#ভালোবাসি তাই
#পর্বঃ২,৩
#Tanisha Sultana
#পর্বঃ২
“কথা কানে যাচ্ছে না? কিছু জিজ্ঞেস করছি আমি?
মারুফার কাঁপা-কাঁপি শুরু হয়ে গেছে। তানহা এখান থেকে পালানোর পথ খুঁজছে। মারুর মুখ দেখে তানহা স্পষ্ট বুঝতে পারছে এই মাইয়া তানহাকেই ফাঁসাবে।
” লাস্ট বার জিজ্ঞেস করছি। মুখ না খুললে তোমাকে বেলকনি থেকে নিচে ফেলে দেবো।
মারুফা তানহার হাত জড়িয়ে ধরে।
“বিশ্বাস করুন আমার কোনো বফ নাই। আমি পিওর সিঙ্গেল। কিন্তু আমি প্রেগন্যান্ট হলাম কি করে বুঝতে পারছি না।
ভয় জড়ানো কন্ঠে বলে মারুফা।
অভি হাত ভাজ করে দাঁড়ায়। তানহার দিকে তাকায়। তানহা লেহেঙ্গারের স্কার্টটা উঁচু করে দৌড় দিতে যায় অভি হাত টান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসে। অভির বুকে বাড়ি খায় তানহা।
” কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখান থেকে এক পা নড়বা না
তানহার হাত মুঠো করে ধরে তানহাকে পাশে দাঁড় করিয়ে বলে অভি।
“আজ তানহা তুই শেষ। এই করলার জুস আজ তোকে খেয়ে ফেলবে।
মনে মনে বিরবির করে বলে তানহা।
” তো মারুফা তুমি কি করে বুঝলে তুমি প্রেগন্যান্ট?
“তানহা বলছে।
তানহার দিকে হাত উঠিয়ে বলে মারুফা। তানহা ছিটকে ওঠে। যা ভেবেছিলো তাই। অভি তানহার দিকে কপাল ভাঁজ করে তাকায়।
” বিশ্বাস করুন আমি কিচ্ছু করি নি। শুধু ওকে বলেছিলাম বাংলা মুভিতে দুইবার বমি করলে আর মাথা ঘুরলে নায়িকারা প্রেগন্যান্ট হয়ে যায়। কিন্তু ও তো নায়িকা না।
এক নাগারে কথা গুলো বলে তানহা।
মারুফা এবার মরা কান্না জুড়ে দেয়।
“এখন আমার কি হবে? আল্লাহ তুইলা নাও আমারে।
অভি বিরক্ত হয়ে জোরে বলে ” সাট আপ”
তানহা আর মারুফা ছিট্টেবিট্টে ওঠে
“ইডিয়েটের দল। অম্বল হয়েছে তোমার।
মারুফা বুকে হাত দিয়ে শ্বাস নেয়।
” আল্লাহ বাঁচাইছে।
“আমি না ভাবতে পারি না মানুষ এতোটা স্টুপিট ইডিয়েট কি করে হয়। ডিজগাস্টিং
বলেই নাক সিটকিয়ে চলে যায় অভি। তানহা মারুফার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকায়। তানহার চাহনি দেখে মারুফা হকচকিয়ে যায়
” আসলে হইছে কি। আমি বুঝতে পারি নি বোইন। মাপ করে দে।
কান ধরে বলে মারু। তানহা বলে
“তোর জন্য কয়বার স্টুপিট আর ইডিয়েট শুনলাম
” বেশি না মাএ একবার স্টুপিট আর কয়েকবার ইডিয়েট
মারুর মাথায় বাড়ি মারতে ইচ্ছে করছে তানহার।
অভি রুম থেকে বেরিয়ে বন্ধুদের কাছে চলে যায়। আবির বর সেজে বসে আছে। আর একটু পরেই বিয়ে করতে চলে যাবে। সাকিল রাকিব নিরব আর আবির কথা বলছিলো। অভি ওদের মাঝখানে গিয়ে বসে।
“এতোখন কই ছিলি? (আবির)
” ওই আর কি সাওয়ার নিতে গেছিলাম
“ওহহ আচ্ছা।
এবার সাকিলের নজর যায় অভির হাতের দিকে
” সাওয়ার নিতে গিয়ে কি ফুলসজ্জা করে এলি না কি?
