ভালোবাসি,পর্বঃ২,৩
Tanisha Sultana (writer)
পর্বঃ২
“চিটাগং
” তুমি কোথাও যাবে না৷ আর যদি যাও তাহলে তুলিকে নিয়ে যাও (সায়ানের বাবা)
“আমি যাবো না
তুলি ফট করে বলে ফেলে বলে
” তোকে আমি নিলে তো যাবি
“আমি গেলে তো আপনি নিবেন আমায়
” আমার মুখের ওপর কথা বলিস এতো সাহস পাস কই
“চুপ করো তোমরা। সায়ান তুলি তোমার স্ত্রী। তো ওর দায়িত্ব তোমার। তো তুমি যদি কোথাও যাও তো তুলিকে নিয়ে যাবে। আর না নিলে তোমারও যাওয়া হবে না।
সায়ানের বাবা চলে। সায়ান কটমট করে তুলির দিকে তাকায়। তুলি সায়ানকে ভেংচি কেটে চলে যায়।
তুলি স্কুল ড্রেস পরে কাঁধে স্কুল ব্যাগ দুই বিনুনি করে বের হয়। তুলির দাদু আরমান খান তুলিকে ডাকে
” দাদু ডেকেছো
“হুম। আজ স্কুলে যেতে হবে না
” কিন্তু দাদু
“যাও। শাড়ি পরে সুন্দর করে সাজুগুজু করো একটু পরেই মেহমান চলে আসবে
তুলি আর কি করবে। অসহায় মুখ করে রুমে চলে আসে। তুলির রুমে রুহি আসে
” তুলি তোমার শাড়ি গহনা। চলো আমি তোমাকে হেল্প করি
“আপু এসব শাড়ি গহনা আমার ভালো লাগে না। আচ্ছা একটা গাউন পরি
” তুলি তোমাকে এটাই পরতে হবে
রুহি তুলিকে শাড়ি পরিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে দেয়। সারাদিন তুলিকে সারা দুনিয়ায় সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। রাত দশটাই তুলিকে ছাড়া হয়। তুলি রুমে এসে হাফ ছেড়ে বাঁচে
“আল্লাহ গোটা দুনিয়ায় আর বোধহয় কেউ বাকি নেই। সবাই আজ আমাকে চিনে গেলো সায়ান খানের বউ তুলি খান।
তখন সায়ান রুমে আসে।তুলির দিকে একটু তাকিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। তুলি সায়ানের চলে যাওয়া দেখে আলমারির কাছে চলে যায়
” ওই একদম আমার শার্ট পরবি না
তুলি আলমারি খুলতে গিয়েছিলো সায়ানের কথায় পেছনে তাকায়
“আপনার কেনো মনে হয় আমি প্রতিদিনই আপনার শার্ট পরবো?
” মনে হওয়ার কিছু নেই তুই এখনই আলমারি খুলে আমার শার্ট নিতে গেছিলি
“ওভার স্মার্ট। যতসব
তুলি সায়ানকে পাত্তা না দিয়ে আলমারি খুলে তুলির টিশার্ট আর স্কাট নেয়। তারপর সায়ানের দিকে দাঁত কেলিয়ে তাকিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। সায়ান একটা বালিশ নিয়ে বেলকনিতে চলে যায়।
পরেরদিন তুলি স্কুলে যায়। ক্লাস রুমে বসে আছে এখনো স্যার আসে নি। তুলির বেষ্টফ্রেন্ড তমা তুলির পাশে বসে
” কি রে তুলি তোর না কি বিয়ে হয়েছে?
