ভালোবাসি তাই #পর্বঃ১৪,১৫

0
2386

#ভালোবাসি তাই
#পর্বঃ১৪,১৫
#Tanisha Sultana
পর্বঃ১৪

তানহার মাথা থেকে ছোঁ মেরে গোলাপ ফুল নিয়ে নেয় অভি। তানহা কটমট চোখে তাকায় কিন্তু কিছু বলতে পারে না।

ফুল চুরি করছো?

“আমি চোর না।
” সেটা জানি।
“এখানে কেনো এসেছেন

“আমার জন্য চা বানিয়ে নিয়ে এসো
বিছানায় পায়ের ওপর পা তুলে বসে বলে অভি। তানহার কথার তুয়াক্কা করে না।

” মামা বাড়ির অবদার
ভেংচি কেটে বলে তানহা।

“বানাবে না? সরু চোখে তাকিয়ে বলে অভি।
” প্রশ্নই ওঠে না। সোজাসাপ্টা বলে দেয় তানহা।

“ওকে ফাইন
আমি তোমাকে ট্যাগ করি।
ফোন হাতে নিয়ে বলে অভি।

“আনছি
মুখ ফুলিয়ে বলে তানহা

“আমার সোনা বউ

তানহা ভ্রু কুচকে তাকায়
” বউ

“সরি আইমিন বোন

তানহা একটু তাকিয়ে চলে যায় চা বানাতে। অভি তানহার যাওয়ার দিকে তাকায়।
” না চাইলেও তুমি আমার।

পাক্কা এিশ মিনিট পরে তানহা অভির সামনে এনে চা রাখে। অভি ফোন দেখছিলো। ফোন রেখে সোজা হয়ে বসে চায়ের কাপে চুমুক দেয়।
“আপনি এই সময় এখানে?
তানহা খাটের সাইডে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে।

” কিছু কথা বলতে এসেছিলাম। আর্জেন্ট। চায়ে দ্বিতীয় চুমুক দিয়ে বলে।

“বলে ফেলুন

” বসো

“ঠিক আছি

” বসতে বলছি। চোখ মুখ শক্ত করে বলে অভি। তানহা এক সাইডে বসে।
“আমার কথা শেষ হওয়ার আগে কথা বলবা না।

” আমি দুই মিনিটের বেশি চুপ করে থাকতে পারি না। বিরবির করে বলে তানহা।

“কিছু বললা। কান খাড়া করে বলে অভি।

” আপনি কি বলবেন?

অভি চায়ের কাপ রেখে তানহার দিকে একটু এগিয়ে বসে। তানহা ভ্রু কুচকায়।
“বলছিলাম

” শুনছিলাম
অভি তানহার দিকে চোখ গরম করে তাকায়। তানহা চুপসে যায়। মুখে হাত দেয়
“আমি কিছু বলছি না।

” আবিরের বিয়ে হয়ে গেছে। এটা মেনে নিতে হবে।

“আমি তো এটা মেনে নিয়েছি। চলেও এসেছি এখানে। তাহলে এসব কেনো বলছেন? ওহহহ বুঝতে পেরেছি তুহিন রহমান আপনাকে এসব বলতে বলেছে।

সাট আপ
জোরে ধমক দিয়ে বলে অভি৷ তানহা ছিটকে ওঠে। বুকে হাত দেয়।
” আম্মু বলেছে তোমার সাথে ঠান্ডা মাথায় কথা বলতে। কিন্তু তুমি কথা শোনার মেয়েই না। সারাক্ষণ বকবক করবেই। লিসেন আমার সাথে বেশি বকবক করলে মুখে কস্টিপ লাগিয়ে দেবো।

জোরে শ্বাস নেয় অভি। তানহা এতোখন মুখে হাত দিয়ে ছিলো। মুখ থেকে হাতটা হালকা সরিয়ে বলে

“আমি তো সারমর্ম বললাম। কিন্তু আপনি তো রচনা বললেন।

অভি দাঁতে দাঁত চেপে তাকায় তানহার দিকে। তানহা অন্য দিকে চোখ ঘুরিয়ে মুখে হাত দিয়ে চোখ খিঁচে বন্ধ করে।
অভি চোখ বন্ধ করে কয়েকবার জোরে শ্বাস নিয়ে রাগটা একটু কমানোর চেষ্টা করে।

” শুনো। লাইফ কারো জন্য থেমে থাকে না। মায়ার তো কোনো দোষ নেই। কিন্তু আবির মায়াকে মেনে নিতে পারছে না। সব সময় তোমার কথাই ভাবছে। এখন তুমি যদি কাউকে বিয়ে করে নাও তাহলে

