ভালোবাসি তাই #পর্বঃ৪২,৪৩

0
1969

#ভালোবাসি তাই
#পর্বঃ৪২,৪৩
#Tanisha Sultana
পর্বঃ৪২

“আপনি বুঝতে পারছেন না?
মাথায় হাত দিয়ে বলে তানহা।
” কি বুঝতে পারছি না? তানহার কোমর জড়িয়ে ধরে বলে অভি।
“আমার এই অবস্থা করেছেন। এখন বাইরে গেলে সবাই
অভি তানহার ঠোঁটে আঙুল দেয়।
” ইসসস
কে কি বলবো আই ডোন্ট কেয়ার। আমি যা বলবো সেটাই।
“এই তানহা দরজা খুলবি তো?
বৃষ্টি আবারও কড়া নেরে বলে। তানহা নরাচরা শুরু করে।
” প্লিজ ছাড়ুন। আমাকে ডাকছে।
ঘনঘন চোখের পলক ফেলে বলে তানহা।
“ডাকছে ডাকুক না। আমি যখন ডাকি তখন তো এমন তো তারাহুরো করে আসো না?
ঘোর লাগা কন্ঠে বলে অভি।
” আপনি কখন ডাকলেন?
থেমে থেমে বলে তানহা।
“সব সময়ই ডাকি। তুমি শুনতে পাও না? তানহার কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলে অভি।
তানহা চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে।

” তানহা তুই কি দরজা খুলবি না কি আমি সবাইকে ডাকবো?
জোরে জোরে শব্দ করে বলে বৃষ্টি। অভি রাগে দাঁত কটমট করে। তানহা চট করে চোখ খুলে।
অভি রেগে যাচ্ছে বুঝতে পারে।
“বববৃষ্টি আআমি একটু পরেই চলে যাবো। মাথা ব্যথা করছে। প্লিজ ডিস্টার্ব করিস না।
বলে ফেলে তানহা। বলেই জোরে শ্বাস নেয়। অভি বাঁকা হাসে। বৃষ্টি চলে যায়।
” বাহহ এই না হলো আমার বউ।
তানহাকে কাছে টেনে বলে।
“আআপনি প্লিজ এখন
অভি মাথা নিচু করে তানহার মুখোমুখি হয়৷ তানহা থেমে যায়।
” নুডলস না খেয়ে আমি যাবো না। ত্যাড়া ভাবে বলে ওঠে অভি।
“দেখুন
” সবই দেখা শেষ। বাকি যেটুকু আছে কাল দেখবো।
তানহা হতাশার নিশ্বাস ফেলে। এই ছেলে সহজে যাবে না এটা বোঝা হয়ে গেছে তানহার।
“ছাড়ুন যাচ্ছি
অভির হাত সরানোর চেষ্টা করে বলে তানহা।
” না ছাড়লে হয় না? আকুলভাবে বলে অভি।
“না ছাড়লে যাবো কি করে?
” আজ ছাড়ছি কাল কিন্তু ছাড়বো না
“ধ্যাত
অভিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। শাড়ি দিয়ে শরীর ঢাকার চেষ্টা করে কিন্তু পারে না। শেষমেশ ওভাবেই বের হয়। অভি শব্দ করে হেসে ফেলে।

পা টিপে টিপে এগোচ্ছে তানহা। কেউ দেখে ফেললে মানসম্মান সব শেষ। তানহার রুম থেকে কিচেনে যেতে পুরো একটা ড্রয়িং রুম পেরতে হবে। আশেপাশে চোখ বুলিয়ে নেয় তানহা। নাহহ কেউ নেই। এক দৌড়ে রান্না ঘরে যায়। ফ্রিজ থেকে ডিম আর করলা বের করে নেয়। মিরসেফের ভেতর থেকে এক প্যাকেট নুডলস নিয়ে সেদ্ধ করতে দিয়ে। পেঁয়াজ মরিজ আর করলা কেটে নেয়।
অভি উঁকি দিয়ে দেখে এখানে কেউ নেই। তাও ও দৌড়ে কিচেনে চলে যায়। তানহা সিদ্ধ নুডলস জালিতে ঢালছিলো তখন অভি এসে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। তানহা ছিটকে ওঠে।
” আরে রিলাক্স কেউ নেই এখানে। তানহার কাঁধে থুতনি রেখে বলে অভি।
“এখন কেউ নেই কিন্তু যেকোনো সময় চলে আসবে। উত্তেজিত হয়ে বলে তানহা।
” তো আমার সাথে বকবক না করে তারাতাড়ি রান্না শেষ করো৷ কেউ দেখার আগে চলে যায়
ঘাড়ে ঠোঁট ছুঁয়িয়ে বলে অভি। তানহার অস্বস্তি হচ্ছে।
“এভাবে থাকলে কিভাবে রান্না করবো?
অসহায় ফেস করে বলে।
” আই ডোন্ট নো। বাকি জীবনটা তো তোমাকে এভাবেই থাকতে হবে জান।
“কিহহহহ
কিছুটা চেচিয়ে বলে তানহা।
” আস্তে কথা বলো৷ তাহলে আমাকে বিরক্ত করা পাবলিকরা চলে আসবে।

