ভালোবাসি,১৯ অন্তিম পর্ব
Tanisha Sultana (Writer)
সায়ান তুলিকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেছে। ডাক্তার তুলিকে একদম সাবধানে থাকতে বলেছে। সায়ানকে তুলির খেয়াল রাখতে বলেছে।
সায়ান তুলিকে নিয়ে বাড়িতে আসে। তুমি খাটে বসে আছে সায়ান ফ্রেশ হয়ে তুলির পাশে বসে আর তুলি বমি করে দেয় সায়ানের ওপর।
সায়ান বমি পরিষ্কার করে আবার চেঞ্জ করে তুলির পাশে বসে
“সরি
” কেনো?
“এতো কষ্ট করতে হচ্ছে আমার জন্য
” তোর জন্য কিচ্ছু করছি না
“তাহলে
” আমার প্রিন্সেসের জন্য করছি
“ও আসতে না আসতে আমার চেয়ে ও কে বেশি ভালোবাসা শুরু করে দিছো
” কোথাও পোরা পোরা গন্ধ পাচ্ছি
তুলি একটু হেসে বলে
“আমি কিন্তু হিংসা করছি না
” প্রশ্নই ওঠে না। আমার বুকের বা পাশে তুই আর ডান পাশে আমার বেবি
“যদি আমি মরে যায়
” খুব খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু তুলি। এ রকম কিছু আর বলবি না
“রেগে যাচ্ছো কেনো?
” রাগার মতো কথা বলছিস কেনো?
“ঠিক আছে আর বলবো না। লাভ ইউ
” টু
“কি টু
” ওই তো
“কি ওই তো
” লাভ ইউ টু
“হাগ করো আমাকে
” কি
“জড়িয়ে ধরো
সায়ান তুলির নাক টেনে জড়িয়ে ধরে।
বাড়ির সবার কাজ বন্ধ। সবাই তুলিকে নিয়ে ব্যস্ত। সায়ান তো দুই মিনিটের জন্যও তুলিকে চোখের আড়াল করে না। সারাক্ষণ ছায়ার মতো পাশে থাকে।
তুলির প্রেগ্ন্যাসির নয় মাস চলছে। পেটটা উঁচু হয়ে গেছে। পেটের জন্য নিচের দিকে তাকাতে পারে না। চোখের নিচে কালি পরে গেছে। মুখটা ফুলে গেছে। একা একা হাটতে পারে না।
সায়ানের বুকে মাথা রেখে তুলি শুয়ে আছে। সায়ান ফোন টিপছে
” সায়ান
“বলো
” আমি তোমাকে জীবন সঙ্গী হিসেবে পেয়ে ধন্য
“আমিও
” আমার যদি অন্য কারো সাথে বিয়ে হতো৷ তার সাথে হয়ত বয়সের এতোটা ডিফারেন্স থাকতো না তবে সে কখনো আমার এতো কেয়ার করতো না। আমাকো এতো ভালো বুঝতো না।
“তাই
প্রথমে আপনাকে মেনে নিতে পারছিলাম না। কিন্তু এখন আমার মনে হয় আমার জন্য আপনি পারফেক্ট।
” হুম। আল্লাহ আমার জন্য তোকে বানিয়েছে।
সায়ান তুলির মাথায় কিছ করে।
“তুলি সরি
” কেনো
“তোর বয়সি মেয়েরা এখন কলেজে যাচ্ছে। কতো ইনজয় করছে আর তুই
” আমিও তো ইনজয় করছি মা হওয়ার আনন্দটা।
“তোর তো এখনো সময় হয় নি
” হয়েছে। আর হয়েছে বলেই কিন্তু আমি মা হতে যাচ্ছি।
আহ
তুলি কি হয়েছে?
“বেবি কিক মেরেছে
” সত্যি
“হুম দেখো
তুলি সায়ানের হাতটা পেটে ধরে। সায়ান আর তুলি একসাথে হেসে ফেলে।
” আহহহহহ
“আবার কিক মেরেছে
” ব্যাথা করছে। প্রচন্ড
সায়ানের হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। চিৎকার করে বাড়ির সবাইকে ডাকে। সবাই আসে। তুলি ব্যাথায় চিৎকার করে কান্না করছে। সায়ান তুলিকে কোলে নিয়ে দৌড়ে গাড়িতে ওঠে। সায়ানের বাবা ডাইভ করছে। সায়ান তুলির মা তুলিকে ধরে রেখেছে।
হাসপাতালের করিডোরে পায়চারি করছে আর কান্না করছে সায়ান৷ তুলির মা সায়ানের মা দাদু সবাই বসে কান্না করছে। সায়ানের বাবা সায়ানের কাঁধে হাত রাখে
“আল্লাহকে ডাকো। তিনি সব ঠিক করে দেবে। তোমার তুলির কিছু হবে না
ভেতর থেকে পিচ্চির কান্নার আওয়াজ আসে। মুহূর্তেই সবার মুখে হাসি ফুটে ওঠে। সায়ান মুখটা ভার করে আছে। তুলিকে না দেখা ওবদি সায়ানের মন শান্ত হচ্ছে না।
একটা নার্স কাথা দিয়ে মুরিয়ে ছোট্ট একটা পরিকে ওদের সামনে নিয়ে আসে। সায়ানের বাবা প্রথমে বেবিটাকে কোলে নেয়। সায়ান কেবিনের ভেতরে ঢুকে পরে। হাতে স্যালাইন দিয়ে শুয়ে আছে তুলি। সায়ান তুলির পাশে বসে কপালে চুমু দেয়।
” আমার বেবি কোথায়? আমি তো এখনো ও কে দেখলামই না
“আমি নিয়ে আসছি
সায়ান সায়ানের মায়ের কোল থেকে বেবিটাকে কোলে নেয়। তারপর তুলির পাশে শুয়িয়ে দেয়
” নে দেখ
“হুম আমি তো একাই দেখবো। আর কেউ তো ও কে ভালোবাসে না
“আমাকে না রাগালে তোর ভালো লাগে না তাই না।
” রাগাবোই তো এতো বড় একটা গিফট দিলাম এখনো ভালোবাসি বলো নি
ভালোবাসি প্রচুর
সায়ান তুলি আর বেবিকো জড়িয়ে ধরে।
আমার জীবন তোরা। তোদেরকে আকাশ সমান ভালোবাসি। জীবন ফুরিয়ে যাবে কিন্তু আমার ভালোবাসা ফুরোবে না।
সমাপ্ত