সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী কে সময় দিতে পারতেছিনা, কি আর করবো একজন ডাক্তার হিসেবে আমি যদি দেশের এই করুণ পরিস্থিতিতে যদি মানুষের পাশে না দাঁড়াই তাহলে আমার ডাক্তার হওয়াটা বেকার। কিন্তু মানুষের সেবা করতে গিয়ে নিজের পরিবার কেই সময় দিতে পারিনা। কথা গুলো ভাবতে ভাবতে ব্যাগ গুছানো শেষ করে কেবিন থেকে বাইরে বের হয়ে বাড়ী যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমি রাফসান, পেশায় একজন ডাক্তার। বিয়ে করেছি যে মাত্র দুসাপ্তাহ হয়েছে এর মাঝেই এত ব্যাস্ততা। হাসপাতালের গাড়ী করে বাড়িতে এসে পৌছালাম। কলিংবেল দেয়ার সাথে সাথেই দরজা খুলে দিলো রাইফা। ঘড়িতে তখন রাত ২ টা। রাইফা কে দেখে অবাক ই হলাম অনেকখানি। সে মুচকি হেসে এগিয়ে আসতে নিলে হাত দিয়ে ইশারা করে না করলাম, না করাতে মুখটা অভিমানে একদম ছোট করে ফেলেছে। তাই মনে মনে একটা হাসি দিয়েই বললাম এখন কাছে আসাটা সেইফ না আমি আগে গোসল করে আসি খাবার টা রেডি করো।
গোসল টা সেরে আসার পর দেখলাম খাবার টেবিলে দুটো প্লেট সাজানো তাই জিজ্ঞেস করলাম দুটো কেন?
সে বলল ” আমি ও খাইনি ”
অবাক দৃষ্টিতে জিজ্ঞেস করলাম এত রাত হলো খেলে না কেন? প্রতিউত্তরে শুধু বলল আপনার সাথে খাবো বলে ।
কথা না বাড়িয়ে খেতে বসলাম খেয়ে দেয়ে রুমে এসে বিছানায় হেলান দিয়ে বসলাম। কিছুক্ষণ পর বউ আসলো আমি তাকে শুকনো কন্ঠে বললাম দুঃখিত আমি তোমাকে সময় দিতে একদম পারতেছিনা আসলে দেশের এমন করুণ পরিস্থিতিতে আমি হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলে এই পেশাটা বেঁছে নিলাম কেন।
বউ আমার এতক্ষণ মনোযোগ দিয়ে এসব শুনছিলো আমার বলা শেষে বলে উঠলো ” জানেন আমার একটুও খারাপ লাগেনাহ কারণ আমার স্বামী দেশ প্রেমে নিজের সময় ব্যায় করছে দেশের মানুষের স্বার্থেই “।
কথাটা শুনে মনটা একদম শান্ত হয়ে গেল হয়ত সবাই চায় তার প্রিয় মানুষিটা তাকে বুঝোক কিছুটা হলেও সময় দিক। সারাদিনের ক্লান্তি শেষ একটা মানুষ চায় দিনশেষ এ একটু প্রশান্তি। হয়ত আমি আমার সঠিক মানুষটাই পেয়েছি। এজন্যই বলে সৃষ্টিকর্তা কখন ও কাউকে নিরাশ করেন নাহ৷
~ ভালোবাসা
~ রাফসান