তানহা পরেছে বেশ ঝামেলায়। এই অভির জ্বালা আর নিতে পারছে না। বিরক্ত হয়ে মনে মনে অভিকে গালি দিয়ে রান্না শুরু করে। পুরোটা সময় অভি তানহাকে জ্বালিয়েছে। তানহা দাঁতে দাঁত চেপে সয্য করে গেছে।
নুডলস রান্না শেষ হতেই একটা বাটিতে নুডলস বেরে তাতে একটা কাটা চামচ দিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে তানহা।
মনেমনেবলে “অবশেষে ”
অভির এবার বিরক্ত লাগছে। এতো তারাতাড়ি রান্না শেষ হওয়ার কি দরকার ছিলো?
“রান্না শেষ এবার তো ছাড়ুন।
অভি তানহার কোমর ছেড়ে দেয়।
যেই না ওরা রান্না ঘর থেকে বের হবে তখনই কারো পায়ের শব্দ পায় তানহা। পাশেই নুডলসের বাটিটা ঢেকে ফেলে। শাড়ি টেনে শরীর ঢাকতে থাকে। অভিকে মিরসেফের পেছনে ঠেলে ধাক্কিয়ে পাঠিয়েছে।
” আরে তানহা তুই এখানে? হিমি কিচেনে ঢুকতে ঢুকতে বলে
তানহা মেকি হাসার চেষ্টা করে পেটের কাছে শাড়ি টানছে।
“কি রে কথা বলছিস না? হিমি তানহার কাছে এসে বলে।
” ওই আসলে পপানি খেতে এসেছিলাম। ইনিয়ে বিমিয়ে মিথ্যেটা বলে দেয়।
“কিন্তু তোর রুমে তো পানি ছিলো।
এবার তানহা কি বলবে ভাবছে। পুরো ফ্লোর জুরে চোখ ফেরাচ্ছে।
” কি হলো? তানহার কাঁধে হাত দিয়ে বলে।
“ওই আসলে রুমের পানি গগরম হয়ে গেছিলো।
” ঘামছিস কেনো?
তানহা শাড়ির আচল টেনে ঘাম মুছে নেয়।
“না আসলে গগরম।
হিমি তানহার পা থেকে মা পর্যন্ত দেখছে।
” তোকে এমন বাজে ভাবে হলুদ কে লাগিয়েছে? হিমি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়।
তানহা ঢোক গিলে। এবার কি বলবে?
“কি হলো?
” না ওই আসলে
এক হাতে মাথা চেপে ধরে বলে।
“আসলে নকলে কি?
” আমি নিজেই লাগিয়েছি। ফট করে বলে তানহা।
হিমি ভ্রু কুচকে তাকায়। মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে বিশ্বাস করে নি।
তানহা একটু হাসার চেষ্টা করে বলে
“সত্যিই আআমি নিজেই লাগিয়েছি। ইউটিউব এ দেখলাম হলুদ লাগালে ত্বক সুন্দর হয় তাই।
এবার হয়ত হিমি বিশ্বাস করেছে।
” ওহহহ তাই বল। আমি তো ভেবেছিলাম জিজুকে ভিডিও কল দিয়ে হলুদ লাগিয়ে দেখিয়েছিস। মুখ টিপে হেসে বলে হিমি।
তানহা ভরকে যায়। কি অসব্ভ্য মেয়ে রে বাবা।
“তবে যাই বলিস। জিজু যদি তোর হলুদ লাগানোর স্টাইলটা দেখতো না পুরাই পাগল হয়ে যেতো।
চোখ টিপ দিয়ে বলে হিমি।
তানহা লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলে। কিচ্ছু আটকায় না মুখে।
” এমন ভাবে লজ্জা পাচ্ছিস মনে হয় জিজু আশেপাশেই আছে?
হিমির কথা শুনে তানহার হেঁচকি উঠে যায়। হিমি উত্তেজিত হয়ে বলে
“কি হলো?
তানহা শান্ত হয়ে হিমিকে বলে
” কিচ্ছু হয় নি। তুই এবার যা তোকে ডাকছে।
“শোন না বলছি আমিও এভাবে হলুদ লাগাবো।
” লাগা তো আমি কি করবো?
ওকে লাগাই গিয়ে
“হুমমম যা এবার
“ওহহহ হ্যাঁ তাই তো। আমি তো কুলো নিতে এসেছি।
” কুলো মায়ের রুমে
“ওহহ ওকে যাচ্ছি
হিমি যেতে গিয়েও আবার ফিরে আসে।
” আবার কি?
বিরক্তি নিয়ে বলে তানহা।
“বলছি জিজুকে এই লুকে একটা পিক তুলে পাঠাস। ফিদা হয়ে যাবে
” তবে রে
হিমি এক গাল হেসে দৌড়ে চলে যায়। তানহা বুকে হাত দিয়ে শ্বাস নেয়। এতোখন মনে হয় শ্বাস আটকে রেখেছিলো।
অভি বেরিয়ে আসে। তানহা অগ্নি দৃষ্টিতে তাকায় তানহার দিকে।
” have a relax see you not for Mind বেপি
বলে তানহার দিকে ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে দিয়ে নুডলসের বাটি হাতে নিয়ে খেতে খেতে তানহার রুমের দিকে চলে যায়।

