ভালোবাসি,পর্বঃ১৪,১৫

0
3674

ভালোবাসি,পর্বঃ১৪,১৫
Tanisha Sultana (Writer)
পর্বঃ১৪

“লুচ্চা

” হুম আর

“সরেন

তুলি সায়ানকে ধাক্কা দিয়ে সরে যায়
” এইতো ভালোবাসতে বলছিলি

“এভাবে কেউ ভালোবাসে

” তো কিভাবে বাসে

“আপনি কিচ্ছু জানেন

” জানি না বলেই তো জানতে চাইছি

“ঘুমাবো আমি

” বললি না

তুলি সায়ানের চুল টেনে শুয়ে পরে। সায়ান একটু মুচকি হেসে তুলির পাশে শুয়ে পরে।
“তুলি

” কান খোলা আছে

“আমি তোকে ভালোবাসি কি না জানি না তবে এটুলু বলতে পারি কাকায়ের মতো কিছু আমি করবো না

” অলরেডি করছে। আমার তো পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই দাদু আপনার বাবা হয়ত প্রটেক্ট করছে তবে আপনি যদি মায়াকে বিয়ে করেন ওনারাও আস্তে আস্তে রাজি হয়ে যাবে

“কিসের মধ্যে কি। আমি একটা সিরিয়াস বিষয়ে কথা বলছি তার মধ্যে তুই তোর মন্তব্য এনে মুড টাই নষ্ট করে দিলি

” সত্যি কথা বললাম

“সত্যি বলিস নি তুই। আমি তোকে বিয়ে করেছি।তুই ছাড়া অন্য কেউ আমার জীবনে আসবে না। আমি তোকে ভালোবাসি

তুলি এবার ফট করে উঠে বসে সায়ানের মুখের দিকে তাকায়। তারপর জোরে জোরে হাসতে থাকে। সায়ানও বসে

” হাসছিস কেনো?

“জোকস টা দারুণ ছিলো

” তুলি আমি সিরিয়াসলি বলছি

“হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে গেলো।

সায়ান মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে পরে। তুলিও শুয়ে পরে

“আমাকে আপনি ভালোবাসেন না। ভালোবাসলে আপনি কখনো মায়াকে আনতেন না। আর আমি আপনার ভালোবাসা চায়ও না। যারা ভালোবাসে কেয়ার করে তারাই ছেড়ে চলে যায়। আমার বাবাকেই দেখুন না কতো ভালোবাসতো আমাকে আর এখন

তুলি আর কিছু বলে না। চোখ বন্ধ করে ফেলে। সায়ানও কিছু বলে না।

সকালে
আজ তুলি সায়ান আর মায়া ঢাকা চলে যাবার কথা কিন্তু আজ রুহির বিয়ের পাকা কথা বলতে আসবে তাই ওরা আর যেতে পারে না। সবাই মিলে ড্রয়িং রুমে গল্প করছে তখন কলিং বেল বাজে

” এই সময় আবার কে এলো ( সায়ানের বাবা)

“আমি দেখছি

তুলি দরজা খুলতে যায়। দরজা খুলে দেখে তুলির বাবা সাথে সেই মহিলা আর ছেলেটা। তুলিতো ওদের দেখে ভীষণ রেগে যায়

” এ বাড়িতে কি চায়

“মামনি আমাদের ভেতরে যেতে দাও

ওরা তুলিকে ঠেলে ভেতরে ঢোকে। তুলির দাদু সায়ানের বাবা মা তুলির মা সবাই ওদের দেখে অবাক। দাদু চিৎকার করে বলে

” তোর সাহস কি করে হলো এবাড়ি ঢোকার

“বাবা তোমার নাতি দোয়া করবে না

ছেলেটাকে দেখিয়ে বলে

” আমার ছেলেই তো মারা গেছে নাতি আসবে কোথা থেকে। বেরিয়ে যাও

“বাবা প্লিজ এমন করো না

” কেমন করবো বলো? তুমি মানুষ? কি করে পারলে এরকম একটা ফুটফুটে মেয়েকে ছেড়ে অন্য কাউকে বিয়ে করতে। বউমার কথা বাদ দিলাম। তুলি রোজ কাঁদতো তোমার জন্য রাসেল (সায়ানের বাবা) তোমার অভাবটা পুরণ করার চেষ্টা করেছে

দাদুর চোখ ভিজে যায়। তুলি আর তুলির মায়ের চোখেও পানি। তুলি তুলির বাবার সামনে গিয়ে বলে

