ভালোবাসা_বিনিময়,part_16,17

0
1371

ভালোবাসা_বিনিময়,part_16,17
Nishi_khatun
part_16

ঐশানী ভার্সিটি থেকে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরছিল তখন হঠাৎ ওর মা ফোন দিয়ে বলে,”তোর বাবার কারখানা তে যা তো মা। তোর বাবার না কি হঠাৎ শরীরটা খারাপ লাগছে। ভার্সিটি থেকে আসার পথে তো কারখানাটা পড়ে।”

মায়ের কাছ থেকে বাবার অসুস্থ হবার কথা শুনে দ্রুত সেখানে চলে যায়। গিয়ে দেখে একজন সুপুরুষ তার বাবার পাশে দাঁড়িয়ে তার খেলায় রাখছে।”

ঐশানী দৌড়ে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলে,”বাবা তোমার হঠাৎ কি হলো? শরীরটা ঠিক আছে তো?”

ঐশানীর বাবা বলে,”হ্যাঁ ঠিক আছে!”

ঐশানী বলে,”কচু ঠিক আছে। যদি সবকিছু ঠিক থাকতো তাহলে আমার এভাবে ছুঁটে আসতে হতো না।দেখো তো নিজের কি বেহালদশা বানিয়ে রেখেছ! ”

সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটা অবাক চাহনি তে ঐশানীর দিকে তাকিয়ে আছে। মূলত সে বাবা মেয়ের খুনশুটি উপভোগ করছে।

হঠাৎ করে সেই লোকটার চোখে চোখাচোখি হতেই একটু চমকে ওঠে!লোকটা তার দিকে কেমন ভাবে তাকিয়ে আছে।তা দেখে ঐশানী তার বাবাকে বলে,” বাবা ঐ লোকটা কে?”

ঐশানীর বাবা বলে,”উনি হচ্ছে আবরাজ। আমাদের কারখানার সকল পণ্য তো তাদের কোম্পানির জনঢ উৎপাদন করা হয়।”

আবরাজ বলে,”আঙ্কল কি যে বলেন! কোম্পানি আমার না। আমিও কোম্পানির একজন কর্মচারী মাত্র। কোম্পানির মালিক তো বড়রা।”

ঐশানীর বাবা বলে,”শুনছিস মা পাগল ছেলের কথা। নিজের বাপ-দাদার কোম্পানিতে না কি সে কর্মচারী। ”

বাবার মুখে এমন কথা শুনে একটু অবাক হয়।
তারপর আবরাজের প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে বলে,”বাবা চলো তোমাাকে হসপিটালে নিয়ে যাবো।”

আবরাজ ঐশানী কে থামিয়ে দিয়ে বলে,”আঙ্কলের তেমন কোনো সমস্যা নেই। অতিরিক্ত টেনশনের কারণ পেশার একটু বেড়ে গিয়েছিল। তাকে তার মেডিসিন দিয়েছি। এখন একটু বিশ্রাম করলেই উনি ভালো হয়ে যাবে।”

ঐশানী এবার চেঁচিয়ে বলে,”বাবা তুমি এতো টেনশন কোথায় পাও আমি তো বুঝি না। আমি লেখাপড়া করছি ঈশান ডাক্তারি পরছে। দুজনের একজন ও বাচ্চা নেই তাহলে এতো টেনশনের কি আছে?”

ঐশানীর বাবা বলে,”আসলে কারখানার একটু সমস্যার জন্য টেনশনে ছিলাম।তাছাড়া কোনো কিছু না। তোদের দু জন কে নিয়ে তো টেনশন করি না।”

ঐশানী বলে,”অনেক কাজ করেছো এবার বাড়িতে চলো!”

বাবা বলে,”না রে মা এখনো অনেক কাজ পড়ে আছে।সব কিছুর হিসাব-নিকাশ করে তারপর যাবো।নয়তো অনেক সমস্যা হবে তুই বুঝতে পারবি না। তুই চিন্তা করিশ না।এখন বাড়িতে যা আমি বাকি কাজ গুলো করে চলে আসবো।”

ঐশানী আর কথা বাড়াই না।কারণ জানে ওর কাজ পাগল বাবা কাজ সম্পন্ন না করে বাড়িতে যাবে না।

ঐশানীর বাবা আবরাজ কে বলে,”বাবা তুমি তো ঐ পথে যাবে। যাবার সময় ঐশানী কে একটু আমাদের বাড়ির রোডে নামিয়ে দিবে?”

