ভালোবাসা_বিনিময়,part_14,15

0
1328

ভালোবাসা_বিনিময়,part_14,15
Nishi_khatun
part_14

ঐশানী জানে ভালোবাসার মানুষের জন্য কতোটা কষ্ট লাগে। তাই সে সাইয়ান কে একা থাকতে দেয়। তবে কাল রাত থেকে সে জেগে আছে। আর সারাদিন কোনোকিছু খায়নি সে। এভাবে থাকলে উনি অসুস্থ হয়ে যাবে। এসব ভেবে সাইয়ানের জন্য কিছু খাবার নিয়ে উপরে রুমের দিকে যেতে থাকে।

হঠাৎ করে আবরাজ সামনে এসে বলে,”তোমার কি মনে হয় সাইয়ান কে এভাবে সেবাযত্ন করে নিজের বশে করে নিতে পারবে?”

ঐশানী তাচ্ছিল্যের সাথে বলে,”নিজের ভালোবাসা দিয়ে যদি কাউকে আপন করে নিতে না পারি তাহলে সে ভালোবাসার মূল্য কোথায় বলেন তো? ভালোবাসার সঠিক মানেটা হয়তো আপনি জানেন না।”

আবরাজ চেঁচিয়ে বলে,”আমাকে শেখাতে আসছো ভালোবাসার মানে? আমি জানি না ভালোবাসার মানে কি? ”

ঐশানী বলে,”উঁহু জানেন না! সত্যি যদি জানতেন তাহলে আজ আপনি আপনার ভালোবাসার সাথে থাকতেন। এভাবে অন্যের সংসারে আগুন লাগানোর কাজ করতেন না।”

আবরাজ বলে,”আমি তোমার সংসারে আগুন দিচ্ছি কি করে? আর যদি সে কথা বলো তাহলে এখনো তো সঠিক সময় আগুন লাগিয়ে তোমাকে সারাজীবন কষ্টরের সাগরে ভাসানোর।”

ঐশানী বলে,”আগে আপনি তো সুখের সাগরে ভাসতে চেষ্টা করেন। তারপর না হয় আমাকে দুঃখের সাগরে ডুবাতে আসবেন বলে পাশ কেটে চলে যায়।”

আবরাজ রাগে নিজের দু হাত মুঠো করে সামনের দেওয়ার গুশি দিতে লাগে তখন সে দেওয়ালের আরোভি এসে হাত দুটো ধরে ফেলে।
আবরাজ আরোভি কে দেখে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে।
তারপর বলে,”তোর সাহস কি করে হয় আমার হাত ধরার?”

আরোভি বলে,”জানি আমার জন্য আপনি অনেক কষ্ট পেয়েছেন। তবে আপনার সেই কষ্টের পরিমাণ কম তো করতে পারবো না। তবে চেষ্টা করবো সামনে থেকে যেনো আর আপনাকে কষ্ট সহ্য করতে না হয়।”

আবরাজ বলে,”তাহলে এক কাজ কর, তুই সারাজীবনের জন্য এ পৃথীবির মায়া ত্যাগ করে চলে যা।”

আরোভি বলে,”সানাই আপুর মতো যেদিন আমিও হারিয়ে যাবে সেদিন আপনাকেও কাঁদতে হবে। তবে হ্যাঁ সেদিন হয়তো আপনার কান্না দেখার জন্য আমি থাকবো না বলে চলে যায়।”

ঐশানী অনেক সময় ধরে সাইয়ানের রুমে নক করছে তবে সে দরজা খুলছে না। ভেতর থেকে সাইয়ানের কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়াতে ঐশানীর বুকের ভেতর অজানা ভয়েরা এসে জড়ো হয়।
পাশের টেবিলের উপর খাবার ট্রে রেখে সে জোড়ে জোড়ে দরজাতে নক করতে থাকে।
“এই যে শুনছেন প্লিজ দরজাটা খুলুন। নয়তো ভেতর থেকে কিছু তো বলুন! আপনি ঠিক আছেন তো? এই সুপারস্টার সাইয়ান প্লিজ দরজা খুলে দাও। বলে কান্না করতে করতে দরজার নিচে বসে পড়ে।”

ঐশানীর এতো ডাকাডাকির আওয়াজের পুরো বাড়ির মানুষেরা উপরে সাইয়ানের রুমের সামনে চলে আসে।
আবরাজ, জিহান, আরোভি এরা এখানে এসে হাজির।

ঐশানী কান্না জড়িত কন্ঠে বলে,”দেখুন না বাবা সেই কখন থেকে উনাকে ডাকছি উনি কোনো জবাব দিচ্ছে না আমার খুব ভয় হচ্ছে। উনি রুমের ভেতরে ঠিকঠাক আছেন তো?”