“হ রে
” তুই আমাকে একবারো বললি না। কেমন বেষ্টু তুই আমার
“সরি বাবু আসলে আমার বিয়ে হবে এটা আমিও জানতাম না
” ঠিক আছে। এবার বল তোর বর কেমন
“বুরো, গোমরা মুখো
” কিহহহহহহ
“হুম। আমার থেকে গুনে গুনে তেরো বছরের বড়। আর জানিস সারাক্ষণ আমাকে বকে আর মুখটাকে কাকের মতো করে রাখে। আস্ত একটা পেঁচা
তমা হাসতে হাসতে শেষ। তুলির রাগ হয়
” আমি তোর কাছে আমার কষ্ট শেয়ার করছি আর তুই হাসছিস। যাহ কথায় বলবো না
তমা কোনোরকম হাসিটা চেপে বলে
“সরি বেবি। আর হাসবো না
তখন স্যার চলে আসে।
সবগুলো ক্লাস শেষ করে বাসায় ফেরে তুলি। নিজের রুমে এসে না দেখেই ব্যাগ ছুরে ফেলে বেডে। খাটে সায়ান শুয়ে ছিলো। ব্যাগটা সায়ানের ওপর পরে আর সায়ান লাফ দিয়ে ওঠে
” ওই পাগল
সায়ানের চিৎকারে তুলি হকচকিয়ে সায়ানের দিকে তাকায়
“চোখে দেখোস না? কানা না কি তুই
” আআআমি খখখেয়াল করি নননি
তুতলিয়ে বলে তুই। সায়ান তুলির ব্যাগটা ফেলে দিয়ে বলে
“তুই কখনো খেয়াল করোস? আমার তো মনে হয় খেয়াল শব্দটাই তোর মধ্যে নেই। পাগল তুই
” তাহলে এই পাগলকে কেনো বিয়ে করলেন?
“মন থেকে করি নি। জোর করা হয়েছে
” হ্যাঁ তাই তো। আপনার এই রকম গোমড়া মুখো চেহারা দেখে আপনার পালিয়ে যাওয়া বউ পালিয়েছে।
তুলির কথায় সায়ান থেমে যায়। আর কোনো কথা না বলে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। তুলি সেদিকে পাওা না দিয়ে ফ্রেশ হতে যায়।
বিকেলে তুলির মা তুলির জামাকাপড় গোছাচ্ছে আর কাঁদছে। তুলি বেপারটা বুঝতে পারছে না। খাটের এক কোনে বসে নখ কামরাচ্ছে।
“ও মা কি হয়েছে? কখন থেকে জানতে চাইছি। আমরা কি এবাড়ি থেকে চলে যাচ্ছি?
” আমরা না তুই যাচ্ছিস
“কিন্তু কোথায়?
” সায়ানের সাথে
“কিহহহহহহহ
তুলি মাকে জড়িয়ে ধরে বলে
” মা আমি যাবো না প্লিজ। তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না
তুলির মা তুলির মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়
“তোকে থাকতে হবে মা
” আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে
নিচে থেকে চিৎকার করে বলে সায়ান। তুলির মা তুলিকে রেডি করিয়ে দেয়। বাড়ির সবার থেকে বিদায় নিয়ে ওরা চলে যায়।
সায়ান ডাইভ করছে। তুলি মেঘলা আকাশের মতো মুখ করে বসে আছে। সায়ানের ফোনে ফোন আসে। সায়ান রিসিভ করে
“হেলো
” সায়ান কেমন আছো?
মেয়েটার কন্ঠ শুনে সায়ান একবার তুলির দিকে তাকায়
“মায়া তুমি। কেনো করলে এমন আর এখন কেনোই বা ফোন করেছো? বেঁচে আছি কি না জানতে
” সায়ান সরি। আমি ইচ্ছে করে করিনি কিছু
“তোমার কোনো কথা শুনবো না। বাই আর কখনো ফোন দেবে না
সায়ান ফোনটা আছার মেরে দেয়। তুলি ভয়ে কেঁপে ওঠে। সায়ান ফুল স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে। তুলি ভয়ে শেষ। না জানি কখন এক্সিডেন্ট হয়ে যায়। তুলি কিছু বলারও সাহস পাচ্ছে না।কিছু বললেই ধমক দেবে। তাই বসে বসে দোয়া পরছে।
হঠাৎ করে সায়ানের গাড়িটা একটা গাছের সাথে বারি খায়। তুলি মাথায় আঘাত পায়। মাথা কেটে যায়। সায়ানও একটু ব্যাথা পায়। তুলি রাগে গিজগিজ করে বলে
” আপনি মানুষ? আপনার পারসোনাল লাইফের পবলেমের জন্য আমাকে কেনো এভাবে হেনস্তা করছেন? আমার বাবা নেই বলে? আমার পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই বলে? খুব খারাপ আপনি