আবরাজ বলে,”জ্বি আমি তো ঐ রাস্তা দিয়ে যাবো আমার সমস্যা হবে না।”

ঐশানী অনিচ্ছা সত্বেও আবরাজের পেছনে পেছনে এগিয়ে আসে।তারপর দুজন একসাথে গাড়ির পেছনে বসে। আবরাজের গাড়ি ড্রাইভার চালাচ্ছিল। তাই ঐশানী কে সাথে নিয়ে পেছনের শিটে বসর।
এমন হুট করে অচেনা মানুষের পাশাপাশি বসতে ঐশানীর কেমন যেনো বিরক্তিকর লাগছিল।
তবুও কিছু করার নেই। আবরাজ গাড়িতে ঐশানী কে নানারকম প্রশ্ন করতে থাকে। ঐশানী ভদ্রতার খাতিরে মুখে প্লাস্টিক হাসি নিয়ে সব উওর দিয়ে যায়।

ঐশানীর কথা বলার স্টাইল,ড্রেসআপ,সব কিছু আবরাজ কে মুগ্ধ করে। সে এমন কাউকে চাইছিল।
যার সাথে বসে সে মনের কথা শেয়ার করতে পারবে।
আবরাজ অনেক মিশুক তা ঐশানীর বুঝতে সময় লাগে না।
হঠাৎ করে আবরাজ ঐশানীর ফোন নাম্বার চেয়ে বসে।

ঐশানী মনে মনে ভাবে,”আল্লাহ চেনা নেই জানা নেই আমার পরমাত্মীয় হতে চাই। কিন্তু কিছু করার নেই বাবার সাথে সম্পর্ক ভালো। চুপচাপ ইচ্ছা না থাকলেও নাম্বার দিয়ে দেয়।”

এরপর ঐশানী কে নামিয়ে দেওয়ার সময় বলে,”তোমার সাথে মাঝেমধ্যে কথা বলবো সমস্যা হবে না তো।”

গাড়ির বাহিনে দাঁড়িয়ে আবারো সেই নকল লোকদেখানো হাসি দিয়ে বলে,”নাহ কি সমস্যা হবে বলেন তো।”

এরপর ঐশানী বাড়িতে চলে আসে। বাড়িতে এসে নিজেন রুমে গিয়ে বকবক করতে থাকে,আহা সুন্দরি মেয়ে দেখছে আর কি? ফোন নাম্বার দাও,মাঝেমধ্যে কথা বলবো,কেন রে ভাই আমি কি তোর হবু বউ? যে অচেনা মেয়ের সাথে প্রথম দেখাই তার ফোন নাম্বার নিতে হবে? আর যেখানে আমি কথা বলার আগ্রহ করছিলাম না সেখানে তার এতো আগ্রহ কেনো?
ধুর ওসব আজারে পাবলিকের চিন্তা করলে হবে না।

ঈশান এসে বলে,”আরে আপুনি যে! রুমের মধ্যে এমন একা একা পাগলের মতো বকবক করছো কেনো?”

এরপর ঐশানী ঈশানের কাছে আবরাজের সবটা কথা বলে দেয়।

ঈশান হেসে বলে,”যাক বাবা আজ প্রথম বার কেউ তোমার ফোন নাম্বার নিতে পেরেছে।সমস্যা নেই বেচারা ফোন দিলে দুই এক মিনিট কথা বলবা সমস্যা কোথায়। ”

ঐশানী সমস্যা কোথায় মানে কি?

ঈশান -; গাড়িতে বসে কথা বলতে পারছো আর ফোনে দুই চার মিনিট হাই হ্যালে তে কিছু হবে না। তাছাড়া বাবার পরিচিত তাকে তো আর অপমান করা যায় না।

ঐশানী চুপচাপ হুম বলে বসে থাকে।

এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে যায়। আবরাজ কখনো ঐশানী কে কল করে না। ঐশানী ভাবে যাক বাবা বেঁচে গেছি অযথা বিরক্তিকর ভাবে কারো সাথে কথা তো বলতে হচ্ছে না।

ঠিক এর কিছুদিন পর ভার্সিটির গেটের বাহিরে আসতেই দেখে আবরাজ গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
ঐশানী কে দেখে সামনে এগিয়ে এসে কোনে কথা না বলে সোজা হাত ধরে গাড়ির সামনের শিটে বসিয়ে দিয়ে নিজে গাড়ি ড্রাইভ করতে শুরু করে।

ঐশানী এবার একটু রেগে গিয়ে বলে,”আপনার সমস্যা কী? এভাবে হুট করে আমাকে কিডন্যাপ করার মানে কি?”

