ভালোবাসি তাই #পর্বঃ৩৪,৩৫

0
1966

#ভালোবাসি তাই
#পর্বঃ৩৪,৩৫
#Tanisha Sultana
পর্বঃ৩৪

“আপনি না যা তা
অভির হাত থেকে শাড়িটা ছোঁ মেরে নিয়ে বলে তানহা।
” আমি আবার কি করলাম? বোকার মতো তাকিয়ে বলে অভি।
“বাবার সামনে থেকে এনে এভাবে দরজা বন্ধ করে দিলেন কেনো?
কোমরে হাত দিয়ে বলে তানহা।
” ওভাবে না আনলে তোমার বাবা আসতে দিতো না।
“দিতো না তো দিতো না। বাবা কতো কষ্ট পেলো
মুখটা ফ্যাকাশে করে বলে তানহা।
” ওই হেলো
কষ্ট হচ্ছে বাবার জন্য? তাহলে থাকো তুমি তোমার বাবার সাথে আমি চলে যাই?
“আপনি আবার ছিলেন কবে? কখনো ছিলেন না কি?
” লিসেন তানহা ঝগড়া করার মুড নাই। এখনো আমার মাথা ঠান্ডা আছে।
“মাথা গরম হলে কি করবেন? মারবেন?
” নাহহহ অন্য কিছু করবো। বাঁকা হেসে বলে অভি।
তানহা ভরকে যায়। চোখ গুলো গোলগোল হয়ে যায়।
অভি তানহার কোমর জড়িয়ে কাছে টেনে নেয়। তানহা ঢোক গিলে। হাসফাস করে। এদিক সেদিক চোখ ফেরায়।
“তুমি আমার কথা শুনবে। সব কিছুর থেকে তোমার কাছে আমি আগে। তারপর তোমার বাবা। স্বামী আমি তোমার।
তানহার ঘাড়ে নাক ঘসে বলে অভি।
তানহার অস্বস্তি হচ্ছে। ছোটার জন্য ছটফট করছে।
” সব থেকে আগে আমার কাছে বাবা মা তারপর বাকি সব
মাথা নিচু করে বলে তানহা। ধমক খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে।
অভি চোখ ছোটছোট করে তাকিয়ে আছে তানহার মুখের দিকে কোমরে হাত রেখেই।
“কোনো বেপার না। এখন তোমার কাছে বাবা আগে। পার্মানেন্টলি যখন আমার হয়ে যাবে তখন সব থেকে আগে আমি থাকবো। বুঝলে স্টুপিট?
বলেই ফট করে তানহার ঘাড়ে চুমু দেয়। কেঁপে ওঠে তানহা। ছিটকে দুরে সরে যায়। অভি তানহার ব্যবহারে ভ্রু কুচকে ফেলে। তানহা লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে।
” কি হলো?
তানহার হাত ধরে টান দিয়ে বলে।
“যাযাযাবেন না?
থেমে থেমে বলে অভি।
” হুমম যাবো। এসে কাপড় পড়িয়ে দেই।
“লাইট অফ করে দিন। মাথা নিচু করে আস্তে করে বলে তানহা।
” কিহহহহ? কিছুটা জোরেই বলে অভি।
“তাহলে চোখ বাঁধেন।
” ননসেন্স
বলেই বিরক্তিকর একটা নিশ্বাস ফেলে লাইট অফ করে দেয়।
এবার পরেছে ভীষণ বিপদে। অমাবস্যার রাত। ঘুটঘুটে অন্ধকার। ছিঁটে ফোটাও আলো নেই। নিজের ছায়াও দেখা যাচ্ছে না। তানহাকে খুঁজেই পাচ্ছে না।
“আআপনি কোথায়?
ভয়ে ভয়ে বলে তানহা।
” তোমার মাথায়। দাঁতে দাঁত চেপে বলে অভি।
তানহা একটা ঢোক গিলে।
“বেশি অসুবিধা হলে লাইট জ্বালিয়ে দিন।
চাপাস্বরে বলে তানহা।
“সুইচ খোঁজার চেয়ে তোমাকে খোঁজাই বেটার।

