#ভালোবাসি তাই
#পর্বঃ১২,১৩
#Tanisha Sultana
পর্বঃ১২
রাত বারোটা বেজে আঠারো মিনিট। গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। চারপাশটা শুনশান। বৃষ্টির শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দ শোনা যাচ্ছে না৷ বেলকনির রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে তানহার রুমের দিকে তাকিয়ে জোরে শ্বাস নিচ্ছে অভি। এতোখন বিছানার বমি পরিষ্কার করেছে। তখন রুমে এসে দেখে তানহা বমি করে বিছানা ভাসিয়ে দিয়েছে। তানহার পুরো শরীরেও বমি লেগে গেছিলো। আশিকের সাহায্যে তানহাকে তানহার বাসায় নিয়ে। তানহার ড্রেস অভি পাল্টে দিয়েছে। সেই দৃশ্য মনে পড়তেই অভি চোখ বন্ধ করে। মনের মধ্যে কেমন কেমন করছে। এই মেয়েটা একটু বেশিই দুর্বল করে দিচ্ছে অভিকে। মাথা চেপে ধরে অভি।মাথায় হাজারো আজেবাজে চিন্তা ঘুরছে। ছুটে চলে যেতে ইচ্ছে করছে তানহার কাছে।
বাসায় এসে একা একা বমি পরিষ্কার করেছে।
তানহার রুমে আলো জ্বলছে। অভি ইচ্ছে করেই আলো জ্বালিয়ে রেখে এসেছে আর জানালা খুলে রেখে এসেছে। যাতে ও এখান থেকে তানহাকে দেখতে পারে। একটু বেশিই বাচ্চামি করে তানহা।বেলকনিতে থাকা সিঙ্গেল সোফায় শুয়ে পড়ে অভি।
???
সকাল আটটায় তানহার ঘুম ভাঙে। মাথা ভাড়ি অনুভব করে। কোনোরকম টেনেটুনে চোখ খুলে উঠে বসে। ঘড়ির দিকে তাকাতেই ঘুম উধাও হয়ে যায়। আজ ভার্সিটিতে প্রথম দিন। একদম লেট করা যাবে না। তরিঘরি করে উঠে ফ্রেশ হয়। কাল থেকে ভাত পেটে পরে নি। তাই চাল নিয়ে কিচেনে চলে যায়। ভাত চাপিয়ে দিয়ে আলু কুচিকুচি করে কেঁটে নেয়। আলু ভাজি আর ভাত। ভাত আলু ভাজি রান্না শেষ করে ঘেমে নেয়ে ড্রেস ঠিক করে ওয়াশরুমে চলে যায়। তরিঘরি করে গোছলটা সেরে পরনের ড্রেসটার দিকে তাকিয়ে চমকে ওঠে তানহা। এরা তো ও পড়ে ছিলো না? তাহলে? কাল রাতে অভির রুমে থেকে মদের বোতল থেকে মদ খেয়েছিলো তারপর কিছু মনে নেই। তাহলে কি অভি কি……
তানহা চমকে ওঠে। হা পা কাঁপছে। কিন্তু অভি তো এমন না তাহলে? এসব চিন্তা ভাবনা করে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আবার ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে চেঞ্জ করে নেয়। সব চিন্তা এক পাশে রেখে খেতে বসে। খেতে খেতে দশটা বেজে যায়। চুলটা আঁচড়িয়ে ঠোঁট হালকা গোলাপি লিপস্টিক আর চোখে কাজল। ব্যাস তানহার সাজ কম্পিলিট। গলায় ওড়না ঝুলিয়ে জিন্সটকে একটু উঁচু করে কাঁধে লেডিস ব্যাগ ঝুলিয়ে দরজা তালা দিয়ে বেরিয়ে পড়ে।
বাসা থেকে বেরিয়ে দেখে সেদিনকার মতো অভি বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তানহা অভিকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। অভির সাথে আর মিশবে না তানহা। দুরে দুরে থাকবে। লোকটাকে সুবিধার মনে হয় না তানহার।
“হেই
অভি ডাকে। তানহা বুঝতে পেরেও তাকায় না। এক মনে হেঁটে যায়। অভি একটু জোরে হেঁটে তানহার কাছে যায়।
” পবলেম কি তোমার? ডাকছি না আমি?