সাকিলের কথায় অভি ফোন রেখে সাকিলের দিকে তাকায়।
“হোয়াট
” না মানে তোর হাতে লিপস্টিক। তা কার কাছ থেকে টেস্ট করে আসলি?
চোখ টিপে বলে রাকিব।
অভির এবার মনে পড়ে তানহার ঠোঁটের লিপস্টিক মুছিয়ে দিয়েছিলো। কপাল চুলকায় অভি।
“তা বন্ধু বলো বলো কে সেই লিপস্টিপ কুইন
সাকিল বলে।
অভি উঠে দাঁড়িয়ে গম্ভীর সুরে বলে
“সিক্রেট
তখন তানহার বাবা অভিকে ডাকে। কিছু বলে অভিকে।
” ঠিক আছে আংকেল আমি তানহাকে নিয়ে চলে যাচ্ছি।
তানহার বাবা নিশ্চিত হয়।
অভি তানহার রুমে যায়। তানহা একটা কুশল নিয়ে মারুকে তাড়া করছে। আর মারুফা দৌড়াচ্ছে। অভি রুমে আসতেই তানহা ঠাস করে অভির সাথে ধাক্কা খায়। পরে যেতে নিলেই অভি কোমর জড়িয়ে ধরে। মারুফা অভিকে দেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
অভি তানহাকে ধরছে তো ধরছেই ছাড়ার নাম নেই। কেমন করে তাকিয়ে আছে তানহার দিকে। তানহা কাচুমাচু হয়ে জিজ্ঞেস করে
“এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?
” কাঁচা চিবিয়ে খাবো তোমায় তাই।
তানহা ঢোক গিলে
“জামাকাপড় গুছিয়ে নাও
” কেনো?
“তোমার বাপ তোমাকে এবাড়িতে রাখবে না। আমার ঘারে ঝুলিয়ে দিয়েছে তোমায়।
কথাটা তানহার খুব লাগে। তাচ্ছিল্য করে বলে
” হুমম সেটাই। না ছাড়লে জামাকাপড় গোছাবো কি করে?
অভি ছেড়ে দেয়।
তারপর অভির হাত ছাড়িয়ে লাগেজ বের করে। অভি ততোখনে বেলকনিতে চলে। খারাপ লাগছে তানহার। কিছুখন পরে অভি বলে
” এই যে মিস লেজ ছাড়া বাঁদর হয়েছে?
তানহা লাগেজের চেন আটকিয়ে বলে
“হুমম হয়েছে।
অভি তানহার লাগেজ নিয়ে এগোতে থাকে। রুম থেকে বেরিয়ে তানহা মা বাবা আর ফুপিকে দেখে।
” আই প্রমিজ তানহা নামের বাঁদরটা আর কখনোই এই বাড়িতে পা রাখবে না
বলেই তানহা গটগট করে বেরিয়ে যায়।
তানহার মা অভির কাছে এসে বলে
“পৌঁছে ফোন দিও
” ঠিক আছে খালামনি
অভিও চলে যায়। তানহার বাবা ধাপ করে বসে পড়ে।
“ভাই ভেঙে পড়ো না। তানহার চলে যাওয়ায় ভালো। আবিরের বিয়ে তানহা সয্য করতে পারবে না। আর তানহা সামনে থাকলে আবিরও বিয়ে করতে পারবে না।
তানহার ফুপি বলে।
তানহার মা ভেংচি কেটে বলে
” আবিরের জন্য আমার মেয়েকে মোটেও পাঠাই নি। আমি অভির সাথে তানহার বিয়ে দেবো তাই পাঠিয়েছি
বলেই তিনি নাচতে নাচতে রুমে চলে যায়। অভিকে ওনার দারুণ লাগে। এবার অভির মা মানে ওনার বোনের সাথে কথা বলে সেটিং করতে হবে।
গাড়িতে তানহা অভির ফোনের দিকে তাকিয়ে বসে আছে। এই মাএ জিপি অফার আসাতে ফোন জ্বলে উঠেছিলো আর ওয়ালপেপারে একটা মেয়ের পিক দেখেছে তানহা। স্পষ্ট করে দেখতে পায় নি। তবে একটু খানি দেখেই বুঝে গেছে এটা একটা মেয়ের পিক। তাই অধিক আগ্রহ নিয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে। আবার মেসেজ আসলে ভালো করে দেখবে।
“কোন ক্লাসে পড়ো তুমি?