অনেক খুঁজে অভি বুঝতে পারে এইখানটাই তানহা আছে। এবার আন্দাজ করে তানহার হাতটা ধরতে যায় কিন্তু ভুল বশত হাতটা তানহার পেটে চলে যায়। তানহা ছিঁটকে যায়।
” একদম দুরে যাবে না। তাহলে তেমাকে আমি আর খোঁজবোই না।
রাগ দেখিয়ে বলে অভি।
তানহা দাঁড়িয়ে যায়। অভি পেট থেকে হাত সরিয়ে খুঁজে হাতটা ধরে।
“ইচ্ছে টা আপনার। এবার হাত এদিক সেদিক গেলে তার দায় আমার না।
এক চিলতে হেসে বলে অভি। তানহা হাসিটা দেখতে পায় না কিন্তু অনুভব করে। তাও লজ্জা পায় কিন্তু ওর লজ্জা মাখা মুখ অভি দেখতে পায় না।

এবার তানহাকে শাড়ি পড়াতে থাকে। অন্ধকারে শাড়ি পড়ানোটা খুব কষ্টকর হচ্ছে তবুও অভি থেমে থাকে না। পড়িয়েই ছাড়ে। চারপেরে করে হলুদ শড়ি পরিয়ে দেয়। শাড়ি পড়ানো শেষে হঠাৎ রুমে বেশ খানিকটা আলো ঢুকে পড়ে। তানহা অভি দু’জনই ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করে। পরে বুঝতে পারে অভি লাইট অফ করার সাথে সাথে কারেন্ট চলে গেছিলো তাই এতোটা অন্ধকার ছিলো। বুঝতে পেরে দুজনই মুচকি হাসে।

” এবার কি লাইট জ্বালাতে পারি?
অভি তানহার হাতটা ধরে বলে।
তানহা হেসে মাথা নারে মানে “হ্যাঁ”
অভি লাইট জ্বালিয়ে দেয়। শাড়ি পড়ানো ভালোই হয়েছে কিন্তু পেট বেড়িয়ে গেছে। অভি এবার যত্ন সহকারে তানহার পেট ঢেকে দেয়। তারপর আয়নার সামনে বসিয়ে চোখে কাজল ঠোঁটে গাড়ো লাল লিপস্টিক দিয়ে দেয়। তারপর খাটের ওপরে প্যাকেট থেকে একটা শপিং ব্যাগ নিয়ে তা থেকে কাঁচা গাঁধা ফুলের গহনা নিয়ে তানহার মাথায় কোমরে গলায় কানে পড়িয়ে দেয়। তারপর মাথায় অর্ধেক ঘোমটা কেটে তাতে ক্লিপ লাগিয়ে দিয়ে তানহার ঘাড়ে মুখ রেখে তানহাকে আয়নার দিকে তাকাতে ইশারাকরে।
তানহা লাজুক হেসে তাকায়।
“আমার ফুলের রানী
তানহার কপালে ঠোঁট ছুঁয়িয়ে বলে অভি।
” চলেন
“হুমমম
তানহার দিকে তাকিয়ে থেকেই বলে।
” কি হলো
“দেখতে দাও প্লিজ
তানহাকে চয়নার সামনে থেকে উঠিয়ে সামনে দাঁড় করিয়ে বলে অভি।
” পরে দেইখেন
মাথা নুয়িয়ে বলে তানহা।
“তাহলে আজ যাবোই না
তানহার দুই কাঁধে হাত রেখে বলে অভি।
” মানে কি? কপালে দুটো ভাজ ফেলে বলে তানহা।
“আমি পাক্কা আধঘন্টা দেখবো তোমায় তারপর যাবো।
” মানে কি?
“কালা তুমি? শুনতে পাও না? না কি কানে ময়লা জমেছে?
বিরক্ত হয়ে খাটে বসে বলে অভি।
তানহা কোমরে হাত দিয়ে অভির সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁত কটমট করে বলে
” আমি কালা?
“তানহা। একটা সত্যি কথা বলি?
সিরিয়াল ফেস করে বলে অভি।
তানহা অভির পাশে বসে।
” বলুন
অভি সোজা হয়ে তানহার দিকে মুখ করে বসে।
“আমি তোমাকে ভালোবাসি কি না জানি না। ভালো কি করে বাসে সেটাও জানি না। কিন্তু আমি তোমার থেকে চোখ সরাতে পারি না। তোমার চোখে আমি কিছু একটা দেখতে পায়। তুমি হয়ত দেখতে পাও না আমার চোখে।এতো লড়াই করে ফাইট করে কেনো তোমার কাছে ছুঁটে আসি জানো? তোমায় দেখবো বলে। পায়েলের অনুষ্ঠানে যাওয়ার আমার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই শুধু মাএ তোমায় হলুদ সাজে দেখবো বলে যেতে রাজি হয়েছি।
মনা একটা কথা বলতো ” নিজের দুর্বলতা কারো কাছে শেয়ার করতে নেই, বিশেষ করে যার প্রতি দুর্বল তার কাছে” তবুও আমি বললাম।

একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে তানহার দুগালে হাত দিয়ে আবার বলে
“জানি ভালোবাসো না। আমি যেমন তোমার সাথে থাকার জন্য তোমাকে দেখার জন্য ছটফট করি তুমি তেমন করো না তবুও বলবো
থাকো না আমার সাথে। ধরো না আমার হাতটা। প্রমিজ করছি কখনো তোমায় রাগাবো না, কাঁদাবো না, বকবো ন,মাথায় করে রাখবো তোমায়, পুতুলের মতো সাজিয়ে দেবো, খুশিতে ভরিয়ে দেবো তোমার জীবনটা, এতো গুলো জুনিয়র নেইমার দেবো।
ধরবে আমার হাত?

তানহার দুচোখে পানি চলে আসে। তবে কনফিউজড অভি প্রপোজ করলো তো?
” একি কাঁদছো কেনো?
বিচলিত হয়ে বলে অভি।
তানহা নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করে কিন্তু পারে না। টুপ করে পানি গড়িয়ে পড়ে। অভি মুছে দেয়।
“সরি ভেরি সরি। আমার উচিত হয় নি তোমাকে এতলখন অপেক্ষা করানোর। চলো চলো এখনি যাচ্ছি।

বলেই অভি উঠে দাঁড়ায় তানহার হাত ধরে দাঁড় করিয়ে হাঁটা শুরু করে।
” আমিই বোকা। আরে আমি তো ভুলেই গেছিলাম “জোর করে পাগলামি করে শুধু পাগল উপাধি টাই পাওয়ার যায়
কারো ভালোবাসা না ”
ভীষণ বোকা আমি।
তাচ্ছিল্য হাসে অভি।

“আমি কখনোই আমাকে বুঝবেন না। বলার সুযোগটাও দিলেন না। এতো অবুঝ কেনো আপনি? কেনো বোঝেন না আমার চোখের ভাসা? না কি বুঝতে চান না?
তানহাও দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।

অভি তানহার হাত শক্ত করে ধরে দরজা খোলে।
” যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধে হয়
অভি মনে মনে। বলে