তানহা অভির দিকে তেড়ে এসে বলে

“এবার আপনি জাস্ট সাট আপ। আপনি ভাবলেন কি করে আমি বিয়ে করবো? কখনোই না। আমিও চায় না আবির মায়াকে মেনে নিক। আবির আমার। আমারই থাকবে। আমি সয্য করতে পারবো না অন্য কারো সাথে। একদম আমাকে ভুল ভাল বোঝানোর চেষ্টা করবেন না আমাকে বুঝলেন। ভালোবাসার মান

অভি টান দিয়ে তানহা নিজের কাছে নিয়ে আসে। কোমর জড়িয়ে ধরে তানহার। তানহার গালে ঠোঁট ছোঁয়ায়। চোখ বন্ধ করে ফেলে তানহা। মুখ থেকে কথা হওয়ার হয়ে গেছে। দুই তিন মিনিট পরে গাল থেকে ঠোঁট সরিয়ে কপালে কপাল ঠেকায়। তানহার বুক টিপটিপ করছে। অভিকে দুরে সরাবে সেই শক্তিটা পাচ্ছে না।

” এরপর থেকে আমার সামনে বেশি কথা বললে এর থেকে মারাক্তক কিছু করে ফেলবো। বলে দিলাম
হাঁপাতে হাঁপাতে বলে অভি। অভির কথা তানহার কানে ওবদি পৌছায় না। তানহা অন্য জগতে আছে। অভির পিঠে তানহার হাত।

“আবির তোমার না। তুমি আমার। বুঝে নাও। আমাকে বিয়ে করবে তুমি।
ফিসফিস করে বলে অভি। তানহা শুনে না।
” ছাড়ুন
অভিকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বলে তানহা।

“কেনো ছাড়বো? আনলিমিটেড কথা বলার সাময় মনে ছিলো না?

অভির কথা গুলো তানহার মুখে বাড়ি খাচ্ছে। অদ্ভুত লাগছে তানহার। সব কিছু এলোমেলো।
এবার একটু জোরে ধাক্কা দেয়।
” প্লিজ ছাড়ুন

অভি একটু পিছিয়ে যায়। তানহা উঠে তিন চার হাত দুরে গিয়ে চোখ বন্ধ করে শ্বাস নিচ্ছে। এরকম লাগছে কেনো?
অভি তানহার দিকে তাকিয়ে আছে।
তানহা জোরে শ্বাস নিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে অভির কাছে গিয়ে দাঁড়ায়।

“যদি হুটহাট এ্যাটাক না করেন তাহলে একটা কথা বলি? পারমিশন না দিলেও বলবো। আসলে পেটের,মধ্যে কথা গিজগিক করছে। কাটাকাটি

” কি কাটাকাটি? ভ্রু কুচকে বলে

“আপনার ফোনের পানি পানি ডান্স ডিলিট না করলে আমি ছোটমট একটা ঢোল দেবে যে আপনি আমাকে পাপ্পি দিয়েছেন।

” ইডিয়েট
অভি উঠে দাঁড়িয়ে বলে।
“তোমার সামনে আসলেই আমার

” কি প্রেম প্রেম পায় না কি?
চোখ টিপ দিয়ে বলে তানহা।

“জাস্ট ইম্পসিবল
বলেই অভি বেরিয়ে যেতে নেয়। তানহা উচ্চ সুরে গান ধরে
” বুক চিনচিন করছে হায়
মন তোমায় কাছে চায়

অভি দরজার কাছে দাঁড়িয়ে তানহার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে পাগলী বলে চলে যায়।

তানহা চোখ বন্ধ করে খাটে বসে। অভির স্পর্শটা তানহার মনের চামড় ধরা ঘা টা খুঁচিয়ে দিয়েছে। এতো কাছে কখনো আবিরও আসে নাই। অভির বলা কথা গুলো ভাবে। আবির মায়াকে মেনে নেবে কথাটা তানহার কানে বাঁশির মতো বাঁচছে। এটাই সত্যি। মায়া আবিরের বউ। কিন্তু তানহা মানতে পারছে না।

??

