ভালোবাসি_প্রিয়তম,পর্ব_৭,৮
তাসনিম_তামান্না
পর্ব_৭
???
কলেজের ব্রেক টাইমের কুয়াশা কেন্টিনে যাওয়ার জন্য শিরি দিয়ে নিচে যাচ্ছিল সবার লাস্টে আর আনমনে হাটায় সিলিপ কেটে পড়ে যেতে নিলেই কেউ এসে কুয়াশার কোমড় জড়িয়ে ধরে। কুয়াশা ভয়ে চোখ বন্ধ করে নেই।কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে কোনো ব্যাথা অনুভব না করাই পিটপিট করে চোখ খুলে একটা অপরিচিত ছেলেকে দেখে ছিটকে দূরে সরে যেয়ে ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে থাকে ছেলেটার দিকে।
-আর ইউ ওকে মিস(রাজ)
কুয়াশা উপর নিচ মাথা নাড়িয়ে বলল ‘হ্যাঁ’
-তোমার নাম কি?(রাজ)
-কু কুয়াশা(কুয়াশা)
-হোয়াট!!(অবাক+চিল্লিয়ে বলল রাজ)
কুয়াশা রাজের চিল্লানিতে ভয় আরো বেড়ে যায়।
-এই তুমি আমাকে ভয় পাচ্ছো? ভয়ের কোনো কারণ নেই আ’ম রাজ ইউর সিনিয়ার ওকে বাই তোমার সাথে পরে কথা হবে(ঘড়ি দেখে তাড়াহুড়া করেই বাঁকা হেসে চলে গেলো রাজ)
রাজ চলে যেতেই স্তরতির শ্বাস নিলো।তখনি হঠাৎ পিছন থেকে বলে উঠলো
-ছেলেদের সাথে গা ঘেঁষাঘেষি করতে খুব ভালো লাগে তোমার।(তুষার)
কুয়াশা পিছনে ফিরে দেখলো তুষার আর রুকাইয়া দাড়িয়ে আছে। কিন্তু কি বলল ওর বোধগাম্য হলো না।
-এসব কি বলছিস তুষার ওর তো কোনো দোষ নাই ওতো সিলিপ কেটে পড়ে যাচ্ছিলো আর রাজ ও….(রুকাইয়া)
-সাট আপ! কখনো কারোর সাথে ধাক্কা লাগে,কখনো ও পড়ে যেতে নিলে কেউ ওকে ধরে ফেলে আর তো কারোর সাথে এমন হয় না আসলে তোমার ইনোসেন ফেসের পিছনে কি আছে বলবে?আবার কথায় কথায় কাঁদোও, কাঁদলে সাত খুন মাফ।কেঁদে নিজেকে ইনোসেন্ট বানানোর কোনো দরকার না আমার সামনে অন্তত নাই। নিজের রুপ দেখিয়ে ছেলেদের পাগল বানাতে চাও। তোমার আসল রুপ এতোদিনে বুঝতে পারলাম।(তুষার)
কু্যাশা তুষারের কথা শুনে খুব খারাপ লাগলো।চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়তেছে।
-এই আবার কাঁদছ কেনো তোমার আসল রুপ জেনে গেছি বলে।ডোন্ট ওয়ারি তোমার আসল রুপ কাউকে বলবো না তুমি তোমার কাজ চালিয়ে যাও।তুমি বললে আমি তোমাকে হেল্প করতে পা…………(তুষার)
তুষার আর কিছু বলতে পারলো না তার আগেই কুয়াশা ওখান থেকে দৌড়ে চলে গেলো।তুষার রাগে ওর মাথা দপদপ করছে। হাত মুঠো করে জোরে জোরে শ্বাস নিলো।
-এটা কি করলি তুই বাচ্চা মেয়ে সাথে এমন….(রুকাইয়া)
-তুই চুপ কর এই মেয়ে ইনোসেন্ট সাজার চেষ্টা করে আর তার জালে তোরাও ফেঁসেছিস।(তুষার)
-দেখ এখানে আমি তো কুয়াশার কোনো দোষ দেখছি না তুই অযথায় ভুল বুঝছিস(রুকাইয়া)
