ভালোবাসা_বিনিময়,part_10,11
Nishi_khatun
part_10
হঠাৎ কেনো জানি না ঐশানীর চোখ থেকে দু ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে।
সাইয়ান রোগী কে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।
ঐশানী চুপচাপ সাইয়ানের পেছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে সবটা দেখতে থাকে।
নিজের স্বামী অন্য একটা মেয়েকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে এটা কোনো স্ত্রী সহ্য করতে পারবে না। সেখানে ঐশানী পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে।
ঐশানীর এসব কিছু সহ্য হচ্ছিল না। সে চুপচাপ সাইয়ানের কাঁধে হাত রাখতেই সাইয়ান রোগী কে ছেড়ে দিয়ে ঐশানী কে জড়িয়ে ধরে।
ঐশানীর মনের মাঝে যে ঝড় বয়ে যাচ্ছে তার খবর সে ছাড়া আর কেউ জানে না। নিজের মনের উপর কন্ট্রোল করে সাইয়ান কে শান্ত করার চেষ্টা করে কিন্তু পারছিল না।
তখন ঐ মেয়েটা বলে,”সাইয়ান এই মেয়েটা তোমার বউ তাই-না? ”
সাইয়ান বউ কথাটা শুনে ঐশানী কে ছেড়ে দূরে সরে আসে।
সাইয়ান পেছনে ফিরে বলে,”হ্যাঁ! যে স্থানে তোমার থাকার কথা ছিলো আজ সেখানে অন্য কেউ। তুমি বিশ্বাস করো ওর সাথে শুধু মাএ আমার বিয়ে হয়েছে আমাদের আর কোনো সম্পর্ক নেই। তোমার সাথে তো আমার হৃদয়ের সম্পর্ক শুধু আমরা আমাদের ভালোবাসার সম্পর্কের নাম দিতে পারলাম না।”
ঐশানী কোনো কিছুই বুঝতে পারছে না। ঐ আপু এখানে কেনো আর তার কি হয়েছে যে সে হসপিটালের?
ঐশানী ওদের একা ছেড়ে দিয়ে বাহিরে বেড়িয়ে আসে।কিছু সময় পর সে সানাই এর ডাক্তারের সাথে কথা বলে সব কিছু জানতে পারে।হ্যাঁ সাইয়ানের প্রেমিকার নাম সানাই। ঐশানী কিছু একটা ভেবে সে আবারো সানাই এর কেবিনে প্রবেশ করে।তবে এবার ঐশানী একা নয় তার সাথে একজন কাজী সাহেব আছে।
ঐশানী রুমে প্রবেশ করে বলে,”আচ্ছা আপনি কি সত্যি সানাই আপু কে মন থেকে ভালোবাসেন?তাকে কি কোনোদিন ও নিজের স্ত্রীর মর্যাদা দিতে চেয়েছেন?”
সাইয়ান বলে,”যদি সম্ভব হয় আমি সানাই কে এখনো নিজের স্ত্রী রুপে গ্রহণ করতে রাজী আছি। ”
ঐশানী বলে,”তাহলে সমস্যা নেই। কাজী সাহেব আপনি এদের দু জনের বিয়ে পড়ানো শুরু করেন।'”
সানাই ঐশানী কে বলে,”এই মেয়ে তুমি পাগল হয়ে গেছো? নিজের স্বামীর ভাগ কোনো বাঙালী মেয়ে অন্য নারীকে কখনো দিতে পারে না। আর সেখানে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে দিয়ে সতীন বানাতে চাইছো?”
ঐশানী একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে,”যে বিয়েটা নামের মাত্র বিয়ে। যেখানে স্বামী-স্ত্রীর কোনো সম্পর্ক নেই! সেখানে কষ্টটা না হয় আমি কম পাবো।তবে আপনারা দু জনে তো সুখি হতে পারবেন। দেখুন দু দিনের এই পৃথিবীতে কিসের এতো বড়াই করবো?”
সাইয়ান মাথা নিচু করে শুধু ঐশানীর কথা গুলো শুনে যাচ্ছে। সত্যি মেয়েটাকে বিয়ে করে ওর জীবনটাকে নষ্ট করে দিয়েছি। যে সম্পর্কে তাকে আমি জড়িয়েছি সেই সম্পর্কের কোনো অধিকার তাকে আমি দেয় নি।বিয়ে পবিত্র সম্পর্ক। সে সম্পর্কের মান আমি রাখি নাই। এখন তাকে তার অধিকার না দিয়ে আরেক জন কে কি ভাবে স্ত্রী রুপে গ্রহণ করি?