চলবে

#ভালোবাসি তাই
#পর্বঃ৩৫
#Tanisha Sultana

চুপিচুপি তানহা আর অভি বাসা থেকে বের হয়। সাতটা পঁয়তাল্লিশ বাজে। পিচঢালা রাস্তা লেমপোস্টের আলোতে আলোকিত। তানহা আর অভি পাশাপাশি হাঁটছে। তানহার হাত অভির হাতের ভাজে। অভি হাঁটছে আর তানহাকে দেখছে। ভীষণ ভালে লাগছে। সময়টা এখানেই থমকে গেলে মন্দ হতে না। খুব করে অভির একটা গান গাইতে ইচ্ছে করছে
“এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হতো তুমি বলোতে?”
ইচ্ছে টাকে দমিয়ে রেখেছে অভি। কেননা এটা গান গাওয়ার মতো পারফেক্ট জায়গা না
“এভাবে হেঁটে হেঁটে আসলাম কেনো?
কিছুটা বিরক্ত নিয়ে বলে তানহা।
” আজ রিক্সা করে যাবো।
এদিক ওদিক চোখ ঘুরিয়ে বলে অভি।
“কেনো?
” খুব ইচ্ছে ছিলো তোমার সাথে রিক্সায় ঘুরবো একদিন।
মুচকি হেসে বলে অভি।
“আপনি কি প্রাণ খুলে হাসতে পারেন না? মুচকি হেসে মজা আছে? হাসতে হয় প্রাণ খুলে। বুঝলেন
” উদাহরণ হিসেবে কি রচনা ব্যানার্জি?
“রাইট ওনার মতো হাসবেন।
“তুমি যখন বললা ট্রাই করবো।
এরই মধ্যে রিক্সা চলে আসে। অভি প্রথমে উঠে হাত বাড়িয়ে দেয় তানহা অভির হাত ধরে উঠে অভির পাশে বসে বেশ খানিকটা জায়গা বাদ রেখে। অভি একদম তানহার সাথে চিঁপে বসে তানহার কোমর জড়িয়ে ধরে।
” এএই কি করছেন? অপ্রস্তুত হয়ে বলে তানহা।
“ইসসসসসসসসসস রিক্সা মামা শুনতে পাবে তো।
তানহার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলে অভি। কেঁপে ওঠে তানহা। চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলে।
” মামা হুর তোলা যাবে?
অভি বলে ওঠে। তানহা ফট করে চোখ খুলে। লোকটা করতে কি চাইছে?
রিক্সা মামা হুর তুলে দিয়ে আবার রিক্সা চালানো শুরু করে দেয়। অভি তানহার গলায় হাত দিয়ে মুখটা তার মুখের কাছে নেয়।
তানহার শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।
“এটা রাস্তা
চাপা স্বরে বলে তানহা।
” হুমমম তানহার গালে হাত দিয়ে বলে অভি। সরে যায় না। তানহা দুহাতে শাড়ি খামচে ধরে আছে।
“আহহহ
করে আর্তনাদ করে ওঠে তানহা। অভি সরে যায়
” কি হলো?
“আপনার দাঁড়িতে ব্যাথা পায়। ঠোঁট উল্টে বলে তানহা।
অভি চোখ ছোটছোট করে তাকায় তানহার দিকে।
” সব কিছুতেই তোমার খুদখুতানি। স্টুপিট একটা
বেশ খানিকটা বিরক্ত হয়ে বলে অভি। তানহার মনটা খারাপ হয়ে যায়।
অভি একটু সরে বসে। তানহার গলা থেকে হাত সরিয়ে নেয়। অন্য দিকে মুখ করে বসে।
তানহা অভির হাঁটুর ওপর হাত দেয় অভি সরিয়ে দেয় তানহা আবার দেয় অভি সরিয়ে দিতে গেলে তানহার অভির হাতটা মুঠো করে ধরে ফেলে।
“আমি এরকমই। বেশি কথা বলি সব সময় হাসি আবার অল্পতেই কেঁদে ফেলি। রোমান্টিক না। আর পাঁচটা মেয়ের মতো ফট করে ভালোবাসি বলতে পারি না আপনার ছোটছোট শক গুলো পূরণ করতে পারবো না। এবার সিদ্ধান্ত আপনার। এই আনরোমান্টিক তানহার সাথে থকবেন না কি নতুন কাউকে খুঁজে নেবেন।
অভিমানীর সুরে বলে তানহা।
অভি বুঝতে পারে।
” সমস্যা নাই আমি রোমান্টিক করে নেবো
তানহার কাছে চেপে বসে বলে অভি।
তানহা কিছু বলে না।
“এই তানহা
অভি নিজের কাঁধ দিয়ে তানহাকে হালকা ধাক্কা মেরে বলে
” হুমম বলুন
“আজ কোনো ভুল করে ফেললে প্লিজ রাগ করো না।
তানহা অভির কথার মিনিং না বুঝতে পারে না। না বুঝেই বলে
“আচ্ছা
অভি একটু হেসে জড়িয়ে ধরে।
” দেখুন
এখানে না প্লিজ
“অসব্ভ
এটা পাবলিক প্লেস
” পাবলিক তো দেখতে পাচ্ছি না।
দেখো আমরা হাফ বিয়ে হওয়া কাপল। এখন আমাদের প্রেম করার সময়।
“কে বলছে?
” কমনসেন্স। বলতে হবে কেনো?
“হুররররর
” মাঝেমধ্যে মুডটাই নষ্ট করে দাও তুমি।
তানহা আর কিছু বলে না। সত্যিি তো বলেছে।