-আমি কোনো ভুল বুঝছি না তোদের চোখে ঔ মেয়েকেই ঠিক মনে হচ্ছে দুদিনের পরিচয়ে মাথায় উঠে বসছে তোদেরকে কিভাবে ফাঁসাইছে সেটা দেখ আমি আর এই নিয়ে একটা কথাও শুনে চাছি না(বলে চলে গেলো তুষার)
রুকাইয়া দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে সেও চলে গেলো।
★★★
কুয়াশা কাউকে কিছু না বলে বাসায় এসে দরজা বন্ধ করে ইচ্ছে মতো কান্না করছে। পাখি অনেক বার ডাকছে কিন্তু কুয়াশা দরজা খুলে নি।কুয়াশা দরজা খুলছে না দেখে পাখি ভয় পেয়ে কুশানকে ফোন দিয়ে বাসায় আসতে বলল।কুশান বাসায় এসে বোনের দরজা এসে আদুরে স্বরে বলল
-বাবুইপাখি কি হইছে আমার বোনটার দেখি দরজা খোলো(কুশান)
কুয়াশা সবার ডাক উপেক্ষা করতে পারলেও তার ভাইয়ের ডাক কখনো উপেক্ষা করতে পারবে না।চোখমুখ ভালো করে মুছে গুটিগুটি পায়ে দরজা খুললো মুখে কৃত্রিম হাসি আনার চেষ্টা করছে কিন্তু সে ব্যাথ।কুশান কুয়াশাকে দেখে বুকে মোচর দিয়ে উঠল কুয়াশার ফোলাফোলা লাল চোখ,নাকটাও লাল,চুলগুলো এলোমেলো। কুশান রুমে ডুকে কুয়াশাকে পাশে বসিয়ে বলল
-কি হইছে বাবুইয়ের কান্না করছে কেনো?(কুশান)
-কি কিছু হহইনি তো ভাইয়া আর কই কান্না করছি(কুয়াশা)
-এখন ভাইয়াকেও মিথ্যা বলা শিখে গেছিস(কুশান)
কুয়াশা আর নিজে আটকে রাখতে পারলো না কুশানকে জড়িয়ে ধরে হু হু করে কেঁদে দিলো। কুশানও পরম স্নেহে জড়িয়ে ধরলো।
-কি হইছে বল ভাইয়াকে(কুশান)
কুয়শা ফুপাতে ফুপাতে বলল
-ভাইয়া আমি কি খুব খারাপ একটা মেয়ে (কুয়াশা)
কুশান কুয়াশার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল
-কে বলে তুই তো আমার বেষ্ট বোন(কুশান)
-না ভাইয়া তুমি সত্যি কথা বল আমি খারাপ মেয়ে তাই না(কুয়াশা)
-এসব কে বলছে বোন তুই কেনো খারাপ হবি তুই তো আমার ভালো বোন যে বলেছে সে খারাপ মানুষকে চিনতে পারেনা(কুশান)
কুয়াশা কিছু বললো না চুপটি করে ভাইয়ের বুকে মাথা দিয়ে গুটিগুটি হয়ে বসে আছে।পাখি সুপ নিয়ে এসে বলল
-বাহ এতোক্ষণ আমি ডাকলাম শুনলি না যেই ভাই ডাকলো ওমনি দরজা খুলে দিলি আমি তো কেউ না তাই না আমার কথা কেনো শুনবি(পাখি)
পাখির কথায় কুয়াশা মিটমিট করে হেসে উঠলো।কুয়াশার হাসি দেখে কুশান যেন শান্তি খুঁজে পেলো।
পাখি অভিমান করে সুপের বাটিটা টি-টেবিলে রেখে চলে আসতে নিলেই কুয়াশা পিছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরে বলল
-ভাবিপু তুমি তো আমার বেষ্ট আপু এভাবে রাগ করো কেনো কষ্ট হয় তো(কুয়াশা)
-থাক থাক আর ঢং করতে হবে না সুপটা খেয়ে নে অনেকক্ষণ তো কিছু খাসনি(পাখি)
-খাইতে ইচ্ছে করছে না তুমি খাইয়ে দিলে ইচ্ছে হবে খেতে(কুয়াশা)