ঐশানীর কথায় আবরাজ মুচকি হেসে বলে,”আরে বন্ধুদের মধ্যে এমন হুটহাট ঘোরাঘুরি বেপার না।”

ঐশানী বলে,”আপনি আমার বন্ধু কোন দিক দিয়ে? আমার থেকে বয়সে অনেক বড় আমি তো আপনাকে ঠিকমতো চিনি না।সব থেকে বড় কথা কোনো ছেলেমেয়ে বন্ধু হতেই পারে না।”

আবরাজ বলে “তোমার কোনে ছেলে বন্ধু নেই?”

ঐশানী কাঠকাঠ গলায় উওর দেয় নাহ নেই।

আবরাজ বলে,”নেই যখন আজ কে থেকে আমি তোমার বন্ধু। তাই একটা রেস্টুরেন্ট গিয়ে জোর করে ঐশানী কে লাঞ্চ করাই।”

এরপর একটু ঘুরাঘুরি করে ঐশানী কে বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে আসে।

একজন পরপুরুষের এমন হঠাৎ করে জোড় করাটা ঐশানীর মোটেই পছন্দ হচ্ছে না।

ঐশানী তার পরিবারের সবার কাছে বেপারটা বলে।ঐশানীর বাবা বলে,”দেখ মা আবরাজ ছেলেটা অনেক ভদ্র।কখনো কোনো মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকাই না।সে ছেলে যখন তোকে বন্ধু ভাবছে তখন তুই আর খারাপ ব্যবহার করিস না।ওদের কোম্পানির সাথে সম্পর্ক অনেক বছরের।আবরাজ কেও চিনি অনেক বছর ধরে।প্লিজ এমন কিছু করবি না যাতে আমাদের ব্যবসায়ীক সম্পর্ক নষ্ট হয়।”

ঐশানী চুপচাপ নিজের ঘরে চলে যায়। বুঝতে পারছে এখানে স্বার্থ নিয়ে টানাটানি চলছে। সেখানে তাকে বোঝার মতো মানুষের বড়ই অভাব।

চলবে…..

#ভালোবাসা_বিনিময়
#Nishi_khatun
#part_17

ঐশানী এসব চিন্তার মাঝে হঠাৎ করে মনে পড়ে আরে শান্তির নীড়ে গেলেই তো মনের শান্তির দেখা পাবো।অযথা এতো চিন্তা করছি কেনো!

শান্তির নীড় এটা একটা অনাথ আশ্রম। এখানে অনেক বাচ্চারা থাকে। এটা ঐশানীদের বাড়ি থেকে বহু দূর। তবে ঐশানীর যখন খারাপ লাগে তখন সেখানে চলে যায়। ওখানে ঐ বাচ্চাদের মাসুম চেহারার মায়াতে আর ওদের কষ্টের কথা চিন্তা করে মনের সব কষ্ট গুলো সে ভুলে যায়।

দ্রুত বাড়ি থেকে বেড়িয়ে সে শান্তির নীড়ে চলে আসে।
এখানে এসে ওর মনের মধ্যে অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে। যখন কলেজে নতুন ভর্তি হয়! তখন কোনো এক প্রজেক্টের কাজে ম্যাডামের সাথে এখানে আসে। এখানে এসে এই স্থানের প্রেমে পড়ে যায়।
এই বাচ্চাদের থেকে তো শিখে তো নিজের মনকে এতোটা উদার করতে পারছে। এদের কাছে থেকে ভালোবাসার নতুন মানে শেখা যায়। ভালোবাসার আরেকটা মানে হলো বিনিময়। কোনো কিছু বিনিময় না করলে ভালোবাসা পাওয়া যায় না। আপনার টাকা থাকতে হবে না। সবার কাছে থেকে ভালোবাসা পাবার জন্য একটু ভালো ব্যবহার করুণ! অন্যকে সম্মান দিতে শিখুন! আর সব থেকে বড় কথা কাউকে ভালোবাসলে তার থেকে কোনো কিছুর আশা করবেন না। পারলে আপনি নিজের সবটা উজার করে দিন।দেখবেন দিন শেষে ভালোবাসাটা না পেলেও মনের শান্তিটা ঠিক পেয়ে যাবেন।