আরোভি ঐশানী কে জড়িয়ে ধরে বলে,”ভাবী আপনি এমন খারাপ ভাবনা মাথায় আনবেন না প্লিজ।”

আবরাজ দরজাতে ধাক্কা দিয়ে জোড়ে জোড়ে ডাকে এই সাইয়ান ভাইয়া প্লিজ দরজাটা খুলে দাও। দেখো তোমার জন্য বাড়ির সবাই দূষ্চিন্তা করছে।”

আবরাজের কথায় ও ভেতর থেকে কোনো সারা শব্দ আসে না।

জিহান ও এসে অনেক সময় ধরে ডাক দেয় তবু কোনে উওর নেই।

বাড়ির সবাই মিলে জোড়ে জেড়ে ডাকতে থাকে তবুও সাইয়ান নিশ্চুপ।

ঐশানীর কথায় বাড়ির সবাই এবার খুব ভয় পেয়ে যায়। তারা সবাই দরজাতে থাক্কা দিতে থাকে বুঝতে পারে ভেতর থেকে দরজা লক করে রাখা।এভাবে না এই দরজা ভাঙ্গা সম্ভব না ভেতরে প্রবেশ করা সম্ভব।

সাইয়ানের মা বলে,”দাঁড়াও এই রুমের এক্ট্রা চাবি আছে। ঐ চাবি এনে দরজা খোঁলা যাবে।”

সাইয়ানের মা দ্রুত চাবি নিয়ে চলে আসে। আবরাজ মনিমার হাত থেকে চাবি নিয়ে দ্রুত দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে দেখে রুম অন্ধকার।

জাহিন রুমের ভেতরে প্রবেশ করে লাইট জ্বালিয়ে দেয়।

রুমের আলো জ্বালানোর সাথে সাথে ঐশানী সাইয়ান বলে,” চিৎকার করে ওঠে।”

সাইয়ানের এমন অবস্থা দেখে বাড়ির সবাই একদম স্তব্ধ হয়ে যায়।

ঘরের সাদা টাইলসের মেঝে পুরো লাল রক্তের ছেঁয়ে আছে।সাইয়ানের চোখ বন্ধ তার নিস্তেজ দেহটা মেঝেতে পড়ে আছে। পাশের টেবিলের উপর কাগজে কিছু লিখে রাখা আছে।

ঐশানী দ্রুত গতিতে মেঝেতে বসে সাইয়ান কে তুলে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কান্না করতে থাকে।

বাড়ির সবার এবার হুস ফিরে আসে। আবরাজ আর জাহিন সাইয়ানের এমন অবস্থা দেখে দ্রূত ওকে ধরে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য নামতে থাকে।

সাইয়ানের বাবা ছেলের এমন অবস্থা দেখে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আরোভি এখন ভাইয়ের পেছনে যাবে না কি বাবার কাছে থাকবে বুঝতে পারে না। তবে তাদের বাড়ি থেকে দ্রুত সাইয়ান কে হসপিটালে নিয়ে যায়।আরোভি আর ওর মা তার বাবা কে হসপিটালে নিয়ে যায়।

এখন এই রক্তে মাখামাখি হয়ে ঐশানী ঐ রুমের মেঝেতে পাথরের মতো জমে বসে আছে। ঐশানীর অনুভূতি গুলো কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে।

নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে সাইয়ানের রক্তে ওর ক্রীম কালারের শাড়িটার পুরো রং বদলে গেছে। সাইয়ান কে জড়িয়ে ধরার সময় ওর হাতের রক্তে মেখে গেছে।

ঐশানী পাশের টেবিলের উপর একটা কাগজ দেখতে পায়। সে কাগজটা হাতে নিয়ে দেখে ঐশানীর জন্য লেখা একটা চিঠি।