পাখি হেসে দিয়ে বলল
-যা ফ্রেশ হয়ে আই দিচ্ছি
‘ওকে’ বলে পাখি আর কুশানকে কিস দিয়ে ফ্রেশ হতে গেলো।
-কি হলো মেয়েটার এমন তো কখনো করেনি(পাখি)
-কারোর কথায় কষ্ট পাইচ্ছে মনে হয়(কুশান)
-কে কি বলবে ওকে(পাখি)
-জানি না মেঘার কাছে শুনো তো(কুশান)
-মেঘা ফোন দিয়ে ছিলো ওরাও কেউ জানে না কুয়াশার কি হইছে(পাখি)
-আচ্ছা ওকে আর এসব নিয়ে কিছু শুনো না(কুশান)
-আচ্ছা তুমি কি আবার অফিসে যাবে(পাখি)
-হ্যাঁ আমার ইনপটেন মিটিং আছে যেতে হবে কুশ, শান কই ওরা(কুশান)
-ওরা খেলছে(পাখি)
কুশান পাখি কপালে কিস দিয়ে বলল
-সবার সাথে নিজের খেয়াল রেখো বউ আসছি(কুশান)
বলে চলে গেলো কুশান।এটা নতুন কিছু না যত বারি বাইরে যায় এমনটাই করে কুশান।
কুয়াশা খেয়ে ঘুমালো এতো কান্না করার জন্য ওর মাথা ব্যাথা করছে, আর ক্লান্ত ও লাগছে। ঘুমানোর আগেও তুষারের কথা গুলো ভেবে চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।
★★★
তুষার আর তুষারের ফেন্ডরা সবাই বসে গল্প করছে।
-আজ দু’দিন কুয়াশা, মেঘা বা ওদের কোনো ফেন্ডরা কলেজে আসছে না কেনো?(তন্নি)
-তুষারের কথায় কষ্ট পাইছে তাই আসছে না(মুন)
-কুয়াশা কষ্ট পাইছে কিন্তু ওর ফেন্ডেরা কেনো আসছে না?(রিদ)
-ওদিন ওভাবে বলা উচিত হয়নি তোর(তুষারের উদ্দেশ্য করে বলল সাদাফ)
-তোদের কাছ থেকে শিখতে হবে কিভাবে কথা বলবো আমি(তুষার)
-আজব তো এভাবে ওভার রিয়াক্ট করছিস কেনো তুই সব দেখেও তুই…থাক তোরকে বোঝানোটাই বেকার(রুকাইয়া)
-মেয়েটা কিছু হলো না তো মেয়েটা আর যায় করুক পড়াশোনায় কোনো ফাঁকি দেবে না(হাসান)
হাসানে ‘মেয়েটার কিছু হলো না তো’ কথাটা শুনে তুষারের বুকটা ধক করে উঠলো।তুষার মুখে যত যায়ই বলুক না কেনো এই দু’টো দিন ওর দু-চোখ শুধু কুয়াশাকেই খুঁজেছে।কুয়াশাকে তুষার মিস করছে ও নিজেও সেটা উপলোভধী করতে পেরেছে।
-হুম কুয়াশা অনলাইনেও আসে নি এই দু’দিন (রিদ)
-ওরদের কারোর ফোন নাম্বার ও নাই বাসার ঠিকানাও জানি না তো(তন্নি)
-হুম ঢংগী আসছে চুপ কর(মুন)
সবাই দেখলো রিমা এদিকে আসছে
-কি নিয়ে কথা বলছো তোমরা(তুষারের গা ঘেঁষে দাড়িয়ে বলল রিমা)
-সেটা তোমার না জানলেও চলবে(রুকাইয়া বলে চলে গেলো)
রুকাইয়ার পিছনে পিছনে সবাই-ই গেলো তুষার যেতে নিলে।রিমা আটকে দেই।
-তুমি কোথায় যাচ্ছো বাবু(রিমা তুষারের হাত ধরে বলল)
তুষার রিমার হাত ঝাড়া দিয়ে বলল
-তুই আমার বোন হোস বোন থাক আর বলছি না এভাবে গা ঘেঁষেবি না বেহাইয়াদের মতো(তুষার)
-ভালোবাসা পাওয়ার বেহায়া,নিলজ্জ হতেও রাজী(রিমা)