তুলি গাড়ির দরজা খুলে বেরিয়ে যায়। রাস্তার পাশে বসে কাঁদতে থাকে। সায়ান গাড়িতেই বসে আছে। তুলির বলা কথা গুলো ভাবছে
তুলি দুই হাটুর মাঝে মুখ লুকিয়ে কাঁদছে
“তুলি বাসায় চল
সায়ানের দিকে তাকায় তুলি। সায়ান আগে আগে হেঁটে যাচ্ছে। তুলি যাচ্ছে কি না সেদিকে তার খেয়াল নেই। তুলি উঠে সায়ানের পেছনে যায়। ওরা একতলা একটা বাড়িতে যায়। বাড়িটা অপূর্ব সুন্দর। বাড়িটার সামনে দশতালা একটা বিল্ডিং।
সায়ান বাড়িতে ঢুকে একটা রুমে গিয়ে ধপ করে দরজা আটকে দেয়। তুলি অন্য একটা রুমে যায়। মাথা থেকে রক্ত ঝরতে। তুলি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ওড়না দিয়ে রক্ত মুছে নেয়। তারপর ড্রেস চেন্জ করে রান্না ঘরের দিকে যায়।
চলবে
ভালোবাসি
পর্বঃ৩
Tanisha Sultana (Writer)
রান্না ঘরে অনেক খুঁজেই কোনো খাবার পায় না তুলি। শুধু নুডলসের প্যাকেট আছে। ফ্রিজ খুলে দেখে সেখানে মাছ মাংস ডিম সব আছে। তুলি এবার নুডলস রান্না করবে।
তুলি শুধু তুলির জন্য নুডলস রান্না করে সোফায় বসে টিভি অন করে টিভি দেখছে আর নুডলস খাচ্ছে। সায়ান রুম থেকে বেরিয়ে দেখে তুলি পায়ের ওপর পা রেখে নুডলস খাচ্ছে। সায়ান তুলির দিকে একটু তাকিয়ে রান্না ঘরে চলে যায়। সায়ানও নুডলস রান্না করে খায়।
তুলি ঘুমানোর জন্য একটা রুমে যায়। সায়ানের পাশের রুম। কিন্তু ওখানে একা থাকতে তুলির ভয় করছে তাই বালিশ নিয়ে সায়ানের রুমে চলে যায়। তুলি দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে একটু উঁকি দেয় দেখে রুমে কেউ নেই। তুলি চোরের মতো পা টিপে টিপে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরে। সায়ান বেলকনি থেকে রুমে এসে দেখে তুলি চাদর মুরি দিয়ে শুয়ে আছে। সায়ান একটান দিয়ে চাদর সরিয়ে ফেলে। তুলি ধরফরিয়ে উঠে বসে। সায়ান রাগী সুরে বলে
“তুই এখানে কেনো?
” আআআমার ওওওই রুমে ভভভয় করছে
তুতলিয়ে বলে তুলি
“আমার বাড়িতে ভুত নেই তাই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ঠিক আছে তুই এই রুমে থাক আমি ওই রুমে যাই
সায়ান বালিশ নিয়ে যেতে নেয় তুলি দৌড়ে সায়ানের সামনে যায়
” What
আমি আপনার সাথে ঘুমাবো
মাথা নিচু করে বলে তুলি
“আমি তোর সাথে ঘুমাবো না
” এমন করেন কেনো? আমি তো আপনার বোন। আপন না হই চাচাতো বোন।
“তো
” তো আমার প্রতি আপনার একটা দায়িত্ব আছে। আমি যদি আপনার আপন ছোট বোন হতাম তাহলে কি এমন করতে পারতেন ভাইয়া
সায়ান এবার কি বলবে বুঝতে পারছে না। তুলির কথায় অসম্ভব রাগ হচ্ছে। চিৎকার করে বলে
“সামনে থেকে সর
তুলি ভয় পেয়ে সরে যায়। রুমের লাইট জ্বালিয়ে শুয়ে পরে তুলি। সায়ান অন্য রুমে চলে যায়। চাদর মুরি দিয়ে ভয়ে ভয়ে তুলি ঘুমিয়ে পরে।
সকালে সায়ান রান্না করছে। তুলিকে চিটাগং এর একটা স্কুলে ভর্তি করানো হয়েছে। তুলি স্কুলে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে। চুল গুলো ঝুটি করে স্কুল ড্রেস পরে তুলি রান্না ঘরে যায়। সায়ান এক দৃষ্টিতে তুলির দিকে তাকিয়ে আছে।
আসলে সায়ান কখনো তুলিকে ভালো করে দেখেই নি। তুলির যখন চার বছর বয়স তখন সায়ান বিদেশ চলে যায়। আর বিদেশ থেকে ফেরার পরে বিয়ে নিয়ে বিজি হয়ে যায়
তুলি সায়ানের সামনে তুরি বাজায়
” হেলো ভাইয়া আপনি আমার দিকে নজর দিচ্ছেন কেনো?