এখানে একটা আপু আছে। আপুটার নাম সানাই। আমি তো মাঝেমধ্যে আপুর সাথে দুষ্টুমি করে তাকে বলতাম আপু তুমি কি সাইয়ানের সানাই? যার নামের মালা সে সারা বছর গাঁথতে থাকে। আপু একটা রহস্যের হাসি দিয়ে বলতো তুমিও না ঐশানী বড্ড বোকা মেয়ে। আমার মতো এতিমখানায় বড় হওয়া মেয়ে কি না ঐ সুপারস্টার সাইয়ানের প্রেমিকা ।
সানাই আপুটা এতো ভালো কি বলবো। আপু একটা সংস্থাতে জব করে। জবের যে টাকা সবটা এই বাচ্চাদের পেছনে খবচ করে। নিজের জন্য কখনো কোনো কিছুই জমা রাখে না। তার থেকেও আমি জীবনে অনেক কিছু শিখেছি।

আমি শান্তির নীড়ে এসেই আপুকে জড়িয়ে ধরে বলি,”আপু সবাই নিজের স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত! আমার কথা চিন্তা করার জন্য কেউ নেই। এই স্বার্থপর মানুষের মাঝে আমি একলা থাকবো কি করে?”

সানাই বলে,”তুমি তো স্বার্থপর না। তাহলে যাদের যা ইচ্ছা করতে দাও। শুধু তুমি নিজের উপর এবং আল্লাহর উপন ভরসা রাখবে সব সময় তাহলে সব কিছু একদিন ঠিক হয়ে যাবে।”

ঐশানী বলে,”কেউ যদি আপনাকে জোড় করে তার সাথে বসবাস করার জন্য তাহলে কি করবেন?”

সানাই, “সে যদি আমাকে ভালোবাসে আর আমার জীবনে যদি অন্য কেউ না থাকে তাহলে অবশ্যই তাকে সুযোগ দেওয়া উচিৎ। আজ তার প্রতি অনুভূতি নেই কিন্তু কাল যে কোনো অনুভূতি তৈরি হবে না তা কি তুমি বলতে পারো?”

ঐশানী সানাই কে জড়িয়ে ধরে সেখান থেকে চলে আসে।
সানাই মনে মনে বলে,”এই একটা পাগল মেয়ে। নিজের মনের ভেতরের কোনো খবর নিজেই জানে না।
সামনের মানুষের মুখে হাসি দেখার জন্য সব সময় রাজী। না জানি এর জীবনের গল্পটা কেমন হবে। আশা করি মেয়েটা জীবনে সুখি হবে।”

শান্তির নীড় থেকে বেড়িয়ে আসার পর থেকে ঐশানী বদলেছে নিজেকে একটু। এখন আবরাজের সাথে কোথায় ঘুরাঘুরি করতে আর আপত্তি জানায় না। কারণ ঐশানী ভাবে আমার মনে কোনো কিছু নাই থাকতে পারে। তার জন্য যে সামনের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করতে হবে এর কোনো মানে হয় না। কেউ যদি আমার সাথে কিছু সময় কথা বলে মনে শান্তি অনুভব করে তাতে দোষের তো কোনো কিছুই নেই।

এভাবে বেশ কিছুদিন চলতে থাকে। আবরাজ ঐশানী কে নিয়ে একদিন হুট করে ওদের অফিসে চলে আসে।
অফিসের সামনে একপাশে অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা আছে। সেখানে ঐশানী কে নিয়ে গিয়ে ওর সামনে হাটু গেড়ে বসে বলে,”ঐশানী আমি তোমাকে পছন্দ করি! সারাজীবনের জন্য তোমাকে আমার করে পেতে চাইছি! তুমি কি আমার হবে?please answer me!”

আবরাজের এমন কান্ডে ঐশানী হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। কারণ স্বপ্নেও কল্পনা করে নাই যে আবরাজ কখনো তাকে এমন কথা বলতে পারে। আসলে আবরাজের জন্য ঐশানীর মনের মাঝে এমন কোনো অনুভূতি কাজ করে না। যার জন্য সে আবরাজ কে হ্যাঁ বলবে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে আবরাজের সাথে এতোদিন বন্ধুর মতো ঘুরাঘুরি করতে তার ভালো লাগতো। তার মানে এটা নয় যে সে ভালোবাসে।ভালোলাগা আর ভালোবাসার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে।

আবরাজ এবার জোড়ে ধমকের সুরে বলে,”কি হলো ঐশানী? উওর দিচ্ছ না কেনো?”