-হাহাহা হাসালি ভালোবাসার মানে জানিস যে তুই ভালোবাসতে আসছিস তুই তো আমার বাবার টাকা,আর সম্পত্তির জন্য আমি শত অপমান করার পরেও আসিস(তুষার)
-তুষার তুমি যেটা ভাবছো সেটা না আমি তোমাকে সত্যি ভা…..(রিমা)
-আমাকে ভাইয়া বলে ডাকবি। আর আমি যেটা ভাবছি সেটা ঠিক আমিও জানি তুইও জানিস তাহলে এতো এক্টিং করার করো মানে হয় না(তুষার)
বলে তুষার ওখান থেকে চলে গেলো। রিমা রীতিমত রাগে ফোঁস ফোঁস করছে।
#চলবে
#tasnim_tamanna
[ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।গঠনমূলক কমেন্ট করবেন।কাল লিখার সময় পাইনি]
#তাসনিম_তামান্না
#ভালোবাসি_প্রিয়তম
#পর্ব_৮
???
আজ সাত দিন পর কুয়াশা কলেজে আসলো। কলেজের চারিদিকে একটা আনন্দ আনন্দ ভাব সবাই এদিক ওদিক ছুটাছুটি করে কোনো না কোনো কাজ করছে। কুয়াশা এসব দেখে একটু অবাক হলো কি হচ্ছে এসব ওর মাথায় ডুকছে না শুধু ড্যাবড্যাব করে দেখছে।
-কি হচ্ছে রে কলেজে(কুয়াশা)
-মনে হয় কোনো অনুষ্ঠান হবে(ঈশান)
-মনে হয় না অনুষ্ঠানই হবে সংস্কৃতি অনুষ্ঠান(মেঘা)
-তুই কেমন করে জানলি?জানলি তো জানলি আমাকে একবারও বললি না?(কুয়াশা)
-আরে আমিও জানতাম না স্যার ভাইয়ার(মেঘ) কাছে ফোন দিয়েছিলো তাই একটু একটু শুনছি(মেঘা)
-আচ্ছা আর এখন ঝগড়া লাগাস না(রাহুল)
-আমরা ঝগড়া লাগায়(মেঘা)
-আরে সেটা কখন বললাম দূর আর কথায় কমু না(রাহুল)
-এই চুপ কর।আজকে তো তাহলে ক্লাস হবে না তাই না? (অনু)
-চল ভিতরে গিয়ে দেখি(ঈশান)
ঈশানের কথায় সবাই ভিতরে গেলো। কলেজেটা নানান রকমের বেলুন, রঙিন কাগজ দিয়ে সাজাছে। ওরা চারিদিকে দেখতে দেখতে হলরুমের সামনে এসে দেখলো হলরুমটাও সাজাচ্ছে।ওরা হলরুমে ডুকে দেখলো এখানে তুষার আর তুষারের ফেন্ডরা আছে।রুকাইয়া ওদেরকে দেখে খুশি হয়ে ওদের কাছে এসে বলল
-কেমন আছো তোমরা?এতোদিন আসোনি যে?(রুকাইয়া)
রুকাইয়াকে দেখে ওদের সব ফেন্ডরাও একে একে আসলো।তুষারও কুয়াশাকে দেখে ঠোঁটের কোণে হাসি আসলো কিন্তু ও কুয়াশাদের কাছে আসে নি দূর থেকে তুষার তার মনে ও চোখের তৃষ্ণা মিটাছে একমনে চেয়ে রইলো কুয়াশার পানে। ওর মনে হচ্ছে কত যুগ পড়ে ওর প্রাণটা যেনো ফিরে পেলো।কিন্তু কুয়াশার দিকে ভালো করে দেখে ওর বুকটা কেমন করে উঠলো।
-ভালো আছি আপনারা কেমন আছেন?(মেঘা)
-আমরাও ভালো আছি তোমাদের দেখে আরো ভালো হয়ে গেলাম!(রিদ)
-কুয়াশা তোমার কি শরীর খারাপ? না মানে তোমাকে ঠিক লাগছে না!(রুকাইয়া)
-না আপু ঠিক আছি!(কুয়াশা)
-তোমার চোখ-মুখ বলে দিচ্ছে তুমি অসুস্থ(সাদাফ)
-একটু জ্বর ছিলো(কুয়াশা)
ঈশান ফোঁড়ন কেটে বলল
-একটু জ্বর ছিল তাই তিনদিন অজ্ঞান ছিলো(ঈশান)
সবাই অবাক হয়ে বলল
-মানে!!