মিস ঐশানী,

দুঃখীত তোমাকে মিসেস বলার অধিকার আমার নেই। জানি সে অধিকার আমি কোনোদিন ও পাবো না। তোমাকে আমি একপ্রকার জোড় করে বিয়ে করেছি। আমাকে বিয়ের পর তুমি সুখে নেই।আমি কোনোদিন ও তোমাকে অপমান অথবা কষ্ট দিতে চাইনি। তবে আজ সানাই যাবার পর বুঝতে পারলাম। তোমাকে আমি কষ্ট দিতে না চাইলে কি হবে? তোমার সারাজীবন নষ্ট তো আমি করে দিয়েছি। আমার এই ছন্নছাড়া জীবনে জড়িয়ে। সেদিন তোমাকে বিয়ে করার সময় বুঝতে পারি নাই। আমার সাথে বিয়ে হলে তুমি কষ্টের সাগরে ভাসবে। বিশ্বাস করো আমি কখনো চাইনি আমার আশেপাশের কেউ কষ্টে থাক। তবে আজ যখন সানাই চলে গেছে তখন আর চাইছি না তুমি আমার জন্য কষ্টের সাগরে ভালো। আমার সাথে তোমার ডিভোর্স হলে সারাজীবন মানুষেরা নানারকম কটু কথা বলবে। তার থেকে ভালো আমি যদি এ পৃথিবী থেকে চলে যায় এই কথা গুলো শোনার হাত থেকে বেঁচে যাবে।
তাছাড়া আর কি করবো বলো? তোমার সামনে দাঁড়ানোর মতো সাহস আমার নেই।তোমার চোখে চোখ রাখলে নিজে লজ্জায় নুইয়ে যাবো।তুমি আমার ভালোবাসাকে যে সম্মান দিয়েছো তার বিনিময় আমি আজ তোমাকে মুক্তি দিয়ে গেলাম।
পারলে আমাকে মাফ করে দিও।
ইতি
তোমার কষ্টের কারণ…….

চিঠি পড়ে তা ছিঁড়ে টুকরোটুকরো করে ফেলে দেয়।
চিৎকার দিয়ে ঐশানী বলে,”আমার জন্য কোনটা ভালো খারাপ সেই সিদ্ধান্ত তাকে কে নিতে বলছে? আমি তাকে একটি বার ও বলেছি সে আমার অপরাধী? আমার মনের খোঁজ খবর না নিয়ে সে কিভাবে আমাকে বিধবা বানাতে চাই? আমি কখনো তাকে মাফ করবো না।কখনো মাফ করবো না।বলে সে রুম ত্যাগ করে চলে যায়।

চলবে……

#ভালোবাসা_বিনিময়
#Nishi_khatun
#part_15

সাইয়ানের উপর রেগে পুরো রুমের সব কিছু এলোমেলো করে চারিদিকে তছনছ করে রেখে দেয়।
এরপর অশ্রুসিক্ত নয়নে পাগলের মতো রক্তে মাখামাখি শাড়িতে সে বাড়ির বাহিরে চলে আসে।
হসপিটালে পৌঁছে দৌড়ে চলে যায় সাইয়ানের কাছে।তবে সাইয়ানের অবস্থা ভালো না হবার কারণে তাকে ICU তে রাখা হয়েছে। ঐশানী সাইয়ানের কাছে যেতে চাই তবে তাকে ভেতরে প্রবেশ করার পারমিশন দেয় নি ডাক্তারেরা। তাই সাইয়ানের রুমের সামনে করিডোরে বসে আছে ঐশানী। হ্যাঁ সে এসেছে সাইয়ানের কাছে। সাইয়ানের চিকিৎসা চলছে,আর ঐশানীর মনের মধ্যে তুফান।
ডাক্তার জানিয়েছে ওর অবস্থা খুব একটা ভালো না। প্রচুর ব্লিডিং হয়েছে। যার জন্য ওকে ব্লাড দেওয়া হয়েছে। এরপরেও কোনো কিছু বলা যাচ্ছে না।
সব কিছু উপরওয়ালার হাতে।

ICU এর বাহিরে চুপচাপ পাথরের মতো বসে আছে। মেয়েটাকে দেখে বোঝা যাচ্ছে সে কতোটা বিদ্ধস্ত। মাথায় কোনোরকম ঘোমটা দেওয়া। মুখের কিছুটা স্থানে সাইয়ানের রক্ত লেগে আছে। শাড়িটা এলোমেলো হয়ে আছে। চোখেরজল যেনো তার বাঁধ মানছে না।