অভির কথাটা তানহার কান ওবদি পৌছায় নি। তানহা ফোন দেখতে ব্যস্ত
” তুমি কালা? না কি প্রতিবন্ধী? কোনটা?
এবার অভি চেচিয়ে বলে। তানহা ধমফরিয়ে ওঠে
“ইয়ে মানে কি বললেন?
বিরক্তির একটা নিশ্বাস ফেলে অভি।
“কোন ক্লাসে পড়ো তুমি?
” ইহহহহ আমি ওনার এক মাএ খালামনির একমাত্র মেয়ে তাও উনি জানে না আমি কিসে পড়ি। ভাব দেখে বাঁচি না।
ভেংচি কেটে মনে মনে বলে তানহা।
অভির রাগে বিরক্তিতে কানে হেড ফোন গুজে নেয়। তানহার এভাবে বসে থাকতে বোরিং লাগছে। ইসস যদি ঠিক সময় উওর দিতো তাহলে ওনার সাথে একটু গল্প করা যেতো। সময় কাটতো।
তানহা অস্তে করে ছিটবেল খুলে ফেলে। তারপর অভির দিকে ওনেকটা এগিয়ে বসে। অভির বা কানের হেডফোনের তারটা অতি সাবধানতার সাথে খুলে নিজের কানে নিতে যাবে আর সাথে সাথে অভি ব্রেক করে তানহা ছিটকে অভির কোলে গিয়ে পড়ে। ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে তানহা। গাড়ির পেছনের ছিট থেকেও আহহহহহ শব্দটা ভেসে আসে। অভি এক হাতে তানহাকে ধরে পেছনে ঘুরে তাকায়। তানহা এতোটাই ভয় পেয়ে গেছে অভির বুকের সাথে লেপ্টে আছে।
পেছনের ছিটে মারুফা দাঁত কেলিয়ে বসে আছে। অভির রাগটা মাথায় চড়ে যায়। মারুফা গাড়ির দরজা খুলেই দৌড়। এখন রইলো পড়ে তানহা।
চলবে
#ভালোবাসি তাই
#পর্বঃ৩
#Tanisha Sultana
তানহা অভির বুক থেকে মাথাটা একটু উঁচু করে। অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অভি। তানহা এক লাফে নিজের ছিটে গিয়ে বসে। কান ধরে ইনোসেন্ট ফেস করে বলে
“আই এম ভেরি সরি। প্রচুর সরি। নেক্সট টাইম এমন ভুল হবে না। পাক্কা প্রমিজ।
অভি তানহার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে গাড়ি স্ট্রাট দেয়।
” বাঁদর নং টু ও লুকিয়ে এসেছিলো গাড়ির পেছনে।
তানহা পেছনে তাকায়
“কই
” গাড়ি থামতেই দৌড়ে পালিয়ে গেছে।
“আবির বিয়ে করতে চলে গেলো
তাচ্ছিল্য করে বিরবির করে বলে তানহা। তানহা বুঝতে পারে মারু ওকে ওর ফোনটা দিতে এসেছিলো।
আবির তানহার ফুপাতো ভাই। ছোট বেলা থেকে আবির আর তানহার রিলেশন ছিলো। ওদের দুজনের বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো। তানহার দাদু ঠিক করেছিলো। বছর খানি আগে দাদু মারা যায়। সবাই তানহা আবিরকে বেস্ট কাপল বলতো। প্রচুর ভালোবাসে দুজন দুজনকে। হঠাৎ চার দিন আগে তানহার ফুপি বলে আবিরের বিয়ে ঠিক করে দিয়েছে। তানহার বাবাও এতে সায় দেয়। তানহা আবিরকে বলা হয় ওদের সম্পর্ক রাখতে হলে এই বাড়ি থেকে চলে যেতে হবে। অনেক বুঝিয়েছিলো ওরা কিন্তু বোঝে নি। ভালোবাসার থেকে সব সময় পরিবার আগে। তানহা যদি আবিরকে বিয়ে করা থেকে আটকে দেয় তাই তানহাকে অভিদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হলো।
এসব ভেবে তানহার চোখে পানি চলে আসে। কিন্তু নিজের দুর্বলতা তানহা কাউকে দেখাতে চায়,না তাই অভির আড়ালে চোখের পানি মুছে ফেলে।
অভি আবার গাড়ি থামায়। তানহা ভ্রু বাঁকিয়ে বলে
” কি হলো
অভি নিজের সিটবেল খুলে তানহার দিকে এগিয়ে আসে। তানহা কিছুটা পিছয়ে যায়।
“এএএএগোচ্ছেন কেনো?
