না তাঁকে এমনি এমনি কি আর ছেড়ে দেবে নাকি। মনে মনে হাজারটা দূয়া দরূদ পড়ে এক পা এক পা করে পিছুতে পিছুতে শক্ত কিছুর সাথে তাঁর কোমড় বেজে পড়লো। চমকে গিয়ে পিছন ঘুরে তাকাতেই চারশ আশি ভোল্টেজ এর শক খেলো। সামনে বাঘ দেখে পিছুতে পিছুতে কিনা সেই বাঘের সাথেই বেজে পড়লো।চোখ, মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট হাত কাঁপছে ঠোঁট জোরা কাঁপছে। যা স্পষ্ট ভাবে রুদ্রর চোখে ধরা পড়লো।হৈমী তাঁকে দেখে লুকিয়ে পড়তেই রুদ্র সামনে দিয়ে ওপাশ গেছে।
— অন্যায় করে, ভুল করে যদি এভাবে ভয়ই পাও তাহলে সে অন্যায়, সে ভুল কেনো করতে যাও? টেল মি! গম্ভীর কন্ঠে বললো রুদ্র।
হৈমী ভয় পাচ্ছে রুদ্র সেই ভয় টের পেয়েছে। ভাবতেই নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো হৈমী। আমতা আমতা করে বললো,
— দেখুন আপনি আমার শত্রু আর শত্রুর থেকে দূরে দূরেই থাকতে হয়। কি ভেবেছেন সেদিনের কথা আমি ভুলে গেছি? আপনি একজন মহাখারাপ মানুষ। আপনি একটা হার্টলেস ভয়ংকর পাষাণ লোক। জানেন সেদিন আমার কতো জ্বর হয়েছিলো? ভয় দেখিয়ে তো উধাও হয়ে গেলেন যদি মরে যেতাম তাঁর দায় কে নিতো? এই যে জ্বর হয়েছিলো তাঁর দায় কে নিয়েছে।
রুদ্র কথা বাড়ালো না হৈমীর হাতটা শক্ত করে চেপে ধরলো। হৈমী এক ঝটকা দিয়ে ছাড়াতে চেয়েও পারলো না। রুদ্র তাঁকে টেনে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিলো।
— আমি যাবো না আমি আপনার সাথে যাবো না। আপনি একটুও সুবিধার না। না জানি ইচ্ছে করে গাড়ির ব্রেকফেল করে আমাকে মেরে ফেলেন। আমি নেমে যাবো, আমি যাবো না আপনার সাথে। চেচামেচি করতে শুরু করলো হৈমী।
রুদ্র গাড়ি লক করে দিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট দিতে দিতে বললো,
— ব্রেকফেল করলে আমার প্রানটাও যাবে তাই সে ভুল আমি করবোনা আশা করি তোমার মোটা মাথায় কথাটা ঢুকেছে?
কথাটা শুনে হৈমী দ্বিগুন চেঁচাতে শুরু করলো কিন্তু কাজ হলো না অবশেষে উপায় না পেয়ে পরীর ছুতো দিতে লাগলো।
— পরীকে আনতে হবে আপনি কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে। যাবোনা আমি পরী কাঁদবে ওর খিদে পেয়েছে বাড়ি নিয়ে খাওয়াতে হবে ওকে। আরে গাড়িটা থামান না।
— চুপপ করে বসে থাকো সাদমান কে ফোন করে দিচ্ছি পরীকে বাড়ি নিয়ে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে দেবে। বলেই সাদমান কে ফোন করে বলে দিলো সবটা।
হৈমী রাগে ফুঁসতে শুরু করলো। অথচ এই রাগের কোন মূল্য নেই বরং তাঁর মন আর মস্তিষ্কের ক্ষতি। তাই নিজের মতো আজেবাজে যতো বকবক আছে করা শুরু করলো। যাতে রুদ্র বিরক্ত হয় একটু ভয় হচ্ছে যদি মারে তবুও সে বিরক্ত করবে। কেউ দশটা দিলে সে যদি একটা দিতে পারে এতেই তাঁর শান্তি।
হঠাৎ গাড়ির ব্রেক কষলে চমকে ওঠে হৈমী। বকবকানি থামিয়ে রুদ্রর দিকে চেয়ে জিগ্যেস করে
— থামলেন কেনো?
— এতোক্ষণ যাবে না যাবে না বলছিলে আর এখন যেতে চাইছো একচুয়েলি কি চাও বলতো?