পায়েলদের বাড়ির সামনে রিক্সা থামে। অভি ভাড়া মিটিয়ে তানহার হাত ধরে ভেতরে ঢোকে। স্টেজে পায়েল বসে আছে। অভি তানহাকে দেখে পায়েল দাঁড়িয়ে যায়। তানহা মুচকি হাসে। পায়েলের কাছে যায়।
” এতো লেট করলি কেনো?
পায়েল বলে ওঠে।
“এই ম্যাডামকে শাড়ি পড়াতে গিয়ে লেট হয়ে গেলো।
পায়েল তানহার দিকে তাকায়। তানহার গালে হাত দিয়ে বলে
” তুমি সত্যিই খুব সুন্দর। যাকে বলে পরি। তোমার সাথে আমার তুলনা হয় না।
দীর্ঘ শ্বাস ফেলে পায়েল। তানহা ঠিক বুঝতে পারে না। বোকর মতো তাকিয়ে থাকে।
এখনও কি কেউ তোকে হলুদ দেয় নি?
অভি কথা কাটানোর জন্য বলে ওঠে।
“আমি তোর হাত থেকেই প্রথম হলুদটা লাগাবো।
ঠোঁট মেলে বলে পায়েল। তানহার ভেতরটা মোচর দিয়ে ওঠে। ওর স্বামী ওকে হলুদ না লাগিয়ে অন্য একটা মেয়েকে হলুদ লাগিয়ে দেবে।
অভি তানহার মনের কথা বুঝতে পারে।
অভি পাশে থাকা হলুদের বাটি থেকে কিছুটা হলুদ নিয়ে আগে তানহার গালের একপাশে একটুখানি লাগিয়ে দেয় তারপর পায়েলকে লাগিয়ে দেয়। তানহা বিজয়ীর হাসি হাসে। পায়েল তাকিয়ে থাকে।