” তোমাকে গাড়ি থেকে ফেলে দিতে
চরম বিরক্তি নিয়ে বলে অভি। তানহা ভয়ে ঢোক গিলে। অভি এক হাত তানহার পেটের দিকে দিতেই জামা আঁকড়ে ধরে চোখ বন্ধ করে ফেলে তানহা। অভি সিটবেল বেধে দিয়ে নিজের জায়গায় এসে গাঠি চালানো শুরু করে। গাড়ির শব্দে তানহা চোখ খুলে। সিটবেলের দিকে তাকিয়েই ভেংচি কাটে।
অভিদের বাড়িতে এসে তানহা উঁকিঝুঁকি মেরে বাড়ির ভেতরে ঢুকছে।
“চোরের মতো করছো কেনো?
পেছন থেকে অভি বলে।
তানহা সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলে
” ইয়ে মানে এমনি
অভি বিরক্তি ভাব নিয়ে তাকিয়ে হুরহুর করে ঢুকে যায়।
“বাসায় কেউ নেই। আম্মু পার্লারে গেছে (অভির আম্মু বিউটি পার্লারে কাজ করে) আব্বু অফিসে দাদু তোমাদের বাড়ি আর অনিক মাঠে।
বলেই অভি নিজের রুমে চলে যায়। তানহা জানে কার কোন রুম। তাই যে রুমে কেউ থাকে না সেই রুমে চলে যায়। অভির পাশের রুম সেখানে চলে যায়। লাগেজ থেকে ফোনটা বের করে দেখে আবিরের চারশো পাঁচটা মিস কল। দুইটা মেসেজ সেখানে লেখা ‘চলো পালিয়ে যায়” তানহা সিম খুলে ফেলে। প্রচুর কান্না পাচ্ছে। এখন আর কান্না আটকে রাখে না। ফ্লোরে হাঁটু মুরে বসে কাঁদতে থাকে। যাকে বলে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো কান্না। কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি উঠে যায়। শব্দ করে কাঁদে তানহা।
অভি রুমে এসে বিছানায় ঠাস করে শুয়ে পড়ে। ভাল্লাগছে না। পাশের রুম থেকে ফুঁপানোর শব্দ আসছে। তানহা কাঁদছে বুঝতে পারে। উঠে এগিয়ে যায়।
“কাঁদছো কেনো?
অভির প্রশ্নে তানহা মাথা তুলে তাকায় অভির দিকে। চোখের পানি মুছে হেঁচকি তুলে বলে
” কান্নার প্রাক্টিজ করছি
“ভাংবে তবু মোচকাবে না
বিরবির করে বলে অভি। তানহা উঠে জামাকাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে যেতে নেয়। অভি সামনে দাঁড়ানো।
” সরুন
“যদি না সরি
সোজাসাপ্টা বলে অভি। তানহার রাগ হয় কিন্তু মাথা তুলে তাকায় না।
” না সরলে দাঁড়িয়ে থাকেন
বিরক্তি নিয়ে বলে তানহা।
অভি সরে দাঁড়ায়।
রাতের বেলা তানহার খালামনি খালু আর অনিক চলে আসে। খালামনি রান্না করছে। তানহা সবার সাথে কথা বলে রুমে চলে আসে। খালামনিকে হেল্প করতে গেছিলো কিন্তু তিনি সাফ না করে দিয়েছে। তানহা হেডফোন দিয়ে গগন সাকিবের গান শুনছে। “তাই তো তারে ভুলতে আমি নেশার নৌকা বাই প্রতি রাইতে নেশার নৌকায় চান্দের দেশে যাই”
মানে নেশা করলে কষ্ট কমে গানটার মানে এটাই বোঝে তানহা। মনে মনে বলে
“কাল কলেজে যাওয়ার সময় নেশা জাতীয় মদ বা সিগারেট কিনে নিয়ে আসবো। তারপর দেখি কষ্ট কোথা থেকে আসে।
একটা গান পাঁচবার শুনে বিরক্ত হয়ে গেছে তানহা। ফোনে এমবি নাই। ওয়াইফাই কানেক্টেড করতে হলে না কি অভির কাছে যেতে হবে। তানহা পা টিপে অভির রুমে উঁকি দেয়। পাবজি খেলছে মন দিয়ে। তানহা অভির পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। অভি বুঝতে পেরেও মাথা তুলে তাকায় না। তানহা অভির পুরো রুমে চোখ বুলাই। খুব পরিপাটি রুমটা।
” ভাইয়া
তানহার মুখে ভাইয়া ডাকটা শুনে অভির রাগ হয় কিন্তু কিছু বলে না।
“কি চায়?