সারাদিন রুমে বন্ধ হয়ে থাকাটাই আবিরের রুটিন। কিন্তু এভাবে চলবে না। তানহাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে। কোথায় আছে তানহা? তানহার কাছে যাবে কি না ভাবছে? শেষমেশ মনের সাথে হাজার যুদ্ধ করে আবির সিদ্ধান্ত নেয় তানহার সাথে দেখা করবে না কিন্তু দুর থেকে তানহাকে দেখবে। ওয়াশরুমে গিয়ে গোছল সেরে নেয়। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে নিজেকে। চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে। দাঁড়ি আর চুল গুলো বেশ বড় হয়েছে। চেহারায় কেমন কালো হয়ে গেলে। নিজের এই রুপ দেখে তাচ্ছিল্য হাসে আবির।
“দেবদাস বানিয়ে দিলা তানহা।

কাবাড থেকে তানহার দেওয়া নীল শার্ট আর কালো জিন্স পড়ে রেডি হয়। জুতোর ফিতা বাঁধছে তখন মায়া আসে
” কোথাও যাচ্ছেন?

আবির মায়ার কথার উওর দেয়,না।

“বলুন না

পার্সটা নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বলে
” ধরে নিন মরতে যাচ্ছি
বলেই বেড়িয়ে যায় আবির। মায়া দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।

???
রিক তানহাকে ছোট ছোট আটটা ছেলেমেয়ে জোগাড় করে দিয়েছে। রিক তানহাকে ছাঁদে যাবে কি না জিজ্ঞেস করে। তানহা হ্যাঁ বলে দেয়। রিক আর তানহা ছাঁদে যায়। এটা সেটা অনেক কথা বলছে রিক। তানহা শুধু হু হু করছে। ছাঁদে গিয়ে দেখে অভি ছাঁদের টুল টেনে বসে আছে। হাতে গিটার। খুব মন দিয়ে সুর তুলছে। তানহা ভাবে এখন পেছন থেকে গিয়ে অভিকে ভয় দেখাবেই দেখাবে। রিককে চুপ করতে বলে পা টিপেটিপে অভির পাশে যায়। এবার ভাউ বলে অভিকে ধাক্কা দেবে তার আগেই

চলবে

#ভালোবাসি তাই
#পর্বঃ১৫
#Tanisha Sultana

“এখানে কেনো এসেছো? পেছন না ঘুরেই কাঠকাঠ গলায় বলে অভি।
তানহা অভির কাঁধেও ঠিক ওপরে হাতটা রেখেছিলো। অভির কথা শুনে হাতটা নামিয়ে নেম। হাসিমুখটা ফ্যাকাশে করে ফেলে। একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।

” কেনো এসেছো এখানে? অভি আবার জিজ্ঞেস করে।
“এমনিতেই। গোধূলি দেখতে। ছাঁদের রেলিং ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে তানহা। তানহার পাশে এসে রিক দাঁড়ায়। অভি রিককে খেয়াল করে কপালে ভাজ ফেলে বলে

” তুইইইই
রিক কিছু বলতে যাবে তার আগেই তানহা বলে।
“আমার সাথে এসেছে।
অভি এক নজর তানহার দিকে তাকায়। তারপর গিটার কোল থেকে নামিয়ে উঠে দাঁড়ায়। রিকের দিকে তাকিয়ে বলে

” এখন এখান থেকে যেতে পারিস।
রিক হাবলার মতো তাকিয়ে আছে। অভির কথা ঠিক বুঝতে পারলো না। ওকে যেতে কেনো বলছে?
অভি রিকের অবস্থা বুঝতে পেরে বলে
“তোকে আশিক খুঁজছিলো। বেয়ার আনবে মেবি। তো তুই চট করে গিয়ে শুনে আয়।

বেয়ারের কথা শুনলে রিকের হিশ থাকে না। অভির দিকে দাঁত কেলিয়ে এক দৌড়ে চলে যায়। তানহা হা করে তাকিয়ে আছে রিকের দিকে। কেমন ছেলেরে বাবা? সাথে করে নিয়ে এসেছে অথচ যাওয়ার সময় একবার বললোও না।

তানহা যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই অভি বলে ওঠে
” তোমাকে যেতে বলি নি।

তানহা ভ্রু কুচকে অভির দিকে তাকায়
“আমার ওপর খবরদারী আবার কবে থেকে করছেন?

” আমার মুখে মুখে একদম তর্ক করবা না। আঙুল নাচিয়ে বলে অভি। তানহা হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে থাকে অন্য দিকে মুখ করে।
অভি টুল টেনে বসে।
“আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি তোমাকে বিয়ে করবো। বাড়িতেও জানিয়ে দিয়েছি আর সবাই তোরজোর ও শুরু করে দিয়েছে।
এক নাগারে কথা গুলো বলে অভি।
তানহা কপালে ভাজ ফেলে তাকিয়ে আছে অভির দিকে। আসলে অভি কি বললো বোঝার চেষ্টা করছে।

” ঠিক বুঝলাম না?