এদিকে হসপিটালের বাহিরে প্রেস-মিডিয়ার ভীর। তারা নানারকম প্রশ্ন করছে। তাদের তো কাজ একটায় তিল কে তাল বানিয়ে দুনিয়ার সামনে তুলে ধরা। সাইয়ানের এই সুইসাইডের খবরটাও তারা নানারকম তেল মশলাদি দিয়ে প্রেজেন্ট করছে।

সাইয়ানের পিএ হবার জন্য আজকের এই অবস্থা জাহিন ভাইয়া কে সামলাতে হচ্ছে।

এসব নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যাথা নেই। আমি আছি আমার চিন্তায়। সাইয়ানের যদি কিছু হয়ে যায়! তাহলে আমার পৃথিবীর কি হবে? সত্যি কী আমি বিধবা হয়ে যাবো? আমি তো একটিবার ও তার কাছে মুক্তি চাইনি? পবিত্র সম্পর্কটা কে মন থেকে মেনেছি। তাহলে তাকে কে অধিকার দিয়েছে আমার মনের খবর না নিয়ে এতো বড় সিদ্ধান্ত নিতে? সে শুধু একবার সুস্থ হয়ে বাড়িতে আসুক তখন মজা বোঝাবো।

এইতো একবছর আগেও আমার জীবনটা খুব সুন্দর ছিলো। বেশ ভালোই চলছিল জীবনটা। তবে হঠাৎ একদিন আমার জীবনে আবরাজ নামের ঝড়ের উদয় হয়। সে ঝড়ের জন্য আমি নিজেকে ভুলে যায়। তার ঠিক ছয়মাস পর সাইয়ান আসে আমার জীবনে তবে প্রেমিক পুরুষের বেশে নয় স্বামী রুপে। কে না চাইতো সাইয়ানের মতো পুরুষ কে তার জীবনে? কে বলবে দেখতে দেখতে বিয়ের ছয় ছয়টা মাস হয়ে গেছে আমাদের? সময় যে কোনদিক দিয়ে বয়ে যায় কেউ বলতে পারবে না। সব কিছু মনে হয় এই কয়েকদিন আগের। তবে এর মাঝে যে দিন-রাত, সপ্তাহ, মাস,বছর পেড়িয়ে যায়। তা বোঝা বড় দায়। হিসাব করতে গেলেই গোলমাল বেধে যায়।

এসবের মাঝে অতীতে ডুব দেয় ঐশানী,,,

-_- ♥ -_-

বাবা মায়ের অতি আদুরে দুই সন্তান।
ঐশানী ইয়াসিন আর ঈশান। একজন ভার্সিটি পড়ে তো আরেকজন নতুন মেডিকেল স্টুডেন্ট।
ঐশানী যে বিয়ের উপযুক্ত হয়ে গেছে সে খবর যেনো তার বাবা মা দিব্বি ভুলে গেছে। মেয়ে লেখাপড়া করছে করুক না কেনো। সে নিজের পায়ের নিচের মাটি শক্ত করে না হয় অন্যের পৃথিবী সাজাবে। আর ঐশানী যখন ভার্সিটি পড়ে। তখন তার পছন্দ মতো কেউ থাকে তাহলে তাকে বিয়ে করবে।
তবে আফসোস ভার্সিটিতে এমন কাউকে ওর মনে ধরে না। ভার্সিটিতে অনেকই ঐশানী কে প্রপোজ করেছিল তবে সে কাউকে হ্যাঁ বলে না।
আসলে ঐশানীর এতো ধৈর্য নেই। কাউকে হ্যাঁ বলার পর তো রোজ টাইম করে তার সাথে দেখা করতে হবে,মোবাইলে বসে বসে আজারে খেজুরে আলাপ করতে হবে,মাঝেমধ্যে ঘুরাঘুরি করতে হবে।
আর একবার যদি মনের মিলন হয়ে যায় সেখানে দেহের চাহিদা চলে আসতে কতো সময়? এসব বিয়ের আগে উচিৎ নয়। জেনে বুঝে জিনা করার কোনো মানে হয় না। তার থেকে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করি আমার জীবনে যার আগমণ লেখা আছে সে চলে আসবে।

তবে হ্যাঁ দেশের ইয়াং সুপারস্টার সাইয়ান কে ঐশানীর দারুণ লাগে। যদি তার জিএফ না থাকতো তাহলে হয়তো তাকে স্বামী বানাতে চাইতো। তবে সে খবরটাও ঐশানী নিজের মনের মাঝে গোপন করে রাখে।