“আমি ভেবেছিলাম আমার বাবা খারাপ। কিন্তু আপনি যে জঘন্য খারাপ আজ বুঝতে পারলাম। এখানে নিশ্চয় প্রপার্টির ভাগ নিতে এসেছেন। কিন্তু আপনি প্রপার্টির ভাগ পাবেন না। কারণ আপনার নামের সব প্রপার্টি আমার দাদু আমার মায়ের নামে করে দিয়েছে

” কিহহহ বলছে এই মেয়েটা তুহিন

ওই মহিলাটা বলে

“ও ঠিকি বলেছে। এবার তোমরা আসতে পারো আর কখনো যেনো এই বাড়ির আশেপাশে তোমাকে না দেখি (দাদু)

ওই মহিলাটি তুহিনের কলার ধরে বলে

” সামান্য প্রপার্টি টুকু তোমার নামে নেই। কি আছে তোমার হ্যাঁ। এতোদিন তো খুব বলতে তোমার অনেক টাকা পয়সা,আছে আর এখন

“আপনি কি টাকা পয়সার জন্য ওনাকে বিয়ে করেছিলেন (তুলি)

” তুমি চুপ করো

“দুই মিনিটের মধ্যে বেরিয়ে যাবে তোমরা

তুলির বাবা ছলছল চোখে বেরিয়ে যায়। তুলিও রুমে চলে যায়।

রুহিকে দেখতে লোকজন এসে গেছে। তুলি রুহিকে সাজিয়ে দেয়। তুলিও একটা শারি পরে। সাজানো শেষে রুহিকে নিয়ে যায়। বড়রা কথা বলছে। তুলি এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে।

সায়ান তুলির কাছে এসে

” বাহহহ তোকে তো দারুণ লাগছে

“ধন্যবাদ

” সায়ান আমাকে কেমন লাগছে

পেছন থেকে মায়া বলে। সায়ান আর তুলি মায়ার দিকে তাকায়। মায়া হাটু পর্যন্ত ড্রেস পরেছে। সায়ান চোখ ফিরিয়ে নেয়

“মায়া আপু তোমার হাটুটা না খুব সুন্দর

” হাটু সুন্দর (মায়া)

“আমার মনে হলো। সায়ান বেবি আপনি একটু দেখে বলেন তো

সায়ান তুলির দিকে তাকায়

‘আমার দিকে না মায়ার দিকে তাকান

” ভালো (সায়ান)

“কি ভালো হাটু না কি

সায়ান রাগী লুকে তুলির দিকে তাকায়।
” সায়ান এই মেয়েটা এতো স্টুপিট কেনো?

“ওই হেলো স্টুপিট তুই আমি না। আর হ্যাঁ এরকম দুই হাত ড্রেস পরে আমার স্বামীকে তুই ইমপ্রেস করতে পারবি না

” সায়ান এমনিতেই ইমপ্রেস। ওকে আবার নতুন করে ইমপ্রেস করার কিছু নেই

তুলি রাগী দৃষ্টিতে সায়ানের দিকে তাকায়। সায়ান কিচ্ছু বলছে না

“দশ দিনের মধ্যে যদি মায়া এবাড়ি থেকে না যায়। তাহলে আমি চলে যাবো

” আমি কোথাও যাবো না

তুলি চলে যায়।
“মায়া একটু বেশি বারাবাড়ি করছো তুমি

” তোমার বউ বাড়াবাড়ি করছে না। ও আমাকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বললো সাহস কতো ওর

“তুমি চলে যাবে মায়া

” আমি যাবো না। যদি যায় তবে আমার লাশ যাবে

মায়াও চলে যায়। সায়ান এবার ভাবি বিপদে পরেছে। কি করবে? মায়ার এরকম থ্রেট দেওয়া ভালো লাগছে না।

তুলি আর রুহি আজ শপিং করতে গেছে। সারা শপিংমল ঘুরে ঘুরে শপিং করছে।
হঠাৎ রিককে দেখে তুলি থেমে যায়।
“এ এখানে এলো কি করে? এখন যদি দেখে ফেলে? কি করবো এবার আমি

তুলি উল্টো দিকে দৌড় দিতে যায়। তার আগেই রিক ডাক দেয়

” তুলি

তুলি থেমে যায়

“আপনি এখানে?

” হুম তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে চলে এসেছি

চলবে

ভালোবাসি
পর্বঃ১৫
Tanisha Sultana (Writer)

“আপনি জানলেন কি করে আমি এখানে থাকি?