কুয়াশা ঈশানের দিকে কোনা চোখে তাকালো ঈশান সেটা দেখে গলা ঝাড়লো। কুয়াশা নিজের সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না সহজে।ওদের মধ্যে একজন মিসিং থাকলে ওরা সেদিন কেউই আর কলেজে আসে না তাই কুয়াশা অসুস্থ থাকায় কেউই আর কলেজে আসে নি।
-মানে তুমি এই এক সপ্তাহ অসুস্থ ছিলে(তন্নি)
-একটু! বাদ দেন আপু! আচ্ছা আপু কলেজে কি হচ্ছে?(কুয়াশা)
– কাল সংস্কৃতি অনুষ্ঠান? (মুন)
-ওহ!তাহলে তো আজ ক্লাস হবে না তাই না?(অনু)
-না আজ কলেজ সাজাবে কাল তো বেশি সময় পাওয়া যাবে না তাই(হাসান)
-আচ্ছা ফুল দিয়ে সাজাবেন না?(ঈশান)
-হ্যাঁ সেটা কালকে না হলে ফুল নষ্ট হয়ে যাবে।তোমরা কাল আসছো তো(রুকাইয়া)
-হ্যাঁ হ্যাঁ অবশ্যয়! কাল অনেক মজা হবে আসতে তো হবেই(মেঘা)
মেঘার বাচ্চামো তে সবাই হেসে দিলো
-ছেলেদের হলুুদ পানজাবি আর মেয়েদের নীল শাড়ি পড়তে হবে(তন্নি)
-হিমু-রুপা?(কুয়াশা)
-হুম এটা তুষারের প্লান(সাদাফ)
কুয়াশা তুষারের নাম শুনে মুখ মলিন করে ফেললো
-শাড়ি-ই পড়তে হবে অন্য কিছু পড়লে হবে না(মেঘা)
-কেনো শাড়ি পড়লে প্রবলেম কি?(রিদ)
মেঘা রিদের দিকে একবার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো। রিদ মেঘাকে প্রোপজ করছিলো কিন্তু মেঘা রিজেক্ট করে দিয়ে ছিলো সেখান থেকে দু’জন দু’জনের চোখে চোখ রাখতে পারে না। এ ঘটনা ওরা দুজন ছাড়া কেউ-ই জানে না।রিদ নিজে ফান করতে করতে কখন যে মেঘাকে ভালোবেসে ফেলছে ও নিজেও জানে না।
-না আসলে বাসা থেকে মানবে বলে মনে হয় না(মেঘা)
-একটা দিনেইতো ব্যাপার মেনেজ করে নিও(রুকাইয়া)
-ওকে ট্রাই করবো(মেঘা)
ওরা আরো কিছুক্ষণ থেকে কলেজ থেকে চলে আসলো। কুয়াশার অসুস্থতার কথা শুনে ওরা বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছে।তুষার কুয়াশার অসুস্থতার কথা শুনে বুকে চিনচিনে ব্যথা অনুভব করলো।কিন্তু কাউকে কিছু বুঝতে দিলো না।নিজের মনে কাজ করতে লাগলো এমন একটা ভাব করলো যেনো ওর কিছুই যায় আসে না।
.