“সোজা কথা তুমি বুঝতে পারো কবে? বাঁকা করে বললে ঠিকি বুঝতা। আমি আবার রিপিট করছি। ঠিক দুদিন পরে আমাদের বিয়ে হচ্ছে। বিরক্তি নিয়ে বলে অভি।

“ড্রামা হচ্ছে? আমি কোনো স্টার জলসা জী বাংলায় অভিনয় করছি? বিয়ে আসছে কোথা থেকে? আর আপনি ভাবলেন কি করে আপনাকে আমি বিয়ে করবো? তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বলে তানহা।
জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে তানহা। রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে।
অভি ধারাম করে উঠে দাঁড়ায়। টুলটাকে লাথি মারে। ভেঙে গুড়িয়ে যায় টুলটা। তানহা ভয় পেয়ে যায়। অভির চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে। ফর্সা মুখটাও লাল হয়ে গেছে। তানহার দুই বাহু চেপে ধরে বলে
” সী
নিচের দিকে ইশারা করে বলে। তানহা তাকিয়ে দেখে আবির দাঁড়িয়ে আছে তানহার দিকে তাকিয়ে। তানহা চোখ ফিরিয়ে নেয়। বুকের ভেতর ধক করে ওঠে।

“এবার তুমি বলো? ড্রামা হচ্ছে? খুব ভালোবাসা ছিলো না?? একদম পিছু ছাড়ছে না। ফিরে যেতে মন চাইছে।
তানহা নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। অভি ধাক্কা দিয়ে তানহাকে সরিয়ে দেয়।
” মায়া খুব ভালো একটা মেয়ে। আমি ওর লাইফটা কখনোই শেষ হতে দেবো না। এর জন্য যদি তোমার মতো বাঁদরকে বিয়ে করতে হয় আমি সেটাই করবো।

তানহা কর্কশ গলায় বলে দেয়
“আমি এই বিয়ে করবো না। দরকার হলে পালিয়ে যাবো।
অভি চোখ বন্ধ করে নেয়। দাঁতে দাঁত চিপে।
” ভেবেছিলাম বড়দের জানিয়ে ইনফেক্ট জানিয়েও ছিলাম। কিন্তু হলো না। তাই আমরা এখানেই বিয়ে করবো।

তানহার হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় অভি। তানহা বারবার বলছে বিয়ে করবো না। কিন্তু অভি শোনার পাএ না। একদম নিজের রুমে এনে হাত পা বেঁধে ফেলে রাখে তানহাকে। একে দিয়ে বিশ্বাস নেই পালিয়েও যেতে পারে।

চোখে মুখে পানি দিয়ে মাথা ঠান্ডা করে অভি। তারপর রুমে থেকে বেরিয়ে যায় কাউকে ফোন করতে করতে।

আবির এখনো ওখানে দাঁড়িয়ে আছে যদি আরেকবার তানহাকে দেখা যায়।
“হেই আবির
আবির চমকে পেছনে তাকায়। অভিকে দেখে ভরকে যায়।
” তানহাকে দেখতে এসেছো?

“আসলে না,মানে
আমতাআমতা করে বলে আবির। অভি একটু ঠোঁটটা,মেলে দিয়ে বলে
” ইয়ার এতো তোতলানোর কি আছে। দেখতে এসেছো স্বীকার করলেই পারো। এনিওয়েজ তানহা এখন আমার রুমেই আছে। বিয়ে করে নিয়েছি আমরা।

আবিরের বুকের ভেতর তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। তানহা বিয়ে করে নিয়েছে। চোখের কোনে পানি চলে আসে।
“তুমি ভেতরে চলো না।

আবির একটু হাসির রেখা টেনে বলে
” আমাকে যেতে হবে।

“তাড়া থাকলে জোর করবো না।
আবির আর এক সেকেন্ড দেরি না করে চলে যায়। অভি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।

মাগরিবের আজানের শব্দে তানহা পিটপিট করে চোখ খুলে। সেই তখন থেকে এভাবে পড়ে আছে। অভির ওপর রাগটা তরতর করে বাড়ছে। এরই মধ্যে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে অভি। হাতে শপিং ব্যাগ। তানহা অভির থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
হাতের ব্যাগ গুলো খাটের ওপর রেখে গায়ের জ্যাকেটটা খুলে টেবিলের ওপর থেকে এক গ্লাস পানি নিয়ে ঢকঢক করে খেয়ে নেয়। তারপর তানহার পাশে বসে তানহার মুখের বাঁধন খুলে দেয়।