তুলির কথায় সায়ান হকচকিয়ে যায়।
“ফালতু কথা বাদ দে
” ফালতু কথা কি সত্যি কথাই তো বললাম।
“তোর কাছে কেউ জানতে চায় নাই যে তুই সত্যি বলেছিস না কি মিথ্যে বলেছিস। এবার খাবারটা খেয়ে আমাকে উদ্ধার কর আর স্কুলে চলে যা
তুলি মুখ বেঁকিয়ে খাবারটা নিয়ে টেবিলে চলে যায়। খাবার খেয়ে স্কুল ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে সায়ানের রুমে উঁকি দেয়। সায়ান অফিসের জন্য তৈরি হচ্ছে।
” ভাইয়া
“কি চায়?
” বলছিলাম কি তোমার গাড়িতে করে আমাকে একটু স্কুলে ডপ করে দেবে
সায়ান চোখ ছোট ছোট করে তুলির দিকে তাকায়
“খুব শক না আমার সাথে স্কুলে যাওয়ার
” নাহহহ। বাট আজ ফাস্ট ডে তো একা একা নার্ভাস লাগছে সো
“সরি আমার সময় নেই। আর নেক্সট টাইম আমার থেকে কোনো হেল্প চাইবি না। আমি তোকে কোনো হেল্প করবো না। নিজের লড়াই নিজে করতে শেখ
তুলির খুব খারাপ লাগে। এই মানুষটা এমন কেনো? মানুষের খারাপ সময়ে পিছু টানে।
তুলি হাটতে হাটতে স্কুলে যাচ্ছে। বাসার কাছেই স্কুল তাই হেটে যাচ্ছে। তুলির ফোন নেই তাই ভেবেছিলো সায়ানকে বলবে একটা ফোন কিনে দিতে কিন্তু ওনার যা মেজাজ। থাক বাবা আমি একাই ফোন কিনবো। টাকা তো আছেই।
এসব ভাবতে ভাবতে তুলি স্কুলে চলে আসে। কিন্তু এখন হয়েছে আরেক জ্বালা। তুলির ক্লাস কোনটা তুলি জানে না। এখন কি করবে।
স্কুলের মাথে দাঁড়িয়ে ভাবছে কোনটা নাইনের ক্লাস। কি এতো এতো ক্লাস রুমের মধ্যে খুঁজে পাচ্ছে না
” এনি পবলেম
কোনো একটার ছেলের কন্ঠ পেয়ে ছেলেটার দিকে তাকায় তুলি। একগাল হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সুদর্শন একটা যুবক। দেখতে মাশাল্লাহ। তুলি তাকিয়ে আছে
“আই নো আমি খুব স্মার্ট তাই বলে এইভাবে তাকিয়ে থাকবে
তুলি হকচকিয়ে চোখ সরিয়ে নেয়। তারপর আমতাআমতা করে বলে
“আমি এই স্কুলে নতুন। তো আমি আমার ক্লাস রুমটা খুঁজে পাচ্ছি না।
” ওহহ এই বেপার। তো কোন ক্লাসে পড়ো
“ক্লাস নাইন
” আমার সাথে এসো
তুলি ছেলেটার পিছনে যায়। দুইতলার তিন নম্বর রুমের সামনে এসে ছেলেটা দারায়।
“এইটা তোমার ক্লাস রুম
” ধন্যবাদ
“নাম কি তোমার?