ঐশানী আমতা-আমতা করতে থাকে।
তা দেখে পকেট থেকে একটা ব্লেড বাহির করে হাতের শিরার সামনে ধরে বলে,”জলদি বলো ঐশানী তুমি আমাকে ভালোবাসো। আমাকে বিয়ে করবে নয়তো আমি এখুনি সব কিছু শেষ করে দিবো।”

ঐশানী ভয় পেয়ে যায়।
আবরাজ কে বলে,”দেখুন প্লিজ এমন কাজ করবেন না। আমি আপনাকে ভালোবাসি না। জোর করে ভালবাসি মুখ দিয়ে বললেই তো হয়ে যাবে না। আমার কিছু সময়ের প্রয়োজন। এভাবে থ্রেড দিয়ে রাজী করানো উচিৎ না।”

আবরাজ বলে,”এতো কিছু জানি না। তুমি এখুনি হ্যাঁ বলো।”

ঐশানী পড়েছে বিপদে, না বলার আর কোনো অপশন তা সামনে দেখছে না। লোকটা তো খুব ভ্যাজালে। এভাবে জোড় কেনো করছেন উনি। আমার মনের বিরুদ্ধে আমি যেতে পারবো না। আবার মিথ্যা বলে তাকে ধোঁকা দেওয়ার মানে হয় না।

আবরাজ এবার ব্লেড হাতের সাথে চেপে ধরতে রক্ত ঝড়তে শুরু করে।
আবরাজ দাঁতে দাঁত চেপে বলে,”তোমার উওর কি ঐশানী? ”

এবার ঐশানী কান্না সিক্ত নয়নে দাঁতে দাঁত চেঁপে বলে,”আমি আপনার কথায় রা… বলাই আগেই অফিসে একজন এসে আবরাজ কে ডাক দেয়।
যে তাকে বড় সাহেব ডাকছেন।”

আবরাজ ঐশানী কে অপেক্ষা করতে বলে চলে যায়।
তাতে ঐশানী একটু হাফ ছেড়ে বাঁচে।

কিছুসময় পর মুখটা আঁধার রাতের মতো কালো করে ফিরে এসে বলে,”আর কিছুদিন অপেক্ষা করো তারপর তোমাকে সারাজীবনের জন্য আমার বাড়িতে আনবে। যাও ততোদিন তোমাকে সময় দিলাম আমাকে ভালোবাসতে শুরু করো।”

ঐশানী এবার হাফ একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।আল্লাহ বাঁচাইছে। নয়তো এই সাইকো তো আজ এতো মানুষের মাঝে আমাকে ব্লেকমেইল করে রাজী করিয়ে ছাড়তো।

এরপরে আবরাজ ঐশানী কে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে চলে যায়। ঐশানী আবরাজের সে কান্ডের কথা বাড়িতে এসে ভাবতে থাকে আর বিরক্তি প্রকাশ করতে থাকে। এটা কি উচিৎ কাউকে জোড় করে তার মতের বিরুদ্ধে মতামত নেওয়া? কখনো উচিৎ না। সে আজ আমাকে জোড় করছে। এভাবে জোড় করে কোনো কিছু করা সম্ভব না। মানুষকে ভালবেসে তাকে বুঝিয়ে অনুভব করিয়ে সবটা করানো যায়। যার জন্য কেনো অনুভূতি নেই তাকে কি করে হুটহাট ভালোবাসি বলে দিবো?

এভাবে বেশ কিছুদিন পার হয়ে যায়।
আবরাজের হঠাৎ করে আর কোনে খবর নেই।
এতে ঐশানীর তেমন কোনো মাথা ব্যাথা নেই।
ধুর ঐ লোকটা আশেপাশে থাকা মানে টেনশনের মধ্যে ডুবে থাকা। সে যতো দূরে থাকবে ততোটা ভালো।

এর মধ্যে হঠাৎ একদিন ঐশানীর বাবা ঐশানী কে ডেকে একটা প্রশ্ন করে।যে প্রশ্ন শুনে ঐশানী হ্যাঁ করে তাকিয়ে থাকে তার বাবার দিকে!

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here