সানাই বলে,”সব কিছু জেনে শুনে কেনো তুমি নিজের অধিকারের মাঝে আামাকে ভাগীদার করছো? জানো তো আমি তোমার সংসারে গেলে সে সংসার হয়তো তুমি আর কোনোদিন ও সাজাতে পারবে না।”
ঐশানী একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে,”সে সব পরের কথা এখন বলুন আপনারা দু জনে রাজি আছেন কি না?আজ এখুনি আপনাদের এই নামহীন সম্পর্কের একটা নাম দিবো আমি।”
তখন সেখানে জিহান এসে উপস্থিত হয়। সে এসে বলে,”সাইয়ান তুই অনেক ভাগ্যবান ব্যক্তি। না হলে কেউ এমন বউ পাই? যে বউ তার বিয়ের কয়েকটা মাস না পেড়ুতেই স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে দেয়? যেখানে সে নিজেই নিজের সংসার সাজাতে পারে নাই।তোর মনে নিজের জন্য কোনো স্থান গড়তে পারে নাই।সেই মেয়ে আজ তোর জীবনটা সুন্দর করার জন্য নিজের স্বামীকে অন্য নারীর হাতে তুলে দিচ্ছে! ”
সাইয়ান ঐশানীর কাছে এসে ওর সামনে হাটু গেড়ে বসে বলে,”প্লিজ তুমি এমন কাজ করো না।তাহলে আমি কোনোদিন ও তোমার সামনে মাথা উঁচু করে তোমার চোখে চোখ রেখে তাকাতে পারবো না।”
ঐশানী নিজের চোখের পানি মুছে বলে,”সে সব কিছুর তো আর প্রয়োজন হবে না।আমার সাথে তো আপনার স্বার্থের সম্পর্ক হৃদয়ে নয়।তাহলে প্লিজ দয়া করে এখন আর সম্পর্কের দোহাই দিতে আসবেন না।”
ঐশানী কাজী সাহেব কে উদ্দেশ্যে করে বলে,”দেখুন আমি তার প্রথম স্ত্রী। আমি অনুমিত দিচ্ছি। আপনি আমার স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের কালেমা পড়ানো শুরু করেন।”
জিহান বলে,”সাইয়ান বিয়েটা করে নে! আর তোদের নাটক করার দরকার নেই। এখানে তোদের বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হচ্ছে না। শুধু ইসলামিক ভাবে তোদের এই প্রণয়ের সম্পর্কের পরিণাম দেওয়া হচ্ছে। যাতে ঐ সানাই কে কুমারী থাকতে না হয়। সে বিবাহিত মেয়ের ট্যাগ পায়। সে তোর বিবাহিত স্ত্রীর মর্যাদা পায়।”
সানাই ঐশানী কে বলে,”আমি তো তোমাকে সহ্য করতে পারছি না। তাহলে তুমি কি ভাবে এতো বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারছো?”
ঐশানী বলে,”আপনাদের প্রেম কাহিনী তো সবারি জানা। তাহলে আপনাকে তার স্ত্রী রুপে দেখে আমি কষ্ট কেনো পাবো? আমি তো ভুল করে তার জীবনে চলে এসেছি। সে ভুলের মাসুল না হয় আপনাদের চার হাত এক করে দিচ্ছি। প্লিজ আর কোনো কথা বলবেন না। আপনার শরীরের অবস্থা খুব একটা ভালো না। তাই দ্রুত বিয়ের কাজ টা সম্পন্ন করেন।”
সাইয়ান ঐশানী কে বলে,”তুমি কি জানো আমাদের এই বিয়ে যদি হয়। তাহলে বিয়ের পরিণাম কি হবে?”