এতোখন পরে মুখ খোলা পেয়ে তানহা জোরে জোরে দুটো শ্বাস নেয়।
” ইডিয়েট আমি না আপনি। ননসেন্স স্টুপিট। মানুষত্ববোধ নেই আপনার। আপনি কি ভেবেছেন? এভাবে বেঁধে রেখে বিয়ে করে নেবেন আমায়? কখনো না। মায়ার জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে? তো যান না মায়াকে বিয়ে করে নেন। শান্তি পায় আমরা। এইভাবে
তানহা আর কিছু বলার আগেই অভি তানহার ঠোঁট মুখে পুরে নেয়। আপনাআপনি তানহার কথা বন্ধ হয়ে যায়। চোখ বড়বড় করে ফেলে। হাত বাঁধ থাকায় বাঁধাও দিতে পারছে না।

মিনিট পাঁচেক পরে অভি তানহাকে ছেড়ে দেয়। দুজনই জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে।
“তোমাকে চুপ করানোর এটাই একমাএ রাস্তা।
তানহার কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলে অভি। তানহা নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। চোখে পানি টলমল করছে।
” দেখো আমি যা করছি সেটা আম্মু আর তোমার মায়ের কথায় করছি। ট্রাস্ট মি এতে তোমার ভালো হবে। আমার বিন্দু মাএ ইন্টারেস্ট নেই তোমার প্রতি। কি বিশ্রি ঠোঁট তোমার। ইয়াক
নাক মুখ ছিঁটজে বলে অভি। রাগে গিজগিজ করছে তানহা।

অভি সরে আসে তানহার থেকে। হাত পা খুলে দেয়। তানহা সোজা হয়ে বসে। অভি শপিং ব্যাগ গুলো তানহার দিকে এগিয়ে দেয়।
“চট করে রেডি হয়ে নাও। এখনই সবাই চলে আসবে। দেখো আমার গার্লফ্রেন্ড আছে তবুও তোমার বিয়ে করছি পরিবারের কথা ভেবে। একদম কিন্তু বাইরের সবার কাছে বলে বেড়াবে না তুমি আমার বউ। তাহলে মেরে গুম করে দেবো।

তানহা দাঁতে দাঁত চেপে অভির কথা হজম করে।

” তারাতাড়ি রেডি হতে হবে। ওরা ফুলসজ্জার খাট সাজাতে আসবে আবার।
বলেই অভি উঠে রুম গোছানো শুরু করে।

“দেখুন

” পরে দেখবো সারা রাত পড়ে আছে। ভালো করে দেখবো।

সোজাসাপ্টা বলে অভি। তানহা ড্রেসিং টেবিলের ওপর থেকে চিরুনি স্প্রে সব ফেলে দেয়।
“বিয়ে করবো না আপনাকে। আই হেট ইউ। কখনো বিয়ে করবো না। কেনো করছেন এরকম। ঘৃণা হচ্ছে আপনার ওপর।
চিৎকার করে বলে তানহা।
অভি তানহার কোমল জড়িয়ে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বলে
” আমার রুমের একটা জিনিস এলোমেলো হলে তোমাকে এলোমেলো করে দেবো। আর কেনো এসব করছি? দুটো কারণে
১.আবিরের বিয়ে হয়ে গেছে। মায়াকে আমি কথা দিয়েছি সবটা ঠিক করে দেবো
আর
২. আমার আর তোমার বিয়ে হয়ে গেছে। এজ এ ক্লিয়ার

তানহার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। বিয়ে হয়ে গেছে মানে কি?

অভি তানহাকে ছেড়ে দেয়।
“পাঁচ মিনিটের মধ্যে রেডি না হলে আমি নিজ হাতে রেডি করিয়ে দেবো।
হাতের ঘড়ি তানহার দিকে এগিয়ে দিয়ে টাইম দেখায়।
তানহা ওইভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে।

” থ্রী টু ওয়ান টাইম শেষ। এবার আমি তোমার শাড়ি পড়াবো।
শাড়ি নিয়ে এগিয়ে আসতে আসতে বলে অভি।

“আআমাকে দিন
থেমে থেমে বলে তানহা।

” দিয়েছিলাম। কিন্তু তুমি টাইম অনুসারে করতে পারি নি। এবার আমার পালা
চোখ টিপে বলে অভি। তানহা ঢোক গিলে।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here