“হনুমান করলা একটা। জানটা জ্বালিয়ে মারলো।

তানহাও অভির পেছন পেছন রুমে যায়। রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়৷ শেষ মুহুর্তে সব কিছু জানাজানি করতে চায় না।
” দরজা বন্ধ কেনো করলে? আমি ভয় পায় তো। নিরিহ ছেলে পেয়ে যদি
ফেস পাওয়ার ফেস করে বলে অভি।
তানহা ভরকে যায় কি বলছে উনি।
“প্লিজ দরজা খুলে। না হয় হালকা করে খুলো। ভয়ে মনে হয় আমি মরেই যাবো।
তানহা এবার বুঝতে পারে মজা করছে। কোমরে হাত দিয়ে এগিয়ে যায় তানহা।
” প্লিজ আমার দিকে এগোবেন না। আমি একজন অবলা পুরুষ।
“অবলা পুরুষ কে আজ আমি বলা পুরুষ বানাবো।

চলবে

#ভালোবাসি তাই
#পর্বঃ৪৩
#Tanisha Sultana

তানহা অভির দিকে এগিয়ে যেতেই অভি চেয়ারের ওপর উঠে লাফ দিয়ে আলমারির ওপর চড়ে। তানহা রেগে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়ায়।
“প্লিজ খালাম্মা এগোবেন না আমি একটা নিষ্পাপ শিশু
বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টে বলে অভি। তানহা রেগে দাঁত কটমট করে।
” এমন করেন কেন খালাম্মা?
“কুত্তা হনুমান বিড়াল করলা কোথাকার। আমি তোর খালাম্মা?
রেগে চিৎকার করে বলে তানহা।
” খালাম্মা আস্তে সবাই চলে আসবে?
“আসুক চলে। সবাই দেখুক বিয়ের আগে বর বউকে খালাম্মা বলে ডাকছে।
” ওকে ডাকো তাহলে সবাইকে।
গোল হয়ে বসে বলে অভি। তানহা ভরকে যায়। একবার নিজের দিকে তাকায়। সবাই চলে আসলে তো তানহাকেই লজ্জায় পড়তে হবে। দাঁত দিয়ে জীভ কাটে তানহা।
“কি হলো খালাম্মা ডাকেন সবাইকে। দাঁত কেলিয়ে বলে অভি।
তানহা দাঁত কটমট করে হাতের কাছে কিছু খুঁজে। কিন্তু কিচুই পায় না।
” সাহস থাকলে নিচে নেমে আসুন।
আঙুল তুলে বলে তানহা।
অভি সাথে সাথে লাফ দেয়। তার তানহার ওপর গিয়ে পড়ে তানহা তাক সামলাতে না পেরে বিছানায় পড়ে যায়। তানহা নিচে অভি উপরে। সত্তর কেজি ওজনের অভি তানহার ওপর পড়াতে ভীষণ ব্যাথা পায় তানহা।