কর্কশ গলায় বলে অভি
” ওয়াইফাই
অভি মাথা তুলে তানহার দিকে তাকায়। হাত বাড়ায় তানহা ফোনটা দেয়। অভি নিজের ফোনটা রাখার সময় তানহার নজর আবার ওয়ালপেপারে যায়। স্পষ্ট দেখতে পারে না। তবে কেনো জানি পিকটা তানহার চেনা চেনা মনে হচ্ছে।
“ফোন
অভি ফোনটা বাড়িয়ে বলে। তানহা ফোনটা হাতে নেয়।
” এভাবে থাকা যাবে না এখানে। এখানে থাকতে হলে কাজ করতে হবে। চোখে দেখতে পাও না আম্মু একা একা কাজ করছে।
তানহা অভির দিকে চোখ ছোটছোট করে তাকায়।
“এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো? মানে আমি ভাবতে পারছি না তোমার মতো একটা গবেটকে আমায় বিয়ে করতে হবে। যার কোনো সেন্স নাই ইডিয়েট লেজ ছাড়া বাঁদর। লাইফটা হেল করে ছাড়বে আমার।
অতি বিরক্তি নিয়ে বলে অভি।
তানহার ভীষণ রাগ হচ্ছে। মামা বাড়ির অবদার না কি? যখন খুশি তখনই ঝাড়ি মারবে।
” এখনো এভাবে স্টুপিটের মতো দাঁড়িয়ে আছো কেনো যাও
“থাকবোই না এখানে আমি
বলেই তানহা বেরিয়ে আসতে নেয়। অভি হাত টেনে ধরে। তানহার চোখে পানি টলমল করছে।
” বাড়ির বাইরে এক পা রাখলে পা ভেঙে হাতে ধরিয়ে দেবো। আমার বকা খেয়েই তোমাকে এখানে থাকতে হবে। নাহলে বেঁধে রাখবো
তানহার চোখ থেকে টুপ করে পানি পড়ে। অভি হাত ছেড়ে দেয়। তানহা বেরিয়ে যায়।
আসল কথা হলো তানহা চাইলেও এখন এখান থেকে যেতে পারবে না। কোথায় যাবে? অভিকে হাজারটা বকা দিয়ে নিজের রুমে গিয়ে খাটের ওপর পা দিয়ে ফ্লোরে মাথা রেখে কানে হেডফোন দিয়ে আমারসে ফোন টিপছে তানহা। অভি তানহার রুমের সামনে দিয়ে নিচে যাচ্ছিলো। তানহাকে এইভাবে দেখে দাঁড়িয়ে যায়।
মেয়েটা অদ্ভুত। নিজের দুর্বলতা কাউকে দেখাতে চায় না। ফোন বের করে কয়েকটা পিক তুলে নেয় তানহার।
দশটার দিকে খেয়েদেয়ে সবাই শুয়ে পড়ে। পাঁচটার দিকে তানহার ঘুম ভাঙে। হাত মুখ না ধুয়েই অভির রুমের সামনে চলে যায়। সারা রাত ঘুমতে পারে নি, ওয়ালপেপারের ছবিটার কথা ভেবেছে। না দেখা পর্যন্ত শান্তি হবো না তানহার। অভির রুমের দরজা ভেরানোই ছিলো। চোরের মতো লুকিয়ে ঢুকে। লাইট জ্বালিয়েই ঘুমাই অভি। তানহা অভির খাটের পাশে এসে দেখে ফোনটা অভির বা পাশে। মানে অভিকে ডিঙিয়ে ফোনটা আনতে হবে। আস্তে আস্তে ঝুকে ফোনটা ধরতে যাবে তখনই অভি নরে ওঠে। তানহা ঠাস করে অভির ওপর পড়ে যায়। অভি চোখটা খুলে তানহাকে দেখে কপালে ভাজ ফেলে মুখটা গম্ভীর করে।
“এবার আমাকে জনমের ছবি দেখাবে
মনে মনে বলে তানহা।
চলবে