টিভিতে যখন সাইয়ান কে নিয়ে কোনো অনুষ্ঠান হতো তখন সে বেশ মনোযোগ দিয়ে তার প্রোগ্রাম দেখত। অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত টিভির সামনে থেকে সে এক চুল পরিমাণ ও নরবে।
তার যে সুপারস্টার পছন্দ সে খবর তার মা একটু আন্দাজ করতে পেরেছিল।
মেয়ের পছন্দটা তো আকাশের চাঁদ।
ঐ চাঁদটা কে এনে দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ চাঁদের আলোর উপর অধিকার সবার থাকে। কিন্তু চাঁদের উপর শুধু আকাশের অধিকার থাকে। সে তো ঐ আকাশের বুকে উদয় হয়।

সাইয়ান যখনি কোনো অনুষ্ঠানে তার প্রেয়সীর কথা বলতো তখুনি ঐশানীর শরীরের ভেতর জ্বালা পোড়া করতো। সাইয়ানের প্রেমিকা কে খুব হিংসা করতো।

একদিন তো ঐশানী ওর মা কে বলে,”আম্মু সুপারস্টার সাইয়ানের বুঝতো চারপাঁচটা বিয়ে করা উচিৎ। কারণ বেচারাকে যে কতো মেয়ে নিজের মন দিয়েছে সে নিজেও জানে না। একটা বউ বাড়িতে থাকবে, আরেকটা বউ সংসার করবে,কেউ সেবাযত্ন করবে।”

ঐশানীর মা মেয়েকে থামিয়ে দিয়ে বলে,”আমার আম্মাজান মাফ কর আমাদের। তোর স্বামী হলে তুই কখনো আরেকজন মেয়ের কাছে নিজের স্বামী কে যেতে দিবি? বাঙালি মেয়েরা নিজের স্বামী কে অন্য নারীর সাথে কথা বলা সহ্য করতে পারে না।আমার রাজকন্যা আসছে স্বামী দান করতে।”

ঐশানী বলে,”আম্মু তুমি বুঝছো না!”

ঐশানীর আম্মু বলে,”এই তুই থাম তো! যে ছেলের মুখে সারাদিন সানাই এর নাম। সে ছেলের মনে কখনো অন্য কোনো মেয়ের স্থান হবে না। সানাই মেয়েটার প্রতি ওর যে টান তাতে সাইয়ানের জীবনে অন্য কোনো মেয়ের স্থান হবে না। তাই যে মেয়েরা ওকে পছন্দ করে তাদের সাইয়ান কে ভুলে যাওয়া উচিৎ। এসব সুপারস্টারদের সংসার দুদিন ও টিকবে না। এদের পেছনে এতো মেয়ে ঘুরাঘুরি করে যে বিয়ের পর ওরা নিজের ভালোবাসার মানুষ কে ডায়নি গুলোর জন্য ধোঁকা দেয়। তাই সুপারস্টারদের টিভিতে মানাই আমাদের বাস্তব জীবনে না। ”

ঐশানী মনে মনে বলে,”আম্মু তুমি বুঝলে না,আমার মনের কথা,থাক সমস্যা নেই! আমি যদি কোনোদিন ও তার বউ হতে পারি তাহলে ঐ সানাই আপুকে সাথে নিয়ে সুখে সংসার করবো। কারণ হচ্ছে সে আমার স্বামী হবার পর ১০০ টা বিয়ে করলেও আমার কিছু আসে যায় না।আমার স্বামী হলেই চলবে।
ভালাবাসা সে ঠিক একদিন জুটবে কপালে। তাছাড়া
সানাই আপুর যে বর্নান দেয় তাতে তো মনে হয় আপুটা সেই রকম ভালো মনের। ইশ তার বর্ণানা শুনেই তো আমি সানাই আপুর প্রেমে পড়ে যাবো। সানাই আপু তার হৃদয় জুড়ে থাকবে আমি না হয় তার পৃথিবী জুড়ে থাকবো! তাছাড়া আমার আর কষ্ট করে বাচ্চা বড় করা লাগবে না। সানাই আপুর বাবু হবে আমি সেই বাবুর মা হবো ওয়াও।”

এভাবে সাইয়ান কে মনের কোণায় রেখে ঐশানী দিন গুলো কেটে যাচ্ছিল বেশ ভালোই। ”

তবে একদিন…..

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here