হাত ধরে থামিয়ে রেগে বলে অভি।
“আপনি ডাকলেই আমাকে থামতে হবে? কপালে ভাজ ফেলে বলে তানহা।
” বাইকে ওঠো। চোখ বন্ধ করে শ্বাস নিয়ে বলে অভি।
“আমি চিনি ভার্সিটি। আর নিজের মতো করে চলতে চায় আমি। বাবা আই মিন তুহিন রহমান কথা দিয়েছি কারো সাহায্য ছাড়াই চলবো আমি।
এক টানা কথা গুলো বলে অভির হাতটা ছাড়িয়ে নেয়।
” একটু বেশিই পকরপকর করো তুমি। চুপ করে থাকতে পারো না? আমাকে বিরক্ত না করলে পেটের ভাত হজম হয় না?
“বিরক্ত করি বলেই তো দুরে দুরে থাকছি৷ আর বিরক্ত করবো না। আসছি
বলেই তানহা চলে যায়।
” খুব বার বেড়েছে তোমার। ডানাটা খুব তাড়াতাড়ি ছেটে দেবো আমি
হাত মুষ্টি বদ্ধ করে দাঁতে দাঁত চেপে বলে অভি।
তানহা রিকসা করে ভার্সিটিতে চলে আসে। ইয়া বড় ভার্সিটি। ভার্সিটির ডান পাশে আর বা পাশে দুটো পুকুর। পুকুর পাড়ে মেহগনি গাছের জড়গুলো খুব চওড়া। একদম ব্রেঞ্চের মতো (ঢাকা ভার্সিটি কেমন এটা আমি জানি না তাই আমার কলেজের বিবরণ দিয়ে দিলাম) চারটা ব্লিডিং কলেজটায়। এখন তানহার কলেজ কোনটা তানহা বুঝতে পারছে না।
ভার্সিটির গেট দিয়ে ঢোকার সময় দেখতে পায় তিনটা মেয়ে আর দুইটা ছেলে হাসাহাসি করছে। তানহাকে দেখে ওরা থেমে যায়।
মনে হয় নতুন (ওদের মধ্য থেকে একটা মেয়ে বলে)
“তাহলে চল একটু কথা বলে আসি ( একটা ছেলে)
” কিন্তু অভি তো আসলো না
“কিছু বলবে না অভি চল
ওরা সবাই তানহার সামনে যায়। তানহা ওদের দেখে দাঁত কেলিয়ে বলে
” হাই আমি তানহা রহমান। এই ভার্সিটিতে নতুন। আপনার নিশ্চয় সিনিয়র? এখন আমাকে রেগিং করতে এসেছেন? কি করতে হবে বলুন? কাল ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে? কাউকে প্রপোজ করতে হবে? সিগারেট খেতে হবে? না কি অন্য কিছু? আমি কিন্তু সব কিছুতেই এক্সপার্ট
এক নাগারে কথা গুলে বলে তানহা। ওরা হা করে তাকিয়ে আছে৷ ওদের কিছু বলার সুযোগ ই দিচ্ছে না।
“হেই এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো? বলুন কি করবো? আমার তো আবার ক্লাসে দেরি হয়ে যাচ্ছে।
তখন একটা ছেলে আসে। পরনে হালকা ছাই রংয়ের শার্ট কালো জিন্স কাঁধে ব্যগ ঝোলানো গালে হালকা খোঁচা খোচা দাঁড়ি।
” এখানে কি হচ্ছে?
সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে ছেলেটা। ওই ছেলে মেয়ে গুলো একটু পিছিয়ে যায়। তানহা সবার দিকে একবার চোখ বুলাই। সবাই কেমন চুপসে গেছে।
“তুমি?
তানাকে উদ্দেশ্য করে বলে তানহা।
” হাই আমি তানহা। এই ভার্সিটিতে নতুন। ওনাদের তাই বলছিলাম।
মিষ্টি করে হেসে বলে তাহনা।
“ওহহহ। আমি রিক। ফাইনাল ইয়ার।
” ভাইয়া আমার ক্লাসটা একটু দেখিয়ে দেবেন প্লিজ
“শিওর
চলো
তানহা বাকিদের দিকে এক নজর তাকিয়ে ইশারায় বাই বলে রিকের সাথে চলে যায়। অভি ভার্সিটিতে ঢুকে তানহাকে রিকের সাথে যেতে দেখে ভীষণ রেগে যায়। ওই ছেলেমেয়ে গুলো অভির কাছে যায়।
” তুই এতো লেট করে এলি
অভি ওদের দিকে এক নজর তাকিয়ে তানহার পিছু নেই।
“তো এখানে কার সাথে থাকছো?
হাঁটতে হাঁটতে জিজ্ঞেস করে রিক।
” একাই থাকি। শান্তি ভিলাতে থাকি।
“আরে ওইটা তো আমাদের বাড়ি। আমি আর আমার পরিবার চার তালাতে থাকি।
” ওহহহ
“কোনো অসুবিধা হলে বইলো।
” ঠিক আছে। এখন একটা হেল্প করতে পারবেন?
তানহা হাঁটা থামিয়ে বলে।
“কিহহহ
” টিউশনি করানো মতো দুই চারটা বাচ্চা জোগাড় করে দিতে পারবেন?
“এ আর কি কাজ। খুব পাড়বো। বিকেলের মধ্যেই মেনেজ করে দেবো
তানহা কৃতজ্ঞতার সাথে ধন্যবাদ দেয়। রিক তানহাকে ক্লাস দেখিয়ে দেয়।
আজ প্রথম দিন তাই নবীন বরণ অনুষ্ঠান হচ্ছে। পুরাতন স্টুডেন্টরা নতুনদের ফুল দিয়ে স্বাগতম জানাচ্ছে। তানহা ভীরের মধ্যে এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে। এদিক সেদিন তাকাচ্ছে এখান থেকে বেরোনোর জন্য। চারপাশে এতো এতো ছেলে। ঘামের গন্ধ আসছে। হঠাৎ অভি তানহার দিকে একটা গোলাপ এগিয়ে দেয়। তানহা ভ্রু কুচকে তাকায়। অভি ইশারা করে ফুলটা নেওয়ার। তানহা নেয়।
” আপনি দিলেন কেনো?
“তাহলে কি রিক দেবে?
দাঁতে দাঁত চেপে বলে অভি।
” দিলে মন্দ হতো না। করলার কাছ থেকে ফুল নিলে ফুল থেকেও করলার স্মেইল আসে। যেটা আমার বোরিং লাগে।
নাকমুখ কুঁচকে বলে তানহা।
অভি তানহার হাত ধরে টেনে রুম থেকে বাইরে নিয়ে আসে। হাত ছেড়ে দিয়ে রেলিং এ হেলান দিয়ে দাঁড়ায়। তানহা ফুলটা অভির দিকে ছুঁড়ে মারে। অভি কেচ ধরে ফেলে।
“এখানে কেনো নিয়ে আসলেন?
কিছুটা রাগ দেখিয়ে বলে তানহা।
” ওখানে ছেলেদের ধাক্কা খেতে তো খুব ভাল্লাগছিলো
পকেট থেকে ফোন বের করে বলে অভি।
“হুমন ভাল্লাগছিলো। তাতে আপনার কি?