এবার সবার আগে তানহা অভিকে হলুদ লাগাবে। অভি পায়েলের সাথে কথা বলছে। তানহার বাটি থেকে কিছুটা হলুদ নিয়ে অভিকে লাগাতে যাবে ঠিক তখনই পাশ থেকে কেউ একজন অভির গালে হলুদ লাগিয়ে দেয়। অভি ফট করে পেছনে তাকায়। তানহাও তাকিয়ে আছে।
হাঁটু পর্যন্ত ড্রেস পড়া একটা মেয়ে। ধবধবে ফর্সা। মেকাপের ভাজে আসলে চেহারাটা বোঝা যাচ্ছে না মেয়েটা এক গালে হাসি হেসে দাঁড়িয়ে আছে।
” সারপ্রাইজ
অভির মুখটা থমথমে হয়ে যায়।
“মনা তুমি?
অভি বলে ওঠে। তানহা তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে অভি একে চিনে কি করে?
” অভি ও আমার কাজিন
পায়েল বলে।
মেয়েটা অভির গলা জড়িয়ে ধরে
“খুব মিস করছিলাম তোমায়
তানহার চোখে পানি টলমল করছে। যখন তখন বাঁধ ভেঙে গড়িয়ে পড়বে।
এসব দৃশ্য দেখা তানহার সম্ভব নয় তাই তানহা দৌড়ে চলে যায় ওখান থেকে। অভি মেয়েটাট হাত ছাড়িয়ে দেয়।
” এটা কি ধরনের অসব্ভতামী মনা।
রেগে বলে
“আরে কি হলো

অভি তানহার পিছনে ছুটে।
তানহা কোনার একটা রুমে চলে যায়। ভীষণ কান্না পাচ্ছে সবার সামনে কাঁদলে বিষয়ট খারাপ দেখায়। রুমে ঢুকেই তানহা হু হু করে কেঁদে ওঠে। অভিও ওই রুমে ঢুকে দরজা লক করে দেয়।
” তানহা কি হয়েছে? কাঁদছে কেনো?
অভি তানহার দুই কাঁধে হাত রেখে বলে।
তানহা অভির দিকে তাকায়।
“কেনো কাঁদছি?
” হুমম তাই তো। আমি তো কান্নার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।
তানহা চোখ মুছে।
“ওয়েট দেখাচ্ছি।

তানহা দরজা খুলে। আশেপাশে তাকিয়ে কিছু খুঁজে। তারপর একটা ছেলেকে দেখতে পায় পেঋন ফিরে দাঁড়িয়ে আছে। তানহা ছেলেটাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। অভি মাথায় রক্ত চড়ে যায়।

” আমি জানতাম তুমি আসবে
ছেলেটা বলে ওঠে তানহার হাতের ওপর হাত দিয়ে।
তানহা সরে আসে। ছেলেটা তানহার দিকে ঘুরে। সাথে সাথে তানহার চোখ দুটো বড়বড় হয়ে যায়। এতো রকি

“সরি আসলে আমার হাজবেন্ড মেয়ে দেখলেই নিকনিক করে তাই তাকে ফিল করাচ্ছিলাম আমি ছেলেদের সাথে এমন করলে কেমন লাগে
তানহা মাথা নিচু করে বলে।
” হিসসসস কোনো এক্সকিউজ নয়
ছেলেটা হেসে বলে।
অভি এসে তানহার হাত ধরে। টানতে টানতে ওই রুমটায় নিয়ে যায়। আবার দরজা লক করে দেয়। রকি প্রশান্তির হাসি হাসে।

অভির চাহনি দেখে তানহার কলিজা কেঁপে ওঠে।
“লজ্জা করলো না তোর? দাঁতে দাঁত চেপে বলে অভি
” আপনার লজ্জা করে না? বউ থাকতে অন্য মেয়ে আপনার গলা জড়িয়ে ধরে।
অভি দেয়ালের সাথে তানহাকে মিশিয়ে নেয়।
“খুব বাড় বেড়েছে তোমার তাই না?
চোখ দিয়ে আগুন বেড়চ্ছে অভির। কি করবে না করবে বুঝতে পারছে না। তানহা কি করে ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরলো। এর খুব শক্ত একটা শাস্তি হওয়া দরকার। যাতে তানহা দ্বিতীয় বার এমন করার সাহস না পায়।
” আমার লাগছে
অভি তানহার হাতটা মুচড়ে ধরেছে।
“আমারও লেগেছে (বুকের বা পাশে হাত দিয়ে) এখানে। দাউ দাউ করে জ্বলছে।
তানহা ভরকে যায়।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here