ঐশানী বলে,”যা হবার পরে দেখা যাবে। এখন যা হচ্ছে তাই করেন।”
এরপরে সানাই এর সাথে সাইয়ানের ইসলামিক নিয়মে বিয়ে হয়ে যায়।
জিহান ঐশানীর দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকে আল্লাহ এ কেমন মেয়ে। দু দিন ও স্বামীর সাথে ঠিক মতো সংসার করতে পারলো না।আর সে আজ সতীনের বোঝা নিজেই নিজের কাঁধেচাপিয়ে নিলো? এর মতো মেয়েরা কী সত্যি জীবনে দু একটা খুঁজে পাওয়া যাবে?
ঐশানী নিজের শাড়ির আঁচলটা খুব শক্ত করে ধরে বলে,”মিস্টার সাইয়ান সুপারস্টার এবার আপনার নতুন বউ কে নিয়ে তার শ্বশুরের বাড়িতে যেতে হবে। বিয়েরপর আপনার বউ কেনো হসপিটালে থাকবে?”
সাইয়ান সানাই কে কোলে করে বেড়িয়ে আসে গাড়ির কাছে। জিহান হসপিটালের সব ফর্মালিটি কমপ্লিট করে ওদের কাছে যায়।
ঐশানী জিহান কে বলে,”ভাইয়া আমাকে প্লিজ আপনার সাথে আপনার গাড়িতে করে নিয়ে যাবেন? ”
জিহান ঐশানীর কষ্টটা বুঝতে পেরে নিজের সাথে আসার জন্য অনুমিত দেয়।
সাইয়ান যখন দেখে ঐশানী জিহানের সাথে তার গাড়িতে গিয়ে বসেছে তখন সে ভাবে, সত্যি তো সে আমার সাথে কেনো যাবে? আমি যেখানে নতুন বউ কে কোলে করে নিয়ে চলে এসেছি একটি বার ও তার কথা চিন্তা করি নাই।এখন কেনো তাকে আশা করবো সে তার সতীনের সাথে এক গাড়িতে যাবে?
এরপরে ওরা চারজন অনেক রাতে সাইয়ানদের বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়।
সাইয়ান সানাই কে কোলে করে বাড়ির সদর দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। ভেতরে প্রবেশ করার সাহস পাচ্ছে না সে।
ঐশানী তা দেখে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে।বাড়ির সবাই কে ডাক দিয়ে নিচে ড্রয়িংরুমে জড়ো করে।
তারপর……
চলবে…….
#ভালোবাসা_বিনিময়
#Nishi_khatun
#part_11
এতোরাতে বাড়ির সবাইকে একসাথে জড়ো করার পর ঐশানী সাইয়ান কে বাড়ির ভেতরে আশার জন্য ডাক দেয়।
ঐশানীর কথা শুনতে পেয়ে সাইয়ান সানাই কে কোলে করে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে।
বাড়ির সবাই তো সাইয়ান আর সানাই কে একসাথে দেখে খুব রেগে যায়।
সাইয়ানের বাবা বলে,”তোমার এতো সাহস হয় কি করে? ঐ মেয়েকে আমাদের এবাড়িতে আনার?”
দাদী মা বলে,”নিজের বউ থাকতে আরেকটা মহিলাকে কোলে নিয়ে সবার সামনে আসতে তোমার লজ্জা করলো না ?”
তখন ঐশানী বলে,”না তার কেনো লজ্জা করবে? সে তো তার বিয়ে করা বউ কে শ্বশুরের বাড়িতে এনেছে।”
বিয়ে করা বউ কথাটা শুনে সবার তো চোখ বড় বড় হয়ে যায়। এখুনি মনে হয় সবার চোখ কোঠর থেকে বেড়িয়ে আসবে।
সাইয়ানের মা ঐশানী কে উদ্দেশ্যে করে বলে,”তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে? সাইয়ান সানাই কে কেনো বিয়ে করবে? ”
ঐশানী চিৎকার করে বলে,”হ্যাঁ আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তাই তো নিজেই নিজের সংসার ভেঙ্গেছি। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে দিয়েছি।”
ঐশানীর মুখে এমন কথা শুনে সে বাড়ির সবাই পাথরের মতো জমে যায়। এই মেয়ে কি ভাবে পারলো নিজের স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে দিতে?