অভি তানহার দিকে তাকায়। চোখ দুটো মুহুর্তেই লাল হয়ে গেছে।
” কি বললা আবার বলো
“আমি যা খুশি করি তাতে আপনার কি
কর্কশ গলায় বলে তানহা। অভি দাঁতে দাঁত চিপে। তানহার হাত ধরে টেনে ছাঁদে নিয়ে যায়। ছাঁদের শেষ পান্তে এনে দাঁড় করিয়ে বলে
” আবার বলো কি বললে?
তানহা চুপ করে যায়। অভিকে দেখেই মোটামুটি ভালোই ভয় করছে। এরকম রেগে যাওয়ার কারণ তানহা খুঁজে পাচ্ছে না। বা কারণ জানার কোনো ইচ্ছেও নেই। রাতে অভি তানহার জামা…
এই কথা মনে পড়তেই তানহা রাগ বেড়ে যায়।
“হাত ছাড়ুন তো।
” তখন কি বলছিলা বলো
রাগে গিজগিজ করতে করতে বলে অভি। কপালের রগটা ফুটে উঠেছে।
“আর একবার যদি বলো আমার কি তো এখান থেকে ফেলে দেবো।
হাত ধরে একটু ঝুঁকিয়ে বলে অভি। তানহা ভয়ে অভির জ্যাকেট খামচে ধরে। নিচের দিকে তাকাতেই আত্মা কেঁপে ওঠে। চোখ বন্ধ করে ফেলে তানহা।
” আমার কি? আমারই সব।
“আপনার কিছুই না। একদম আমার লাইফে ইন্টরফেয়র করতে আসবেন না। ইহহহহ আইছে আমার সব। ঢং দেখে বাঁচি না। মনে হয় আমি ওনার বিয়ে করা বউ।
তানহার কথা শেষ হতে না হতেই অভি তানহার হাত ছেড়ে দেয়।
আআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআ
চলবে
#ভালোবাসি তাই
#পর্বঃ১৩
#Tanisha Sultana
অভি কানে হাত দেয়। মনে হচ্ছে কান নষ্ট হয়ে গেছে। তানহা চোখ খুলে দেখে ও ছাঁদের ফ্লোরে বসে আছে। কোমরে আর পায়ে বেশ ভালোই ব্যাথা পেয়েছে।
“স্টুপিট ইডিয়েট। আমার কানটা খেয়ে ফেলছে
কান মালিশ করতে করতে বলে অভি। তানহা দাঁড়াতে গিয়ে আবার আআআআআআআআ করে ওঠে। অভি এক টান দিয়ে তানহাকে দাঁড় করায়।
” উমা গো কোমরটা ভেঙে গেলো গো। এখন আর কেউ আমাকে বিয়ে করবে না। আমি প্রতিবন্ধি হয়ে গেলাম। আল্লাহ আমাকে তুইলা নাও
তানহা কাঁদতে কাঁদতে এসব বকছে। অভি হাত ভাজ করে কপাল কুচকে তাকিয়ে আছে তানহার দিকে।
“এই খাচ্চর ব্যাটা আমার লাইফ টা শেষ করে দিলো৷ কতো স্বপ্ন দেখছিলাম ছোটো ছোট এগারোটা জুনিয়র নেইমার হইবো আমার। তারপর ২০৫০ সালে আমার নেইমাররা ফুটবল খেলে কোপা আমেরিকা, বিশ্ব কাপ আরও যত প্রকার কাপ আছে সব নিয়ে আসবো।
” কিহহহহ
কপালে দুটো ভাজ ভেলে বোঝার চেষ্টা করে বলে অভি। তারপর বুঝতে পেরে কপাল মেলে দেয়। একটু হেসে বলে
“তোমার সিনিয়র নেইমারই পারলো না
তানহা হাত উঠিয়ে বলে
” একদম আজে বাজে কিছু বললে এখান থেকে ফেলে দেবো। আপনার জন্য আমার বিয়ে হবে না। জুনিয়র নেইমাররাও আমার কোলে আসবে না।
নাক টেনে বলে তানহা।
“ঠিক আছে কেউ বিয়ে না করলে আমি বিয়ে করবো নি
বলে সামনে তাকিয়ে দেখে তানহা নাই।
” গেলো কই
আশেপাশে তাকিয়ে দেখে সামনের বিল্ডিং এর ছাড়ে দুই বয়াম আচার রাখা। আমের আচার। তানহা বয়াম দুটো নিয়ে হাত পা মেলে বসে আচার খাচ্ছে। অভি মাথায় হাত দেয়।
“কার আচার খাচ্ছে? এবার হবে কি?