” মন থেকে কাউকে খুঁজলে ঠিক পাওয়া যায়।
“বাসায় যাবো

তুলি আর রুহি হাঁটা শুরু করে
” আমি এতো কষ্ট করে এতো দুরে আসলাম আর তুমি আমাকে দেখে পালিয়ে যাচ্ছ

“আসলে এটা আমার শশুর বাড়ির এলাকা। আমি বিবাহিত। এবাবে আপনার সাথে কথা বললে আমার বদনাম হবে। আশা করি বুঝতে পারছেন

তুলি আর রিককে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে যায়। গাড়িতে উঠে জোরে জোরে শ্বাস নেয়
” তুলি তোমার স্যার

“হুম। খুব সাংঘাতিক

তুলি বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হয়। সায়ানকে রুমে না দেখে ভাবে হয়ত মায়ার রুমে আছে। তাই মায়ার রুমে যায়। দরজায় টোকা দেওয়ার আগেই কিছু কথা তুলির কানে আসে মায়ার রুম থেকে

” মা আমি ঠিক আছি। আর সেভ আছি। তুমি চিন্তা করো না আমার জন্য। আমি আমার কাজ শেষ করেই শান্ত হবো। তার আগে না

তুলি চিন্তা করতে থাকে।
“মায়ার বাবা মা হারায় নি। ওনারা আছে। আর মায়া আপু কোনো একটা প্লান করেছে। হয়ত আমাকে আর সায়ানকে আলাদা করে চায়। আমাকে মায়ার প্লান জানতেই হবে। কিন্তু এখানে থেকে সম্ভব নয়। খুব তারাতাড়ি ঢাকা ফিরে যেতে হবে আমাদের।

তুলি রুমে এসে গভীর মনোযোগ দিয়ে ভাবছে। তখন সায়ান আছে

” কি রে কি ভাবছিস
“কিছু না

” আমি তোর মুখ দেখেই বুঝতে পারছি

“বুঝতেই যখন পারছেন তখন জিজ্ঞেস করছেন কেন? শুনুন কাল সকালেই আমরা ঢাকা ফিরে যাবো

” কিন্তু কেনো?

“গেমস খেলতে
” বুঝলাম না

“এতো বুঝতে হবে না।

তুলি জামাকাপড় গোছাতে থাকে।
সকালে ওরা ঢাকার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরে। মায়া ঢাকা যাওয়ার কথা শুনে ঘাবড়ে গেছিলো।

তুন ঘন্টা জার্নি করার পরে ওরা বাড়ি চলে আসে। মায়াকে সায়ান একটা রুম দেখিয়ে দেয়। মায়া রুমে চলে যায়। অনেক দিন অফিসে যাওয়া হয় না তাই সায়ান অফিসে চলে যায়। তুলি রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরে।

সন্ধায় তুলির ঘুম ভাঙে। চোখ খুলে দেখে সায়ান কারো সাথে ফোনে কথা বলছে। তুলি একটু ভালো করে তাকিয়ে দেখে ফোনটা তুলির। তুলি এক লাফে উঠে সায়ানের কান থেকে ফোনটা নিয়ে আসে।

“ফোনটা নিলি কেনো?

রাগী গলায় বলে সায়ান। তুলি ঢোক গিলে বলে
” কার সাথে কথা বলছিলেন

“তোর নাগরের সাথে
” নাগর আবার কার নাম

“আজ থেকে তোর ফোনে কোনো ছিম থাকবে না

” আপনার কথায়

“হুম আমার কথায়। আমি তোর হাজবেন

” আই নো। এই কথা বারবার বলার কি আছে

“তুই তো ভুলে যাস তাই মনে করিয়ে দিলাম

তখন দরজায় মায়া নক করে
” আসো

মায়া ভেতরে এসে বলে
“আমি আজ খাবার বানিয়েছি। চলো খাবে তোমরা

” তুমি বানিয়েছো

“তুলি শুরু কি তুমিই রান্না করতে পারো আর কেউ পারে না

” সেটা কখন বললাম।

“তুমি খেলে খাবে না খেলে নেই। সায়ান তুমি চলো তো

মায়া সায়ানের হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। তুলি থামিয়ে বলে
” আমি হাজবেন কানা না। চোখে দেখতে পায় তো টানাটানি করে নেওয়ার কিছু নেই।
মায়া চলে যায়। সায়ান আর তুলিও যায়। তুলি খাবার টেবিলে বসে বলে

“কোন রেস্টুরেন্টে থেকে এনেছো
” মানে? কি বলতে চাইছো তুমি?