” তাইবা তাজনিন তুলি
“নাইস নেম। আমি রাফসান রিক। ক্লাসে যাও
” হুম
তুলি ক্লাস রুমে গিছে দ্বিতীয় ছিটে গিয়ে বসে। তুলির পাশে একটা মেয়ে বসেছে।
“হাই। তুমি কি নিউ
” হ্যাঁ। আজই ফাস্টডে
“ওহহহ। আমি প্রভা। তোমার নাম
” তুলি। তাইবা তাজনিন তুলি
মেয়েটার সাথে তুলির ফ্রেন্ডশীপ হয়ে যায়। ফাস্ট বেলে একটা টিচার আসে। ভালোভাবেই ক্লাসটা শেষ হয়। সেকেন্ড ক্লাসে যে স্যারটা আসে তাকে দেখে তুলি হা। সবাই বসে পরেছে তুলি দাঁড়িয়ে আছে
“মিছ তুলি আপনাকে কি বসার জন্য নেমন্তন্ন করতে হবে
রিকের কথায় তুলি ঠাস করে বসে পরে। ক্লাসের সব ছেলেমেয়েরা হাসতে থাকে। রিক ধমক দেয়। রিক তুলিদের ইংলিশ টিচার।
ক্লাস শেষে তুলি আর প্রভা কথা বলতে বলতে বাইরে আসছে
” তুলি আমার এখন ইংলিশ কোচিং আছে রে।
“আমারও ইংলিশ কোচিং করতে হবে
” তাহলে তো ভালোই হলো তুই আর আমি একসাথে কোচিং করতে পারবো
“স্যারের সাথে কথা বলতে হবে তো
” চল এখুনি বলি
“এখন
” হুম চল
তুলি আর প্রভা রিকের অফিস রুমে চলে যায়
“মে আই কাম ইন স্যার
রিক ফোনের দিকে তাকিয়েই বলে
” ইয়েস কাম
তুলি আর প্রভা ভেতরে ঢুকে
“স্যার তুলি আপনার কাছে ইংলিশ পারত চায়
রিক তুলির দিকে তাকায়। হাসিমুখে বলে
” ঠিক আছে।
কোচিং শেষে বাসায় চলে আসে তুলি। খুব খিদে পেয়েছে সেই সকালে খেয়েছে এখন পাঁচটা বাজে। খাবার টেবিলের সামনে গিয়ে দেখে ডাল ভাত আর মাছ রান্না করা। তুলি ফ্রেশ না হয়েই খেতে বসে।
রাত দশটাই সায়ান বাসায় ফেরে। বাসায় ফিরে তুলির রুমে নক না করেই ঢুকে। তুলি ড্রেস চেঞ্জ করছিলো। সায়ান ওভাবে ঢুকে পরায় দুজনই মুখোমুখি হয়।
সায়ান তুলিকে দেখে ঘুরে দাঁড়ায়। তুলি তারাহুরো করে ড্রেস পরে
“আপনি নক না করেই আমার রুমে কেনো ঢুকেছেন?
সায়ান তুলির হাত ধরে তুলিকে কাছে এনে শান্ত গলায় বলে
” তুই দরজা লক না করে ড্রেস চেঞ্জ কেনো করছিলি? যদি কেউ চলে আসতো
“যদি কেউ আসতো মানে কি এসেছে তো। নেক্সট টাইম আর কখনো নক না করে ঢুকবেন না
সায়ান কিছু না বলে তুলির দিকে তাকিয়ে আছে। তুলি ভয় পেয়ে যায়
” এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো? আর আমাকে ছাড়ুন
সায়ান তুলিকে ছেড়ে দেয়। খেতে আয়
“আমি খেয়েছি
সায়ান ভেবেছিলো তুলি খায় নাই। সায়ান কিছু না বলে চলে যায়। তুলি একটু বই পরে শুয়ে পরে।
আজ ফ্রাইডে স্কুল বন্ধ কিন্তু কোচিং আছে। দশটাই কোচিং। তুলি জিন্স টপ পরে চুলগুলো ঝুটি করে চোখে কাজল ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক নিয়ে যাওয়ার জন্য পা বারায়। তখন সায়ান ডাকে
” কোথায় যাচ্ছিস?
“কোচিং আছে
” কাল স্কুলে গেলি আর কোচিং ও ঠিক করে ফেললি
“ইয়া কজ তাইবা তাজনিন তুলি সব কিছুতেই ফাস্ট।
” ভেরি গুড। ওড়না নিয়ে যা
“মানে
” মানে বড় হয়ে গেছিস। এখন ওড়না ছাড়া ঘুরে বেড়াতে লজ্জা করে না
“লজ্জার কি আছে। এটা ফ্যাশন
” আমার বাড়িতে এসব ফ্যাশন চলবে না। ওরনা ছাড়া যাওয়া যাবে না
“এই ড্রেসের সাথে ওড়না নিলে একদম পাক্কা গাইয়া লাগবে
” চুপ। সায়ান জোরে একটা ধমক দেয়। তুলি ভয় পেয়ে যায়। সায়ান তুলি ড্রেসের সাথে মেচিং করে একটা ওড়না এনে দেয়। তুলি সায়ানকে মনে মনে হাজারটা গালি দিতে দিতে বেরিয়ে যায়।
চলবে