তানহা চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে। অভি ভয় পেয়ে যায়। তারাহুরো করে তানহার ওপর থেকে সরে যায়।
“আর ইউ ওকে
বিচলিত হয়ে বলে অভি। তানহা সুযোগ বুঝে অভিকে ফেলে অভির ওপরে চড়ে গলা চেপে ধরে অভির।
“এভাবে আমার ওপরে পড়লেন কেনো?
অভি তানহার হাত দুটো মুঠো করে ধরে টান দিয়ে তানহাকে বুকের ওপর ফেলে দেয়। তানহা হকচকিয়ে যায়।
” তুমিই তো বললে নেমে আসতে।
“তাই বলে এইভাবে? নরম সুরে বলে তানহা।
অভি মুখটা এগিয়ে আনে তানহার ঠোঁটের দিকে। তানহা অভির ঠোঁটে আঙুল দেয়।
” খালাম্মার সাথে এমন বিহেব করছিস কেনো? বলে দেবো তোর মা কে?
চোখ পাকিয়ে বলে তানহা।
অভি চোখ বড়বড় করে। তানহা উঠে বসে।
চুল ঠিক করে একটা ভাব নিয়ে বলে
“আপনাকে বলা পুরুষ করার মহ্মম সুযোগ পেয়েছি। কাল দেখবো খালাম্মার সাথে বাসর টা কি করে করেন।
অভি ভেবাচেকা খেয়ে তাকিয়ে আছে। নিজের কথার জালে নিজেই ফেসে গেছে।
” তারাতাড়ি নুডলস শেষ করে চলে যায়। আমি যাই সাকি গানে একটা ডান্স দিয়ে আসি।

তানহা ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে শাড়ি পাল্টে রুমে আসে।
অভি ঠুস করে এসে তানহার কপালে চুমু দিয়ে ঝড়ের গতিতে চলে যায়।
তানহা ফিক করে হেসে ফেলে।

বাগানে গিয়ে দেখে সবাই নাচানাচি করছে। বৃষ্টি সৃষ্টি তানহার বাবাকে নাচাচ্ছে। তানহা যেতেই সবাই তানহাকে জেকে ধরে। তানহাও ওদের সাথে নাচতে থাকে।

বিয়ের দিন।
তানহাকে পার্লারের মেয়েরা সাজাচ্ছে। তানহার মনটা খচখচ করছে। মনে হচ্ছে কিছু একটা হবে। সাজানো শেষ হতেই তানহা বাবা মায়ের রুমে চলে যায়। ওখানেই থাকবে বলে ঠিক করে। হিমি বৃষ্টি সৃষ্টি ওরা মন মতো সাজছে। মনে হচ্ছে আজ ওদেরই বিয়ে।
বর এসেছে শুনে ওরা চলে যায় গেট ধরে অভির থেকে মোটা টাকা আদায় করবে বলে। তানহার বুকের ভেতর ধক ধক করছে। অবাধ্য চোখ দুটো অভিকে দেখতে চাইছে। বিয়ের সাজে কেমন লাগছে ওনাকে? নিশ্চয় অনেক সুন্দর।
দরজার আড়াল দিয়ে একটু উঁকি মারে তানহা অভিকে দেখা যাচ্ছে না। মন খারাপ করে আবার খাটে এসে বসে। আয়নার নিজেকে ভালো করে দেখে নেয়। লাল বেনারসিতে ভালোই লাগছে।

ভালেভাবেই ওদের বিয়েটা সম্পূর্ণ হয়। তানহাকে অভির পাশে এনে বসিয়ে দেয় হিমি। তানহা লজ্জায় তাকাচ্ছে না অভির দিকে। কিন্তু অভি তো অভিই তো এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তানহার দিকে।
“বাহহহ খালাম্মা থুক্কু আমার বউকে তো দারুণ লাগছে।
দুষ্টুমি করে বলে অভি। চারপাশের সবাই হো হো করো হেসে ওঠে। তানহা ঠোঁট পাকিয়ে তাকায় অভির দিকে।
অভি এক কানে হাত দিয়ে সরি বলে।