রেগে বলে মায়া
“এতো রান্না তুমি করো নি

” আমি করেছি

“ওহহ গুড তাহলে বলো মাংস রান্নায় কি কি লাগে
মায়া আমতাআমতা করে। তুলি শব্দ করে হেসে ওঠে। সায়ান বলে

” আমার খিদে পেয়েছে

মায়া সায়ানকে খাবার বেরে দেয়। তুলিও খায়।

খাওয়াদাওয়া শেষে মায়া সায়ান কিছু একটা নিয়ে আলোচনা করছে। আর ওদের থেকে একটু দুরে তুলি টিভি দেখছে।
টিভিতে বারবার একটা নিউস দেখাচ্ছে। সেটা হলো কিছুদিন আগে প্রায় তিন কোটি টাকা অত্তসাদ করে বিদেশে পালিয়েছে এক দম্পতি। মহিলা আর লোকটার ছবিও দেওয়া আছে। মহিলাটার চেহারার সাথে মায়ার চেহারার কিছুটা মিল আছে।

তুলি নিউস দেখে জোরে জোরে হাসা শুরু করে। সায়ান আর মায়া তুলির দিকে তাকায়

“এভাবে হাসসিস কেনো

তুলি হাসি কিছুটা থামিয়ে বলে
” এই নিউজ টা দেখে হাসি পেলো

“এতে হাসির কি আছে

” দেখেন এই মহিলাটার একটা মেয়ে আছে। তাহলে সেই মেয়েটার নাম হলো চোরের মেয়ে চোর। আর ওই মেয়েটা বফ হলো চোরের বফ। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সবাই চোর

“স্টুপিট থামো
মায়া ধমক দিয়ে বলে

” আরে আপু তোমার গায়ে লাগলো কেনো বুঝলাম না

“আমার গায়ে লাগবে কেনো?
” সেটাই তো

“সায়ান তোমার বউকে বলো তো চুপ থাকতে

” আমি ততক্ষণ চুপ থাকবো না যতখন না ওই লোক দুটো ধরা না পরবে

বিরবির করে বলে তুলি। তুলি নিজের রুমে চলে যায়।
“মায়া আমাকে একটু হেল্প করবে

” কি রকম

“আমি তুলিকে প্রপোজ করবো। বাট কিভাবে সব শুরু করবো ভেবে পাচ্ছি না

মায়া মুখটা ছোট করে বলে

” ওহহ

“ওহহ কি। একটু বলো না। কাল তুলির বার্থডে কাল কেই প্রপোজ করতে চায় আমি

” আমি তোমাকে কি হেল্প করবো

“ভাবছি ছাঁদে প্রপোজ করবো। তো ছাঁদটা কিভাবে সাজাবো এই বিষয়ে একটু হেল্প করো

” ঠিক আছে

“ধন্যবাদ

সায়ান রুমে চলে যায়। মায়া কাউকে ফোন করে

” কাল কেই যা করার করতে হবে। কাল সায়ান তুলিকে প্রপোজ করবে। আমি কেনেভাবেই সায়ান আর তুলিকে এক হতে দেবো না। তুমি কাল বাড়ির পেছনে ওয়েট করবে। কোনো ভুল যেনো না হয়

রুমে বসে তুলি ফোনে গেমস খেলছে তখন সায়ান হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে আসে

“কাল তুই এটা পরিস

” কেনো?

“আমি বললাম তাই

” পারতে পারি একটা শর্তে

“কি

” আমাকে তুমি করে বলতে হবে

“বলতে পারি তবে একটা শর্তে

” কিি

“আমাকে তুমি করে বলতে হবে

সায়ান আর তুলি এক সাথে হেসে ফেলে।

” এইটুকুনি একটা পিচ্চি মেয়ে তাকে তুমি বলতে হবে

“এতো বড় একটা ছেলে তাকে তুমি বলতে হবে

” আবার মুখে মুখে তর্ক করছিস

“হুমমম

” দেবো একটা

“কিস না কি?

” থাপ্পড়

“হুরর

” হপপ

“চুপ

” ধুর

“কথায় বলবো না আপনার সাথে

” কানটাএকটু রেস্ট পাবে

“কি বললেন ?

” কি বললাম

“হনুমান

” আমার পিচ্চি বউ

তুলি সায়ানের কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়ে। সায়ান তুলির মাথায় হাত বুলায়

“জানিস প্রথমে তোকে দেখলেই রাগ হতো আর এখন না দেখলে রাগ হয়

” সেম টু ইউ। তবে আপনি আমার ওপর অনেক টর্চার করছেন

“সরি

” খুব কষ্ট দিছেন। ছোটবেলা থেকে অনেক কষ্ট পেয়েছি। এখন একটু সুখে থাকতে চাই। ভালো থাকতে চায়

“আমি আর কখনো তোকে কষ্ট দেবো না প্রমিজ

” ধন্যবাদ।

“কাল কিন্তু সন্ধায় রেডি থাকিস

” কোথায় যাবো

“সারপ্রাইজ আছে

” ঠিক আছে

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here