অভি তানহার কাছে যায়।
” না বলে কারো জিনিস খাওয়া ঠিক না জানো না
“হুমম জানি না
বলে খেতে থাকে। অভি একটু দুরে দাঁড়িয়ে তানহার খাওয়া দেখছে।
” লেজ ছাড়া বাঁদর।
চেটে পুটে খেয়ে যেখানে আচার ছিলো বয়াম সেখানে রেখে তানহা এক দৌড়ে বেরিয়ে যায়। অভিও পেছন পেছন যায়। একদম ক্লাসের সামনে এসে তানহা হাঁপাতে থাকে৷
“শুনেন আমি যে ওখান থেকে আচার খাইছি এটা যদি আপনি সবাই কে বলে দেন তাহলে আমিও বলে দিবো
হাঁপাতে হাঁপাতে বলে তানহা।
” কি বলে দিবা?
“বলো দেবো আপনি আমাকে বউ বলে জড়িয়ে ধরছিলেন
বলেই আবার দৌড় দেয়।
” তানহা আস্তে পড়ে যাবা
কে শোনে কার কথা।
দৌড়াতে দৌড়াতে রিকের সাথে ধাক্কা খায়। পায়ে একটু ব্যাথা ছিলো এখন আরও একটু পায়।
“আর ইউ ওকে তানহা
তানহার হাত ধরে বলে রিক।
” হুমম ঠিক আছি
হাত ছাড়িয়ে একটু হেসে বলে তানহা।
“এভাবে দৌড়াচ্ছিলা কেনো?
তানহা রিকের কানের কাছে গিয়ে বলে
” পেছনে বাঘ আছে
“বাঘ
” হুমমম মানুষের মতো বাঘ
“কি বলছো
তানহা অভির কন্ঠ শুনে চমকে ওঠে আবার দৌড় দেয়।
” তুই চিনিস ওকে (রিক)
“খালাতো বোন
বলে অভিও চলে যায়।
গেটের সামনে যেতেই অভি তানহার হাত ধরে ফেলে। বাঁদরের মতো লাফাও কেন?
” আপনি জোকের মতো খালি চিপকান কেন? কথায় কথায় হাত ধরেন আবার কাল রাতে আমার ড্রেস চেঞ্জ
অভি বড়বড় চোখ করে তাকায় তানহার দিকে। তানহা কথাটা বেশ জোরেই বলে। চারপাশের পোলাপানরা ওদের দিকে তাকায়। তানহা দাঁত দিয়ে জিভ কেটে অভিকে টেনে সাইডে নিয়ে যায়।
“ইডিয়েটের মতো কথা বলো কেনো তুমি? মানে তোমাকে সব সময় প্রুফ করতেই হবে তুমি আসলেই ননসেন্স।
” আরে রাখেন আপনার ননসেন্স ইডিয়েট আগে কাজের কথায় আসেন। কাল আমার ড্রেস কেনো চেঞ্জ করিয়েছেন?