ঐশানীর মুখে সাইয়ানের দ্বিতীয় বিয়ের কথা শুনে সেখানে উপস্থিত সবার মন বিষণ্ণতায় ছেঁয়ে গেছে। কিন্তু আবরাজের মুখে বিশ্বজয়ের মুচকি হাসি। আবরাজের সে হাসি সবার চোখের আড়াল হলেও ঐশানীর চোখের আড়ালে যায় না।
ঐশানী তাচ্ছিল্য নিয়ে বলে,”আপনাদের মতো মানুষের জন্য আজকাল ছেলে-মেয়েরা বিয়েটাকে পুতুল খেলা বানিয়ে রেখেছে। বিয়ে তো করে আপনাদের মতামতের উপর ভিত্তি করে কিন্তু তাদের সারাজীবন পার হয়ে যায় এডজাস্টমেন্ট করতে করতেই। যদি তাদের দুজনের কোনো পছন্দের মানুষ না থাকে তাহলে এক কথা। কিন্তু কেউ যদি অন্য কাউকে পছন্দ করে আর বিয়ে আরেকজন কে করে তখন তাদের সম্পর্ক শুধুমাত্র বিয়ের সম্পর্কের জন্য আবদ্ধ থাকে।তব সে সম্পর্কটা কতো-কাল সঠিক নিয়মে চলে? উঁহু কেউ জানে না।আমিও না।”
সাইয়ানের বাবা বলে,”বউ মা তুমি এসব কি বলছো?”
ঐশানী বলে,”সারাদেশের মানুষ জানে আপনার ছেলের রিলেশনের কথা। সে একটি মেয়েকে প্রচুর পরিমাণে ভালোবাসে।কিন্তু মেয়েটা কে? কেউ জানে না। তবে কেউ না জানলেও তাদের প্রেমের কাহিনী ফেমাচ। সেই মেয়েকে যখন নিজের বউ করার জন্য আপনাদের সাথে দেখা করিয়ে দেয়। তখন আপনারা তাকে রিজেক্ট করে দেন। কারণ মেয়েটা অনাথ। তার বাবা মা নেই। সে নিজেই জীবন যুদ্ধজয় করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কখনো সে মিডিয়া সামনে আসে নাই। কারণ সে সুপারস্টারের বউ হলে সারা মিডিয়া এমনি জানতে পারবে। আপনাদের রিজেক্ট করে দেওয়ার পর ও মেয়েটা বার বার আপনাদের দরজার সামনে এসেছে শুধু মাএ নিজের ভালোবাসার মানুষ কে আপন করে স্বামী রুপে পাবার আশায়। সাইয়ান ইচ্ছা করলে আপনাদের মতের বিপরীতে তাকে বিয়ে করতে পারতো। তবে আফসোস সাইয়ান তেমন কিছু করার আগেই মেয়েটার জীবনে ঘটে যায় আরেক নতুন ঘটনা। সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ে। সে আপনার ছেলেকে ভালোবাসাতে এতোটা মগ্ন ছিলো যে নিজের অসুস্থতার কোনো খবর রাখত না। যদি একটু সাবধান হতো তাহলে হয়তো আজ এমন জীবন-মৃত্যুর শেষ সন্ধিক্ষণে পৌঁছে যেতো না। মেয়েটা মারা যাবে জানার পর কী খুব বেশি কিছু চেয়েছিল চেয়েছে আপনাদের কাছে? শুধু মাএ এই শেষ সময় একটা পরিবার থাকবে তার সাথে।
যেখানে স্বামী-স্ত্রীর পবিত্র সম্পর্কে বাধনে বাধা পরবে। তারপর হাসি-খুশিতে নিজের জীবনের শেষ কিছুদিন পার করবে। তারপর সারা-জীবনের জন্য এপৃথিবীর মায়া ত্যাগ করবে।”
বাড়ির সবাই ঐশানীর কথা শুনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে।
আবরাজ এসে বলে,”বাব্বাহ্ এতো কিছু যখন জানো তাহলে সাইয়ান কে বিয়ে কেনো করলে?”