— আপনার থেকো দূরে থাকতে।
কথাটা বলা মাএই এক টানে নিজের অনেকটা কাছে নিয়ে এসে স্কার্ফের ওপর দিয়েই ঘাড়ে হাত চেপে মুখটা উঁচিয়ে নিজের মুখোমুখি করে নিয়ে চোখে চোখ রেখে রুদ্র বললো,
— সেটা সম্ভব নয়।
আচমকাই এমন হওয়াতে চমকে যায় হৈমী। সরে যাওয়ার চেষ্টা করতে করতে বলে,
— এভাবে আমাকে ধরবেন না ছাড়ুন তো ভালো লাগছেনা কিন্তু বাড়ি যাবো আমি খিদে লেগেছে আমার।
— হুমহ আগে আমার খিদে মেটাও তারপর তুমি খাবে। গাড় চোখে চেয়ে ঘোর লাগা কন্ঠে সোজা উত্তর দিলো রুদ্র।
চোখ বড় বড় করে কাঁপা গলায় হৈমী বললো,
— মমানে,,,কি বলছেন এসব। দেখুন আপনার হাভভাব ভালো ঠেকছে না। আপনার কথাটা বিশ্রি লাগছে, মাতাল মনে হচ্ছে আপনাকে। কোন প্রকার মাতলামি সহ্য করবো না একদম।
— সহ্য করতে তো তুমি বাধ্য মিসেস বলেই হৈমীকে একটু উচিয়ে নিজের কোলে বসালো।
রুদ্রর চোখে, মুখে অস্বাভাবিক অস্থিরতা ফুটে ওঠেছে। অন্যরকম ভয়ংকর লাগছে তাকে। কেমন একটা উষ্কখুষ্ক ভাবও রয়েছে যা হৈমীর ভিতরে ভয় জাগিয়ে তুলছে। ভয়ে ভয়েই চিল্লিয়ে ওঠলো।
— কি করছেন ছাড়ুন মানুষ দেখবে আপনি তো খুব বেহায়া। মেয়ে দেখলেই কোলে নিতে মন চায় লুচুগিরি করতে মন চায় তাইনা। বলেই রুদ্র কে ধক্কাতে লাগলো।
— মানুষ কেনো একটা পিঁপড়াও পাবে না এখানে।
চমকে গেলো হৈমী আশে পাশে চেয়ে দেখলো তাঁরা কাঁচা রাস্তায়। চারদিকে এপাশ, ওপাশ ধান ক্ষেত। কোথায় নিয়ে এসেছে বকবকানির চুটে আর আশে, পাশে তাকানো হয়নি তাঁর ভাবতেই নিজের ওপর রাগ হলো।
— এটা কোথায়। কাঁপা গলায় বললো হৈমী।
— নিরবদের বাড়ির কাছাকাছি আজ ওদের বাড়ি দাওয়াত আছে আমার আর তোমার তাই নিয়ে এলাম।
হৈমী কাঁদো কাঁদো হয়ে বললো,
— আমি কোথাও যাবো না আপনি আমাকে ছাড়ুন। আপনি একটা অসভ্য, ভয়ংকর বজ্জাত লোক ।
হৈমীর কথায় পাত্তা দিলো না রুদ্র সে আছে তাঁর ঘোরে। হৈমী ছটফট করতে করতে রুদ্র কে সরাতে না পেরে বুকে,কাধে সমানে কিল ঘুষি দিতে লাগলো। যা রুদ্র কে তাঁর কাজে বাঁধা দিচ্ছিলো। চোখ তুলে হৈমীর দিকে চেয়ে গম্ভীর গলায় বললো,
— একটু চুপ করে থাকা যায় না?
— না আপনি আমাকে ছাড়ুন বলেই কোমড় থেকে হাত ছাড়াতে নিতেই রুদ্রর রাগ ওঠে গেলো। পরিস্থিতি,অনুভূতি কিচ্ছু বুঝেনা মেয়েটা ভেবেই ভারী লম্বা শ্বাস ছেড়ে তাঁর একহাতে হৈমীর দুহাত পিছন দিক থেকে বেঁধে ফেললো।আরেক হাতে হৈমীর ঘাড়ে আলতো করে চাপ দিয়ে তাঁর দিক এগিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিলো।
হৈমীর চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেলো। পুরো শরীর শিরশির করে ওঠলো। একটু সরার চেষ্টা করতেই রুদ্র আরো গভীরভাবে তাঁকে নিজের সাথে জরিয়ে নিলো।
.
বেশ কিছুক্ষন পর হৈমীকে ছাড়লো রুদ্র সিটে বসিয়ে আলতো হাতে দুগালে স্পর্শ করে মোহময় চোখে চেয়ে রইলো। হৈমীর চোখ বেয়ে পানি পড়ছে পাতলা,মসৃন গোলাপি ঠোঁট জোরা লাল টকটক করছে খানিকটা কাঁপছেও।বুড়ো আঙুলে ঠোঁট জোরায় আলতো ছুঁতেই হালকা কেঁপে ওঠলো হৈমী। রুদ্র মৃদু হেসে হৈমীর স্কার্ফ ভেদ করে কাটা চুলগুলো মুখের ওপর থেকে সরিয়ে দিতে লাগলো। হৈমীর চোখ জোরা বন্ধই শরীরের হালকা কাঁপুনি,হালকা ফুঁপানি রুদ্র বুঝতে পেরেই সরে গিয়ে সিটে বসলো।
— এভাবে কাঁদছো কেনো? মারলে কাঁদো, ধমকালে কাঁদো, আদর করলে কাঁদো তাহলে করবো টা কি? তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে দাঁত চেপে কথাটা বললো রুদ্র।
চলবে।