অভি বাঁকা হেসে বলে
“তুমিই তো বললা।
” আমি কখন বললাম
অবাক হয়ে বলে তানহা।
“ও মা মনে নেই? ড্রেস চেঞ্জ করাতে বললা তারপর চুমু দিতে বললা।আর অনেক কিছু বলছো যোগুলো আমি এখন বলতে পারবো না। আমার লজ্জা লাগছে।
তানহা হা হয়ে ভাবছে। ও এসব বলছে।
” এক মিনিট
অভি পকেট থেকে ফোনটা বের করে তানহার পানি পানি ড্যান্স দেখায়। তানহা হা হয়ে গেছে
“সারা রাত কতো জ্বালিয়েছো আমায়।
” আপনি আমার সব দেখে ফেল
অভি তানহার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলে
“হুমম দেখলাম। বিউটিফুল
দাঁত কেলিয়ে বলে
“আপনাকে তো আমি
অভির দিকে তেড়ে এসে বলে তানহা।
” কিছুই করবা না। কিন্তু আমি করবো। ভাবছি তোমার এই পানি পানি হোগায়া ডান্সটা আমার ইউটিউব চ্যানেলে ছাড়বো। ফেসবুকেও তোমার ট্যাগ করে দেবো। কেমন হবে?
“এমনটা করবেন না?
কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলে তানহা।
” ঠিক আছে করবো না যদি তুমি আমার কথা শুনো
“কি করতে হবে?
” আমি যা যা বলবো তাই করতে হবে।
“ঠিক আছে করবো।
” গুড গার্ল
“করলা
” তোমারই
“আমারই কি?
” আমার মাথা
পেছন পেছন আসো
রাগ দেখিয়ে বলে অভি।
অভি আগে আগে যায় তানহা পেছন পেছন। বাইকে উঠে তানহাকে পেছনে বসতে বলে। তানহা বসে।
“আমার ধরে বসো
” আমি ঠিক আছি
“তুমি ঠিক আছো কি বেঠিক আছো সেটা বলি নি। বলছি আমাকে ধরে বসো।
” লাটসাহেব
তানহা অভির কাঁধে হাত দিয়ে বসে।
“আমার কাঁধে এলার্জি আছে। হাত সরাও
” তাহলে কোথায় ধরবো
“বুকের ওপর হাত রেখে বসো
” পারবো না
ঠোঁট উল্টে বলে তানহা।
“জাস্ট ফোনটা বের করবো
” ধরতেছি
তানহা অভিকে মনে মনে হাজারটা গালি দিয়ে বুকের ওপর হাত দিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বসে। অভি চোখ বন্ধ করে ঠোঁট মেলে হাসে। তৃপ্তির হাসি।
খুব করে গলা ছেড়ে গান গাইতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু এটা গান গাওয়ার জায়গা না।
“আমার তোমার মতো কাউকে না শুরু তোমাকে চাই। সারাজীবনের জন্য। এর জন্য যদি আমাকে খুন করতে হয় আমি তাই করবো। যদি বিশাল সমুদ্র পাড়ি দিতে হয় তাই দেবো। কিন্তু তোমাকে ছাড়বো না।
বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে লম্বা একটা ঘুম দেয় তানহা। বিকেল সাড়ে চারটেয় ঘুম ভাঙে। গায়ে ওড়না টা জড়িয়ে জানালার পাশে থাকা ছোট একটা দরজা খুলে ফেলে। এই মাএ দরজাটা চোখে পড়লো তানহা। এক পা দুই পা এগিয়ে গেলো। সামনে একটা গোলাপ বাগান। চারপাশে বাস দিয়ে দেয়াল দেওয়া বাগানটায়। বাশের গেটের কাছে লেখা এই বাগানে প্রবেশ নিষেধ। তানহা টান দিয়ে কাজগটা ছিড়ে ফেলে। বাগানে না ঢুকে হাত বাড়ি দুটো গোলাপ ফুল ছিঁড়ে খোপায় গুঁজে নেয়। অভি বেলকনি থেকে দেখছিলো। তারপর ঢং করে হেটে রুমে চলে যায়। রুমে এসে চমকে ওঠে তানহা।
চলবে