ঐশানী নিজের চোখের পানি মুছে তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে,”এরপরে তো মেয়েটা মারা যাবে সে কথা শুনে সাইয়ানের বাবা ছেলের অন্য কারো সাথে বিয়ের ব্যবস্থা করে। সে সাইয়ান কে বাধ্য করে সানাই কে ছেড়ে অন্য কোনে মেয়েকে এ বাড়ির বউ করে আনতে। সাইয়ান নিজের খুশির গলা টিপে হত্যা করে।
নিজের #ভালোবাসার_বিনিময় সে পরিবারের সবার সুখের কথা চিন্তা করে। তাই তো সাইয়ানের ভালোবাসার বিনিময়ের স্থানে আমি এসেছি। আর আজ আমার জন্য তার বিনিময় করা ভালোবাসাটা আমি তাকে ফিরিয়ে দিলাম। সানাই আপুর আয়ু যতোদিন আছে সে এই বাড়ির বউ হয়ে থাকবে। যদি আমি আমার স্বামীর ভাগ অন্য কাউকে দিতে পারি তাহলে আশার করছি আপনাদের সমস্যা হবে না।”
এরপর ঐশানী সাইয়ানের বাবার সামনে দাঁড়িয়ে আস্তে করে বলে,”আচ্ছা আপনার ছেলের তো অনেক টাকা।সে ইচ্ছা করলেই কিন্তু সানাই কে নিয়ে আলাদা হতে পারতো। তবে সাইয়ান তেমন কোনো কিছু করে নাই কেনো জানি না।হয়তো নিজে কষ্ট পেয়েছে আপনাদে কষ্ট দিতে চাইনি! ”
তবে আপনি বাবার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।ছেলের ভালোবাসাকে তার থেকে দূরে করে দিয়েছেন।ইচ্ছা করলেই সানাই আপু কে দু দিনের মেহমান করে বাড়ির বউ হিসাবে আনতে পারতেন। মানুষেরা ইচ্ছা করলে অনেক কিছু করতে পারে।হয়তো ওদের বিয়ে দিয়ে খবরটা নিজেদের মধ্যে রাখতেন। কিন্তু থাক সে সব কথা অতীত নিয়ে টানাটানি করলে ক্ষত বাড়বে কমবে না।”
এরপর একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ঐশানী সাইয়ান কে বলে,”সানাই আপুকে নিয়ে ঘরে যান। অসুস্থ মানুষকে নিয়ে আর কতো সময় এভাবে সবার সামনে স্ট্যাচুর মতো দাঁড়িয়ে থাকবে আপনি?”
সাইয়ান এবার অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে বলে,”তাহলে তুমি কোথায় থাকবে ঐশানী? ”
ঐশানী বলে,”আপনার মনের ঘরে যখন যায়গা পেলাম না। তখন ঐ রুমে যাযাবরের মতো থাকার মানে হয় না। যেদিন মনের ঘরে স্থান দিতে পারবেন! সেদিন না হয় আপনার কথা ভেবে দেখবো আবার।”
আরোভি এগিয়ে এসে বলে,”ভাবী আমার সাথে আমার রুমে থাকবে।”
আবরাজ বলে,”তোমার নিজেরি তো ঘরে জায়গা হয় না। তাহলে অন্য আরেকজন কে কি ভাবে স্থান দিবে?”
আরোভি বলে,”সে সব নিয়ে আপনার চিন্তা করার দরকার নেই।”
আরোভি ঐশানীর হাত ধরে নিজের ঘরে নিয়ে চলে যায়।
আরোভি রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দেয়।
ঐশানী আরোভি কে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না করতে থাকে।
আরোভি ঐশানী কে নিজের বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চুপচাপ বসে থাকে। আরোভি চাচ্ছে ঐশানী প্রচুর কান্না করুক। ওর মনের সব কষ্ট গুলো কান্নার সাথে বেড়িয়ে যাক।
কারণ ঐশানীর কাছে থেকে অনেক কিছু জানার আছে আরোভির।কারণ আরোভি মনের মাঝে হাজার প্রশ্ন সে প্রশ্নের উওর একমাত্র ঐশানী দিতে পারবে।
সানাই কে রুমে এনে বিছানাতে শুয়ে দেয়।
সানাই সাইয়ানের হাত ধরে বলে,”সাইয়ান তুমি কেনো করলে আমাকে বিয়ে? ঐশানী মেয়েটা যে প্রচুর পরিমাণে কষ্ট পেয়েছ? ”
সাইয়ান সানাইয়ের কথার কেনো উওর না দিয়ে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে সোজা বারান্দাতে যাবার সময় বলে,”অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড়ো।”
সাইয়ান বারান্দাতে দাঁড়িয়ে অন্ধকার আকাশের দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকে।
চলবে…..