কুয়াশা আর মেঘা বাসায় এসে কিচেনে পাখিকে বোঝাতে গেলো
মেঘা আর কুয়াশা পাখির পাশে দাড়িয়ে বলল
-ভাবিপু(মেঘা)
পাখি আড়চোখে ওদের দুজনের দিকে তাকালো।
-ও ভাবিপু গো(কুয়াশা)
-কি হইছে বলে ফেলো(পাখি)
-ভাবিপু ও ভাবিপু(মেঘা)
-কি লাগবে বলে ফেলো(পাখি)
ওরা দুজন দাঁত কেলিয়ে একসাথে বলল
-শাড়ি!
-হোয়াট?শাড়ি নিয়ে কি করবি?(পাখি)
-শাড়ি পরবো(মেঘা)
-কি? পাগল না মাথা খারাপ(পাখি)
-প্লিজ ভাবিপু না করো না প্লিজ(কুয়াশা)
-তেল মাখিয়ে লাভ নাই শাড়ি পড়ে সামলাতে পাড়বি না(পাখি)
-ভাবিপু কাল কলেজে অনুষ্ঠান প্লিজ না করো না(মেঘা)
-শাড়ি বাদে অন্য কিছু পর গাউন আছে,লেহেঙ্গা আছে সেগুলা পড়(পাখি)
-ভাবিপু সবাই শাড়ি পড়বে প্লিজ না করো না প্লিজ প্লিজ প্লিজ (কুয়াশা)
-শাড়ি সামলাতে পারবি না পড়ে টড়ে গেলে ব্যাথা পাবি দরকার নাই(পাখি)
পাখিকে অনেক বোঝানোর পর রাজি হলো।বিকালে শপিং করতে যাবে সেই আনন্দে ওদের ফেন্ডেদের কাছে ফোন দিয়ে শুনলো ওরা যাবে কি না ওরা বলল যাবে না।
★★★
বিকালে ওরা সবাই মিলে শপিং করতে গেলো।কুয়াশা আর মেঘা, কুশ আর শানকে নিয়ে পাখিকে শাড়ি চূজ করার দয়ীত দিয়ে অন্য দিকে চলে গেলো।
-দেখছো তোমার বোনদের কান্ডটা দেখছো ওরা শাড়ি পরবে ওরা পছন্দ করে নিবে তা না(পাখি)
-ওরা জানে আমার বউয়ের চয়েস বেস্ট নাহলে কি কি আমার মতো জামাই পেতে(কুশান)
-ওমনি না নিজেকে হেন্সাম বানিয়ে দিলা(পাখি)
-আরে আমি সেটা কখন বললাম বাই দা ওয়ে তাহলে মানছো আমি হেন্সাম(কুশান)
-একদম চুপ কর আমাকে বেস্টটা চূজ করতে দাও যদি ওদের পছন্দ না হয় তাহলে সব তোমার দোষ(পাখি)
কুশান আর কিছু বললো না পাখি শাড়ি দেখতে লাগলো।
কুয়াশা আর মেঘা দুটা পাস নিয়ে একটাতে কুশকে আর একটাতে শানকে বসিয়ে ঠেলে বেবিদের শপে ডুকলো।ওদের যে ড্রেস, খেলনা,চকলেট পছন্দ হচ্ছে সেটা নিয়ে নিচ্ছে। কুশ আর শান পাসে বসে মজা পেয়ে খিলখিল করে হেসে যাচ্ছে। আর বার বার বলছে ‘ইয়ে কি মচা(মজা)’।ওরা কিনে বেবি শপ থেকে বেরিয়ে একটু পাশে দাঁড়ালো এদিক ওদিক তাকিয়ে মেঘকে খুজতে লাগলো।
-কিরে ভাইয়া কই গেলো?(মেঘা)
-আমি কেমনে জানবো তুইও যেখানে আমিও সেখানে(কুয়াশা)