বাবর বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে তানহা শশুড় বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্য গাড়িতে বসে। তানহার পাশে অভি বসতে যেতেই অনিক এসে বসে পড়ে। অভি ভ্রু কুচকে তাকায় অনিকের দিকে।
” আমার পাশে অনিকই বসবে। খালাম্মার পাশে বসতে নেই সোনা।
চেখ টিপ দিয়ে বলে তানহা। অভি বাধ্য হয়ে ডাইভিং সিট এ বসে পড়ে।
“এর শোধ আমি তুলবো।
বিরবির করে বলে গাড়ি চালানে শুরু করে অভি।
” বিয়েতে সব মেয়েরা কেঁদে ভাসিয়ে ফেলে। কিন্তু তুমি কাঁদলে না কেনো?
অনিক জিজ্ঞেস করে।
“আসলে আমি বাসর ঘরের সাথে ছবি তুলবো তো। তাই কাঁদলাম না। কাঁদলে সাজটা নষ্ট হয়ে যাবে তো। সেলফি তোলা শেষে কাঁদতে বসবো। সারা রাত কাঁদবো।
” কিহহহ
অভি জোরে বলে ওঠে।
“হ্যাঁ তো।
“গুড আইডিয়া। তাই কইরো।
অনিক বলে।
“গলা ছেড়ে কাঁদবো।
” এই না
অনিক বলে ওঠে।
“কেনো? তানহা জিজ্ঞেস করে।
” গলা ছেড়ে কাঁদলে তো আমি ঘুমতে পারবো না।
“আমি কাঁদবো আর তুমি ঘুমবে? তুমি না আমার দেবর। তুমি আমাকে সান্ত্বনা দেবে।
অনিক অসহায় ফেস করে অভির দিকে তাকায়।
অভি দাঁত কেলায়।
” তুমি আর অনিক এখানেই নেমে পড়ো। কান্না কাটি শেষ করে মন চাইলে বাসাই যাইয়ো আর মন না চাইলে এখানেই থেকে যেয়ো।
চিবিয়ে চিবিয়ে বলে।
“আপনি আমাকে এখানে নামতে বললেন? বিয়ের প্রথম দিন এমন কথা বললেন
না জানি
অভি গান বাজিয়ে দেয়। তানহার কথা আর শোনা যায় না। অনিক স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। আর কখনো ও তানহার মুখটা চালু করে দেবে না। তানহা একটা ভেংচি কেটে বাইরের দিকে মুখ বের করে।

অভিদের বাড়িতে এসে সব নিয়ম সেরে তানহাকে অন্য ঘরে নিয়ে যায় অভির কাকাতো ভাই বোনেরা। (স্মৃতি, হালিজা, হিমু) আর অভির রুমে ফুলসজ্জার খাটে ঘোমটা দিয়ে বসিয়ে রেখে যায় অভির কাকাতো ভাই রনিকে। তানহার সেম শাড়ি পড়িয়েছে ওকে।

অভি রুমে ঢেকার সময় কাউকে পায় না।
” কি বেপার কেউ টাকা চাইলো না? সবাই বোধহয় ভুলে গেছে
মনে মনে খুশি হয়ে রুমে যায় অভি। খাটের মাঝখানে ঘোমটা দেওয়া রমনীকে দেখে একটু হেসে দরজা বন্ধ করে দেয়।
“এই যে শুনছো?
এতো ঘোমটা দিতে হবে না। দেখছি তোমাকে।
অভি সেরোয়ানি খুলতে খুলতে বলে।
কেনো উওর আসে না।
অভি খাটে উঠে ঘোমটা না খুলেই জড়িয়ে ধরে।
” জানো আজ আমার কতোদিনকার আশা পূরণ হইছে। আজ শুধু তুমি আমার। অনেক ভালোবাসি তোমায়। সারাজীবন এভাবেই তোমাকে আমি জড়িয়ে রাখবো। পৃথিবীর সব খুশি তোমায় এনে দেবো।
আরও শক্ত করে আকড়ে ধরে অভি।
“প্লিজ আমায় ছেড়ে দে। আমি সারাজীবন তোর ঘামের গন্ধটা নিতে পারবো না।
নাক সিটকে বলে রনি।
অভি চমকে ওঠে।
আর হো হো করে হাসার শব্দ আসে।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here