-ফোন দে আবার(মেঘা)
-তুই দে (কুয়াশা)
-আরে দে না(মেঘা)
-ওফফ তুই দিলেই হয়(কুয়াশা)
ওরা যখন কথা কাটাকাটি করছিলো তখন ওদের কেউ ডেকে উঠলো।ওরা দু’জন সামনে তাকিয়ে দেখলো তুষার আর তুষারের ফেন্ডরা।
-আরে তোমরা এখানে শপিং করতে এসেছো বুঝি(মুন)
-হ্যাঁ আপু(মেঘা)
-এমা এতো সব বেবিদের ড্রেস, এই বাবু তোমাদের নাম কি?(হাসান)
কুশ আর শান ড্যাবড্যাব করে ওদের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে কুয়াশা আর মেঘার কোলে ওঠে গলা জড়িয়ে ধরে আবার ড্যাবড্যাব করে তাকালো।
-এই বাবু তোমরা কি ভয় পাচ্ছো?(তন্নি)
ওরা তাও কিছু বললো না।
-ওদের নাম কি,ওরা টুইন তাই না?(রুকাইয়া)
-হ্যাঁ কুশ আর শান(কুয়াশা)
-বাহ কিউট নাম(সাদাফ)
তখন ফোনে কথা বলতে বলতে মেঘ আসলো।
-ওপর মহল থেকে চাপ দিলে তো শুধু হবে না সঠিক ইনফরমেশন লাগবে তো?
-……
মেঘ কিছু বলতে যাবে তার আগে কুয়াশা আর মেঘার সাথে কিছু ছেলে মেয়েকে দেখে কপাল কুচকে বলল-পরে কথা বলছি(মেঘ)
-এরা কারা(মেঘ)
-ভাইয়া তুমি পাড়া লেখা করো তো(মেঘা)
-হটাৎ এ কথা(মেঘ)
-ভাইয়া এরা তোমার ক্লাসমেট(কুয়াশা)
-ওহ আমি তো কলেজ করি না তাই জানি না।হাই আমি মেঘ(মেঘ)
-হ্যালো আমি তুষার(তুষার)
ওরা একএক করে পরিচয় হলো
-তোমাদের সাথে৷ পরিচয় হয়ে ভালো লাগলো(মেঘ)
-আমাদেরও ভালো লাগছে(তন্নি)
তুষারের ফেন্ডরা একটু তন্নির দিকে তাকালো কিন্তু কেউ কিছু বলল না।
মেঘ কিছু বলতে যাবে তার আগে আবার ফোন আসলো ওর
-ওহ নো!! এই ভাইয়ারা কই(মেঘ)
-জানি না তো (মেঘা)
-আমাকে যেতে হবে ভাইয়ার কাছে ফোন দে(মেঘ)
-আবার কই যাবা ভাইয়া তুমি না বললে আজ সবাই একসাথে ঘুরবো(কুয়াশা)
-আজ কাজ পড়ে গেছে অন্য একদিন যাবো রাগ করিস না বোন(মেঘ)
-সত্যি তো(মেঘা)
-সত্যি(মেঘ)
ভাইবোনের ভালোবাসা দেখে তুষারের চোখে কোনে পানি এসে জমলো সব ঠিক থাকলে তার বোনটাও তার সাথে থাকতো তার সাথেও এমন মান অভিমান করতো দুষ্টুমি করতো। তারও একটা খুশি পরিবার থাকতো।কিন্তু কি আর করার ও চাইলেই তো আর ইচ্ছেটা পূরণ হবেনা।
মেঘ কুয়াশা, মেঘা,কুশ,শানকে কুশানের কাছে রেখে ওওর কাজে চলে গেলো।ওরাও আরো কিছু শপিং করে।ফুচকা, আইসক্রিম খেয়ে বাসায় আসলো।
#চলবে